প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, বাংলাদেশ একটি বৈচিত্র্যময় দেশ, যার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যও বৈচিত্র্যময়। এই বৈচিত্র্য বাংলাদেশের উৎসবগুলিতেও প্রতিফলিত হয়। বাংলাদেশের উৎসবগুলি ধর্মীয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহ্যের সমন্বয়ে গঠিত। আমাদের আজকের আয়োজন “বাংলাদেশের উৎসব” প্রবন্ধ রচনা নিয়ে যা ২০ টি গুরুপ্তপূর্ণ পয়েন্ট সহকারে লেখা হয়েছে। এই রচনাটি SSC, HSC, BCS সহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
ভূমিকা:
বাঙালিরা স্বভাবতই আনন্দ প্রিয়। আর এই জন্যই উৎসব বাঙালি প্রাণ। উৎসবের ছোয়া পেলেই বাঙালি মাতোয়ারা হয়ে ওঠে। যেকোনো উৎসবেই বাঙালি সকল ভেদাভেদ ভুলে যেয়ে ধনী গরীব মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় । বাংলাদেশের উৎসব আমাদের হাজার বছরের ঐতিহ্য আর এই উৎসব আমাদের ঐতিহ্যের বাহক। বাংলাদেশের প্রতিটি উৎসব ঘরে ঘরে আনন্দ নিয়ে আসে। বাংলাদেশ যেমন ছবির মত সুন্দর তেমনি বাংলাদেশের মানুষ তেমনি সহজ সরল। বাংলাদেশ বিভিন্ন ঋতুতে পাগল করা রুপ নিয়ে জেগে ওঠে আর এই রুপকে পরিপূর্ণতা এনে দেয় বাংলাদেশের বিভিন্ন উৎসব। সারা বছর উৎসব লেগেই থাকে বাংলাদেশে। তাই কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে বলেছেন-
“জননী, তােমার শুভ আহ্বান।
গিয়েছে নিখিল ভুবনে
নতুন ধানে হবে নবান্ন
তােমার ভবনে ভবনে।”
উৎসব কি :
যে কোনো ধরনের আনন্দ অনুষ্ঠানকে উৎসব বলা হয়। উৎসব মানুষের মনের সকল দুশ্চিন্তা হতাশা দূর করে প্রানবন্ত করে তোলে। মানুষ মুলত আনন্দ লাভের জন্যই উৎসব পালন করে থাকে৷ উৎসবের মাধ্যমেই পারিবারিক এবং সামাজিক ভাবে মানুষের মধ্যে বন্ধন তৈরি হয়। উৎসব মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ দূর করার বার্তা নিয়ে আসে। তাই উৎসব এলে ধনী গরীব হিন্দু মুসলিম সবার মধ্যে আনন্দ দেখা দেয়। উৎসব কে ইংরেজি পরিভাষায় Festival বলা হয়৷ যদিও Festoval বলতে সামাজিক অনুষ্ঠানকে বোঝায়।
বাংলাদেশের উৎসবের শ্রেণীবিভাগ :
কথায় আছে,
” বার মাসে তের পার্বণ।”
বাংলাদেশে বছর জুরে বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান লেগেই থাকে। কখনো সামাজিক অনুষ্ঠান কখনো বা জাতীয় কখনো বা পারিবারিক অনুষ্ঠান। আনন্দপ্রিয় বাঙালি জাতি সব সময় আনন্দ উৎসব নিয়ে ব্যস্ত থাকতে পছন্দ করে৷ সেখান থেকেই বাংলাদেশকে নিয়ে এই প্রবাদটি প্রচলিত। বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। এগুলোকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন:
১. ধর্মীয়
২.সামাজিক
৩. জাতীয় এবং
৪. সাংস্কৃতিক উৎসব।
বাংলাদেশের ধর্মীয় উৎসব:
বাংলাদেশে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ বাস করে থাকে। হিন্দ, মুসলিম, বৌদ্ধ এবং খ্রিস্টান। এই চার ধর্মের মানুষ বাংলাদেশে দেখা যায়। প্রত্যেকটি ধর্মে রয়েছে নিজস্ব উৎসব। উৎসব গুলোর মধ্যে মুসলমানরা রয়েছে – ঈদুল ফিতর, ঈদুল আযহা, ঈদ ই মিলাদুন্নবী এবং মহরম। হিন্দুদের প্রধান উৎসব গুলোর মধ্যে রয়েছে – কালী পূজা, সরস্বতী পূজা। বৌদ্ধদের প্রধান উৎসব হচ্ছে বৌদ্ধ পূর্ণিমা এবং খ্রিস্টানদের সব থেকে বড় উৎসব হচ্ছে বড়দিন।
ধর্ম আলাদা হলেও বাংলাদেশের মানুষ প্রত্যেকে প্রত্যেকের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে এবং আনন্দ ভাগাভাগি করে। বাঙালি জাতি বলে থাকে,
“ধর্ম যার যার উৎসব সবার”
তাই ধর্মীয় সব ভেদাভেদ ভুলে যেয়ে সবাই সবার উৎসবে অংশগ্রহণ করে।
ঈদ
মুসলিম ধর্মের মধ্যে সবথেকে বড় উৎসব হলো ঈদ। ঈদ মানে আনন্দ ঈদ মানেই খুশি। মুসলিমদের মধ্যে ঈদ আসে আনন্দ আর মিলনের বার্তা নিয়ে। তাই মানুষ গরিব ধনীর সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে সুখ দুঃখ আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়। তারা ভুলে যায় সকল হিংসা-বিদ্বেষ, দুঃখ-বেদনা। বাংলাদেশের ছোট বড় সবখানেই বেশ সাড়ম্বরেই পালিত হয় ঈদ। ঈদ আসে বছরে দুবার। প্রথমে আসে ঈদুল ফিতর এবং পরে আসি ঈদুল আযহা। রমজান মাসে মুসলমানগণ দীর্ঘ এক মাস রোজা পালন করে ঈদুল ফিতরের মধ্য দিয়ে রোজার সমাপ্তি ঘটায়। মুসলমানদের কাছে আরবি রমজান মাস হচ্ছে সিয়াম সংযম সাধনার সময়। রমজানের প্রথম দিন থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত রোজা পালিত হয়। শাওয়াল মাসের ১ তারিখে পালন করা হয় ঈদুল ফিতর।
ঈদুল ফিতরের আমেজ শেষ হতে না হতেই খুশির বার্তা নিয়ে আসে ঈদুল আযহা। জিলহজ মাসের ১০ তারিখে ঈদুল আযহা পালন করা হয়। এই ঈদকে কোরবানির ঈদে বলা হয়। এই ঈদে মুসলিমরা সামর্থ্য অনুযায়ী ঘরে ঘরে কোরবানি দেয়। গরিব দুঃখী এবং আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে মাংস বিলি করা হয়। সবাই ভুলে যায় সকল ভেদাভেদ। মুসলমানরা ঈদের দিন সবাই সামর্থ্য অনুযায়ী নতুন পোশাক পরে। ছেলেরা নতুন পোশাক পরে ঈদগাহ মাঠে যায় নামাজ পড়তে। নামাজ শেষে ছেলেরা একে অন্যের সাথে কোলাকুলি করে। সবাই আত্মীয় স্বজনের বাসায় বেড়াতে যায়। আর ছোট ছোট বাচ্চারা নতুন জামা পড়ে খুশিতে চারদিকে ছোটাছুটি করে। ঈদকে কেন্দ্র করে ঈদগাহ মাঠের আশেপাশে ছোট বড় মেলা বসে। সেখানে হরেক রকমের খেলনা, মিষ্টি এবং বিভিন্ন জিনিস পাওয়া যায়। এভাবেই ঈদ মুসলমানদের মধ্যে খুশির বার্তা নিয়ে আসে। রমজান ঈদকে নিয়ে কাজী নজরুল ইসলামের একটি গান রয়েছে –
“ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ
তুই আপনাকে আজ বিলিয়ে দে, শোন আসমানী তাগিদ।
তোর সোনা-দানা, বালাখানা সব রাহে লিল্লাহ
দে যাকাত, মুর্দা মুসলিমের আজ ভাঙাইতে নিঁদ
ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ।”
মহররম :
হ্যাঁ মহরম হচ্ছে মুসলমানদের জন্য বিষাদময় এবং ভাব গম্ভীর উৎসব। এই মাসের দশ তারিখে হযরত মুহাম্মাদ সা. এর নাতি ইমাম হোসেন কারবালার প্রান্তরে শহীদ হয়েছিল। এই ঘটনার জন্য মুসলিমরা এই দিনটি শোক দিন হিসেবে পালন করে।
শব- ই – বরাত:
শব ই বরাত শব্দের অর্থ শৌভাগ্য রজনী। এটি মুসলিমদের বড় উৎসবের মধ্যে একটি। এই দিনে মুসলিমদের পরবর্তী বছরের ভাগ্য নির্ধারন করা হয়।
ঈদ ই মিলাদুন্নবী:
হযরত মুহাম্মাদ সা. এর জন্মদিন উপলক্ষে এই দিনটি ইবাদাত এর মধ্য দিয়ে পালন করা হয়।
দুর্গাপূজা:
দূর্গাপূজা হিন্দুদের বড় পূজা। এই পূজা শরৎকালে হয়। এই পূজা তিন ভাগে বিভক্ত। সপ্তমি, অষ্টমি এবং নবমী। কয়েক দিন ধরে হিন্দুরা জাকজমক ভাবে এই পূজা পালন করে। বিভিন্ন মন্ডপে ঘুরে বেড়ায়। পূজা উপলক্ষে অনেক জায়গায় গান নাচ বা মেলার আয়োজন করা হয়। রাতে দেবীকে উদ্দেশ্য করে আরতি হয়। দশমীর দিন প্রতিমা নদীতে বিসর্জন দিয়ে পূজা সমাপ্তি ঘোষনা করা হয়।
রথযাত্রা:
রথযাত্রা হিন্দুদের আর একটি বড় উৎসব। এই যাত্রাটি জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রা থেকে শুরু হয়। বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় এই যাত্রা পালন করা হয়। এই উঠসব ছাড়াও হিন্দুদের আরো অনেক উৎসব রয়েছে। যেমন: লক্ষী পূজা, কালীপূজা, জন্মাষ্টমী ইত্যাদি।
বুদ্ধ পূর্ণিমা :
বুদ্ধ পূর্ণিমা বৌদ্ধদের প্রধান উৎসব। বুদ্ধ পূর্ণিমাকে বৈশাখী পূর্ণিমা বলা হয়। গৌতম বুদ্ধের বোধি লাভের কথা স্মরণ করে বৌদ্ধ বাণী স্মরণ করা হয়।
বড়দিন:
বড়দিন খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সব থেকে বড় উৎসবের দিন। খ্রিস্টান ধর্মের যিশুর জন্মদিন উপলক্ষে এই দিন পালন করা হয়। প্রতিবছর ২৫ই ডিসেম্বর বড় দিন পালন করা হয়।
বাংলাদেশের সামাজিক উৎসব
বাংলাদেশে সারা বছর বিভিন্ন অনুষ্ঠান লেগেই থাকে। সামাজিক অনুষ্ঠান গুলোর মধ্যে বাংলা নববর্ষ, হালখাতা, নবান্ন, পৌষ পার্বণ, ভাইফোঁট, শ্রাদ্ধ , জন্মদিন, খতনা ইত্যাদি।
বাংলা নববর্ষ
বাঙ্গালীদের মধ্যে সবথেকে বড় অনুষ্ঠান হচ্ছে বাংলা নববর্ষ। বাংলা বছরের বৈশাখ মাসের প্রথম দিনে বাংলা নববর্ষ পালন করা হয়। বাংলা নববর্ষ বহু বছর থেকে বাঙালিরা পালন করে আসছে। এটি বাঙ্গালীদের ঐতিহ্যবাহী উৎসব। ইতিহাসের দিক থেকে এই দিনটি তারপর অন্য একটি দিন। বাংলাদেশের শহর,গ্রাম সবখানেই নববর্ষ পালন করা হয়। ব্যবসায়ীরা এই দিনে নতুন হিসেবের খাতা খুলে। সেই উপলক্ষে মিষ্টি বিতরণ করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়। রমনার বটমূলে সারাদিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
নবান্ন:
নবান্ন হল বাঙ্গালীদের নতুন ধান ঘরে তোলার উৎসব। হেমন্তকাল উৎসব পালন করা হয়। বাঙালিরা যখন ধান কেটে নতুন ধান ঘরে আনে তখন পিঠাপুলের আয়োজন করা হয়। নবান্ন উপলক্ষে বিভিন্ন ধরনের পিঠা, পায়েস কোরমা পোলাও এর আয়োজন করা হয়।
“জননী, তোমার শুভ আহবান।
গিয়েছে নিখিল ভুবনে
নতুন ধানে হবে নবান্ন
তোমার ভবনে ভবনে।”
পৌষ পার্বণ :
পৌষ পার্বণকে বাঙ্গালীদের পিঠা উৎসব বলা হয়। এই দিনে বাঙ্গালীদের ঘরে ঘরে পিঠা বানানোর প্রতিযোগিতা শুরু হয়। হরেক রকমের পিঠাপুলি দিয়ে ভরে যায় বাংলার প্রতিটি ঘর। বাঙ্গালীদের গ্রামীণ জীবন পিঠা খাওয়ার উৎসবের মেতে উঠে।
বাংলাদেশের জাতীয় উৎসব
উৎসব লোকাচারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ তা নয়। আমাদের দেশে এমন কিছু উৎসব রয়েছে যেগুলো সামাজিক এবং ধর্মীয় উৎসব কোনটির মধ্যেই পড়ে না। বাঙালি ও বাঙালি সবাই মিলেমিশে এক হয়ে জাতীয় উৎসব পালন করে। এরকম কিছু উৎসবের নাম হলো – একুশে ফেব্রুয়ারি, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস।
একুশে ফেব্রুয়ারি
একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারী বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্র ভাষায় প্রতিষ্ঠিত করতে সালাম,বরকত, রফিক এবং জব্বার সহ অনেকে শহীদ হন। তাদের স্মরনে এই দিনে শহীদ মিনারে ফুল দেয়া হয়।
স্বাধীনতা দিবস
২৫ শে মার্চ রাতে পাকিস্তানিরা বাঙ্গালীদের উপর হামলা করে অসংখ্য মানুষকে মেরে ফেলে। তারা বাঙালিদের নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার জন্যই হত্যাকাণ্ড শুরু করে। কিন্তু পরের দিনে ২৬ শে মার্চ প্রথম প্রহরে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। এই উপলক্ষে স্বাধীনতা দিবস পালন করা হয়।
বিজয় দিবস
বাঙালিরা দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ কে শত্রুমুক্ত করে। এই কারণে এই ১৬ ডিসেম্বর এই দিনটিকে শহীদ দিবস হিসেবে পালন করা হয়। মুক্তিযুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন এই দিনে শ্রদ্ধা ভরে তাদের স্মরণ করা হয়। বিভিন্ন স্কুল কলেজে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক উৎসব :
আমরা সবাই জানি বাঙালি সংস্কৃতি অনেক দিনের পুরনো। বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক উৎসব হিসেবে যাত্রা, খেলাধুলা, নাটক, সার্কা, মেলা, বর্ষবরণ, সংগীতা অনুষ্ঠান, রবীন্দ্র জয়ন্তী ইত্যাদি সাংস্কৃতিক উৎসব হিসেবে পরিচিত।
বইমেলা
বইমেলা বাঙালি এই পড়ুয়া জনগোষ্ঠীদের জন্য সবচেয়ে বড় এবং প্রিয় একটি উৎসব। কারণ এই সময় এক মাসব্যাপী বাংলা একাডেমি একুশে বইমেলার আয়োজন করে থাকে। সারা বছরের অপ্রকাশিত বই এই সময় প্রকাশ করা হয়। তবে সারা বছরব্যাপী বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে বইমেলার আয়োজন করা হয়। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় বই মেলা হচ্ছে বাংলা একাডেমি কর্তৃক আয়োজিত একুশে বইমেলা। পুরো ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে একুশে বইমেলা পালন করা হয়।
নজরুল জয়ন্তী
নজরুল জয়ন্তী কাজী নজরুল ইসলামের জন্মদিন উপলক্ষে উদযাপন করা হয়। এই দিন গান- নাচ, কবিতা আবৃত্তি সহ বিভিন্ন সংস্কৃতি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কাজী নজরুল ইসলামের স্মৃতি বিজড়িত স্থান ময়মনসিংহের ত্রিশালে নজরুল জয়ন্তীর আয়োজন করা হয়।
রবীন্দ্র জয়ন্তী
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন উপলক্ষে যে উৎসব পালন করা হয় তাকে রবীন্দ্রজয়ন্তী বলে। রবীন্দ্র জয়ন্তীতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সংগীত, কবিতা, গল্প ও উপন্যাসের প্রতযোগিতার আয়োজন করা হয়।
উৎসবের গুরুত্ব
মানুষের জীবনে উৎসবের গুরুত্ব অপরিসীম। মানব জীবনে উৎসবের তাৎপর্য অত্যন্ত গভীর ও ব্যাপক। জাতি হিসেবে আমরা স্বাধীন। তাই আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি রয়েছে।
- বিভিন্ন উৎসবের মধ্য দিয়ে ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সুস্পষ্ট পরিচয় পাওয়া যায়। উৎসবের মধ্য দিয়েই আমাদের আসল পরিচয় পাওয়া যায়। উৎসব শুরু হওয়ার সাথে সাথে সকল ব্যথা বেদনা জড়তা গ্লানি দূর হয়ে যায়।
- বাঙালি উৎসব সবকিছু ঊর্ধ্বে। উৎসব বাঙালির শক্তি, সাম্য, মৈত্রীর বিষয়কে স্থাপন করে।
- উৎসব যখন শুরু হবে তখন মানুষের মধ্যে কোন ভেদাভেদ থাকে না। যার ফলে বৈষম্য দূর হয়।
- জাতীয় উৎসব পালন করার মধ্য দিয়ে মানুষের মধ্যে দেশপ্রেম জাগ্রত হয়।
- ধর্মীয় উৎসবের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে নিজের এবং অন্যের ধর্মের প্রতি সম্মান শ্রদ্ধা জন্ম নেয়।
- স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস দেশ প্রেমের সত্তা কে জাগ্রত করে।
মানবজীবনে উৎসবের প্রয়োজনীয়তা
“জননী, তোমার শুভ আহবান।
গিয়েছে নিখিল ভুবনে
নতুন ধানে হবে নবান্ন
তোমার ভবনে ভবনে।”
উৎসব মানব জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। উৎ্বব মানব জীবনে আনন্দ, উল্লাস, এবং ঐক্যের বার্তা নিয়ে আসে। উৎসবের মাধ্যমে আমরা আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে উদযাপন করতে পারি, একে অন্যের প্রতি আমাদের আবেগ প্রকাশ করতে পারি এবং অন্যদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করতে পারি৷
মানব জীবনে উৎসবের প্রয়োজনীয়তা নিম্নরূপ:
ক. আনন্দ ও উল্লাস: উৎসব আমাদের জীবনে আনন্দ ও উল্লাস নিয়ে আসে। এটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সকল চাপ, দুশ্চিন্তা এবং গ্লানি দূর করে দেয়। আমাদের জীবনকে আরও সমৃদ্ধ করে তোলে।
খ. সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য উদযাপন: উৎসব আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে উদযাপন করার একটি অন্যতম উপায়। এটি আমাদের আমাদের অতীতের ঐতিহ্যকে লালন করতে সাহায্য করে।
গ. আবেগ প্রকাশ:
উৎসব আমাদের আবেগ প্রকাশ করার একটি সুযোগ। এটি আমাদের আনন্দ, দুঃখ, প্রেম, এবং অন্যান্য আবেগ প্রকাশ করতে সাহায্য করে। আত্নীয় স্বজন এবং প্রতিবেশীর প্রতি ভালবাসা বাড়িয়ে দেয়।
ঘ. সম্পর্ক গঠন: উৎসব অন্যদের সাথে সম্পর্ক গঠন এবং উন্নত করার একটি অন্যতম উপায়। এটি আমাদের সামাজিক বন্ধনকে শক্তিশালী করে।
সামাজিক জীবনে উৎসবের গুরুত্ব:
সামাজিক জীবনে উৎসবের গুরুত্ব ব্যাপক। উৎসব মানুষের আনন্দ অনুভূতি প্রকাশ করে। একটি উৎসবের মধ্য দিয়ে আত্মপরিচয় প্রকাশ পায়। উৎসব একটি জাতির দর্পণ হিসেবে কাজ করে। উৎসব মানুষের মধ্যে সকল ভেদাভেদ দূর করে দেয়। উৎসবে কোনো মলিনতা থাকে না কোনো দুঃখ থাকে না। উৎ।সব মানুষের সৃজনশীল মনেরই স্থুলিত ভাব-বিগ্রহ। তাইতো কবি বলেছেন-
“নিজন বিজন দিবসে
আজ উৎসবের ছটা
তাই প্রাণে লাগিয়ে দোলা
ওরে আয় সকলেই যাই মেলায়। “
জাতীয় জীবনে উৎসবের গুরুত্ব
জাতীয় জীবনে উৎসবের গুরুত্ব অপরিসীম। উৎসব একটি জাতির জীবনকে আরও সুন্দর, সমৃদ্ধ, এবং অর্থপূর্ণ করে তোলে। এটি একটি জাতিকে অন্যদের সামনে তুলে ধরতে সাহায্য করে। যার কারনে বিভিন্ন জাতির কাছে নিজেদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে তুলে ধরার সুযোগ পাওয়া যায়। উৎসব উদযাপন করে জাতীয় চেতনা জাগ্রত করা যায়।
“প্রতিদিন মানুষ ক্ষুদ্র, দিন, একাকী – কিন্তু উৎসবের দিন বৃহৎ- সেদিন সে সমস্ত মানুষের সঙ্গে একত্র হইয়া বৃহৎ -সেদিন।”
বাঙালির উৎসবের রুপান্তর
আদিম কাল থেকেই বাঙালিরা আনন্দ প্রিয় জাতি। আদিম যুগ থেকেই তারা উৎসব পালন করে আসছে। যখন আদিম মানুষ পশু শিকার করতো তখন থেকেই উৎসব পালন করা হতো। সে সময়ের যৌথ উদ্যোগে পশু স্বীকার করে সম্মিলিতভাবে সন্ধ্যার উৎসবে আগুন জ্বালিয়ে পশুর মাংস পুড়িয়ে, নেচে গেয়ে সবাই মিলে আনন্দে মেতে উঠত। ধীরে ধীরে সভ্যতার উন্নতির সাথে সাথে উৎসব পালনের রূপান্তর ঘটে।
উৎসবের প্রতিযোগিতা
উৎসব যে শুধু মানুষকে আনন্দই দেয় তা নয়। বাঙালির জীবনে উৎসব নিয়ে আসে মঙ্গল নিয়ে। এই উৎসবকে কেন্দ্র করেই মানুষের মধ্যে সৃজনশীলতা তৈরি হয়। মানুষ বিভিন্ন ধরনের ভাস্কর্য তৈরি করে, চিত্রশিল্পীরা সুন্দর সুন্দর চিত্র অঙ্কন করেন, সংগীত ও নৃত্যশিল্পীরা সংগীত ও নৃত্যের আয়োজন করে। তাই বলা যেতে পারে উৎসব মানুষকে সৃজনশীল করতে সাহায্য করে। উৎসব মানুষের সৃজনশীলতাকে মূল্যায়ন করে।
বাঙালির জীবনে উৎসব
যে জাতি উৎসব পালন করেনা সে জাতির মধ্যে কোনো প্রান থাকেনা। আদিম কাল থেকেই বাঙালিরা উৎসব পালন করে আসছে। আদিম কাল থেকে এখন পর্যন্ত বাঙালিরা নবান্, পার্বণ, গাজন,গম্ভীরা, টুসু, ভাদু, চরক, মহরম, ঈদ, নববর্ষ, আউনি বাউনি পালন করে আসছে। উৎসবই হচ্ছে এই বাঙালির প্রাণ।
বাংলাদেশের বৃহত্তম উৎসব পহেলা বৈশাখ
বাঙালি সবচেয়ে বড় উৎসব হলো পহেলা বৈশাখ। বাঙালি নতুন সাজে এই দিনটিকে বরণ করে। কোথাও কোথাও বৈশাখী শোভাযাত্রা বের হয়। বাঙালির এই আদিম উৎসবে শামিল হতে বিদেশ থেকেও অনেকে চলে আসে। পহেলা বৈশাখে নানা রকমের জিনিসপত্র বেছা কেনা করা হয়। পহেলা বৈশাখে যে শোভাযাত্রা বের হয় সেই শোভাযাত্রায় গরু ও মহিষের গাড়ি, পশুর মুখোশ, ঢোল বাজনা সহ পুরো এলাকা ঘুরে বেড়ায়। কয়েক দিনব্যাপী সারা বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় মেলা বসে। মেলায় হরেক রকমের সদাই, মিষ্টি, মিঠাই, মুড়ি মুড়কি, তিলের নাড়ু পাওয়া যায়। বাচ্চাদের জন্য মাটির বিভিন্ন তৈজস পত্র,ঘোড়া, পুতুল আরো অনেক কিছু পাওয়া যায়। মেলাকে কেন্দ্র করে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন-
“সবার চেয়ে আনন্দময়
ওই মেয়েটার হাসি
এক পয়সায় কিনেছে ও
তালপাতার এক বাশি।”
বাঙালির উৎসব প্রিয়তা
বাঙালি জাতি সব সময় আনন্দ করতে ভালোবাসে। জাতিগত ভাবে কিছুটা অলস হওয়ায় সব সময় আরাম আয়েশে কাটাতে ভালোবেসে। তাই সব ব্যবধান ভুলে যেয়ে একে অন্যের সাথে প্রেম প্রীতিতে একাকার হয়ে আনন্দ ভাগাভাগি করে। এ জন্যই কবি বলেছেন-
“একদিন ঠিক মাটিতে হারাবো তুচ্ছ জীবন নদী,
তার আগে সখী কোন ক্ষতি নেই উৎসব করি যদি।”
জনপ্রিয়তার সাথে উৎসবের সীমাবদ্ধতা
উৎসবগুলি একটি জাতির জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। উৎসব আনন্দ, ঐক্য, এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য উদযাপনের একটি সুযোগ প্রদান করে। যাইহোক, উৎসব এর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির সাথে সাথে কিছু সীমাবদ্ধতাও দেখা দিতে পারে। যেমন:
উৎসবের পরিবেশগত প্রভাব
উৎসব পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। উদাহরণস্বরূপ, উৎসব জন্য প্রচুর পরিমাণে বিদ্যুৎ, পানি, এবং অন্যান্য সংস্থান অপচয় করা হয়। এছাড়াও, উৎসবগুলোর জন্য প্রচুর পরিমাণে প্লাস্টিক, কাগজ, এবং অন্যান্য বর্জ্য উৎপন্ন হয়।
উৎসবের সামাজিক প্রভাব
উৎসবগুলি সামাজিক সমস্যাগুলিকে আরও তীব্র করে তুলতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, উৎসবগুলির সময় অপরাধ যেমন ইভটিজিং, মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার, এবং যৌন নির্যাতনের মতো সমস্যাগুলি বৃদ্ধি পেতে পারে।
উৎসবের সীমাবদ্ধতা
উৎসব জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির সাথে সাথে এর ব্যয়ও বৃদ্ধি পায়। যার কারনে উৎসবে সাধারণ মানুষ প্রবেশ করতে পারেনা। সাধারন মানুষের জন্য অপ্রবেশ্য করে তুলে। উৎসব এর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির সাথে সাথে তাদের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন আরও কঠিন হয়ে পড়ে। এতে উৎসব এর মান ও গুণমান হ্রাস পেতে পায়। উৎসবগুলির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির সাথে সাথে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আরও কঠিন হয়ে পড়ে। এতে উৎসবগুলিতে দুর্ঘটনা ও বিপর্যয়ের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
বাংলাদেশের উৎসব পর্যটন শিল্প অবদান রাখে
বাংলাদেশের উৎসবগুলি পর্যটন শিল্পে নিম্নলিখিতভাবে অবদান রাখে-
পর্যটকদের আকর্ষণ: বাংলাদেশ একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। দেশের সব উৎসবই পর্যটকদের আকর্ষণ করতে সাহায্য করে। উৎসব পর্যটকদের সামনে একটি দেশকে তুলে ধরে এবং স্থানীয় সংস্কৃতির সাথে সংযোগ স্থাপন করে।
পর্যটক থেকে আয় বৃদ্ধি: বাংলাদেশে যখন বিভিন্ন দেশ থেকে পর্যটক বেড়াতে আসে তখন আয় বৃদ্ধি পায়। দেশের উৎসব পর্যটন আয় বৃদ্ধি করে।
কর্মসংস্থান সৃষ্টি: বাংলাদেশের উৎসবগুলি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে সাহায্য করে। উৎসবের আয়োজনে, ঐতিহ্যবাহী পণ্য এবং খাবার বিক্রিতে এবং পর্যটকদের পরিষেবা প্রদানের কারনে লোকেদের চাকরির সুযোগ হয়।
উৎসব সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রকাশ ঘটে
উৎসবগুলো একটি সমাজের সামাজিক ও ধর্মীয় ঐতিহ্য ও মূল্যবোধ কে প্রতিফলিত করে।
সামাজিক মূল্যবোধ
উৎসব একটি সমাজের সামাজিক মূল্যবোধকে প্রকাশ করে। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, পহেলা বৈশাখ, বাংলা নববর্ষ উদযাপনের জন্য একটি জাতীয় উৎসব। এই উৎসবটি বাংলা সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই উৎসবের মাধ্যমে, বাঙালিরা তাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও মূল্যবোধকে উদযাপন করে।
উৎসব সমাজের বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে সম্প্রীতি ও সহযোগিতার প্রসারেও সহায়তা করে। উদাহরণস্বরূপ, ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহা, ইসলামের দুটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব, বাংলাদেশে সব ধর্মের মানুষ একসাথে উদযাপন করে। এই উৎসবগুলি সমাজের মধ্যে সম্প্রীতি বৃদ্ধি পায়।
ধর্মীয় মূল্যবোধ
উৎসবগুলি একটি সমাজের ধর্মীয় মূল্যবোধকে প্রকাশ করে। উদাহরণস্বরূপ, ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহা, ইসলামের দুটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব, ইসলামের মূল্যবোধকে প্রতিফলিত করে। এই উৎসবগুলির মাধ্যমে, মুসলমানরা তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস ও মূল্যবোধকে উদযাপন করে।
উৎসবগুলি ধর্মীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সংরক্ষণেও সহায়তা করে। উদাহরণস্বরূপ, দুর্গাপূজা, হিন্দুদের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব, হিন্দু ধর্মের মূল্যবোধকে প্রতিফলিত করে। এই উৎসবের মাধ্যমে, হিন্দুরা তাদের ধর্মীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে ধরে রাখে।
বাংলাদেশের উৎসবের সাংস্কৃতিক প্রভাব
বাংলাদেশের উৎসবগুলি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সংরক্ষণে সহায়তা করে। উদাহরণস্বরূপ, পহেলা বৈশাখ, বাংলা নববর্ষ উদযাপনের জন্য একটি জাতীয় উৎসব। এই উৎসবের মাধ্যমে, বাঙালিরা তাদের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি ও মূল্যবোধকে ধরে রাখে।
উৎসব সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানেও সহায়তা করে। ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহা, ইসলামের দুটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব যা বাংলাদেশের বিভিন্ন ধর্মের মানুষ একসাথে উদযাপন করে। এই উৎসবগুলির মাধ্যমে, বিভিন্ন ধর্মের মানুষ তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে অন্যদের সাথে শেয়ার করে।
উপসংহার
ঈশ্বর গুপ্ত যথার্থই বলেছিলেন যে —
“এত ভঙ্গ বঙ্গদেশ তবু রঙ্গে ভরা।”
কিন্তু বাঙালি আদিম কাল থেকে উৎসব পালন করে আসলেও এখন আর বাঙালির উৎসবে সেই আগের প্রাণ খুজে পাওয়া যায় না। বাংলার প্রাণের ঐতিহ্যবাহী উৎসব গুলো দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। আমাদের সবার উচিত নতুন প্রজন্মের সামনে আমাদের উৎসবগুলোকে তুলে ধরা। তাহলে হয়তো আমাদের প্রাণের উৎসবগুলোকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে পারবো।