Dreamy Media BD

সৌরজগৎ এর পরিচিতি ও আদ্যোপান্ত

সৌরজগৎ, চেনা পটভূমির এক অজানা রহস্যময় স্থান। পৃথিবীর শুরু থেকেই মানুষ একে দেখে আসতেছে, নিজেদের মত বৈজ্ঞানিক অবৈজ্ঞানিক ভাবে ব্যাখ্যা দিয়েছে। বিজ্ঞানের নতুন প্রযুক্তির কল্যাণে আজকে আমরা সৌরজগতের অনেক কিছুরেই ব্যাখ্যা পেয়েছি। কিন্তু বিশাল এই সৌরজগতের এখনও অনেক অজানা রহস্য জানার বাকি। আজকের এই লেখাটি সাজানো হয়েছে, সৌরজগৎ নিয়ে ।

সৌরজগৎ (sourojogot) কি? 

সৌরজগৎ হল সূর্য এবং সূর্যের অভিকর্ষজ টানে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রদক্ষিণকারী  মহাজাগতিক বস্তু সমূহের নিয়ে গড়া একটি মহাজাগতিক ব্যবস্থা। আকাশগঙ্গা ছায়াপথের কেন্দ্রস্থল থেকে ২৬, ০০০ আলোকবর্ষ দূরে কালপুরুষ বাহুতে আমাদের এই সৌরজগৎ অবস্থিত। আমাদের সৌরজগত মিল্কিওয়ে ছায়াপথে অবস্থিত, যা একটি স্পাইরাল ছায়াপথ। মিল্কিওয়ে ছায়াপথের ব্যাস প্রায় ১০০,০০০ আলোকবর্ষ।

আমাদের সৌরজগতের কেন্দ্রে রয়েছে সূর্য, যা একটি নক্ষত্র এবং সূর্যের চারপাশে আছে আটটি গ্রহ : বুধ, শুক্র, পৃথিবী, মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস ও নেপচুন। এই গ্রহগুলির প্রত্যেকটির সূর্যের চারপাশে উপবৃত্তাকার নিজস্ব কক্ষপথ রয়েছে।

আমাদের সৌরজগতে রয়েছে অসংখ্য উপগ্রহ, যা গ্রহগুলির চারপাশে ঘোরে। পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ হল, চাঁদ। সব চাইতে বেশি, বৃহস্পতির ৭৯টি উপগ্রহ রয়েছে।

সৌরজগতের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল:

  • সূর্য হল সৌরজগতের কেন্দ্র এবং এর ভর প্রায় সৌরজগতের মোট ভরের ৯৯.৮%।
  • গ্রহগুলো সূর্যের চারপাশে উপবৃত্তাকার কক্ষপথে ঘোরে।
  • বৃহস্পতি এবং শনি হল সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহ।
  • পৃথিবী হল সৌরজগতের একমাত্র গ্রহ যেখানে জীবনের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।

সৌরজগতের গঠন ও বিবর্তন নিয়ে বিজ্ঞানীরা এখনও গবেষণা করছেন। তারা বিশ্বাস করেন যে আমাদের সৌরজগত প্রায় ৪.৫ বিলিয়ন বছর আগে একটি বিশাল ধূমকেতু বা গ্রহাণুর আঘাতের ফলে গঠিত হয়েছিল। 

সৌরজগৎ এর চিত্র

সৌরজগৎ এর চিত্র
সৌরজগৎ এর চিত্র

সৌরজগৎ কাকে বলে | solar system bangla

সৌরজগৎ কাকে বলে class 6

 প্রাচীন গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টারকাস প্রায় ৩০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে সূর্যকেন্দ্রিক ব্রহ্মাণ্ড-বিন্যাসের কথা চিন্তা করেছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন যে পৃথিবী এবং অন্যান্য গ্রহগুলি সূর্যের চারদিকে ঘোরে। তবে, অ্যারিস্টারকাসের তত্ত্বটি তার সময়ে গ্রহণ করা হয়নি।

১৫শ শতাব্দীতে, নিকোলাস কোপারনিকাস আবারও সূর্যকেন্দ্রিক ব্রহ্মাণ্ড-বিন্যাসের কথা প্রস্তাব করেন এবং তিনি তার তত্ত্বের একটি গাণিতিক প্রমাণ উপস্থাপন করেন, যা জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং বিজ্ঞানীদের দ্বারা ব্যাপকভাবে গ্রহণ করা হয়।

উপরের আলোচনা থেকে আমারা ইতিমধ্যে সৌরজগৎ এর ধারণা পেয়েছি, এখন এর কিছু সংজ্ঞা দেখে নেইঃ 

সৌরজগৎ হল একটি বিশাল এবং বৈচিত্র্যময় স্থান, যা সূর্যের অগ্নিশিখা থেকে কুইপার বেল্টের তুষার রাজ্য পর্যন্ত বিস্তৃত।

অথবা, 

সৌরজগৎ একটি গতিশীল এবং ক্রমাগত পরিবর্তনশীল মহাজাগতিক স্থান।

অথবা, 

সৌরজগৎ হল সূর্য ও একে  প্রদক্ষিণকারী  মহাজাগতিক বস্তুর  সমষ্টি, যার মধ্যে রয়েছে গ্রহ, উপগ্রহ, ধূমকেতু, গ্রহাণু এবং আন্তঃগ্রহীয় মাধ্যমস্থ ধূলিকণা এবং গ্যাস।

সৌরজগৎ কি নিয়ে গঠিত

সৌরজগত চারটি প্রধান উপাদান নিয়ে গঠিত:

Sun |
Sun |সূর্য

১. সূর্য: সৌরজগতের কেন্দ্রে একটি নক্ষত্র। এটি সৌরজগতের মোট ভরের প্রায় ৯৯.৮%। সূর্য হল একটি হাইড্রোজেন এবং হিলিয়ামের বাল্ক, যা নিউক্লিয় ফিউশন দ্বারা শক্তি উৎপন্ন করে।

২. গ্রহ: সূর্যের চারপাশে ঘোরে এমন আটটি বড়, গোলাকার বস্তু। গ্রহগুলিকে দুটি শ্রেণিতে বিভক্ত করা যেতে পারে:

  • স্থলজ গ্রহ: বুধ, শুক্র, পৃথিবী এবং মঙ্গল। এগুলো ছোট, পাথুরে এবং ঘন গ্রহ।
  • গ্যাসীয়  গ্রহ: বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস এবং নেপচুন। এগুলো বড়, গ্যাসীয় এবং কম ঘন।

গ্রহগুলোর ইংরেজি নাম বুধ = মারকারি, শুক্র = ভেনাস, পৃথিবী = আর্থ, মঙ্গল = মার্স, বৃহস্পতি = জুপিটার, শনি = স্যাটার্ন। ইউরেনাস ও নেপচুনের বাংলা নাম নেই।

৩. উপগ্রহ: গ্রহ গুলির চারপাশে ঘোরে এমন ছোট, পাথুরে বস্তু। 

  • গ্রহাণু: ছোট, পাথুরে বস্তু যা সূর্যের চারপাশে ঘোরে। গ্রহাণু বেষ্টনী সূর্য থেকে বাইরের দিকে অবস্থিত।

৪. ধূমকেতু: বরফ এবং ধূলিকণার গোলক যা সূর্যের চারপাশে ঘোরে। ধূমকেতু গুলোর একটি দীর্ঘ, পাতলা লেজ থাকে যা সূর্যের আলোর কারণে সৃষ্ট হয়।

অন্যান্য বস্তু: সৌরজগতের অন্যান্য বস্তু গুলির মধ্যে রয়েছে বামন গ্রহ, ট্রানজিট এক্সোপ্ল্যানেট, এবং আন্তঃগ্রহীয় ধূলিকণা এবং গ্যাস।

সৌরজগত একটি বিশাল এবং জটিল ব্যবস্থা, এটি আমাদের মহাবিশ্বের একটি ছোট অংশ মাত্র।

  • বামন গ্রহ হল একটি গ্রহের মতো বস্তু যা সূর্যের চারপাশে ঘোরে, তবে এর ভর গ্রহের চেয়ে কম।

সৌরজগতের আবিষ্কার ও অভিযান 

Voyager
Voyager

প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ সৌরজগতের গ্রহগুলির অস্তিত্ব সম্পর্কে জানত। তবে, জ্যোতির্বিজ্ঞানের অগ্রগতির সাথে সাথে আমরা সৌরজগত সম্পর্কে আরও বেশি জানতে পেরেছি।

সৌরজগতের আবিষ্কারের প্রথম পদক্ষেপ নিয়েছিল প্রাচীন মিশরীয়, গ্রীক এবং রোমান সভ্যতার বিজ্ঞানীরা। এই সভ্যতাগুলি গ্রহগুলির আপাত গতি এবং অবস্থান পর্যবেক্ষণ করেছিল।

সৌরজগতে অভিযান

  • ১৬শ শতাব্দীতে, গ্যালিলিও প্রথম টেলিস্কোপ ব্যবহার করে গ্রহগুলো পর্যবেক্ষণ করেন। তিনি দেখতে পেলেন যে গ্রহগুলি পৃথিবীর মতোই গোলাকার। তিনি বুধের উপর ছায়া দেখতে পেলেন, যা প্রমাণ করেছিল যে বুধ সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে।
  • ১৭শ শতাব্দীতে, জোহানেস কেপলার গ্রহগুলোর কক্ষপথের সূত্র গুলো আবিষ্কার করেন। এই সূত্রগুলো আমাদের সৌরজগতের গ্রহগুলির গতি এবং অবস্থান সম্পর্কে আরও ভালভাবে বুঝতে সাহায্য করেছে।
  • ১৮শ শতাব্দীর, উইলিয়াম হার্শেল শনি এবং ইউরেনাসের উপগ্রহ গুলি আবিষ্কার করেন। তিনি নেপচুনের অস্তিত্ব পূর্বাভাস দিয়েছিলেন।
  • ১৯শ শতাব্দীর, জোহান গ্যালে শনির বলয় আবিষ্কার করেন।
  • ২০শ শতাব্দীর, জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা সৌরজগতের গ্রহগুলো সম্পর্কে আরও অনেক কিছু জানতে পেরেছিলেন। তারা মঙ্গল গ্রহের উপর পানি এবং বায়ুর অস্তিত্ব আবিষ্কার করেন। তারা নেপচুনের একটি উপগ্রহ, ট্রাইটন, এর উপর একটি পানি-বরফের স্তর আবিষ্কার করেন।
  • ২১শ শতাব্দীতে, জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা সৌরজগতের বাইরেও গ্রহের অস্তিত্ব আবিষ্কার করেছেন।
  • সৌরজগতের অভিযান একটি দীর্ঘ এবং চ্যালেঞ্জিং প্রক্রিয়া। প্রথম সৌরজগতের মহাকাশযান ছিল ভেনাস এটি মঙ্গল গ্রহের দিকে পাঠানো সোভিয়েত মহাকাশযান। ১৯৬৯ সালে, অ্যাপোলো ১১ মিশনে মানুষ প্রথমবারের মতো চাঁদে অবতরণ করে।
  • ১৯৭০-এর দশকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়ন সৌরজগতের অন্যান্য গ্রহগুলোতে মহাকাশযান পাঠায়। এই মহাকাশযান গুলো গ্রহগুলির পৃষ্ঠ, বায়ুমণ্ডল এবং চৌম্বক ক্ষেত্র সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেছে।
  • ১৯৯০-এর দশকে, নাসা মহাকাশে অনেকগুলো মহাকাশযান পাঠিয়ে যা সৌরজগতের বাইরেও গ্রহগুলির অনুসন্ধান করেছিল। এই মহাকাশযান গুলির মধ্যে রয়েছে গ্যালিলিও, ক্যাসিনি-হাইগেন্স এবং স্পেস গ্যালাক্সি।
  • ২০০০-এর দশকে, নাসা আরও অনেক মহাকাশযান পাঠায় যা সৌরজগতের গ্রহগুলি সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানকে আরও সুদৃয় করে। এই মহাকাশযান গুলির মধ্যে রয়েছে ভয়েজার ১ এবং ভয়েজার ২, যা সৌরজগতের বাইরে যাওয়া প্রথম মহাকাশযান।

সৌরজগতের অভিযান এখনও চলছে। বিজ্ঞানীরা সৌরজগতের রহস্য উদঘাটন করার জন্য নতুন মহাকাশযান পাঠাচ্ছে।

সৌরজগতের গ্রহ গুলির সংক্ষিপ্ত পরিচিতি 

আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান ইউনিয়ন (আইএইউ) অনুযায়ী, সৌরজগতের আটটি গ্রহ রয়েছে। এগুলি হলো:

বুধ গ্রহের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি 

বুধ সৌরজগতের ক্ষুদ্রতম এবং সবচেয়ে কাছের গ্রহ। এটি একটি পাথুরে গ্রহ, যার কোনো বায়ুমণ্ডল নেই। বুধের দিনের দৈর্ঘ্য ৫৯ পৃথিবীর দিনের সমান, এবং এর বছরের দৈর্ঘ্য ৮৮ পৃথিবীর দিনের সমান।

শুক্র গ্রহের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি 

শুক্র সৌরজগতের দ্বিতীয় গ্রহ। এটি একটি পাথুরে গ্রহ, যার একটি ঘন বায়ুমণ্ডল রয়েছে। শুক্রের বায়ুমণ্ডল মূলত কার্বন ডাই অক্সাইড দিয়ে তৈরি, যা একটি গ্রিনহাউস গ্যাস। এর ফলে শুক্রের তাপমাত্রা পৃথিবীর চেয়ে অনেক বেশি, প্রায় ৪৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

পৃথিবী গ্রহের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি 

পৃথিবী সৌরজগতের তৃতীয় গ্রহ। এটি একটি জীবন্ত গ্রহ, যার একটি ঘন বায়ুমণ্ডল, সমুদ্র, এবং একটি শক্তিশালী চৌম্বকক্ষেত্র রয়েছে। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল মূলত নাইট্রোজেন এবং অক্সিজেন দিয়ে তৈরি। এর গড় তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

Preparing humans for life on Mars | Astronomy.com
Preparing humans for life on Mars | Astronomy.com

 

মঙ্গল গ্রহের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি 

মঙ্গল সৌরজগতের চতুর্থ গ্রহ। এটি একটি পাথুরে গ্রহ, যার একটি পাতলা বায়ুমণ্ডল রয়েছে। মঙ্গলের বায়ুমণ্ডল মূলত কার্বন ডাই অক্সাইড দিয়ে তৈরি। এর গড় তাপমাত্রা -৬৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

বৃহস্পতি গ্রহের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি 

বৃহস্পতি সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহ। এটি একটি গ্যাসীয় গ্রহ, যার একটি ঘন বায়ুমণ্ডল রয়েছে। বৃহস্পতির বায়ুমণ্ডল মূলত হাইড্রোজেন এবং হিলিয়াম দিয়ে তৈরি। এর গড় তাপমাত্রা -১১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

শনি গ্রহের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি 

শনি সৌরজগতের দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্রহ। এটি একটি গ্যাসীয় গ্রহ, যার একটি ঘন বায়ুমণ্ডল রয়েছে। শনির বায়ুমন্ডল মূলত হাইড্রোজেন এবং হিলিয়াম দিয়ে তৈরি। এর গড় তাপমাত্রা -১৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

ইউরেনাস গ্রহের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি 

ইউরেনাস সৌরজগতের তৃতীয় বৃহত্তম গ্রহ। এটি একটি গ্যাসীয় গ্রহ, যার একটি ঘন বায়ুমণ্ডল রয়েছে। ইউরেনাসের বায়ুমণ্ডল মূলত হাইড্রোজেন এবং হিলিয়াম দিয়ে তৈরি। এর গড় তাপমাত্রা -২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

নেপচুন গ্রহের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি 

নেপচুন সৌরজগতের চতুর্থ বৃহত্তম ও শীতলতম গ্রহ। এটি একটি গ্যাসীয় গ্রহ, যার একটি ঘন বায়ুমণ্ডল রয়েছে। নেপচুনের বায়ুমণ্ডল মূলত হাইড্রোজেন এবং হিলিয়াম দিয়ে তৈরি। এর গড় তাপমাত্রা -২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

প্লুটো গ্রহ নয় কেন? 

আমরা ছোটবেলায় প্লুটো কে নবম গ্রুহ হিসাবে জানতাম। কিন্তু, প্লুটোকে ২০০৬ সালে আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান ইউনিয়ন (আইএইউ) একটি বামন গ্রহ হিসাবে পুনঃ শ্রেণীবদ্ধ করে। 

আইএইউ গ্রহের একটি নতুন সংজ্ঞা প্রণয়ন করে, যাতে তিনটি প্রধান শর্ত রয়েছে:

  • সূর্যের চারপাশে নিজস্ব কক্ষপথে ঘুরতে হবে।
  • নিজের মহাকর্ষের আকর্ষণ দ্বারা গোলাকার আকার ধারণ করতে হবে।
  • গ্রহটিকে তার কক্ষপথের আশেপাশের অঞ্চলে অন্যান্য বস্তুকে আকর্ষণ করতে হবে।

প্লুটো এই তিনটি শর্তের সব গুলো পূরণ করতে বার্থ হয়। প্লুটোর কক্ষপথ নেপচুনের কক্ষপথের সাথে মিলিত হয়, এবং এটি কুইপার বেল্টে অবস্থিত, যেখানে অন্যান্য ছোট গ্রহাণু এবং বস্তু রয়েছে। প্লুটোর আকার এবং ভরও একটি কারণ হিসেবে কাজ করে। 

প্লুটো একটি ছোট গ্রহ, যার ব্যাস মাত্র ২,৩৭৭ কিলোমিটার। এটি পৃথিবীর ব্যাসের প্রায় এক-ষষ্ঠাংশ। প্লুটোর ভর পৃথিবীর ভরের মাত্র ৫%।

সৌরজগৎ প্রশ্ন ও উত্তর | FQA Solar System  

সৌরজগতের তৃতীয় বৃহত্তম গ্রহ কোনটি

ইউরেনাস তৃতীয় বৃহত্তম গ্রহ। ইউরেনাসের ব্যাস প্রায় ৫১,১১৮ কিলোমিটার, যা পৃথিবীর ব্যাসের প্রায় ৪ গুণ। ইউরেনাসের ভর প্রায় ৮৬.৮১ ট্রিলিয়ন টন, যা পৃথিবীর ভরের প্রায় ১৪ গুণ।ইউরেনাস সূর্য থেকে সপ্তম গ্রহ, এবং এটি প্রায় ৮৪ বছরের মধ্যে সূর্যের চারপাশে একবার ঘোরে।

সৌরজগতের শীতলতম গ্রহ কোনটি

সৌরজগতের শীতলতম গ্রহ হল নেপচুন। এর গড় তাপমাত্রা মাইনাস ২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। নেপচুন সূর্য থেকে সবচেয়ে দূরে অবস্থিত গ্রহ, তাই এটি সূর্য থেকে খুব কম পরিমাণে তাপ পায়। এছাড়াও, নেপচুনের বায়ুমণ্ডল খুবই ঘন, যা তাপের বিকিরণকে আটকে দেয়।

নেপচুনের মেরু অঞ্চলের তাপমাত্রা আরও কম, মাইনাস ২১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত।

সৌরজগতের অন্যান্য গ্রহগুলির তাপমাত্রা নিম্নরূপ:

গ্রহ গড় তাপমাত্রা (ডিগ্রি সেলসিয়াস)
বুধ ১৬৭
শুক্র ৪৬৪
পৃথিবী ১৫
মঙ্গল -৬৩
বৃহস্পতি -১১০
শনি -১৮০

সৌরজগতের উষ্ণতম গ্রহ কোনটি

সৌরজগতের উষ্ণতম গ্রহ হল শুক্র। শুক্রের গড় তাপমাত্রা ৪৬২° সেলসিয়াস (৮৬৩° ফারেনহাইট)। শুক্রের বায়ুমণ্ডল পৃথিবীর চেয়ে ৯২ গুণ বেশি ঘন, যা গ্রিনহাউস প্রভাবের ফলে তাপ ধরে রাখার সুবিধা দেয়। 

আবার, শুক্রের বায়ুমণ্ডলের প্রধান উপাদান হল কার্বন ডাই অক্সাইড, যা সূর্য থেকে আসা তাপকে আটকে রাখে। 

সৌরজগতের উপগ্রহ কয়টি

২০২৩ সালের ১৪ই অক্টোবর পর্যন্ত, সৌরজগতের মোট ২৪০টি প্রাকৃতিক উপগ্রহের সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১৬২টি উপগ্রহ গ্রহকে কেন্দ্র করে ঘুরছে, ৪ টি উপগ্রহ ঘূর্ণায়মান আছে বামন গ্রহ-কে কেন্দ্র করে এবং অন্যগুলো ক্ষুদ্র সৌর জাগতিক বস্তু-কে কেন্দ্র করে ঘূর্ণায়মান আছে।

সূর্য থেকে গ্রহের দূরত্ব

 সূর্য থেকে গ্রহের দূরত্বকে জ্যোতির্বিদ্যা একক (AU) দ্বারা পরিমাপ করা হয়। ১ AU হল সূর্য থেকে পৃথিবীর গড় দূরত্ব, যা প্রায় ১৪৯.৬ মিলিয়ন কিলোমিটার।  

সূর্য থেকে গ্রহগুলির দূরত্ব নিম্নরূপ: 

  • বুধ 0.387 AU
  • শুক্র 0.723 AU 
  • পৃথিবী 1.000  AU
  • মঙ্গল 1.524 AU
  • বৃহস্পতি 5.203 AU
  •  শনি 9.546  AU
  • ইউরেনাস 19.218 AU
  • নেপচুন 30.069 AU

পৃথিবীর উপগ্রহ কয়টি

পৃথিবীর একটিমাত্র প্রাকৃতিক উপগ্রহ রয়েছে, যার নাম চাঁদ। চাঁদ পৃথিবীর চারপাশে প্রায় এক মাসের প্রদক্ষিণ করে। চাঁদ পৃথিবীর আকারের প্রায় এক-চতুর্থাংশ এবং এটি পৃথিবীর ভরের প্রায় এক-ষষ্ঠাংশ। চাঁদ পৃথিবীর মহাকর্ষ আকর্ষণের কারণে পৃথিবীর চারপাশে ঘোরে।

গ্রহ কয়টি ও কি কি

বা, সূর্যকে কেন্দ্র করে কয়টি গ্রহ ঘুরছে

বা, সৌরজগতের কয়টি গ্রহ আছে

সৌরজগতে আটটি গ্রহ রয়েছে। এগুলি হল:

  • বুধ
  • শুক্র
  • পৃথিবী
  • মঙ্গল
  • বৃহস্পতি
  • শনি
  • ইউরেনাস
  • নেপচুন

সৌরজগৎ সাধারণ জ্ঞান 

এখানে, বিভিন্ন প্রতিযোগিতা মুলক পরীক্ষার জন্য সৌরজগৎ সম্বন্ধীয় গুরুপ্তপূর্ণ কিছু সাধারণ জ্ঞান দেওয়া হল। 

কত বছর পর পর হ্যালির ধূমকেতু দেখা যায়?

উত্তর: ৭৫ বছর পর পর।

পৃথিবীর কয় ভাগ পানি ও কয় ভাগ স্থল?

উত্তর: তিন ভাগ পানি ও এক ভাগ স্থল।

সৌরজগতের কয়টি গ্রহ আছে?

উত্তর: আটটি। সূর্যের চারপাশে ঘোরে এমন আটটি গ্রহ রয়েছে: বুধ, শুক্র, পৃথিবী, মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস এবং নেপচুন।

সূর্যে কী কী গ্যাস থাকে?

উত্তর: সূর্য মূলত হিলিয়াম এবং হাইড্রোজেন গ্যাস দিয়ে তৈরি।

শুকতারা বা সন্ধ্যাতারা কোন গ্রহ?

উত্তর: শুকতারা বা সন্ধ্যাতারা হল শুক্র গ্রহ। শুক্র গ্রহ সূর্যের খুব কাছাকাছি অবস্থিত, তাই এটি পৃথিবী থেকে উজ্জ্বল দেখায়।

কত দিন পর পর অমাবস্যা ও পূর্ণিমা হয়?

উত্তর: অমাবস্যা ও পূর্ণিমা সাধারণত ২৯ বা ৩০ দিন পর পর হয়। তবে, কখনও কখনও এটি ২৮ বা ৩১ দিন পর্যন্ত হতে পারে।

কত বছর পর পর হ্যালির ধূমকেতু দেখা যায়?

উত্তর: হ্যালির ধূমকেতু প্রায় ৭৫ বছর পর পর দেখা যায়।

সৌরজগতে কয়টি গ্রহ আছে?

উত্তর: আটটি।

সূর্যে কী কী গ্যাস থাকে?

উত্তর: হিলিয়াম ও হাইড্রোজেন।

গ্রহ কার কাছ থেকে আলো ও তাপ নেয়?

উত্তর: সূর্য থেকে।

শুকতারা বা সন্ধ্যাতারা কোন গ্রহ?

উত্তর: শুক্র।

পৃথিবী ঘুরতে থাকলেও আমরা ছিটকে পড়ে যাই না কেন?

উত্তর: অভিকর্ষ বলের কারণে।

পৃথিবী নিজ অবস্থানে ঘোরার গতিকে কী বলে?

উত্তর: আহ্নিক গতি।

সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহ কোনটি?

উত্তর: বৃহস্পতি

সূর্যের নিকটতম গ্রহ কোনটি?

উত্তর: বুধ

সৌরজগতের দ্রুততম গ্রহ কোনটি?

উত্তর: বুধ

পৃথিবীর নিকটতম গ্রহ কোনটি?

উত্তর: শুক্র

সৌরজগতের কোন কোন গ্রহের উপগ্রহ নেই?

উত্তর: বুধ ও শুক্রে

সৌরজগতের কোন গ্রহের উপগ্রহ সবচেয়ে বেশি?

উত্তর: সৌরজগতের সবচেয়ে বেশি উপগ্রহ বিশিষ্ট গ্রহ হল শনি, যার মোট ৮২টি উপগ্রহ রয়েছে। বৃহস্পতির ৭৯টি উপগ্রহ রয়েছে, যা দ্বিতীয় সর্বাধিক।

বুধ কত দিনে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে?

উত্তর: ৮৮ দিনে

বুধের ব্যাস কত?

উত্তর: ৪৮৫০ কিমি.

পৃথিবী থেকে শুক্রের দূরত্ব কত?

উত্তর: ৪.২ কোটি কিমি.

শুক্রের ব্যাস কত?

উত্তর: ১২,০৩২ কিমি.

শুক্র কত দিনে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে?

উত্তর: ২২৫ দিন

সৌরজগতের সবচেয়ে ঘন গ্রহ কোনটি?

উত্তর: পৃথিবী

সৌরজগতের সবচেয়ে গরম গ্রহ কোনটি?

উত্তর: শুক্র

সৌরজগতের সবচেয়ে ঠান্ডা গ্রহ কোনটি?

উত্তর: নেপচুন

সৌরজগতের সবচেয়ে বেশি চাঁদ বিশিষ্ট গ্রহ কোনটি?

উত্তর: শনি

Related Post

মৃত্যু নিয়ে উক্তি

150+মৃত্যু নিয়ে উক্তি, বাণী, ক্যাপশন 2024

মৃত্যু নিয়ে উক্তি জন্মিলে মরিতে হবে আর এটাই সত্যি। মৃত্যু হচ্ছে সবচেয়ে চিরন্তন সত্যি। পৃথিবীতে প্রতিটি প্রাণীর মৃত্যুর স্বাদ অনুভব করতে হবে। সবসময় মৃত্যুর জন্য

Read More »
খুশির স্ট্যাটাস

200+ স্টাইলিশ খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন

খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন জীবনের সুন্দর খুশির মুহূর্ত আমরা সবাই বাঁধাই করে রাখতে চাই। আর এই খুশির মুহূর্তকে ধরে রাখার সবচেয়ে সহজ উপায়

Read More »

স্টাইলিশ ভালোবাসার ছন্দ | রোমান্টিক ছন্দ | Love Status Bangla

❤❤ভালোবাসার ছন্দ | ভালোবাসার ছন্দ রোমান্টিক | ভালোবাসার ছন্দ স্ট্যাটাস❤❤ ভালোবাসা হলো এক অন্যরকম অনুভূতির নাম, যা শুধুমাত্র কাউকে ভালবাসলেই অনুভব করা যায়। আমরা বিভিন্নভাবে

Read More »
মন খারাপের স্ট্যাটাস

মন খারাপের স্ট্যাটাস, উক্তি, ছন্দ, ক্যাপশন, কিছু কথা ও লেখা

মন খারাপের স্ট্যাটাস মন খারাপ – এই কষ্টের অনুভূতি কার না হয়? সবারই কখনো না কখনো সবারই মন খারাপ হয়। জীবনের ছোটোখাটো অঘটন থেকে শুরু

Read More »

Leave a Comment

Table of Contents