Dreamy Media BD

 কপিলমুনির আশ্রম

কপিলমুনির আশ্রম

প্রিয় পাঠক আজকে আমরা একজন মুনিঋষি এবং তাঁর আশ্রম সম্পর্কে জানব। কে ছিল এই মুনিঋষি। কেন তিনি আশ্রম বানিয়েছিলেন। তার আশ্রমের কি রহস্য সবকিছু আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানব আজকে। কপিল মুনির আশ্রম সম্পর্কে জানতে হলে আপনাকে অবশ্যই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথেই থাকতে হবে। আশা করি ধৈর্য সহকারে পুরো আর্টিকেলটি পড়বেন এবং সুন্দর একটি ধারণা নিয়ে এখান থেকে যাবেন।

কপিল কে

 কপিলমুনির আশ্রম
কপিলমুনি

কপিল  ছিলেন একজন বৈদিক ঋষি যিনি সাংখ্য দর্শনের প্রবর্তক। সাংখ্য হচ্ছে ভারতীয় ষড়দর্শনের মাঝে একটি আস্তিক্যবাদী দর্শন। ভাগবত পুরাণে এই দর্শনের আস্তিক্যবাদী ধারাটির উল্লেখ পাওয়া যায়। হিন্দুদের প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে, তিনি ব্রহ্মার পৌত্র মনুর বংশধর। ভাগবত পুরাণের বর্ণনা অনুসারে কপিলের পিতা ছিলেন কর্দম মুনি এবং মাতা দেবাহুতি। এই শাস্ত্রে কপিলকে বিষ্ণুর একটি অবতার বলে উল্লেখ করা হয়েছে এবং ভাগবত পুরাণে অবতারদের তালিকায় তার নামও পাওয়া যায়। ভগবদ্গীতায় কপিলকে একজন সিদ্ধযোগী বলা হয়েছে।

কপিলের জীবন বৃত্তান্ত

কপিলবাস্তু নামক নগরে কপিল জন্মগ্রহণ করেন। আনুমানিক ৭২৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে তিনি আবির্ভূত হন। তিনি গৌতম বুদ্ধের পূর্ববর্তী ছিলেন বলে অনুমান করা হয়। ভাগবত পুরাণের তৃতীয় স্কন্দে কপিলের জীবনের বর্ণনা পাওয়া যায়। এখানে তাঁকে কর্দম মুনি ও দেবাহুতির পুত্র বলা হয়েছে। তিনি সতী অনুসূয়ার ভ্রাতা ও গুরু। কপিলকে সর্বোচ্চ দেবতা বিষ্ণুর একটি অবতার বলে উল্লেখ করা হয়েছে এবং ভাগবত পুরাণে অবতারদের তালিকায় তার নামও পাওয়া যায়। পিতা গৃহত্যাগ করলে কপিল নিজের মা দেবাহুতিকে যোগ ও বিষ্ণু-ভক্তি শিক্ষা দেন। এর ফলে দেবাহুতি মোক্ষ লাভ করেন। ভাগবত পুরাণের একাদশ অধ্যায়ে কপিলের সাংখ্য দর্শন কৃষ্ণ উদ্ধবকে শিখিয়েছিলেন। এই অংশটি উদ্ধব গীতা নামে পরিচিত।

কৃষ্ণ ভগবদ্গীতায় কপিলের উল্লেখ করেছেন:

বৃক্ষের মধ্যে আমি বট, ঋষিগণের মধ্যে আমি দেবর্ষি নারদ, গন্ধর্বগণের মধ্যে আমি চিত্ররথ ও সিদ্ধগণের মধ্যে আমি কপিল,।

গঙ্গার জন্ম

স্বর্গের নদী গঙ্গার মর্ত্যে অবতরণের কাহিনিতে কপিল একজন প্রধান চরিত্র। রামের পূর্বপুরুষ সগর ৯৯ বার অশ্বমেধ যজ্ঞ করেছিলেন। শততম যজ্ঞের সময় দেবরাজ ইন্দ্র ঈর্ষান্বিত হয়ে ঘোড়াটিকে অপহরণ করে কপিলের আশ্রমে রেখে গেলেন।

সগরের ষাট হাজার পুত্র ঘোড়াটিকে খুঁজতে বেরলেন। তারা কপিলকে চোর অপবাদ দিলে, কপিল তাঁদের ভস্ম করে দিলেন। সগরের পৌত্র অংশুমান কপিলের কাছে এসে ষাট হাজার পুত্রের প্রাণ ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানালেন। কপিল বললেন, স্বর্গের নদী গঙ্গা নেমে এসে তাঁদের ভস্ম স্পর্শ করলে তবেই তারা প্রাণ ফিরে পাবেন। পরে সগরের বংশধর ভগীরথ তপস্যা করে গঙ্গাকে মর্ত্যে নিয়ে এসেছিলেন।

মহাভারত

কপিল বলেন, “কর্মের মাধ্যমে শুধু দেহ শুদ্ধ হয়। জ্ঞান (জ্ঞানীর কাছে) সর্বোচ্চ। (কর্মের মাধ্যমে) মনের কলুষতা দূরীভূত হল এবং ব্রহ্মের সন্তোষ জ্ঞান, দয়া, ক্ষমা, শান্তি, প্রেম ও সততায় পরিণত হলে কর্ম থেকে মুক্তি আসে। এই পথে ব্রহ্ম লাভ করা যায়। এই পথে কেউ সর্বোচ্চ সত্য জানতে পারে।” (মহাভারত, শান্তিপর্ব)

ভীষ্ম (যুধিষ্ঠিরকে) বললেন, “হে শত্রুজয়কারী যুধিষ্ঠির, কপিলের অনুগামী সাংখ্য-মতাবলম্বীরা বলেন, মানবদেহে পাঁচটি দোষ আছে। এগুলি হল: কামনা, ক্রোধ, ভয়, নিদ্রা ও শ্বাস। এগুলি সকল জীবের দেহেই দেখা যায়। যাঁরা জ্ঞানী, তারা ক্ষমার দ্বারা ক্রোধকে জয় করেন। সকল কর্মের উদ্দেশ্যকে ছেঁটে ফেলে কামকে জয় করা যায়। সত্ত্বের চর্চার মাধ্যমে নিদ্রাকে জয় করা যায়। সতর্কতার মাধ্যমে জয় করা যায় ভয়কে। আর শ্বাসকে জয় করা যায় নিয়ন্ত্রিত আহারের মাধ্যমে। (মহাভারত, শান্তিপর্ব।

কপিল মনিকে নিয়ে মতভেদ

কৃষ্ণ ভগবতগীতায় কপিলের নাম উল্লেখ রয়েছে, ‘বৃক্ষের মধ্যে আমি বট, ঋষিগণের মধ্যে আমি দেবর্ষি নারদ, গন্ধর্বগণের মধ্যে আমি চিত্ররথ ও সিদ্ধগণের মধ্যে আমি কপিল। (১০। ২৬)’। কপিল ছিলেন একজন বৈদিক ঋষি। তাকে (সাংখ্য দর্শন) তত্ত্বের অন্যতম প্রবর্তক মনে করা হয়। (সাংখ্য হলো ধ্রুপদি ভারতীয় হিন্দু দর্শনের ছয়টি আস্তিক (ও নাস্তিক) শাখার একটি। হিন্দু পৌরাণিক ঋষি কপিলকে এই দর্শন শাখার সমন্বয়ক বা প্রবর্তক মনে করা হয়। সাংখ্য দর্শন ভারতের প্রাচীনতম দর্শন শাখাগুলোর একটি।) মহাভারতের সেই মুনি কপিলের নামে কপিলমুনির নামকরণ করা হয়েছিল কি না, জানা নেই।

তবে কোনো কোনো ঐতিহাসিকের মতে, গৌড়ের পরাক্রমশালী রাজা বসুদেবের পুত্র কপিলদেব পার্থিব সম্পদের ওপর বীতশ্রদ্ধ হয়ে সুন্দরবনাঞ্চলীয় কপোতাক্ষের তীরে এসে একটি বটতলায় আশ্রম তৈরি করে তপস্যা শুরু করেন। চৈত্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের ত্রয়োদশী তিথিতে তিনি এখানে নির্মাণ করেন একটি কালীমন্দির। তিনি তপস্যার জন্য যে স্থানে আশ্রম তৈরি করেন, সেই স্থান তারই নামানুসারে হয়েছে কপিলমুনি। প্রতি বছর চৈত্র মাসের শতভিষা নক্ষত্রযুক্ত মধুকৃষ্ণ ত্রয়োদশীতে হাজার হাজার লোকের সমাগম ঘটে এই সঙ্গমে। এই সমাগমকে ঘিরে প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয় বিরাট মেলা, যার নাম বারুণীর মেলা। মুনি কপিল গভীর ধ্যানের দ্বারা গঙ্গাকে কপোতাক্ষের সঙ্গমে একত্রিত করেন। তাই তো এ তিথিতে কপোতাক্ষে স্নান গঙ্গাস্নানের সমতুল্য বলে সনাতন ধর্মীয় লোকজন মনে করেন। কপিলমুনি পাইকগাছা উপজেলার একটি প্রাচীন জনপদ।

কপিল মুনি এলাকায় বিখ্যাত ব্যক্তি

কপোতাক্ষ নদের তীরে শাহ্ সুফি হজরত জাফর আউলিয়া (রহ.) ও রায় সাহেব বিনোদবিহারী সাধুর স্মৃতিবিজড়িত কপিলমুনির রয়েছে অনেক ইতিহাস। শাহ্ সুফি হজরত জাফর আউলিয়া (রহ.) ছিলেন হজরত খানজাহান (রহ.)-এর সফরসঙ্গী। তিনি সুন্দরবনের এ অঞ্চলে ইসলাম প্রচার করতে আসেন। কপিলমুনির রূপকার ও স্থপতি ছিলেন রায়সাহেব বিনোদবিহারী সাধু। কপিলমুনি জুড়ে তার স্মৃতি বিদ্যমান। ক্ষণজন্মা বিনোদবিহারী সাধু ছিলেন একজন তেল ব্যবসায়ী। ব্যাবসায়িক জীবনের উত্থান-পতনের সময় তাকে উপদেষ্টা হিসেবে সাহায্য করেন বিজ্ঞানী আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়। সমাজসেবামূলক কাজের জন্য ব্রিটিশ সরকার তাকে ‘রায়সাহেব’ উপাধিতে ভূষিত করেন।

[৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে কপিল মুনি এলাকার অবস্থা

১৯৭১ সালের মে মাসের দিকে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী আমির মাওলানা এ কে এম ইউসুফের নেতৃত্বে পাকিস্তানের অখণ্ডতা ও খাসসেনাদের সহায়তা করার উদ্দেশ্যে খুলনা শহরের খানজাহান আলী রোডের আনসার ক্যাম্পে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের নিয়ে রাজাকার বাহিনী গড়ে তোলা হয়। এর দায়িত্বে থাকে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দ। পরবর্তী সময়ে অনুরূপভাবে দেশের অন্যান্য স্থানেও এ বাহিনী গড়ে তোলা হয়। কপিলমুনিতে ১৫০ জনের বেশি রাজাকার নিয়ে তারা বাবু বিনোদবিহারী সাধুর বাড়িতে একটি ক্যাম্প গঠন করে। এই ক্যাম্পের রাজাকাররা খুন, ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগসহ এমন কোনো অপকর্ম নেই, যা করেনি। তারা ক্যাম্প থেকে প্রতিদিন বের হয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের অন্বেষণে গ্রামের নিরীহ মানুষকে ধরে এনে অত্যাচার করত। এলাকার উঠতি বয়সের যুবতি মেয়েদের ধরে এনে ক্যাম্পে অত্যাচার করা নিয়মিত ব্যাপার হয়ে পড়েছিল। রাজাকাররা হিন্দু-মুসলিমনির্বিশেষে, বিশেষ করে মুক্তিযোদ্ধাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিত। রাজাকার বাহিনীর আগমনের সংবাদ শুনলে এলাকার নারী, পুরুষ, বৃদ্ধ, যুবা সবাই পালিয়ে যেত। কপিলমুনি রাজাকার ক্যাম্পের নেতৃত্বে ছিলেন আফসার শিকারি নামক জনৈক ব্যক্তি।

একদিনের ঘটনার কথা না বললেই নয়। ২৭ জুলাই তারিখ দিবাগত রাত ১২টার দিকে কপিলমুনির রাজাকাররা গদাইপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ মাহতাব উদ্দিন মনি চেয়ারম্যান, ঘোষালের সামসু গাজী, জেলেপাড়ার বিনোদ মালো, মঠবাটির মনোহর, পুরাইকাঠীর মনু ঘোষ, মেলেকপুরাইকাঠীর অনন্ত ঘোষ ও ওভারসিয়ারের ছেলে মিজানকে ধরে নিয়ে যায়। ২৮ জুলাই সকাল ৬টার দিকে তাদের কপিলমুনি যাওয়ার পথে আগরঘাটায় কপোতাক্ষ নদের পাশে হাত বেঁধে দাঁড় করিয়ে গুলি করে। গুলি করার মুহূর্তে বিনোদ মালো ও মনু ঘোষ নদীতে লাফ দিয়ে সাঁতরিয়ে পালিয়ে যায়। বাকিদের গুলি করে মেরে নদীতে ফেলে দেয়। এদের মধ্যে সামসু গাজী ও মিজানের লাশ দুই দিন পরে নদী দিয়ে ভেসে বোয়ালিয়ার জেলেদের জালে আটকে যায়। পচা-গলা সেই লাশ আমরাও দেখতে যাই। সেই স্মৃতি আমার ছোট মনে এখনো দাগ কেটে আছে।

রাজাকারদের অত্যাচারের মাত্রা এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে, এলাকার মুক্তিযোদ্ধাগণ এই ক্যাম্প ধ্বংস করার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ৫ ডিসেম্বর ১৯৭১ সাল। ৯ নম্বর সাবসেক্টর কমান্ডার লে. কমান্ডার রহমতউল্লাহ্ দাদু ভাই, স. ম. বাবর আলী, শেখ কামরুজ্জামান টুকু, শেখ শাহাদাত্ হোসেন বাচ্চু, ইউনুচ আলী, আবুল কালাম আজাদ কপিলমুনির যুদ্ধে নেতৃত্ব প্রদান করেন। পাইকগাছা থানার কাটিপাড়া ক্যাম্পে লে. কমান্ডার রহমতউল্লাহ্ দাদু ভাই উপস্থিত থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের ব্রিফিং প্রদান করেন।

অন্যদিকে তালা থানার মান্দ্রা ক্যাম্পে ইউনুচ আলী ব্রিফিং প্রদান করেন। মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন দলে ভাগ করে জলে ও স্থলে পাহারায় বসানো হয়, যাতে রাজাকারদের সহায়তার জন্য কোনো পাকিস্তানি সেনা না আসতে পারে। ঐ দিন দিবাগত রাতে আক্রমণের সিদ্ধান্ত হয়। রাত ১২টার দিকে মুক্তিযোদ্ধারা যার যার অবস্থানে পজিশন গ্রহণ করেন। মুক্তিযোদ্ধারা হরিঢালী স্কুল, কপিলমুনি গার্লস স্কুল, কপিলমুনি বিদ্যামন্দির, নদীর ওপার কানাইদিয়া, গোলাবাড়ী স্কুলসহ বিভিন্ন স্থানে রাজাকার ক্যাম্প ঘিরে অবস্থান গ্রহণ করেন। রাত ৪টার দিকে দাদু ভাই এসএমজি দিয়ে ফায়ার ওপেন করেন। রাজাকার ক্যাম্প লক্ষ্য করে মুক্তিযোদ্ধারা গুলি শুরু করেন। রাজাকাররাও বাংকার থেকে গুলি করতে থাকে। ৬ ডিসেম্বর তারিখ ভোর হয়। এই দিন ভারত সরকার বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিলে মুক্তিযোদ্ধারা নতুন করে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে পান। মুক্তিযোদ্ধাদের গুলির সংকট দেখা দিলে কমান্ডারগণ ভারত থেকে গুলি এনে সেই চাহিদা পূরণ করেন। রাজাকাররা ক্যাম্পে আটক থেকে মাঝেমধ্যে গুলি করতে থাকে। একইভাবে ৭ থেকে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত তারা ক্যাম্পের মধ্যে অবস্থান করে। মুক্তিযোদ্ধারা তাদের আত্মসমর্পণ করতে বারবার মাইকযোগে আহ্বান জানানো সত্ত্বেও তারা আত্মসমর্পণ করে না। ক্যাম্পের মধ্য থেকে তারা মুক্তিযোদ্ধাদের দিকে থেমে থেমে গুলি করতে থাকে। বাজারের প্রধান সড়ক পার হতে গিয়ে রাজাকারদের গুলিতে কেয়ারগাতির আনসার আলী ও খুলনার আনোয়ার শহিদ হন। আগরঘাটার মুক্তিযোদ্ধা তোরাব আলী আহত হন।

রাজাকারদের বাইরের সহায়তা পাওয়ার সব আশা শেষ হয়ে গেলে এবং মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণের তীব্রতা বেড়ে গেলে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত হয়। ৯ ডিসেম্বর সকাল ৭টায় তারা আত্মসমর্পণ করে। মুক্তিযোদ্ধারা একে একে সব রাজাকারকে ক্যাম্প থেকে বের করে আনে। ক্যাম্পের মধ্যে চার জন বীরাঙ্গনাকে পাওয়া যায়। তাদের আটকে রেখে রাজাকাররা অমানুষিক নির্যাতন করেছে। তালার মাছিয়াড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আলী গাজীকে দেওয়ালের সঙ্গে পেরেক দিয়ে ক্রুশবিদ্ধ অবস্থায় ক্যাম্পের মধ্যে পাওয়া যায়। রাজাকাররা আত্মসমর্পণ করলে এলাকার মানুষ ‘জয়বাংলা’ বলে একত্রিত হয়। তারা রাজাকারদের মৃত্যুদণ্ড দাবি করতে থাকে। স্বজনহারা লোকজন প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য পাগল হয়ে ওঠে। মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারগণ একত্রিত হয়ে রাজাকারদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এলাকার মানুষের দাবি অনুযায়ী গণ-আদালত গঠন করে তাদের মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হয়। ১৫১ জন রাজাকারের মধ্যে যারা সবচেয়ে বেশি অত্যাচার করেছে, তাদের আলাদা করে এবং অন্যদের ব্রাশফায়ারে হত্যা করা হয়।

রাজকারদের কপিলমুনি ক্যাম্প পতনের তাত্পর্য অনেক। এই ক্যাম্প পতনের ফলে সম্পূর্ণ পাইকগাছা এলাকা ৯ ডিসেম্বর শত্রুমুক্ত হয়। যে কদিন মুক্তিযোদ্ধারা রাজাকার ক্যাম্প অবরোধ করে রেখেছিলেন, সেই কদিন এলাকার জনসাধারণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য চিড়া, মুড়ি, ডাব, রান্না খাবার সরবরাহ করে। এলাকার মানুষের মধ্যে এক অভূতপূর্ব সাড়া পড়ে যায়। সব মানুষ দেশপ্রেমে জাগ্রত হয়ে মুক্তির স্বাদ অন্বেষণে ঘর থেকে বের হয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের পাশে এসে দাঁড়ায়। রাজাকারদের দ্বারা অত্যাচারিত-স্বজনহারা এলাকাবাসী রাজাকারদের প্রতি প্রতিশোধপ্রবণ হয়ে ওঠে। এরই ফলে কমান্ডারগণ গণ-আদালতে বিচার করতে পেরেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এ এক বিরল ঘটনা। এমনি করে যদি বাংলাদেশের সব রাজাকারের বিচার করা যেত, তবে স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি কখনো ক্ষমতায় আসতে পারত না। এ লজ্জা আমাদের সবার।

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে কপিলমুনির যুদ্ধে শহিদ কেয়ারগাতির আনসার আলী ও খুলনার আনোয়ারের নাম চিরস্বরণীয় হয়ে থাকবে। স্বাধীনতার বিপক্ষে থেকে জনসাধারণের প্রতি অত্যাচার করেও নিজামী-মুজাহিদরা স্বাধীন বাংলাদেশে গাড়িতে জাতীয় পতাকা লাগিয়ে ঘুরে বেরিয়েছে। অথচ দুঃখের বিষয়, রাজাকার ক্যাম্পে ক্রুশবিদ্ধ শহিদ মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আলী গাজী এখনো মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পাননি। কী বিচিত্র এই দেশ!]

  কপিলমুনি গঙ্গার সাথে সাগর রাজ্যের মিল ঘটায়

মৃত্যুঞ্জয় সরদার: ইতিহাসকে যেমন আমরা অস্বীকার করতে পারি না, ঠিক তেমনি বিধাতার লিখন কে খন্ডন করা যায়না।আর সেই কারণে এই ধরাধামে কেউ রাজা আর কেউবা ফকির। সবই ভগবানের ইচ্ছা, ভগবান ছাড়া জীবের কোন গতি নাই। কর্মই ধর্ম, কর্মেই মনুষ্যত্ব বিচারের ফল। কর্মের মাধ্যমে মানুষকে শ্রেষ্ঠ ও ভগবান করুনা প্রকাশ পায়। বহু প্রাচীনকাল থেকেই এই বিশ্ব মাঝারে পাপীতাপী ও ভয়ঙ্কর ব্যক্তিদের নির্মূল করেছেন স্বয়ং ঈশ্বর।ঈশ্বর অহংকার আর অত্যাচারের কোনদিনই সহ্য করতে পারে না, আর সেই কারণে বিশ্বে অতি মহামারী তৈরি হয়েছে করোনাভাইরাস। ধ্বংসের নিলায় মেতে উঠেছেন তিনি।যতদিন না এই অত্যাচারী ,অহংকারী ,আরঅবিচারই মানুষগুলো শেষ হচ্ছে ততদিন , তার রুষ্ট থামছে না ।। সারা পৃথিবী জুড়ে বিজ্ঞান এত উন্নতি আর তেমনি অভিশাপ প্রাকৃতিক শক্তির কাছে হার মানতে বাধ্য হয়েছে। লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে, অনেকেই মৃত্যুবরণ করেছে। আজও তেমনি কিছু করতে পারল না বিজ্ঞানীরা ,সবই তো তার লীলা খেলা। রাখে হরি মারে কে, ভগবানের মার দুনিয়ার বার ,এ কথাটি আর যেন চিরন্তন সত্যের মত প্রমাণিত। সত্যের পথে চলতে গিয়ে আমার জীবনে বহু বাধা-বিপত্তি ,অত্যাচার, অবিচার অনাচার ,কিনা হয়নি আজও তা অব্যাহত। সবিতার মহিমা তিনি যা করাচ্ছেন তাই আমার জীবনে ঘটে চলেছে।তবে সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা হাজার চেষ্টা চালিয়ে আমাকে সত্যের পথ থেকে আজও সরাতে পারিনি ভবিষ্যতে পারবেও না।তবে আমি আজ স্মরণ করিয়ে দিতে চাই দক্ষিণ ২৪ পরগনাজেলা বিগত দিনে বহু প্রাচীনকালে এটা ছিল এখানে মুনি-ঋষিদের বাসস্থান ও তপস্যার উপযুক্ত একটি জায়গা।বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্তী তীরে গড়ে উঠেছিল এই মনিঋষিদের তপস্যা কেন্দ্রিক বাসস্থানটি, প্রাচীনকালে সব ধ্বংস হয়ে গেছে।আ র ইতিহাস অনুসন্ধান করতে গিয়ে বেরিয়ে এল আর এক মনীষীর কথা।কপিল মুনির জন্ম ৩৫০ খ্রিস্টাব্দ পুর্বে| তাঁর বর্তমান বযস অনুমানিক ২,৭৭০ বছর|হিন্দু পৌরাণিক কাহিনি মতে― ঋষি বিশেষ। কর্দম প্রজাপতির ঔরসে দেবহুতির গর্ভে এঁর জন্ম হয়েছিল। ইনি সাংখ্যদর্শন প্রণেতা। এই দর্শনে ঈশ্বরের সত্তা অস্বীকার করা হয়েছে। তাঁর মতে জগত্ জড়-প্রকৃতি থেকে উদ্ভূত। তাঁর রচিত সাংখ্যদর্শনের সংখ্যা২৫টি। ইনি এই সাংখ্য-দর্শন আসুরি নামক জনৈক শিষ্যকে দান করেন। পরে আসুরির শিষ্য পঞ্চশিখ তা সমগ্র ভারতে প্রচার করেন। একাগ্র চিত্তে তপস্যার জন্য ইনি পাতালে আশ্রম তৈরি করেছিলেন। ধ্যান ধারণার মধ্যে বিশাল সেতুবন্ধন তৈরি করে দিয়েছিল কপিল ।সাগরের সঙ্গে গঙ্গার মিলন ঘটিযে ছিলেন কপিল মুনি তপস্যা করে| গঙ্গার সঙ্গে সাগর রাজের মিলন ঘটান তিনিই| ফলে গঙ্গার জল কোনও সমযে শুকনো হয না| সব সমযে জলে পরিপূর্ণ থাকে| ভারতবর্ষে ্প্রাণ হচ্ছে গঙ্গা নদী| কোটি কোটি ভারতবাসীর ্প্রাণকে রক্ষা করছে গঙ্গা|এর ফলে সারা ভারতবর্ষের মানচিত্র টা অন্যরকম রূপ নিয়েছে তিন ভাগ জল আর এক ভাগ স্থল, প্রাচীন জনপদ সবনদীগর্ভে বা সমুদ্র গর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। আজও তার ধ্বংসস্তূপ সুন্দরবন নদীগর্ভে বুক থেকে খনন করলে উঠে আসে।তবে সুন্দরবনকে নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে গবেষকরা বিভিন্ন দেবতার প্রতিষ্ঠানে নিয়ে আজও পর্যন্ত একমত হতে পারিনি। ভবিষ্যতে গবেষণায় প্রমাণ হবে এ কথাগুলো বর্তমানে প্রমাণিত। এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য আমার গবেষণায় উঠে এসেছে।আজ থেকে ২৭০০ কি ২৭৫০ বছর আগে আমাদেরই এই মনোরম বাংলায় জন্ম নেন এক প্রাজ্ঞ ব্যক্তি। মানুষের চিরন্তন জীবন-জিজ্ঞাসার উত্তর খুঁজে পেতে মিথ-মুক্ত র‍্যশনাল এনালাইসিস সম্পন্ন এক নতুন ধরণের জ্ঞান চর্চা শুরু করেন তিনি, এর নাম ‘দর্শন’। গ্রীসের প্রথম দার্শনিক থেলিস-এরও অন্ততপক্ষে এক শত বছর আগে জন্ম জ্ঞানী কপিল-এর। রাজপুত্র সিদ্ধার্থের (বোধি লাভ করে যিনি হয়েছিলেন গৌতম বুদ্ধ) জন্ম কপিল মুনির ১০০ বা১৫০ বছর পর। দর্শনের প্রবক্তা কপিলের প্রবর্তিত দর্শনের নাম হয় ‘সাংখ্য’ দর্শন। “সাংখ্য” শব্দটির অর্থ “অভিজ্ঞতা-প্রসূত” বা “সংখ্যা-সম্বন্ধীয়”। কপিল প্রাচীন বাংলার অধিবাসী ছিলেন। প্রাচীনকালে যশোরের কপোতাক্ষ নদের পাশে কপিলমুনি গ্রামে এই দার্শনিকের জন্ম হয়েছিল-অনেকেই এরকম অনুমান করেন। কপিলের শেষ জীবন কেটেছিল বর্তমান পশ্চিম বাংলায় । . প্রাচীন ভারতে ছটি দার্শনিক মত ছিল। সাংখ্য, যোগ, মীমাংশা, বেদান্ত, ন্যায়, এবং বৈশেষিক। এর মধ্যে কপিল-প্রবর্তিত সাংখ্যই সবচাইতেপ্রাচীন দর্শন। সাংখ্য দর্শন অবৈদিক উৎস থেকে উদ্ভূত হয়েছে। ধ্রুপদি সাংখ্য যে বেদ-সহ রক্ষণশীল ব্রাহ্মণ্য সংস্কৃতির অন্তর্ভুক্ত হয়নি, তাতেও আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। সাংখ্য বেদ সম্পর্কে নীরব। বেদের রক্ষক (ব্রাহ্মণ সমাজ), সমগ্র জাতিভেদ ব্যবস্থা, বৈদিক দেবদেবীদের সম্পর্কে সাংখ্য নীরব। প্রাচীন বৈদিক ধর্মে যে পশুবলি প্রথা প্রচলিত ছিল, তার বিরুদ্ধেও সাংখ্য যৎসামান্য সরব। যে কপিলের মেধা আজও বিশ্বের দার্শনিক পরিমন্ডলে কে বিস্ময়াভূত করে রেখেছে।. একজন দার্শনিক হিসেবে কপিল যথার্থই বিশ্বাস করতেন মানবজীবনে দর্শনের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, জীবন দুঃখময়। দুঃখের হাত থেকে পরিত্রাণ পেতে দর্শন চর্চা জরুরি । জার্মান অধ্যাপক Richard Garbe তাঁর Die Sāmkhya-Philosophie বইতে কপিলের সময়কাল খ্রিস্টপূর্ব ৭ম শতক বলে নির্ধারণ করেছেন। (কিন্তু উল্লেখ করতে ভুলে গিয়েছেন যে কপিলের জন্ম প্রাচীন বাংলায়!) পন্ডিতগণ আরও মনে করেন যে ‘তত্ত্বসমাস’ ও ‘সাংখ্য প্রবচন’ এই দুই গ্রন্থ ঋষি কপিল রচিত| যাই হোক। দার্শনিক বলেই একদল লোক ভাবলো যে, কপিল নিরেশ্বরবাদীফেলেছে। তাহলে আমরা কি ভাবে সাংখ্যদর্শন সম্বন্ধে জানতে পারলাম? প্রাচীন ভারতীয় দার্শনিক মহলের একটি বৈশিষ্ট্য হল এই যে-কোনও মত খন্ডন করার আগে সেই মতের পূর্ণ উল্লেখ করা। কাজেই কপিলের মতবাদ খন্ডন করার আগে আর্যপন্ডিতেরা কপিল-এর সাংখ্যদর্শনের পূর্ণাঙ্গরূপে উল্লেখ করেছিলেন। এ ছাড়া খ্রীষ্টীয় ৩০০ শতকে ঈশ্বরকৃষ্ণ নামে একজন পন্ডিত সাংখ্যদর্শনের ওপর ‘সাংখ্যকারিকা’ নামে একটি গ্রন্থ রচনা করেছেন। যাতে কপিলের বহু উক্তি রয়েছে। ওই গ্রন্থটি কপিলের সাংখ্যদর্শনের ওপর একটি মূল্যবান তথ্যের উৎস।) কর্দমা ও দেবধুতির সন্তান প্রাজ্ঞ কপিল বলেছিলেন: জগতে প্রত্যেক প্রাণি দুঃখভোগ করে। তিনি আরও বলছেনযে, ‘প্রকৃতির সহিত সংযোগই পুরুষের দুঃখের কারণ।’ সাংখ্য দর্শনের মুখ্য প্রতিপাদ্য বিষয় হল ‘দুঃখ নিবৃত্তি’ অর্থাৎ মানুষের জীবনে দুঃখের অবসান ঘটাতে হবে|সে দুঃখ অবসান ঘটাতে গিয়ে, তিনি সংখ্যা দর্শন উল্লেখ করেছিলেন এই বিশ্ব তার রূপ আর মহিমা কথা।তিনি আস্তিক না নাস্তিক এসব বিষয়ে বলাটা বড় দায়ী ছিল। তবে কপিলের মতে সমস্ত জগৎ প্রকৃতি (জড় প্রকৃতি) হইতে উদ্ভূত। পরমাত্মা ও প্রকৃতি উভয়ই অনাদি। তিনি সৃষ্টি করেন না, দ্রষ্টা মাত্র। মানবের কর্ম্মফলানুসারে আত্মা দেহান্তর আশ্রয় করে। কর্ম্মক্ষয়ে দেহান্তরে প্রবেশ করে না, পৃথক অবস্থান করে। কপিলের মতে বস্তু মাত্রই সৎ, সৎ হইতে সতের উৎপত্তি। বীজ ভূমিতে উপ্ত হইলেবীজের ধ্বংস হয় বটে কিন্তু ইহার সম্পূর্ণ ধ্বংস হয় না। বীজের অবয়ব বর্ত্তমান থাকে এই ভাবভূত অবয়ব হইতে অঙ্কুর উৎপন্ন হয়। কপিলের মতে দুঃখ ত্রিবিধ—আধ্যাত্মিক, আধিভৌতিক ও অধিদৈবিক। বাতপিত্তাদির বৈষম্যনিবন্ধন শারীরিক এবং ক্রোধাদিজনিত মানসিক দুঃখকে আধ্যাত্মিক দুঃখ বলে। মনুষ্য-পশ্বাদি হইতে জাত দুঃখ আধিভৌতিক এবং যক্ষ, পিশাচাদি হইতে অথবা ভূমিকম্পাদি প্রভৃতি হইতে জাত দুঃখকে অধিদৈবিক দুঃখ বলে। এই ত্রিবিধ দুঃখের আত্যন্তিক নিবৃত্তিই মুক্তি। এই মুক্তিলাভের একমাত্র উপায় জ্ঞান লাভ। সাংখ্য মতে জগৎ ব্যক্ত ও অব্যক্ত এই দুই ভাগে বিভক্ত। ব্যক্ত শব্দে প্রতীয়মান জগৎ এবং অব্যক্ত শব্দে প্রকৃতি বুঝায়। সাংখ্য মতে জগৎ সত্য কিন্তু ক্ষণিক। বেদান্ত মতে জগৎ মিথ্যা। বৈদান্তিক মতে রজ্জুতে সর্প জ্ঞানের ন্যায় ভ্রান্তি মাত্র। ইহার উত্তরে সাংখ্য বলেন,—সর্পের স্থানে যেমন রজ্জু, আছে, তদ্রূপ সংসার স্থানে একটা কিছু থাকা চাই এবং ইহাই প্রকৃতি। (২) অগ্নিপুরাণের ৩৯ অধ্যায়ে শিল্প শাস্ত্রকার এক কপিলের উল্লেখ আছে। (৩) কাশ্মীরপতি হর্ষদেব (১০৮৯—১১০২ খ্রীঃ) লোহর প্রদেশের সামন্ত নরপতি উদয়সিংহের মৃত্যুর পরে তাঁহার অন্যতম সেনাপতি ক্ষেমের পৌত্র কপিলকে লোহার রাজ্যে প্রতিষ্ঠিত করিয়াছিলেন। উচ্চল কাশ্মীর সিংহাসন অধিকার করিবার উদ্যোগী হইলে, কপিল উচ্চলের সৈন্যদলকে বাধা দিতে যাইয়া পরাজিত হন। পরে বিদ্রোহী গর্গের সহিত যুদ্ধে তিনি নিহত হন। এসব কথা আজ ইতিহাস, তানার কর্মই আজও চেয়ে শ্রেষ্ঠ তা প্রমাণিত চিরন্তন সত্য।আটটি সত্যটাকে আমরা অস্বীকার করি বারাবার,নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য।মানুষের সঠিক কর্ম তার ঈশ্বর প্রাপ্তির যোগ শুরু হয়ে যায় তার অজান্তে। তেমনি ইতিহাস

সাগর দ্বীপের কপিল মুনির আশ্রম বা মন্দির কত কালের? কেউ বলেন ভগীরথের গঙ্গার আনয়নের পূর্বে সাগরতীর্থ বা মন্দির বর্তমান ছিল, কেউ বলেন তা নয়। এসব কত কালের ঘটনা তার একটা হিসেব করতে পারা যায়।যোগেশচন্দ্র রায় তাঁর ‘পূজাপার্বণ’ গ্রন্থে এ প্রসঙ্গে বলেছেন, কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে সূর্যবংশীয় রাজা বৃহদবল নিহত হয়েছিলেন। ভগীরথ তাঁর পূর্বপুরুষ। উভয়ের মধ্যে ৫২ পুরুষের ব্যবধান। ৫৩ পুরুষে ১৩০০ বছর। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ খ্রিষ্টপূর্ব ১৪৪১ অব্দে। অতএব ভগীরথ খ্রিষ্টপূর্ব ২৭৪১ অব্দে ছিলেন। এই সময়ে কপিল মুনির আশ্রমছিল। সেই সময়ে তৎকালীন রাজা মাধব বিশাল বিষ্ণু মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু কোথায় ছিল এই মন্দির তাঁর হদিশ আজ জানা যায় না।হিউল ও বার্নেলের ‘হবসন রবসন’-এ দেখা যায়— হেজেস নামে এক নাবিক ১৬৮৩ সালে প্যাগোডা বা মন্দির দেখেছিলেন। অর্থাৎ, তখনও মাধব মন্দির ছিল। পণ্ডিত জগন্নাথ পঞ্চাননের পিতৃব্য ভবদেব ন্যায়ালঙ্কার সংস্কৃতে ‘তীর্থসার’ নামে একটি পুঁথি লেখেন। পুঁথিটি লেখা হয় ১৭২৯-৩০ খ্রিষ্টাব্দে। গঙ্গাসাগর তীর্থের পরিচয় দিতে গিয়ে তিনি শ্বেত দ্বীপের রাজা মাধব ও তাঁর প্রতিষ্ঠিত মাধব মূর্তির কথা বলেছেন। বলেছেন কপিল মুনির বিগ্রহের কথাও। ষোড়শ শতকের প্রাচীন পুঁথির তীর্থতত্ত্বপ্রদায়িনীতে কপিল মুনির মন্দিরের উল্লেখ রয়েছে। সেই মন্দির আজ অবস্থিত

 

 কপিলমুনির আশ্রম
কপিলমুনির আশ্রম

৫৮০ বর্গ কিমি জুড়ে সাগরদ্বীপ অঞ্চল। সাগরদ্বীপ কলকাতা থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। যদিও স্থানটি কলকাতার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নয়। প্রথমে বাসে করে কাকদ্বীপে পৌঁছে, লঞ্চে মুড়িগঙ্গা পেরিয়ে কচুবেড়িয়ায় পৌঁছতে হবে। সেখান থেকে বাসে ৩০ কিলোমিটার গেলে পৌঁছনো যাবে সাগরদ্বীপের গঙ্গাসাগর মেলা প্রাঙ্গণে । এ ছাড়া নামখানা দিয়েও যাওয়া যায় গঙ্গাসাগর কপিল মুনির আশ্রম। গঙ্গাসাগর মেলা দ্বিতীয় বৃহত্তম হিন্দু মেলা (কুম্ভমেলার পরে)। সাগর দ্বীপের দক্ষিণে হুগলি নদী বঙ্গোপসাগরে পতিত হচ্ছে। এইস্থানটি হিন্দুদের কাছে পবিত্র তীর্থ। তাই প্রতিবছর মকর সংক্রান্তির দিন এখানে বহু লোক তীর্থস্নান করতে আসেন; তবে বিহার-উত্তরপ্রদেশ থেকে আগত অবাঙালি পুণ্যার্থীদের ভিড়ই হয় সর্বাধিক।তবে অন্য এক ইতিহাস বলছে— ৪৩০ খ্রিষ্টাব্দে রানি সত্যভামা প্রথম কপিল মুনির মন্দির তৈরি করেন। সেই মন্দির নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার পরে ১৫০০ খ্রিষ্টাব্দে আবার এখানে মন্দির তৈরি হয়। এর পরে প্রায় ছ’বার ছ’টি মন্দির বিলীন হয়ে যায় সমূদ্র গর্ভে। বর্তমান মন্দিরটি আদিমন্দির স্থল থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ১৩৮০-৮১ (ইং ১৯৭৩-৭৪) বঙ্গাব্দে প্রায় লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে এটি তৈরি করেন অযোধ্যার হনুমান গড়ি মঠের মোহান্ত রামদাসজি মহারাজ। কথিত মেদিনীপুরের এক রাজা যদুরাম কিছু পশ্চিমি ব্রাহ্মণকে সাগরদ্বীপে এনে দেখা শোনার ভার দিয়েছিলেন। যেহেতু রাজা সগর, ভগীরথ এঁরা সূর্যবংশের রাজা ছিলেন। তাই সূর্যবংশের পরবর্তী প্রজন্ম অযোধ্যা হনুমানগড়ির মোহান্ত সীতারাম দাসকেই রাজা যদুরাম পুরোহিত নিযুক্ত করেন। সেই থেকে মন্দিরের মালিক তাঁরাই।কপিলমুনি আসলেকে ছিল তার ইতিহাস অনেকের কাছে অজানা।কপিল মুনি ছিলেন একজন বৈদিক ঋষি। তাঁকে সাংখ্য দর্শনের অন্যতম প্রবর্তক বলা হযে থাকে| ভাবত পুরাণে তাঁর সাংখ্য দর্শনের আস্তিক্যবাদ ধারাটির উল্লেখ পাওযা যায়। হিন্দুদের  প্রচিলত বিশ্বাস অনুসারে তিনি ব্রহ্মার পৌত্র মনুর বংশধর। ভগবদ গীতায় কপিল মুনিকে সিদ্ধযোগী বলে উল্লেখ করা হয়। ভাগবত পুরাণে তৃতীয স্কন্দে কপিলের জীবনের বর্ণনা পাওযা যায়। এখানে তাঁকে কর্দম মুনি ও দেবাহুতির পুত্র বলা হয়। তিনি সতী অনুসূযার ভ্রাতা এবং গুরু। স্বর্গের নদী গঙ্গার মর্ত্যে কাহিনীতে কপিল একজন  প্রধান চরিত্র। রামের পূর্ব পুরুষ সগর ৯৯ বার অশ্বমেধ যজ্ঞ করেছিলেন। শততম যজ্ঞের সময় দেবরাজ ইন্দ্র ইর্ষান্বিত হয়ে যজ্ঞের ঘোড়াটি অপহরণ করে কপিলের আশ্রমে রেখে গেলেন। সগরের ষাট হাজার পুত্র ঘোড়াটিকে খুঁজতে  বের হলেন। তাঁরা কপিলকে চোর অপবাদ দিলে কপিল তাঁদেরকে ভস্ম করে দিলেন। সগরের পৌত্র অংশুমান কপিলের  কাছে এসে  প্রাণ ফিরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করলেন। কপিল বললেন, স্বর্গের নদী গঙ্গা নেমে এসে তাঁদের স্পর্শ করলে তবেই তাঁরা  প্রাণ ফিরে পাবেন।পরে সগরের বংশধর ভগীরথ তপস্যা করে গঙ্গাকে মর্ত্যে নিয়ে এসেছিলেন। সেই কপিল মুনির মন্দিরকে ঘিরে গঙ্গা সাগরে    প্রতিবছর গঙ্গা সাগর স্নান সহ পুজোরতি করা হয়ে থাকে। অন্যদিকে কপিলমুনির আশ্রম নিয়ে নানা মত বিরোধ আছে গবেষকদের। তবে কিছু গবেষকদের মতে এখানে সাংখ্যদর্শনের আদি-প্রবক্তা কপিলমুনির আশ্রম ছিল। একদা কপিলমুনির ক্রোধাগ্নিতে সগর রাজার ষাট হাজার পুত্র ভস্মীভূত হন এবং তাঁদের আত্মা নরকে নিক্ষিপ্ত হয়। সগরের পৌত্র ভগীরথ স্বর্গ থেকে গঙ্গাকে নিয়ে এসে সগরপুত্রদের ভস্মাবশেষ ধুয়ে ফেলেন এবং তাঁদের আত্মাকে মুক্ত করে দেন । মহাভারতের বনপর্বে তীর্থযাত্রা অংশে গঙ্গাসাগর তীর্থের কথা বলা হয়েছে। পালবংশের রাজা দেবপালের একটি লিপিতে তাঁর গঙ্গাসাগর-সঙ্গমে ধর্মানুষ্ঠান করার কথা বলা হয়েছে। লোক-কাহিনী অনুযায়ী এখানে কপিল মুনির একটি আশ্রম ছিল। একসময় সেটি সমুদ্রগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। পরবর্তীকালে গড়ে ওঠা নতুন আশ্রমটিকে কেন্দ্র করে তাঁর ভক্তদের সমাগম বাড়তে থাকে। প্রত্যেক বছর জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি মকরসংক্রান্তি বা পৌষ-সংক্রান্তির পূণ্যতীথিতে লাখো লাখো লোকের সমাগম ঘটে এই সঙ্গমে। পুণ্যার্থীরা গঙ্গা ও বঙ্গোপসাগরের সঙ্গম স্থলে স্নান করে পুণ্যার্জন করতে এখানে আসেন তারপর তাঁরা কপিল মুনির আশ্রমে পুজো দেন। এই বৃহৎ মেলার কথা রামায়ণ, মহাভারত থেকে বঙ্কিমচন্দ্রের

কপালকুণ্ডলা উপন্যাস কিংবা রবীন্দ্রনাথের কবিতা, সর্বত্রই স্থান করে নিয়েছে এই গঙ্গাসাগর তীর্থের কথা । এছাড়া বহু হিন্দু পুরাণেও গঙ্গাসাগর তীর্থের উল্লেখ আছে। এই সমাগমকে ঘিরে গড়ে উঠেছে বিরাট মেলা যার নাম গঙ্গাসাগর-মেলা ।

কপিল মুনির আশ্রম

বাংলা সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের গুরুত্বপূর্ণ উৎসব হচ্ছে পোষ পার্বণ বা মকর সংক্রান্তি দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা সাগরদ্বীপে প্রত্যেক বছর গঙ্গা মেলার আয়োজন করা হয়। কপিল মুনির আশ্রমকে কেন্দ্র করে পূর্ণ স্নান বিরাট মেলার আয়োজন করা হয়। গঙ্গায় পবিত্র হতে দূর দূর থেকে অনেক পুণ্যার্থীআছে।

 কপিলমুনির আশ্রম
কপিলমুনির আশ্রম

গঙ্গা নদী ও বঙ্গোপসাগরের মিলিত স্থানকে বলা হয় গঙ্গাসাগর। এটি একাধারে যেমন তীর্থভূমি, আবার অন্যদিকে মেলাভূমি। এই দুইয়ের মেলবন্ধনেই গঙ্গাসাগর মেলা।কুম্ভ মেলার পর গঙ্গাসাগর মেলা দ্বিতীয় বৃহত্তম হিন্দু মেলা। বাংলার বাইরে ও বিহার উত্তর প্রদেশ ও অন্যান্য রাজ্য থেকেও প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থীরা পবিত্র তীর্থস্থান লাভের জন্য ভিড় জমায়।

গঙ্গাসাগরের কপিল মুনি আশ্রমকে নিয়ে রয়েছে নানা লোককথা ও ইতিহাস 

কথিত আছে ইক্ষাকু বংশের রাজা সগর অশ্বমেধ যজ্ঞের আয়োজন করেন। ভীত হয়ে দেবরাজ ইন্দ কপিল মুনির অজান্তেই ঘোড়া চুরি করে বেঁধে রাখেন তাঁর আশ্রমে। রাজার ষাট হাজার সন্তান ঘোড়া খুঁজতে এসে উপস্থিত হন আশ্রমে। না বুঝেই তাঁরা মুনিকে অপরাধী সাব্যস্ত করেন। কপিলমুনি রেগে গিয়ে তাঁদের অভিশাপ দেন এবং এবং তাঁরা ভস্মীভূত হয়ে যায়।এদিকে সগর রাজবংশের উত্তরপুরুষ ভাগীরথ, মহাদেবকে তুষ্ট করে পতিত পাবনীগঙ্গাকে স্বর্গ থেকে মর্তে নিয়ে আসেন। গঙ্গার ধারার ভষ্মিভূত সেই সন্তানরা পুনর্জীবন লাভ করে সশরীরে স্বর্গে ফিরে যান। আর এই কারণেই হিন্দু ধর্মে বিশ্বাসীদের কাছে এটি একটি পবিত্র তীর্থক্ষেত্র।শোনা যায়  মহাভারতের বনপর্ব তীর্থযাত্রায় গঙ্গাসাগরের কথা বলা আছে।এছাড়াও পাল বংশের রাজা দেবপাল একটি লিপিতে তাঁর গঙ্গাসাগর সঙ্গমে ধর্মানুষ্ঠান করার কথা বলেছিলেন।লোককাহিনী অনুযায়ী এখানে কপিলমুনির আশ্রম ছিল। একসময় সে যে সমুদ্র গর্ভে বিলীন হয়ে গেলে আশ্রম এটিকে কেন্দ্র করে তাঁর ভক্তদের সমাগম বাড়তে থাকে।একজন বৈদিক ঋষি ছিলেন কপিল। তাঁকে সংখ্যা দর্শনের অন্যতম প্রবর্তক বলে মনে করা হয়। ভগবত গীতায় কপিলকে সিদ্ধাচল উল্লেখ করাহয়েছে। এছাড়াও হিন্দু প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে তিনি ব্রহ্মার পৌত্র মনুর বংশধর। আবার অনেকে বলেন কপিল হলেন বিষ্ণু ভক্ত অসুররাজ প্রহ্লাদের পুত্র।

কপিল মুনির আশ্রম ঠিক কত বছরের পুরানো তা নিয়েও রয়েছে মত বিরোধ।

আরও শোনা যায়, ষোড়শ শতকের প্রাচীন পুঁথির তীর্থতত্ত্বপ্রদায়িনীতে কপিল মুনির মন্দিরের উল্লেখ রয়েছে। এক সময়ের জনপ্রিয় বাংলা পত্রিকা‘হরকরা’-য় ১৮৩৭ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে এক প্রবন্ধ ছাপা হয়। তাতে লেখা হয়েছে, ‘‘এই স্থানে (সাগর দ্বীপ) যে এক মন্দির আছে তাহা লোকের কাছে ১৪০০ বছর হইল গ্রথিত হইয়াছে। এই মন্দিরে কপিল মুনি নামে প্রসিদ্ধ দেবরূপ এক সিদ্ধপুরুষ প্রতিষ্ঠিত আছেন।

যোগেশচন্দ্র রায় তাঁর ‘পূজাপার্বণ’ গ্রন্থে এই প্রসঙ্গে বলেছেন, কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে সূর্যবংশীয় রাজা বৃহদবল নিহত হয়েছিলেন। ভগীরথ তাঁর পূর্বপুরুষ।উভয়ের মধ্যে ৫২ পুরুষের ব্যবধান। ৫৩ পুরুষে ১৩০০ বছর। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ হয়েছিল খ্রিষ্টপূর্ব ১৪৪১ অব্দে। অতএব ভগীরথ খ্রিষ্টপূর্ব ২৭৪১ অব্দে ছিলেন। এই সময়ে কপিল মুনির আশ্রম ছিল।

তাই কথায় বলে ‘ সব তীর্থ বারবার, গঙ্গাসাগর একবার’।

Related Post

মৃত্যু নিয়ে উক্তি

150+মৃত্যু নিয়ে উক্তি, বাণী, ক্যাপশন 2024

মৃত্যু নিয়ে উক্তি জন্মিলে মরিতে হবে আর এটাই সত্যি। মৃত্যু হচ্ছে সবচেয়ে চিরন্তন সত্যি। পৃথিবীতে প্রতিটি প্রাণীর মৃত্যুর স্বাদ অনুভব করতে হবে। সবসময় মৃত্যুর জন্য

Read More »
খুশির স্ট্যাটাস

200+ স্টাইলিশ খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন

খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন জীবনের সুন্দর খুশির মুহূর্ত আমরা সবাই বাঁধাই করে রাখতে চাই। আর এই খুশির মুহূর্তকে ধরে রাখার সবচেয়ে সহজ উপায়

Read More »

স্টাইলিশ ভালোবাসার ছন্দ | রোমান্টিক ছন্দ | Love Status Bangla

❤❤ভালোবাসার ছন্দ | ভালোবাসার ছন্দ রোমান্টিক | ভালোবাসার ছন্দ স্ট্যাটাস❤❤ ভালোবাসা হলো এক অন্যরকম অনুভূতির নাম, যা শুধুমাত্র কাউকে ভালবাসলেই অনুভব করা যায়। আমরা বিভিন্নভাবে

Read More »
মন খারাপের স্ট্যাটাস

মন খারাপের স্ট্যাটাস, উক্তি, ছন্দ, ক্যাপশন, কিছু কথা ও লেখা

মন খারাপের স্ট্যাটাস মন খারাপ – এই কষ্টের অনুভূতি কার না হয়? সবারই কখনো না কখনো সবারই মন খারাপ হয়। জীবনের ছোটোখাটো অঘটন থেকে শুরু

Read More »

Leave a Comment

Table of Contents