Dreamy Media BD

অনলাইনে জমির খতিয়ান অনুসন্ধান করার নিয়ম

জমির খতিয়ান অনুসন্ধান

অনলাইনে জমির খতিয়ান অনুসন্ধান করার নিয়ম

ডিজিটাল ভূমি সেবার আয়তায় ঘরে বসে অনলাইনে কিভাবে জমির খতিয়ান অনুসন্ধান করবেন , তা নিয়েই আমাদের আজকের আয়োজন। মাত্র ১০০ টাকার বিনিয়ময়ে ঘরে বসেই ৩০ মিনিটে  জমির খতিয়ান পাবার ধারাবানিক প্রক্রিয়া নিচে সচিত্র দেওয়া হয়েছে।  

জমির খতিয়ান কি

জরিপ চলাকালীন মৌজা ভিত্তিক কোন ভূমির যে বিবরণ (মালিক , দাগ নম্বর , পরিমান , ধরণ , খাজনার হার ইত্যাদি ) সহ যে রেকর্ড প্রস্তুত করা হয় তাকে খতিয়ান বলে।ব্রিটিশ ভারতের সময় থেকে এখন পর্যন্ত ৬ টি জরিপের ভিত্তিতে বিভিন্ন প্রকারের খতিয়ান পাওয়া যায়। 

অনলাইনে জমির খতিয়ান যাচাই পদ্ধতি

নিচের ধাপগুলি অনুসরণ করে সহজে ঘরে বসে অনলাইনে জমির খতিয়ান দেখা যায়।  

প্রথম ধাপ: ওয়বসাইটে প্রবেশ 

 প্রথমে যে কোন ব্রাউজার থেকে ডিজিটাল ভূমিসবার ই পর্চা ওয়েবসাইট এ প্রবেশ করুন।  লিংক:  https://www.eporcha.gov.bd 

দ্বিতীয় ধাপ: সার্ভে খতিয়ান এ প্রবেশ

উপরের লিংকে প্রবেশের পর নিচে দেওয়া চিত্রের মতো একটি ওয়েবসাইট পাবেন।  এখানে থেকে “সার্ভে খতিয়ান” এ ক্লিক করুন।  

তৃতীয় ধাপ: খতিয়ান অনুসন্ধান

এই পেজে “সার্ভে খতিয়ান অনুসন্ধান” নামে একটি ফর্ম দেখতে পারবেন , যেখানে আপনাকে কিছু তথ্য দিতে হবে।  

প্রথমে বিভাগ এর ঘর থেকে , আপনার বিভাগ বাছাই করবেন , তাহলে জেলার ঘরে আপনার বিভাগের জেলা গুলো দেখাবে।  
তারপর ,আপনার জেলা < উপজেলা ক্রমন্বয়ে বাছাই করবেন।  
এরপরের ঘরে , আপনি কি জাতীয় খতিয়ান খুজতেছেন সেটা দিতে হবে।  বিভিন্ন প্রকার খতিয়ান কিভাবে চিনবেন তা পোস্টার নিচে দেওয়া আছে।  
এর পরবর্তী ঘরে আপনাকে মৌজা দিতে হবে , মৌজা নম্বর জানা থাকে নম্বর দিয়ে সার্চ দিতে পারেন বা সেখান থেকেও বাছাই করতে পারেন। 
সর্বশেষ আপনার “খতিয়ান নম্বর” দিয়ে খুজুন বাটনে ক্লিক করুন অথবা সেখানে দেওয়া লিস্ট থেকে খতিয়ানটি খুঁজে নিন।  
তারপর সেই খতিয়ানের উপর দুবার ক্লিক করলে নিচের চিত্রের মতো একটি  পিকচার দেখতে পারবেন।

  যেখানে খতিয়ান নম্বর , ধরণ ও সম্পর্কিত দাগ নম্বরগুলি দেখতে পারবেন।  

এখানে থেকে নিচে , “বিস্তারিত” বাটনে ক্লিক করলে , ওই খতিয়ানের সকল দাগ ও মালিক বা দখলদারের নাম দেখতে পারবেন।  

তৃতীয় ধাপ: খতিয়ান আবেদন ফর্ম

আপনার খতিয়ানের মূল কপি পেতে সবশেষ পাওয়া পেজটির , “খতিয়ান আবেদন” বাটনে ক্লিক করতে হবে।  তাহলে আপনাকে ” খতিয়ান আবেদন ফর্ম ” নামের একটি অনলাইন ফর্ম এ নিয়ে যাবে।  

চতুর্থ ধাপ: খতিয়ান আবেদন ফর্ম পুরন 

এই ফর্মে আপনার “জাতীয় পরিচয়পত্র নং” জন্মতারিখ ও মোবাইল নম্বর দিয়ে যাচাই করুন বাটনে ক্লিক করতে হবে।

সবকিছু ঠিক থাকলে, ফর্মের বাকি অংশ নাম ইংরেজিতে ও ঠিকানা নিজে থেকেই পুরন হয়ে যাবে।

তারপর , আবেদনের ধরন থেকে আপনি কি ধরনের কপি চান অনলাইন/ সার্টিফাইড কপি কিনা সেটা নির্বাচন করতে হবে।  

 সার্টিফাইড কপি নির্বাচন করলে কিভাবে নিতে চান সেটা উল্লেখ করতে হবে।  

পঞ্চম ধাপ: পেমেন্ট 

এই ধাপে খতিয়ান ফি ১০০ টাকা পেইমেন্ট করতে হবে।  এখানে আপনি কোন মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করতে চান সেটা নির্বাচন করুন। এখানে বিকাশ, রকেট নগদ ও উপায় এর মাধ্যমে পেমেন্ট করতে পারবেন। 

নিরাপত্তার জন্য, দেওয়া সংখ্যা দুইটির যোগফল দিয়ে , নিচের পরবর্তী ধাপ সবুজ বাটনে ক্লিক করুন। 

ধরি আমরা, বিকাশ এ পেমেন্ট নির্বাচন করেছি, তাহলে বিকাশের এই পেমেন্ট গেটওয়ে স্কিন আসবে। এখানে, যে নম্বর থেকে পে করতে চাই, সেই নম্বর দিয়ে Conform করতে হবে, পরের ধাপে বিকাশ আপনার পিন নম্বর চাইবে , বিকাশ পিন নম্বর চাইবে। পিন দিয়ে Confirm করলে আপনার বিকাশ হতে ১০০টাকা কেটে নিবে, তারপর একটা ডায়ালগ বক্স পাবেন। 

জমির খতিয়ান ডাউনলোড

টাকা দেবার পর পাওয়া ডায়ালগ বক্স এ , খতিয়ান সরাসরি ডাউনলোড করার একটি অপশন পাবেন , সেখান থেকে “QR Code” যুক্ত একটি অনলাইন খতিয়ানের পিডিএফ পাবেন। ফরম পুরনের সময়, মেইল দিলে, আপনার মেইলেও একটি খতিয়ান Download এর লিঙ্ক পাবেন।  আর আপনি যদি , সার্টিফাইড কপি অপশন নির্বাচন করেন তাহলে , আপনার কপি ডাকযোগে বা অফিস থেকে নির্দিষ্ট তারিখে সংগ্রহ করতে পারবেন। 

মালিকের নাম বা দাগ নম্বর দিয়ে খতিয়ান দেখা 

মনে করি, আপনার খতিয়ান নম্বর মনে নেই, সেক্ষেত্রে নিচের পন্থা অনুসরন করুনঃ

এটিও আগের নিয়ম এর মতই, বিভাগ < জেলা < উপজেলা < মৌজা দিতে হবে তারপর খতিয়ান তালিকা ঘরের নিচের দিকের “অধিকতর অনুসন্ধান” বাটনে ক্লিক করতে হবে। তাহলে  জমির মালিকের নাম ও দাগ নং দেবার ফর্ম দেখতে পারবেন । 

এখানে, মালিকের নাম বা দাগ নম্বর দিয়ে, খুঁজুন বাটনে ক্লিক দিলে খতিয়ান এর প্রাথমিক তথ্য পেয়ে যাবেন। 

বাকি প্রক্রিয়া উপরের নিয়মের মতই, ফরম পুরন করে পেমেন্ট করলে আপনার কাঙ্খিত খতিয়ান পেয়ে যাবেন।

খতিয়ান আর পর্চা কি ভিন্ন জিনিস? 

হ্যাঁ, খতিয়ান এবং পর্চা ভিন্ন জিনিস। উপরের খতিয়ান এর সংগা থেকে আমরা জেনেছি ,খতিয়ান হল একটি সরকারি নথি যা জমির মালিকানা, ধরন, পরিমান এবং অবস্থান সম্পর্কে তথ্য প্রদান করে। 

পর্চার সংজ্ঞা: পর্চা হল জমির একটি নির্দিষ্ট অংশের বিবরণ যা খতিয়ানের অংশ। পর্চার মধ্যে জমির দাগ নম্বর, জমির পরিমাণ, মালিকের নাম, দাখিলা নম্বর, খাজনা ইত্যাদি তথ্য থাকে।

কিভাবে বিভিন্ন প্রকার খতিয়ান চেনা যায়?

জরিপের উপর ভিত্তি করে এখন পর্যন্ত একাধিক প্রকার খতিয়ান দেখতে পাওয়া যায়।  আর সব প্রকারের খতিয়ান গুলোতে নাম লেখা না থাকার কারণেই অনেকেই খতিয়ান চিনতে পারে না।  নিচে বিভিন্ন পরকারের খতিয়ান চেনে উপায় বর্ণনা করা হলো:

 সিএস খতিয়ান চেনায় উপায়ঃ

CS( Cadastral Survey ) ১৮৮৮ তে শুরু হয়ে ১৯৪০ এ শেষ হওয়া ব্রিটিশ কর্তৃক জরিপ থেকে এই খতিয়ান পাওয়া যায়। ১৯৪০ সালে শেষ হওয়ায় অনেকে একে ৪০ নামেও ডাকে।

 যেহেতু ১৯৪০ সালে জমিদারি প্রথা ছিল, তাই এটিতে মালিকের তথ্য দুইটি ভাগে থাকে, প্রথমে জমিদারের তথ্য ও নিচের অংশে দখলদার বা প্রজার তথ্য। 

উপরের দিকে জেলার পর পরগণার নাম দেওয়া থাকে এবং এই খতিয়ান  এর পিছন  দিকেও জমির বিবরণ সহ যাবতীয় তথ্য থাকে, এগুলি দেখে বুঝতে পারবেন এটি একটি সিএস খতিয়ান । 

 এসএ খতিয়ান  চেনায় উপায়ঃ  

পাকিস্তান সরকার কর্তৃক ১৯৫৬ সালের এস এ সার্ভে কর্তৃক প্রাপ্ত খতিয়ান।।১৯৬২ সালে জপির শেষ হয়ায় অনেকে একে ৬২ নামেও চিনে।

প্রথমত, উপরে বাম দিকে সাবেক (সিএস ) ও হাল (এসএ) খতিয়ান নম্বর থাকবে। 

দ্বিতীয়ত, সব তথ্য উপরের পেজেই থাকবে, পেজের পিছনের দিকে কোন তথ্য থাকবে না। 

তৃতীয়ত, ৫৬ সালে জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হয় বলে তাই, জমিদারের কোন তথ্য থাকবে না। 

এই বিসয়গুলি দেখে সিএস খতিয়ান চেনা যায়। 

 আরএস খতিয়ান  চেনায় উপায়ঃ 

RS ( Revitionel Survey  ) জরিপ হতে প্রাপ্ত খতিয়ান। এই জরিপটি ৯৮ সাল পর্যন্ত চলে, অনেকে একে দিয়ারা বা বিআরএস নামেও চিনে।

চেনার প্রধান উপায় হল এর ডান দিকের সর্বশেষ ঘরের উপরে, রেসার্ভে নম্বর লেখা থাকবে।  এবং এটিতেও সি এস এর মত একই পৃষ্ঠার দুইদিকে তথ্য থাকে। 

 সিটি জরিপ /বিএস পর্চা/খতিয়ান  চেনায় উপায়ঃ সিটি জরিপ পর্চায় সিল দিয়ে লেখা থাকে, ঢাকা সিটি জরিপ। এবং এটা সম্পূর্ণ  প্রিন্ট হয়, হাতে লেখা কোন তথ্য থাকে না। 

আর, বিএস পর্চাও সম্পূর্ণ প্রিন্ট হয় এবং এখানে উল্লেখিত তারিখ টি অবশ্যই ২০০০ সালের পর হবে। 

Also Read : ঘরে বসেই ই-পর্চা

Related Post

মৃত্যু নিয়ে উক্তি

150+মৃত্যু নিয়ে উক্তি, বাণী, ক্যাপশন 2024

মৃত্যু নিয়ে উক্তি জন্মিলে মরিতে হবে আর এটাই সত্যি। মৃত্যু হচ্ছে সবচেয়ে চিরন্তন সত্যি। পৃথিবীতে প্রতিটি প্রাণীর মৃত্যুর স্বাদ অনুভব করতে হবে। সবসময় মৃত্যুর জন্য

Read More »
খুশির স্ট্যাটাস

200+ স্টাইলিশ খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন

খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন জীবনের সুন্দর খুশির মুহূর্ত আমরা সবাই বাঁধাই করে রাখতে চাই। আর এই খুশির মুহূর্তকে ধরে রাখার সবচেয়ে সহজ উপায়

Read More »

স্টাইলিশ ভালোবাসার ছন্দ | রোমান্টিক ছন্দ | Love Status Bangla

❤❤ভালোবাসার ছন্দ | ভালোবাসার ছন্দ রোমান্টিক | ভালোবাসার ছন্দ স্ট্যাটাস❤❤ ভালোবাসা হলো এক অন্যরকম অনুভূতির নাম, যা শুধুমাত্র কাউকে ভালবাসলেই অনুভব করা যায়। আমরা বিভিন্নভাবে

Read More »
মন খারাপের স্ট্যাটাস

মন খারাপের স্ট্যাটাস, উক্তি, ছন্দ, ক্যাপশন, কিছু কথা ও লেখা

মন খারাপের স্ট্যাটাস মন খারাপ – এই কষ্টের অনুভূতি কার না হয়? সবারই কখনো না কখনো সবারই মন খারাপ হয়। জীবনের ছোটোখাটো অঘটন থেকে শুরু

Read More »

Leave a Comment

Table of Contents