Dreamy Media BD

কৃষি উদ্যোক্তা প্রবন্ধ রচনা | ২০ টি গুরুপ্তপূর্ণ পয়েন্ট

কৃষি উদ্যোক্তা

প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, আজকে আমারা হাজির হয়েছি “কৃষি উদ্যোক্তা ” প্রবন্ধ রচনা নিয়ে যা ২০ টি গুরুপ্তপূর্ণ পয়েন্ট লেখা হয়েছে। এই রচনাটি SSC, HSC, BCS সহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

ভূমিকা 

অর্থ বিনিয়োগ করে জনবল কাজে লাগিয়ে কোন ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ উপার্জনের প্রত্যাশায় যখন কোন কাজ করার পরিকল্পনা করে, তখন তাকে উদ্যোগ বলা হয়। যারা উদ্যগ গ্রহণ করে তাদেরকে উদ্যোক্তা বলা হয়। প্রতিটি পেশা কে কেন্দ্র করে উদ্যোক্ত হওয়া সম্ভব। একজন উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠিত হন এবং নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করেন। কৃষি ক্ষেত্রকে উদ্যোগ হিসেবে গ্রহণ করার বিষয়টি বাংলাদেশের নতুন। বিপুল জনসংখ্যা, কৃষি জমির পরিমাণ হ্রাস, বেকারত্ব, এসব কিছুর ভিতরেব একদল তরুণ কৃষিকে প্রধান অবলম্বন হিসেবে  গ্রহণ করেছেন। শিক্ষিত তরুণদের কৃষি ক্ষেত্রে উদ্যোগ ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও জাতীয়  উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

আমেরিকার প্রথম প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটন বলেছেন, 

“মানুষের জন্য সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর, গুরুত্বপূর্ণ ও সম্মানের পেশা হল কৃষি” 

কৃষক ও কৃষি উদ্যোক্তা 

 

কৃষক ও কৃষি উদ্যোক্তার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। একজন কৃষক চাষ করে তার পারিবারিক চাহিদা মেটাতে বেশি বেশি গুরুত্ব দেয়, অথবা কিছুটা বিক্রির জন্য আর কিছুটা পারিবারিক খাবারের জন্য রেখে দেন। অন্যদিকে একজন কৃষি উদ্যোক্তার মূল লক্ষ্য হচ্ছে বাজারজাত করে মুনাফা লাভ  করা। তাই একজন কৃষি উদ্যোক্তা কে ব্যবসায়িক মনোবৃত্তির হতে হয় এবং এতে প্রচুর ঝুঁকি রয়েছে। 

কৃষি উদ্যোগের ক্ষেত্র সমূহ 

শস্য ও প্রাণিসম্পদ সহ কৃষি ও কৃষি সংশ্লিষ্ট যেকোন বিষয়কে  কৃষি উদ্যোগের আওতায় আনা সম্ভব। তবে এক্ষেত্রে উদ্যোক্তাকে অবশ্যই মূলধন জমির পরিমাণ, মাটির গুনাগুন, অবকাঠাম,  বালাই ব্যবস্থাপন,  লোকবল, পরিবহন ব্যবস্থা, বাজার ও চাহিদা, উৎপাদিত পণ্যের সংরক্ষণ ব্যবস্থা প্রভৃতি বিষয় বিবেচনা করতে হয়। ধা,  গম, ডাল, আখ,পাট, শাকসবজি, ফুল, ফল, মসলা, মধু, মাশরুম, রেশম, মাছ এবং প্রভৃতির চাশ ও উৎপাদন ;গরু ছাগল হাঁস মুরগি প্রভৃতি প্রাণিসম্পদের লালন-পালন, গাছের চারা, জৈব সার,বায়োগ্যাস,  দুধ ও দুধজাত পন্যের  উৎপাদন ও বিপণন ইত্যাদি কৃষি উদ্যোগের আওতাভুক্ত। 

কৃষক উদ্যোক্তার  প্রকারভেদ 

কৃষক  উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন প্রকারভেদ রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য প্রকারভেদ হল:

ক. ফসল চাষি উদ্যোক্তা: এই ধরনের উদ্যোক্তারা বিভিন্ন ধরনের ফসল, যেমন ধান, গম, পাট, শাকসবজি, এবং ফলমূল চাষ করে।

খ. উদ্যান উদ্যোক্তা: এই ধরনের উদ্যোক্তারা বিভিন্ন ধরনের ফল, ফুল, এবং বাগানের গাছপালা চাষ করে।

গ. মৎস্য চাষি উদ্যোক্তা: এই ধরনের উদ্যোক্তারা পুকুর, ডোবা, বা খালে মাছ চাষ করে।

ঘ. গবাদিপশু পালন উদ্যোক্তা: এই ধরনের উদ্যোক্তারা গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, এবং অন্যান্য গবাদিপশু পালন করে।

ঙ. হাঁস-মুরগি পালন উদ্যোক্তা: এই ধরনের উদ্যোক্তারা হাঁস, মুরগি, এবং অন্যান্য পাখি পালন করে।

চ. কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ উদ্যোক্তা: এই ধরনের উদ্যোক্তারা কৃষিপণ্য, যেমন ধান, গম, শাকসবজি, ফলমূল, মাছ, এবং মাংস প্রক্রিয়াজাত করে।

ছ. কৃষি সম্পর্কিত সেবা প্রদানকারী উদ্যোক্তা: এই ধরনের উদ্যোক্তারা কৃষি সম্পর্কিত বিভিন্ন সেবা প্রদান করে, যেমন কৃষি ঋণ, কৃষি বীমা, কৃষি প্রশিক্ষণ, এবং কৃষি তথ্য।

কৃষি উদ্যোক্তা হতে হলে কী কী যোগ্যতা ও দক্ষতা প্রয়োজন?

প্রথমত, কৃষি উদ্যোক্তার অবশ্যই কৃষি বিষয়ে জ্ঞান ও দক্ষতা থাকতে হবে। এছাড়াও, তাকে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ও পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে হবে। দ্বিতীয়ত, কৃষি উদ্যোক্তার অবশ্যই ব্যবসা পরিচালনার দক্ষতা থাকতে হবে। এছাড়াও, তাকে বাজার ব্যবস্থাপনা, বিপণন, এবং আর্থিক ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে জানতে হবে। তৃতীয়ত, কৃষি উদ্যোক্তার অবশ্যই উদ্যোগী মনোভাব থাকতে হবে। তাকে নতুন কিছু করার সাহস ও দক্ষতা থাকতে হবে।

এবং সবশেষে কৃষি উদ্যোক্তার অবশ্যই ঝুঁকি গ্রহণের মানসিকতা থাকতে হবে। কারণ, কৃষি ব্যবসায় ঝুঁকির সম্ভাবনা থাকে।

কৃষি উদ্যোক্তা হওয়ার সুবিধা

কৃষি উদ্যোক্তা হওয়ার বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে। কৃষি উদ্যোক্তা তার নিজের ব্যবসা পরিচালনা করতে পারে। এতে তার স্বাধীনতা থাকে।

  • উচ্চ আয়ের সম্ভাবনা: কৃষি উদ্যোক্তা সফল হলে তার উচ্চ আয়ের সম্ভাবনা থাকে।
  • কর্মসংস্থান সৃষ্টি: কৃষি উদ্যোক্তা তার ব্যবসায় কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেন। এতে দেশের বেকারত্ব সমস্যা সমাধানে সহায়তা হয়।
  • আর্থিক সাফল্য: কৃষি উদ্যোক্তা সফল হলে তিনি আর্থিক সাফল্য অর্জন করতে পারেন। এতে তার নিজের এবং পরিবারের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়।
  • দেশের অর্থনীতিতে অবদান: কৃষি উদ্যোক্তা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। তারা কৃষিপণ্যের উৎপাদন ও বিপণন করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তা করেন।
  • পরিবেশ সংরক্ষণ: কৃষি উদ্যোক্তা পরিবেশবান্ধব কৃষি পদ্ধতি প্রয়োগ করে পরিবেশ সংরক্ষণে সহায়তা করেন।

এছাড়াও কৃষি উদ্যোক্তা নতুন প্রযুক্তি ও পদ্ধতি প্রয়োগ করে সমাজকে পরিবর্তনে সহায়তা করেন।

কৃষি উদ্যোক্তা হওয়ার চ্যালেঞ্জ

কৃষি উদ্যোক্তা হওয়ার কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। কেননা কৃষি ব্যবসায় ঝুঁকির সম্ভাবনা থাকে। কারণ, আবহাওয়ার পরিবর্তন, রোগবালাই, এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কৃষি পণ্যের উৎপাদন কমে যেতে পারে। কৃষি ব্যবসায় মূলধন প্রয়োজন হয়। অনেক উদ্যোক্তা মূলধন সংকটের কারণে তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে পারে না। অন্যদিকে, কৃষি পণ্য বাজারজাত করা একটি চ্যালেঞ্জ। অনেক উদ্যোক্তা বাজারজাতকরণ করতে পারেন না। 

এছাড়াও যে চ্যালেঞ্জে গুলি আছেঃ 

  • কৃষি জ্ঞান ও দক্ষতা: কৃষি উদ্যোক্তার অবশ্যই কৃষি বিষয়ে জ্ঞান ও দক্ষতা থাকতে হবে। এছাড়াও, তাকে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ও পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে হবে।
  • প্রাকৃতিক দুর্যোগ: কৃষি ব্যবসায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে।
  • কৃষি পণ্যের দাম ও বাজার চাহিদা: কৃষি পণ্যের দাম ও বাজার চাহিদা নিয়মিত পরিবর্তিত হয়। তাই কৃষি উদ্যোক্তাদের এই পরিবর্তনের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হয়।
  • কৃষি প্রযুক্তির অগ্রগতি: কৃষি প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে সাথে কৃষি ব্যবসায় প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পায়। তাই কৃষি উদ্যোক্তাদের এই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হয়।

কৃষি উদ্যোক্তা উন্নয়নে বেসরকারি খাতের ভূমিকা

কৃষি উদ্যোক্তা উন্নয়নে বেসরকারি খাতের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ। বেসরকারি খাত কৃষি উদ্যোক্তা বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে পারে, কৃষি উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে পারে এবং কৃষি উদ্যোক্তা নেটওয়ার্কিং ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারে।

কৃষি উদ্যোক্তাদের ভবিষ্যৎ

কৃষি খাতের টেকসই উন্নয়নের জন্য কৃষি উদ্যোক্তার ভূমিকা অপরিহার্য। কৃষি উদ্যোক্তার সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে কৃষি উৎপাদন, গুণমান, এবং সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও, গ্রামীণ অর্থনীতিতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং দারিদ্র্য বিমোচনে সহায়তা পাবে। কৃষি উদ্যোক্তার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। কারণ, বিশ্বের জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে খাদ্য চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই কৃষি উৎপাদন বাড়াতে হবে। আর এটি সম্ভব হবে কৃষি উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে।

কৃষি উদ্যোক্তারা আধুনিক প্রযুক্তি ও পদ্ধতি প্রয়োগ করে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পারেন। এছাড়াও, তারা নতুন নতুন পণ্য উৎপাদন করে বাজারে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করতে পারেন।

বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ। এখানে কৃষি উদ্যোক্তা হওয়ার সুযোগ অনেক। সরকারও কৃষি উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন ধরনের সহায়তা প্রদান করে থাকে।

কৃষি উদ্যোক্তা বিকাশে করণীয়

কৃষি উদ্যোক্তা বিকাশে এর সাথে সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তা, সরকার, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সমূহ নিম্নলিখিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে:

  • কৃষি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের গুণগত মান বৃদ্ধি করা।
  • কৃষি ঋণের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা।
  • কৃষি গবেষণা ও উন্নয়নকে আরও বেগবান করা।
  • কৃষি বিপণন ও বাজারজাতকরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা।
  • কৃষি গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে নতুন প্রযুক্তি ও পদ্ধতি উদ্ভাবন করা যায়। কৃষি উদ্যোক্তারা এই নতুন প্রযুক্তি ও পদ্ধতি ব্যবহার করে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পারেন।
  • কৃষি পণ্য বাজারজাত করা একটি চ্যালেঞ্জ। কৃষি বিপণন ও বাজারজাতকরণ ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে কৃষি উদ্যোক্তারা তাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারে সঠিক দামে বিক্রি করতে পারেন।
  • কৃষি উদ্যোক্তা নেটওয়ার্কিং: কৃষি উদ্যোক্তা নেটওয়ার্কিং ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে কৃষি উদ্যোক্তারা একে অপরের কাছ থেকে শিখতে পারেন এবং সহযোগিতা করতে পারেন।
  • কৃষি উদ্যোক্তা সংস্কৃতি গড়ে তোলার মাধ্যমে কৃষি উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য মানুষকে উৎসাহিত করা যায়।
  • আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে কৃষি উদ্যোক্তা বিকাশে নতুন নতুন ধারণা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করা যায়।

এই পদক্ষেপগুলি বাস্তবায়নের মাধ্যমে কৃষি উদ্যোক্তা বিকাশে ইতিবাচক প্রভাব ফেলা সম্ভব।

কৃষি উদ্যোক্তার করণীয় 

উদ্যোক্তাকে প্রথমে তার পণ্যের বাজার  সম্বন্ধে ভালো ধারণা রাখতে হবে। প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করে অপচয় ও ব্যয় হ্রাসের  ব্যবস্থা করতে হবে। একজন কৃষি উদ্যোক্তাকে উদ্ভাবনী ক্ষমতা সম্পন্ন হতে হয়। কারণ তার এই উদ্ভাবনী বুদ্ধি   প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকতে সাহায্য করে।  কৃষি খাতে উদ্যোক্তাকে অনেক রকমের ঝুকে নিতে হয়। এসব ক্ষেত্রে লাভ-ক্ষতি বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় ঝুকি নিতে হবে এবং ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার সম্ভাব্য প্রস্তুতি রাখতে হবে। উদ্যোক্তা যে ক্ষেত্র নিয়ে কাজ করবে,  সে বিষয়ে যাবতীয় তথ্যের নিয়মিত খোঁজখবর রাখা জরুরী।  উপযুক্ত খাবা,  সা,  কীটনাশক, আধুনিক যন্ত্রপাতিসহ প্রযুক্তি সম্বন্ধে ধারণা থাকা দরকার। সম্প্রতি স্মার্টফোন ও  ইন্টারনেটের ব্যবহার উদ্যোক্তাদের সাফল্যের ভূমিকা রাখছে। একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যে কয়েকজন উদ্যোক্তা একসঙ্গে কাজ করতে পারেন। এতে বড় ধরনের কাজে হাত দেওয়া সম্ভব হয় এবং ঝুকে হ্রাস পায়। তবে অবশ্যই সতর্কতার সঙ্গে অংশীদার নির্বাচন করা উচিত।  পরিবর্তনশীল প্রাকৃতিক ও রাজনৈতিক পরিবেশ, শ্রমিক ও পণ্য পরিবহন, বাজার পরিস্থিতি ও প্রতিযোগিতার কথা চিন্তা করে কাজে অগ্রসর হলে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। 

কৃষি উদ্যোক্তাদের জন্য বাংলাদেশ সরকারের কয়েকটি উদ্যোগ: 

কৃষকের উন্নয়নে বাংলাদেশ সরকার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছ। এগুলো নতুন কৃষি উদ্যোক্তাদের কৃষিতে আগ্রহী করে তুলছে এবং দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হচ্ছেঃ 

ক. সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকগুলো কৃষির ধরন অনুযায়ী স্বল্প সুদে বিভিন্ন অংকের ঋণ প্রদান করছে। 

খ. কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর ও মৎস্য সম্পদ অধিদপ্তর উদ্যোক্তাদের জন্য যে কোন প্রয়োজনে প্রামর্শ দিয়ে থাকে। 

গ. বছরব্যাপী চাষ করার জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে ‘ডিজিটাল শস্য ক্যালেন্ডার’ ও বালাইনাশক নির্দেশিকা দেওয়া আছে,  যা ঠিক সময় ঠিক ফসল ফলাতে সাহায্য করে। 

এছাড়াও, ১৬১২৩ নম্বরে ফোন করে কৃষি সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যায়। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট কৃষি প্রযুক্তি সম্বন্ধে জানাতে ‘কৃষি প্রযুক্তি ভান্ডার ‘নামে একটি মোবাইল অ্যাপ তৈরি করেছে।  কৃষি বিপণন অধিদপ্তর কৃষি রোববাদের বাজারদ,  কৃষক প্রাপ্ত বাজারদর, সাপ্তাহিক ও পাক্ষিক ভিত্তিতে প্রেরণ করে। 

বাংলাদেশের কৃষক ও কৃষক উদ্যোক্তা 

কৃষক হল এমন ব্যক্তি যিনি কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। কৃষকরা সাধারণত ছোটখাটো জমিতে কৃষি কাজ করে থাকেন। তারা নিজেদের এবং পরিবারের খাদ্য চাহিদা পূরণের পাশাপাশি অতিরিক্ত উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করে থাকেন।

অন্যদিকে, কৃষক উদ্যোক্তা হল এমন ব্যক্তি যিনি কৃষি খাতে নতুন পণ্য, প্রক্রিয়া, বা ব্যবসায়িক মডেল তৈরি করে বা প্রচলন করে। কৃষক উদ্যোক্তারা সাধারণত বড় আকারের জমিতে কৃষি কাজ করে থাকেন। তারা কৃষি উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ, বিপণন, বা কৃষি সম্পর্কিত অন্যান্য সেবা প্রদানের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখেন। 

কৃষি পণ্য বাজারজাতকরণ সাধারণত স্বল্প পরিসরে করে থাকেন কৃষক। অন্যদিকে, কৃষি উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ, বিপণন, বা কৃষি সম্পর্কিত অন্যান্য সেবা প্রদানের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখেন।

কৃষকের ঝুঁকি গ্রহণের মানসিকতা কম থাকে এবং উদ্যোগী মনোভাব কম থাকে। কিন্তু কৃষি উদ্যক্তার  কৃষি পণ্য বাজারজাতকরণ বিস্তৃত পরিসরে করে থাকেন। ঝুঁকি গ্রহণের মানসিকতা বেশি থাকে। কৃষি উদ্যক্তার উদ্যোগী মনোভাব বেশি থাকে।

কৃষক ও কৃষক উদ্যোক্তার মধ্যে মূল পার্থক্য হল উদ্দেশ্য ও দৃষ্টিভঙ্গি। কৃষক মূলত জীবিকা নির্বাহের জন্য কৃষি কাজ করে থাকেন। অন্যদিকে, কৃষক উদ্যোক্তা কৃষি খাতে নতুন পণ্য বা প্রযুক্তি তৈরি করে অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখতে চান।

কৃষি উদ্যোক্তায় ইন্টারনেটের ভূমিকা 

ইন্টারনেট কৃষি উদ্যোক্তাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। এটি কৃষি উদ্যোক্তাদেরকে বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকে জ্ঞান, তথ্য, এবং সংযোগের সুযোগ করে দেয়। ইন্টারনেটের মাধ্যমে কৃষি উদ্যোক্তারা নিম্নলিখিত সুবিধাগুলি উপভোগ করতে পারেন:

ইন্টারনেটে প্রচুর পরিমাণে কৃষি বিষয়ক জ্ঞান ও দক্ষতা রয়েছে। কৃষি উদ্যোক্তারা ইন্টারনেটের মাধ্যমে এই জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন করে ফসল চাষ করতে পারে। ইন্টারনেটে কৃষি প্রযুক্তি ও বাজার সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। কৃষি উদ্যোক্তারা এই তথ্যের মাধ্যমে তাদের ব্যবসায়ের উন্নতি করেন। তাছাড়াও  ইন্টারনেটের মাধ্যমে কৃষি উদ্যোক্তারা বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকে অন্য কৃষি উদ্যোক্তাদের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে পারেন। এই সংযোগের মাধ্যমে তারা পরস্পর থেকে শিখতে পারেন এবং সহযোগিতা করতে পারেন। 

ইন্টারনেটের মাধ্যমে কৃষি উদ্যোক্তারা তাদের ব্যবসায়ের পরিধি প্রসারিত করতে পারেন, নতুন বাজারে প্রবেশ করতে পারেন, এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারেন।

উদাহরণস্বরূপ, ইন্টারনেটের মাধ্যমে কৃষি উদ্যোক্তারা আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি সম্পর্কে জানতে পারেন। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তারা তাদের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে পারেন। এছাড়াও, ইন্টারনেটের মাধ্যমে কৃষি উদ্যোক্তারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বাজার সম্পর্কে জানতে পারেন। এই তথ্যের মাধ্যমে তারা তাদের উৎপাদিত পণ্যগুলিকে সঠিক বাজারে বিক্রি করতে পারেন। 

অর্থনীতিতে কৃষি উদ্যোক্তাদের ভূমিকা 

কৃষি উদ্যোক্তারা অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তারা কৃষি উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করে, নতুন কৃষি পণ্য ও সেবা উদ্ভাবন করে, এবং গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নে অবদান রাখে।

কৃষি উদ্যোক্তারা কৃষি উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তারা আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ও পদ্ধতি ব্যবহার করে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করে। এর ফলে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পায় এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।

কৃষি হল অর্থনীতির অন্য সব খাতের প্রধান চালক তাই ত, এম এস শয়ামিনাথান বলেছেন, 

“যদি কৃষি ভুল হয়, অন্যকিছু ঠিক থাকা সম্ভব নয়” 

কৃষি উদ্যোক্তারা নতুন কৃষি পণ্য ও সেবা উদ্ভাবন করে। তারা নতুন জাতের ফসল, নতুন কৃষি পদ্ধতি, এবং নতুন কৃষি প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে। এর ফলে কৃষি খাতে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হয় এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঘটে।

কৃষি উদ্যোক্তারা গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নে অবদান রাখে। তারা কৃষি খাতে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে এবং গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর আয় বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এর ফলে গ্রামীণ দারিদ্র্য বিমোচন এবং সামাজিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হয়।

কৃষি উদ্যোক্তারা অর্থনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। তাদের উৎসাহিত ও সহায়তা করা হলে তারা কৃষি খাতের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে।

বিশ্বে কৃষি  উদ্যোক্তা 

বিশ্বে কৃষি উদ্যোক্তাদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (FAO) তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে বিশ্বে প্রায় ২.৬ বিলিয়ন মানুষ কৃষি উদ্যোক্তা ছিলেন। এর মধ্যে ১.৯ বিলিয়ন মানুষ কৃষি উৎপাদনে জড়িত ছিলেন, এবং ০.৭ বিলিয়ন মানুষ কৃষি সম্পর্কিত অন্যান্য সেবা প্রদানে জড়িত ছিলেন।

বিশ্বে কৃষি উদ্যোক্তাদের মধ্যে নারীদের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। FAO-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে বিশ্বে প্রায় ৯০০ মিলিয়ন নারী কৃষি উদ্যোক্তা ছিলেন। এর মধ্যে ৬০০ মিলিয়ন মানুষ কৃষি উৎপাদনে জড়িত ছিলেন, এবং ৩০০ মিলিয়ন মানুষ কৃষি সম্পর্কিত অন্যান্য সেবা প্রদানে জড়িত ছিলেন।

জর্জ ওয়াশিংটন বলেছিলেন, 

“ আমি গোটা দুনিয়ার প্রেসিডেন্ট হবার চাইতে আমার কৃষি ফার্মকে বেঁছে নিব”  

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কৃষি উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ রয়েছে। কিছু কৃষি উদ্যোক্তা কৃষি পণ্য উৎপাদনে জড়িত, যেমন কৃষক, খামার মালিক, এবং ভেটেরিনারি চিকিৎসক। অন্যরা কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াকরণ, বাজারজাতকরণ, বা বিপণনে জড়িত। আবার কেউ কেউ কৃষি সম্পর্কিত অন্যান্য সেবা, যেমন কৃষিঋণ, কৃষি বীমা, বা কৃষি পরামর্শ প্রদানে জড়িত। বিশ্বে কৃষি উদ্যোক্তাদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তারা কৃষি উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করে, নতুন কৃষি পণ্য ও সেবা উদ্ভাবন করে, এবং গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নে অবদান রাখে।

বেকারত্ব হ্রাসে কৃষি উদ্যোক্তাদের ভূমিকা 

বেকারত্ব হ্রাসে কৃষি উদ্যোক্তাদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। কৃষি উদ্যোক্তারা কৃষি খাতে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে বেকারত্ব হ্রাসে সহায়তা করে।

কৃষি উদ্যোক্তারা কৃষি উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ, বাজারজাতকরণ, বা বিপণন, বা কৃষি সম্পর্কিত অন্যান্য সেবা প্রদানের মাধ্যমে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে। উদাহরণস্বরূপ, একজন কৃষি উদ্যোক্তা একটি নতুন কৃষি পণ্য উৎপাদন শুরু করলে সেই পণ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ, এবং বাজারজাতকরণে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

কৃষি উদ্যোক্তারা গ্রামীণ এলাকায় বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে। গ্রামীণ এলাকায় শিল্প-কারখানা কম থাকায় বেকারত্বের হার বেশি থাকে। কৃষি উদ্যোক্তারা গ্রামীণ এলাকায় কৃষি খাতে নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করে গ্রামীণ বেকারত্ব হ্রাসে সহায়তা করে। বাংলাদেশে কৃষি উদ্যোক্তাদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে বাংলাদেশে কৃষি খাতে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বেকারত্ব হ্রাস পাচ্ছে।

জাতীয় জীবনে কৃষি উদ্যোক্তাদের ভূমিকা 

কৃষি উদ্যোক্তারা কৃষি উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করে জাতীয় অর্থনীতির উন্নয়নে সহায়তা করে। তারা আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ও পদ্ধতি ব্যবহার করে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করে। এর ফলে কৃষি খাতের আয় বৃদ্ধি পায় এবং জাতীয় অর্থনীতিতে কৃষি খাতের অবদান বৃদ্ধি পায়।

“কৃষকের মুখে হাসি

প্রাণে ভালোবাসা,

সোনালী ফসল পাবে

একটাই আশা।”

কৃষি উদ্যোক্তারা নতুন কৃষি পণ্য ও পদ্ধতি উদ্ভাবন করে জাতীয় অর্থনীতির উন্নয়নে সহায়তা করে। তারা নতুন কৃষি পণ্য উৎপাদন করে বা নতুন কৃষি পদ্ধতি প্রয়োগ করে কৃষি খাতের সম্প্রসারণ ঘটায়। এর ফলে কৃষি খাতে নতুন বিনিয়োগ আসে এবং জাতীয় অর্থনীতিতে কৃষি খাতের অবদান বৃদ্ধি পায়।

খাদ্য  ও নিরাপত্তায় কৃষি উদ্যোক্তাদের ভূমিকা 

কৃষি উদ্যোক্তারা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তারা কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করে দেশে খাদ্যের চাহিদা পূরণে সহায়তা করে।

কৃষি উদ্যোক্তারা আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ও পদ্ধতি ব্যবহার করে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করে। এর ফলে কৃষি খাতের আয় বৃদ্ধি পায় এবং দেশে খাদ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। কৃষি উদ্যোক্তারা নতুন কৃষি পণ্য উৎপাদন করে বা নতুন কৃষি পদ্ধতি প্রয়োগ করে কৃষি খাতের সম্প্রসারণ ঘটায়। এর ফলে দেশে খাদ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি পায় এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।

বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে কৃষি উদ্যোক্তাদের ভূমিকা 

কৃষি উদ্যোক্তারা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তারা কৃষি পণ্য রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সহায়তা করে। কৃষি উদ্যোক্তারা কৃষি পণ্য উৎপাদনে আধুনিক প্রযুক্তি ও পদ্ধতি ব্যবহার করে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করে। এর ফলে কৃষি পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি পায় এবং রপ্তানিযোগ্য পণ্যের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।

কৃষি উদ্যোক্তারা নতুন কৃষি পণ্য উৎপাদন করে বা নতুন কৃষি পদ্ধতি প্রয়োগ করে কৃষি খাতের সম্প্রসারণ ঘটায়। এর ফলে রপ্তানিযোগ্য পণ্যের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন বৃদ্ধি পায়। বাংলাদেশে কৃষি উদ্যোক্তাদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হচ্ছে।

কৃষিতে  নারী কৃষক উদ্যোক্তার ভূমিকা 

নারী কৃষক উদ্যোক্তারা কৃষিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। তারা কৃষি উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিপণনে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। তারা নতুন নতুন পদ্ধতি ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষি উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করছেন।

কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি: নারী কৃষক উদ্যোক্তারা নতুন নতুন পদ্ধতি ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করছেন। তারা জৈব কৃষি, উন্নত বীজ, সার ও কীটনাশক ব্যবহার করে উচ্চ ফলনশীল ফসল উৎপাদন করছেন।

কৃষি পণ্যের গুণগত মান বৃদ্ধি: নারী কৃষক উদ্যোক্তারা কৃষি পণ্যের গুণগত মান বৃদ্ধিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। তারা কৃষি পণ্য উৎপাদনের সময় সঠিক পরিচর্যা ও বাজারজাতকরণের মাধ্যমে পণ্যের গুণগত মান নিশ্চিত করছেন।

বাংলাদেশে নারী কৃষক উদ্যোক্তাদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকার নারী কৃষক উদ্যোক্তাদের উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এই প্রকল্প ও কর্মসূচির মাধ্যমে নারী কৃষক উদ্যোক্তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি, আর্থিক সহায়তা প্রদান ও বাজারজাতকরণের সুযোগ সৃষ্টি করা হচ্ছে। নারী কৃষক উদ্যোক্তাদের উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ কৃষি খাতে আরও উন্নতি অর্জন করতে পারে।

 

উপসংহার

 ড্যানিয়েল ওয়েবষ্টা বলেছেন- 

“যখন কৃষিকাজ শুরু হয় তখন তা একটি শিল্প অনুসরণ করে। তাই কৃষকরাই মানব সভ্যতার প্রতিষ্ঠাতা।”

একজন কৃষক উদ্যোক্তা সফল হলে যেমন দেশের দারিদ্র বিমোচিত হয় অন্যদিকে জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কৃষক উদ্যোক্তারা কৃষি খাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। তারা কৃষি উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, কৃষি পণ্যের গুণগত মান উন্নয়ন, কৃষি অর্থনীতিতে অবদান রাখা এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারেন।

Related Post

মৃত্যু নিয়ে উক্তি

150+মৃত্যু নিয়ে উক্তি, বাণী, ক্যাপশন 2024

মৃত্যু নিয়ে উক্তি জন্মিলে মরিতে হবে আর এটাই সত্যি। মৃত্যু হচ্ছে সবচেয়ে চিরন্তন সত্যি। পৃথিবীতে প্রতিটি প্রাণীর মৃত্যুর স্বাদ অনুভব করতে হবে। সবসময় মৃত্যুর জন্য

Read More »
খুশির স্ট্যাটাস

200+ স্টাইলিশ খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন

খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন জীবনের সুন্দর খুশির মুহূর্ত আমরা সবাই বাঁধাই করে রাখতে চাই। আর এই খুশির মুহূর্তকে ধরে রাখার সবচেয়ে সহজ উপায়

Read More »

স্টাইলিশ ভালোবাসার ছন্দ | রোমান্টিক ছন্দ | Love Status Bangla

❤❤ভালোবাসার ছন্দ | ভালোবাসার ছন্দ রোমান্টিক | ভালোবাসার ছন্দ স্ট্যাটাস❤❤ ভালোবাসা হলো এক অন্যরকম অনুভূতির নাম, যা শুধুমাত্র কাউকে ভালবাসলেই অনুভব করা যায়। আমরা বিভিন্নভাবে

Read More »
মন খারাপের স্ট্যাটাস

মন খারাপের স্ট্যাটাস, উক্তি, ছন্দ, ক্যাপশন, কিছু কথা ও লেখা

মন খারাপের স্ট্যাটাস মন খারাপ – এই কষ্টের অনুভূতি কার না হয়? সবারই কখনো না কখনো সবারই মন খারাপ হয়। জীবনের ছোটোখাটো অঘটন থেকে শুরু

Read More »

Leave a Comment

Table of Contents