সন্নিহিত কোণ কাকে বলে?
কোণ বলতে অল্প কথায় দুটি চিত্র দিয়ে গঠিত কাঠামো বা চিত্র। আমরা সমকোণ,সূক্ষ্মকোণ,স্থূলকোণ,সরল কোণের কথা জানলেও কোণের আরও অনেক প্রকারভেদ রয়েছে তা অনেকেরই অজানা। এই আর্টিকেলের মাধ্যমে কোণ কাকে বলে এবং প্রকারভেদ জানবো। এবং সন্নিহিত কোণের বিস্তারিত আলোচনা জেনে নেই সন্নিহিত কোণ মূলত দুটি কোণের একটি সাধারণ বাহু থাকাকে বুঝায়, সহজ কথায় দু’টি কোণের একটি সাধারণ বাহু থাকে তবে একটি কোণের অপর কোণের সন্নিহিত কোণ বলে। নিচে বিস্তারিত দেওয়া হলো।
কোণ কাকে বলে?কোণ কত প্রকার ও কি কি?
জ্যামিতিতে কোণ বলতে দুইটি রশ্মির মিলনস্থলকে বোঝায় এবং রশ্মি দুইটি একটি শীর্ষবিন্দুতে মিলিত হয়। দুইটি রশ্মির মাধ্যমে যে কোণ উৎপন্ন হয় তা একই সমতলে অবস্থান করে। অথবা,
দুইটি রশ্মির প্রান্তবিন্দু পরস্পর মিলিত হলে মিলিত বিন্দুতে কোণ উৎপন্ন হয়। অন্যভাবে বললে, দুইটি রশ্মির প্রান্তবিন্দু পরস্পর মিলিত হয়ে যে আকৃতি ধারণ করে তাকে কোণ বলে। যেমন:<abc একটি কোণ।
কোণের প্রকার অনেক ধরণের হয়ে থাকে। নির্দিষ্ট করে কোণের প্রকারভেদ করা যায় না।কোণের বিভিন্ন ধরণ আছে। কোন কোণ জোড়ায় অথবা একক ভাবে গঠিত হয়ে থাকে। তবে,কোণ প্রধানত দুই প্রকার। যথা:
১/ পরিমাণ ভেদে
২/ অবস্থান ভেদে
পরিমাণ ভেদে কোণের প্রকারভেদ
পরিমাণ ভেদে কোণ বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা:
১। সমকোণ
২। সূক্ষ্মকোণ
৩। স্থূল কোণ
৪। পূরক কোণ
৫। সম্পূরক কোণ
৬। প্রবৃদ্ধ কোণ
৭। সরল কোণ
অবস্থান ভেদে কোণের প্রকারভেদ
আবার অবস্থান ভেদে কোণকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা:
- বিপ্রতীপকোণ
- শিরকোণ
- একান্তরকোণ
- উন্নতিকোণ
- অনুরূপকোণ
- অবনতিকোণ
- সন্নিহিতকোণ
- কেন্দ্রস্থকোণ
- অস্বঃস্থকোণ
- বৃত্তস্থকোণ
- বহিঃস্থকোণ
- অধবৃত্তস্থকোণ
সন্নিহিত কোণ কাকে বলে?
দুটি কোণের শীর্ষবিন্দু ও একটি রশ্মি সাধারণ হলে এবং কোণ দুটি সাধারণ রশ্মির বিপরীত পাশে হলে, কোণ দুটিকে পরস্পর সন্নিহিত কোণ বলে।
দুইটি কোণের শীর্ষবিন্দু একই হলে সাধারণ বাহুর উভয় পাশের কোণদ্বয়কে সন্নিহিত কোণ বলে। পাশাপাশি অবস্থিত দুটি কোণ কে সন্নিহিত কোণ বলে।
একই সমতলে অবস্থিত একই শীর্ষবিন্দু বিশিষ্ট দুইটি কোণের একটি সাধারণ বাহু থাকলে যদি দুইটি আলাদা কোণ গঠিত হয় এবং কোণ দুইটি, সাধারণ বাহুর বিপরীত পার্শ্বে অবস্থিত হয়, তাহলে কোণদ্বয়কে পরস্পর সন্নিহিত কোণ বলে।
আবার, যদি একই শীর্ষবিশিষ্ট দুইটি কোণের একটি সাধারণ বাহু থাকে এবং কোণ দুইটির কোনো অভ্যন্তরস্থ বিন্দু সাধারণ না হয়, তাহলে কোণ দুইটিকে পরস্পর সন্নিহিত কোণ বলে।
সন্নিহিত কোণ অঙ্কন ও এর শর্ত
সন্নিহিত কোণ অঙ্কনে তিনটি শর্ত থাকতে হবে।
১৷ একটি সাধারণ শীর্ষবিন্দু।
২। একটি সাধারণ রশ্মি।
৩। দুইটি গঠিত কোণকে অবশ্যই সাধারণ রশ্মির বিপরীত পাশে হতে হবে।
এখন আমরা যদি সন্নিহিত কোণ অঙ্কন করতে চাই অবশ্যই উপরের তিনটি শর্তের দিকে লক্ষ রেখে অঙ্কন করতে হবে। ধরি OA রশ্মি OB রশ্মির প্রান্তবিন্দু মিলিত হয়ে <AOB একটি কোণ তৈরি করেছে। এখন আবার O বিন্দুতে আরও একটি রশ্মি মিলিত হয়ে <AOC অন্য একটি কোণ উৎপন্ন করেছে। এখানে OB একটি সাধারণ বাহুর উভয় পাশে দুটি কোণ অবস্থান করছে,এই দুটি কোণ পরস্পরের সন্নিহিত কোণ।
এখানে আমরা আরও একটি বিষয় বুঝে নেই যে, পূরক বা সম্পূরক কোণও পরস্পর পাশাপাশি থাকে৷ তাই সকল পূরক বা সম্পূরক কোণ সন্নিহিত কোণ কিন্ত সকল সন্নিহিত কোণ পূরক বা সম্পূরক কোণ হয় না।
পূরক বা সম্পূরক কোণ তখন ই হবে যখন দুটি কোণের পরিমাপ ৯০° বা ১৮০° হবে। কিন্তু সন্নিহিত কোণ ৯০°/১৮০° থেকে ছোট হতে পারে। যেমন ৫০°+২০°=৭০° যা পূরক বা সম্পূরক কোণ নয় এবং পাশাপাশি থাকার কারণে এরা সন্নিহিত কোণ।
সন্নিহিত কোণ এর বৈশিষ্ট্য
সন্নিহিত কোণের কিছু বৈশিষ্ট্য নিচে দেওয়া হলো:
সন্নিহিত কোণের বৈশিষ্ট্য
১. সন্নিহিত কোণদ্বয়ের শীর্ষবিন্দু সাধারণ বা একই হয়।
২. সন্নিহিত কোণ দুইটির একটি সাধারণ বাহু থাকে।
৩. সন্নিহিত কোণদ্বয়ের একটি কোণ অপর কোণের অংশ হতে পারে না।
৪. সন্নিহিত কোণদ্বয় সাধারণ বাহুর বিপরীত পাশে থাকে।
৫. সন্নিহিত কোণ একই সমতলে অবস্থান করে।
৬.সকল পূরক বা সম্পূরক কোণ সন্নিহিত কোণ, কিন্তু সকল সন্নিহিত কোণ পূরক বা সম্পূরক হতে পারে না।
শেষকথা
উপরের আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা কোণের সংজ্ঞা এবং প্রকারভেদের বিস্তারিত জানতে পারলাম, এবং সেই সাথে সন্নিহিত কোণ কাকে বলে এবং সন্নিহিত কোণের বৈশিষ্ট্য সহ একটি সন্নিহিত কোণ অঙ্কনের নিয়ম জানতে পারলাম। সন্নিহিত কোণ কোণের অবস্থান ভেদের প্রকারের মধ্যে পড়ে। সন্নিহিত কোণের বৈশিষ্ট্য পূরক বা সম্পূরক কোণের সাথে মিলে গেলেও আমরা ডিগ্রির মাপের দিকটা খেয়াল রাখার মাধ্যমে সঠিক ভাবে কোন আঁকবো।
Read more: পূরক কোণ কাকে বলে?