প্রতিবেদন লেখার নিয়ম ২০২৪

প্রতিবেদন লেখার নিয়ম

দৈনন্দিন জীবনে আমরা বিভিন্নভাবে প্রতিবেদনের সাথে পরিচয় হই। শিক্ষাজীবন থেকে শুরু করে কর্মজীবন সকল ক্ষেত্রেই প্রতিবেদনের প্রয়োজন পড়ে। খবরের কাগজ থেকে শুরু করে টিভিতে বিভিন্ন খবরের প্রতিটি একেক ধরনের প্রতিবেদন। আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় স্কুল, কলেজে বিভিন্ন পরীক্ষায় প্রতিবেদন লিখতে হয়। রাষ্ট্রের যেকোনো ধরনের সমস্যায় উচ্চপদস্থ কোন ব্যক্তির দৃষ্টি আকর্ষণ পেতে কোন একটি দৈনিক পত্রিকায় সমস্যাটির উপর প্রতিবেদন জমা দেওয়া যায়। যা অনেক সময় বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। চাকরির ক্ষেত্রেও প্রতিবেদন বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজে লাগে যেমন বিভিন্ন মিটিং ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার কাছে প্রতিবেদন লিখতে হয়। তবে অনেকেই জানে না প্রতিবেদন লেখার নির্দিষ্ট নিয়ম সম্পর্কে। তাই আজকের আর্টিকেলে প্রতিবেদন লেখার নিয়ম সম্পর্কে সম্পূর্ণ আলোচনা করব। তাই চলুন দেরি না করে এখনই আর্টিকেলটা শুরু করা যাক।

 

প্রতিবেদন কাকে বলে

 প্রতিবেদনকে ইংরেজিতে রিপোর্ট বলা হয়। আরো সহজ করে বলতে গেলে, প্রতিবেদন হচ্ছে কোনো একটি ঘটনা কিংবা বিষয় সম্পর্কে তথ্য এবং অনুসন্ধানের বিস্তারিত বর্ণনা। প্রতিবেদন তৈরি করার কাজটি যিনি করেন তাকে প্রতিবেদক বলা হয়। একজন প্রতিবেদক কোনো প্রতিবেদন তৈরি করার পর সেটি নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেন।একটি প্রতিবেদনে সাধারণত যেকোনো ঘটনা বা বিষয় সম্পর্কে সাধারণ কিছু তথ্যের পাশাপাশি উপাত্ত, মতামত, ওই ঘটনার প্রভাব ইত্যাদিও উল্লেখ করা হয়। প্রতিটি প্রতিবেদন যথেষ্ট অনুসন্ধানের পর তৈরি করতে হয়‌। 

 

এর ফলে যারা প্রতিবেদনটি পড়বে তারা প্রতিবেদনের ঘটনা বা বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেয়ে যান। এছাড়াও আরো জেনে রাখা ভালো, প্রতিবেদনে উল্লেখ করা তথ্যগুলোতে মিথ্যার বা পক্ষপাতীত্বের কোনো স্থান নেই। বরং সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ জায়গা থেকে সঠিক তথ্য দিয়ে একেকটি প্রতিবেদন রচনা করতে হয়, এর ফলে  প্রতিবেদনটি পড়লে কেউ বিভ্রান্ত বোধ করেনা৷ এর পাশাপাশি প্রতিটি প্রতিবেদন লেখার সময় মানুষের বোঝার সুবিধার্থে সহজ ভাষা ও চলিত ভাষা ব্যবহার করা হয়‌ যাতে করে প্রতিবেদনের বিষয়বস্তু বুঝতে কারো সামান্যতম প্রতি অসুবিধাও না হয়।প্রতিবেদন কি তা বোঝার জন্য একটি উদাহরণ দেই। ধরুন, বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে আপনার এলাকায় একটি আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হলো। এখন প্রতিবেদন লেখার নিয়ম সম্পর্কে জেনে সেই অনুষ্ঠানের খুঁটিনাটি বিবরণ যদি কেউ লিখে পত্রিকায় পাঠান এবং সেটি যদি ছাপা হয়, তাহলে সেই লেখাটিকে একটি প্রতিবেদন বলা যেতে পারে। আশা করি প্রতিবেদন কি তা বুঝতে পেরেছেন। আসুন এবার প্রতিবেদন লেখার নিয়ম জানা যাক।

 

প্রতিবেদন কত প্রকার ও কি কি

প্রতিবেদন কয়েক প্রকার হয়ে থাকে নিচে তা উল্লেখ করা হলো,

 

১।সংবাদ প্রতিবেদন কি

যেকোনো সংবাদপত্রে প্রকাশের জন্য যে প্রতিবেদন লেখা হয়ে থাকে, সেটিকেই সংবাদ প্রতিবেদন বলা হয়। সংবাদ প্রতিবেদন এর মূল উদ্দেশ্য যেকোনো বিষয় বা সাম্প্রতিক ঘটনা সম্পর্কে পাঠকদের অবগত করা। যেকোনো ম্যাগাজিনে প্রকাশিত প্রতিবেদনকেও আমরা সংবাদ প্রতিবেদন বলতে পারি। এই আর্টেকেলে আমরা জানতে পারবো সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম সম্পর্কে। 

উদাহরণঃ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের পহেলা বৈশাখ উদযাপন সংক্রান্ত প্রতিবেদন।

 

২। তদন্ত প্রতিবেদন কি

আমাদের চারপাশে ঘটে যাওয়া কোন একটি ঘটনার সত্য মিথ্যা যাচাই করার জন্য যে  প্রতিবেদন লেখা হয়, সেটিকে তদন্ত প্রতিবেদন বলে। তদন্ত প্রতিবেদনের সাথে সংবাদ প্রতিবেদনের মূল পার্থক্য হচ্ছে তদন্ত প্রতিবেদনের প্রকৃতি তুলনামূলক বেশি অনুসন্ধানী হয়ে থাকে। এই প্রতিবেদন লেখার নিয়ম ও কিছুটা ভিন্নই বটে।

উদাহরণঃ আমাদের দেশে ভুয়া সার্টিফিকেট বানানো হয় কিনা সে সংক্রান্ত প্রতিবেদন। তদন্ত প্রতিবেদন লেখার নিয়ম সম্পর্কে জানতে আর্টিকেল টি সম্পূর্ণ পড়ুন।

 

৩। গবেষণা ভিত্তিক প্রতিবেদন কি

কোনো বিষয় সম্পর্কে বিস্তর গবেষণা করার পর বিভিন্ন তথ্য, উপাত্ত এবং জরিপের আলোকে যে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়, সেটিকেই গবেষণাভিত্তিক প্রতিবেদন বলে। এই ধরনের প্রতিবেদন তৈরি করতে সময় ও পরিশ্রম দুটিই অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। গবেষণা  প্রতিবেদন লেখার নিয়ম  জানতে আর্টিকেল টি সম্পূর্ণ পড়ুন। 

উদাহরণঃ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি সাধারণ জনগণের জীবনে কতটুকু প্রভাব ফেলেছে তা সম্পর্কিত প্রতিবেদন।

 

৪। দাপ্তরিক প্রতিবেদন কি

একটি প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে যে প্রতিবেদনগুলো লেখা হয়ে থাকে, সেগুলোকে মূলত দাপ্তরিক প্রতিবেদন বলা হয়ে থাকে। দাপ্তরিক প্রতিবেদনের মূল বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটি একটি প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক প্রতিবেদন। সেই হিসেবে এক একটি প্রতিষ্ঠানের দাপ্তরিক প্রতিবেদন একেক রকম হয়ে থাকে।দাপ্তরিক প্রতিবেদনকে আবার প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন এ দুটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা যায়। 

 

প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন লেখার নিয়ম হলো এই প্রতিবেদনে কোনো প্রতিষ্ঠানের একটি বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ ও খুঁটিনাটি তথ্য উল্লেখ করা হয়। এ কারণে এ প্রতিবেদনগুলোর আকার সাধারণত বেশ বড় হয়ে থাকে।অন্যদিকে অপ্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদনে একটি প্রতিষ্ঠানের ছোট কোনো পরিবর্তন, কোনো অনুষ্ঠান বা ইভেন্ট সম্পর্কে লেখা হয়ে থাকে। এ কারণে এ প্রতিবেদনগুলোর আকার বেশ ছোট হয়।

উদাহরণঃ কোন নির্দিষ্ট একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের গত এক বছরের উন্নতি সম্পর্কে লেখা প্রতিবেদন।

 

৫। প্রস্তাবনা প্রতিবেদন কি

প্রস্তাবনা প্রতিবেদন হচ্ছে সেই প্রতিবেদন যেটি কোনো সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লেখা হয়ে থাকে। অর্থাৎ প্রস্তাবনা প্রতিবেদন তখনই বানানো হয়ে থাকে, যখন কোনো সমস্যা সৃষ্টি হয়। এই প্রতিবেদনে যে সমস্যাটি সমাধান করা প্রয়োজন সেটি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে লেখা হয় যাতে করে কর্তৃপক্ষ যত দ্রুত সম্ভব সেই সমস্যা সমাধানের জন্য পদক্ষেপ নিতে পারে।

উদাহরণঃ এলাকার রাস্তা পরিষ্কারের জন্য সিটি কর্পোরেশনের কাছে লেখা প্রতিবেদন।

 

প্রতিবেদনের বৈশিষ্ট্য

প্রতিবেদন এর প্রকারভেদ ও প্রতিবেদন কি এই সম্পর্কে জেনে নিলেন। চলুন এবার জেনে নেয়া যাক প্রতিবেদনের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে।

 

১৷ যেকোনো প্রতিবেদনের ভাষা সহজ ও সবাই যেন বুঝতে পারে সেরকম হওয়া আবশ্যক। অর্থাৎ যথাসম্ভব প্রাঞ্জল ভাষায় প্রতিটি প্রতিবেদন লিখতে হয়। কেননা, প্রতিবেদনের মূল উদ্দেশ্য মানুষকে কোনো বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানানো। এ কারণেই দুর্বোধ্য ব্যাকরণ ও ভাষার সাহায্যে প্রতিবেদন লেখা যাবে না।

 

২। নির্দিষ্ট কাঠামো ও প্রতিবেদন লেখার নিয়ম অনুসরণ করে প্রতিবেদন তৈরি করতে হয়। আপনি চাইলেই ইচ্ছামতো যেকোনো একটি কাঠামো অনুসরণ করে একটি প্রতিবেদন তৈরি করে কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাতে পারবেন না। যেমনঃ আপনি যদি সংবাদ প্রতিবেদন হিসাবে কোন রকম একটি প্রতিবেদন পাঠান তাহলে সেই প্রতিবেদন ছাপা হবে না কারণ আপনি নির্দিষ্ট নিয়ম অনুসরণ করেননি।

 

৩। যিনি প্রতিবেদন তৈরি করবেন তাকে সবসময় নিরপেক্ষতার নীতি অবলম্বন করতে হবে। সবসময় মনে রাখতে হবে, যে বিষয়েই প্রতিবেদন তৈরি করুন না কেন, আপনি পক্ষে কিংবা বিপক্ষে কোনো দিকেই অবস্থান করতে পারবেন না।

 

৪। প্রতিবেদনে যেসব বিষয়বস্তু তুলে ধরা হবে ,সেগুলোকে ছোট ছোট অনুচ্ছেদের মাধ্যমে ভাগ করে উপস্থাপন করতে হবে। একইসাথে এটিও খেয়াল রাখতে হবে যেন পূর্ববর্তী অনুচ্ছেদের সাথে পরবর্তী অনুচ্ছেদের সাদৃশ্য বজায় থাকে৷

 

৫৷ প্রতিবেদনের ধরনের ওপর ভিত্তি করে এটির আকার যেন ঠিক থাকে সেটি খেয়াল রাখতে হবে। এক্ষেত্রে একটি বিষয় সবার জেনে রাখা উচিত। সেটি হলো প্রতিবেদনের আকার বাড়ানোর জন্য কোনো রকম অবান্তর আলোচনা প্রতিবেদনে করা যাবে না। বরং সবসময় প্রতিবেদনের যে বিষয় সেটির ওপরেই আলোকপাত করতে হবে।

 

৬। প্রতিবেদনে কখনোই সত্য নয় এমন কোনো তথ্য প্রদান করা যাবে না। সবসময় মনে রাখতে হবে একটি প্রতিবেদন তৈরি করা হয় কোনো বিষয় সম্পর্কে মানুষকে সঠিক ধারণা দেয়ার জন্য। এজন্য কোন প্রতিবেদন লেখার আগে যথেষ্ট গবেষণা করে নিতে হবে যাতে পাঠকদের মনে কোন প্রকার সন্দেহ না থাকে।

 

প্রতিবেদন লেখার নিয়ম

প্রতিবেদন লেখার নিয়ম রয়েছে। চলুন সেগুলো সম্পর্কে জেনে নিই:

 

১। শিরোনাম

একটি প্রতিবেদন পাঠকরা পড়বেন কিনা কিংবা কতৃপক্ষের দৃষ্টি যথাযথভাবে আকর্ষিত হবে কিনা, তা নির্ভর করে প্রতিবেদনের শিরোনামের ওপর। প্রতিবেদনের শিরোনাম এবার হতে হবে যাতে সেটা খুব বেশি বড় না হয় আবার খুব ছোট না হয় তবে সেখানে সকল প্রকার ইনফরমেশন থাকবে এবং প্রতিবেদনের বিস্তারিত বিষয়বস্তু সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ পাবে।

 

২। ভূমিকা

প্রতিবেদনের ভূমিকা অংশটির উদ্দেশ্য হলো যিনি প্রতিবেদনটি পড়বেন তাকে প্রতিবেদনটির আসল বিষয়বস্তু সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা প্রদান করা। সাধারণত প্রতিবেদনের ভূমিকায় প্রতিবেদনটি সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য প্রদান করা হয় না। বরং এখানে প্রতিবেদন সম্পর্কে এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরা হয় যাতে পাঠক প্রতিবেদনটি পড়ার জন্য আগ্রহী হয়ে ওঠে।

 

৩। মূল অংশ

যেকোনো প্রতিবেদনের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ অংশটি হলো এটির মূল অংশ। মূল অংশে যে বিষয় নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করছেন সে বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য, উপাত্ত, মতামত ইত্যাদি উল্লেখ করতে হয়।প্রতিবেদনটির এ অংশ কিভাবে লিখবেন তা প্রতিবেদনের ধরনের ওপর নির্ভরশীল। যেমনঃ যদি কোনো প্রাতিষ্ঠানিক বিষয় সম্পর্কে প্রতিবেদন লিখে থাকেন, তাহলে সে প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে সাধারণ কিছু তথ্য উল্লেখ করার পর সে বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা দিতে হয়।

 

যদি কোন একটি সমস্যা নিয়ে প্রতিবেদনটি লিখেন তাহলে সেই সমস্যা উল্লেখ করতে হবে এবং তার সমাধানও প্রতিবেদনে  বলতে হবে।এটি হলো প্রতিটি প্রতিবেদনের সাধারণ কাঠামো যা প্রতিবেদন লেখার নিয়ম হিসেবে সবার জানা থাকা প্রয়োজন। ওপরে উল্লেখ করা বিষয়গুলো ছাড়াও প্রতিটি প্রতিবেদনেই প্রতিবেদকের নাম, ঠিকানা, প্রতিবেদন তৈরির সময়, স্থান ইত্যাদিও উল্লেখ যাতে করে পাঠকরা বুঝতে পারে প্রতিবেদনটি কোথা থেকে এসেছে।

 

সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম

অন্যান্য প্রতিবেদনের চাইতে সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম বেশ সহজ। এই ধরনের প্রতিবেদনের ক্ষেত্রে একটি আকর্ষণীয় শিরোনাম বেশ গুরুত্ব বহন করে। কারণ যখন শিরোনাম আকর্ষণীয় হয়, তখনই পাঠকরা অন্যসব প্রতিবেদন না পড়ে আপনার লেখা প্রতিবেদনটি পড়ে দেখবেন।তাই কয়েকটি শব্দের মধ্যে একটি আকর্ষণীয় শিরোনাম তৈরি করার চেষ্টা করুন। সংবাদপত্র প্রতিবেদনে শিরোনাম লেখার পরে প্রতিবেদকের নাম এবং স্থান- তারিখ এসব বিষয় উল্লেখ করতে হয়।

 

এরপর পরেই আসে প্রতিবেদনের ভূমিকা। সংবাদপত্র প্রতিবেদনের ভূমিকাটি এমন হতে হবে যাতে করে সেটি পড়ার পর পাঠকরা পুরো প্রতিবেদনটি পড়ে দেখার আগ্রহ বোধ করেন। এক্ষেত্রে আমার পরামর্শ হলো ভূমিকায় সহজ করে প্রতিবেদনের মূল বিষয়বস্তু সম্পর্কে পাঠকদেরকে প্রাথমিক ধারনা দেয়ার চেষ্টা করুন।

 

ভূমিকা লেখার পর প্রতিবেদনের যে বিষয়বস্তু সেটি সম্পর্কে ছোট ছোট অনুচ্ছেদ আকারে বিস্তারিতভাবে তথ্য উপাত্ত তুলে ধরুন। যেমনঃ যদি কোনো অনুষ্ঠান সম্পর্কে প্রতিবেদন লেখেন, তাহলে সেই অনুষ্ঠানের বর্ণনা সহ খুঁটিনাটি সব তথ্য উপস্থাপন করুন৷

 

যদি কোন দুর্ঘটনা নিয়ে প্রতিবেদন লেখেন তাহলে সেই দুর্ঘটনায় মানুষের কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, দুর্ঘটনার কারণ, দুর্ঘটনার স্থান, দুর্ঘটনার সময় ইত্যাদি সবকিছু উল্লেখ করে দিতে হবে।

 

সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নমুনা               

লোডশেডিং বিভ্রাটে জীবন দুর্বিষহ

নিজস্ব প্রতিবেদক, তেজগাঁ, ঢাকা, ০৯ নভেম্বর, ২০২৩

 

জনজীবনের জন্য লোডশেডিং একটি বড় অভিশাপ। দেখো মানুষের জীবন যখন অতি প্রাচীন থেকে অত্যাধুনিক হয়েছে তখন বিদ্যুতের অপরিহার্যতা আবশ্যিক হয়ে পড়েছে।বর্তমানে তাপদাহ বৃদ্ধির সাথে সাথে লোডশেডিং এর বৃদ্ধিও অতিমাত্রায় দেখা যাচ্ছে। 

 

বিশেষ করে রাজধানী শহর ঢাকার বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রিয়াল এলাকা যেমন তেজগাঁও মদপুর সাহাবাদ মুগদা ডেমরা বনশ্রী রামপুরা হাতিরঝিল যাত্রাবাড়ী মিরপুর গাবতলী পল্লবী কামরাঙ্গীরচর প্রভৃতির চিত্র ভয়াবহ। চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে প্রায় অর্ধেক সময় লোডশেডিং এ থাকে। অথচ এইসব উৎপাদনশীল অঞ্চলে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ থাকা অপরিহার্য। দিনে বা রাতে যেকোনো সময় বিদ্যুতের অনুপস্থিতি আধুনিক জীবন যাপন ব্যাহত করে। রাষ্ট্রীয় সাংস্কৃতিক অর্থনৈতিক সামাজিক সকল ক্ষেত্রে বিদ্যুতের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।

 

 সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আদালত খানা বিদ্যুৎ ছাড়া একেবারেই অচল। দেশের চাহিদা মাফিক বিদ্যুৎ এখনো উৎপাদন সম্ভব হয়নি। যার ফলে বিদ্যুতের সমস্যা জনজীবনে নানারকম সমস্যার সৃষ্টি করছে। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার উপরেও লোডশেডিং নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এছাড়া বারবার লোডশেডিং এর ফলে বিভিন্ন দামি ইলেকট্রিক যন্ত্রপাতি অচল হয়ে যায়। বিভিন্ন উৎপাদন ও হাসপাতালে চিকিৎসার ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি হয়।

 

পোশাক শিল্পভিত্তিক প্রতিষ্ঠান বি জি এম ই এর এক রিপোর্ট অনুযায়ী জানা যায় লোডশেডিং এর কারণে শুধু পোশাক তৈরি খাতেই বাংলাদেশ প্রায় প্রতিদিন প্রায় ১৬ লাখ ডলার আত্মিক ক্ষতির শিকার হচ্ছে এই হিসেবে বাৎসরিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১৫শত কোটি টাকা। এই সকল সমস্যার কারণে লেখালেখি কম হয়নি কিন্তু পরিস্থিতির তেমন কোন উন্নতি হয়নি। এই সংকটের পিছনে বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্ট এক শ্রেণীর দুষ্টু কর্মকর্তাদের চরম দুর্নীতি অনিয়ম দায়ী। দৈনিক জনকণ্ঠে কিছুদিন আগে এ ব্যাপারে প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলা হয়েছে ডেসা’র এক শ্রেণীর কর্মীদের সহায়তায় চলছে বিদ্যুৎ চুরির মহোৎসব। 

 

দুর্নীতিবাজ ও গ্রাহকের যোগসাজকে মাসে অন্তত ছয় কোটি ইউনিট বা প্রায় ১৫ কোটি টাকার বিদ্যুৎ চুরি হচ্ছে। বিদ্যুতের অভাবে যেখানে মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সেখানে এ ধরনের চুরি কে প্রশ্রয় দেওয়া কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এ ব্যাপারে সরকারের কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের সময় এখন।খুব শীঘ্রই ক্রমবর্ধমান লোডশেডিং এর সমস্যা থেকে দেশের জনগণকে বাঁচাতে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে সচেতন মহল।

প্রতিবেদক এর নাম ও ঠিকানা: শেহের আলি, তেজগাঁ, ঢাকা

প্রতিবেদন এর শিরোনাম: লোডশেডিং বিভ্রাটে জীবন দুর্বিষহ

প্রতিবেদন তৈরির সময়: সন্ধ্যা ৭:০০ টা

প্রতিবেদন তৈরির তারিখ: ১৪ নভেম্বর, ২০২৩

 

তদন্ত প্রতিবেদন লেখার নিয়ম

 সাধারণত তদন্ত প্রতিবেদন  কোনো ঘটনার সত্যতা যাচাই কিংবা কোনো দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের জন্য লেখা হয়ে থাকে।

সাধারণত এই প্রতিবেদন একজন মানুষ কিংবা একটি তদন্তকারী দলের মাধ্যমে লেখা হয়ে থাকে এবং লেখার পর এ প্রতিবেদন কোনো কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়ে থাকে। 

তাই এটি লেখার নিয়ম হিসেবে বলা যেতে পারে এই প্রতিবেদনটি কারা তৈরি করেছে এবং তাদের কাছে যাবে সেটি উল্লেখ করতে হয়‌।তারপর যে ঘটনাটি নিয়ে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হচ্ছে সেই ঘটনাটির বিস্তারিত বিবরণ দিতে হয়। তারপর সে ঘটনাটির পেছনে থাকা কারণগুলো লেখা হয়৷ একইসাথে এ ঘটনাটি বন্ধ করা বা এড়ানোর জন্য কি কি পরামর্শ থাকবে তা উল্লেখ করতে হয়।

 

তদন্ত প্রতিবেদন লেখার নমুনা 

 

৫ মে ২০২৩ 

জেলা প্রশাসক 

মোহনপুর রাজশাহী 

বিষয়: সড়ক দুর্ঘটনার জন্য প্রতিবেদন প্রণয়ন। 

জনাব,

আপনাকে অবগত করছি যে, গতকাল বিকেলে একটি ট্রাকের সাথে মোটরসাইকেলের  ধাক্কায় রাজশাহী মোহনগঞ্জ সড়কে তৎক্ষণাৎ  একজন নিহত হয়েছে এবং দুইজন আহত হয়েছে। ট্রাক ড্রাইভার এবং মোটরসাইকেল ড্রাইভার দুজনেই বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালাচ্ছিল এমন সময় পথচারী বাসের সামনে এসে পড়ে এবং দুর্ঘটনার স্বীকার হয় আশেপাশের মানুষ তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যায়।কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই মারা যায়। 

উক্ত ঘটনা তদন্ত করে এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের  মতামত ও বক্তব্যের মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারলাম যে ট্রাক ড্রাইভার এর বেপরোয়া ও উদাসীন ভাবে গাড়ি চালানোর জন্য উক্ত দুর্ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে। এছাড়াও দুর্ঘটনাটির অন্যান্য কারণগুলি হলো-

১. বাস ড্রাইভার এর বেপরোয়া ভাবে বাস চালানো 

২. রাস্তার আশেপাশের অবস্থা খুব খারাপ

৩. ভাঙ্গা রাস্তায় দ্রুতগতিতে বাস চালানো 

৪. রাস্তায় ফুট-ওভারব্রিজ না থাকা 

৫. রাস্তায় পথচারীদের বেপরোয়া ছুটাছুটি 

৬. রাস্তার প্রশস্ত কম 

উক্ত দুর্ঘটনাটি তদন্ত করার পর এসব কারণ আমরা খুঁজে পেয়েছি।

এ ধরনের নির্মম দুর্ঘটনা আমাদের কাম্য নয়। তাই এ ধরনের দুর্ঘটনা যাতে এড়ানোর জন্য আপনার কাছে কিছু সুপারিশ করছি। সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে-

১. উচ্চ গতিতে যানবাহন চালাতে যাতে না পারে সেজন্য 

চালকদের কঠোর শাস্তি প্রদান করতে হবে।

২. রাস্তা পারাপার করার জন্য ফুট-ওভার ব্রিজের ব্যবস্থা করতে হবে।

৩. কম প্রশস্তের রাস্তায় যাতে অধিক যানবাহন না চলাচল করে তার ব্যবস্থা করা 

৪. পথচারীদের  রাস্তা পারাপার যেন নিরাপদ হয় সেজন্য  ট্রাফিক পুলিশ নিয়োগ করা।

৫. সড়কে গতিরোধক তৈরি করতে হবে উক্ত গতি সম্পন্ন যানবাহনের গতি কমাতে

৬. সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে রাস্তা পারাপারে

 

উপরোক্ত পদক্ষেপ গুলি জরুরীভাব্ব কার্যকর করা প্রয়োজন। কারন সড়ক দুর্ঘটনার হার দিন দিন বৃদ্ধি পেয়েই চলেছে। জরুরি ভিত্তিতে এই পদক্ষেপগুলি কার্যকর করতে সড়ক দুর্ঘটনা কমানোর জন্য সুপারিশ জানাচ্ছি।

স্বাক্ষর ও তারিখ: রাইসুল হাসান, ১৪/১২/২০২৩

তদন্ত কমিটির প্রধানের নাম: ‘ফুল’

পদবি: কমিটি প্রধান

 

দাপ্তরিক প্রতিবেদন লেখার নিয়ম

দাপ্তরিক প্রতিবেদন লেখার নিয়ম হলো এ প্রতিবেদনে আপনি কোনো প্রতিষ্ঠানের যে কর্তৃপক্ষের বরাবর প্রতিবেদন লিখছেন তা শুরুতে উল্লেখ করতে হয়। তারপর পর্যায়ক্রমে প্রতিবেদনের বিষয়, শিরোনাম, ভুমিকা এবং মূল বিষয়বস্তু ছোট ছোট অনুচ্ছেদ আকারে তুলে ধরতে হয়।

 

প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদনের উদাহরণ 

 

তারিখ 

বরাবর 

জেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা 

বিষয়: করোনায় বিশ্ব স্থবির হয়ে পড়েছে  শীর্ষক প্রতিবেদন 

জনাব,

“করোনায় বিশ্ব স্থবির হয়ে পড়েছে” সেসব প্রতিবেদনটি তৈরীর জন্য উদ্বুদ্ধ  হয়ে নিচের প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করছি। 

 

বিশ্বজুড়ে কোভিড-১৯ একটি মহামারি রোগ হয়ে ছড়িয়েছে। করোনা ভাইরাস এর সংক্রমণে প্রায় ষোল লক্ষ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে এবং আক্রান্ত হয়েছে সর্বমোট সাত কোটি। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে  দুই কোটি এবং মৃত সবচেয়ে বেশি হয়েছে প্রায় তিন লক্ষাধিক। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আক্রান্ত হয়েছে ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে। ব্রাজিলের কোভিদ নাইন্টিনে আক্রান্ত হয়েছে ১২ লক্ষাধিক মানুষ এবং  ১ লক্ষ ৮৬ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে এই মহামারীতে। এই করোনা ভাইরাসে মৃত্যুর মিছিলে ভারতের স্থান হলো তৃতীয়। ভারতে আক্রান্ত সংখ্যা প্রায় এক কোটি এবং  প্রায় এক লক্ষ ৪৫  হাজার মানুষ ভারতে মৃত্যুবরণ করেছে ইউরোপের দেশ ফ্রান্সে আক্রান্তের পরিমাণ ২৫ লক্ষ এবং ৬০ হাজার  মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে। রাশিয়াতে মৃত্যুবরণ করেছে  প্রায় ৫০ হাজার মানুষ।  

 

চীন করোনার উৎপত্তিস্থল যেখানে প্রায় চার হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে কোভিড ১৯ এর জন্য।  ইউরোপ ও আমেরিকা ছাড়াও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে এই মহামারীতে আক্রান্তের হার বেড়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশেও এর পরিমাণ নেহাৎ কম নয়। দিন দিন উদ্বেগজনক ভাবে আক্রান্তের হার এবং মৃত্যু সংখ্যা বেড়েই চলেছে। 

 

করোনার  কারণে গতিময় বিশ্ব স্থবির হয়ে পড়েছে। বিশ্বের প্রায় সব দেশ অর্থনৈতিকভাবে ভঙ্গুর হয়ে পড়ছে। এমতাবস্থায় বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য নানা ধরনের প্রণোদনা প্যাকেজের পরিকল্পনা  গ্রহণ করেছে। 

প্রতিবেদকের নাম: শারমিন আক্তার  

প্রতিবেদনের শিরোনাম: করোনায় স্থবির গতিময় বিশ্ব 

প্রতিবেদনের তারিখ: ১৪/১২/২০২৩

প্রতিবেদকের ঠিকানা: নিয়ামতপুর, নওগাঁ

 

প্রতিবেদন লেখার নিয়ম এসএসসি ২০২৩

এসএসসি শিক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনা এবং বিদ্যালয়ে নবীন বরণ অনুষ্ঠান সম্পর্কে সংবাদ  প্রতিবেদন নমুনা হিসেবে দেখানো হলো –

 ‘ফুল’ বিদ্যালয়ে বিদায়-সংবর্ধনা ও নবীন বরণ অনুষ্ঠিত 

শারমিন আক্তার, রাজশাহী, ১২ই নভেম্বর, ২০২৩ রাজশাহী জেলার ‘ফুল’ মোহনপুর উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে নবীন শিক্ষার্থীদের জন্য বিদ্যালয়ের নবীন বরণের অনুষ্ঠান এবং এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য দোয়া মাহফিল ও বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়েছে ১০ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে। 

এই অনুষ্ঠানে প্রধানের অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত এবং উপস্থিত  ছিলেন মোহনপুর  জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং বিদ্যালয়টির পরিচালনা কমিটির সভাপতি জনাব মোঃ রোকনুজ্জামান। 

 

অনুষ্ঠানের তিনি তার মূল্যবান কিছু বক্তব্য পেশ করেন। তিনি বলেন যে এই বিদ্যালয়টি অনেক পুরাতন এবং  অত্র এলাকায় শিক্ষার প্রভাব ছড়িয়ে পড়েছিল প্রথম এই বিদ্যালয়টির  মাধ্যমে এবং এই বিদ্যালয়টি ছাত্র-ছাত্রীদের সঠিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।  নবীন শিক্ষার্থীদের তিনি অধ্যাবসায় এবং মনোযোগ সহকারে পড়ার পরামর্শ দিয়েছেন এবং যারা ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী তাদের সফলতার জন্য শুভকামনা জানিয়েছেন ও যত্ন সহকারে পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। 

এই বছরের বিদ্যালয়টির বিজ্ঞান শাখা থেকে ৮০ জন, ব্যবসায় শিক্ষা শাখা হতে ৩০ জন এবং মানবিক শাখা হতে মোট ১০০ জন সর্বমোট ২১০ জন আগামী ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে। ‘ফুল’ বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক শেখ হেলাল উদ্দিন এই নবীন বরণ ও বিদায় অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানে অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবৃন্দ বক্তব্য পেশ করেছেন তাদের মধ্যে সমাজকর্মী তুতুল মিয়া, ‘ফুল’ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে মাহমুদুল হাসান প্রমুখ। 

ছাড়াও অনুষ্ঠানে অনেক শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবক উপস্থিত ছিলেন। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক আয়োজন  ও দোয়া মাহফিলের মধ্য দিয়ে এই দৈনের অনুষ্ঠানটি সাড়ম্বরভাবে আয়োজিত হয়েছে। 

প্রতিবেদনের শিরোনাম:  ‘ফুল’ বিদ্যালয়ে বিদায়-সংবর্ধনা ও নবীন বরণ অনুষ্ঠিত 

প্রতিবেদন তৈরির তারিখ: ১২ নভেম্বর, ২০২৩

প্রতিবেদন তৈরীর সময়: সন্ধ্যা ৭:৩০ মিনিট।

 

সংবাদপত্রে প্রকাশের জন্য ব্যক্তিগত প্রতিবেদন লেখার নিয়ম 

নিজস্ব প্রতিবেদক: রায়হান ইসলাম, পোরশা, (নওগাঁ), ২০ নভেম্বর ২০২৩

 

রাস্তা সংস্কার ও পুর্ণনির্মাণের জন্য প্রতিবেদন 

ভঙ্গুর রাস্তা, দুর্ভোগ নাগরিকের 

 

পোরশা-সাপাহার স্বরূপটি অনেকদিন ধরেই যানবাহনের জন্য অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এই রাস্তাটি পোরশা-নিতপুরবাসীর জন্য একমাত্র রাস্তা যেইখান থেকে সাভার হয়ে নওগাঁ রাজশাহী বা ঢাকায় যাওয়া যায়। প্রায় লক্ষ্য লোকের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম এই সড়কটি যা বন্যায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গত বছর। প্রতিদিন ঢাকা, রাজশাহী, নওগাঁ, সাপাহার, মহাদেবপুরসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে যাতায়াত করছে যা সবার জন্যই মারাত্মক ঝুঁকি। এর মধ্যে বেশ কিছু অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে। মাত্র কিছুদিন আগে বিলের মধ্যে যে ব্রিজ রয়েছে সেখানে মুখোমুখি একটি ট্রাক ও একটি বাসের দুর্ঘটনা ঘটেছে। এই দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে প্রায় ২০ জন মানুষ এবং মৃত্যুবরণ করেছে দুইজন। 

 

বর্ষার সময় এই বৃষ্টির খুবই ভয়াবহ অবস্থা হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন জায়গায় ফুটা হয়ে গেছে এবং অমসৃন হয়ে পড়েছে একেবারেই ব্যবহারের অনুপযুক্ত। অথচ হাজার হাজার মানুষ এই ব্রিজের উপর দিয়ে চলাচল করে কেননা এই বৃষ্টি একমাত্র মাধ্যম রাস্তা চলাচলের।  এছাড়াও গ্রীষ্মের সময় খুব সমস্যা হয় বিশেষ করে ধুলাবালীর কারণে। রাস্তার প্লাস্টার উঠে যাওয়ার ফলে অনেক বেশি ধুলাবালি উড়ে। এতে পরিবেশের দূষণ মারাত্মকভাবে হচ্ছে। যারা নিয়মিত চলাচল করেন এই রাস্তায় তাদের অনেকের এলার্জি, শ্বাসকষ্ট,  চোখের সমস্যা সহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি বাড়ছে। 

 

তাই আসন্ন গ্রীষ্ম এবং বর্ষার আগে এই গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ব্রিজটি যদি পুনর্নির্মাণ ও সংস্কার করা না হয় তবে যান চলা চল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। তাই পোরশা -সাপাহার সড়ক পথটি দ্রুত সংস্কারের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিনিবদ্ধ করা উচিত।

 

 

প্রতিবেদন লেখার নিয়ম class 6

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে প্রতিবেদন রচনা 

১০ই জানুয়ারি, ২০২৪ 

বরাবর, 

প্রধান শিক্ষক, 

ফুলতলী উচ্চ বিদ্যালয়, নওগাঁ। 

বিষয়: আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন সম্পর্কিত প্রতিবেদন। 

সূত্র: আদেশ নং- ক,গ,চ,ফ

জনাব, 

আপনার অনুমতিক্রমে বিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপনের জন্য আয়োজিত অনুষ্ঠান সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন আপনার সদয় কামনায় পেশ করছি। 

“ফুলতলী “বিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন 

প্রতিবছর আমাদের বিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়ে আসছে স্ব-মহিমায়। 

আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই দিবসটি সঠিকভাবে পালিত হয়।  প্রধান শিক্ষকের নেতৃত্বে ভোর ছয়টার দিকে প্রভাত ফেরীর মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শুরু হয়। এই দিনে শিক্ষার্থীরা ভোরে ঘুম থেকে উঠে  সঠিক সময়ের মধ্যে বিদ্যালয়ে হাজির হয়। বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী উপস্থিত হয়। প্রথমত সবাই বুকে এক ধরনের কালো ব্যাজ  লাগিয়ে নেন যা শোক প্রকাশ করে এবং  নগ্ন পায়ে শোভাযাত্রা শুরু করেন। 

 

এরপর বিদ্যালয়ে স্থাপিত শহীদ মিনারে পৌঁছায় এবং সকলে সমস্বরে গেয়ে ওঠে “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমরা কি ভুলিতে পারি “? এ সময়ের পরিবেশ যেন গম্ভীরতায় ছেয়ে যায়।

প্রভাত ফেরীটি শহীদ মিনারের উপস্থিত হওয়ার পর সর্বপ্রথম প্রধান শিক্ষক এরপর শিক্ষকমন্ডলী এবং শিক্ষার্থীরা ফুলের স্তবক দেরিতে অর্পণ করেন। পর্যায়ক্রমে শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে বিদ্যালয় এর ধর্ম শিক্ষক কাজী রহিম মিয়া মোনাজাত করেন।

 

সকাল দশটার দিকে বিদ্যালয়ের মিলনায়তনে একুশে ফেব্রুয়ারী উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা শুরু হয়। এ সময় প্রধান অতিথি বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারির চেতনায় বাঙালিরা মননে ও মস্তিষ্কে ধারণ করে। এই বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের সূত্র অনুযায়ী স্বাধিকার আন্দোলন এবং ৬৯ এর  গণঅভ্যুত্থান ঘটে। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে স্বাধীনতা আমরা লাভ করেছি তা বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের অনুপ্রেরণা ও জাতীয়তাবাদী চিন্তাধারা থেকে। আমরা পেয়েছি মুক্তির সুবাস।   প্রধান অতিথির বক্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রধান শিক্ষক বক্তব্য রাখেন, একুশে ফেব্রুয়ারি শুধু আমাদের বাক স্বাধীনতার মুক্তি দেয়নি বরং শোষণের  থেকে মুক্ত হতে সংগ্রাম করতে শিখিয়েছে।  অন্ধকার দূরীভূত করে আলোর শিখা প্রজ্বলিত করতে হয় তা শিখেছি ৫২’র ভাষা আন্দোলন থেকে। আজকের সাধারণ জনতা ও ছাত্ররা জানবে তাদের সেই আত্মত্যাগ ভাষার জন্য যা পৃথিবীতে আর কোন দেশে নজির নেই। আরো বক্তৃতা দিয়েছেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ মোঃ রফিক আলী। তিনি বলেছেন ভাষা শহীদরা লড়েছেন নিজস্ব ভাষায় স্বাধীনভাবে কথা বলতে এবং নিজের অধিকার আদায় করার জন্য। এইদিন থেকে আমরা শিখেছি কিভাবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে হয় এবং মাথা উঁচু করে বাঁচতে হয়। 

আলোচনাসভা শেষ হওয়ার পর যথানিয়মে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয়। কবিতা আবৃতি, বিতর্ক প্রতিযোগিতা এবং একুশের গানের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি চাঞ্চল্যপূর্ণ হয়ে ওঠে। এছাড়াও একুশে ফেব্রুয়ারীর খবর নির্মিত নাটক এর মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি উপভোগ্যপূর্ণ হয়ে ওঠে।  এরপরে প্রধান অতিথি কবিতা পাঠ, সুন্দর হস্তাক্ষর এবং বিতর্ক প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের পুরস্কার প্রদান করেন।  তিনি শিক্ষার্থীদের এই সৃষ্টিশীল ও সুনিপন কার্যবিধির প্রশংসা করেন। 

সর্বোপরি বলা যায় একুশে ফেব্রুয়ারি দিনটি শোকাবহ হলেও দিন ব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দিবসটি খুব তাৎপর্যমণ্ডিত হয়ে ওঠে। 

বিনীত প্রতিবেদক 

শারমিন 

ষষ্ঠ শ্রেণি, ক-শাখা 

“ফুলতলী” উচ্চ বিদ্যালয়

 

খাদ্যে ভেজাল প্রতিবেদন লেখার নিয়ম

সাদিয়া আফরিন , নওগাঁ, ৫ই জানুয়ারি 

বর্তমানে বাংলাদেশে অনেক সমস্যা তৈরি হচ্ছে তার মধ্যে অন্যতম সমস্যা হল খাদ্যের ভেজাল। আমাদের নিত্য-প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য ভেজালের মিশ্রণের কারণে জনজীবন আজ হুমকির শিকার হচ্ছে। আমাদের দেশের  হাজার হাজার মানুষ খাদ্যদ্রব্য এবং ওষুধের ভেজালের কারণে মৃত্যুর দিকে ঢলে পড়ছে। উদাহরণ হিসেবে বলতে পারি ক্যান্সার যা খুব কমন একটা রোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে।  

 

মানুষের মঙ্গল নিহিত সমাজের মঙ্গলের মধ্যে। কিন্তু মানুষের মধ্যে বর্তমানে মানবতাবোধ দিন দিন কমে যাচ্ছে এবং স্বার্থচিন্তা জায়গা করে নিচ্ছে।  ব্যবসায়ীরা নিজের স্বার্থের জন্য খাদ্যে ভেজাল মিশিয়ে জনজীবনকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। জনস্বাস্থ্যের কথা চিন্তা না করে ব্যবসায়ীরা নিজ স্বার্থ হাসিলের জন্য  শিশুদের খাদ্যে ভেজাল, রোগীর ওষুধে ভেজাল মিশাতে   কুন্ঠাবোধ করছে না।

 

খাদ্যের ভেজাল মারাত্মক এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। খাদ্যের ভেজালের কারণে সাধারণ মানুষ নানা ধরনের অসুখে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করছে আবার কেউবা পঙ্গু হতে চলেছে। সম্প্রতি বিভিন্ন ভেজাল প্রতিরোধের লক্ষ্যে বাংলাদেশের ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে অভিযান শুরু করেছে সরকার। ইতিমধ্যে সারা দেশে  ভেজাল বিরোধী বিক্রেতা সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও খাদ্য তৈরির কলকারখানায় অভিযান নেওয়া শুরু করেছে সরকার। এবং বিভিন্ন বিক্রেতা ও প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা ও শাস্তি প্রদান করছে সরকারি কর্মকর্তারা।

 

খাদ্যের ভেজালের পরিধি যেভাবে দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে তা প্রতিরোধ করা বড় কঠিন হয়ে পড়েছে। সমাজ ও জাতিকে এর থেকে বাঁচতে হলে এর প্রতিকার করা অনিবার্য। বাংলাদেশের মানুষদের এর ভেজাল থেকে বাঁচতে হলে ক্রেতাদের নিজের স্বার্থের জন্য খাদ্যের ভেজালের আন্দোলন গড়ে তোলা দরকার। বাংলাদেশে খাদ্যের ভেজালের প্রতিকার করতে হলে আরও বেশি প্রশাসনকে বেশি দৃঢ ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

বাংলাদেশের প্রত্যেক জেলায় জেলায় খাদ্য দ্রব্য পরীক্ষা করার জন্য পরীক্ষাগার স্থাপন করা আবশ্যক। তাছাড়া বাংলাদেশ সরকারকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা দরকার যারা নিত্য প্রয়োজনী খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল মিশিয়ে বাজারজাত করেন তাদের জন্য।

 

সর্বোপরি প্রশাসন ও যৌথ প্রচেষ্টায় ভেজাল নিরোধ করা সম্ভব। সামাজিক অপরাধের মাধ্যে অন্যতম অপরাধ হলো ভেজাল। অতএব যেকোনো মূল্যে জনস্বাস্থ্য সংরক্ষনে খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল প্রতিহত করতে হবে।

 

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রতিবেদন লেখার নিয়ম

শারমিন আক্তার, নওগাঁ,  ৫ই জানুয়ারি ো

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্য মানুষের জীবন নাভিশ্বাস হয়ে পড়ছে। বাংলাদেশের প্রধান সমস্যা গুলির মধ্যে প্রথম কাতারে থাকবেন দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি। যা দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে মানুষের আয় না বাড়লেও ব্যয় বাড়ছে বহু গুণ বেশি। দ্রব্যমূলের ঊর্ধ্বগতির জন্য অর্থনৈতিক সমস্যা প্রকট হয়ে পড়ছে। নিম্ন দরিদ্র থেকে মধ্যবিত্তরা নিজেদের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হচ্ছে না। দৈনুদ্দিন খবর বা সংবাদপত্রের পাতায় উঠে আসছে যারা জনজীবনের হাহাকার। 

একবার দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়ে গেলে তা আর কোনভাবেই কমছে না যা সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। 

টিসিবির পণ্যের চাহিদা এখন অনেক বেশি বেড়ে গেছে বিগত দু বছরেও যা লক্ষ্য করা যায়নি। কিন্তু এখন শুধু নিম্ন বিতরানা বরং মধ্যবিত্তরাও টিসিবির পণ্য নেওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকে। মধ্যবিত্তরা লজ্জা না করে লাইনে দাঁড়ান কৃষিবির পণ্য নেওয়ার জন্য কেননা টিসিবির পণ্য কম দামে পাওয়া যায় যা তাদের সাধ্যের মধ্যে থাকে। বিগত দুই বছর এর পণ্যের মূল্য দেখলে আমরা জানতে পারবো একবার যে পণ্যের দাম বেড়েছে তার কমেনি। তাই সাধারণ জনগন প্রতিনিয়ত এই ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।

 

মুদির দোকান থেকে শুরু করে কৃষি পণ্যের দিকে তাকালে দেখতে পারবেন প্রতিটি পণ্যতেই ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়ে গেছে। শিশু খাদ্য অপ্রয়োজনীয় জিনিসের  কথাতো না বললেই নয় এগুলির দাম বেড়েছে বহুগুণ। ফলে মানুষের সার্বিক জীবনে এর প্রভাব পড়ছে ভয়ংকরভাবে। স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য যেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। এছাড়াও কৃষকদের ভোগান্তি যেন শেষ হওয়ার নয়। চালের দাম ক্রমাগত বাড়ছে অথচ ধানের দাম সে তুলনায় অনেক কম। ফলে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন আবার লাভ হল খুব সামান্য লাভ হচ্ছে যার কারণে জীবন নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়ছে। শুধুমাত্র যারা কৃষি কাজের উপর নির্ভরশীল তাদের অবস্থা যেন কোনরকম খেয়ে বাঁচে কেননা কৃষি কোন উৎপাদনে যে সার-বিষের প্রয়োজন তার দাম বাড়তেই থাকে এছাড়াও শ্রমিকের মজুরিসহ আম্মু ব্যয় অনেক বেশি।

 

বিশ্ববাজারে জ্বালানি ও খাদ্য পণ্যের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এর প্রভাব পড়েছে প্রতিটি দেশে। ফলে আমাদের দেশেও চাল, ডাল, আটা, তেল, লবণসহ সব পণ্যের দাম বেড়েছে। এছাড়াও রোজা বা ঈদের সময় আরেক দফা দাম বাড়ছে। ফলে সীমিত আয়ের মানুষজন পড়ছেন বিপাকে অনেকে তাদের সঞ্চয় ভাঙছেন সংসারের চালানোর জন্য। এইদিকে গাড়ি ভাড়ার দামও বাড়ছে আনুপাতি হার বিশেষ করে বাস ভাড়া অনেক বেশি বেড়েছে। প্রতিনিয়ত মানুষ ভোগান্তির সাথে  সংগ্রাম করছে জীবন পরিচালনার জন্য। কারণ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম ক্রমাগতভাবে বেরিয়ে চলেছে কিন্তু মানুষের আয় বাড়েনি আনুপাতিক হারে। 

 

মধ্যবিত্ত থেকে উচ্চ মধ্যবিত্ত কেউ বাট পড়ছে না এই ভোগান্তির। করোনায় লকডাউন শেষে মানুষ যখন স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছে তখনই অস্বাভাবিকভাবে পণ্যের দাম বাড়ার কারণে মানুষের জীবন হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ। শুধু যে খাদ্যপণ্য তা নয় বরং দাম বেড়েছে জ্বালানি পণ্যের, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির। যেখানে একটি পরিবারের খাবার খরচ 8 থেকে 10 হাজারের মধ্যে হয়ে যেত সেখানে বর্তমানে ১৫ থেকে ১৬ হাজার পর্যন্ত লাগছে বা ক্ষেত্রবিশেষে এরও বেশি। পণ্যের মূল্য যে বেড়েই চলেছে তা আমরা জানতে পারছি সরকারি সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের  (টিসিবি) বাজারের তালিকা দেখে। 

 

সর্বশেষ রাশিয়া ইবনে যুদ্ধের পর বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম  বেড়েছে। খাদ্য পণ্যের সঙ্গে সঙ্গে সাবান, শ্যাম্পু, টুথপেস্ট, কাজের কাগজ-কলম সহ সকল পণ্যের দাম অনেক বেশি। মানুষ এখন জীবন নির্ভর করছে কাট-ছাট  এর মাধ্যমে। যে পণগুলি বেশি জরুরী নয় বা যা না খেলেও নয় সেগুলো কেনা থেকে বিরত থাকছেন। তবে দ্রব্যমূল্যের দাম অনেক বেশি কমানো না গেলেও অনেকটা ভারসাম্যপূর্ণ  করা সম্ভব যদি সরকার এদিকে ভ্রুক্ষেপ দেন। কেননা অনেক দুর্নীতিবাজ,  অসাধু ব্যবসায়ী, সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের জন্য পণ্যর দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে পন্যের  গুদামজাতকরণ এর জন্য। 

 

এখনই উপযুক্ত সময় সরকার সঠিক পদক্ষেপ নিয়ে এসব কালোবাজারি ধান্দা বন্ধ করার এবং তাদেরকে আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদানের। কারণ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি শুধু মানুষের কিছু সময় বিপন্ন করছে না বরং জীবনকেই করে তুলেছে বোঝাস্বরূপ। সরকার সময় মত পদক্ষেপ না নিলে জনজীবনে নেমে আসবে দুর্ভোগ এবং সরকারের প্রতি অসন্তুষ্টি বাড়বে। এছাড়াও সরকার চাইলে কৃষি পণ্যের প্রতি মনোযোগ বাড়াতে পারেন। 

 

বাংলাদেশ কৃষি নির্ভরশীল দেশ সঠিক প্রযুক্তি ও কৌশলের  মাধ্যমে অনেক বেশি পণ্য উৎপাদন করা সম্ভব। এজন্য সবচেয়ে ভালো উপায় হল কৃষকদের কৃষিবান্ধব পণ্য উৎপাদনের সহায়তা এবং সার-বিষ এর দাম ভারসাম্যপূর্ণ রাখা। তাহলে পণ্যের মূল্য অনেকটা কমবে বলে আশা করা যায়।

 

প্রতিবেদন লেখার নিয়ম pdf

প্রতিবেদন লেখার নিয়ম জানতে pdf ফাইলটি ডাউনলোড করে নিন নিচের লিংক থেকে।

 

সবশেষে

উপরে আলোচনা করা নিয়ম গুলো যদি আপনি সঠিকভাবে ফলো করেন তাহলে ত্রুটিহীন একটি প্রতিবেদন লিখতে পারবেন। নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী যদি প্রতিবেদন লেখা না হয় তাহলে সেটা আর প্রতিবেদন থাকে না। তাই প্রতিবেদন লেখার সময় নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে প্রতিবেদনটি লিখবেন। আশা করি আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনি কিছুটা হলেও উপকৃত হয়েছেন। আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ

 

Read More

বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ রচনা | ২০ টি পয়েন্ট | উক্তি সহকারে ২৫০০+ শব্দ | pdf download

স্বদেশ প্রেম রচনা | ২০ টি পয়েন্ট | উক্তি সহকারে ২৫০০+ শব্দ | pdf download

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচনা | ২০ টি পয়েন্ট | উক্তি সহকারে ২৫০০+ শব্দ | pdf download

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রচনা | ২০ টি পয়েন্ট | উক্তি সহকারে ২৫০০+ শব্দ | pdf download

Scroll to Top