নিজের সম্পর্কে ১০ টি বাক্য বাংলায় 

নিজের সম্পর্কে ১০ টি বাক্য বাংলায় 

নিজের সম্পর্কে ১০ টি বাক্য বাংলায় 

বিভিন্ন জব এর ভাইভা তে খুব সাধারন একটি প্রশ্ন হচ্ছে ‘নিজের সম্পর্কে  বলুন‘ বা ‘নিজের সম্পর্কে ১০ টি বাক্য’ বলুন।  অনেকেই নিজের সম্পর্কে বলতে গিয়ে নিজের বাসা,  শিক্ষাগত যোগ্যতা আরো অনেক তথ্য দিলেও ভাইভা বোর্ডে উপস্থিত সদস্যদের ইম্প্রেস করতে পারেনা। ভাইভা বোর্ডে শুরুতেই এই প্রশ্ন করার মাধ্যমে সেই ব্যক্তি সম্পর্কে মোটামুটি একটা ভাল ধারনা আসে৷ কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ ভাইভা বোর্ডের মূল্যবান সময় কে নষ্ট করেন।

নিজের সম্পর্কে ১০ টি বাক্য বাংলায় 

 ভাইভা বোর্ডে নিজের সম্পর্কে অল্প কিছু কথা বলেই সদস্যদের নিজের প্রতি পজিটিভ ইম্প্রেশন আনা সম্ভব। আজকের আর্টিকেলে সেরকম ই দশটি কথা শেয়ার করব যা আপনি ভাইভা বোর্ডে গুছিয়ে বলতে পারেন।

১. সিভিতে যা দেয়া নেই সেই তথ্য দেয়ার চেষ্টা করুন।

প্রথমে নিজের নাম এবং আপনি কোথা থেকে এসেছেন শুধু এতটুকু বলুন। অনেকেই আছে পরিচয় দিতে যেয়ে কয়েক মিনিট ধরে নাম পরিচয় ঠিকানা বাবা মায়ের পরিচয় দিতেই সময় শেষ করে৷ মনে রাখবেন নিজের ব্যক্তিগত পরিচয় ছাড়া চাকরিদাতা আর কোনো কিছু জানতে চায়না। অল্প কথায় নিজের ব্যপারে ভাল ধারনা দিতে হবে। অনেক সময় সিভিতে নিজের সম্পর্কে সব কিছু দেয়া সম্ভব হয় না। তাই চেষ্টা করুন আপনার সিভিতে কোন বিষয় টি নেই যেটি চাকরিদাতা জানলে আপনার উপর ভাল ধারনা তৈরি হবে। 

২. আমার কম্পিউটারের বেসিক এবং এডভান্স  স্কিল সম্পর্কে ধারনা আছে।

 

আপনি যখন কোনো ভাইভা তে যাবেন তখন আপনার মত অনেকেই ভাইভা দিতে যায়। ভাইভা বোর্ড থেকে তাদেরই সিলেক্ট করে যাদের স্কিল বেশি আছে বা অনেক বিষয়ের উপর জ্ঞান আছে। তাই ভাইভা বোর্ডের নিজের স্কিল শেয়ার করুন। যেমন আপনি কম্পিউটার এর বেসিক প্রোগ্রাম যেমন মাইক্রোসফট,  এক্সেল ছাড়াও অনেক বিষয়ে পারদর্শী।  তাহলে অবশ্যই সেগুলো শেয়ার করুন। 

৩. আমি চ্যালেঞ্জ গ্রহন করতে ভালবাসি

 

ভাইভা বোর্ডে নিজের সম্পর্কে বলা এই বাক্যটি ভাইভা বোর্ডের সদস্যদের নিজের প্রতি পজিটিভ ইম্প্রেশন আনতে সাহায্য করে৷ প্রফেশনাল কাজে সব সময় চ্যালেঞ্জ থাকে৷ আর যদি আপনি চ্যালেঞ্জ গ্রহন করতে ভালবাসেন তাহলে এটা আপনার প্রফেশনাল লাইফে অনেক বেশি ইফেক্টিভ হবে। 

৪. আমি সোস্যাল ওয়ার্ক করতে ভালবাসি

 

সোস্যাল ওয়ার্কিং বা সোসাইটিতে ভোলান্টিয়ার হিসেবে কাজ করা প্রশংসনীয় একটি কাজ। তাই নিজের সম্পর্কে যখন এই বাক্যটি বলবেন তখন ভাইভা বোর্ডের সদস্যদের আপনার প্রতি পজিটিভ ধারনা তৈরি হবে। 

৫. আমি  নিজের ব্যপারে সন্তুষ্ট হতে না পারলেও সবাইকে সন্তুষ্ট করতে পারি

 

নিজের ব্যপারে বলা ভাইভা বোর্ডে  সব থেকে পাওয়ারফুল একটি কথা এই বাক্যটি। যখন আপনি বলবেন আপনি নিজের ব্যপারে সন্তুষ্ট হতে পারেন না কিন্তু অন্যকে সন্তষ্ট করতে পারেন তখন চাকরিদাতা ধরে নিবেন আপনি ব্যক্তি হিসেবে অনেক হেল্পফুল এবং দায়িত্বের সাথে কাজ করতে পছন্দ করেন। আপনাকে কোনো কাজ দিলে সেই কাজ অন্যকে সন্তুষ্ট করে। 

৬. আমি কঠোর পরিশ্রম করতে ভালবাসি

 

যারা কঠোর পরিশ্রম করতে ভালবাসেন বা কঠোর পরিশ্রম করে অভ্যস্ত সেই ব্যক্তিরা চাকরির ক্ষেত্রে অন্য সবার থেকে বেশি গুরুত্ব পায়। কারন কর্মী হিসেবে প্রতিটি প্রতিষ্ঠান চায় একজন কঠোর পরিশ্রমী কর্মী। কঠোর পরিশ্রমী কর্মী থাকলে যে কোনো প্রতিষ্ঠান খুব দ্রুত লক্ষ্যে  এগিয়ে যেতে পারে। 

৭. চাকরির ধরন বুঝে নিজের শখ বা পছন্দের কথা বলুন

 

একটি কথার মাধ্যমেই আপনি খুব সহজে ভাইভা বোর্ডের সদস্যদের নজরে আসতে পারেন। কাজের প্রতি ভাললাগা বা ভালবাসা থাকলে সেই কাজ দ্রুত শেষ হয় এবং সেই কাজের মাধ্যমে খুব দ্রুত সফল হওয়া যায়। এ জন্য অনেক সময় দেখা যায় চাকরির বিজ্ঞাপন গুলোতে শর্ত হিসেবে দেয়া থাকে এই কাজের প্রতি আলাদা ভাবে ইন্টারেস্ট বা ভাললাগা থাকলে তাদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে। যেমন আপনি একটি ইউনিভার্সিটির লেকচারার পদে ভাইভা দেয়ার জন্য গেছেন। আপনি যদি নিজের সম্পর্কে বলেন যে আমি পড়াতে বা টিচিং করতে ভালবাসি/ আমি নিজেকে একজন ভাল মেন্টর মনে করি৷ তাহলে অন্যান্য চাকরিপ্রার্থীদের থেকে বেশি অগ্রাধিকার পাবেন। তাই ভাইভা বোর্ডে যে ধরনের জবের জন্য যাবেন সেই অনুযায়ী নিজের হবি বা শখ বলুন। 

৮. আমি ক্রিয়েটিভ কাজ করতে ভালবাসি

 

কাজের মধ্যে ক্রিয়েটিভিটি দেখালে বসদের কাছ থেকে একটু বাড়তি প্রশংসা মেলে। কারন ক্রিয়েটিভ ব্যক্তিরা অন্যদের থেকে কোনো কাজ বেশি সুন্দর করে করতে পারেন, অন্যদের থেকে বেশি দ্রুত শেষ করতে পারেন। এ জন্য চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান গুলো সব সময় ক্রিয়েটিভ কর্মীদের বেশি অগ্রাধিকার দেন। তাই চাকরির ভাইভা তে নিজের সম্পর্কে এই বাক্য বলে অন্যদের থেকে বেশি এগিয়ে যেতে পারেন। 

৯. আমি খুব দ্রুত যে কোনো পরিবেশের সাথে নিজেকে খাপ খাওয়াতে পারি। 

 

অনেক সময় দেখা যায় নতুন পরিবেশে যেয়ে বেশিরভাগ মানুষ নিজের কাজ করতে ব্যর্থ হয়ে যান। মানসিকভাবে বিভিন্ন বাধার সম্মুখীন হন নতুন পরিবেশের জন্য। যে কারনে কাজের প্রডাক্টিভিটি কমে যায় এবং এর ক্ষতিপূরণ প্রতিষ্ঠান কে দিতে হয়৷ কিন্তু যে ব্যক্তিরা খুব সহজে নতুন পরিবেশের সাথে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে পারে। অন্যদের চেয়ে সেই ব্যক্তিরা তত দ্রুত নিজের কর্মক্ষেত্রে এগিয়ে যায়। তাই ভাইভা বোর্ডে এই বাক্যটি বলে নিজের চাকরি নিশ্চিত করতে পারেন। 

১০. আমি প্রতি সেকেন্ডকে শ্রদ্ধা করি

 

সময় হিসেব করি চলা ব্যক্তিরা সব সময় সবার কাছে বেশি প্রাধান্য পায়। আপনি যদি প্রতিদিনের কাজে সময় মেইন্টেইন করে চলেন তাহলে মনে করবেন আপনি অন্যদের থেকে এগিয়ে আছেন এবং আপনি বসের কাছে প্রিয় একটি ব্যক্তি। বসের দেয়া কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করা অথবা কাজের ডেডলাইন মিস না করা, নির্দিষ্ট সময়ে অফিসে যাওয়া প্রপফেশনাল লাইফে গুরুত্বপূর্ণ। তাই ভাইভা বোর্ডে নিজেকে সময়ের ব্যপারে সতর্কবান  ব্যক্তি হিসেবে তুলে ধরতে এই বাক্যটি বলতে পারেন। আপনার সব কথা বলা শেষ হলে প্রশ্ন করুন এগুলো ছাড়াও আপনি আমার সম্পর্কে কি কিছু জানতে চান।

শেষ কথা 

এই দশটি বাক্য চাকরি ভাইভা ছাড়াও যে কোনো জায়গায় নিজের সম্পর্কে একটা ভাল ধারনা অন্যদের দেওয়ার জন্য ব্যবহার করতে পারেন। তাই নিজের সম্পর্কে বলতে বললে কখনো নিজের পছন্দ বা অপছন্দ নিয়ে না বলে বরং আপনি কি জানেন এবং আপনি কেমন ব্যক্তিত্বের মানুষ সেই ধারনা দিন। যাতে করে চাকরিদাতা বুঝতে পারে কর্মী হিসেবে আপনি কেমন হতে পারেন। 

Also Read:  কোণ কাকে বলে ? কত প্রকার ও কি কি

 

Scroll to Top