Dreamy Media BD

গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার উপকারিতা 

গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার উপকারিতা 

গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার উপকারিতা 

গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার উপকারিতা অপরিসীম। সন্তান গর্ভে থাকা অবস্থায় গর্ভবতী মায়েরা চলাফেরা, জীবনধারণ ও খাদ্যভ্যাস এর কিছু নিয়ম মেনে চললে অনেক ঝুঁকি থেকে বেঁচে থাকা যায়। এজন্য পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া খুবই প্রয়োজনীয়। অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি খেজুর গর্ভবতী মায়েদের জন্য খুব খুব উপকারী। গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এটি মা ও শিশুর জন্য যেমন নিরাপদ তেমনি উপকারীও বটে। এই অবস্থায় খেজুর খাওয়ার প্রচলন কিন্তু নতুন নয়। সেই আদিকাল থেকে গর্ভবতী নারীরা খেজুর খেয়ে আসছেন। আজকের আর্টিকেল থেকে আসুন জেনে নেই গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার উপকারিতা।

কেন গর্ভাবস্থায় খেজুর খাবেন?

গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার প্রচলন সেই আদি যুগ থেকে চলে আসছে। সেই সময় থেকে মায়েদের এই অবস্থায় খেজুর খাওয়ার অভ্যাস। এর অনেক উপকারের পাশাপাশি অন্যতম একটা উপকার হচ্ছে এটি নিয়মিত খেলে লেবার পেইন কম হয়। এটি মনগড়া কোনো কথা নয়। অনেক গবেষকরা এটি গবেষণা করে জানিয়েছেন। এই অবস্থায় খেজুর নিয়মিত খেলে তা ইউটেরাসের সংবেদনশীলতা কমিয়ে তাকে শক্তিশালী করে, আর এতে প্রসব ব্যাথা অনেকটা কম হয়। আমেরিকার ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি এর গবেষণায় দেখা যায়, গর্ভাবস্থায় পয়ঁত্রিশ সপ্তাহ পর থেকে প্রতিদিন ছয়টি করে খেজুর খেলে তা মা ও তার বাচ্চার জন্য অনেক উপকারী। 

কারণ প্রতিটি খেজুরে রয়েছে ২০ থেকে ২৫ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম। যা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। রক্ত স্বল্পতায় ভোগা রোগীরা প্রতিদিন খেজুর খেতে পারেন। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় মায়েরা রক্ত স্বল্পতায় ভোগেন, আপনারা অবশ্যই নিয়মিত নিয়ম মেনে খেজুর খাওয়ার চেষ্টা করবেন প্লিজ। শুধু গর্ভবতীরা নয় সাধারণ মানুষেরও খেজুর প্রতিদিন নিয়মিত খাওয়া প্রয়োজনীয়। কারণ একজন সুস্থ মানুষের শরীরে যতটুকু আয়রণের প্রয়োজন তার ১১ ভাগ পূরন করতে পারে খেজুর। পুষ্টিবিদদের মতে শরীরের প্রয়োজনীয় সকল আয়রণই খেজুর বিদ্যমান আছে। তাই গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার উপকারিতা অনেক।

গর্ভাবস্থায় খেজুর খেলে কি কি উপকার পাবেন

গর্ভবতী মায়েদের খাবারের তালিকায় খেজুর থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। খেজুর এমন একটি খাবার যাতে রয়েছে অভাবনীয় কার্যকরী ক্ষমতা। এতে আছে পর্যাপ্ত পুষ্টি উপাদান, ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান যা গর্ভের সন্তানের স্বাভাবিক বেড়ে উঠাতে অন্যন্ত সহায়ক। খেজুর হজমে সাহায্য করে।এজন্য ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভবতী মায়েদের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি ডায়াবেটিস আক্রান্ত মায়েদের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভবতী মায়েরা যে কারণে খেজুর খাবেন তা নিচে দেওয়া হলো :-

  • সুস্থ গর্ভাবস্থায় সাহায্য করে। 
  • আপনার ত্বক ও চুলের জন্য সেরা।
  • শক্তি ও সহনশীলতা বাড়াতে সাহায্য কর।  
  • স্বাস্থ্যকর ওজন বৃদ্ধি প্রচার করে।
  • রক্তস্বল্পতার জন্য সেরা।
  • ক্লান্তি দূর করে। 
  • কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে।
  • হার্টের স্বাস্থ্য উন্নত করে। 
  • হাড়ের স্বাস্থ্য উন্নত করে। 
  • কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। 
  • রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। 
  • মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো করে। 
  • প্রদাহ রোধ করে। 
  • হেমোরয়েড প্রতিরোধে সহায়ক।
  • ওজন কমাতে সাহায্য করে।
  • প্রসব ব্যথা কমায়। 

যে কারণে গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়া ভালো 

আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন খেজুর।  যারা আয়রণের অভাবে ভুগছেন অথবা যাদের গর্ভাবস্থায় আয়রণের প্রয়োজন থাকে তারা প্রতিদিন খেজুর খাওয়ার চেষ্টা করবেন। কারণ খেজুরে ভরপুর আয়রণ আছে। অন্তত দুটি খেজুর যদি প্রতিদিন খান তাহলে অনেক রোগ আপনার কাছেও ঘেঁষবে না।এগুলো ছাড়াও আরও অনেক উপকার পাওয়া যায় খেজুর খেলে।আর তার মধ্যে কয়েকটি হল:

 

১.খেজুর পুষ্টিতে ভরপুর: খেজুরের পুষ্টি উপাদান লিখে শেষ করা যাবে না। অনেক অনেক পুষ্টি সমৃদ্ধ খেজুর। খেজুরের অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টি উপাদান হলো – ভিটামিন, ভিটামিন কে, ভিটামিন বি সিক্স, ফোলেইট, লৌহ, আঁশ, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এছাড়া আরও অনেক অনেক পুষ্টি রয়েছে। যা মা ও সন্তানের স্বাস্থের বৃদ্ধির জন্য অসংখ্য ভালো। 

 

২.প্রাকৃতিক ভাবে শক্তি যোগায়: খেজুর একটি প্রাকৃতিক ফল।এতে প্রাকৃতিক অনেক শক্তির উপাদান আছে। এটি কার্বোহাইড্রেটের প্রাকৃতিক উৎস।খেজুরে প্রচুর গ্লুকোজও থাকে। যা গর্ভাবস্থায় দুর্বলতা কমায়। এমনকি দ্রুত শক্তি যোগায় আবার সক্রিয় থাকতে সহায়তা করে।  

 

৩.খেজুর দ্রুত রক্ত উৎপাদন করে : দ্রুত রক্ত উৎপাদনের জন্য খেজুর খাওয়ার কোন বিকল্প নেই। সন্তান জন্মের সময় শরীর থেকে অনেক রক্ত বের হয়। এতে মায়ের শরীর দুর্বল থাকে। তাই গর্ভাবস্থায় ও প্রসর পরবর্তী সময়ে খেজুর খেলে শরীরে দ্রুত রক্ত উৎপাদন হয়।এতে একজন মা তার হারানো শক্তি ফিরে পান।

 

৪.খেজুর প্রসব ব্যথা কমায়: খেজুর প্রসব ব্যথা কমাতে খুবই কার্যকরী। এই ফলে রয়েছে ফ্যাটি অ্যাসিড। এই উপাদান প্রসবের সময় মায়েদের কমনীয় করে তুলে এবং সারভাইক্যাল মাসল ফেলিক্সিবল করে এতে প্রসব ব্যথা কম অনুভব হয়। 

 

৫.খেজুর প্রসব প্রক্রিয়া স্বাভাবিক করে: খেজুর খুবই উপকারী। তাই গর্ভাবস্থায় শেষের দিকে এসে অর্থাৎ পঁয়ত্রিশ সপ্তাহের পর থেকে ৬০-৮০ গ্রাম খেজুর খেলে সার্ভিক্স মজবুত হয়। এর ফলে ওষধ দিয়ে বা কৃত্রিমভাবে ব্যাথা সৃষ্টি করার প্রয়োজন পরে না। 

 

৬.খেজুর বাড়তি শক্তি যোগ করে : সন্তান জন্ম দেয়ার জন্য একজন মায়ের অনেক শক্তির প্রয়োজন থাকে। জন্ম দেয়া ছাড়া সন্তান লালন – পালনেও মায়েদের অনেক শক্তির দরকার হয়। খেজুরে আছে  বেশি পরিমাণে নিউট্রিয়েন্টস। গর্ভাবস্থায় বা প্রসব পরবর্তী সময়ে নিয়মিত খেজুর খেলে মায়ের সন্তান জন্মদানে ও লালন – পালনে যে শক্তি দরকার হয় তা সহজে শরীর দিতে সক্ষম হয়।

 

৭.কার্বোহাইড্রেটস:  খেজুরে থাকে প্রচুর ফ্রুক্টোজ, গ্লুকোজ ও কার্বোহাইড্রেটস। এগুলো শরীরে শক্তি যোগায়। গর্ভাবস্থায় গ্লুকোজ ধরে রাখা খুব জরুরি আর এই গ্লুকোজ এর চাহিদা পুরণ করে খেজুর।

 

৮.অ্যান্ডি অক্সিডেন্ট উপাদান : খেজুরে রয়েছে উচ্চ অ্যান্ডি অক্সিডেন্ট, যা ফ্রি রেডিকেলের কারণে হওয়া কোষের ক্ষয় কমিয়ে আনে। তাছাড়া এই উপাদান গর্ভাবস্থায় সার্বিক সুস্থতায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ পালন করে। 

 

৯.হজম ক্ষমতা উন্নত করে : খেজুর হজম ক্ষমতা উন্নত করতে কার্যকরী। খেজুর আঁশ সমৃদ্ধ। আর আঁশ হজম ক্রিয়ার উন্নয়ন ও পেট পরিষ্কার রাখা জন্য কাজ করে। 

 

১০.সন্তান জন্মদান প্রক্রিয়াকে সহজ করে : অনেক গবেষণায় দেখা যায় খেজুর সন্তান জন্মদান প্রক্রিয়াকে অনেকটা সহজ করে দেয়।

১১.রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে : খেজুরে রয়েছে উচ্চ পটাশিয়াম যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে উপকারী। 

 

১২.উচ্চ লৌহ সমৃদ্ধ : গর্ভাবস্থায় লৌহের ঘাটতি খুবই কমন প্রবলেম। আর এই লৌহ অনেক পরিমানে থাকে খেজুরে।

গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত খেজুর খেলে কি হবে  

কোন কিছুই অতিরিক্ত ভালো না।তেমনি অতিরিক্ত খেজুর খাওয়ার ও ভালো না। শুধু খেজুর কেন কোন খাবারই অতিরিক্ত খাওয়া ভালো না।সবকিছুই প্রয়োজনের চেয়ে বেশি খেলে উপকারের বদলে ক্ষতির সম্ভাবনা একটু বেশিই থাকে।

 

তাই প্রয়োজনের অতিরিক্ত খেজুর খেলে গ্যস্ট্রিকের সমস্যা, পেট ফাঁপা এমনকি ডায়রিয়া হওয়ারও আশঙ্কা থাকে। খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, তবে অতিরিক্ত ফাইবার গর্ভাবস্থায় খুবই বিপদজনক। খেজুর সংরক্ষণ এর জন্য সালফাইট নামক রাসায়নিক উপাদান ব্যবহৃত হয়। এটি অতিরিক্ত গর্ভবতীদের শরীরে প্রবেশ করলে ক্ষতিকর অবস্থার সম্মুখীন হতে পারে।তাই অতিরিক্ত খেজুর খাওয়ার যাবে না।  

শেষ কথা  

খেজুর প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখা খুব খুব জরুরি। শুধু গর্ভবতী মায়েরা নয় সাধারণ মানুষেরও খেজুর প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখা প্রয়োজনীয়। খেজুরে ফ্রুক্টোজ নামক একটি উপাদান রয়েছে যা দ্রুত ভেঙে যায়। এবং যে কোন মানুষের শরীরের রক্তে শর্করার মাত্রা পরিবর্তন না করেও শক্তি সরবরাহ করে। এজন্য গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার উপকারিতা অনেক বেশি। তবে নিয়ম মেনে না খেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।তাই অবশ্যই বিশেষজ্ঞদের বা ডাক্তারের পরামর্শ মেনে খেতে হবে। 

Also Read: ২ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা

 

   

 

Related Post

মৃত্যু নিয়ে উক্তি

150+মৃত্যু নিয়ে উক্তি, বাণী, ক্যাপশন 2024

মৃত্যু নিয়ে উক্তি জন্মিলে মরিতে হবে আর এটাই সত্যি। মৃত্যু হচ্ছে সবচেয়ে চিরন্তন সত্যি। পৃথিবীতে প্রতিটি প্রাণীর মৃত্যুর স্বাদ অনুভব করতে হবে। সবসময় মৃত্যুর জন্য

Read More »
খুশির স্ট্যাটাস

200+ স্টাইলিশ খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন

খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন জীবনের সুন্দর খুশির মুহূর্ত আমরা সবাই বাঁধাই করে রাখতে চাই। আর এই খুশির মুহূর্তকে ধরে রাখার সবচেয়ে সহজ উপায়

Read More »

স্টাইলিশ ভালোবাসার ছন্দ | রোমান্টিক ছন্দ | Love Status Bangla

❤❤ভালোবাসার ছন্দ | ভালোবাসার ছন্দ রোমান্টিক | ভালোবাসার ছন্দ স্ট্যাটাস❤❤ ভালোবাসা হলো এক অন্যরকম অনুভূতির নাম, যা শুধুমাত্র কাউকে ভালবাসলেই অনুভব করা যায়। আমরা বিভিন্নভাবে

Read More »
মন খারাপের স্ট্যাটাস

মন খারাপের স্ট্যাটাস, উক্তি, ছন্দ, ক্যাপশন, কিছু কথা ও লেখা

মন খারাপের স্ট্যাটাস মন খারাপ – এই কষ্টের অনুভূতি কার না হয়? সবারই কখনো না কখনো সবারই মন খারাপ হয়। জীবনের ছোটোখাটো অঘটন থেকে শুরু

Read More »

Leave a Comment

Table of Contents