বাংলা নববর্ষ | অনুচ্ছেদ-১: পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণীর জন্য
বাংলা নববর্ষ চালু হয় ১৫৫৬ সালে। মুঘল সম্রাট জালালুদ্দিন মোহাম্মদ আকবরের শাসনামলে এটি চালু হয়। তবে, ১৫৮৪ সালে বাংলা সন শুরু হয়। বাংলা সন শুরুর পর থেকেই বাংলা নববর্ষ পালন শুরু হয়। শুরুতে বর্ষবরণ ছিল না। বর্ষবরণের আনুষ্ঠানিকতা পরে যোগ করা হয়। ইতিহাসবিদদের মতে, বাংলা নববর্ষের উৎপত্তি হিন্দু ধর্মের সৌর পঞ্জিকা থেকে। হিন্দু ধর্মের সৌর পঞ্জিকা অনুসারে, বছরের প্রথম মাস হল বৈশাখ। বৈশাখ মাসের প্রথম দিনকেই বাংলা নববর্ষ হিসেবে পালন করা হয়। বাংলা নববর্ষ বাঙালিদের কাছে আনন্দের দিন কারণ এটি নতুন বছরের সূচনা। নতুন বছরের সূচনা মানেই নতুন আশা, নতুন সম্ভাবনা। বাঙালিরা এই নতুন বছরকে আরও সুন্দর ও সমৃদ্ধ করার জন্য উদ্দীপ্ত হয়। বাংলা নববর্ষের দিন বাঙালিরা নতুন জামা-কাপড় পরে। নতুন জামা-কাপড় পরিধানের মাধ্যমে তারা নতুন বছরের প্রতি তাদের আশা ও সম্ভাবনা প্রকাশ করে। এছাড়াও, বাংলা নববর্ষের দিন বাঙালিরা বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে। এই অনুষ্ঠানগুলির মাধ্যমে তারা তাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে উদযাপন করে। বাংলা নববর্ষের দিন বাঙালিরা নতুন বছরের শুভেচ্ছা বিনিময় করে। নতুন বছরের শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যমে তারা একে অপরের প্রতি ভালোবাসা ও সম্প্রীতির বন্ধন গড়ে তোলে। বাংলা নববর্ষ বাঙালিদের কাছে আনন্দের দিন কারণ এটি তাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি তাদের নতুন বছরের জন্য নতুন আশা ও সম্ভাবনা প্রদান করে। বাংলা নববর্ষে শহর ও গ্রামের দৃশ্য সম্পূর্ণ ভিন্ন। শহরে বাংলা নববর্ষের উৎসবের আয়োজন অনেক বেশি। শহরের রাস্তাঘাট, পার্ক, স্কুল, কলেজ, অফিস, দোকানপাট সবকিছু সাজানো হয় নতুন রঙে। শহরের বিভিন্ন স্থানে মঙ্গল শোভাযাত্রা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মেলা, ইত্যাদি আয়োজন করা হয়। শহরের মানুষ নতুন জামা-কাপড় পরে, নতুন বছরের শুভেচ্ছা বিনিময় করে, এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে। গ্রামে বাংলা নববর্ষের উৎসবের আয়োজন তুলনামূলকভাবে কম। তবে, গ্রামেও বাংলা নববর্ষ উদযাপিত হয়। গ্রামে নববর্ষের দিন হালখাতা খোলা হয়। হালখাতা হল ব্যবসায়ীদের নতুন বছরের প্রথম দিন। এই দিন ব্যবসায়ীরা তাদের পুরনো বছরের হিসাব-নিকাশ শেষ করে নতুন বছরের জন্য নতুনভাবে ব্যবসা শুরু করে। গ্রামে বাংলা নববর্ষের দিন নতুন জামা-কাপড় পরে, নতুন বছরের শুভেচ্ছা বিনিময় করে, এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে। বাংলা নববর্ষ বাঙালি জাতির একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। এই উৎসবের মাধ্যমে বাঙালিরা তাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে উদযাপন করে।
বাংলা নববর্ষ | অনুচ্ছেদ-২: এসএসসি (নবম – দশম শ্রেণী) পরীক্ষার জন্য
বাঙালি জীবনে কিছু উৎসব আছে, যেগুলো ধর্মীয় সীমানা ছাড়িয়ে গিয়ে গোটা জাতিকে এক সুতায় বেঁধে রাখে। এর মধ্যে অন্যতম উজ্জ্বল উৎসব হল বাংলা নববর্ষ বা পহেলা বৈশাখ। নতুন বছরের আগমনী বাতাসে উৎফুল্ল হয়ে ওঠে বাঙালি মন। শহর, গ্রাম, এমনকি বিদেশের মাটিতেও মেতে ওঠে বাংলা নববর্ষের উৎসবে। সকালের সোনালি আলোয় জেগে ওঠে পৃথিবী। বাঙালির বাড়িতে গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে পান্তা ইলিশের। এই ঐতিহ্যবাহী খাবার খেয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানানো হয়। পেটপূর্তি করে চলে আসে মঙ্গল শোভাযাত্রায়। ঢাকের তালে, গানের সুরে নাচতে থাকে রাস্তা। রাজকুমারীর মতো সাজে ঘোড়ায় চড়ে যুবরাজ, হাতে ঢাল-তরবারি, হরেক রকম পুতুল যেন পুরাণের রাজকীয় গাম্ভীর্যই ফিরে আরে রাজপথে। এসময় সারা দেশ জেগে ওঠে বৈশাখী মেলার আমেজে। কাপড়চোপড়ের রঙিন দোকান, হস্তশিল্পের নানান পণ্যের স্টল, মাটির পুতুলের ঠোঁটে ফুটে ওঠা হাসি, সব মিলে এক মায়াবী জগৎ। মৃৎশিল্পের চাকা ঘুরে ওঠে ছন্দে, হস্তশিল্পের সুঁইয়ের নাচে জন্ম নেয় নতুন নকশা। পাতে পাতে গন্ধে মাতোয়ারা পান্তা-ইলিশ, মিষ্টির স্বাদ, ঝালমুড়ি, বাতাসা – মিঠাই সবই মিলে এক অপূর্ব স্বাদের সমাহার। নাগরদোলায় ঝুলেন শিশুরা, পুতুল নাচে ফুটে ওঠে গল্পের রাজ্য। যাত্রাপালার মঞ্চে হাসি-কান্না, তবলা-খোলের তালে মেতে ওঠে দর্শক। ধর্মের বেড়াজাল ভেঙে সবাই এক মিলে আনন্দে ঝুলে। বাংলা নববর্ষ এর আরেকটি ঐতিহ্য হল হালখাতা। ইতিহাসবিদদের মতে, হালখাতার প্রচলন হয় মুঘল আমলে। সম্রাট আকবর ১৫৫৬ সালে বাংলা বর্ষপঞ্জিকা প্রবর্তন করেন। পরবর্তীতে, নবাব মুর্শিদ কুলি খাঁ হালখাতার আনুষ্ঠানিক প্রচলন করেন। রাজস্ব আদায়ের জন্য গৃহীত এই পদ্ধতিটি পরবর্তীতে ব্যবসায়ীদের মধ্যেও জনপ্রিয়তা লাভ করে। পহেলা বৈশাখ শুধু উৎসব নয়, এটি বাঙালি জাতির একাত্মতার প্রতীক। এই দিনে আমরা ভুলে যাই ধর্ম, শ্রেণি, রাজনীতির সীমানা। হাতে হাত ধরে গান গাই, নাচি, আনন্দে মাতোয়ারা হয়। এই উৎসব আমাদের মনে করিয়ে দেয়, আমরা সবাই একই সুতায় বাঁধা, আমাদের ইতিহাস, সংস্কৃতি, ভাষা আমাদের এক ঐতিহ্যের নিদর্শন। এই পহেলা বৈশাখে, আসুন সবাই মিলে উদযাপন করি, হাসি আর আনন্দ ছড়িয়ে দিই, নতুন বছরে নতুন প্রত্যয়ে এগিয়ে যাই।
বাংলা নববর্ষ | অনুচ্ছেদ-৩: এইচএসসি ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য
বাংলা নববর্ষ বা পহেলা বৈশাখ বাংলা সনের প্রথম দিন। এটি বাঙালি জাতির ঐতিহ্যবাহী ও ধর্মনিরপেক্ষ উৎসব। বাংলা নববর্ষের দিনটিকে নতুন বছরের সূচনা হিসেবে উদযাপন করা হয়। বাংলা নববর্ষের ইতিহাস বেশ প্রাচীন। ধারণা করা হয়, খ্রিস্টীয় পঞ্চম শতাব্দীতে পাল রাজবংশের আমলে বাংলা সন প্রচলন হয়। তবে, বাংলা সনকে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় ১৫৮৪ সালে সম্রাট আকবরের আমলে। বাংলা নববর্ষের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে নতুন জামা-কাপড় পরে সবাই নতুন বছরের শুভেচ্ছা বিনিময় করে। এদিন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যেমন, মঙ্গল শোভাযাত্রা, যাত্রা, নাটক, গান, নৃত্য, ইত্যাদি। বাংলা নববর্ষের দিন বিভিন্ন খাবার তৈরি করা হয়। যেমন, পিঠা, পায়েস, মিষ্টি, ইত্যাদি। এদিন সবাই মিলে একসাথে খাওয়া-দাওয়া করে। বাংলা নববর্ষ একটি আনন্দঘন উৎসব। এই উৎসবের মাধ্যমে বাঙালি জাতি তাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে ধারণ করে চলেছে। বাংলা নববর্ষের তাৎপর্য অনেক। এই উৎসবের মাধ্যমে বাঙালি জাতি তাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে ধারণ করে চলেছে। বাংলা নববর্ষের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে নতুন জামা-কাপড় পরে সবাই নতুন বছরের শুভেচ্ছা বিনিময় করে। এদিন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যেমন, মঙ্গল শোভাযাত্রা, যাত্রা, নাটক, গান, নৃত্য, ইত্যাদি। এই অনুষ্ঠানগুলির মাধ্যমে বাঙালি জাতি তাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরে। বাংলা নববর্ষের দিন নতুন বছরের শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যমে মানুষ একে অপরের প্রতি ভালোবাসা ও সম্প্রীতির বন্ধন গড়ে তোলে। এই উৎসবের মাধ্যমে মানুষ নতুন বছরের নতুন আশা ও সম্ভাবনায় উদ্দীপ্ত হয়। বাংলা নববর্ষের প্রভাব বাঙালি সমাজে ব্যাপক। এই উৎসবের মাধ্যমে বাঙালি জাতি তাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে ধারণ করে চলেছে। এই উৎসবের মাধ্যমে বাঙালিরা তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক, খাবার, গান, নৃত্য, ইত্যাদির প্রচার করে থাকে। এই উৎসবের মাধ্যমে মানুষ সকল ধর্ম ও বর্ণের মানুষকে একত্রিত করে।শহরে বাংলা নববর্ষের সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠান হল মঙ্গল শোভাযাত্রা। এই শোভাযাত্রায় বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, সামাজিক সংগঠন, শিল্পী সংগঠন, ইত্যাদি অংশগ্রহণ করে। শোভাযাত্রায় বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী প্রতীক ও চিত্রায়ন থাকে। যেমন, ফুল, ফল, ধান, পাখি, নদী, ইত্যাদি।শহরে বাংলা নববর্ষ পালন বেশ জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে।গ্রামে বাংলা নববর্ষ পালনও বেশ জাঁকজমকপূর্ণ। এদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে সবাই নতুন জামা-কাপড় পরে। এরপর নতুন বছরের শুভেচ্ছা বিনিময় করা হয়। এদিন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।গ্রামে বাংলা নববর্ষের অন্যতম আকর্ষণ হল মেলা। এসব মেলায় বিভিন্ন ধরনের পণ্যসামগ্রী বিক্রি করা হয়। যেমন, খেলনা, মিষ্টি, পিঠা, ইত্যাদি। এছাড়াও, মেলায় বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। গ্রামে বাংলা নববর্ষের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ রীতি হল হালখাতা। হালখাতা হল ব্যবসায়ীদের নতুন বছরের হিসাব শুরু করার রীতি। এদিন ব্যবসায়ীরা তাদের পুরনো বছরের হিসাব চুকিয়ে দেয় এবং নতুন বছরের হিসাব শুরু করে। বাংলা নববর্ষের মাধ্যমে মানুষ নতুন বছরের নতুন আশা ও সম্ভাবনায় উদ্দীপ্ত হয়। এই উৎসবের মাধ্যমে মানুষ নতুন বছরকে আরও সুন্দর ও সমৃদ্ধ করার জন্য অনুপ্রাণিত হয়। বাংলা নববর্ষ একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব।