Dreamy Media BD

প্রাচীন ভারতীয় বিজ্ঞানীদের সেরা ১০টি আবিষ্কার

প্রাচীন ভারতীয় বিজ্ঞানীদের সেরা ১০টি আবিষ্কার

প্রাচীন ভারত ছিল জ্ঞান বিজ্ঞান চর্চার কেন্দ্র। প্রাচীন ভারতীয় বিজ্ঞানীরা গণিত, জ্যোতির্বিদ্যা, চিকিৎসা, রসায়ন এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন। তাদের উদ্ভাবন এবং আবিষ্কারগুলি বিজ্ঞানের অনেক শাখায় গভীর প্রভাব ফেলেছে। প্রাচীন কাল থেকে ভারতের উর্বর জমি সবুজ সোনালী ফসলের সাথে সেরা কিছু সন্তান জন্মদিয়েছেন।  কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য , খুব কম মানুষেই তাদের নাম ও বিজ্ঞানে তাদের অবদান সম্পর্কে জানি।

আজকের এই লেখায়, প্রাচীন ভারতীয় বিজ্ঞানীদের সেরা ১০ টি আবিষ্কার নিয়ে আলোচনা করবো৷ এই আবিষ্কারগুলি আধুনিক বিজ্ঞানের অনেক কেন্দ্রীয় শাখার ভিত্তি বলে বিবেচনা করা হয়।

লেখাটি শেষ পর্যন্ত পড়লে গণিতে , আধুনিক ডিজিটাল দুনিয়ার বাইনারি ডিজিটে, রসায়নে , চিকিৎসা শাস্ত্রে , নিউক্লীয় পর্দাথ বিদ্যায় ও জ্যোতিষবিজ্ঞানে প্রাচীন ভারতীয় বিজ্ঞানীদের অবদান ও আবিস্কারগুলি সম্পর্কে জানতে পারবেন।

আর্যভট্ট ছিলেন প্রাচীন ভারতের একজন সফল গণিতবিদ এবং জ্যোতির্বিদ।
আর্যভট্ট ছিলেন প্রাচীন ভারতের একজন সফল গণিতবিদ এবং জ্যোতির্বিদ।

১.  আর্যভট্ট (476-550 AD): শূন্য আবিষ্কার

অন্যান্য প্রাচীন ভারতীয় বিজ্ঞানীদের মধ্যে সবচাইতে ভাগ্যবান মনে হয় আর্যভট্টকে।  কারণ তার শূন্য আবিষ্কারের কথা প্রায় সবাই জানেন।

আর্যভট্ট ছিলেন প্রাচীন ভারতের একজন সফল গণিতবিদ এবং জ্যোতির্বিদ। তিনি বর্তমান ভারতের উত্তর প্রদেশের গঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত, কুশীনগর শহরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।  সেই সময়ের প্রাচীন ভারত ও বিশ্বে, কুশীনগর ছিল গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা কেন্দ্র।

তার শূন্য আবিষ্কার কে, গণিতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার হিসাবে গণ্য করা হয়। শূন্য পাটিগণিত এবং বীজগণিতের চর্চায় নতুন মাত্রা যোগ করে , এরফলে নতুন নতুন গাণিতিক সমীকরণ সূত্র আবিষ্কার সম্ভব হয়। শুধু গণিতে নয় , তার শূন্য আবিষ্কার জ্যোতির্বিদ্যা ও বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখায় ব্যাপক অবদান রাখে।

ত্রিকোণমিতির উপর গবেষণা

আর্যভট্ট ত্রিকোণমিতির উপর গবেষণা করেছিলেন এবং  ত্রিকোণমিতিক অনুপাত ও এর সূত্রগুলি সফলভাবে বর্ণনা করেছিলেন।

গ্রহের গতি সম্পর্কে তত্ত্ব

আর্যভট্ট গ্রহের গতি সম্পর্কে একটি তত্ত্ব তৈরি করেছিলেন।  এই তত্ত্বের সাহায্য, সূর্যকে কেন্দ্র করে গ্রহগুলির কক্ষপথ এর ধারণা পাওয়া যায়। তাঁর তত্ত্বটি জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রধান আবিস্কারগুলির অন্যতম।

আরও পড়ুনঃ বিল গেটস এর জীবনী

২. পিঙ্গলা (200 BC): বাইনারি সংখ্যা

পিঙ্গলা ছিলেন একজন প্রাচীন ভারতে বসবাসকারী গণিতবিদ। তিনি বর্তমান ভারতের উত্তর প্রদেশের প্রাচীন কৌশাম্বী শহরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।পিঙ্গলার জীবন সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য জানা যায় না।  পিঙ্গলাকে বাইনারি সংখ্যা আবিষ্কারক হিসাবে গণ্য করা হয়। বাইনারি সংখ্যা যা কম্পিউটার এবং অন্যান্য ডিজিটাল ডিভাইসে ব্যবহৃত হয়। বাইনারি নাম্বার সিস্টেম হলো আধুনিক কম্পিউটার বিজ্ঞানের ভিত্তি।  বাইনারি ডিজিট থেকেই ডিজিটাল কথাটির উৎপত্তি।  কম্পিউটারের সকল গাণিতিক কাজ এর সাহায্য করা হয়।

বিজ্ঞানের পাশাপাশি তিনি একজন শ্রেষ্ঠ ভাষাতত্ত্ববিদ ছিলেন।  ছন্দের উপর চান্দোদগামা গ্রন্থ রচনা করেন এবং ধ্বনিতত্ত্বের উপর আরো একটি গ্রন্থ রচনা করেন।

 প্রাচীন ভারতের চিকিৎসা ব‍্যবস্থায় চরক ও শুশ্রুত
প্রাচীন ভারতের চিকিৎসা ব‍্যবস্থায় চরক ও শুশ্রুত

৩. সুশ্রুত (খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দী): প্লাস্টিক সার্জারি

সুশ্রুত ছিলেন প্রাচীন ভারতে (বর্তমান কাশ্মীর) বসবাসকারি বিখ্যাত চিকিৎসক ও সার্জন । তাকে প্লাস্টিক সার্জারির জনক মনে করা হয়।

সুশ্রুত অস্ত্রোপচারের উপর একটি বই লিখেছিলেন, যার নাম সুশ্রুত সংহিত।  এই বইকে অস্ত্রোপচার সম্পর্কিত প্রাচীনতম বই হিসাবে গণ্য করা হয়। সুশ্রুত সংহিতা রাইনোপ্লাস্টি (নাকের), ওটোপ্লাস্টি (কানের), এবং ঠোঁট কাটা এবং তালু কাটার অপারেশন সহ বিভিন্ন অস্ত্রোপচারের পদ্ধতি বর্ণনা করেছিলেন।

তার সুশ্রুত সংহিতায় চিকিৎসা বিজ্ঞানের,  রোগ নির্ণয়, ওষুধ, ঔষধি উদ্ভিদ, খাদ্য ও স্বাস্থ্যকর জীবনধারা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা ছিল।

৪. চরক (খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দী): আয়ুর্বেদ

চরক কে আয়ুর্বেদের জনক বলা হয়। সুশ্রুতের  মতো তার বইয়ের নাম ছিল ” চরক সংহিতা

চরক সংহিতা আয়ুর্বেদ চিকিৎসাবিদ্যার অন্যতম প্রাচীন ও প্রধান গ্রন্থ। এতে বিভিন্ন রোগের কারণ, লক্ষণ, চিকিৎসাগুলো সংকলন করেন চরক। বইটিতে ১২০টি অধ্যায় রয়েছে, যা আবার ৮ অংশে বিভক্ত। এই বইয়ের মূল ভাষা ছিল সংস্কৃত।

আয়ুর্বেদ উপর লেখা চরক সংহিতা, সুশুর্তা সংহিতা এবং অষ্টাঙ্গ হৃদয়  তিনটি বইকে একত্রে “মহা ত্রয়ী” নাম ডাকা হয়।

আয়ুর্বেদ যা একটি প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতি যা আজও সমান জনপ্রিয় ও কার্যকরী। এটি ভেষজ ওষুধ, ম্যাসেজ এবং যোগব্যায়াম সহ বিভিন্ন থেরাপি ব্যবহার করে। আর্থ্রাইটিস, হাঁপানি এবং ডায়াবেটিস সহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় আয়ুর্বেদ কার্যকর বলে বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমাণিত ।

 

 ৫. কানাদ (খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দী): পারমাণবিক তত্ত্ব

 

আচার্য কানাদ বা কানাদ মুনি (Acharya Kanad) প্রাচীন ভারতে জন্মগ্রহণ করেন।  তিনি পারমাণবিক তত্ত্বের  উপর “Sutra Sangraha” লিখেছিলেন। তাকে “পারমাণবিক তত্ত্বের পিতা” হিসেবে  গণ্য করা হয়।

কানাদের পারমাণবিক তত্ত্ব তার সময়ের চেয়ে অনেক এগিয়ে ছিল এমনকি ১৯ শতক পর্যন্ত আধুনিক বিজ্ঞানীরা অনুরূপ তত্ত্ব নিয়ে গবেষণা করেননি।

কানাদের পারমাণবিক তত্ত্বের পর্যবেক্ষণগুলি:

  • পদার্থকে ছোট ছোট টুকরোতে ভাগ করা যেতে পারে, তবে এটি কতটা ছোট করে ভাগ করা যায় তার একটি সীমারেখা রয়েছে। (আধুনিক এটম থিউরি)
  • বিভিন্ন পদার্থের বিভিন্ন একক বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
  • পদার্থগুলিকে একত্রিত করে নতুন পদার্থ তৈরি করা যেতে পারে, তবে নতুন পদার্থের বৈশিষ্ট্যগুলি মূল পদার্থগুলির বৈশিষ্ট্যগুলি থেকে আলাদা হবে।

কানাদের পারমাণবিক তত্ত্বের সাথে আধুনিক পরমাণু তথ্যের অনেক মিল আছে:

  • পরমাণু হল পদার্থের ক্ষুদ্রতম একক এবং আরও বিভক্ত করা যায় না।
  • পরমাণুগুলি খালি চোখে অদৃশ্য।
  • পরমাণুগুলি অক্ষয়।
  • পরমাণুগুলি ক্রমাগত গতিতে থাকে।
  • বিভিন্ন মৌলের পরমাণুর বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
  • পরমাণুগুলি একত্রিত হয়ে অণু গঠন করতে পারে।

কানাদের পারমাণবিক তত্ত্ব  হয়তো বর্তমান সময়ের মতো এতো বিস্তারিত ও নির্ভুল ছিল না , কিন্তু তিনি যে সময়ে এই নিয়ে তথ্য দিয়েছেন , সেটা বিবেচনায় এটি একটি বিজ্ঞানের বিস্ময়কর আবিষ্কার।

 ভারতীয় গণিতবিদ ও জ্যোতির্বিদ, ব্রহ্মগুপ্ত
ভারতীয় গণিতবিদ ও জ্যোতির্বিদ, ব্রহ্মগুপ্ত

৬. ব্রহ্মগুপ্ত  (৫৯৮ –৬৭০  AD): আলজেব্রা

ব্রহ্মগুপ্ত  ছিলেন একজন প্রাচীন ভারতীয় গণিতবিদ ও জোতিষবিদ।  তিনি বর্তমান ভারতের রাজস্থানে (প্রাচীন ভারতের ভিল্লামালা) জন্মগ্রহণ করেন।

তার বিখ্যাত বই “ব্রাহ্মসপুস্টসিদ্ধান্ত” তিনি ৬২৮ খ্রিস্টাব্দে লিখেছিলেন।  এই বইয়ে বিজ্ঞানের প্রায় সকল প্রধান শাখাগুলি নিয়ে তিনি লিখেছিলেন , তার মধ্যে অন্যতম ছিল: আলজেব্রা  , ভূগোল , জ্যামিতি , ত্রিকোণমিতি , ও গ্রহের গতিবিধি অন্যতম।

এখানে তিনি আলজেব্রা  এর চুতুর্ঘাত ও দ্বিঘাত সমীকরণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। এবং ঋণাত্মক সংখ্যা ও শূন্যের ধারণা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

 

প্রাচীন ভারতীয় বিজ্ঞানীরা বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্রের বিস্তৃত পরিসরে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন। তাদের উদ্ভাবন এবং আবিষ্কারগুলি আজ আমরা যে পৃথিবীতে বাস করি তার উপর গভীর প্রভাব ফেলেছে।

৭. মাধব (১৩৪০  – ১৪২৫ AD): ক্যালকুলাস

মাধব ১৩৪০  খিরিস্টাব্দে   ইরিনজালকুদা (বর্তমান ভারতের কেরেলার ত্রিসূর ) এ জন্মগ্রহণ করেন।  তিনি ছিলেন একজন অসাধারণ গণিতবিদ ও জোতিস্কবিদ।  ক্যালকুলাস নিয়ে তিনি নিউটনের আগেই অনেক কাজ করেছিলেন , যা দীর্ঘদিন অপ্রকাশিত ছিল।  ক্যালকুলাস এ তার অন্যতম অবদান হল:

ত্রিকোণমিতিক ফাংশন এবং π এর জন্য অসীম সিরিজ নিয়ে কাজ।

তিনি sin(x), cos(x), tan(x), এবং cot(x) এর মতো ত্রিকোণমিতিক ফাংশনগুলির জন্য অসীম শ্রেণীর অনুমান তৈরি করেছিলেন।

 

তাকে মধ্যযুগের অন্যতম গণিতবিদ হিসাবে গণ্য করা হয়।  অনেকেই দাবি করেন যে , ১৬শ এবং ১৭শ শতাব্দীতে ভারতে আগত  মিশনারীদের মাধ্যমে তার কাজগুলি ইউরোপীয় গণিতবিদদের কাছে পৌঁছে।

 

 

৮. পতঞ্জলি (খ্রিস্টপূর্ব ২য় শতাব্দী): যোগসূত্র

 

পতঞ্জলি ছিলেন একজন প্রাচীন ভারতীয় ঋষি যিনি খ্রিস্টপূর্ব ২য় শতাব্দীতে ভারতে জন্মগ্রহণ করেন।  তার জন্মস্থান অজানা , তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন , বর্তমান বিহার বা উত্তরপ্রদেশের কোন প্রাচীন শহরে তিনি বাস করতেন।

 

পতঞ্জলিকে “যোগের জনক” বলা হয় কারণ তিনি যোগ দর্শন এবং অনুশীলনের উপর একটি  বিখ্যাত বই “যোগসূত্র ” রচনা করেছিলেন। যদিও তার জন্মের ৩ হাজার বছর আগে থেকেই ভারতে ইন্দো-আর্য সভ্যতার  যোগ অনুশীলনের প্রমাণ পাওয়া যায়। যোগসূত্র বইয়ে ১৯৬টি সূত্র সংকলন ছিল, যা যোগের সংজ্ঞা, উদ্দেশ্য এবং অনুশীলন প্রক্রিয়া সহ যোগ সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়গুলিকে আলোচনা করে। তার এই বই এখনো সমান প্রসংগিক , যা যোগকে বিশ্বব্যাপী তুমুল জনপ্রিয় করে তুলেছে।

 

৯. নাগার্জুন (আনুমানিক ১৫০-২৫০ খ্রিস্টাব্দ): পতন , দ্ৰৱীভূতকর, উদ্বায়ী ও বাস্পীয়করণ

নাগার্জুন ছিলেন একজন প্রাচীন ভারতীয় রসায়নবিদ যিনি দক্ষিণ ভারতের প্রাচীন কোন শহরে বাস করতেন।  অনেকেই সেই শহরকে বিদর্ভ বলে দাবি করে , অরেকপক্ষের দাবি তার জন্ম হয়েছিল বর্তমান অন্ধ্র প্রদেশে। তাকে রসায়ন বিজ্ঞানের  অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হিসাবেও  গণ্য করা হয়।

নাগার্জুন এর রসায়নের উপর বেশ কয়েকটি সংস্কৃত ভাষায় বই রয়েছে। তার বইগুলিতে ধাতু, মিশ্রণ এবং ঔষধি যৌগ প্রস্তুত করার বিভিন্ন রাসায়নিক প্রক্রিয়া এবং কৌশলগুলি বিস্তারিত ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।

রসায়নে নাগার্জুনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদানগুলির মধ্যে একটি হল পাতন প্রক্রিয়ার আবিষ্কার। পাতন হল এমন একটি প্রক্রিয়া যা তরলকে ফুটিয়ে বাস্পে পরিণত করা হয়।  তারপরে বাষ্প থেকে বিশুদ্ধ পদার্থকে সংগ্রহ করে পৃথক করা যায়। তিনি বিভিন্ন পদার্থ, যেমন পানি, অ্যালকোহল ও তেল শুদ্ধ করতে ডিস্টিলেশন ব্যবহার করেছিলেন।

নাগার্জুন উদ্বায়ীকরণ প্রক্রিয়ারও অনেক উন্নতি করেছিলেন। উদ্বায়ীকরণ হল এমন একটি প্রক্রিয়া যা একটি কঠিনকে সরাসরি গ্যাসে রূপান্তর করে । তিনি ধাতু এবং অন্যান্য পদার্থ শুদ্ধ করতে উদ্বায়ীকরণ ব্যবহার করেছিলেন।

পাতন এবং উদ্বায়ীকরণ ছাড়াও, নাগার্জুন বাস্পীয়ভবন প্রক্রিয়ারও অনেক উন্নতি করেছিলেন। বিভিন্ন ঔষধি যৌগ এবং অন্যান্য  রাসায়নিক পদার্থ তৈরী করতে তিনি বেশ কয়েকটি নতুন বাস্পীয়ভবন কৌশল আবিষ্কার করেছিলেন।

 

১০. বরাহমিহির (প্রায় ৫০৫ – ৫৮৭ খ্রিস্টাব্দ):  সূর্যকেন্দ্রিক সৌরজগতের প্রস্তাবক

বরাহমিহির ছিলেন একজন প্রাচীন ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী, গণিতবিদ, দার্শনিক এবং পণ্ডিত। তিনি তৎকালীন গুপ্ত সাম্রাজ্যে জন্মগ্রহণ করেন (বর্তমান উজ্জয়িনী, মধ্যপ্রদেশ, ভারত)।

বরাহমিহির বেশ কয়েকটি বিখ্যাত বই রচনা করেছিলেন, যার মধ্যে রয়েছে:

  • পঞ্চসিদ্ধান্তিকা: জ্যোতির্বিদ্যা, গণিত এবং দর্শনের উপরে লেখা   বই।
  • বৃহজ্জাতক: জ্যোতিষশাস্ত্রের বিখ্যাত বই।
  • ব্রহ্মসূত্র: হিন্দু দর্শনের বই।

বরাহমিহিরের কাজ তার সময়ের চাইতে অনেক এগিয়ে ছিল। তিনি জ্যোতির্বিদ্যায় সূর্যকেন্দ্রিক সৌরজগতের মডেল প্রস্তাব করেছিলেন, যা তখনকার সময়ে ছিল একটি অকল্পনীয় চিন্তা। তিনি গণিতেও অনেক অবদান রেখেছিলেন, প্যাসকেলের ত্রিভুজ আবিষ্কার করেছিলেন বলেও ধারণা করা হয়।

এখানে মাত্র ১০ জন বিখ্যাত প্রাচীন ভারতীয় বিজ্ঞানী ও তাদের আবিষ্কার নিয়ে লেখা হয়েছে।  কিন্তু প্রাচীন ভারতীয় বিজ্ঞান ছিল আরও সমৃদ্ধ , অনেক বিখ্যাত বিজ্ঞানী ও তাদের আবিষ্কার বাদ পরে গেছে।  তাদের আবিস্কারগুলি আধুনিক বিজ্ঞানের ভিত্তি রচনা করে গিয়েছিল , যার উপর দাঁড়িয়ে আছে আজকের পৃথিবী।

 

Related Post

মৃত্যু নিয়ে উক্তি

150+মৃত্যু নিয়ে উক্তি, বাণী, ক্যাপশন 2024

মৃত্যু নিয়ে উক্তি জন্মিলে মরিতে হবে আর এটাই সত্যি। মৃত্যু হচ্ছে সবচেয়ে চিরন্তন সত্যি। পৃথিবীতে প্রতিটি প্রাণীর মৃত্যুর স্বাদ অনুভব করতে হবে। সবসময় মৃত্যুর জন্য

Read More »
খুশির স্ট্যাটাস

200+ স্টাইলিশ খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন

খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন জীবনের সুন্দর খুশির মুহূর্ত আমরা সবাই বাঁধাই করে রাখতে চাই। আর এই খুশির মুহূর্তকে ধরে রাখার সবচেয়ে সহজ উপায়

Read More »

স্টাইলিশ ভালোবাসার ছন্দ | রোমান্টিক ছন্দ | Love Status Bangla

❤❤ভালোবাসার ছন্দ | ভালোবাসার ছন্দ রোমান্টিক | ভালোবাসার ছন্দ স্ট্যাটাস❤❤ ভালোবাসা হলো এক অন্যরকম অনুভূতির নাম, যা শুধুমাত্র কাউকে ভালবাসলেই অনুভব করা যায়। আমরা বিভিন্নভাবে

Read More »
মন খারাপের স্ট্যাটাস

মন খারাপের স্ট্যাটাস, উক্তি, ছন্দ, ক্যাপশন, কিছু কথা ও লেখা

মন খারাপের স্ট্যাটাস মন খারাপ – এই কষ্টের অনুভূতি কার না হয়? সবারই কখনো না কখনো সবারই মন খারাপ হয়। জীবনের ছোটোখাটো অঘটন থেকে শুরু

Read More »

Leave a Comment

Table of Contents