Dreamy Media BD

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র | Ruppur Nuclear Power Plant

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ( Ruppur Nuclear Power Plant), বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ মেগা প্রকল্প।  ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু হলে পারমাণবিক  বিদ্যুতের এলিট ক্লাবে প্রবেশ করবে বাংলাদেশ।  আজকের এই লেখায় আমরা জানবো এই প্রকল্পের আদ্যোপান্ত।

রূপপুর প্রকল্পের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

বাংলাদেশের এই প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইতিহাস অনেক পুরোনো।  সর্বপ্রথম, পাকিস্তানের সময়ে ১৯৬১ সালে একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল।  ষাটের দশকেই ,পাবনা জেলার ঈশ্বরদী থানার পদ্মা নদী তীরবর্তী রূপপুর-কে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্থান হিশেবে নির্বাচন করা হয় এবং  প্রকল্পের জন্য ২৬০ একর এবং আবাসিক এলাকার জন্য ৩২ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। কিন্তু, ১৯৭০ সালে প্রকল্পটি বাতিল করে দে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার।  স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আবার এই প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেন। ১৯৭৭ সালে আবার ফিজিবিলিটি স্টাডি করে একনেকে ১২৫ মেগাওয়াট পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়।  প্রকল্প অনুমোদন হলেও নানা জটিলতায় তা আর বাস্তবায়ন হয়নি।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র | The Third Pole
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র | The Third Pole
  • ১৯৮৭/৮৮: জার্মানী ও সুইজারল্যান্ডের দুটি কোম্পানি কর্তৃক দ্বিতীয়বার ফিজিবিলিটি স্টাডি করা হয়।
  • ১৯৯৭ থেকে ২০০০: বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের তৎকালীন চেয়ারম্যান ড. এম.এ ওয়াজেদ মিয়া কর্তৃক পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় এবং সরকার কতৃক অনুমোদন।
  • ২০০৮:  আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের অঙ্গীকার
  • ২০০৯ থেকে ২০১৫:  ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে অপরিহার্য কার্যাবলী সম্পাদন’ ,  বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন এবং রাশান ফেডারেশনের স্টেট এ্যটমিক এনার্জি কর্পোরেশন (রোসাটোম)-এর মধ্যে ‘সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর,  Framework Agreement স্বাক্ষরিত, Bangladesh Atomic Energy Regulatory Act-2012 পাশ ও  perating Organization প্রতিষ্ঠা ও ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির বিধান সম্বলিত পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র আইন, ২০১৫ জারী করা হয়।
  • ২০১৬: INIR follow-up mission পরিচালনা করা হয়,  রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের Site Licence প্রদান করা হয় , আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার মহাপরিচালককের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন ও সন্তোষ প্রকাশ

আরও পড়ুনঃ কম্পিউটারঃ এক যাদুর বাক্সের পরিচিতি

পারমাণবিক বিদ্যুৎ জগতে বাংলাদেশের প্রবেশ | Bangladesh nuclear power plant

৩০ নভেম্বর ২০১৭ মাননীয় প্রধান মন্ত্রী  শেখ হাসিনা, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১ নং ইউনিটের প্রথম কংক্রিট ঢালাই উদ্বোধন করেন। ২০২১ সালের ১০ অক্টোবর এবং ২০২২ সালের ১৮ অক্টোবর, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যথাক্রমে এই কেন্দ্রের প্রথম ও দ্বিতীয় ইউনিটের পারমাণবিক চুল্লিপাত্র বা রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল স্থাপনের কাজ উদ্বোধন করেন।

২০২৩: কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থায়  প্রথম ইউনিটের ‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়ামের প্রথম ও দ্বিতীয় চালান রাজধানী ঢাকা থেকে সফলভাবে ঈশ্বরদীর রূপপুরে প্রেয়ন।

পৃথিবী ব্যাপী পারমাণবিক বিদ্যুৎ

রাশিয়ার প্রত্যক্ষ আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতায় বাংলাদেশ তার প্রথম পরমাণু শক্তিচালিত বিদ্যুৎ কেদ্রটি চালু করতে যাচ্ছে।  পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ১৯৫৪ সালে রাশিয়ার Obninsk শহরে চালু করা হয়। বর্তমানে পৃথিবীর মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রায় ১০% পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি থেকে উৎপাদন হয়।

২০২২ সালের হিসাবে, ৩২টি দেশে ৪৪০টি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে চালু আছে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধন

২০২৪ সালের মার্চে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদুৎ উৎপাদন শুরু করার কথা রয়েছে। দ্বিতীয় ইউনিটেও ২০২৫ সালের মাঝামাঝি সমপরিমাণ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু আশা করা হচ্ছে।

পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র কিভাবে কাজ করে

পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র কিভাবে কাজ করে তা জানার আছে আমাদের এর সমদ্ধে কিছু ধারণা নেওয়া দরকার।

পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র কি

পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র হল এমন একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র যেখানে পারমাণবিক বিভাজনের মাধ্যমে তাপশক্তি উৎপন্ন করা হয় এবং সেই তাপশক্তি দিয়ে টারবাইন ঘুরিয়ে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা হয়। পারমাণবিক বিভাজন হল এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে ভারী নিউক্লিয়াসকে হালকা নিউক্লিয়াসে বিভক্ত করা হয়, যার ফলে প্রচুর পরিমাণে শক্তি নির্গত হয়। বেশিভারভাগ ক্ষেত্রে ভারী জ্বালানি হিসাবে ইউরোনিয়াম ব্যবহার করা করা।

 

পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাঠামো

একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাঠামোগুলির ধারণা ছাড়া এটি কিভাবে কাজ করে বোঝা সম্ভব নয়।

রিঅ্যাক্টর: রিঅ্যাক্টর হল সেই অংশ যেখানে পারমাণবিক বিভাজন ঘটে। রিঅ্যাক্টরে একটি নিউক্লিয়ার জ্বালানি, যেমন ইউরেনিয়াম বা থোরিয়াম ব্যবহার করা হয় , আমাদের রূপপুরে ইউরোনিয়াম ব্যবহার করা হবে।

 কুলিং সিস্টেম: কুলিং সিস্টেম রিঅ্যাক্টরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। কুলিং সিস্টেমে সাধারণত জল, বাষ্প, বা তরল সোডিয়াম থাকে।

 টারবাইন: টারবাইন হল সেই অংশ যেখানে তাপশক্তি বিদ্যুতে রূপান্তরিত হয়। টারবাইনে পানি বা বাষ্প প্রবাহিত হয়, যা টারবাইনকে ঘোরায়।

 জেনারেটর: জেনারেটর হল সেই অংশ যেখানে টারবাইনের ঘূর্ণনশক্তি বিদ্যুতে রূপান্তরিত হয়।

বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রক্রিয়া

প্রথম রিয়েক্টরে কৃত্রিম পরিবেশে ইউরোনিয়ামের বা থেরিয়ামের নিয়ন্ত্রিত  বিভাজন শুরু হবে, যাকে চেইন রিয়্যাকশন বলে।

বড় পরমাণুর নিউক্লিয়াস ভেঙে হালকা নিউক্লিয়াসে পরিনিত হয় এর সাথে প্রচুর তাপশক্তি উপাদান হয়।  এরপর কুলিং সিস্টেম পানি, বাষ্প বা  তরল সোডিয়ামের দ্বারা রিয়াক্টরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। বিভাজনে উৎপন্ন তাপ দিয়ে পানি বা বাষ্প গরম হয়ে টারবাইনের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়।  টারবাইনের আরেক প্রান্তে থাকে জেনারেটর,  যা ইলেক্ট্রো ম্যাগনেটিক প্রক্রিয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করে।

Chernobyl Disaster 1986 | HistoryExtra
Chernobyl Disaster 1986 | HistoryExtra

পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বিপর্যয়

পারমাণবিক বিদুৎকেদ্রগুলি কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে, তা পৃথিবী প্রত্যক্ষ করেছে কিছু পারমাণবিক বিপর্যয়ের কারণে , তার মধ্যে চেরনোবিল এবং ফুকুশিমা দাইচি দুর্ঘটনা অন্যতম।

চেরনাবিল পারমাণবিক বিপর্যয়

১৯৮৬ সালের ২৬ এপ্রিল সোভিয়েত ইউনিয়নের চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনাটি মানব ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ পারমাণবিক দুর্ঘটনা হিসাবে বিবেচিত হয়। এই দুর্ঘটনার ফলে তেজস্ক্রিয়তা ইউরোপ জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে এবং কয়েক হাজার মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়।

চেরনোবিল দুর্ঘটনার কারণ ছিল ত্রুটিপূর্ণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং কর্মীদের নিরাপত্তা ইস্যু গুলো  অবহেলা করা। দুর্ঘটনার দিন,চেরনোবিল বিদুৎ কেন্দ্রের চতুর্থ চুল্লিটি একটি রুটিন চেকাপ করা হচ্ছিলো। নিরাপত্তা সিস্টেম চালু করে এই কাজ করার কথা থাকলেও কর্মীরা তা না করেই নিরীক্ষণ করছিলো। একসময় হটাৎ, চুল্লিটির চেইন বিক্রিয়া অনিয়ন্ত্রিত হয়ে ওঠে এবং নিরাপত্তা সিস্টেম বন্ধ থাকায় একসময় বিস্ফোরণ ঘটে।

বিস্ফোরণের ফলে তেজস্ক্রিয় পদার্থ বায়ুমণ্ডলে ছড়িয়ে পরে এবং ইউরোপের বেশিরভাগ অংশে ছড়িয়ে যায়। যে তেজস্ক্রিয়তা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ।

চেরনোবিল দুর্ঘটনার ফলে প্রায় ৪ হাজার মানুষ সরাসরি নিহত হন এবং এছাড়াও, লক্ষ লক্ষ মানুষ তেজস্ক্রিয়তার শিকার হন। এখন পর্যন্ত দুর্ঘটনার এলাকা পরিত্যাক্ত ও অনেক মানুষে এখন তেজস্ক্রিয়তার ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছে।

জাপানের ফুকুশিমা পারমাণবিক বিপর্যয়

২০১১ সালের ১১ মার্চ জাপানের ফুকুশিমা দাইচি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে, ভূমিকম্প এবং সুনামি আঘাত করে। এরফলে চেরনোবিল দুর্ঘটনার পরে সবচেয়ে গুরুতর পারমাণবিক দুর্ঘটনার সম্মূখীন হয়ে পৃথিবী। এই দুর্ঘটনার ফলে তেজস্ক্রিয়তা জাপান জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে এবং কয়েক হাজার মানুষকে অনত্র স্থানান্তরিত করতে হয়।

ফুকুশিমা দাইচি দুর্ঘটনার কারণ ছিল ভূমিকম্প এবং সুনামি। ভূমিকম্পের ফলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় এবং সুনামির ফলে নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

ফুকুশিমা দাইচি দুর্ঘটনার ফলে প্রায় ১০০ জন মানুষ মারা যায় এবং  লক্ষ লক্ষ মানুষ তেজস্ক্রিয়তায় অরণ্য হয়।

নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা

বিভিন্ন সময়ের পারমাণবিক দুর্ঘটনা ও বাংলাদেশের ঘনবসতি বিবেচনা করে পৃথিবীর সর্বাধুনিক পারমাণবিক চুল্লি নিরাপত্তা বেবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।  রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মিত হচ্ছে ভিভিইআর-১২০০ টাইপ রিঅ্যাক্টর প্রযুক্তিতে। এই প্রযুক্তিটির পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে, যা নিম্নরূপ:

Nuclear Power Plant Safety Systems: পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা
Nuclear Power Plant Safety Systems: পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা

১. ফুয়েল প্লেট

ফুয়েল প্লেট গুলো অতি উচ্চ তাপমাত্রায়ও তার কার্যক্ষমতা বজায় রাখতে পারে। ফুয়েল পেলেট উন্নত বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরী করা হয়, ফলে দুর্ঘটনা ঘটলেও তেজস্ক্রি ফিশন প্রোডাক্টসমূহ পেলেটের ভেতরে আটকা পড়বে।

২. ফুয়েল ক্ল্যাডিং

ফুয়েল পেলেটগুলো জিরকোনিয়াম অ্যালয়ের তৈরী ফুয়েল ক্ল্যাডিং দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকবে। বিশেষ কোন কারণে সামান্য পরিমাণ ফিশন প্রোডাক্ট ফুয়েল প্রথম নিরাপত্তা স্তর – প্লেট থেকে বের হয়ে আসলেও তা এই ক্ল্যাডিং এ ভেদ করতে পারবে না।

৩. রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল

নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট এর জন্য বিশেষ প্রক্রিয়ায় অত্যন্ত সতর্কতার সাথে পুরু ইস্পাতের প্রেসার ভেসেল তৈরি করা হয়। এই প্রেসার ভেসেল, উচ্চ তেজস্ক্রিয় অবস্থায় দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং নিরাপদ রাখে।

৪. প্রথম কনটেইনমেন্ট বিল্ডিং

রিইনফোর্সড কংক্রিট দিয়ে ১.২ মিটার পুরুত্বের প্রথম কনটেইনমেন্ট বিল্ডিং তৈরি , যা যেকোন পরিস্থিতিতে তেজস্ক্রিয়তা পরিবেশে ছড়িয়ে পড়া থেকে রক্ষা করবে।

৫. দ্বিতীয় কনটেইনমেন্ট বিল্ডিং

নিরাপত্তা ব্যবস্থা অধিকতর জোরদার করার জন্য আধুনিক নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট গুলোতে প্রথম কন্টেইনমেন্ট বিল্ডিং এর উপরে দ্বিতীয় কন্টেইনমেন্ট বিল্ডিং তৈরী করা হয়। দ্বিতীয় কনটেইনমেন্ট বিল্ডিংটি প্রথম কন্টেইনমেন্ট বিল্ডিং এর চেয়েও বেশি শক্তিশালী এবং তেজস্ক্রিয়তা পরিবেশে ছড়িয়ে পড়া থেকে প্রতিরোধে আরও বেশি কার্যকর।

এই পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ফলে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি মনুষ্য-সৃষ্ট কোন দুর্ঘটনা বা প্রাকৃতিক বিপর্যয় যেমন- শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়, ভূমিকম্প, বন্যা ইত্যাদি পরিস্থিতি নিরাপদ রাখবে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান

রূপপুর পারমাণবিক বিদুৎ কেন্দ্র সমন্ধে কিছু তথ্য যা বিভিন্ন পরীক্ষায় সাধারণ জ্ঞান হিসাবে আসতে পারে।

 

বিষয় তথ্য
ক্ষমতা ২,৪০০ মেগাওয়াট (২টি ইউনিট, প্রতিটি ১,২০০ মেগাওয়াট)
প্রস্তাবনা ১৯৬১ সালে নির্মাণের প্রথম উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
অবস্থান রূপপুর, ঈশ্বরদী, পাবনা, বাংলাদেশ
পরিচালক বাংলাদেশ পারমাণবিক বিদ্যুৎ কোম্পানি লিমিটেড
চুল্লির ধরন  ভিভিইআর-১২০০, জেনারেশন III+
নির্মাণ খরচ প্রায় ১২.৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার
অর্থায়ন উৎস মূলত রাশিয়ার অর্থায়নে
নির্মাণ শুরু ২ নভেম্বর, ২০১৭
প্রথম কংক্রিট ঢালাই ৩০ নভেম্বর, ২০১৭
লাইসেন্স ইস্যু ১৫ মার্চ, ২০১৭
উৎপাদন শুরু ইউনিট ১: ২০২৩ (প্রত্যাশিত)

ইউনিট ২: ২০২৪ (প্রত্যাশিত)

নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা মান পূরণ করে
জ্বালানি সরবরাহ রাশিয়ার সাথে জ্বালানী সরবরাহ চুক্তি হয়েছে
আইএইএ  আইএইএ তত্ত্বাবধান ও সহযোগিতায় বাস্তবায়ন হচ্ছে 
ব্যবহৃত জ্বালানি ব্যবস্থাপনা জ্বালানীর উৎপন্ন পারমাণবিক বর্জ্য ফেরত দেওয়ার জন্য রাশিয়ার সাথে চুক্তি হয়েছে 
পরিবেশগত প্রভাব পরিবেশগত প্রভাব বিবেচনা করে তৈরি 
বিদ্যুৎ গ্রিড সংযোগ জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিডে সংযুক্ত করা হবে 
উদ্দেশ্য জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরতা হ্রাস করার লক্ষ্য

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র – প্রশ্ন উত্তর |Ruppur power plant location – FAQ

ইন্টারনেটে রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্র সম্পর্কিত কিছু বহুল আলোচিত প্রশ্নের সংক্ষিপ্ত উত্তর:

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র কত মেগাওয়াট | Ruppur Nuclear Power Plant capacity

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি দুইটি ভিভিইআর-১২০০ টাইপ চুল্লি নিয়ে গঠিত, যার প্রতিটিটির ক্ষমতা ১,২০০ মেগাওয়াট। সুতরাং, এই কেন্দ্রটির মোট ক্ষমতা ২,৪০০ মেগাওয়াট।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাজেট

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মোট ব্যয় ছিল ১,১৩,৯২৯ কোটি টাকা , প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলার। এই ব্যয়ের মধ্যে ৯০% অর্থ ঋণ হিসেবে রাশিয়া থেকে নেওয়া হয়েছে। বাকি ১০% অর্থ বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় করা হয়েছে।

প্রথম দিকে, প্রকল্পের মোট ব্যয় ১,০০,০০০ কোটি টাকা ধরা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে, প্রকল্পের পরিধি বাড়ার কারণে ব্যয় বেড়ে যায়। ২০২৩ সালের হিসাবে, প্রকল্পের মোট ব্যয় ১,১৩,৯২৯ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।

বাংলাদেশের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র কোথায় অবস্থিত | Ruppur Nuclear Power Plant Location

বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র দেশের উত্তর-পশ্চিমে, পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার অন্তর্গত পাকশী ইউনিয়নের রূপপুর গ্রামে অবস্থিত। এই কেন্দ্রটি পদ্মা নদীর উপরে নির্মিত হার্ডিঞ্জ ব্রীজ ও লালন শাহ সেতুর পাশেই নদীতীরে অবস্থিত।

পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি কি

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি হল ইউরেনিয়াম। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানী রাশিয়া থেকে সরবরাহ করা হবে। এই জ্বালানীটি বাংলাদেশ পারমাণবিক বিদ্যুৎ কোম্পানি লিমিটেড (বিপিপিসি) দ্বারা পরিচালিত হবে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র সহায়তাকারী দেশ

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে সহায়তাকারী দেশ হল রাশিয়া। রাশিয়া এই প্রকল্পে অর্থ ও প্রযুক্তি সরবরাহ করছে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র কোন জেলায়

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাংলাদেশের পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার অন্তর্গত পাকশী ইউনিয়নের রূপপুর গ্রামে অবস্থিত।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ওয়েবসাইট |  Rooppur nuclear power plant website

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ওয়েবসাইট হল www.rooppurnpp.gov.bd । এই ওয়েবসাইটে কেন্দ্রটির সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে, আরও লেখা পড়ুনঃ

Related Post

মৃত্যু নিয়ে উক্তি

150+মৃত্যু নিয়ে উক্তি, বাণী, ক্যাপশন 2024

মৃত্যু নিয়ে উক্তি জন্মিলে মরিতে হবে আর এটাই সত্যি। মৃত্যু হচ্ছে সবচেয়ে চিরন্তন সত্যি। পৃথিবীতে প্রতিটি প্রাণীর মৃত্যুর স্বাদ অনুভব করতে হবে। সবসময় মৃত্যুর জন্য

Read More »
খুশির স্ট্যাটাস

200+ স্টাইলিশ খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন

খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন জীবনের সুন্দর খুশির মুহূর্ত আমরা সবাই বাঁধাই করে রাখতে চাই। আর এই খুশির মুহূর্তকে ধরে রাখার সবচেয়ে সহজ উপায়

Read More »

স্টাইলিশ ভালোবাসার ছন্দ | রোমান্টিক ছন্দ | Love Status Bangla

❤❤ভালোবাসার ছন্দ | ভালোবাসার ছন্দ রোমান্টিক | ভালোবাসার ছন্দ স্ট্যাটাস❤❤ ভালোবাসা হলো এক অন্যরকম অনুভূতির নাম, যা শুধুমাত্র কাউকে ভালবাসলেই অনুভব করা যায়। আমরা বিভিন্নভাবে

Read More »
মন খারাপের স্ট্যাটাস

মন খারাপের স্ট্যাটাস, উক্তি, ছন্দ, ক্যাপশন, কিছু কথা ও লেখা

মন খারাপের স্ট্যাটাস মন খারাপ – এই কষ্টের অনুভূতি কার না হয়? সবারই কখনো না কখনো সবারই মন খারাপ হয়। জীবনের ছোটোখাটো অঘটন থেকে শুরু

Read More »

Leave a Comment

Table of Contents