Dreamy Media BD

সুষম খাদ্য কাকে বলে? সুষম খাদ্য কয়টি ও কি কি?

সুষম খাদ্য কাকে বলে

সুষম খাদ্য কাকে বলে? সুষম খাদ্য কয়টি ও কি কি?

দেহকে সুস্থ ও স্বাভাবিক রাখতে হলে আমাদের অবশ্যই জানতে হবে সুষম খাদ্য কাকে বলে এবং সুষম খাদ্য কয়টি ও কি কি? যেসকল উপাদান দেহের ক্ষয় পূরণ এবং শক্তি উৎপাদনে সহায়তা করে তাকেই সুষম খাদ্য বলে। খাদ্য গ্রহণ ছাড়া আমরা বেঁচে থাকব সেটা কি আমরা কখনো ভাবতে পারি? নিশ্চয়ই না তাই না? হ্যাঁ জীবনধারণের জন্য আমাদের বিভিন্ন ধরনের খাদ্য খেতে হয়। 

তবে আমাদের শরীর সুস্থ সবল রাখতে সুষম খাদ্যের কোনো তুলনা নেই। প্রিয় পাঠক আজ আপনাদের শরীরের কথা মাথায় রেখে সাজিয়েছি আমার এই আর্টিকেলটি। চলুন এবার যাওয়া যাক মূল আলোচনায়। 

সুষম খাদ্য কাকে বলে?

সুস্বাস্থ্য নির্ধারণের জন্য সঠিক অনুপাতে পুষ্টি সরবরাহের জন্য যে সকল খাদ্য আমরা খেয়ে থাকি তাকেই সুষম খাদ্য বলে। সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে চাইলে অবশ্যই খাদ্য হতে হবে সুষম, বয়স উপযোগী এবং নিরাপদ। আমরা ইতিমধ্যে বিভিন্ন পাঠ্যবইয়ে সুষম খাদ্যের উপকারীতা সম্পর্কে জেনেছি। তবে বর্তমানে আমরা অনেকেই সুষম খাদ্যের ব্যাপারে অসচেতনতার কারণে বিভিন্ন ধরনের রোগের মুখাপেক্ষী হয়। 

সুষম খাদ্য গ্রহণ করার উপকারীতা

সুস্থ থাকুন সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন। সুষম খাদ্যের উপকারীতা বলে শেষ করা যাবে না। সুষম খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা প্রতিটা মানুষের উচিত কারন এটা আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ করে দেহকে রাখে একদম ফিট। হৃদরোগ, উচ্চরক্তচাপ এখন একটি সাধারণ রোগে পরিণত হয়েছে। অতিরিক্ত তেল চর্বি জাতীয় খাবার খাওয়ার ফলে এই ধরনের রোগ শরীরে বাসা বাঁধছে। এই রোগ থেকে মুক্তি পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই আগে থেকেই সচেতন হতে হবে। 

যারা দুর্বলতার জন্য কোন কাজ করতে পারে না, দৈনন্দিন সুষম খাদ্য খাওয়া অভ্যাসের ফলে দেহের শক্তি অর্জন হয় এতে করে সকল ধরনের কাজ করার মনোবল সৃষ্টি হয়। এছাড়া যারা ওজন নিয়ে চিন্তিত তাদের জন্য সবচেয়ে ভালো উপায় সুষম খাদ্য গ্রহণ করা। গর্ভাবস্থায় সন্তান ও মায়ের সঠিক পুষ্টি বজায় রাখতে সুষম খাদ্যের কোনো জুড়ি নেই। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, সঠিক পুষ্টির অভাবে সন্তান বিকলাঙ্গ হয়ে জন্ম হয়, আবার কিছু শিশু অপ্রাপ্ত বয়সেও মৃত্যুবরণ করে। এর প্রধান কারণ পুষ্টির অভাব। 

আমাদের দেশে প্রায় অধিকাংশ মানুষ পুষ্টির অভাবে মৃত্যুবরণ করছে। আপনি যদি তাদের মধ্যে একজন না হতে চান তাহলে আজ থেকেই সুষম খাদ্যাভ্যাস উঠে তুলুন। 

সুষম খাদ্যাভ্যাসের পিরামিড 

প্রথম বার এমন নাম শুনলে নিশ্চয় অবাক হবেন। আসলে সুষম খাদ্যাভ্যাসের পিরামিড বলতে বোঝায় আপনি দৈনিক যে খাবার গ্রহণ করছেন সেটা কতটুকু খেলে উপকৃত হবেন তার একটা উদাহরণ। সহজ ভাষায় বলা যায়, পিরামিডের মত ত্রিভুজ আকৃতির একটি ছবিতে কোন খাদ্য আমাদের শরীরে কি পরিমাণ পুষ্টি যোগায় তারই একটি চার্ট তৈরি করাই হল সুষম খাদ্যাভাসের পিরামিড

প্রতিদিন খাদ্যে আমাদের রঙিন শাক সবজি খাওয়া উচিত যেমন- বেগুন, সবুজ শাক সবজি, লাল টমেটো, গাজর ইত্যাদি। আপনি যদি এমন একটি খাদ্যাভ্যাসের পিরামিড তৈরি করে রাখেন তাহলে দৈনিক কি পরিমান পুষ্টির চাহিদা পূরণ হচ্ছে সে বিষয়ে জ্ঞানলাভ করতে পারবেন। এতে আপনি সুস্বাস্থের অধিকারী হতে পারবেন 

সুষম খাদ্য কয় প্রকার ও কি কি?

পুষ্টি গুণ সমৃদ্ধ ছয়টি খাদ্য উপাদানে তৈরি হয় সুষম খাদ্যের তালিকা। আমরা প্রতিদিন কোনো না কোনো খাদ্য গ্রহণ করি। কিন্তু কোন খাদ্যকে সুষম খাদ্য বলে অনেকেই জানি না। সুষম খাদ্য গ্রহণ করার জন্য এই খাদ্য তালিকা সকলের জানা একান্ত প্রয়োজন। দেহের গঠন বৃদ্ধি এবং পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে সুষম খাদ্য একটি অপরিহার্য উপাদান। দর্শক আসুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক ছয়টি পুষ্টি গুণ সমৃদ্ধ সুষম খাদ্য কি কি?

১.শর্করা জাতীয় খাবার।

২.আমিষ জাতীয় খাবার।

৩.ফ্যাট/চর্বি জাতীয় খাবার।

৪.ভিটামিন জাতীয় খাবার।

৫.খনিজ লবণ সমৃদ্ধ খাবার।

৬.তরল/ পানি।

দর্শক আপনাদের সুবিধার্থে কোন কোন খাবারে পুষ্টি গুণ সমৃদ্ধ ছয়টি উপাদান আছে তা নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো।

১.শর্করা জাতীয় খাবার:- তিনটি খাদ্যগুণ সমৃদ্ধ মৌলিক উপাদান যেমন অক্সিজেন, কার্বণ ও হাইড্রোজেন নিয়ে গঠিত হয়েছে শর্করা জাতীয় খাবারের তালিকা‌। শরীর সুস্থ রাখার জন্য স্বাস্থ্যকর কার্বোহাইড্রেট/ শর্করা জাতীয় খাবার কোনগুলো জেনে নিন।

১. শস্য জাতীয়:- ভাত, পাউরুটি,ক্রাকার,নুডলস,পাস্তা,রাজমা, কাউন,লাল চাল ইত্যাদি।
২ ফলের মধ্যে আছে:- আম তরমুজ, আপেল, কমলালেবু, কলা,বেরি ইত্যাদি।
৩.দুগ্ধ জাতীয় খাবার:- খাঁটি দুধ, দই ও মিষ্টি।
৪.বীজ জাতীয় খাদ্য:- মসুর ডাল, কলাই ডাল, মটরশুঁটি,ওটস, ছোলা।
৫. ফলের রস/জুস:- চিনিযুক্ত এনার্জি ড্রিংকস, বাজারে বিক্রিত নানা ধরনের সহজলভ্য ড্রিংকস ইত্যাদি।
৬.সবজি জাতীয় খাদ্য:- ভুট্টা, আলু, মটর,বীট, মিষ্টি আলু।
৭. মিষ্টি জাতীয় খাবার:- কুকিজ,ক্যান্ডি,কেক।

 

২. আমিষ জাতীয় খাবার:- শরীরের ক্ষতিকর জীবাণু গুলোকে প্রতিরোধ করে অ্যান্টি বডি তৈরির মাধ্যমে শরীরকে সুরক্ষা করতে আমিষ খাবারের প্রয়োজন। সাধারণত আমিষ জাতীয় খাদ্য উপাদানকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়।

১. উদ্ভিজ খাবার।

২. প্রাণিজ খাবার ।

১.উদ্ভিজ খাবার:- যেসব খাদ্য উদ্ভিদ থেকে সংগ্রহ করা হয় তাকে উদ্ভিজ খাবার বলা হয়। যেমন- ডাল, মটরশুটি, সিমের বিচি, বরবটি, বাদাম  ইত্যাদি।

২. প্রাণিজ খাবার:- প্রাণী থেকে পাওয়া খাদ্যগুলোকে সাধারণত প্রাণিজ খাদ্য বলা হয়। যেমন- মাছ, মাংস, ডিম, দুধ ইত্যাদি।

৩.ফ্যাট/চর্বি জাতীয় খাবার:- চারটি উপাদানে সমৃদ্ধ যেমন স্যাচুরেটেড ফ্যাট, মনো আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট, পলি আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট, ট্রান্সফ্যাট সমন্বয়ে গঠিত হয় ফ্যাট/চর্বি জাতীয় খাবার। এটি সাধারণত দুই ভাগে বিভক্ত। 

১.প্রাণিজ যেমন- মাংস (ছাগল/গরু/পল্ট্রি/ভেড়া), মাছ, ডিম, দুধ। 

২. উদ্ভিজ যেমন- বাদাম (সকল প্রকার), তিশি, কুমড়ার বীজ, সয়াবিন, জলপাই, সকল প্রকার তেল, ইত্যাদি ।

৪.ভিটামিন জাতীয় খাবার:- শরীরের সুস্থতার জন্য খাদ্য তালিকায় ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ খাবার থাকা অপরিহার্য। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও হজম শক্তি বৃদ্ধিতে ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ খাবারের কোনো বিকল্প নেই। পাঠক আসুন জেনে নিই ভিটামিন জাতীয় খাবার কি কি। যেমন- মসুরের ডাল, টুনা মাছ, সিম, ব্রুকলি, লেবু, স্ট্রবেরি, মাছ, শাক, মুরগি বিভিন্ন ধরনের সিরিয়াল খাবার ইত্যাদি।

৫.খনিজ লবণ সমৃদ্ধ খাবার:- স্নায়ু উদ্দীপনা ও পেশি সংকোচন নিয়ন্ত্রণ করে খনিজ লবণ জাতীয় খাবার। দেহের অভ্যন্তরীণ ও দেহ গঠন কাজে খনিজ লবণ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে। খনিজ লবণ জাতীয় খাদ্য যেমন- সবুজ শাক সবজি, ডিম, দুধ, খাবার লবণ ইত্যাদি।

৬.তরল/ পানি:- পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি খেতে হবে। 

পরিশেষে

প্রিয় পাঠক আপনাদের সুবিধার্থে সুষম খাদ্য কাকে বলে? সুষম খাদ্য কত প্রকার ও কি কি? এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনি নিশ্চয়ই এই পোস্টটি দ্বারা উপকৃত হবেন এই আশা রাখছি। 

Also read:  দুধের উপকারিতা ও অপকারিতা

Related Post

মৃত্যু নিয়ে উক্তি

150+মৃত্যু নিয়ে উক্তি, বাণী, ক্যাপশন 2024

মৃত্যু নিয়ে উক্তি জন্মিলে মরিতে হবে আর এটাই সত্যি। মৃত্যু হচ্ছে সবচেয়ে চিরন্তন সত্যি। পৃথিবীতে প্রতিটি প্রাণীর মৃত্যুর স্বাদ অনুভব করতে হবে। সবসময় মৃত্যুর জন্য

Read More »
খুশির স্ট্যাটাস

200+ স্টাইলিশ খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন

খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন জীবনের সুন্দর খুশির মুহূর্ত আমরা সবাই বাঁধাই করে রাখতে চাই। আর এই খুশির মুহূর্তকে ধরে রাখার সবচেয়ে সহজ উপায়

Read More »

স্টাইলিশ ভালোবাসার ছন্দ | রোমান্টিক ছন্দ | Love Status Bangla

❤❤ভালোবাসার ছন্দ | ভালোবাসার ছন্দ রোমান্টিক | ভালোবাসার ছন্দ স্ট্যাটাস❤❤ ভালোবাসা হলো এক অন্যরকম অনুভূতির নাম, যা শুধুমাত্র কাউকে ভালবাসলেই অনুভব করা যায়। আমরা বিভিন্নভাবে

Read More »
মন খারাপের স্ট্যাটাস

মন খারাপের স্ট্যাটাস, উক্তি, ছন্দ, ক্যাপশন, কিছু কথা ও লেখা

মন খারাপের স্ট্যাটাস মন খারাপ – এই কষ্টের অনুভূতি কার না হয়? সবারই কখনো না কখনো সবারই মন খারাপ হয়। জীবনের ছোটোখাটো অঘটন থেকে শুরু

Read More »

Leave a Comment

Table of Contents