বর্গের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র ও এই বিষয়ে যাবতীয় তথ্য জানতে আগ্রহী হলে , আজকের এই লেখাটি আপনার জন্য।
বর্গের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র জানার আগে আমাদের জানা প্রয়োজন বর্গ ও পরিসীমা কি?
বর্গ কি?
বর্গ হলো একটি দ্বিমাত্রিক আকৃতি যার চারটি সমান বাহুর সমন্বয়ে গঠিত। বর্গের চারটি কোণ 90 ডিগ্রি কোণ তৈরি করে। বর্গ হলো একটি বিশেষ ধরনের চতুর্ভুজ।
বর্গের বৈশিষ্ট্যগুলো হলো:
- চারটি বাহুর দৈর্ঘ্য সমান।
- চারটি কোণ 90 ডিগ্রি কোণ তৈরি করে।
- প্রতিটি ত্রিভুজ সমকোণী।
- প্রতিটি মধ্যমা বর্গের লম্বদৈর্ঘ্যের সমান।
- প্রতিটি প্রতিসম রেখা বর্গের মধ্যমা।
পরিসীমা কি?
পরিসীমা হলো একটি বদ্ধ আকৃতির চারপাশের মোট দৈর্ঘ্য। উদাহরণস্বরূপ, একটি বর্গের পরিসীমা হলো তার চারটি বাহুর দৈর্ঘ্যের যোগফল। একটি বৃত্তের পরিসীমা হলো তার পরিধি।
বর্গের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র
একটি বর্গের পরিসীমা হলো চারটি বাহুর যোগফল। যেহেতু বর্গের চারটি বাহু সমান, তাই বর্গের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র হলো:
পরিসীমা = 4 * বাহুর দৈর্ঘ্য
উদাহরণস্বরূপ,
একটি বর্গের বাহুর দৈর্ঘ্য 5 সেমি হলে, পরিসীমা হবে:
পরিসীমা = 4 * 5 সেমি
সুতরাং, বর্গের পরিসীমা 20 সেমি।
এছাড়াও, বর্গের পরিসীমা নির্ণয়ের জন্য নিম্নলিখিত সূত্র ব্যবহার করা যেতে পারে:
পরিসীমা = 2 * (বাহুর দৈর্ঘ্য + বাহুর দৈর্ঘ্য)
এই সূত্রটি ব্যবহার করলেও একই উত্তর পাওয়া যাবে।
বর্গ ও রম্বসের পরিসীমা কি একই?
হ্যাঁ, বর্গ ও রম্বসের পরিসীমা একই হতে পারে। বর্গ হলো একটি বিশেষ ধরনের রম্বস, যার চারটি বাহু সমান। তাই, যদি একটি রম্বসের চারটি বাহু সমান হয়, তাহলে সেই রম্বসটি একটি বর্গ হবে।
বর্গের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র হলো:
পরিসীমা = 4 * বাহুর দৈর্ঘ্য
রম্বসের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র হলো:
পরিসীমা = 4 * বাহুর দৈর্ঘ্য
এই দুটি সূত্র একই, তাই বর্গ ও রম্বসের পরিসীমা একই হতে পারে।
বর্গের ক্ষেত্রফল নির্ণয়ের সূত্র
বর্গের ক্ষেত্রফল নির্ণয়ের সূত্র হলো:
ক্ষেত্রফল = (বাহুর দৈর্ঘ্য)²
বর্গের ক্ষেত্রফল ও পরিসীমা কি সমান হতে পারে
না, বর্গের ক্ষেত্রফল ও পরিসীমা সমান হতে পারে না। বর্গের ক্ষেত্রফল হলো বর্গের এক বাহুর দৈর্ঘ্যের বর্গ, অর্থাৎ, ক্ষেত্রফল = (বাহুর দৈর্ঘ্য)^2। বর্গের পরিসীমা হলো বর্গের চারটি বাহুর দৈর্ঘ্যের সমষ্টি।
সুতরাং, বর্গের ক্ষেত্রফল ও পরিসীমা সমান হতে পারে না।
বিভিন্ন বস্তুর পরিসীমা নির্ণয়ের সুত্র
বিভিন্ন বস্তুর পরিসীমা নির্ণয়ের জন্য বিভিন্ন সূত্র রয়েছে। কিছু সাধারণ সূত্র হলো:
- বর্গ: বর্গের পরিসীমা নির্ণয়ের জন্য নিম্নলিখিত সূত্রটি ব্যবহার করা যেতে পারে:
পরিসীমা = 4 * বাহুর দৈর্ঘ্য
- আয়তক্ষেত্র: আয়তক্ষেত্রের পরিসীমা নির্ণয়ের জন্য নিম্নলিখিত সূত্রটি ব্যবহার করা যেতে পারে:
পরিসীমা = 2 * (দৈর্ঘ্য + প্রস্থ)
- ত্রিভুজ: ত্রিভুজের পরিসীমা নির্ণয়ের জন্য নিম্নলিখিত সূত্রটি ব্যবহার করা যেতে পারে:
পরিসীমা = বাহুর দৈর্ঘ্য + বাহুর দৈর্ঘ্য + বাহুর দৈর্ঘ্য
- বৃত্ত: বৃত্তের পরিসীমা নির্ণয়ের জন্য নিম্নলিখিত সূত্রটি ব্যবহার করা যেতে পারে:
পরিসীমা = 2 * π * ব্যাসার্ধ
বর্গের পরিসীমা সম্পর্কিত গাণিতিক সমস্যা ও সমাধান
প্রশ্ন: একটি বর্গের বাহুর দৈর্ঘ্য 5 সেমি। বর্গের পরিসীমা কত?
সমাধান:
পরিসীমা = 4 * বাহুর দৈর্ঘ্য
পরিসীমা = 4 * 5 সেমি
পরিসীমা = 20 সেমি
উত্তর: 20 সেমি
প্রশ্ন: একটি বর্গের পরিসীমা 36 সেমি। বর্গের বাহুর দৈর্ঘ্য কত?
সমাধান:
পরিসীমা = 4 * বাহুর দৈর্ঘ্য
36 সেমি = 4 * বাহুর দৈর্ঘ্য
বাহুর দৈর্ঘ্য = 36 সেমি / 4
বাহুর দৈর্ঘ্য = 9 সেমি
উত্তর: 9 সেমি
প্রশ্ন: একটি বর্গের বাহুর দৈর্ঘ্য 10 সেমি এবং 12 সেমি হলে, বর্গ দুটির পরিসীমার পার্থক্য কত?
সমাধান:
বর্গ ১ এর পরিসীমা = 4 * 10 সেমি
= 40 সেমি
বর্গ ২ এর পরিসীমা = 4 * 12 সেমি
= 48 সেমি
পরিসীমার পার্থক্য = 48 সেমি – 40 সেমি
= 8 সেমি
উত্তর: 8 সেমি
প্রশ্নঃ একটি বর্গের পরিসীমা 12 সে.মি. । এর কর্ণের দৈর্ঘ্য কত?
সমাধানঃ
একটি বর্গের পরিসীমা = 4 * বাহুর দৈর্ঘ্য
একটি বর্গের কর্ণের দৈর্ঘ্য = √2 * বাহুর দৈর্ঘ্য
সুতরাং,
বাহুর দৈর্ঘ্য = পরিসীমা / 4
বাহুর দৈর্ঘ্য = 12 সে.মি. / 4
বাহুর দৈর্ঘ্য = 3 সে.মি.
কর্ণের দৈর্ঘ্য = √2 * বাহুর দৈর্ঘ্য
কর্ণের দৈর্ঘ্য = √2 * 3 সে.মি.
কর্ণের দৈর্ঘ্য = 3√2 সে.মি.
অতএব, একটি বর্গের পরিসীমা 12 সে.মি. হলে, এর কর্ণের দৈর্ঘ্য 3√2 সে.মি. হবে।
বর্গের সূত্র সমূহ
বর্গের সূত্রগুলি নিম্নরূপ সারণী আকারে উপস্থাপন করা যেতে পারে:
সূত্র | ব্যাখ্যা |
পরিসীমা = 4 * বাহুর দৈর্ঘ্য | বর্গের চারটি বাহুর দৈর্ঘ্যের যোগফলকে পরিসীমা বলে। |
ক্ষেত্রফল = বাহুর দৈর্ঘ্য * বাহুর দৈর্ঘ্য | বর্গের ক্ষেত্রফল হলো বর্গের বাহুর দৈর্ঘ্যকে নিজে দ্বারা গুণ করে পাওয়া যায়। |
কর্ণের দৈর্ঘ্য = √2 * বাহুর দৈর্ঘ্য | বর্গের কর্ণ হলো বর্গের চারটি বাহুর সমষ্টির বর্গমূল। |
শেষ কথা
আজকের এই লেখায় আমরা বর্গের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র ও এই সম্পর্কিত আরো কিছু সূত্র ও বিষয় সম্পর্কে জেনেছি। আমাদের এই ব্লগে নিয়মিত এই জাঁতীয় লেখা পড়তে পুশ নোটিফিকেশন অন করে দিন। ধন্যবাদ।