Dreamy Media BD

রক্তে এলার্জি দূর করার উপায়!

রক্তে এলার্জি দূর করার উপায়

রক্তে এলার্জি দূর করার উপায়!

রক্তে এলার্জি দূর করার উপায় , এলার্জি খুব পরিচিত এবং সাধারন একটি সমস্যা। কমবেশি আমরা সবাই এলার্জি সমস্যায় ভুগে থাকি। এলার্জি হলো আমাদের শরীরের অংশ নয় বরং শরীরের বাহিরের বিষয়ের  প্রতি শরীর যে প্রতিক্রিয়া করে থাকে। আমরা অনেকেই মনে করি বিভিন্ন ধরনের খাবারেই মনে হয় এলার্জি থাকে। খাবার এর চেয়ে বাইরের জিনিস যেমন ডাষ্ট, ফুলের রেনু, পশুর পশম এই জিনিস গুলোতে প্রচুর এলার্জি থাকে। অনেকের ধারনা বেগুন খেলে প্রচুর এলার্জি হয়। এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারনা। কারন বেগুনের এলার্জি তৈরি করার ক্ষমতা খুবই কম। তাই ভুল ধারনা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। কেন এলার্জি হয় কিভাবে প্রতিরোধ করতে হয় আজ এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করব এই আর্টিকেলে। 

রক্তে এলার্জি দূর করার উপায়

এলার্জি কি?

এলার্জি শরীরের বাইরের একটি বিষয় যার জন্য আমাদের শরীর বিশেষ প্রতিক্রিয়া করে থাকে। এলার্জি শব্দটি গ্রিক শব্দ Allos এবং Ergos শব্দের সমন্বয়ে তৈরি। যার অর্থ হলো পরিবর্তিত প্রতিক্রিয়া। যদি কোনো কারনে ইমিউন সমস্যা হয় তখন এলার্জি সমস্যা দেখা দেয়। কোনো পদার্থ দেখে যদি শরীরে অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় যেটি সাধারণত উপকারি একটি পদার্থ বা অন্যদের ক্ষেত্রে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়না। কিন্তু বিশেষ ব্যক্তির সামনে থাকলে শরীরে অস্বাভাবিক সমস্যা দেখা দেয়,  সেই ব্যক্তির সমস্যাকে এলার্জি বলে।

এলার্জি হওয়ার কারন

এলার্জি বিভিন্ন কারনে হয়ে থাকে। তার মধ্যে প্রধান কারন গুলো হচ্ছে- 

ফুলের রেনু

বসন্ত কাল বা সারাবছরই কোনো না কোনো ফুল ফুটে থাকে। বিভিন্ন ফুলের রেনু বাতাসে ভেসে বেড়ায়। ভেসে বেড়ানো এই ফুলের রেনু শরীরে এলার্জি তৈরি করে।

ডাষ্ট/ ধুলাবালু 

বাসা বাড়ি রাস্তা ঘাটে সবসময় ধুলাবালু দেখা যায়। ধুলাবালু এলার্জি হওয়ার প্রধান কারন। বাহিরের ধুলাবালু বাতাসের মাধ্যমে শরীরের ভিতরে প্রবেশ করে এলার্জি তৈরি করে। যখন ধুলাবালু ভিতরে প্রবেশ করে তখন আমাদের শরীরে এক ধরনের বিশেষ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়৷ 

পশম

বাসা বাড়িতে আমরা অনেকেই বিড়াল, কুকুর বা অন্যান্য পশু পুষি৷ যে সকল পশুর শরীরে অনেক পশম রয়েছে সেগুলো আমাদের শরীরে এলার্জির কারন। যার কারনে নানান ধরনের এলার্জির উপসর্গ দেখা দেয়। 

খাবার থেকে এলার্জি

সবার ধারনা যে বেগুনে অনেক এলার্জি থাকে। প্রকৃতপক্ষে বেগুনে কোনো এলার্জি থাকেনা। বলতে পারেন সবাই না জেনেই নিরীহ বেগুনকে এতদিন দোষারোপ দিয়ে এসেছি। এলার্জি জাতীয় অনেক খাবার আছে যেমন চিংড়ি মাছ, ইলিশ মাছ, গরুর মাংস। এগুলো হচ্ছে এলার্জি জাতীয় খাবার। যে খাবারে প্রচুর পরিমানে হাই প্রোটিন রয়েছে সেই খাবার গুলো এলার্জি বৃদ্ধি করে৷ বিভিন্ন ধরনের শুটকি মাছ এলার্জি বাড়ায়। কারন শুটকি মাছে প্রচুর পরিনে হাই প্রোটিন থাকে। এছাড়াও হাস মুরগি উভয় ডিম,  গরুর দুধ, বাদাম এগুলোতে প্রচুর পরিমান এলার্জি রয়েছে। 

এলার্জির লক্ষন

  • দশ বা বারো বারের বেশি হাচি দেয়া
  • চোখ লাল হয়ে যায়, চুলকায়
  • নাক, মুখ, চোখ ফুলে যায়
  • শ্বাসকষ্ট হয় বা আ্যজমা সমস্যা
  • ঠান্ডা থেকে জ্বর 
  • অতিরিক্ত কাশি হওয়া

রক্ত থেকে  এলার্জি দূর করার উপায়

এলার্জি যুক্ত খাবার খাওয়া বন্ধ করা

এলার্জির ওষুধ খেলেও ঠিকমত কাজ করেনা অনেক সময়। কারন এলার্জি জাতীয় খাবার খেলে এলার্জি আরো বেশি বেড়ে যায়। তাই এলার্জির উপসর্গ দেখা দিলে হাই প্রোটিন জাতীয় খাবার খাওয়া বন্ধ করতে হবে৷ 

ধুলা ময়লা থেকে দূরে থাকা

ফুলের রেনু, ধুলাবালু থেকে এলার্জি হয়। তাই সব সময় চেষ্টা করতে হবে ধুলাবালু থেকে দূরে থাকার। যদি ধুলা বালুর মধ্যে কাজ করতে হয় তাহলে মাস্ক পরে কাজ করবেন। বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক পরিধান করতে হবে৷ বাগানে কাজ করার সময় বা বাগানের আশেপাশে থাকলে মাস্ক পরিধান করতে হবে। 

কর্টিকোষ্টেরয়েড ব্যবহার

এলার্জি দূর করার জন্য চিকিৎসকেরা অনেক সময় কর্টিকোষ্টেরয়েড ব্যবহার করতে বলেন৷ কর্টিকোষ্টেরয়েড হলো একপ্রকার হরমোন যা শরীরে গ্রহনের কারনে এলার্জি দূর হয়। কর্টিকোষ্টেরয়েড ক্রিম বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। এলার্জির স্থানে ক্রিম লাগালে এলার্জি দূর হয়। আবার অনেকে কর্টিকোষ্টেরয়েড ইঞ্জেকশনও নিয়ে থাকেন। 

তবে কর্টিকোষ্টেরয়েড নিলে পার্শপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। যেমন : ত্বক পাতলা হয়ে যাওয়া, ত্বক ফুলে যায়, ত্বকের রং চেঞ্জ হয়, হাড়ের ক্ষয়, চোখের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ সহ বিভিন্ন পার্শপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়৷ 

আ্যন্টিহিষ্টামিন 

আ্যন্টিহিষ্টামিন এলার্জি দূর করতে সাহায্য করে৷ সাধারণত হিষ্টামিন এর ম প্রভাবে রক্তে এলার্জি বেড়ে যায়৷ তাই হিষ্টামিন কে নিয়ন্ত্রন করার জন্য আ্যন্টিহিষ্টামিন জাতীয় ওষুধ,ইঞ্জেকশন বা ক্রিম ব্যবহার করা হয়। এটি ক্রিম বা ইঞ্জেক দুইভাবেই পাওয়া যায়৷ যখন এলার্জি অনেক বেড়ে  যাবে তখন চিকিৎসক এর থেকে পরামর্শ নিয়ে আ্যন্টিহিষ্টামিন জাতীয় ইঞ্জেকশন বা ক্রিম ব্যবহার করতে হবে৷ 

ষ্টেরয়েড

রক্তে ষ্টেরয়েড থাকলে রক্তের প্রদাহ দূর হয়৷ ষ্টেরয়েড ইঞ্জেকশন বা ক্রিম দুটোই রয়েছে৷ দুটোর যে কোনো একটি ব্যবহার করলে রক্তের সকল প্রদাহ এবং এলার্জি সমস্যা দূর হয়। 

আ্যড্রেনালিন

আ্যড্রেনালিন ইঞ্জেকশন প্রয়োগ করলে এলার্জি সমস্যা দূর হয়৷ এটি একপ্রকার হরমোন। শরীরে এই হরমোন প্রয়োগ করলে এলার্জি সমস্যা দূর হয়৷ 

এলার্জি প্রতিরোধে কোয়ারসেটিন সমৃদ্ধ খাবার 

কোয়ারসেটিন এক ধরনের প্রাকৃতিক যৌগ। এই যৌগটি বিভিন্ন ধরনের ফল ও সবজিতে পাওয়া যায়। কোয়ারসেটিন প্রদাহ বিরোধী এবং আ্যন্টিহিষ্টামিন হিসেবে কাজ করে৷  কোয়ারসেটিন সমৃদ্ধ কিছু খাবার রয়েছে যেমন আপেল, পেয়াজ এই খাবার গুলো খেলে এলার্জি প্রতিরোধ হয়। 

হলুদ এবং মধু

হলুদ এলার্জি দূর করার জন্য দারুন কার্যকরী একটি মসলা। এলার্জি প্রতিরোধে হলুদকে আরো ভালভাবে কার্যকর করে মধু।  তাই এলার্জি প্রতিরোধে হলুদ এবং মধু একসাথে খেলে এলার্জি দূর হয়। প্রথমে কাচা হলুদের রস বের করে তার সাথে মধু মিশিয়ে খেতে হবে। তাহলে উপকার পাওয়া যাবে। 

প্রোবায়োটিকস

প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার খেলে এলার্জি দূর হয়। প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার গুলোর মধ্যে রয়েছে দই,কেফির, স্যুরক্রুট, এবং কিমচি, ওটমিল,  ইয়োগার্ট ইত্যাদি খাবার। এই খাবার গুলো এলার্জি প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 

আদা চা

আদার মধ্যে রয়েছে আ্যন্টিহিষ্টামিন বৈশিষ্ট্য। যার কারনে এলার্জি প্রতিরোধ করতে সক্ষম। কয়েক মিনিট ধরে আদা সহ পানি সিদ্ধ করে সেই পানি হালকা কুসুম গরম থাকা অবস্থায় নিয়মিত খেলে এলার্জি দূর হয়। 

স্থানীয় মধু

ফুলের রেনু থেকে যে এলার্জির সমস্যা হয়। সেটি দূর করার জন্য নিয়মিত মধু পান করলে এলার্জি সমস্যা দূর হয়। তবে সেটি স্থানীয় মধু হতে হবে। প্রতিদিন এক চামচ করে মধু খেলে শরীর এলার্জির বিরুদ্ধে লড়তে সক্ষম হয়। 

এলার্জি প্রতিরোধে আ্যলোভেরা জেল 

আ্যলোভেরা কমবেশি সবার বাসায় পাওয়া যায়। এটি এলার্জি প্রতিরোধে ভাল কাজ করে। আ্যলোভেরা তে রয়েছে অ্যান্টি ইনফ্লেমটরি এবং ত্বক শীতলকারী বৈশিষ্ট্য। নিয়মিত আ্যলোভেরা জুস পান করলে এলার্জি সমস্যা দূর হয়। যাদের জুস খেতে খারাপ লাগে তারা নিয়মিত শরীরে জেল হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। আ্যলোভেরা জেল করার আগে আ্যলোভেরা থেকে হলুদ পিচ্ছিল অংশ গুলো বের করে তারপর ব্যবহার করতে হবে। 

ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার

ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। এটি  একটি আ্যন্টিঅক্সিডেন্ট যা রোগ প্রতিরোধ ও মোকাবেলা করতে সক্ষম। ভিটামিন সি জাতীয় ফল যেমিন বেল, ব্রকলি, আম, লেবু ইত্যাদি প্রচুর পরিমানে খেতে হবে। 

শেষ কথা 

এলার্জি অনেক যন্ত্রনাদায়ক একটি রোগ। এলার্জি প্রতিরোধ অনেক ভাবেই করা যায়৷ কিন্তু এলার্জি প্রতিরোধে ওষুধ বা বিভিন্ন খাবার খাওয়ার চেয়ে উত্তম হচ্ছে এলার্জি যেন না হয় সেই সমস্ত খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে৷ এলার্জি সমস্যা বেড়ে গেলে বিলম্ব না করে চিকিৎসক এর পরামর্শ নিতে হবে। 

Also Read: কিভাবে নবজাতক শিশুর যত্ন নিতে হবে!

 

Related Post

মৃত্যু নিয়ে উক্তি

150+মৃত্যু নিয়ে উক্তি, বাণী, ক্যাপশন 2024

মৃত্যু নিয়ে উক্তি জন্মিলে মরিতে হবে আর এটাই সত্যি। মৃত্যু হচ্ছে সবচেয়ে চিরন্তন সত্যি। পৃথিবীতে প্রতিটি প্রাণীর মৃত্যুর স্বাদ অনুভব করতে হবে। সবসময় মৃত্যুর জন্য

Read More »
খুশির স্ট্যাটাস

200+ স্টাইলিশ খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন

খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন জীবনের সুন্দর খুশির মুহূর্ত আমরা সবাই বাঁধাই করে রাখতে চাই। আর এই খুশির মুহূর্তকে ধরে রাখার সবচেয়ে সহজ উপায়

Read More »

স্টাইলিশ ভালোবাসার ছন্দ | রোমান্টিক ছন্দ | Love Status Bangla

❤❤ভালোবাসার ছন্দ | ভালোবাসার ছন্দ রোমান্টিক | ভালোবাসার ছন্দ স্ট্যাটাস❤❤ ভালোবাসা হলো এক অন্যরকম অনুভূতির নাম, যা শুধুমাত্র কাউকে ভালবাসলেই অনুভব করা যায়। আমরা বিভিন্নভাবে

Read More »
মন খারাপের স্ট্যাটাস

মন খারাপের স্ট্যাটাস, উক্তি, ছন্দ, ক্যাপশন, কিছু কথা ও লেখা

মন খারাপের স্ট্যাটাস মন খারাপ – এই কষ্টের অনুভূতি কার না হয়? সবারই কখনো না কখনো সবারই মন খারাপ হয়। জীবনের ছোটোখাটো অঘটন থেকে শুরু

Read More »

Leave a Comment

Table of Contents