পদ্মা সেতু সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান
পদ্মা সেতু, বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম গুরুপ্তপূর্ণ মেগা প্রকল্প এবং কোটি মানুষের স্বপ্ন। দেশের অর্থনীতি বা যোগাযোগের জন্য এই গুরুপ্তপূর্ণ সেতুটি সমানভাবে বিভিন্ন প্রতিযোগিতামুলক সরকারি পরীক্ষার জন্যও সমান গুরুপ্তপূর্ণ । আপনি যদি বিসিএস, প্রাইমারী, মাধ্যমিক, কলেজ এর শিক্ষক নিয়োগ বা সরকারী বেসরকারি ব্যাংক বা অন্যান্য পরীক্ষার প্রস্তিতি নেন, তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য । এই এক আর্টিকেলে আমরা পদ্মা সেতু সম্পর্কে সকল সাধারন জ্ঞান নিয়ে আলোচনা করব।
পদ্মা সেতু সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান | ৫০ টি প্রশ্ন ও উত্তর
১. প্রশ্নঃ পদ্মা সেতু প্রকল্পের নাম কি?
উত্তর: পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প।
২. প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর ভায়াডাক্ট কত কিলোমিটার?
উত্তর: ৩.১৮ কিলোমিটার।
৩. প্রশ্নঃ পদ্মা সেতু প্রকল্পের নদী ব্যবস্থাপনা ব্যয় কত?
উত্তর: পদ্মা সেতু প্রকল্পের নদী ব্যবস্থাপনা ব্যয় হলো ৮ হাজার ৬০৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এই ব্যয়ের মধ্যে রয়েছে:
- নদী খনন: ৪ হাজার ৪০০ কোটি টাকা
- বাঁধ নির্মাণ: ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা
- সারফেস ট্রিটমেন্ট: ১ হাজার ৭০৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা
৪.প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর সংযোগ সড়ক কত কিলোমিটার?
উত্তর: পদ্মা সেতুর সংযোগ সড়কের দৈর্ঘ্য হলো ১২ দশমিক ১১৭ কিলোমিটার। এর মধ্যে মাওয়া প্রান্তের সংযোগ সড়কের দৈর্ঘ্য হলো ১ দশমিক ৬২ কিলোমিটার এবং জাজিরা প্রান্তের সংযোগ সড়কের দৈর্ঘ্য হলো ১০ দশমিক ৫০ কিলোমিটার।
৫.প্রশ্ন: পদ্মা সেতু কী প্রকার সেতু?
উত্তর: পদ্মা সেতু একটি দ্বিতলবিশিষ্ট ট্রাস ব্রিজ। এর উপরের স্তরে চার লেনের সড়ক এবং নিচের স্তরে একটি রেলপথ রয়েছে।
৬.প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর পিলারের সংখ্যা কত?
উত্তর: দ্মা সেতুর পিলারের সংখ্যা ৪২টি।
৭. প্রশ্ন: পদ্মা সেতু প্রকল্পের জন্য কোন কোম্পানি চুক্তিবদ্ধ?
উত্তর: পদ্মা সেতু প্রকল্পের জন্য চুক্তিবদ্ধ কোম্পানিটি হলো চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিঃ।
৮. প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর প্রথম স্প্যানটি বসানো হয় কবে?
উত্তর: পদ্মা সেতুর প্রথম স্প্যানটি বসানো হয় ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সালে। শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারের ওপর ভাসমান ক্রেনের সাহায্যে এই স্প্যান বসানো হয়।
৯.প্রশ্ন: শেষ স্প্যানটি কোথায় স্থাপন করা হয়েছে?
উত্তর: পদ্মা সেতুর শেষ স্প্যানটি বসানো হয় ১২ ও ১৩ নম্বর খুঁটিতে। এই স্প্যানটি বসানো হয় ২৫ জুন, ২০২২ সালে।
১০.প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর প্রস্থ কত?
উত্তরঃ পদ্মা সেতুর প্রস্থ ১৮.১৮ মিটার (৫৯.৬৫ ফুট)। এর উপরের স্তরে চার লেনের সড়ক এবং নিচের স্তরে একটি একক রেলপথ রয়েছে।
১১. প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর ভায়াডাক্ট পিলার কয়টি?
উত্তর: পদ্মা সেতুর ভায়াডাক্ট পিলার ৮১টি। এর মধ্যে ৩৮টি পিলার মাওয়া প্রান্তে এবং ৪৩ টি পিলার জাজিরা প্রান্তে অবস্থিত।
১২. প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাল?
উত্তর: পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালের ২৬ নভেম্বর। এরপর দীর্ঘ সাত বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ চলার পর ২০২২ সালের ২৩ জুন সেতুটি নির্মাণ শেষ হয়। এরপর ২৫ জুন ২০২২ সালে সেতুটি উদ্বোধন করা হয়।
১৩. প্রশ্ন: পদ্মা সেতু কয়টি জেলাকে সংযুক্ত করেছে?
উত্তর: পদ্মা সেতুর মাধ্যমে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলা সরাসরি ঢাকা এবং অন্যান্য অঞ্চলের সাথে সংযুক্ত হবে।:
১৪. প্রশ্ন: কোন প্রতিষ্ঠান পদ্মা সেতুর নকশা করেছে?
উত্তর: পদ্মা সেতুর নকশা করেছে নিউজিল্যান্ড ভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান AECOM।
১৫. প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হয় কবে?
উত্তর: পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হয় ২০২২ সালের ২৫ জুন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুটি উদ্বোধন করেন।
১৬. প্রশ্নঃ পদ্মা সেতু বিশ্বের কততম সেতু?
উত্তরঃ পদ্মা সেতু বিশ্বের ১২২ তম দীর্ঘ সেতু।
১৭. প্রশ্ন পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তের জেলার নাম কি?
উত্তরঃ পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তের জেলার নাম হলো:
- মুন্সিগঞ্জের লৌহজং
- শরীয়তপুর ও মাদারীপুর
১৮. প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর প্রকল্পের মোট ব্যয় কত?
উত্তর: মূপদ্মা সেতু প্রকল্পের মোট ব্যয় ৩২ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে মূল সেতুর ব্যয় ২৬ হাজার ৭৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। বাকি ব্যয় নদী শাসন, সংযোগ সড়ক, ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন ও পরিবেশ, বেতন-ভাতা ইত্যাদির জন্য।
১৯. প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুতে রেললাইন কোথায় বসানো হবে?
উত্তর: পদ্মা সেতুতে রেললাইন বসানো হবে সেতুর মাঝখানের ৪৭টি পিলারের উপর।
২০. প্রশ্নঃ পদ্মা সেতু প্রকল্পে জনবল কত?
উত্তর: পদ্মা সেতু প্রকল্পে মোট জনবল ছিল প্রায় ৪ হাজার।
২১. প্রশ্নঃ পদ্মা সেতু প্রকল্প কত কিলোমিটার নদী শাসন করেছে?
উত্তর: পদ্মা সেতু প্রকল্পে মোট নদী শাসন করা হয়েছে ১২ কিলোমিটার। এর মধ্যে মাওয়া প্রান্তে ১ দশমিক ৬ কিলোমিটার এবং জাজিরা প্রান্তে ১২ দশমিক ৪ কিলোমিটার।
২২. প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর উচ্চতা পানির স্তর থেকে কত?
উত্তর: পদ্মা সেতুর উচ্চতা পানির স্তর থেকে ৬০ ফুট বা ১৮ মিটার।
২৩. প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর পাইলিং সর্বোচ্চ গভীরতা কত?
উত্তর: পদ্মা সেতুর পাইলিং গভীরতা সর্বোচ্চ ১২২ মিটার বা ৩৮৩ ফুট।
২৪. প্রশ্ন: প্রতিটি স্তম্ভের জন্য কয়টি পাইল আছে?
উত্তর: পদ্মা সেতুর মোট পিলার সংখ্যা ৪২টি। এর মধ্যে ১৮টি পিলারের প্রতিটির নিচে ৬টি করে পাইল আছে।
২৫. প্রশ্ন: পদ্মা সেতুতে কী কী সুবিধা থাকবে?
উত্তর: পদ্মা সেতুতে গ্যাস, বিদ্যুৎ এবং অপটিক্যাল ফাইবার লাইন পরিবহন সুবিধা থাকবে।
২৬. প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য কত?
উত্তর: পদ্মা সেতুর মূল সেতুর দৈর্ঘ্য ৬.১৫ কিলোমিটার। তবে, পদ্মা সেতু প্রকল্পের মোট দৈর্ঘ্য ১৯.৩ কিলোমিটার।
২৭. প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর প্রতিটি স্প্যানের দৈর্ঘ্য কত?
উত্তর: ১৫০ মিটার
২৮. প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর শেষ স্প্যানটি কোন দিনে বসানো হয়?
উত্তর: পদ্মা সেতুর শেষ স্প্যানটি ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর বসানো হয়েছিল।
২৯. প্রশ্ন: খরস্রোতা নদীর উপর বিশ্বের প্রথম দীর্ঘতম সেতু?
উত্তর: পদ্মা সেতু বিশ্বের বৃহত্তম খরস্রোতা নদীর উপর নির্মিত প্রথম দীর্ঘতম সেতু। পদ্মা নদীর প্রবাহের গতিবেগ প্রতি সেকেন্ডে ৪.৫ মিটার, যা বিশ্বের অন্যতম খরস্রোতা নদী।
৩০. প্রশ্ন – পদ্মা সেতু নির্মাণে কোন দেশ অর্থায়ন করেছে ?
উত্তরঃ পদ্মা সেতু নির্মাণে বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব সম্পদ থেকে অর্থায়ন করা হয়েছে। প্রথম দিকে, বিশ্বব্যাংক, জাইকা ও এডিবি পদ্মা সেতু নির্মাণে অর্থায়ন করার কথা ছিল। কিন্তু ২০১২ সালে বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির অভিযোগে পদ্মা সেতু প্রকল্পের অর্থায়ন স্থগিত করে দেয়। এরপর জাইকা ও এডিবিও অর্থায়ন থেকে সরে দাঁড়ায়।
৩১. প্রশ্ন – পদ্মা সেতু প্রকল্পে নদীশাসন ব্যয় কত?
উত্তরঃ পদ্মা সেতু প্রকল্পে নদীশাসন ব্যয় ৮ হাজার ৭০৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা।
৩২. প্রশ্ন – পদ্মা সেতুর মোট পাইলিং সংখ্যা কত?
উত্তর : পদ্মা সেতুর মোট পাইলিং সংখ্যা ২৯৪টি।
৩৩. প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর পূর্বে বাংলাদেশে দীর্ঘতম সেতুর নাম কি ছিলো?
উত্তরঃ পদ্মা সেতুর পূর্বে বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতুর নাম ছিলো যমুনা সেতু। যমুনা সেতুর দৈর্ঘ্য ৪.৮ কিলোমিটার।
৩৪. প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর প্রতিটি স্প্যান এর ওজন কত?
উত্তরঃ পদ্মা সেতুর প্রতিটি স্প্যানের ওজন ৩২০০ টন
৩৫. প্রশ্নঃ পদ্মা মুল সেতুতে ব্যবহৃত স্টিলের পরিমাণ কত?
উত্তরঃ পদ্মা সেতুতে ব্যবহৃত স্টিলের পরিমাণ ৩৮ হাজার টন। পদ্মা সেতুতে ব্যবহৃত স্টিলের মধ্যে রয়েছে ১৮ হাজার টন হাইব্রিড গার্ডার, ৯ হাজার টন প্লেট গার্ডার এবং ১১ হাজার টন পিয়ার।
৩৬. প্রশ্ন – পদ্মা সেতুর প্রথম স্প্যান কবে বসে?
উত্তরঃ পদ্মা সেতুর প্রথম স্প্যানটি ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বসানো হয়েছিল।
৩৭. প্রশ্ন – পদ্মা সেতুর ভায়াডাক্ট কত কিলোমিটার ?
উত্তরঃ পদ্মা সেতুর ভায়াডাক্ট ৩.১৮ কিলোমিটার। এর মধ্যে ২.৫৪ কিলোমিটার সড়ক ভায়াডাক্ট এবং ০.৬৪ কিলোমিটার রেল ভায়াডাক্ট।
৩৮. প্রশ্ন – পদ্মা সেতুর ভায়াডাক্ট পিলার কয়টি?
উত্তরঃ পদ্মা সেতুর ভায়াডাক্ট পিলার ৮১টি। এর মধ্যে সড়ক ভায়াডাক্ট পিলার ৭২টি এবং রেল ভায়াডাক্ট পিলার ৯টি।
৩৯. প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর ভূমিকম্প সহনীয় মাত্র কত রিখটার স্কেল পর্যন্ত?
উত্তর: পদ্মা সেতুর ভূমিকম্প সহনীয় মাত্রা ৯ রিখটার স্কেল পর্যন্ত।
৪০. প্রশ্ন: পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ লাইন থাকবে কতটি?
উত্তর: পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ লাইন থাকবে ১টি। এই লাইনটি মিটার ও ব্রডগেজ উভয়ের জন্যই ব্যবহার করা যাবে।
৪১. প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর অফিসিয়াল নাম কী?
উত্তর: পদ্মা সেতুর অফিসিয়াল নাম হলো “পদ্মা বহুমুখী সেতু” ( The Padma Multipurpose Bridge )।
৪২. প্রশ্ন: পদ্মা সেতু এশিয়ার কততম সেতু?
উত্তর: পদ্মা সেতু দক্ষিণ এশিয়ার ৬ষ্ঠ।
৪৩. প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর পিলার ও স্প্যান সংখ্যা কত?
উত্তর: পদ্মা সেতুর ৪১টি স্প্যান ও ৪২টি পিলার।
৪৪. প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর আয়ুষ্কাল কত বছর?
উত্তর: পদ্মা সেতুর আয়ুষ্কাল কত বছর ১০০ বছর।
৪৫. প্রশ্ন: পদ্মা সেতুতে কাজ করা প্রথম বাঙালী মহিলা প্রকৌশলীর নাম কি?
উত্তর: ইশরাত জাহান ইশি।
৪৬. প্রশ্ন: পদ্মা সেতু কোন বিভাগে অবস্থিত?
উত্তর: পদ্মা সেতু ঢাকা বিভাগে অবস্থিত।
৪৭. প্রশ্ন: পদ্মা সেতু রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব কার?
উত্তর: পদ্মা সেতু রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের।
৪৮. প্রশ্ন: পদ্মা সেতু প্রকল্পের জন্য কত সদস্যের বিশেষজ্ঞ প্যানেল গঠন করা হয়?
উত্তর: পদ্মা সেতু প্রকল্পের জন্য ১১ সদস্যের বিশেষজ্ঞ প্যানেল গঠন করা হয়।
৪৯. প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর পাইলের ব্যাস কত?
উত্তর: পদ্মা সেতুর পাইলের ব্যাস ৩ মিটার।
৫০. প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর কারণে প্রতিবছর কত শতাংশ জিডিপি বাড়বে?
উত্তর: পদ্মা সেতুর কারণে প্রতি বছর ১.২ শতাংশ জিডিপি বাড়বে।
অতিরিক্ত প্রশ্ন ও উত্তর:
প্রশ্ন: পদ্মা সেতুর প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয় কবে?
উত্তর: পদ্মা সেতুর প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয় ১৯৯৯ সালে।
প্রশ্ন: পদ্মা সেতুতে কয়টি ল্যাম্পপোস্ট আছে?
উত্তর: পদ্মা সেতুতে মোট ৪২৫ টি ল্যাম্পপোস্ট আছে।
প্রশ্ন: পদ্মা সেতু প্রকল্পের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সভাপতি কে?
উত্তর: পদ্মা সেতু প্যানেলের সভাপতি ছিলেন অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী।
এক নজরে পদ্মা সেতুঃ
পুরো নাম | পদ্মা বহুমুখী সেতু |
উদ্বোধন | ২৫ জুন ২০২২ |
উদ্বোধন করেন | প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা |
প্যানেলের সভাপতি | অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী |
নির্মাণ প্রতিষ্ঠান | চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড |
নকশা প্রণয়ন | মাল্টিন্যাশনাল ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্ম – AECOM |
জমি অধিগ্রহণ | ৯১৮ হেক্টর |
নির্মাণ খরচ | ৩০ হাজার কোটি টাকা |
পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য | ৬.১৫ কিলোমিটার (২০,১৮০ ফুট) |
পদ্মা সেতুর প্রস্থ | ১৮.১০ মিটার (৫৯.৪ ফুট) |
নির্মাণকাজ শুরু | ২৬ নভেম্বর ২০১৪ |
নির্মাণ শেষ | ২৩ জুন ২০২২ |
সেতুর ভায়াডাক্ট | ৩.১৮ কিলোমিটার |
সেতুর পিলার মোট | ৪২টি |
স্প্যান সংখ্যা | ৪১ টি |
ভায়াডাক্ট পিলার কয়টি | ৮১টি |
সংযোগ সড়ক | ১৪ কিলোমিটার |
সংযোগ সড়ক হচ্ছে | জাজিরা ও মাওয়া প্রান্তে |
সেতু রক্ষণাবেক্ষণ | বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ |
দেখাশোনার দায়িত্ব | কোরিয়ান এক্সপেসওয়ে ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। |
ভূমিকম্প সহনশীল মাত্রা | রিখটার স্কেলে ৯ |
সেতুর মেয়াদ | প্রায় ১০০ বছর |
পদ্মা সেতু অনুচ্ছেদ
বিসিএসঃ লিখিতসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার লিখিত অংশে প্রায়শই পদ্মা সেতু নিয়ে অণুচ্ছেদ লিখতে বলা হয়। একটি আদর্শ নমুনা অণুচ্ছেদ দেওয়া হলঃ
পদ্মা সেতু
বাংলাদেশের ইতিহাসে পদ্মা সেতু একটি মাইলফলক। এই সেতুটি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ করেছে। পদ্মা সেতুর উদ্বোধন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
পদ্মা সেতুটি বিশ্বের দীর্ঘতম সেতুর তালিকায় ১২২তম স্থানে রয়েছে। এই সেতুটি ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং এর পিলার গুলোর উচ্চতা ১২২ মিটার। পদ্মা সেতুটি নির্মাণে ৩০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে, যা বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত হয়েছে।
পদ্মা সেতুর উদ্বোধন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। এই সেতুটি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সাথে ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নত করবে। ফলে, এই অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্প-কারখানা বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া, এই সেতুটি পর্যটন শিল্পের বিকাশে সহায়তা করবে।
পদ্মা সেতুর উদ্বোধন বাংলাদেশের সামাজিক উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এই সেতুটি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করবে। ফলে, এই অঞ্চলের মানুষের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাসেবার সুযোগ বৃদ্ধি পাবে।
পদ্মা সেতু বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক হিসেবেও বিবেচিত হয়। এই সেতুটি বাংলাদেশের মানুষের আত্মমর্যাদার প্রতীক। পদ্মা সেতুর উদ্বোধন বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করার প্রতীক।
পদ্মা সেতুর অর্থনৈতিক প্রভাব
পদ্মা সেতুর উদ্বোধন বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। এই সেতুটি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সাথে ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নত করবে। ফলে, এই অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্প-কারখানা বৃদ্ধি পাবে।
পদ্মা সেতুর মাধ্যমে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পণ্য ও সেবা সহজেই ঢাকায় পৌঁছাতে পারবে। ফলে, এই অঞ্চলের উৎপাদকরা নতুন বাজারে প্রবেশ করতে পারবে এবং তাদের ব্যবসার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া, পদ্মা সেতুর মাধ্যমে এই অঞ্চলের শিল্প-কারখানাগুলোর জন্য নতুন বিনিয়োগ আকর্ষণ করা সহজ হবে।
পদ্মা সেতুর মাধ্যমে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি পাবে। ফলে, এই অঞ্চলের মানুষের আয় বৃদ্ধি পাবে এবং তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে।
পদ্মা সেতুর সামাজিক প্রভাব
পদ্মা সেতুর উদ্বোধন বাংলাদেশের সামাজিক উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এই সেতুটি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করবে।
পদ্মা সেতুর মাধ্যমে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ দ্রুত ও সহজেই ঢাকায় যেতে পারবে। ফলে, এই অঞ্চলের মানুষের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাসেবার সুযোগ বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া, পদ্মা সেতুর মাধ্যমে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের সুযোগ বৃদ্ধি পাবে।
শেষ কথা
পদ্মা সেতু বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক হিসেবেও বিবেচিত হয়। এই সেতুটি বাংলাদেশের মানুষের আত্মমর্যাদার প্রতীক।
পদ্মা সেতু বাংলাদেশের একটি অমূল্য সম্পদ। এটি বাংলাদেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
Also Read: নগদ একাউন্ট খোলার নিয়ম