Dreamy Media BD

সীতাকুণ্ড দর্শনীয় স্থান সমূহ

সীতাকুণ্ড দর্শনীয় স্থান সমূহ

সীতাকুণ্ড দর্শনীয় স্থান সমূহ

সীতাকুণ্ড চট্রগ্রাম বিভাগের দুইটি প্রধান পর্যটন কেন্দ্র। কি নেই এখানে। সীতাকুন্ডে গেলে প্রকৃতির অতি অপরুপ সৌন্দর্য দেখে আপনার কোনোভাবেই ইচ্ছে করবেনা ঘরে ফেরার। যদি আপনি প্রকৃতি ভালবেসে থাকেন। সীতাকুন্ড গেলে আপনার মনে হবে সৃষ্টিকর্তা বুঝি আপন হাতে খুব যত্ন করে গড়ে তুলেছে  এখানকার প্রকৃতিকে।  সীতাকুন্ডে পাহার, ঝর্ণা এবং সমুদ্র তিনটিই রয়েছে। যদি আপনি পাহাড় ভালবাসেন সীতাকুন্ড হবে আপনার পছন্দের স্থান, আবার যদি আপনি সমূদ্র ভালবাসেন তাও সীতাকুণ্ড হবে আপনার পছন্দের স্থান আর যদি আপনি ঝর্ণা প্রেমি হন সেটাও আপনি খুজে পাবেন সীতাকুন্ডে। 

সীতাকুন্ডে অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- খৈয়াছড়া ঝর্ণা,  নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা, কমলদেহ ঝর্ণা, সুপ্তধারা ঝর্ণা, সহস্রধারা ঝর্ণা,  সোনাইকছড়ি ট্রেইল,চন্দ্রনাথ পাহাড়,সীতাকুণ্ড ইকো পার্ক,গুলিয়াখালী সমূদ্র সৈকত, বাশবাড়িয়া সমূদ্র সৈকত,নীলাম্বর লেক ইত্যাদি। 

সোনাইছড়ি ট্রেইল

সোনাইছড়ি ট্রেইল সীতাকুন্ডে অবস্থিত। যারা ঘুরতে ভালবাসেন,  এডভেঞ্চার প্রিয়, প্রকৃতির মাঝে নিজেকে হারিয়ে ফেলতে ভালবাসেন তাদের জন্য এই ট্রেইলটি হতে পারে সবচেয়ে পছন্দের একটি জায়গা। সোনাইছড়ি ট্রেইল এর  দূর্গম পথে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বড় বড় পাথরের ফাকে যেন মৃত্যু লুকিয়ে থাকে। একটু পা পিছলে গেলেই সব শেষ। কিন্তু যখন ভ্রমনের নেশা পেয়ে বসে তখন এডভেঞ্চার প্রিয় মানুষেরা ভুলে যায় সবকিছু। তাদের মাথায় প্রকৃতির অপরুপ সৌন্সর্য ভর করে বসে। তাই যেভাবেই হোক সৌন্দর্য জয় করতে চায়। সোনাইছড়ি ট্রেইল এমন একটি অপরুপ জায়গা যেখানে যাওয়ার জন্য প্রতিদিন শত শত এডভেঞ্চারাস ছেলে মেয়ে দূর্গম পথ পারি দেয়৷ সোনাইছড়ির দৈর্ঘ্য ২৮ কিমি৷ যখন অতি ভয়ংকর পথ পারি দিবেন তখন পথে দেখা হবে অসংখ্য বাদুড়ের। নানা অজানা পাখির কিচিরমিচির শব্দ! আর একটু পর পর পাবেন ঝর্নার বয়ে যাওয়া পানির শান্ত অথচ মধুর মিষ্টি ছলছল ধ্বনি!  পথ বিপদ সংকুল হওয়ায় প্রতিটি পদ হিসেব করে সামনে ফেলতে হবে। পথে পাবেন ১৫০ থেকে ২০০ মিটার উচু পাথরের দেয়াল। প্রায় কয়েক ঘন্টা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যখন আপনার ট্রেইল শেষ হবে৷ সামনে দেখতে পাবেন বিশাল বড় এবং অপূর্ব এক ঝর্ণা আপনাকে হাতছানি দিয়ে তার কাছে ডাকছে। তখন ভুলে যাবেন পথের সকল ক্লান্তি এবং ব্যথা। 

সোনাইছড়ি ট্রেইল কিভাবে যাবেন

সোনাইছড়ি ট্রেইল যেতে চাইলে আপনাকে যেতে হবে চট্রগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ফকিরহাট বাজারে। বাজার থেকে সিএনজি বড় পাথর নামক জায়গায় গেলে ট্রেকিং এর পথ পাবেন। আপনি যদি পুরো সোনাইছড়ি ট্রেইল শেষ করতে চান তাহলে আপনাকে পাচ থেকে ছয় ঘন্টা সময় হাতে রেখে সেখানে যেতে হবে। 

ঝরঝরি ঝর্ণা ট্রেইল

ঝরঝরি ট্রেইল সীতাকুন্ডের আর একটি এডভেঞ্চারাস ট্রেইল। প্রকৃতি কত সুন্দর কত নিপুন হতে পারে এই ট্রেইলে না গেলে অনুধাবন করতে পারবেন না। চারপাশে সবুজ গাছ, বুনো ফুলের গন্ধ,  পাখির কলকাকলি আর বড় বড় পাহাড় দেখলে আপনি মুগ্ধ হবেনই। সবুজে ঘেরা আকাবাকা পাহাড়ি পথে দুই থেকে তিন ঘন্টা ট্রেকিং করলে ঝরঝরি ঝর্ণায় পৌছে যাবেন। এখান থেকে আবার একটু উপরে গেলে পাবেন আর একটি ক্যাসকেড।  এই ক্যাসকেডে স্বর্গের সিড়ি নামে একটি ক্যাসকেড রয়েছে। দেখতে অনেকটা খাজকাটা সিড়ির মত হলেও দেখে ভাবতে পারেন এটি বুঝি সত্যিকারের স্বর্গের সিড়ি। ঝরঝরি ট্রেইল শেষ করলে চোখে পরবে মুর্তি ঝর্ণা নামে আর একটি ঝর্না। 

কিভাবে যাবেন ঝরঝরি ঝর্ণা

ঝরঝরি ঝর্ণায় যেতে হলে প্রথমে যেতে হবে চট্রগ্রামের সীতাকুন্ডে। সেখান থেকে পন্থিছিলা বাজারে যেতে হবে। পন্থিছিলা বাজারে সিএনজি ভাড়া করে অল্প পথ গেলেই পাবেন ঝরঝরি ঝর্ণার ট্রেইল পথ। 

সহস্রধারা ঝর্ণা 

সীতাকুন্ডের মিরসরাইয়ে অবস্থিত সহস্রধারা ঝর্ণাটি। সীতাকুন্ডে যে ইকোপার্ক রয়েছে এই ঝর্ণা সেই পার্কের ভিরতে অবস্থিত। বলা চলে সারা বছর এই ঝর্নায় পানি থাকে৷ তবে শীতকালে এই ঝর্ণায় পানি একটু কম থাকে। তবে বর্ষা কালে ঝর্ণা পানি দিয়ে পরপুর্ন থাকে। 

কখন যাবেন সহস্রধারা ঝর্ণা 

সহস্রধারা ঝর্ণা যেতে চাইলে বর্ষা মৌসুমে যাওয়াই  ভাল। বর্ষায় পানি অনেক বেশি থাকে তাই এর আসল সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। শীতকালে গেলে পানি কম থাকে আবার গোসল করাও যায়না৷ জুন থেকে নভেম্বর মাসে ঝর্ণায় গেলে উপভোগ করা যায় বেশি। 

সুপ্তধারা ঝর্ণা 

সুপ্তধারা ঝর্ণা চট্রগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলায় অবস্থিত। সীতাকুন্ড রিজার্ভ ফরেষ্ট এর ভিতরে এই ঝর্নাটি অবস্থিত। এই ঝর্ণাটি অন্য ঝর্ণা থেকে কিছুটা ব্যতিক্রমী।  সাধারনত ঝর্ণায় যাওয়ার পথে ঝিড়ি পথ, পাহাড় এবং ছোট বড় গাছ চোখে পরে৷ কিন্তু এই ঝর্ণা যেন একটু বেশিই সুন্দর। সুপ্তধারা ঝর্ণায় যাওয়ার পথে চোখে পরবে অনেক রকম বন্য প্রানী। ভয় পাওয়ার কোনো কারন নেই এখানে কোনো বাঘ বা সিংহ পাবেন না৷ তবে চিরসবুজ মাঠ, আকাবাকা পথ আপনার পথের ক্লান্তিকে একটুও বুঝতে দিবেনা। বৃক্ষরাজির বাহার আপনার মনকে তাদের মতই চির সবুজ বানিয়ে দিবে আপনি যে বয়সেরই হোন না কেন। সুপ্তধারা ঝর্ণায় প্রায় সারা বছর পানি থাকে। তবে বর্ষায় এর দানবীয় রুপ দেখলে আপনি ভয় পেয়ে যাবেন। একি সাথে ঝর্নার ভরা যৌবনের সৌন্দর্য অন্য দিকে গর্জন আপনাকে বিস্মিত করবে। শীতকালেও এই ঝর্ণায় পানি পাওয়া যায়। তবে বর্ষা কালের মত সেই রুপ যৌবন থাকেনা। সুপ্তধারা ঝর্ণার এই ভয়ংকর সৌন্দর্য দেখার জন্য প্রতিদিন অসংখ্য প্রকৃতি পাগল ভ্রমন করতে আসেন। 

কখন সুপ্তধারা ঝর্ণায় যাবেন

সুপ্তধারা ঝর্ণায় বছরের যে কোনো সময় যেতে পারেন। সারা বছরই এই ঝর্না এবং রিজার্ভ ফরেষ্টের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। তবে যদি আপনি ঝর্ণার আসল রুপ দেখতে চান তাহলে বর্ষা কালে যাওয়াই ভাল। কিন্তু ভরা বর্ষায় না যাওয়াই ভাল কারন ভরা বর্ষায় গেলে ঝিড়িপথে পানির অনেক চাপ থাকে। অনেকেই ঝিরিপথের পানিতে ভেসে যান। তাই ভরা বর্ষায় না যেয়ে বর্ষা একটু কমে গেলে সেই সময় যাবেন। 

কিভাবে সুপ্তধারা ঝর্ণা যাবেন

সুপ্তধারা ঝর্না যেতে চাইলে আপনাকে প্রথমে যেতে হবে সীতাকুণ্ড তে।সীতাকুণ্ড থেকে সি এন জি ভাড়া করে যেতে হবে ফকিরহাট নামক জায়গায়। সেখান থেকে একটু গেলেই দেখা পাবেন সীতাকুন্ড ইকোপার্ক এর। সীতাকুন্ড ইকোপার্ক এর ভিতরেই রয়েছে নয়নাভিরাম এই সুপ্তধারা ঝর্ণা। 

গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত

গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত চট্রগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলায় অবস্থিত। সীতাকুন্ডের কথা মনে আসলেই চোখে ভাসে পাহাড়ি আকাবাকা রাস্তা এবং একপাশে অসীম সমূদ্র। সীতাকুণ্ড বাজার থেকে গুলিয়াখালী সমূদ্র সৈকতের দূরত্ব ৫ কিমি হবে৷ সীতাকুণ্ডের বাসিন্দারা এই সমূদ্র সৈকতকে মুরাদপুর সী বিচ বলে ডাকেন। গুলিয়াখালী সমূদ্র সৈকত অন্যান্য সমূদ্র সৈকতের থেকে আলাদা। আমরা সবাই জানি যে সমূদ্রের তীরে বা আশেপাশে অনেক বালু দিয়ে ভরা থাকে। কিন্তু গুলিয়াখালী সমূদ্র সৈকতের আশেপাশে রয়েছে সবুজ গালিচার মত ঘাস। আবার সৈকতের চারদিকে চোখ মেলে তাকালেই দেখবেন ছোট বড় ম্যানগ্রোভ বন। এই বনটি অনেক বড়। এই বনের উল্লেখযোগ্য গাছের মধ্যে একটি গাছ হচ্ছে কেওরা গাছ৷ সৈকতে হাটতে গেলে দেখতে পাওয়া যায় ছোট বড় অনেক শিকড় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। মাটির দিকে একটু ভাল করে লক্ষ্য করলে চোখে পরবে অসংখ্য তেলাপোকার সাইজের পোকা গর্তে ঢুকছে আর বের হচ্ছে৷ এই পোকা গুলো দেখে ভয় পাবেন না যেন। খালি পায়ে হাটলেও এই পোকা গুলো কামড়ায়না। কারন এরা মানুষকে দেখলেই সাথে সাথে ভিতরে ঢুকে যায়। গুলিয়াখালী বিচের চারপাশে রয়েছে ছোট বড় অনেক খাল। এগুলোতে সমূদ্রের পানি জমে থাকে৷ অনেক পর্যটক আবার সেই গর্তের ভিতরে বসে খেলা করেন ছবি তুলেন। গুলিয়াখালী সমূদ্র সৈকতের অসীম জলরাশি আপনার মন ভাল করে দিবে। 

গুলিয়াখালী বিচে গেলে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করা ভাল। এই বিচে গেলে অবশ্যই সাথে ছাতা রাখবেন। কারন এখানকার রোদ অনেক প্রখর। ত্বক সচেতন হলে সানস্ক্রিন ত্বকে মাখবেন। 

গুলিয়াখালী বিচে চেঞ্জিং রুম

গুলিয়াখালী বিচে গোসলের পরে আশেপাশে অনেক গুলো খাওয়ার হোটেল পাবেন। সেখানেই ড্রেস চেঞ্জের ব্যবস্থা আছে। বিশ টাকা দিলে গোসল করা যায়।

বাওয়াছাড়া লেক

বাওয়াছাড়া লেক সীতাকুণ্ডের মিরসরাই উপজেলার ওয়াহেদপুরে অবস্থিত। ঢাকা চট্রগ্রামের যে হাইওয়ে আছে সেখান থেকে দেড় কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত৷ বাওয়াছাড়া লেককে অনেকে নীলাম্বর লেক নামে চিনেন। নীলাম্বর লেকের নাম বাওয়াছাড়া হওয়ার কারন হচ্ছে এটি বারমাসি ছড়ার কাছে অবস্থিত। সেখান থেকেই স্থানীয়রা বাওয়াছাড়া লেক নামে চিনে। এই লেকের চারপাশ সবুজ গাছপালায় ঘেরা যা দেখে মুগ্ধ হন এখানে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা।  চারদিকে সবুজ গাছ পাখির কলকাকলি ছায়া ঘেরা পরিবেশ সত্যিই নিমিষে মন ভাল করে দেয়। বাওয়াছাড়া লেক নাইট ক্যাম্পিং করার জন্য দারুন একটি জায়গা৷ অনেকেই জোৎস্না রাতে এই লেকে ক্যাম্পিং করতে যান। হিমু ভক্ত অনেকেই আবার এই লেকে এসে নিজেকে হিমুর চরিত্রে কল্পনা করে সারা রাত জোৎস্না রাতে হাটতে যান। জোৎস্না রাতে এখানে ক্যাম্পিং করলে জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় কাটাতে পারবেন। সবুজ বনের ভিতরে জোৎস্না রাত উপভোগ করতে করতে প্রিয়জনের সাথে সময় কাটানো, কাছের ঝর্ণা থেকে আসা ছলছল ধ্বনি আপনাকে হারিয়ে নিয়ে যাবে অন্য জগতে। এই লেক থেকে একটু দূরে গেলে পাবেন ঝিরিপথ এবং ক্যাসকেড। 

বাওয়াছাড়া লেক কিভাবে যাবেন

বাওয়াছাড়া লেক যেতে চাইলে প্রথমে যেতে হবে চট্রগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ছোট কমলদহ বাজারে যেতে হবে। সেখান থেকে পূর্ব দিকে একটু হাটলেই একটি ঈদগাহ ময়দান দেখতে পাবেন। সেখান থেকে পূর্ব দিকে একটু হাটলেই একটা রেললাইন পাবেন। রেল লাইন ধরে বিশ বা পচিশ মিনিট হাটলে ডান পাশে একটি ছোট রাস্তা দেখতে পাবেন। একটু হেটে যাওয়ার পর কিছু বাড়ি চোখে পরবে। সেখানে কাউকে নীলাম্বর লেকের কথা জিজ্ঞেস করলেই তারা আপনাকে পথ চিনিয়ে দিবে। 

চন্দ্রনাথ পাহাড়

চন্দ্রনাথ পাহাড় সীতাকুন্ডে অবস্থিত ঐতিহাসিক একটি পাহাড়। এই পাহাড়টি সীতাকুন্ড থেকে চার কিমি দূরে অবস্থিত। এই পাহাড়ের একদম উপরে হিন্দুদের একটি মন্দির রয়েছে। যার জন্য হিন্দুদের কাছে এটি পবিত্র একটি স্থান। পুন্যের জন্য হিন্দুরা চন্দ্রনাথ পাহাড়ে উঠে আগে পূজা করতেন। সেই ধারা এখনো বজায় রেখে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে হিন্দুরা এখানে তীর্থ করতে আসেন কেউবা আসেন এখানে একবার পূজা করার নিমিত্তে। এই পাহাড়ের চুড়ায় যে মন্দির রয়েছে সেই মন্দিরের সামনে একটি গাছ আছে সেই গাছে দেখতে পাবেন অসংখ্য সুতা বেধে দেয়া আছে। হিন্দুরা মুলত তাদের ইচ্ছে পূরন করার জন্য এই গাছে সুতা ঝুলিয়ে রাখেন। 

চন্দ্রনাথ পাহাড় যে শুধু হিন্দুদের পবিত্র স্থান তা নয়। এই পাহাড় দেখার জন্য প্রতিদিন কয়েক হাজার দর্শনার্থী আসেন। যারা এডভেঞ্চার পছন্দ করে তাদের জন্য এটি অনেক পছন্দের জায়গা। এডভেঞ্চারাস ছেলেমেয়েদের কাছে চন্দ্রনাথ পাহাড় ট্রেকিং এর জন্য খুব প্রিয় একটি স্থান। এই পাহাড়ের উচ্চতা ১০২০ ফুট। তাই ট্রেকিং করার জন্য প্রয়োজন অসীম ধৈর্য্য ও সাহস। চন্দ্রনাথ পাহাড়ের পথ অনেক বেশি দূর্গম। চন্দ্রনাথ পাহাড়ে ওঠার আগেই একটি রাস্তা দিয়ে কয়েক মিনিট হাটতে হয়। রাস্তাটি ধীরে ধীরে উচু হওয়ায় অনেকেই উঠতে হাপিয়ে পরেন। যারা চন্দ্রনাথ পাহাড়ে যেতে চান তাদের জন্য উপযুক্ত সময় হচ্ছে বর্ষার কিছু আগে বা পরে৷ কারন এই সময় গরম একটু কম পরে। চন্দ্রনাথ পাহাড়ে উঠতে কমপক্ষে তিন থেকে চার ঘন্টা সময় লাগে। পাহাড়ে ওঠার জন্য দুইটি রাস্তা রয়েছে একটি ডানে এবং অপরটি বামে। ডানদিকের রাস্তাটি পুরোপুরি সিড়ি এবং বাম দিকের যে রাস্তা আছে ওটা পুরোপুরি পাহাড়ি পথ, তবে মাঝেমাঝে সিড়ি চোখে পরে। এ জন্য ডান দিকের রাস্তাটি বেশ নিরাপদ বাম দিকের রাস্তার চেয়ে। 

আপনি যখন তিন থেকে চারঘন্টা এই পাহাড়কে জয় করার জন্য উপরে উঠতে যাবেন তখন আপনার অনেক কষ্ট হবে কিন্তু চারদিকের পরিবেশ আপনাকে সেই কষ্ট বুঝতে দিবেনা। যে দিকে চোখ যায় সবুজের মহা সমূদ্র, কি শান্ত শীতল পরিবেশ। পথে চলতে মাঝে মাঝে উঁকি দিবে বুনোফুল। কখনো বা বাতাসের সাথে ভেসে আসবে অজানা কোনো ফুলের গন্ধ। নিমিষেই আপনার ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে ভুলে যাবেন আপনার মনের কোনে লুকিয়ে থাকা সমস্ত গ্লানি। প্রকৃতির টানে তিন থেকে চার ঘন্টার পরিশ্রমও আপনাকে ক্ষান্ত করতে পারবেনা যদি আপনি প্রকৃতই প্রকৃতি প্রেমি হন। 

চন্দ্রনাথ পাহাড়ে ওঠার সময় কিছু টিপস

  • চন্দ্রনাথ পাহাড় বিপদসংকুল একটি জায়গা। কারন প্রতি পদে পদে রয়েছে মৃত্যুর ঝুকি। একটু অসাবধান হলেই খাদে পরে যাবেন। তাই সব সময় সাবধান থাকতে হবে। 
  • পাহাড়ে ওঠার আগে সাথে ভারি কোনো ব্যাগ থাকলে সেটি পাহাড়ে যাওয়ার আগে দোকানে রেখে যাবেন। বিশ টাকা দিলেই দোকানে ব্যাগ রাখে। 
  • অবশ্যই সাথে শুকনো খাবার রাখতে হবে। কারন লং টাইম ট্রেকিং এর জন্য শরীর অনেক দূর্বল হয়ে পরে। খেজুর বাদাম এই টাইপের শুকনো খাবার রাখতে পারেন। 
  • সাথে অবশ্যই পানি নিতে ভুলবেন না। পারলে লেবু রাখবেন। একটু পর পর লেবু পানি খাবেন তাহলে ক্লান্তি ভর করবেনা। না নিলেও সমস্যা নেই কারন একটু পর পর শরবতের অনেক দোকান পাবেন। 
  • শরীরের উপর বাড়তি কোনো প্রেসার দিবেন না। বিশ্রাম নিতে নিতে পাহাড়ে ওঠার চেষ্টা করবেন। 
  • যদি ত্বক সচেতন হন তাহলে অবশ্যই সাবস্ক্রিন, হ্যাট এবং গ্লাস সাথে নিতে ভুলবেন না। 
  • সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যয়ার হচ্ছে পোশাক পরিধান। লম্বা পোশাক পরিহার করতে হবে। পাহাড়ে যেতে চাইলে সেমি লং বা শর্ট টাইপের পোশাক বেছে নিতে হবে। আর সেটা যেন সুতি কাপড় হয়। 

নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা 

নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা সীতাকুন্ডে অবস্থিত একটি অপূর্ব ঝর্ণা। প্রকৃতি প্রেমিরা যারা এই ঝর্ণাটি ঘুরে এসেছেন তাদের মনে আজীবন গেথে থাকে এই ঝর্ণার মায়াবী রুপ। এডভেঞ্চার প্রিয়দের কাছে নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা বাংলাদেশের অন্যতম একটি প্রিয় জায়গা। জীবনে একবারের জন্ন্যেও যদি প্রকৃতির আসল রুপ খুব কাছ থেকে দেখতে চান তাহলে নাপিত্তাছাড়া ঝর্ণা হবে আপনার জন্য সেই স্থান। সবুজ অরণ্য, ঝিড়িপথ, স্নিগ্ধ বাতাস, পাখির কিচিরমিচির,  বুনো ফুল, পাথরের বড় বড় দেয়াল আর ঝর্ণার শান্ত অথচ মনকে অশান্ত করে দেয়ার মত শব্দ…!  সব মিলিয়ে এ যেন এক স্বর্গপুরী। সেখানে গেলে মনে হবে দু:খেরা বুঝি কখনো সেখানে পৌছাতে পারেনা, সেখানে গেলে  মন খারাপ থাকেনা কারোরই। নাপিত্তাছড়া ঝর্ণায় গেলে দেখতে পাবেন সবুজের মাঝে কিভাবে পাহাড়ি ঝর্ণার বুক থেকে আছরে পরছে পানি৷ এই ঝর্ণার পাশে আরো কিছু ঝর্ণা রয়েছে। যেমন কুপিকাটাকুম ঝর্ণা,  মিঠাইছড়ি ঝর্ণা এবং বান্দরখুম ঝর্ণা। 

নাপিত্তাছড়া ঝর্ণায় যাওয়ার পথ অনেক বিপদসংকুল। প্রকৃতির নিয়মই এটা সুন্দর জিনিস কখনো সামান্য কষ্টে অর্জন করা যায়না। মায়াবতী সেই নাপিত্তাছড়া ঝর্ণায় যেতে চাইলে আপনাকে প্রায় তিন থেকে চারঘন্টা ট্রাকিং করতে হবে৷ ঝিরিপথের পথ যেমন সুন্দর তেমনই ভয়ংকর৷ কোথাও অনেক আলো কোথাও বা রাতের মত অন্ধকার। পুরো রাস্তার বেশিরভাগ রাস্তাই অনেক পিচ্ছিল। একটু অসাবধান হলেই ঘটে যেতে পারে ভয়ংকর কিছু৷ কারন একেতো রাস্তা অনেক পিচ্ছিল তার উপরে আবার বিশাল বিশাল দৈত্যাকার পাথর চারিদিকে। তাই প্রতিটি পথ সাবধানেনফেলতে হবে৷ পথে চলার জন্য আপনার দুই হাতকে কাজে লাগাতে হবে সবসময়। রাস্তা অনেক বিপদজনক হওয়ায় হাত দিয়ে গাছ কখনোবা পাথর ধরে এগোতে হবে৷ তাই ছিলে যেতে পারে আপনার হাত৷ তবে কষ্ট সাথে সাথেই ভুলে যাবেন৷ একেতো অপূর্ব নয়নাভিরাম প্রকৃতির হাতছানি তার উপরে আবার দেখতে পাবেন মারমা শিশুরা কোলাহল করে ঝিরিপথে গোসল করছে। নিমিষেই সব ভুলে যাবেন।

নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা কোন সময় যাবেন

নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা যে কোনো সময় যেতে পারেন। তবে বর্ষা কালে না যাওয়াই ভাল। বর্ষার কিছু আগে বা পরে যেতে পারেন। কারন এই সময় এই সুন্দরী মায়াবতী নাপিত্তাছড়া ঝর্নার পথ হয়ে ওঠে আরো ভয়ংকর আরো বিপদসংকুল।

ভ্রমন মানুষের জ্ঞানের পরিধি বাড়িয়ে দেয়৷ ভ্রমনের জন্য প্রকৃতি সব সময় ভাল একটি স্থান৷ আর সেটা যদি হয় সীতাকুণ্ডের মত মনোরম কোনো জায়গা তাহলে কথাই নেই। সীতাকুণ্ডের নানা স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অপূর্ব সুন্দর সব ভ্রমন স্থান। বেশি করে ঘুড়ুন এবং সাবধানে থাকুন। 

Read more : রমনা কালী মন্দির

 

Related Post

মৃত্যু নিয়ে উক্তি

150+মৃত্যু নিয়ে উক্তি, বাণী, ক্যাপশন 2024

মৃত্যু নিয়ে উক্তি জন্মিলে মরিতে হবে আর এটাই সত্যি। মৃত্যু হচ্ছে সবচেয়ে চিরন্তন সত্যি। পৃথিবীতে প্রতিটি প্রাণীর মৃত্যুর স্বাদ অনুভব করতে হবে। সবসময় মৃত্যুর জন্য

Read More »
খুশির স্ট্যাটাস

200+ স্টাইলিশ খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন

খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন জীবনের সুন্দর খুশির মুহূর্ত আমরা সবাই বাঁধাই করে রাখতে চাই। আর এই খুশির মুহূর্তকে ধরে রাখার সবচেয়ে সহজ উপায়

Read More »

স্টাইলিশ ভালোবাসার ছন্দ | রোমান্টিক ছন্দ | Love Status Bangla

❤❤ভালোবাসার ছন্দ | ভালোবাসার ছন্দ রোমান্টিক | ভালোবাসার ছন্দ স্ট্যাটাস❤❤ ভালোবাসা হলো এক অন্যরকম অনুভূতির নাম, যা শুধুমাত্র কাউকে ভালবাসলেই অনুভব করা যায়। আমরা বিভিন্নভাবে

Read More »
মন খারাপের স্ট্যাটাস

মন খারাপের স্ট্যাটাস, উক্তি, ছন্দ, ক্যাপশন, কিছু কথা ও লেখা

মন খারাপের স্ট্যাটাস মন খারাপ – এই কষ্টের অনুভূতি কার না হয়? সবারই কখনো না কখনো সবারই মন খারাপ হয়। জীবনের ছোটোখাটো অঘটন থেকে শুরু

Read More »

Leave a Comment

Table of Contents