জয়তুন তেলের উপকারিতা
জয়তুন ফল খুবই উপকারী একটা ফল। এর বৈজ্ঞানিক নাম Olea Europaea। ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে এই ফল টি পাওয়া যায়। পবিত্র আল কুরআনে এই ফল সম্পর্কে বলা হয়েছে। শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য যুগ যুগ ধরে এই তেল ব্যবহার হয়ে আসছে।বর্তমানে জয়তুন তেল প্রচুর পরিমাণে ব্যবহার করা হচ্ছে। রান্না ও ত্বকের জন্য সবাই প্রচুর পরিমাণে ব্যবহার করছে। এটাতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন ও খনিজ এবং আরো অন্যান্য ঔষধে গুণে ভরপুর।
অনেকে জলপাইয়ের সাথে জয়তুন মিলিয়ে ফেলে। আসলে জয়তুন আর জলপাই আলাদা ফল। আকারে ছোট হয় জয়তুন ফল। গবেষকরা গবেষণা করে দেখেছেন জয়তুন ও জলপাইয়ের মধ্যে গুণগত কিছু মিল রয়েছে। জলপাই থেকে কোনো তেল তৈরি করা হয় না। আর যদিও তৈরি করা হয় তাহলে সেটা বাণিজ্যিকভাবে সফল হবে না। আমরা যে অলিভ অয়েল ব্যবহার করে থাকি সেটাই জয়তুন থেকে তৈরি।
জয়তুন তেলের প্রকারভেদ
এক্সট্রা ভার্জিন জয়তুন তেল
সবচেয়ে ভালো হচ্ছে এক্সট্রা ভার্জিন জয়তুন তেল। অন্যান্য জয়তুন তেলের তুলনায় এটাতে মিনারেল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পরিমাণ বেশি আছে। আর এসিডের পরিমাণ কম আছে।
রান্নার কাজে এই তেল ব্যবার করতে চাইলে অনেক যত্নের সাথে রান্না করতে হয়। কেননা এই তেল অল্পতেই পুড়ে যায়। বেশি ভাজার কাজে এই তেল ব্যবহার করা যায় না। সেজন্য আপনি সালাদ ও সবজিতে টপিং হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। এই তেলের দাম অন্য সব জয়তুন তেলের তুলনায় বেশি।
ভার্জিন জয়তুন তেল
ভার্জিন জয়তুন তেলের অনেক জনপ্রিয়তা রয়েছে। এটাতে এসিডের পরিমাণ কম। এটা তৈরি করার সময় রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহৃত হয় নি। এই তেল রান্নার জন্য ব্যবহার করা হয়। এক্সট্রা ভার্জিন জয়তুন তেলের থেকে এটার দাম অনেক কম।
বিশুদ্ধ জয়তুন তেল
এক্সট্রা ভার্জিন জয়তুন তেল এবং পরিশোধিত জয়তুন তেলের মিশ্রণে এটা তৈরি করা হয়। অন্য সব জয়তুন তেলের তুলনায় এর পুষ্টিগুণ কম। রান্নার কাজে ব্যবহার করা যেকে পারে। তবে আপনি ত্বকের (ত্বক ও চুল) যত্নে ব্যবহার করতে পারবেন। এই জন্য এটা অনেক উপকারী।
পোমেস গ্রেড জয়তুন তেল
পোমেস গ্রেড জয়তুন তেলও একধরনের জয়তুন তেল। এটা রান্নার কাজে কম ব্যবহার করা হয়। ভার্জিন ও এক্সট্রা ভার্জিন জয়তুন তেলের থেকে এর পুষ্টিগুণ অনেক কম।
ল্যাম্প্যান্ট জয়তুন তেল
রান্না বা খাওয়া এবং শরীরে ব্যবহার কোনো কিছুর জন্য উপযুক্ত নয়। এটা জ্বালানির জন্য এবং প্রযুক্তিগত উদ্দেশ্যের জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
বিভিন্ন ধরনের জয়তুন তেল সম্পর্কে জানলাম। এখন এর উপকারীতা সম্পর্কে জানবো ইনশাআল্লাহ।
ওজন কমাতে জয়তুন তেলের ব্যাবহার
ভূমধ্যসাগরীয় মানুষজনরা খাবারে জয়তুন তেল ব্যবহার করতো। তারা জয়তুন তেল খাওয়ার কারণে ওজন কমতে থাকে। পরে তাদের রক্ত পরিক্ষা করে দেখা গিয়েছে তাদের রক্তে এন্টিঅক্সিডেন্টের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে আমরা সবাই ভাজা পোড়া খাবার খাই। মাঝে মাঝে সবাই এত ব্যস্ত থাকে যে স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে পারে না। ভাজাপোড়া খাবারের কারণে আমাদের শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। ওজন বৃদ্ধি পাওয়া এর একটি কারণ। যারা ওজন কমানোর জন্য বিভিন্ন ডায়েট শুরু করেছেন, তারা ডায়েট চার্টে জয়তুন তেল রাখবেন। এটা অনেক স্বাস্থ্যসম্মত একটা উপায়। যেটা নিয়মিত খাওয়ার ফলে আপনার ওজন কমতে থাকবে। প্রতিদিনের রান্নায় জয়তুন তেল ব্যবহার করুন। এতে রান্নার স্বাদ বাড়বে। এবং ওজন কমতে থাকবে। ব্যায়ামের পাশাপাশি জয়তুন তেল অবশ্যই রাখবেন।
কোষ্ঠকাঠিন্যের দূর করবে জয়তুন তেল
বর্তমানে এই সমস্যা অনেকেরই দেখা দিয়েছে। এটা মূলত অতিরিক্ত তেলে ভাজাপোড়া খাবার এবং অনিয়মিত খাদ্যাভাসের জন্য হয়ে থাকে। কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় জয়তুন তেল খেতে থাকলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে কারণ এটাতে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাক্ট ও পাকস্থলীর জন্য অনেক উপকারী। এর পুরুত্ব ও টেকচারের কারণে পাচনতন্ত্রের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। জয়তুন তেলে রয়েছে- মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট, ভিটামিন-ই, ভিটামিন-কে, ওমেগা-৯, ফ্যাটি এসিড এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট। জয়তুন তেল খেলে স্বাস্থ্য বাড়বে না এবং পরিপাক তন্ত্র ভালো হয়ে যায়। কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা দূর হয়ে যায়।
এক্সট্রা ভার্জিন জয়তুন তেল
প্রতিদিন দুই বেলা এই তেলটি খাওয়ার অভ্যাস করুন। সকালে খালি পেটে এক চামচ খাবেন। আবার রাতে খাওয়ার আগে এক চামচ খাবেন। যদি খাওয়ার আগে খেতে ভুলে যান, সেক্ষেত্রে খাওয়ার এক ঘন্টা পর খাবেন। কোষ্ঠকাঠিন্য ভালো না হওয়া পর্যন্ত এটা খেয়ে যেতে হবে নিয়মিত।
ফল ও সবজির সাথে জয়তুন তেল
বিভিন্ন ফল ও সবজির সাথে জয়তুন তেল মিশিয়ে খেতে পারেন। সকালে খালি পেটে এক চামচ জয়তুন তেল খাওয়ার পর তারপর যেকোনো ফল ও সবজি খেতে পারেন। যতদিন কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা যাচ্ছে না, ততদিন এটা খেতেই থাকবেন।
কমলা রসের সাথে জয়তুন তেল
সকালে খালি পেটে কমলার রস করে এর সাথে এক চামচ জয়তুন তেল মিশিয়ে খাবেন। কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর হবে এবং পরিপাক তন্ত্র কে সুস্থ রাখবে।
কফির সাথে জয়তুন তেল
কফির প্রতি বেশিরভাগ মানুষের একটা ঝোঁক আছে। যারা নিয়মিত কফি খান তারা কফির সাথে এক চামচ জয়তুন তেল মিশিয়ে খেতে পারেন।
লেবুর রসের সাথে জয়তুন তেল
লেবুর রসের সাথে এক চামচ জয়তুন তেল মিশিয়ে খেতে পারেন। আবার সন্ধ্যায় এক ফালি লেবুর সাথে জয়তুন তেল খেতে পারেন।কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
দুধের সঙ্গে জয়তুন তেল
ফলের রসের সাথে জয়তুন তেল খেতে না পারলে দুধের সঙ্গে খেতে পারেন। খালি পেটে এক কাপ দুধের সঙ্গে এক চামচ জয়তুন তেল মিশিয়ে খেতে পারেন। এটা খুবই কার্যকরী উপায়। নিয়মিত খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাবেন ইনশাআল্লাহ।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য জয়তুন তেল
খাদ্যাভ্যাসের কারণে ও ভুল রুটিনের কারণে ডায়াবেটিস হয়ে থাকে। ডায়াবেটিস হলে অনেক সতর্ক থাকতে হয়। খাবার ব্যাপারে বিশেষ যত্নের প্রয়োজন পড়ে। টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য জয়তুন তেল উপকারী।
চোখের যত্নে জয়তুন তেল
আমাদের শরীরের প্রতিটা অঙ্গ প্রত্যঙ্গই অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে হচ্ছে চোখ। কম্পিউটার মোবাইল সারাদিন দেখার কারণে চোখের উপর আমাদের অনেক চাপ পড়ে। এগুলোর কারণে চোখের দৃষ্টিশক্তি কমতে থাকে। চোখের যত্নে জয়তুন তেল নিয়মিত ব্যবহার করতে পারেন।এটা অনেক উপকারী। প্রতিদিন চোখের চারপাশে জয়তুন তেল দিয়ে হালকা ম্যাসাজ করলে রক্ত সঞ্চালন হবে এবং নিজেকে সতেজ লাগবে। রাতে ঘুমানোর আগে এটা করবেন।
সারাদিনের চোখের ক্লান্তি দূর হবে।
উচ্চ রক্তচাপের জন্য জয়তুন তেল
বর্তমানে উচ্চ রক্তচাপ সমস্যা প্রায় মানুষের ক্ষেত্রে দেখা যায়। এটা গুরুত্বপূর্ণ ভাবে না নিলে অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় জয়তুন তেল রাখলে উচ্চ রক্ত চাপের মতো ঝুঁকিপূর্ণ রোগ থেকে অনেকাংশে মুক্তি পাওয়া যাবে।
কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে জয়তুন তেল
কোলেস্টেরলের সমস্যা চরম একটা সমস্যা। জয়তুন তেল কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করবে। মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট বেশি থাকার কারণে শরীরে ভালো ধরনের কোলেস্টেরল তৈরি করতে সহায়তা করে। ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমায়।
মস্তিষ্কের জন্য জয়তুন তেল
দুশ্চিন্তা ও আরো অনেক মানসিক সমস্যার কারণে মস্তিষ্কের উপর চাপ পড়ে। কেউ কেউ আলঝেইমারের মতো রোগের সমস্যায় পড়েন। আর সেজন্য বয়স বাড়ার সাথে সাথে স্মৃতিশক্তি কমতে থাকে।
এই সমস্যা হলে জয়তুন তেল নিয়মিত খেলে আলঝেইমারের সমস্যা দূর হয়ে যাবে। স্মৃতিশক্তি আরো উন্নত হবে ইনশাআল্লাহ।
হাড়ের সুরক্ষায় জয়তুন তেল
বয়স বাড়ার সাথে সাথে হাড় দুর্বল হয়। কিন্তু বর্তমানে যুবক যুবতিদের এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। যেটা চরম সমস্যা। সময়মতো এটার চিকিৎসা না করলে ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।
হাড়ের সমস্যা কে বলা হয় অস্টিওপোরোসিস সমস্যায় জয়তুন তেল কার্যকরী। নিয়মিত খাদ্য তালিকায় রাখলে এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাবেন ইনশাআল্লাহ।
রান্নায় এবং সালাদে ব্যবহার করে খেতে পারেন।
প্রদাহ দূরীকরণে জয়তুন তেল
আমাদের শরীরে প্রদাহ হয়ে থাকে। এর কারণে বিভিন্ন ধরনের রোগ হয়ে থাকে। এই প্রদাহ দূরীকরণে জয়তুন তেল ভালো কাজ করে। এর মধ্যে রয়েছে ওলিওক্যানথল। এটা প্রদাহ দূর করার জন্য আইবুপ্রোফেনের মতো কাজ করে। ৫০ মিলি জয়তুন তেল ১০ শতাংশ আইবুপ্রোফেন ঔষধের কাজ করে। এটাতে অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি থাকার কারণে আর্থ্রাইটিস সমস্যা থেকে রক্ষা করে।
হার্ট অ্যাটাক ঝুঁকিতে জয়তুন তেল
কাজের চাপ ও দুশ্চিন্তার কারণে হৃদরোগের সমস্যার সৃষ্টি হয়। এই রোগের জন্য নিয়মিত খাদ্যাভাস ও ব্যায়ামের প্রতি গুরুত্ব দিতে হয়। জয়তুন তেল হার্টের জন্য অনেক উপকারী। এটা হার্ট অ্যাটাক হৃদরোগের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।ক্যান্সার প্রতিরোধে জয়তুন তেল। জয়তুন তেল নিয়মিত খাবারের সাথে রাখলে ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকটা কমে আসে। এমন কিছু যৌগ আছে এই তেলের মধ্যে, যেটা ক্যান্সারের কোষ দূর করতে সাহায্য করে। অলিউরোপেইন নামক প্রাকৃতিক যৌগ
থাকার কারণে স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
নিয়মিত সেবনে যেকোনো ধরনের ক্যান্সার হতে রক্ষা পাওয়া যায়।
জয়তুন তেল কিভাবে তৈরি হয়?
জলপাইয়ের মধ্যে কালো জাত রয়েছে। কালো জাতের জলপাই থেকে জয়তুন তেল তৈরি করা হয়।
তৈরি করার নিয়ম-
ধাপ-১:
কালো জাতের জলপাই নিয়ে ছোট ছোট টুকরা করে বিচি বের করে নিতে হবে। এরপর ব্লেন্ড করতে হবে। মনে রাখতে হবে একদম মিহি হতে হবে কিন্তু।
ধাপ-২:
কড়াইয়ে জলপাই বাটা নিতে হবে৷ এরপর চুলায় কড়াই দিয়ে নাড়তে থাকতে হবে। নাড়তে নাড়তে এক পর্যায়ে তেল উপরে উঠতে শুরু করবে। এরপর পাতলা কাপড়ের উপর ঢেলে নিয়ে ছেঁকে নিতে হবে। তারপর ঢাকনাযুক্ত বয়ামে রেখে দিতে হবে।
জয়তুন তেল মালিশ
জয়তুন তেল ত্বকের জন্য অনেক উপকারী। শিশু থেকে বৃদ্ধ সব বয়সের মানুষ এই তেল ব্যবহার করতে পারবেন।
শীতকালে ত্বক ফেটে যায়, সেজন্য জয়তুন তেল হাতে নিয়ে পুরো শরীর মালিশ করলে ফেটে যাওয়া সমস্যা দেখা যাবে না।
শরীরের যেকোনো স্থানে এই তেল মালিশ করতে পারেন।
জয়তুনের তেল মুখে দিলে কি হয়?
শীতকালে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে ময়েশ্চারাইজারের ভূমিকা অনেক। আর ময়েশ্চারাইজার হিসেবে যদি জয়তুন তেল ব্যবহার করেন। তাহলে তো আরো ভালো। ডেড স্কিন সেলস বা মরা চামড়া মেরামত করতে জয়তুন তেলের ভূমিকা অনেক।
যদি নিয়মিত এই তেল ব্যবহার করা হয়, তাহলে আল্ট্রাভায়োলেট রেডিয়েশন থেকে চামড়াকে বাঁচায়।
জয়তুনের তেল ও অলিভ অয়েল কি এক?
অলিভ অয়েলকে জয়তুনের তেল বলা হয়। জলপাই কে নয়।
জলপাই থেকে তেল তৈরি করা হয় না। যদিও জলপাই থেকে তেল হয় তাহলে বাণিজ্যিক ভাবে সফল হবে না।
জয়তুন ও জলপাই ২ টা আলাদা ফল।
জয়তুন গাছ কে চিরহরিৎ বৃক্ষ বলা হয়। এটা ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে ভালো জন্মে। এই গাছ ৮ থেকে ১৫ মিটার লম্বা। পাতা ৪ থেকে ১০ সে.মি. লম্বা এবং ১ থেকে ৩ সে.মি. প্রশস্ত। জয়তুনের পাতাকে যুদ্ধে শান্তির প্রতীক বলা হয়। জয়তুনের তেলকে তরল সোনা বলা হয়। কারণ এটা মানুষের শরীরের জন্য অনেক উপকারী।
জলপাই গ্রীষ্মমণ্ডলীয় টক ফল। ভারতীয় উপমহাদেশে এই ফল ভালো উৎপাদিত হয়।
জলপাই গাছ মাঝারি আকারের হয়ে থাকে। ১০ থেকে ১২ মিটার পর্যন্ত লম্বা। শীতকালে পাতা ঝরে পড়ে। ফেব্রুয়ারী ও মার্চে নতুন পাতা গজায় এবং সেই সাথে দেখা দেয় ছোট ছোট সাদা ফুল।
জয়তুন তেলের চুলের উপকারিতা
নিয়মিত জয়তুন তেল ব্যবহারে মাথার ত্বক পরিষ্কার থাকে। এন্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান মাথার ত্বক কে ভালো রাখে, যেটা জয়তুন তেলে রয়েছে। প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে মাথার ত্বকে জয়তুন তেল লাগিয়ে ভালো ভাবে ম্যাসাজ করে নেন। তারপর ঘুমান। সকালে উঠে শ্যাম্পু করে নিতে পারেন।যাদের মাথার ত্বক শুষ্ক তারা এই প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন। ময়েশ্চারাইজার হিসেবে খুব ভালো কাজ করে।
জয়তুন তেলের চুলের অপকারিতা
সব কিছুরই উপকারিতা অপকারিতা রয়েছে। জয়তুন তেলেরও উপকারিতা যেমন রয়েছে, তেমনি অপকারিতাও রয়েছে। নিচে জয়তুন তেলের অপকারীতা বর্ণনা করা হলো:-
- যাদের ত্বক অত্যন্ত শুষ্ক তাদের ত্বকের ক্ষেত্রে জয়তুন তেল খারাপও হতে পারে।
- ত্বকের ধরণ তৈলাক্ত হলে ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে জয়তুন তেল ব্যবহারের কারণে।
- ডায়াবেটিস রোগীরা খাদ্য তালিকায় জয়তুন তেল রাখলে অবশ্যই পাশাপাশি নিয়মিত ব্লাড সুগার পরিক্ষা করতে হবে।
- উচ্চ রক্ত চাপের রোগীদের ক্ষেত্রে জয়তুন তেল অতিরিক্ত খাওয়া খারাপও হতে পারে।
- গর্ভবতী ও স্তন্যপানকারী মহিলারা জয়তুন তেল ব্যবহারের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
- হৃদরোগের ক্ষেত্রে ব্যবহারের আগে ডাক্তারের কাছে থেকে নিয়ম জেনে নেওয়া ভালো।
- ছোট বাচ্চাদের জয়তুন তেল ব্যবহার করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার করতে হবে।
- শরীরের কোনো ক্ষতস্থান হলে, সেই ক্ষতস্থানে জয়তুন তেল লাগানো যাবে না।
যেকোনো কিছু অতিরিক্ত ব্যবহারে হিতে বিপরীত হতে পারে। সেজন্য একটু গ্যাপ দিয়ে সতর্ক থেকে ব্যাবহার করতে হবে।
উপসংহার
জয়তুন ফল খুবই উপকারী একটা ফল। পবিত্র কোরআনে জয়তুনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এই ফল যেমন ঔষধি ও উপকারী। তেমনি এর থেকে উৎপাদিত তেলও অনেক উপকারী। আপনাদের সামনে আজ জয়তুন তেল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনারা এর উপকারিতা ও বিভিন্ন তথ্য সম্পর্কে জানতে পেরেছেন আশা করছি। এটা নিয়মিত ব্যবহারে আপনারা উপকার পাবেন। নিয়মিত ব্যবহার করুন এবং সুস্থ থাকুন।
Also read: সুষম খাদ্য কাকে বলে