Dreamy Media BD

ইথিকাল হ্যাকিং কি ও কিভাবে কোথায় শিখবেন?

২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে হ্যাকিং এর শিকার বাংলাদেশ ব্যাংক,  অ্যাকাউন্ট থেকে ৮১ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৯০০ কোটি টাকা) চুরি করে কথিত উত্তর কোরিয়া হ্যাকাররা। হ্যাকিং কি ও  হ্যাকার কারা? এর সাথে আমাদের অনেকেরই পরিচয় হয়ে গেছে হলিউড ও বলিউড মুভির কল্যাণে, মুখে মুখোশ কালো হুডি পরে একজন মানুষ, সামনে অনেকগুলো মনিটর নিয়ে, কালো স্কিনের নীল কালিতে লিখে যাচ্ছে হাজার হাজার লাইন কোড।

তারপর এন্টার দিলেই খেল খতম, হাজার হাজার ডলার চলে যায় তাদের একাউন্টে।

শুধু টাকার জন্য নয়, হ্যাকিংকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশ ও গোয়েন্দা সংস্থা। রাশিয়া, আমেরিকা, চীন, ইরান, ইসরাইল ও উত্তর কোরিয়া, এরা রাষ্ট্রীয়ভাবে হ্যাকিং অভিজান পরিচালনা করে। উত্তর কোরিয়ায় হ্যাকিং এর জন্য বিশেষভাবে স্কুলেই আছে, যেখানে ছোটবেলা থেকে হ্যাকিং এর জন্য বাচ্চাদের কঠোরভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। বলা হয়ে থাকে উত্তর কোরিয়া সরকার আয়ের একটা প্রধান উৎস হ্যাকিং।

হ্যাকার মানেই খারাপ কোন ব্যক্তি না, ইথিক্যাল হ্যাকার নামে আর একটি ক্ষেত্র আছে, যারা ক্ষতিকর হ্যাকার থেকে আপনার ওয়েবসাইট সার্ভিসকে সুরক্ষিত রাখে।

আজকে আমাদের টপিক হল হ্যাকিং, হ্যাকিং দুনিয়ায় সমস্ত কিছু জানব আজ আমরা। এই আর্টিকেল থেকে আরও আমরা জানব, কিভাবে হ্যাকিং শিখে আপনি আয় করতে পারেন। আরও জানব কিভাবে হ্যাকিং থেকে আপনার ফেসবুক ও সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট নিরাপদ রাখবেন। হ্যাকিং দুনিয়ায় স্বাগতম আপনাকে।

হ্যাকিং কি

হাকিংকে সংজ্ঞায়িত করা কিছুটা কষ্টসাধ্য, তবুও এর উৎকৃষ্ট সহজ সংজ্ঞাটি হল:  কোন কম্পিউটার সিস্টেম বা ডিভাইস অথবা নেটওয়ার্কে, অবৈধভাবে অনুমোদিত ব্যক্তি প্রবেশ করে। সেখান থেকে তথ্য, অর্থ চুরি করে অথবা ক্ষতিকর ম্যালয়ের সফটওয়্যার ইনস্টল করে সিস্টেমের দখল নেয় অথবা সিস্টেমে তাদের ব্যানার লাগিয়ে টাকার বিনিময়ে টাকা দাবি করে। এই পুরো প্রক্রিয়া হল হ্যাকিং আর যারা এই কাজ করে তাদেরকে বলা হয় হ্যাকার।

পৃথিবীতে অনেক প্রকার হ্যাকার আছে কিন্তু তাদের প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা হয়ঃ

হোয়াইট হ্যাট হ্যাকারঃ এদেরকে ইথিক্যাল হ্যাকার নামেও ডাকা হয়। এরা হলো সেই ব্যক্তি যারা আপনার কোন অনুমতি নিয়ে আপনার সিস্টেমে প্রবেশ করে অথবা সিস্টেমের দুর্বলতার খুঁজতে বের করতে হ্যাক করার চেষ্টা করো এবং অন্য হ্যাকার জন্য ক্ষতি করতে না পারে তার জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেন।

ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকারঃ ইথিক্যাল হ্যাকারের সম্পূর্ণ বিপরীত কাজ  করে থাকে এরা। বিশ্বব্যাপী সকল ক্ষতিকর সাইবার হামলার জন্য দায়ী এরা।  একজন হ্যাকার কিন্তু অনেক ভালো কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার। দখন  আছে নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ারিং এ,  এরা আপনার ওয়েবসাইট বা সিস্টেম অনেকভাবে পর্যবেক্ষণ করে সেখান থেকে সূক্ষ্ম কোন দুর্বলতা বের করে সেই পথ দিয়ে আপনার সিস্টেমে প্রবেশ করে। তারপর পুরো দখল নিয়ে নেয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের নষ্ট একটা প্রিন্টার থেকে তারা তারা এতবড় চুরি করেছিল।

গ্রে হ্যাট হ্যাকারঃ এদের সাথে ইথিক্যাল হ্যাকারের কাজের যথেষ্ট মিল আছে এরা মূলত হোয়াইট আর – ব্লাকের মাঝামাঝি। এরা আপনার অনুমতি ছাড়া আপনার সিস্টেম হ্যাক করে ঢুকে বটে কিন্তু আপনার সিস্টেমের কোন ক্ষতি না করে, সাইটের ঝুঁকিপূর্ণ দিকগুলো বিশ্লেষণ করে। তারপর সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান কে জানিয়ে দেয়। এরা মূলত স্বেচ্ছাসেবী হিসাবে কাজ করে।

ইথিক্যাল  হ্যাকিং ও সাইবার সিকিউরিটি

আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি হোয়াইট হ্যাট হ্যাকিং কে ইতি বলা হয় টিফিকাল হ্যাকিং ও বলা হয় এদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হল আপনার সিস্টেমের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা ও ক্ষতিকর হ্যাকার হতে আপনার সিস্টেম নিরাপত্তা এরা সিস্টেম পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করে ঝুঁকিপূর্ণ দিকগুলো খুঁজে বের করে অন্য হ্যাকার আক্রমণের রাস্তা বন্ধ করে দেয়

আরেকটা সিস্টেমকে নিরাপদ রাখার জন্য যে সমস্ত কাজ করা হয় তাদের সমষ্টি হল সাইবার সিকিউরিটি

ইথিক্যাল হ্যাকিং সাইবার সিকিউরিটির একটা অংশ

সাইবার সিকিউরিটি কয়েকটি বিভাগে ভাগ করা হয়

নেটওয়ার্ক সিকিউরিটি অ্যাপ্লিকেশন সিকিউরিটি ডেটা সিকিউরিটি ক্লাউড সিকিউরিটি এন্ড ইউজার সিকিউরিটি ইন্সিডেন্ট ফরেন কমপ্লায়েন্স

 

আলোচিত সমালোচিত হ্যাকার ও হ্যাকিং

বেশিরভাগ হ্যাকারই তাদের নাম পরিচয় গোপন রেখে কাজ করে থাকেন আর তাদের আইপি ট্রাকও সম্ভব হয় না । তারা নিজেদের এতটাই আড়াল করে রাখেন যে, নিজের থেকে না জানালে কেউ তাদের চিনতে বা জানতে পারবে না। তাই লিস্ট করে সেরা হ্যাকার বের করা সম্ভব না তবুও এখন পর্যন্ত পরিচয় খুঁজে পাওয়া সেরা কয়েকজনের সম্পর্কে আমরা জানবোঃ

hamza-bedelaz

হামজা বেন্দেলাজ – হ্যাকিং কিং

হামজা বেন্দেলাজ: ফেসবুকে ভাইরাল হামজার এই পিকচারটি দেখেননি এমন মানুষ খুব কমই আছে যদিও এটি একটি ভুয়া পিকচার। তবে কাহিনী প্রায় সত্তই বটে। হামজা, ২০০৯ সালে  অনেকগুলো আমেরিকান ব্যাংকের ইনফরমেশন হ্যাক করে। দাবি করা হয়, সে অনেক টাকা এর মাধ্যমে হ্যাক করেছিল যা প্যালেস্টাইন ও আফ্রিকায় গরিব মানুষের মাঝে বিলিয়ে দিয়েছিল। তারপর থেকে আমেরিকা তাকে হন্য খুজতে থাকে। অবশেষে ২০১৩ সালে থাইল্যান্ডে পুলিশের মাধ্যমে আটক করা হয় এবং তাকে আমেরিকায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়, ২০১৬ সালে তার ১৫ বছরের সাজা হয়।

কেভিন মিতিক: ইনি সেই বিখ্যাত হ্যাকার যে কিনা একই সাথে নাসা ও আমেরিকার ডিফেন্স মন্ত্রণালয় এর ওয়েবসাইট হ্যাক করেছিল পরবর্তীকালে ধরা পড়ে ৫ বছরের জেল হয় যদি তুমি চার বছর জেল খাটার পর বের হয়ে আসেন। বর্তমানে তিনি একজন বিখ্যাত সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্ট তার হ্যাকিং অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি বেশ কয়েকটি বিখ্যাত বই লিখেছেন। তার হ্যাকিং জীবনের সত্য কাহিনি নিয়ে একটা ডকুমেন্টরি ফিলিম  আছে  “Ghost in the Wires” নামে।

Albert Gonzalez: ইনি একজন কিউবান-আমেরিকান হ্যাকার, আমেরিকার বিখ্যাত কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও পেমেন্ট সিস্টেমের ওয়েবসাইট হ্যাক করেছিলেন তিনি। এর থেকে হ্যাক করা অর্থ তিনি গরিবদের মাঝে বিলিয়ে দেন। পুলিসের হাতে ধরা খাবার পর, তার ২০ বছর জেল হয়। পরবর্তীতে আট বছর জেল খাটার পর ২০১৬ সালে তিনি মুক্তি পান। বর্তমানে তিনি একজন বিখ্যাত সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্ট ও কনসালটেন্স।

Adrian Lamo: ইনি একজন গ্রে হ্যাট হ্যাকার। বিখ্যাত অনেক প্রতিষ্ঠানে ওয়েবসাইট হ্যাক করে তাদের সিকিউরিটি দুর্বলতা বের করেছিল। ২০০৯ সালে বিখ্যাত নিউ ইয়ার টাইমস পত্রিকার ওয়েবসাইট হ্যাক করে জেলে যান। ২০১৩ সালে অজ্ঞাত কারণে এই মেধাবী হ্যাকার আত্মহত্যা করেন

The Lizard Squad: এটা কোন একক ব্যক্তির নাম না। এরা ডচ  অ্যাটাকের জন্য বিখ্যাত, তাদের শিকারের তালিকায় সনি, মাইক্রোসফট ও বিবিসির মত প্রতিষ্ঠান আছে।  এরা ২০১৫ সালে রেট ক্রস এর ওয়েবসাইট হ্যাক করে মুক্তিপণ হিসেবে বলে, তারা মানবতার নামে সারা বিশ্বব্যাপী যে টাকা গুলো সংগ্রহ করে, নিজেদের কাজে ব্যয় করে। সেই টাকাগুলো গরিব মানুষের মাঝে দিতে হবে, যদিও এই দাবির পক্ষে কোন প্রকার ডকুমেন্ট পাওয়া যায় নি।

এনারা বাদেও মারকস রেনাম, তরি  হান্ট, মিকো হাইপনাম ও ব্রুস হ্যাকিং জগতে বিভিন্ন ঝর তুলেছিলেন।

হ্যাকিং শিখতে কি কি লাগে?

হ্যাকিং শেখার জন্য সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হল এর প্রতি আগ্রহ ও ভালোবাসা।  বলিউড মুভি দেখে, আমাদের ধারণা যে, হ্যাকিং এর জন্য মনে হয় বিশাল বিশাল সার্ভার কম্পিউটার ও চার পাঁচটা বড় বড় মনিটরের দরকার হয়। কিন্তু আপনি যদি ভালো মানের হ্যাকার হন, সাধারন একটি ল্যাপটপ দিয়ে নাসাকে হ্যাক করতে পারবেন বুদ্ধি ও দক্ষতা দিয়ে।  তবুও কিছু বিষয় আছে আপনাকে হ্যাকিং শিখতে সাহায্য করবে।

কম্পিউটার বিজ্ঞানের ধারণাঃ নেটওয়ার্কিং, প্রোগ্রামিং, ডেটাবেজ ও ডেটা স্ট্রাকচার এলগোরিদমের ধারণা, আপনাকে ভালো হ্যাকার হতে সাহায্য করবে।

টার্মিনাল বেইজ অপারেটিং সিস্টেমগুলো, যেমন কালি লিনাক্স , দেভিয়ান জানা থাকা প্রয়োজন।

আর ভালো মানের প্রোসেসিং ক্ষমতার একটি ডিভাইস থাকলেই আপনি হ্যাকার হবার জন্য প্রস্তুত।

কাদের জন্য হ্যাকিং

হ্যাকিং সবার জন্য না! কেননা, এটি কম্পিউটার বিজ্ঞানের অন্যতম কঠিন বিষয়গুলো একটি। আপনার মাঝে যদি নিচের বৈশিষ্ট্য গুলো থাকে তাহলে হ্যাকিং আপনার জন্যঃ

ক্রিটিকাল থিংকিংঃ আপনি যদি ঠান্ডা মাথায় একজন চিন্তাশীল মানুষ হন তাহলে হ্যাকিং আপনার জন্য।

প্রবলেম সলভিংঃ ভালো হ্যাকার হতে গেলে, ভালো মানের গাণিতিক ও প্রবলেম সলভিং ক্ষমতা থাকতে হয়।

আগ্রহঃ যেকোনো কঠিন জিনিস শেখার ও জানার ইচ্ছা ভালো হ্যাকার হতে সাহায্য করে।

অনুশীলনঃ প্রচুর পরিমাণে অনুশীলন করার ও লেগে থাকার ক্ষমতা থাকতে হবে।

এই বৈশিষ্ট্য গুলো আপনার মাঝে থাকলে হ্যাকিং এর জগতে আপনাকে স্বাগতম!

হ্যাকিং শেখার শ্রেষ্ঠ বই

কোন কিছু শেখার সবচেয়ে ভালো উপায় হল বই পড়ে নিজে নিজে শেখা। নিজে হ্যাকিং শেখার কয়েকটি বিখ্যাত বই দেওয়া হলো

The Art of Hacking: বইটি লিখেছেন বিখ্যাত হ্যাকার Kevin Mitnick (যার সম্পর্কে আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি, নাসা ও আমেরিকার ডিফেন্স মন্ত্রণালয় এর ওয়েবসাইট হ্যাক করেছিল পরবর্তীকালে ধরা পড়ে ৫ বছরের জেল হয়েছিল) । ভালো ইথিক্যাল হ্যাকার হবার জন্য বইটি আপনাকে অবশ্যই  পাঠ করতে হবে ।

Hacking: The Art of Exploitation – জন এরিকসনের লেখা বইটি যারা ইতিমধ্যে হ্যাকিং সম্বন্ধে জানেন নিজেকে আরও দক্ষ মনে হয় হ্যাকার করতে চান বইটি তাদের জন্য

Black Hat Python: Justin Seitz পাইথন প্রোগ্রামিং শেখার সেরা বই

The Hacker Playbook: পিটার কিমের  লেখা বইটিতে বিভিন্ন হ্যাকিং কৌশল আলোচনা করা হয়েছে, যা আপনাকে একজন ভালো মানের হ্যাকার তৈরি করবে।

Malware Analysis: এন্ড্রু হইং এ লেখা এই বইটি পড়ে আপনি হ্যাকিং এর অস্ত্র মেলয়ার, ভাইরাস ইত্যাদি নিয়ে শিখতে পারবেন

এছাড়াও পড়তে পারেন,  Hacking Exposed,Security Engineering,The Art of Deception, The Shellcoder’s Handbook, The Hacker’s Handbook  এই বইগুলো

 

আরও পড়ুনঃ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কি: ভবিষ্যতে কি মানুষের স্থান দখল করে নেবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা?

কোথায় শিখবেন হ্যাকিংঃ কোর্স , টিউটোরিয়াল ও রিসোর্স

শুধুমাত্র হ্যাকিং শেখার জন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রির নেই, তাই হ্যাকিং শেখার সেরা কিছু উপায় এখানে দেওয়া হলঃ

হ্যাকিং শেখার অনলাইন কোর্স

  • খান একাডেমিঃ  হ্যাকিং শেখার জন্য বিশ্ব বিখ্যাত অনলাইন লারনিং মাধ্যম খান একাডেমী থেকে এই কোর্সটি করতে পারেন।(কোর্স লিংক)
  • ইউডেমিঃ হ্যাকিং এর অফিসে এবং পূর্ণাঙ্গ কোর্স এটি।কালি লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমের সাহায্যে এই কোর্সে হ্যাকিং শেখানো হয়। (কোর্স লিংক)
  • ইডেক্স: হ্যাকিং শেখার জন্য অন্যতম সেরা তাত্ত্বিক কোর্স এটি এখানে বেসিক কনসেপগুলো খুব গুরুত্ব সহকারে বোঝানো হয়েছে। (কোর্স লিংক)

সাইবার সিকিউরিটি শেখার জন্য এই কোর্সটিও করতে পারেন। (কোর্সে লিংক)

হ্যাকিং শেখার অনলাইন টিউটোরিয়াল

হ্যাকিং শেখার জন্য এই ইউটিউব চ্যানেল গুলি ঘুরে আসতে পারেনঃ

  • দ্যা সাইবার মেন্টরঃ হ্যাকিং শেখার সবচেয়ে সেরা ইউটিউব চ্যানেল টিভি, টিবর শযুচস  ইউটিউব চ্যানেলে হ্যাকিং এর বিভিন্ন বিষয়ের উপর একজন বিখ্যাত সাইবার সিকুরিটি এক্সপার্ট, গবেষক ও ইথিক্যাল হ্যাকার। তার ইউটিউব চ্যানেলে ইথিক্যাল হ্যাকিং এর বিভিন্ন বিষয়ের উপর পূর্ণাঙ্গ টিউটোরিয়াল পারবেন। (চ্যানেল লিংক)
  • Hacks5: একজন ভালো মানের ইথিকার হ্যাকার হবার জন্য নেটওয়ার্ক সিকিউরিটি, ওয়েব এপ্লিকেশন সিকিউরিটি, ও ওয়্যারলেস হ্যাকিং সম্বন্ধে যথেষ্ট ভালো ধারণা থাকা দরকার। আর এসবই একসাথে পাবেন স্টিভেন সিমস দ্বারা পরিচালিত এই চ্যানেলে। তিনি নিজেও একজন ইথিক্যাল হ্যাকার ও সাইবার সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞ। (চ্যানেল লিংক)
  • IppSec: বিশিষ্ট সাইবার সিকিউরিটি গবেষক ও বিখ্যাত ইথিক্যাল হ্যাকার মিচেল ক্রুম্মে, এই ইউটিউব চ্যানেলটি পরিচালনা করে। এখানে আপনি ইথিক্যাল হ্যাকিং, কিপটোগ্রাফি, রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং, ও এক্সপ্লইট ডেভেলপমেন্ট খুব ভালোভাবে শিখতে পারবেন।(চ্যানেল লিংক)
  • Null Byte: আরেকজন বিখ্যাত সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্ট ও এথিকাল হ্যাকার ওয়েন্দেল অডম এই চ্যানেলটি পরিচালনা করে। এখানে হ্যাকিং এর অন্যান্য বেসিক জিনিসের পাশাপাশি ম্যালওয়্যার এনালাইসিস অনেক সুন্দর ভাবে শেখানো হয়েছে।(চ্যানেল লিংক)
  • TryHackMe: এই চ্যানেলটি কোন ব্যক্তি না, ট্রাই হ্যাক মি নামে একটা প্রতিষ্ঠান দ্বারা পরিচালিত হয়। হ্যাকিংয়ের জিরো থেকে হিরো হওয়ার জন্য এটা একটা সেরা চ্যানেল।(চ্যানেল লিংক)

আশা করি এই চ্যানেলগুলি আপনার হ্যাকিং শেখার জন্য যথেষ্ট। যেকোনো একটা চ্যানেল থেকে পছন্দমত টিউটোরিয়াল দিয়ে শেখা শুরু করুন, লেগে থাকুন, সফল হবেনই।

হ্যাকিং শেখার অনলাইন রিসোর্স

হ্যাকিংয়ে জানা কোন শেষ নেই তাই যে যত রিসোর্সফুল হবে সে তত ভালো হ্যাকার হতে পারবে। এখানে কিছু অনলাইন রিসোর্স শেয়ার করা হলো। এই  আর্টিকেল ও ওয়েবসাইটগুলি হ্যাকিং এর প্রাথমিক ও জটিল ধারণা গুলি বর্ণনা ও আলোচনা করেছে:

ইথিক্যাল হ্যাকিং

ইথিক্যাল হ্যাকিংয়ে ক্যারিয়ার ও আয়ের পথ

পৃথিবীতে চাকরিজীবীদের মধ্যে যারা সবচেয়ে বেশি বেতন পায়, ইথিক্যাল হ্যাকার তার মধ্যে অন্যতম।

একজন ভালো মানের ইথিক্যাল হ্যাকারের জন্য কোম্পানিগুলো প্রচুর পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে থাকে।

এর পাশাপাশি ইথিক্যাল হ্যাকাররা সাইবার সিকিউরিটি কনসাল্ট ফার্ম এর মাধ্যমে নিজেদের এজেন্সি খুলে আরো বেশি আয় করতে পারেন।

অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট প্লেসে ইথিক্যাল হ্যাকারের ব্যাপক চাহিদা আছে। এর পাশাপাশি আপনি বই লিখে, প্রশিক্ষণ দিয়ে ও, অনলাইন প্লাটফর্মে কোর্স তৈরি করে খুব ভালো অংকের অর্থ প্রয়োজন করতে পারেন।

সম্প্রতি বেশ কিছু সরকারি ওয়েবসাইট ও বাংলাদেশ ব্যাংকে হ্যাকিং এর কারণে, বড় বড় বিজনেস ফার্ম ও কোম্পানি গুলি তাদের সফটওয়্যার সিস্টেমের নিরাপত্তার ব্যাপারে সতর্ক হয়েছে।  তাই বাজারে এথিক্যাল হ্যাকারের চাহিদা চরমে।

তাই যারা হ্যাকিং শুরু করতে চান এখনই উপযুক্ত সময়। প্রতিদিন শত শত কোম্পানিতে ওয়েবসাইট সফটওয়্যার সিস্টেম তৈরি করেছে, তাই ডিজিটাল এ যুগে দিন দিন চাহিদা বেড়েই ইথিক্যাল হ্যাকারের চাহিদা। সামনে আরও বাড়বে, জব সিকিউরিটি নিয়ে চিন্তা নেই।

কিভাবে হ্যাকিং থেকে নিরাপদ রাখবেন আপনার ফেসবুক আইডি

ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকাররা সম্প্রতি ব্যাপকভাবে সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্টে হামলা করা শুরু করেছে। সাধারণ মানুষের সাইবার সিকিউরিটি নিয়ে তেমন জ্ঞান না থাকার কারণে, খুব সহজে তাদের ফাঁদে ধরা দিচ্ছে। অনেকেই অর্থ হারানো পাশাপাশি ব্যক্তিগত ছবি ভিডিও চলে যাচ্ছে  হ্যাকারদের হাতে। ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হওয়ার কারণে আত্মহত্যার ঘটনা এখন নিয়মিত। তাই কিভাবে আপনার ফেসবুক একাউন্ট ও অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট, হ্যাকারদের হাত থেকে রক্ষা করবেন তার কিছু টিপস দেওয়া হলো:

কঠিন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন: কখনোই নিজের বা পরিচিত কারো নাম, জন্ম সাল, পোষা প্রাণীর নাম, সন্তানের নাম দিয়ে পার্সওয়ার্ড বানাবেন না। খেয়াল রাখবেন পাসওয়ার্ড তৈরীর সময় যেন, কিছু সংখ্যা কিছু স্পেশাল ক্যারেক্টার (,&,#,₹,@ ইত্যাদি) ও ছোট বড় হাতের অক্ষর থাকে তাহলে আপনার একাউন্টে বেশি নিরাপদ হবে। যেমন: BD263-&#abc একটি উত্তম পাসওয়ার্ড এর উদাহরণ।

নিয়মিত পাসওয়ার্ড পরিবর্তন: একটি পাসওয়ার্ড তিন মাসের বেশি ব্যবহার না করাই উত্তম, নিয়মিত পাসওয়ার্ড চেঞ্জ খুব ভালো অভ্যাস। পাসওয়ার্ড কখনোই ডাইরি বা নোটবুকে লিখে রাখবেন না সবচেয়ে ভালো হয় মুখস্থ রাখার চেষ্টা করবেন অথবা পাসওয়ার্ড লগ ব্যবহার করবেন।

টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন: এখন প্রায় সব সোশ্যাল মিডিয়াতে টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন চালু হয়েছে। মোবাইল ও মেইল দুটোই কানেক্ট থাকে বলে, হ্যাকাররা কোনভাবে আপনার মেইল হ্যাক করলেও, আপনার ফেসবুক একাউন্টে ঢুকতে পারবে না।

সবকিছু পোস্ট করবেন না: সোশ্যাল মিডিয়াতে কোন ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করবেন না। যেমন বাসার পূর্ণ ঠিকানা, ফোন নাম্বার, মোবাইল নাম্বার, মেইল নাম্বার, ক্রেডিট কার্ড ইনফরমেশন ইত্যাদি।

ফিশিং লিঙ্ক থেকে দূরে থাকুন: সোশ্যাল মিডিয়াতে এই মাধ্যমে মানুষ সবচেয়ে বেশি হ্যাকিং এর শিকার হয়। মেসেঞ্জার বা মেইলে যে কোন লিংক আসলেই ক্লিক করবেন না। হ্যাকাররা এই ফিশিং লিঙ্ক পাঠিয়েই আপনার সোশ্যাল মিডিয়াসহ আপনার ফোন বা কম্পিউটার দখলে নিতে পারে। চাকুরী প্রার্থী হিসেবে ফিসিং মেইল দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক এর সার্ভার এভাবে হ্যাক করা হয়েছিল।

পরিশেষে নিয়মিত সাইবার সিকিউরিটি সম্পর্কে জানুন নিজেকে আপডেট রাখুন তাহলে আপনিও আপনার সোশ্যাল মিডিয়া নিরাপদ থাকবে।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে, আরও লেখা পড়ুনঃ

Related Post

মৃত্যু নিয়ে উক্তি

150+মৃত্যু নিয়ে উক্তি, বাণী, ক্যাপশন 2024

মৃত্যু নিয়ে উক্তি জন্মিলে মরিতে হবে আর এটাই সত্যি। মৃত্যু হচ্ছে সবচেয়ে চিরন্তন সত্যি। পৃথিবীতে প্রতিটি প্রাণীর মৃত্যুর স্বাদ অনুভব করতে হবে। সবসময় মৃত্যুর জন্য

Read More »
খুশির স্ট্যাটাস

200+ স্টাইলিশ খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন

খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন জীবনের সুন্দর খুশির মুহূর্ত আমরা সবাই বাঁধাই করে রাখতে চাই। আর এই খুশির মুহূর্তকে ধরে রাখার সবচেয়ে সহজ উপায়

Read More »

স্টাইলিশ ভালোবাসার ছন্দ | রোমান্টিক ছন্দ | Love Status Bangla

❤❤ভালোবাসার ছন্দ | ভালোবাসার ছন্দ রোমান্টিক | ভালোবাসার ছন্দ স্ট্যাটাস❤❤ ভালোবাসা হলো এক অন্যরকম অনুভূতির নাম, যা শুধুমাত্র কাউকে ভালবাসলেই অনুভব করা যায়। আমরা বিভিন্নভাবে

Read More »
মন খারাপের স্ট্যাটাস

মন খারাপের স্ট্যাটাস, উক্তি, ছন্দ, ক্যাপশন, কিছু কথা ও লেখা

মন খারাপের স্ট্যাটাস মন খারাপ – এই কষ্টের অনুভূতি কার না হয়? সবারই কখনো না কখনো সবারই মন খারাপ হয়। জীবনের ছোটোখাটো অঘটন থেকে শুরু

Read More »

Leave a Comment

Table of Contents