আমরা বসবাস করছি এক ডিজিটাল দুনিয়ায়। আমাদের দৈনন্দিন প্রতিটা কাজের সাথে যুক্ত হয়ে গেছে ডিজিটাল গেজেট ও ইন্টারনেট। ডিজিটাল দুনিয়ায় তথ্য এখন উন্মুক্ত আর মানুষ হয়ে গেছে সমৃদ্ধ। মনে করি, আমরা একটা নতুন ফোন কিনবো। তার জন্য বেশিরভাগ মানুষই যা করি তা হল, প্রথমে গুগলে গিয়ে ফোনের নামে সার্চ দেই। তার দাম, ফিচার, মডেল ও বিস্তারিত তথ্য নেই। পাশাপাশি বাজেটের মধ্যে আরো অন্যান্য ফোন দেখি।
শুধু কি কেনাকাটা?
পড়তে গিয়ে বুঝতে পারছি না! সার্চ দাও গুগলে।
অফিসে রিপোর্ট তৈরিতে তথ্য দরকার? সার্চ দাও গুগলে।
কোথাও ঘুরতে যাবেন, কিভাবে ঘুরতে যাবেন কম কম খরচে? সার্চ দাও গুগলে।
এভাবে আমাদের জীবনে বিভিন্ন কাজে আমরা সার্চ ইঞ্জিন (বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গুগল) ব্যবহার করছি।
আচ্ছা, এই সার্চ ইঞ্জিন কিভাবে চোখের পলকে আলাউদ্দিনের জিনের মত সব তথ্য নিমিষেই হাজির করে?
আর এই সার্চ কি?
আপনি জানেন, একটা বাংলা ভাষায় একটি সার্চ ইঞ্জিন আছে?
ডার্ক ওয়েব এর টর ব্রাউজার কি?
এমনি সব প্রশ্নের উত্তর ও অনেক নতুন জিনিস জানবো আজকে আমরা। আরও জানবো, সার্চ ইঞ্জিন দিয়ে কিভাবে ঘরে বসে আয় করা যায়, সেজন্য অবশ্যই আর্টিকেল টা শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে l
সার্চ ইঞ্জিন কি?
সার্চ ইঞ্জিন কে অনেক কঠিন ভাষায় বিস্তারিতভাবে সংজ্ঞায়িত করা যায় কিন্তু সবচেয়ে সোজা ভাষায় সহজ ভাবে বলতে গেলে: সার্চ ইঞ্জিন হলো একটা ওয়েব ভিত্তিক টুল যার সাহায্যে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব (www) এর সাহায্য যে কোন ওয়েবসাইট হতে প্রয়োজনীয় তথ্য খুঁজে আনা যায়।
এর জন্য ওয়েবসাইট এর পূর্ণ ঠিকানা url বা লিংক এর প্রয়োজন নাই। বিশেষ শব্দ লিখে সার্চ দিলেই সার্চ ইঞ্জিন ইন্টারনেটের দুনিয়ার লক্ষ লক্ষ ওয়েবসাইট থেকে ওই শব্দের সাথে সম্পর্কযুক্ত একটি লিস্ট প্রদান করে।
সেখান থেকে প্রয়োজনীয় ওয়েবসাইট এ প্রবেশ করে আমরা তথ্য সংগ্রহ করি। আর বর্তমান দুনিয়ায় গুগল হল সবচাইতে জনপ্রিয় ও বেশি ব্যবহৃত সার্চ ইঞ্জিন। আর গুগল বাদেও ফায়ারফক্স, অপেরা মিনি, ইউসি ব্রাউজার ও বিং পরিচিত ও অনেকেই ব্যবহার করে থাকে।
প্রথম সার্চ ইঞ্জিন ও সার্চ ইঞ্জিনের জনক
সবচেয়ে অবাক করা তথ্য হলো, সার্চ ইঞ্জিন বলতে গুগলকে বুঝালেও, প্রথম সার্চ দিন কিন্তু গুগল নয়। আর প্রযুক্তি দুনিয়ায় প্রায় সব কিছুরই জনক আমেরিকান হলেও প্রথম সার্চ ইঞ্জিনটি কিন্তু আমেরিকার কেউ তৈরি করেননি। অপেক্ষা করতে হবে না,এখনই আপনাদের বলেই দেই:
১৯৯০ সালে কানাডার মন্ট্রিল শহরের ম্যাকগ্রিল ইউনিভার্সিটির ছাত্র এলান এমটেজ ‘Archie’ নামে প্রথম সার্চ ইঞ্জিনটি তৈরি করেন। একথা সত্য যে বর্তমান যুগের সার্চ ইঞ্জিনের মত এটি অতটা কার্যকারী ও ফিচারস সমৃদ্ধ ছিল না। তবুও এলানকেই সার্চ ইঞ্জিনের জনক হিসেবে গণ্য করা হয়।
সার্চ ইঞ্জিন কত প্রকার ও কি কি?
মানুষের বিভিন্ন কাজে ও প্রয়োজনে এখন পর্যন্ত অনেক প্রকারের সার্চ ইঞ্জিন আবিষ্কার হয়ে গেছে। তাই নির্দিষ্ট করে কত প্রকার বলা উপায় নাই। তবুও সার্বিকভাবে একে তিন ভাগে ভাগ করা যায়:
১. জেনারেল পারপাস সার্চ ইঞ্জিনঃ যেগুলি সাধারণ ও দৈনন্দিন কাজে ব্যবহৃত হয়। যেমন, গুগল বা ফায়ারফক্স।
২.বিশেষায়িত সার্চ ইঞ্জিনঃ যেমন, Ecosia এটি এমনভাবে ডিজাইন করা যেন পরিবেশের উপর প্রভাব না ফেলে (কেননা সার্চ ইঞ্জিন চালাতে অনেক বড় বড় সার্ভার রান করতে হয় এর জন্য প্রচুর বিদ্যুৎ খরচ হয় এবং সার্ভারগুলো অনেক তাপ উৎপাদন করে)
৩. মেটা সার্চ ইঞ্জিনঃ এই ধরনের সার্চ ইঞ্জিন গুলো আপনার সার্চ কে একাধিক সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে এক জায়গায় রেজাল্ট দেখায়। যেমন, DuckDuckGo সার্চ ইঞ্জিন।
সার্চ ইঞ্জিন কিভাবে কাজ করে?
আমরা কোন কিছু জানার প্রয়োজন হলেই গুগলে কোন কিছু লিখে সার্চ দেই। এবং কিছুক্ষণের মধ্যে গুগল শত শত তথ্য নিয়ে হাজির হয়। কিন্তু সবকিছু এত দ্রুত ঘটলেও পিছনে অনেকগুলো ধাপ পেরিয়ে তথ্যগুলি আমাদের সামনে আসে। পুরো প্রক্রিয়া বুঝতে পেরে আপনাদের প্রোগ্রামিং, কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং, প্রোটোকল , ডাটাবেজ সম্বন্ধে জ্ঞান থাকা প্রয়োজন।
এসব বাদে সরলভাবে বলতে গেলে, সার্চ ইঞ্জিন গুলো সার্চ এলগরিদম ব্যবহার করে এই কাজ করে। এসইও (আর্টিকেলের শেষে বিস্তারিত আলোচনা আছে) কৌশল অবলম্বন করা হয়, এখানেই সার্চ ইঞ্জিন সিদ্ধান্ত নেয়, আপনার খোঁজ খোজকৃত শব্দের ভিত্তিতে কোন কোন ওয়েবসাইট আগে ও পরে শো করবে। এখানে ক্রলিং -> ইনডেক্সিং -> পেজ রাঙ্কিং এই ধাপগুলি গুলো সম্পাদিত হয় এবং সার্চ রেজাল্ট দেখানো হয়।
সার্চ ইঞ্জিন এর ব্যবহার
এই ডিজিটাল দুনিয়ায় খুব কম মানুষই আছে যারা সার্চ ইঞ্জিনের নাম শুনিনি ও সার্চ ইঞ্জিনের ব্যবহার জানে না। শিক্ষা ,গবেষণা, কেনাকাটা, খোঁজাখুঁজি, ব্যবসা, বিজ্ঞাপন, বিনোদন, বাসের টিকেট, ট্রেনের টিকিট, খবর পড়া, এমন হাজারো কাজে আমরা প্রতিদিন সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করে থাকি।
শুধু তাই নয় ফেসবুকে পোস্ট কি দেব ক্যাপশন দেব, কিভাবে মেইল লিখব, নানা কাজে আমারা ইউজ কর। এবং সার্চ ইঞ্জিনের অনেক টুলস ও দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করি। যেমন, কারেন্সি কনভার্টার, বয়স ক্যালকুলেটর, বডি ম্যাচ ইনডেক্স বের করা ইত্যাদি শত শত কাজে আপনার সার্চ ইঞ্জিনের দ্বারস্থ হই।
সার্চ ইঞ্জিন কিভাবে আয় করে?
কখনো খেয়াল করেছেন, পৃথিবীর বেশিরভাগ সার্চ ইঞ্জিন গুলোই ফ্রি। কখনো এমন হয়নি যে, সার্চ করার জন্য আপনাকে টাকা দিতে হয়েছে।
এত অত তথ্য সেবা আমরা পেয়ে থাকি,জা সম্পূর্ণ ফ্রি। তাহলে গুগল কিভাবে পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী কোম্পানিগুলোর একটি?
(যদিও গুগলের কিছু পেইড টুলস আছে কিন্তু সেগুলো কতজনই বা ব্যবহার করে) তবু তারা এত টাকা পায় কোথা থেকে?
ইংরেজিতে একটা প্রবাদ আছে, “when you’re not paying for the product then you’re the product” যার সরল বাংলা এমন, যদি কোন পণ্য বা সেবার আপনি বিনামূল্যে পান, তাহলে আপনিই পণ্য।
হ্যাঁ, গুগলে (যে কোন সার্চ ইঞ্জিনে) যে আমরা এই শত শত তথ্য অনুসন্ধান করি, আমাদের এই খোজার বিনিময়ে গুগল অর্থ ইনকাম করে।
এই অর্থ প্রদান করে বড় বড় বিজনেসে ফার্ম গুলি। যেমন, অপ্পো মোবাইল চায় আপনি মোবাইল নামে সার্চ দিলে তাদের ওয়েবসাইটে আগে দেখাক, এর জন্য তারা গুগলকে টাকা দিয়ে থাকে।
এছাড়াও আমাদের শত শত তথ্য তাদের হাতে থাকে এই তথ্যগুলি ওরা চরম মূল্যে সরকার ও বড় বড় কোম্পানির কাছে বিক্রি করে থাকে। ডিজিটাল এই দুনিয়ায় ডেটা হল স্বর্ণের থেকেও দামী। আর সেটা দিয়েই সার্চ ইঞ্জিনগুলো বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার আয় করে।
গুগল সার্চ ইঞ্জিন
টয়লেট ক্লিনার মানেই হারপিক, সার্চ ইঞ্জিন মানেই গুগল। ঠিক তাই, বাজারে এদের অনেক প্রতিদ্বন্দ্বী থাকলেও, এরা নিজেদের সার্ভিসের সমর্থক শব্দ হিসেবে দাড় করিয়েছে। হবেই না বা কেন সারা পৃথিবীর অনলাইন সার্চিং এর ৯২ শতাংশই গুগলের মাধ্যমে হয়ে থাকে।
প্রথম সার্চ ইঞ্জিন ১৯৯০ সালে তৈরি হলেও গুগল সার্চ ইঞ্জিন তৈরি হয় ১৯৯৮ সালে। আমেরিকার স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এর দুই মেধাবী শিক্ষার্থী লেরি পেজ ও সারগেই ব্রিন এর মাধ্যমে।
প্রথমে এর নাম ছিল BackRub। বাজারে আসার খুব দ্রুত এটি নিজেকে সার্চ ইঞ্জিন জগতে অপ্রতিদ্বন্দ্বী করে তুলে।
প্রতিষ্ঠাতা: গুগল পরবর্তীতে তাদের আরও সার্ভিস Gmail, গুগল ম্যাপ, গুগল ড্রাইভ, ইউটিউব ইত্যাদি নিয়ে অ্যালফাবেট নামে এক কোম্পানি গঠন করে, যায় সিইও লেরি পেজ ও প্রেসিডেন্ট সরগেই ব্রিন।
কিছু মজার তথ্য:
- প্রতি সেকেন্ডে গুগলের ৪০ হাজারের বেশি তথ্য সার্চ করা হয়।
- চ্যাট জিপিটি এর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে গুগল বার্ড নামে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন টুলস এনেছে।
- শুরুর দিকে গুগলকে ইয়াহু এর কাছে বিক্রি করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল কিন্তু তারা না করে দেয়, এর ভবিষ্যৎ নাই ভেবে।
- পৃথিবীব্যাপী কুকুরের এক লক্ষ কর্মী আছে।
- গুগল তৈরি করা হয় পিএইচডি গবেষণার জন্য পরবর্তীতে বিজনেস এর ধারণা আসে।
- Google এসেছে ইংরেজি শব্দ googol থেকে (1এর পর 100 টা শূন্য দিলে যে সংখ্যা পাওয়া যায় তাকে googol বলে)।
বাংলা সার্চ ইঞ্জিন
Statista এর তথ্য অনুসারে পৃথিবীতে প্রায় ৬২৯ টি একটিভ সার্চ ইঞ্জিন আছে। তার মধ্যে বাংলাদেশের পিপীলিকা একটি (সর্বশেষ তথ্য অনুসারে ২০২১ সালে পিপীলিকা বন্ধ হয়ে গেছে)। শাহজালাল বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর কিছু থিসিস শিক্ষার্থী ২০১৩ সালে তৈরি করেন। যা পরবর্তীতে সরকার দ্বারা বিনিয়োগ প্রাপ্ত হয়েছিল। শুরুর দিকে এটা জনপ্রিয়তা পেলেওআস্তে আস্তে ব্যাবহারকারি কমে যায়, এবং করোনাকালীন সময়ে বন্ধ হয়ে যায়।
দশটি জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন
শত শত সার্চ ইঞ্জিন থাকলেও এর মার্কেট শেয়ারের ৯৯.৪৭% দখল করে আছে প্রথম পাঁচটি কোম্পানি।
১.গুগলঃ প্রথমেই আছে সার্চ ইঞ্জিন মার্কেট মাফিয়া গুগল। তাদের মার্কেট শেয়ার ৯২.১২%। আর কেন তারা এত জনপ্রিয় সেটা বলার দরকার নাই সকলেই জানেন।
২.বিংঃ দ্বিতীয়ত আছে বিল গেস্টের মাইক্রোসফট এর বিং এটি ২০০৯ সালে যাত্রা শুরু করে। বর্তমান মার্কেট শেয়ার ২.৫২%।
৩. ইয়াহু! সার্চ: গুগলের আগে সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটে গডফাদার ছিল ইয়াহু। বর্তমানে এর মার্কেট শেয়ার ১.৬৭%।
৪.DuckDuckGo: যারা প্রাইভেসি নিয়ে বিশেষ সতর্ক তাদের কাছে ব্যাপক আয় জনপ্রিয় এটি। এটা ইউজার কোন প্রকার তথ্য ট্রাক করে না। এর বর্তমান মার্কেট শেয়ার ০.৬০%।
৫.Yandex: বেশিরভাগ মানুষকে নাম না শুনলেও রাশিয়ার তৈরি এই ব্রাউজার রাশিয়ায় ব্যাপক জনপ্রিয়। এরপর তোমার মার্কেট শেয়ার 0.৪৯% যার প্রায় সবাই রাশিয়ান ইউজার।
৬.বাইদু: রাশিয়ার মতো চীনেরও নিজের সার্চ ইঞ্জিন আছে যেটা চায়নায় ব্যাপক জনপ্রিয়। মার্কেট শেয়ার ০.৩৫%।
৭.Naver: চায়না-রাশিয়ার মতো বিটিএস-এর দেশ দক্ষিণ কোরিয়াও নিজেদের সার্চ ইঞ্জিন তৈরি করেছে এবং তা তাদের দেশে ব্যাপক জনপ্রিয়। তাদের মার্কেট শেয়ার ০.২৮%।
৮.AOL: এটিও একটি সার্চ ইঞ্জিন, মার্কেট শেয়ার ০.২২%।
৯.Ecosia: এ সম্বন্ধে আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি এর আর একটা চমকপ্রদূত তথ্য হলো, এতে প্রতিটা সার্চের বিনিময় তারা একটি করে গাছ রোপন করে। এদের মার্কেট শেয়ার, ০.১২%।
(ভাবছি এদের মার্কেট শেয়ার গুগল এর সমান হলে, পৃথিবীতে কাজ লাগানোর জায়গা পাওয়া যেত না।)
১০.ASK: প্রশ্ন উত্তরের জন্য বিশেষভাবে তৈরি সার্চ ইঞ্জিন। এরপর বর্তমান মার্কেট শেয়ার, ০.০৯%
এই দশটি সার্চ ইঞ্জিনের সম্মিলিত মার্কেট শেয়ার 99.47%, বাকি 0.53% সেঞ্জাম, সোগুও, বাইদু বাইক, Mojeek এর মত কিছু সার্চ ইঞ্জিন পেয়ে থাকে।
টর ব্রাউজার ও ডার্ক ওয়েব
DuckDuckGo এর মতই টর ব্রাউজার ইউজার প্রাইভেসিকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে। টর ব্রাউজার কখনো ইউজারের ডাটা সংগ্রহ করে না। তাই ইউজার কে ট্রাক করাও সম্ভব হয় না। ডার্ক ওয়েবে ইলিগ্যাল কাজের জন্য এ ব্রাউজার অনেক জনপ্রিয়।
আর তার কারন হলো, ডার্ক ওয়েবকে ইন্টারনেট জগতের সেই মহাসমুদ্র বলা হয়ে থাকে। আমরা ইন্টারনেটে শুধু ১০% দেখতে পাই বাকি ৯০% আছে ডার্ক ওয়েবে। নামের মতই ডার্ক ওয়েব অন্ধকার জগতের জন্য বিখ্যাত এহেন অবরোধ কর্ম নাই এখানে হয় না অস্ত্র কেনাবেচা, মানব অঙ্গ কেনাবেচা, এমনকি কিলার পর্যন্ত ভাড়া পাওয়া যায়। ব্যবহারকারী টর ব্রাউজার ব্যবহার করে বলে, কেউ কাউকে ট্রাক করতে পারে না, তাই নিরাপত্তা বাহিনী অসহায়।যদিও ডার্ক ওয়েব ও টর ব্রাউজার নিয়ে অনেক টেকনোলজিক্যাল মিথ ব্যাপক জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়াতে।
ডার্ক ওয়েবে লেনদেনের জন্য প্রধানত ক্রিপ্টোকারেন্সি গুলি ব্যবহার করা হয় তার মধ্যে অন্যতম বিটকয়েন। আমাদের সাইটে বিটকয়েন ও ডার্ক ওয়েব নিয়ে এই লেখা দুইটি পড়ে আসতে পারেন।
কিভাবে সার্চ ইঞ্জিনের সাহায্য আয় করতে পারেন?
সার্চ ইঞ্জিনের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আপনি আয় করতে পারেন।
গুগল এডসেন্সঃ গুগল এডসেন্স এর জন্য আপনি নিজের একটি ওয়েবসাইট খুলতে হবে ওয়েবসাইটটিতে কিছু আর্টিকেল লিখে তাতে গুগলের এডসেন্স আবেদন করতে হবে। গুগল আপনার এডসেন্স অনুমোদন করলে। পরবর্তীতে কেউ আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিট করলে তারা বিজ্ঞাপন দেখতে পারবে, সেখান থেকে গুগলের বিজ্ঞাপনের আয়ের একটা অংশ আপনি পাবেন।
এফিলেট মার্কেটিংঃ এর জন্য আপনাকে নিজস্ব ওয়েবসাইট প্রয়োজন। এমাজন বা দারাজ এর মত বিভিন্ন ওয়েব সাইট থেকে আপনাকে পণ্যের এফিলেট লিংক নিতে হবে। তারপর, ওয়েবসাইটে পোস্ট লিখে পণ্যকে প্রমোট করতে হবে। সেই পণ্য কেউ কিনলে, সেখান থেকে আপনি আয় করতে পারবেন।
সার্চ করে আয়ঃ কিছু কিছু ওয়েবসাইট আছে যেখানে সার্চ করলে পয়েন্ট সংগ্রহ বা ক্রেডিট জমা হয়, পরে সেই ক্রেডিট ভেঙ্গে এমাজন বা অন্যান্য বিখ্যাত ই-কমার্স সাইট থেকে পণ্য নেওয়া যায় অথবা ডলারের রূপান্তর করা যায়। এই ধরনের সার্চ ইঞ্জিন হল: Swagbucks, Presearch, Bing, ও Yippy।
পরোক্ষভাবে আয় হয়, পিপিসি প্রক্রিয়ায় যা নিচে বর্ণনা করা হয়েছে।
সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং কি
আপনার পণ্য না সার্ভিসকে গুগল বা অন্য সার্চ ইঞ্জিনের সার্চের প্রথম পেজে আনতে দুইটি পদ্ধতি ব্যাবহার করতে পারেন। একটা পিপিসি আর দ্বিতীয়টি এসইও আর উভয় প্রক্রিয়াকেই একত্রে সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং বলা হয়।
পে-পার-ক্লিক (পিপিসি) কি?
আপনি হয়তো খেয়াল করে থাকবেন গুগলে বা যে কোন সার্চ ইঞ্জিনিয়ার কোন বিষয় নিয়ে সার্চ দেওয়ার পর যে ইনটেক্স পেজ আসে তার প্রথম দুই তিনটি সার্চ রেজাল্ট এর সাইডে অ্যাড/সপ্সরড লেখা থাকে। অর্থাৎ সেগুলো টাকার বিনিময়ে প্রথম পেজে শো করানো হচ্ছে। এসব ওয়েবসাইট টাকা দিয়ে তাদের পেজ সার্চ ইঞ্জিনের প্রথমে নিয়ে আসে,এবং পে-পার-ক্লিক অনুসারে সার্চ ইঞ্জিনকে অর্থ প্রদান করে থাকে।
এতে আপনার কি লাভ?
এর ফলে আপনার ওয়েবসাইট এ ভিজিটর বারবে ও আপনার পণ্য বা সার্ভিস বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে , ফলে পরোক্ষভাবে আপনি লাভবান হবেন।
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও কি?
আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি যে সার্চ ইঞ্জিনে কোন কিছু সার্চ দিলে, সেটা একটা এলগরিদম অনুসরণ করে পেজ ইনডেক্সিং কে সহ একাধিক বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে আমাদের ফলাফল দেখানো হয়। যদিও বেশিরভাগ সার্চ ইঞ্জিন তাদের অ্যালগরিদম প্রকাশ করেনা, তবুও এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞগন কিছু কৌশল বর্ণনা করেছেন। যা অনুসরণ করার মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইট কে আপনি গুগল বা যেকোন সার্চ ইঞ্জিনের সার্চ রেজাল্টের প্রথম পেজে নিয়ে আসতে পারেন। আর এইসব কৌশলের সমষ্টিই হল এসইও।
এসইও দুই প্রকারের হয়ঃ
অন পেজ এসিও: ডেভেলপার রা করে থাকে।
ওফ পেজ এসইও: আর্টিকেল লেখার সময় করতে হয়।
এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ ফ্রি, তার জন্য সার্চ ইঞ্জিনকে কোন টাকা দিতে হয় না।
সাথেই আমাদের সার্চ ইঞ্জিন বিষয়ক দীর্ঘ আর্টিকেল সমাপ্ত হলো। অভিনন্দন আপনাকে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য। এ জাতীয় আরো বিজ্ঞান-প্রযুক্তি জগতের উপর বাংলায় আর্টিকেল পড়তে চাইলে নিয়মিত চোখ রাখুন আমাদের সাইটে। ধন্যবাদ।
আরো পড়ুন –