Dreamy Media BD

   যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় (বাঘা যতীন)

বাঘা যতীন

ষোল শতকের গোড়ার দিকে ওলন্দাজদের এই উপমহাদেশে আগমনের মধ্য দিয়ে ইউরোপীয় ঔপনিবেশিকদের গোড়াপত্তন। পর্যায়ক্রমে আসে ফরাসী, পর্তুগিজ এবং সর্বশেষ ইংরেজরা। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সাথে পলাশীর প্রান্তরে ২৩ জুন ১৭৫৭ সালে বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার নবাব সিরাজউদ্দৌলা যুদ্ধে পরাজিত হয়। ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে সিরাজুদ্দৌলাকে পরাজিত ও হত্যার মাধ্যমে এই অঞ্চলের স্বাধীনতার সূর্যকে অস্তমিত করে ইংরেজরা। নবাব সিরাজউদ্দৌলার শাসন পতনের পর মসনদে বেশ কয়জন নবাবআসলেও তারা মূলত ইংরেজদের ইশারাতেই চলত। বাংলা পরাধীন হওয়ার পর ধীরে ধীরে পুরা ভারতবর্ষ ব্রিটিশদের কাছে পরাধীনতা বরণ করে। উপমহাদেশ শাসনের মসনদে আসে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। বাণিজ্য করতে এসে শেষমেশ ঔপনিবেশিকরা শাসকে পরিনত হয়। এই সাম্রাজ্যবাদী শক্তি দীর্ঘ ১৯০ এদেশে শাসন ও শোষণ করেন। কোটি কোটি টাকার অর্থ ও মূল্যমান সম্পদ ইংল্যান্ডে পাচার করে। এই দেশ থেকে লুটকৃত অর্থের সাহায্যে সেই সময়ে ইংল্যান্ডে শিল্প বিপ্লব ঘটে। আর লুন্ঠনের ফলে এককালের প্রাচ্যের স্বর্গ সোনার বাংলা পরিণত হয় শ্মশান বাংলায়। সমৃধ্য দেশ পরিণত হয় দরিদ্রতম দেশে। উপমহাদেশ পরাধীন হবার রাজনৈতিক প্রভাব ছিল সুদূরপ্রসারী। পলাশী যুদ্ধের নৃসংস ও কলঙ্কজনক ঘটনার মাধ্যমে কলকাতা কেন্দ্রিক একটি নতুন উঠতি পুঁজিপতি শ্রেনী ও রাজনৈতিক শক্তির উদ্ভব ঘটে। ইংরেজ এবং তাদের এ দেশীয় দালাল ও স্বর্থরক্ষাকারী গোষ্ঠী দেশবাসীর উপর একের পর এক আগ্রাসন চালাতে থাকে। ফলে এ দেশীয় কৃষ্ঠি ও সামাজিক জীবনে ব্যাপক বিপর্যয় নেমে আসে। সমাজের প্রতিটা ক্ষেত্রেই শ্রেণী বিভেদ নানান রকম ভাবে ফুটে উথতে থাকে। ফলে শত শত বছর ধরে চলে আসা এই উপমহাদেশের মানুষের সোহার্দ ও সম্প্রীতিতে ছেদ পড়তে থাকে। এদেশের খেটে খাওয়া প্রজারা যুগের পর যুগ শুধু উৎপাদনের হাতিয়ার হিসাবেই ব্যাবহার হয়ে গেছে। বিনিময়ে তাদের জীবনে রয়েগেছে আজীবনের জন্যে দারিদ্র। আঠারোশো শতাব্দীতে ইংল্যান্ডে শিল্প বিপ্লবের ফলে বস্ত্রশিল্পে অভূতপুর্ব উন্নতি সাধন করে। ফলে বিপুল নীলের চাহিদা তৈরি হয়, এবং এর চাষের ভাড়পরে এ দেশিয় কৃষকদের উপর। লাভজনক এই চাষাবাদের সুবিধা কৃষক না পেলেও লাভবান হয়েছে ইংরেজ ও তাদের সহযোগী গন।

আরো পড়ুন….জিউস

 

বাঘা যতীন এর সময়কাল

ব্রিটিশদের এই অত্যাচার, অনাচার, জুলুমে সারা ভারতবর্ষ জুড়ে দানা বাধতে থাকে ক্ষোভের। ধীরে ধীরে মানুষের দমবন্ধ আর্তনাদ বিষ্পোরণ ঘটতে থাকে। প্রতিবাদ, প্রতিরোধ থেকে স্বাধীন হবার বাসনা চেপে বসে পূরা ভারতবর্ষের মানুষের ভেতর। ধারাবাহিক আন্দোলন রুপনেয় স্বাধীনতা আন্দোলনে। ১৭৫৭ সালে ব্রিটিশদের হাতে যেই স্বাধীনতা চলে গিয়েছিল, ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ বিতাড়নের মাধ্যমে ঔপনিবেসিক মুক্ত হয় এই ভূখণ্ড। ভারতবর্ষে স্বাধীনতা আন্দলোন নরমপন্থা ও চরমপন্থা এই দুইটি বিপরীত ধারায়ই সম্পন্ন হয়েছিলো। সর্বোস্তরের মানুষের মিলিত আন্দোলনের ফলে ব্রিটিশ রাজ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে ভারত বিভাগের মাধ্যমে ভারত এবং পাকিস্তান নামে দুইটি দেশের সৃষ্টি হয়। ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল ব্যাপক বিস্তৃত, একত্রীভূত বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক অভিযান যা অহিংস ও বৈপ্লবিক উভয় দর্শনের প্রচেষ্টায় এবং ভারতীয় রাজনৈতক সংগঠনের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করেছিল। এই সমস্ত খন্ড আন্দোলনের মাধ্যমে ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ ঔপনিবেশ ও অন্যান্য ঔপনিবেশ সমাপ্ত হয়। সপ্তদশ শতকের মধ্য ও শেষের দিকে প্রথম ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দ্বারা উত্তর ভারতে ঔপনিবেশিক বিস্তারের প্রতিরোধ আন্দোলন হয়েছিল। মাহারাষ্ট্রে প্রথম সশস্ত্র বিদ্রহের আগুন জ্বালান  বসুদেব বলবন্ত ফাড়কে। অষ্টাদশ শতকের শেষের দিকে ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের মাধ্যমে ব্যাপক আন্দোলন পরিচালিত হয়েছিল। এই আন্দোলনটা প্রার্থনা, আবেদন, নিবেদনের মাধ্যমে অনেকটা মধ্যপন্থা অবলম্বন করেছিল। তবে বিভিন্ন প্রদেশে ঘটে যাওয়া প্রাদেশিক বিদ্রোহ ও আন্দোলন ব্রিটিশ সাম্রাজ্য পতনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। সেই সব বিদ্রহোগুলো ব্রিটিশ সরকার নিয়ন্ত্রণ করতেও পেরেছিল, কিন্তু সাম্রাজ্য পতনে আন্দোলন সেই গুলোর ভুমিকা অনেক বেশী ছিল। সন্ন্যাসী বিদ্রোহ, নৃ-তাত্তিক বিদ্রোহ, সাঁওতাল বিদ্রোহ, তিতুমীরের বিদ্রোহ, দক্ষিণ ভারতের ভীরাপান্ডা কাট্রাবমান বিদ্রোহ, কর্ণাটকের রানী চেন্নামার কিটটুর বিদ্রোহ, সৌরাষ্ট্রে কচ্ছ বিদ্রোহ সহ আরো কিছু ছোট ছোট বিদ্রোহ তাদের ভিতরে অন্যতম। আর ব্রিটিশ রাজের বিরুদ্ধে সব থেকে বড় যে বিদ্রোহটা সংগঠিত হয় সেটি হল সিপাহি বিদ্রোহ। ১৮৫৭ সালে সংগঠিত হওয়া বিদ্রোহটি মূলত ভারতীয় সৈন্য এবং তাদের ব্রিটিশ অফিসারের মধ্যে সাংস্কৃতিক পার্থক্যের ফল। মঙ্গল পাণ্ডের নেতৃত্বে ব্যারাকপুরে শুরু হওয়া বিদ্রোহটি মিরাট, দিল্লী, ভারতের অন্যান্য অংশে এবং সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। ব্রিটিশ প্রশাসন সর্বশক্তি দিয়ে এবং তাদের এ দেশীয় অনুগতদের নিয়ে বিদ্রোহটা দমন করে।

বাঘা যতীন

ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের জন্যে  পুরা ভারতবর্ষে নেতৃত্ব প্রদানের জন্যে যে কয়জনার নাম প্রথম সারিতে আসে তাদের মধ্যের অন্যতম হলো যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বা বাঘা যতীন। ব্রিটিশ বিরোধী সশস্ত্র আন্দোলনে তিনি অত্যন্ত গুরুতবপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি বাংলার প্রধান বিপ্লবী সংগঠন যুগান্তর দলের সামনের সারি থেকে নেতৃত্ব দেন। যুগান্তর দল ছিল ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের একটি গুপ্ত বিপ্লবী সংগঠন। চরম পন্থার মাধ্যমে ব্রিটিশদের কাছথেকে দেশের স্বাধীনতা অর্জন করাই ছিল এই সংগঠনের প্রধান লক্ষ্য। অনুশীলন সমিতির সাথে মতভেদের কারণে ১৯০৬ সালে ‘যুগান্তর’ এর জন্ম হয়। এই দলের প্রধান অন্যতম একটি আন্দোলন হল হিন্দু-জার্মান ষড়যন্ত্র বা ঘাদার ষড়যন্ত্র বলে পরিচিত। বাঘা যতীনের যুগান্তর দলের রেখে যাওয়া দর্ষণের উপর ভিত্তি করে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু জাপানিজদের সহযোগিতায় পূন প্রতিষ্ঠা করেন ‘আজাদ হিন্দ’। যেটি উপমহাদেশ থেকে ব্রিটিশ বিতাড়নে সামনের সাড়ীতে থেকে কাজ করেছে। বাঘা যতীন উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন আধিপত্ত বাদীদের থেকে দেশকে মুক্ত করতে হলে সশস্ত্র সংগ্রামই এক মাত্র পথ। সারা ভারতবর্ষ জুড়ে ব্রিটিশ আধিপত্ত বাদীরা এবং তাদের এদেশীয় তাবেদার যে অনুশাসন কায়েম করেছিল দীর্ঘদিন ধরে তার থেকে মানুষের মুক্তির একমাত্র পথই হল সশস্ত্র সংগ্রামের পথ। যতীন প্রথম ১৯০৩ সালে শ্রী আরবিন্দের ঘোষের সাথে কলকাতাতে পরিচয়ের পর থেকে তার কাছথেকে বিল্পবী কর্মকান্ডের ব্যাপারে দিক্ষা লাভ করেন এবং পরবর্তীতে সশস্ত্র সংগ্রামে নিজেকে জরিয়ে ফেলে। আরবিন্দের ঘোষের সংস্পর্শে এসে বাঘা যতীন নিজেকে  সশস্ত্র সংগ্রামের জন্যে শারীরিক ও মানুষিক ভাবে প্রস্তুত করতে থেকে। যার ফল স্বরূপ শরীর গঠন, আখড়ায় গাছে চড়া, সাঁতার কাটা ও বন্দুক ছোঁড়ার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। গেরিলা হামলা, গুপ্ত হত্যা, বোমাবর্ষণ ইত্যাদি ছিল বাঘা যতীনের বিপ্লবের ধরণ। গান্ধীজির অহিংস আন্দোলনের সাথে যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় প্রমুখের এসব সহিংস আন্দোলনের ঐক্য না ঘটলে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য থেকে মুক্তি পাওয়া আমাদের জন্যে আরো সময়সাপেক্ষ হয়ে যেত। প্রথম বিশ্ব যুদ্ধ শুরু হলে বাঘা যতীন ব্রিটিশদের বীরুধে সশস্ত্র গেড়িলা লড়াইয়ের জন্যে প্রস্তুত হয়ে গেলেন। তিনি সর্বভারতীয় বৈপ্লবিক সংগঠন গুলোর সাথে গোপনে চুক্তিবদ্ধ হয়ে জাপান ও জার্মানি থেকে অস্ত্রাদি আমদানি করে সশস্ত্র বিপ্লবের পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ‘মেভারিক’ নামক জার্মান জাহাজে অস্র এনে, সেটা দিয়ে বালেশ্বরে রেললাইন দখল করে ইংরেজদের যাতায়াত পথ অবরোধ করবেন। বাঘা যতীন চারজন সহযোদ্ধাকে নিয়ে বলেশ্বরের কাছে কোপাতপোদা গ্রামে চলে গেলেন অস্ত্রের চালান গ্রহণ করবার জন্যে। সন্ন্যাসী সেজে আশ্রম গড়ে অপেক্ষা করতে লাগলেন জার্মান জাহাজ কবে পৌঁছাবে তার জন্যে। কিন্তু সেই জাহাজ আর ভারতবর্ষে পৌঁছাইতে পারেনাই। বিপ্লবীদের প্রতীক্ষা ব্যার্থ হল। ব্রিটিশ গোয়েন্দাদের হাতে ধড়াপরে গেল জাহাজের চালান। বাঘা যতীন কোন রকম হতাশ হলেন না। তিনি আবার অস্ত্র আমদানি করবার পরিকল্পনা করেন। দ্বিতীয়বারেও অস্ত্র পৌছালনা, বিপ্লবীরা পথে ব্রিটিশ গোয়েন্দা ও এ দেশীয় দালালের হাতে ধরা পড়ে গেলো। শুরু হল পুলিশের তল্লাশি। তারা জানতে পারল যে, বিপ্লবিদের একটি দল বলেস্বরে লুকিয়ে আছে। সাথে সাথে পুলিশ কমিশনার টের্গাট বিপ্লবীদের ধরতে বলেস্বরে রওনা দিলেন। সেখানে তারা একটি সংকেতি চিঠি পেলেন পেলেন। ওখানে বলা আছে ‘রামানন্দ স্বামী যেন তার শিয্যদের নিয়ে এখনই তীর্থভ্রমনে চলে যান। এখানে অনেক আশ্রম বাসী হয়েছে’। সেই সূত্র ধরে বিপ্লবীদের কাছে পুলিশ চলে গেল। বিপ্লবীদের কাছে এই দুঃসংবাদটা গ্রামবাসীদের কাছথেকে শুনতে পেলেন। বাঘা যতীন তার কিশোর সহযোদ্ধাদের তার কাছ থেকে সরে যেতে বললেন। কিন্তু তার সহযোদ্ধারা চিত্তপ্রিয়, মনোরঞ্জন, নীরেন ও জ্যোতিষ তার কাছ থেকে চলে গেলেন না। তারা একসাথে যেই অস্ত্র আর গোলাবারুদ আছে তাই নিয়ে পুলিশের সাথে যুদ্ধ করতে চাইলেন। যুদ্ধে দরকার হলে এক সাথেই পরিণতি বরণ করে নিবেন। বাঘা যতীন তাদের সাহস দেখে অবাক হলেন। এক সাথে তারা সীমিত সামর্থ আর প্রচণ্ড মনোবল নিয়ে ১৯১৫ সালের ৯ই সেপ্টেম্বর বুড়িবালাম নদীর ধারে চাষখন্ড নামক একটি জায়গায় অসংখ্য পুলিশ বাহিনীর বিরুদ্ধে শুরু করলেন যুদ্ধ। বিপ্লবীরা একসাথে গুলি ফায়ার করতে লাগলেন যাতে পুলিশ বুঝতে পারে অনেক বিপ্লবী আছে। শেষ অব্দি বিপ্লবীদের কাছে থাকা গুলি ফুরিয়ে যায়। গুলিলেগে চিত্তপ্রিয় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। বাঘা যতীনের গায়েও গুলি লাগে, কিন্তু সে প্রকৃত বীরের মতই শেষ পর্যন্ত লড়েযান। মৃত্যু পথযাত্রী চিত্তপ্রিয়কে একটু জল মুখে দেবার জন্যে বাঘা যতীন রক্তমাখা গায়ের শার্ট উচিয়ে আত্মসমর্পন করেন। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের সম্মুখ যুদ্ধে চিত্তপ্রিয় হল প্রথম কিশোর শহিদ। বাঘা যতীনকে আটক করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেইদিনই তিনি মৃত্যু বরণ করেন। বকি দুই সঙ্গীকে মৃত্যু দণ্ড দেয়াহয় আর এক সঙ্গীকে অত্যাচার করে মেরে ফেলা হয়। ব্রিটিশ সরকার অনেক চেষ্টা করছিলো বাঘা যতীন যেন মৃত্যু বরণ না করেন। তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যু দণ্ড দেবার ইচ্ছাছিলো ব্রিটিশ সরকারের। কিন্তু সে সেই সুযোগটা আর দিলেন না দখলদার দের। বাঘা যতীন মৃত্যুর আগে হাসপাতালের বেডে শুয়ে বললেন ‘ এত রক্ত ছিল শরীরে? ভাগ্যক্রমে, প্রতিটি বিন্দু অর্পন করে গেলাম দেশ মাতার চরণে’। বাঘা যতীন হল প্রকৃতই এক বীর যে দেশের জন্যে উজাড় করে সবটুকু বিলিয়ে গেছেন। বিদ্রহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম এই বীরের জন্যে অন্তরের শ্রদ্ধা নিবেদন করেছিলেন প্রশস্তি রচনা করে;“ বাঙ্গালীর  রন দেখে যারে তোরা রাজপুত, শিখ মারাঠী জাত বালাশোর, বুড়ি-বালামের তীরনব ভারতের হলদিঘাট”।

বাঘা যতীন

যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যেয় ৭ ডিসেম্বর ১৮৭৯ সালে তৎকালীন অবিভক্ত বাংলার কুষ্টিয়া জেলার কয়া গ্রামে জন্মগহন করেন। কয়াতে ছিল তার নানার বাড়ি। তার পিতার নাম ছিল উমেশচন্দ্র মুখ্যেপাধ্যায় এবং মাতার নাম শরৎশশী। ঝিনাইদাহ জেলায় পৈতৃক বাড়িতে তার ছেলে বেলা কাটে। পাঁচ বছর বয়সে পিতাকে হারিয়ে তার মা আর বড় বোন বিনোদবালার সাথে মাতামহের বাড়ি কয়াতে অবস্থান হয়। সেখানেই সে বেড়ে উঠতে থাকে। যতীন ছোট বেলা থেকেই শারীরিক শক্তির জন্যে বিখ্যাত ছিলেন। শুধুমাত্র একটি মাত্র ছোর নিয়ে তিনি একাই একটি বাঘকে হত্যা করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তার পর থেকেই তার নাম রটে যায় বাঘা যতীন নামে। তার মা চিলেন একজন স্বভাব কবি। ছোট বেলা থেকে যতীন মুখ্যেপাধ্যায় তার মায়ের কাছথেকে নৈতিক ভাবে একজন পুরুষ হিসেবে গড়ে উঠবার শিক্ষা লাভ করেন। বাঘা যতীনের গ্রাম কয়া থেকে শিলাইদাহের দূরত্ব খুব বেশী ছিল না। কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন শিলাইদাহের জমিদার। তিনি মাঝে মধ্যেই কয়াগ্রামে আসতেন। ওখানে ‘নবজাগরণ’ নামের একটি সভা বসত। মুলত সেই সভাতে যোগ দেবার  জন্যে কবি গুরু কয়াগ্রামে যেতেন। এই ‘নবজাগরণ’ সভা আর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপস্থিতি বাঘা যতীনের জীবনে বিশেষ প্রভাব ফেলে। তিনি হয়ে উঠেন বিপ্লবী এক কিংবদন্তি।

Related Post

মৃত্যু নিয়ে উক্তি

150+মৃত্যু নিয়ে উক্তি, বাণী, ক্যাপশন 2024

মৃত্যু নিয়ে উক্তি জন্মিলে মরিতে হবে আর এটাই সত্যি। মৃত্যু হচ্ছে সবচেয়ে চিরন্তন সত্যি। পৃথিবীতে প্রতিটি প্রাণীর মৃত্যুর স্বাদ অনুভব করতে হবে। সবসময় মৃত্যুর জন্য

Read More »
খুশির স্ট্যাটাস

200+ স্টাইলিশ খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন

খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন জীবনের সুন্দর খুশির মুহূর্ত আমরা সবাই বাঁধাই করে রাখতে চাই। আর এই খুশির মুহূর্তকে ধরে রাখার সবচেয়ে সহজ উপায়

Read More »

স্টাইলিশ ভালোবাসার ছন্দ | রোমান্টিক ছন্দ | Love Status Bangla

❤❤ভালোবাসার ছন্দ | ভালোবাসার ছন্দ রোমান্টিক | ভালোবাসার ছন্দ স্ট্যাটাস❤❤ ভালোবাসা হলো এক অন্যরকম অনুভূতির নাম, যা শুধুমাত্র কাউকে ভালবাসলেই অনুভব করা যায়। আমরা বিভিন্নভাবে

Read More »
মন খারাপের স্ট্যাটাস

মন খারাপের স্ট্যাটাস, উক্তি, ছন্দ, ক্যাপশন, কিছু কথা ও লেখা

মন খারাপের স্ট্যাটাস মন খারাপ – এই কষ্টের অনুভূতি কার না হয়? সবারই কখনো না কখনো সবারই মন খারাপ হয়। জীবনের ছোটোখাটো অঘটন থেকে শুরু

Read More »

Leave a Comment

Table of Contents