রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রাজশাহী জেলার মতিহার থানায় অবস্থিত। এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৫৩ সালের ৬ জুলাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮৭৩ সালের রাজশাহী অঞ্চলের মানুষের শিক্ষা দীক্ষার জন্য রাজশাহী কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। ওই সময় রাজশাহী কলেজে পোস্ট গ্রাজুয়েট আইন বিভাগ চালু করা হয়েছিল। তবে কিছুদিন পর আবার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এই কারণে রাজশাহীতে একটি নতুন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রয়োজন অনুভব হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৫৩ সালের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। যায় এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং এখানে আছে ডিজিটাল ক্যাম্পাস। বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিবছর ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে বাংলাদেশের সেরা মেধাবী শিক্ষার্থীদের বাছাই করে নেয়। প্রতিবছর হাজার হাজার শিক্ষার্থী এই ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। আজ এই আর্টিকেলের মাধ্যমে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করব, পাশাপাশি স্বনামধন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়টির ইতিহাসও তুলে ধরব ।আপনিও যদি মাধ্যমিকের পরে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে চান তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার উপকারে আসতে পারে। তাই দেরি না করে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়া শুরু করুন:-
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস
১৮৭৩ সালে রাজশাহী অঞ্চলের শিক্ষাব্যাবস্তা উন্নয়নের জন্য প্রতিষ্ঠা করা হয় রাজশাহী কলেজ৷ ঐ সময়ে রাজশাহী কলেজে আইন বিভাগসহ পোস্ট গ্রাজুয়েট শ্রেণী চালু করা হয়৷ কিন্ত অল্প কিছুদিনের মধ্যেই বন্ধ হয়ে যায় এসব কার্যক্রম৷ এজন্য সে সময়েই রাজশাহীতে একটি নতুন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রয়োজন অনুভূত হয়৷ ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ ভাগের পর পাকিস্তান সরকার দেশের সব কলেজ গুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করে৷ এ সময়ে স্যাডলার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী রাজশাহীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পক্ষে আন্দোলন শুরু হয়৷ মূলত ভাষা আন্দোলনের কিছুদিন আগ থেকেই রাজশাহীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আন্দোলন শুরু হয়৷ ১৯৫০ সালের ১৫ই নভেম্বর রাজশাহীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য বিশিষ্ট ব্যাক্তিদের নিয়ে ৬৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়৷ ১৯৫২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী শহরের ভুবন মোহন পার্কে রাজশাহীতে বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ স্থাপনের জন্য সর্বপ্রথম জনসভা অনুষ্ঠিত হয় ৷ অবশ্য সর্বপ্রথম দাবি ওঠে রাজশাহী কলেজেই৷ ১৯৫২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি শহরের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা মিলে রাজশাহী কলেজ প্রাঙ্গনে সমবেত হয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার দাবি তোলে৷পরবর্তীতে ভূবন মোহন পার্কে ১৩ই ফেব্রুয়ারি আলহাজ্ব আব্দুল হামিদ এমএলএ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় আরও একটি জনসভা৷ উক্ত সভায় বক্তব্য রাখেন প্রভাষ চন্দ্র লাহিড়ী, খোরশেদ আলম, আনসার আলী ,ইদ্রিস আহমেদ এমএলএ, , আব্দুল জব্বার প্রমূখ৷ ক্রমেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি তীব্র হতে থাকে৷ এক পর্যায়ে ১৫ ছাত্রনেতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানাতে গিয়ে কারারুদ্ধ হন। এরপর ছাত্রজনতার পক্ষ থেকে ঢাকায় একটি ডেলিগেশন পাঠানো হয়৷ ওই ডেলিগেশনের সদস্যদের মধ্যে আব্দুর রহমান ও মরহুম আবুল কালাম চৌধুরী নাম উল্লেখযোগ্য৷ এভাবে একের পর এক আন্দালনের চাপে পরে স্থানীয় আইন পরিষদ রাজশাহীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে গুরুত্ব দেয়৷পূর্ববঙ্গীয় আইনসভার সদস্য প্রখ্যাত আইনজীবী মাদার বখশ এই আন্দোলনে একাত্ব হন ৷৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৩ সালে ভুবন মোহন পার্কে আরও একটি জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মাদার বখশ সরকারকে হুশিয়ার করে বলেন, যদি রাজশাহীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা না করা হয় তবে উত্তরবঙ্গকে একটি স্বতন্ত্র প্রদেশ দাবি করতে আমরা বাধ্য হব৷ মাদার বখশের এই বক্তব্যে সাড়া পড়ে যায় দেশের সুধী মহলে এবং সাথে সাথে টনক নড়ে ওঠে সরকারেরও ৷ অবশেষে ১৯৫৩ সালের ৩১ মার্চ প্রাদেশিক আইনসভায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা আইন পাশ হয়। নতুন উপাচার্য প্রফেসর ইতরাত হোসেন জুবেরীকে সঙ্গে নিয়ে মাদারবখশ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামো পরিকল্পনা প্রণয়ন করে৷ এবং এ দুজনকে যুগ্ম সম্পাদক করে মোট ৬৪ সদস্য বিশিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করা হয়৷ এর পৃষ্ঠপোষক ছিলেন তত্কালীন বিভাগীয় কমিশনার এম এ খুরশীদ৷ প্রফেসর ইতরাত হোসেন জুবেরীকে উপাচার্য নিয়োগ ওই বছর ৬ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়টি আনুষ্ঠানিক ভাবে যাত্রা শুরু করে। শুরুতে মাত্র ১৬১ জন শিক্ষার্থী নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ক্লাস শুরু হয় রাজশাহী কলেজে৷ পদ্মার তীরের বড়কুঠি নামে পরিচিত ঐতিহাসিক রেশম কুঠিতে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের দফতর প্রতিষ্ঠা করা হয়। তত্কালীন ভোলানাথ বিশ্বেশ্বর হিন্দু একাডেমিতে চিকিত্সাকেন্দ্র ও পাঠাগার তেরি করা হয় বড়কুঠির কাছেই৷ জমিদার কুঞ্জমোহন মৈত্রের বাড়িতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দফতর স্থাপন করা হয় ৷ কলেজ পরিদর্শক দফতর বড়কুঠি পাড়ার মাতৃধাম এ স্থাপন করা হয়৷ওসমান গনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম রেজিস্ট্রার নিযুক্ত হন ও প্রথম পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নিযুক্ত হন অধ্যাপক আব্দুল করিম৷ ছাত্রাবাস গড়ে ওঠে শহরের বিভিন্ন স্থানে ভাড়া করা বাড়িতে ৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস হিসেবে রুপান্তরিত করা হয় রাজশাহী কলেজ সংলগ্ন ফুলার হোস্টেলকে ৷ ছাত্রী নিবাস স্থাপন করা হয় বড়কুঠি এলাকার লালকুঠি ভবন ও আরেকটি ভাড়া করা ভবনে ৷রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ক্যাম্পাসের দালানকোঠা নির্মাণ করা শুরু হয়১৯৫৮ সালে। মতিহারের নিজস্ব ক্যাম্পাসে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম স্থানান্তর করা হয় এবং ১৯৬৪ সালের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অফিস ও বিভাগ এখানে স্থানান্তরিত হয়৷ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসটি গড়ে ওঠে অস্ট্রেলিয়ান স্থপতি ড. সোয়ানি টমাসের স্থাপত্য পরিকল্পনায়৷
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান
প্রাচ্যের ক্যামব্রিজ খ্যাত এই বিশ্ববিদ্যালয়টি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রেলওয়ে স্টেশন ও ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের পাশে রাজশাহী শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত৷
ক্যাম্পাস পরিচিতি
প্রায় ৭৫৩ একর এলাকাজুড়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস৷ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯টি অনুষদের অধীনে ৫৬টি বিভাগে বর্তমানে পরিচালিত হচ্ছে এছাড়াও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমে রয়েছে ৫টি উচ্চতর গবেষণা ইন্সটিটিউট ৷ ক্যাম্পাসের উত্তর পূর্ব দিক জুড়ে রয়েছে ছাত্রদের জন্য ১১টি আবাসিক হল ৷ ছাত্রীদের জন্য রয়েছে ৬টি আবাসিক হল যা ক্যাম্পাসের পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত৷ পূর্ব দিকে গবেষকদের জন্য রয়েছে একটি ডরমিটরি। পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্ত জুড়ে রয়েছে শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য আবাসিক এলাকা৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা এদেশের সর্বপ্রথম স্থাপিত মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।তাছাড়া রয়েছে সাবাস বাংলাদেশ নামে একটি ভাষ্কর্য৷ আরো রয়েছে গোল্ডেন জুবিলি টাওয়ার৷
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরী
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের কেন্দ্রস্থলে প্রশাসন ভবন-১ এর দক্ষিণ-পশ্চিম পাশে অবস্থিত মনোরম স্থাপত্য সমৃদ্ধ ভবনই বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার।এতে রয়েছে প্রায় তিনলক্ষ পুস্তকের একটি সুবিশাল সংগ্রহ। বিভিন্ন বিভাগের প্রয়োজনীয় বই সহ রয়েছে বহু দুষ্প্রাপ্য গ্রন্থ। যা এটিকে দেশের বৃহত্তম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানভিত্তিক গ্রন্থাগারের মর্যাদা দিয়েছে। গ্রন্থাগারটি খোলা থাকে প্রতি শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৮.১৫ থেকে সন্ধ্যা ৭.৪৫ পর্যন্ত। শুক্রবার দুপুর ৩.০০ থেকে সন্ধ্যা ৭.৪৫ পর্যন্ত।গ্রন্থাগারের দোতলায় ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য দুটি মনোরম পাঠ কক্ষ রয়েছে। তিনতলায় রয়েছে সাময়িকী, পত্র-পত্রিকা, ইন্টারনেট কক্ষ ও গ্রন্থাগার প্রশাসকের কার্যালয়। প্রায় সম্পূর্ণ নিচতলা জুড়ে সকল বইয়ের কপি এবং পুরাতন পত্র-পত্রিকা সংরক্ষন করা আছে। দোতলায় প্রবেশ পথে একটি ক্যাটলগ ক্যাবিনেট রয়েছে। ক্যাবিনেটে সংরক্ষিত কার্ডে বইয়ের নাম এবং গ্রন্থাকারের নাম ক্রমানুসারে সাজানো থাকে। প্রতিটি কার্ডের জন্য একটি সতন্ত্র কল নাম্বার রয়েছে। এই কল নাম্বার অনুসারে গ্রন্থাগারে বই সজ্জিত থাকে। গ্রন্থাগারের নিচতলায় ধার শাখা রয়েছে যেখান থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা গ্রন্থাগার কার্ড দেখিয়ে বই ধার নিতে পারে।পুরো লাইব্রেরীর তিন লক্ষেরও অধিক পুস্তক ডিজিটালাইজড এবং গ্রন্থাগার ওয়েবসাইটে সংরক্ষিত। এই ওয়েবসাইটটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগের সেমিনার লাইব্রেরীর সাথে সংযুক্ত এবং মূল ওয়েবসাইটের একটি অংশ। তাই ঘরে বসে বিশ্ববিদ্যালয় ওয়েবসাইটের মাধ্যমে তথ্যের বিবরণ ও প্রাপ্যতা যাচাই করা যায়। এছাড়া দোতলার একটি কক্ষে বই ফটোকপি করারও ব্যবস্থা রয়েছে। গ্রন্থাগারে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য একটি দ্রুতগতির ওয়াইফাই জোন রয়েছে। সম্পূর্ণ গ্রন্থাগার শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক শিক্ষার্থী ও কর্মচারীর সংখ্যা
হেক্টরের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে শিক্ষক রয়েছে ১১৭৭ জন ও ২০০০ জন প্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারী। এবং শিক্ষার্থীর সংখ্যা ধীরে ধীরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮ হাজার ৩৩০ জন এর মধ্যে (বিদেশি শিক্ষার্থী ৫৮ জন)। এর মধ্যে ছাত্র ২৫ হাজার ৫৭৯ জন ও ছাত্রী ১২ হাজার ৫৫১ জন। বিশ্ববিদ্যালয়টি তে বর্তমানে ১২ অনুষদের অধীনে বিভাগ রয়েছে ৫৯টি।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অনুষদ ও বিভাগ
অনুষদ | বিভাগের সময়কাল |
বিজ্ঞান অনুষদ | – গণিত |
– পদার্থবিজ্ঞান | |
– রসায়ন | |
– পরিসংখ্যান | |
– ফার্মেসি | |
– প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান | |
– ফলিত গনিত | |
– শারীরিক শিক্ষা ও ক্রিয়া বিজ্ঞান বিভাগ | |
– জনসংখ্যা বিজ্ঞান এবং মানবসম্পদ উন্নয়ন | |
কৃষি অনুষদ | – কৃষি ও কৃষি সম্প্রসারণ |
– শস্য বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি | |
প্রকৌশল অনুষদ | – বস্তু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি |
– ফলিত রসায়ন ও রাসায়নিক প্রকৌশল | |
– কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল | |
– তথ্য যোগাযোগ প্রকৌশল | |
– ইলেকট্রিক্যাল প্রকৌশল | |
চারুকলা অনুষদ | – গ্রাফিক ডিজাইন, কারুশিল্প এবং কারুকলা ইতিহাস |
– মৃৎশিল্প ভাস্কর্য | |
– চিত্রকলা প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র | |
ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ | – হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা |
– ব্যাংকিং ও বীমা | |
– ব্যবস্থাপনার শিক্ষা | |
– মার্কেটিং | |
– ফিন্যান্স | |
– পর্যটন এবং অতিথিয়তা ব্যবস্থাপনা | |
সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ | – অর্থনীতি |
– সমাজকর্ম | |
– রাষ্ট্রবিজ্ঞান | |
– লোক প্রশাসন | |
– লোকাচারবিদ্যা | |
– সমাজবিজ্ঞান | |
– গণজাগ ও সাংবাদিকতা | |
– তথ্যবিজ্ঞান ও গন্থকার ব্যবস্থাপনা | |
– নৃবিজ্ঞান | |
– আন্তর্জাতিক সম্পর্ক | |
জীববিজ্ঞান অনুষদ | – চিকিংসা মনো বিজ্ঞান |
– উদ্ভিদবিজ্ঞান | |
– জিনগত প্রকৌশল প্রাণ প্রযুক্তি | |
– মনোবিজ্ঞান | |
– প্রাণিবিদ্যা | |
– অনুজীব বিজ্ঞান | |
আইন অনুষদ | – |
ভুবিজ্ঞান অনুষদ | – |
মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদ | – |
পশু শিক্ষা ও প্রাণিবিজ্ঞান অনুষদ | – |
চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুষদ | – |
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির যোগ্যতা
এইচএসসি পাশকৃত শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি যোগ্যতা হিসেবে কি দেয়া হয়েছে তা হল, যাচাই বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির যোগ্যতা হিসেবে এ বছর এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় বিষয়সহ সর্বমোট ৭.৫ থাকতে হবে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় মোট তিনটি ইউনিট রয়েছে বিজ্ঞান,মানবিক এবং বাণিজ্য।বিজ্ঞান বিভাগে আবেদন করতে শিক্ষার্থীদের এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার সিজিপিএ সর্বমোট ৮ থাকতে হবে।মানবিক বিভাগে আবেদন করতে শিক্ষার্থীদের এসএসসি এবং এইচএসসি উভয় পরীক্ষার সিজিপিএ মোট ৭ থাকতে হবে।
বাণিজ্য বিভাগে আবেদন করতে শিক্ষার্থীদের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় মিলে মোট সিজিপিএ ৭.৫০ থাকতে হবে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিট সমূহ
বিশ্ববিদ্যালয় মোট তিনটি ইউনিটে পরীক্ষা হয়। এগুলো হচ্ছে,
ইউনিট এ- আইন অনুষদ, , কলা অনুষদ,চারুকলা অনুষদ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ,শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট।
ইউনেট বি- ব্যবসায়ী প্রশাসন ইনস্টিটিউট এবং বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ ।
ইউনিট সি- ভূবিজ্ঞান অনুষদ,বিজ্ঞান অনুষদ,প্রকৌশল অনুষদ, কৃষি অনুষদ ।
এই তিনটি অনুষদের ভিত্তিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা
এমসিকিউ পদ্ধতিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা হয়।
প্রশ্ন সংখ্যাঃ- ৮০
টোটাল মার্কঃ-১০০
প্রতিটি প্রশ্নের মানঃ- ১.২৫
নেগেটিভ মার্কঃ- ০.২৫
পাস মার্কঃ- ৪০
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় আসন সংখ্যা
বিশ্ববিদ্যালয় আসন সংখ্যা তিনটি ইউনিটের জন্য আলাদা আলাদা করে নির্ধারিত আছে।
ইউনিট | মোট আসন সংখ্যা | বিজ্ঞান | মানবিক | বাণিজ্য |
এ | ১৯০২ | – | ৪৮২ | – |
বি | ৫৬০ | ২০ | ৮৫ | – |
সি | ১৫৫৮ | – | ৪৮ | – |
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার মানবন্টন
আলাদা আলাদা ইউনিটের জন্য আলাদা আলাদা মান বন্টন নির্ধারণ করা রয়েছে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল এবং এডমিট কার্ড
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা ফলাফল ৫ দিনের মধ্যে প্রকাশিত হয়ে থাকে। ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার সাথে সাথে ফলাফল দেখার লিংক সংযোজন করা হবে । রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এডমিট কার্ড ডাউনলোড করতে বিশ্ববিদ্যালয় অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন। ওয়েবসাইটের লিংক,
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় আবেদন এর নিয়ম
১) প্রথমে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এ ভিজিট করুন।
২)সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে আপনার নাম, জন্ম তারিখ এবং ইমেল ঠিকানা লিখুন।
৩)পাসপোর্ট সাইজের ছবি এবং আপনার স্বাক্ষর স্ক্যান কপি আপলোড করুন.
৪)আবেদনের ৭২ ঘন্টার মধ্যে আপনার পেমেন্ট সম্পন্ন করুন
৫) আবেদনে ক্লিক করে আবেদনপত্র জমা দিন।
৬)বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিশ্চিতকরণ ইমেলের জন্য অপেক্ষা করুন।
৭)অনলাইন আবেদন ফরম প্রিন্ট আউট করুন,
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হতে কত টাকা লাগে
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হতে তেমন একটা টাকা লাগে না। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি শিক্ষার্থীরা চান্স পায় তাহলে তার প্রথম সেমিস্টারের ১৪ হাজার টাকার মতো খরচ হবে। আর বাকি ৬টি সেমিস্টারের জন্য মোট ৯০০০ টাকা খরচ হতে পারে। আর প্রথম সেমিস্টারে ভর্তি ফি ,পরিবহন ,আবাসিক, সেসন ইত্যাদি মিলে ২০ হাজার টাকার মতো খরচ হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর জন্য মোট ১৭ টি হল এবং একটি আন্তর্জাতিক মানের ডটমেটরি আছে। এরমধ্যে ১১ টি ছেলেদের হল এবং ৬টি মেয়েদের হল।
ছেলেদের হল সমূহ
- শেরে-ই-বাংলা ফজলুল হক হল
- মতিয়ার হল
- নবাব আব্দুল লতিফ হল
- শাহ মাখদুম হল
- সৈয়দ আমির আলী হল
- শহীদ শামসুজ্জোহা হল
- শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল
- শহীদ জিয়াউর রহমান হল
- মাদার বক্স হল
- শহীদ হবিবুর রহমান হল
মেয়েদের হল সমূহ,
- রোকেয়া হল
- মুন্নুজান হল
- তাপসী রাবেয়া হল
- রহমতন্নেসা হল
- বেগম খালেদা জিয়া হল
- বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যবৃন্দ
ক্রমিক নং | নাম | কর্মকাল (প্রারম্ভ – শেষ) |
১ | প্রফেসর ডক্টর ইতরাত হোসেন জুবেরী | ০৬.০৭.১৯৫৩ – ৩০.০৯.১৯৫৭ |
২ | প্রফেসর ডক্টর মমতাজ উদ্দিন আহমদ | ০১.১০.১৯৫৭ – ৩০.০৮.১৯৬৫ |
৩ | প্রফেসর এম শামস-উল-হক | ৩১.০৮.১৯৬৫ – ০৪.০৮.১৯৬৯ |
৪ | প্রফেসর ডক্টর সৈয়দ সাজ্জাদ হোসাইন | ০৫.০৮.১৯৬৯ – ১৮.০৭.১৯৭১ |
৫ | প্রফেসর ডক্টর মোহাম্মদ আবদুল বারী | ১৯.০৭.১৯৭১ – ০৮.০১.১৯৭২ |
৬ | প্রফেসর ডক্টর খান সারওয়ার মুরশিদ | ০১.০২.১৯৭২ – ০৩.০৮.১৯৭৪ |
৭ | প্রফেসর ডক্টর ময়হারুল ইসলাম | ০৪.০৮.১৯৭৪ – ১৮.০৯.১৯৭৫ |
৮ | প্রফেসর ডক্টর সৈয়দ আলী আহসান | ২৭.০৯.১৯৭৫ – ২২.০৬.১৯৭৭ |
৯ | প্রফেসর ডক্টর মুহাম্মদ আবদুল বারী | ০৭.০৭.১৯৭৭ – ১৭.০২.১৯৮১ |
১০ | প্রফেসর ডক্টর মকবুলার রহমান সরকার | ২৬.০২.১৯৮১ – ২২.০২.১৯৮২ |
১১ | প্রফেসর ডক্টর মোসলেম হুদা | ২২.০২.১৯৮২ – ২০.৯.১৯৮২ |
১২ | প্রফেসর ডক্টর মুহম্মদ আবদুর রকীব | ০৪.১০.১৯৮২ – ১৯.০৩.১৯৮৮ |
১৩ | প্রফেসর ডক্টর আমানুল্লাহ আহমদ | ২০.০৩.১৯৮৮ – ২২.০৭.১৯৯২ |
১৪ | প্রফেসর ডক্টর এম আনিসুর রহমান | ২২.০৭.১৯৯২ – ২২.০৮.১৯৯৪ |
১৫ | প্রফেসর ডক্টর মু. ইউসুফ আলী | ২২.০৮.১৯৯৪ – ১৬.০২.১৯৯৭ |
১৬ | প্রফেসর ডক্টর আবদুল খালেক | ১৭.০২.১৯৯৭ – ০৩.০৮.১ |
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্র
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী,শিক্ষক,কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চিকিৎসার জন্য একটি চিকিৎসা কেন্দ্র রয়েছে। চিকিৎসা কেন্দ্রটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্বদিকে বিনোদপুর গেটের কাছে অবস্থিত। এখানে সাধারণ বিভাগ, ইসিজি,চক্ষু,এক্স-রে ,প্যাথলজি ,ডেন্টাল ও পরিবার পরিকল্পনা ইউনিট রয়েছে। ১ জন প্রধান চিকিৎসক সহ সর্বমোট ২৫ জন চিকিৎসক আছেন এই কেন্দ্রে। প্যাথলজি,চক্ষু, অর্থপেডিক ও চর্মরোগ বিভাগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন। এখানে শিক্ষার্থীদের সকল প্রকার চিকিৎসা বিনামূল্যে দেয়া হয় এবং বিনামূল্যে ঔষধ প্রদান করা হয়। জরুরী প্রয়োজনে রোগীদের দ্রুত চিকিৎসা প্রদানের জন্য রয়েছে চিকিৎসা কেন্দ্রের নিজস্ব এম্বুলেন্স
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শেখ কামাল স্টেডিয়াম
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশাল স্টেডিয়ামটি দেশের একমাত্র পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় স্টেডিয়াম। বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সুইমিং পুলও রয়েছে। এই সুইমিংপুলে নিয়মিত সাঁতার ও ওয়াটার ভলি খেলা হয়। প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় খেলাধুলার জন্য বিখ্যাত।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া
বিশ্ববিদ্যালয়ে রাকসু ভবনের ঠিক পেছনে ও শহীদ মিনারের উত্তর-পূর্বে কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া। এখানে সুলভ মূল্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য নাস্তা এবং দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা আছে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলনায়তন
আধুনিক শব্দ এবং আলোক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা সজ্জিত মিলনায়তন। ভবনটি এর স্থাপত্যকলা ও অত্যাধুনিম ডিজাইনের জন্য বিখ্যাত। এটি মানের দিক দিয়ে কোন পাশ্চাত্য অডিটোরিয়ামের চেয়ে কোন অংশেই কম নয়। ভবনের দক্ষিণাংশে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অফিস।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর
১৯১০ সালে প্রতিষ্ঠিত দেশের সর্বপ্রাচীন সংগ্রহশালা – বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর বঙ্গীয় শিল্পকলার বিপুল ও বর্ণাঢ্য সংগ্রহের জন্য সারা বিশ্বের কাছে পরিচিত। রাজশাহী শহরে অবস্থিত, বাংলদেশের সুপ্রাচীন ইতিহাস ও ঐতিহ্যের স্মারক ১৯৬৪ সাল থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এই জাদুঘরটি পরিচালনা করে আসছে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগাযোগের ঠিকানা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়-(রাবি)
মতিহার, রাজশাহী, বাংলাদেশ
যোগাযোগ :880 721 750244
ইমেইল :registrar@ru.ac.bd
ওয়েবসাইট :www.ru.ac.bd
সবশেষে
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় দেশের সকল শিক্ষার্থীদের পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়।এখানে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার শিক্ষার্থীরা এসে অনায়াসে পড়ালেখা করতে পারে।১৯৫৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই সুনামের সাথে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। আপনার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ ও স্বপ্ন পূরণে মাধ্যমিকের পর এ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হতে পারেন।
also Read : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়