Dreamy Media BD

ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপ

ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপ

ইন্দোনেশিয়ার জাভা শহর হতে মাত্র ২ কি:মি: দূরে অবস্থান করে একটি বিশ্ব বিখ্যাত বালি দ্বীপ। বালিকে যথার্থ কারনেই অভিহিত করা হয় “দ্য লাস্ট প্যারাডাইস অন আর্থ” হিসেবে। তবে ইন্দোনেশিয়ার  অন্যান্য প্রদেশগুলোর চেয়ে বালি কিন্তু বেশ স্বতন্ত্র।  এখানে আসা পর্যটকদের বালির সংস্কৃতি  বিশেষভাবে আকৃষ্ট করে।

বালির বাসিন্দারা বালির পবীত্রময় পর্বতকে পৃথিবীর ৮ টি “চক্র” বিন্দুর মাঝে অন্যতম মনে করে। এর স্থানীয় বাসিন্দারা বিশ্বাস করে ঈশ্বরে। এ দ্বীপের বাসিন্দাদের সুন্দর সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ আর প্রাকৃতিক পরিবেশের মুগ্ধতায় আটকা পরে এখানে আগত পর্যটকেরা। আর বারবার বালিতে ফিরে আসেন অবকাশ যাপনের জন্য। বিশেষ করে বালির সমুদ্র সৈকত পর্যটকদের আকৃষ্ট করে।

কেনো আপনি যাবেন বালির সমুদ্র সৈকতে?

‘ঈশ্বরের দ্বীপ’ নামে খ্যাত বালির সৌন্দর্য বহুগুণে বৃদ্ধি করেছে এর বহু বৈচিত্র্যময় সমুদ্র সৈকতগুলো। বালির সমুদ্র সৈকতের কথা উঠলেই এক পলকেই ভেসে উঠে চিকচিক করা সাদা বালি আর এর স্ফটিক স্বচ্ছ জল । একজন প্রকৃতিপ্রেমী ভ্রমন পিপাসুকে সন্তুষ্ট করার জন্য এখানকার সমুদ্র সৈকতই যথেষ্ট।

আচ্ছা চলুন এবার তুলে ধরা যাক সেসব সৌন্দর্যগুলো যেগুলো জানলে বুঝতে পারেন আপনি কেনো যাবেন বালি সমুদ্র সৈকতে।

১. বালির জিম্বারান সমুদ্র সৈকতটি এক নিমিষেই যেনো আপনার সকল ক্লান্তি আর অবসাদ দূর করে আপনাকে এনে দিবে একরাশ সতেজতা। ইন্দোনেশিয়ার বালির এই জিম্বারান সৈকতটি স্পষ্টতই খুবই জনপ্রিয়। ঠিক যেনো স্বর্গের এই শান্ত টুকরোটি অবস্থিত বালির দক্ষিণ উপকূলের ডেনপাসার বিমানবন্দরের ঠিক পাশে। সৈকতটির প্রসারতা আর সৌন্দর্য আপনাকে হারিয়ে নিয়ে যাবে এক স্বপ্নের রাজ্যে। নরম সাদা বালিতে পরিপূর্ণ একদম শান্ত ফিরোজা এই সমুদ্রটির নিখুঁত প্রাণশক্তি যে কাউকে  আচ্ছন্ন করে তোলে। এর তীরে আলতোভাবে ঢেউয়ের আওয়াজ শুনে আপনার মন শান্ত হয়ে যাবে।

বালির সেরা রক্ষণাবেক্ষণে রাখা সৈকতগুলির মধ্যে বিশেষ একটি হচ্ছে এই সমুদ্র সৈকতটি এবং এর কাছাকাছি হোটেলগুলোও এর নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্যে দায়িত্ব পালন করে। অর্থাৎ আপনি এর আশেপাশে কোনো ধরনের ময়লা আবর্জনাই দেখতে পাবেন না। পরিবার এবং দম্পতিদের জন্যে এটি খুব বেশি পছন্দের।

এখানে গেলে আপনি দেখবেন জিম্বারানে অবস্থিত, সৈকত, বালির ফিশিং হাব আর আশেপাশের এলাকাটি আশ্চর্যজনক ভাবে সামুদ্রিক খাবারের জন্যে বেশ পরিচিত। এই সমুদ্র সৈকতের রেস্তোরাঁয় আপনি একটি টেবিল বুক করলে দেখতে পাবেম ধীরে ধীরে সমুদ্রে অস্ত যাওয়া সূর্যটি কি এক অন্যরকম পরিবেশ তৈরি করে। তবে এই রেস্তোরার ক্ষেত্রে বলবো, সানসেট দেখার জন্য একদম বেস্ট + সি ফুড ডিনারের জন্যে তো কথাই নেই। তবে সি ফুড ডিনারের ব্যাপারে আপনি একটু সাবধান হবেন।  আগে দাম জিজ্ঞেস করে নিবেন আপনি। কেননা এগুলো অনেক কস্টলি হয়।   দেখা গেলো না জেনেশুনে আপনি খেতে বসলেন আর বিল এসে দাঁড়ালো ৮-১০ হাজার। তাই অবশ্যই আপনি দর দাম করে নিবেন আগে ।

2. বালিতে কেনো যাবেন বিষয়টি নিয়ে বললেই চলে আসে ডাইভিং এর স্বর্গ খ্যাত আমেদ সৈকতের নাম। সুন্দর আমেদ সৈকতটি যেনো একটি ডাইভিং স্বর্গ। শান্ত শহর বালির উত্তর-পূর্ব উপকূলে অবস্থিত এই অনন্য এবং একদম প্রশান্ত সৈকতটিতে আপনি আগ্নেয়গিরির কালো বালি এবং নিকটবর্তী আগুং আগ্নেয়গিরির দুর্দান্ত দৃশ্য দেখতে পাবেন ।

সমুদ্রের তলদেশ দেখা যদি আপনার নেশা হয়ে থাকে, তাহলে এই সৈকতটি আপনার তালিকায় থাকার কথা।  কেননা এটি বালির সেরা ডাইভ সাইটগুলোর মধ্যে একটি! এখানে এসে আপনি উপকূলের বাইরের সামুদ্রিক জীবনের সঙ্গে মিশে আপনি একটি ঐতিহাসিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ সহ ডুবো খেলার একটি সম্পূর্ন মাঠ দোখতে পাবেন। এছাড়াও আগুং আগ্নেয়গিরির ঠিক উপর দিয়ে সূর্যোদয় দেখার এক শ্বাসরুদ্ধকর অভিজ্ঞতা কেবল আপনি আমেড সৈকতেই পাবেন।

৩. বিশাল সব পাথরের উপস্থিতি পাবেন আপনি বালির পাদং পাদং সমুদ্র সৈকতে। এই সমুদ্র সৈকত দেখলে আপনি নিজেকে আর ধরে রাখতে পারবেন না। বালির দক্ষিণ উপকূলে অবস্থিত পেকাতু গ্রামের দক্ষিণ কুটাতে পেয়ে যাবেন পাদং পাডাং সৈকতের দেখা। এই সুন্দর সৈকতটি লুকিয়ে আছ ফাঁপা কিছু পাথরের মধ্যে। আর পাথরের সিঁড়ি বেয়ে হেঁটে যেতে হয় এখানে। চুনাপাথর পাহাড় আর বিশাল পাথরে বেষ্টিত পাদং পাদং সমুদ্র সৈকতটি এককথায় সত্যিই অসাধারণ।

সোনালি বালির এই সৈকতটি মোটামুটি ছোট হলেও খুবই জনপ্রিয় এটি। এখানের একটি রেস্তোরাঁয় আপনি যুক্তিসঙ্গত দামেই খাবার ও পানীয় ক্রয় করতে পারবেন।  বিশাল ঢেউয়ের জন্য পর্যটকদের কাছে এখানকার সমুদ্র সৈকতটি বেশ পছন্দের । আপনি যদি এখানে চমৎকার আকাশের রঙে মিশে একাকার হয়ে যাওয়া সমুদ্রে সাঁতার কাটানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন, তাহলে সতর্ক হয়ে যান। কেননা এখানকার প্রবালগুলো খুবই তীক্ষ্ণ। তা সত্ত্বেও, সৈকতটি পুরো পরিবারের জন্য দুর্দান্ত একটিজায়গা – শুধু জোয়ারের অবস্থার দিকে বিশোষ নজর রাখুন।

আরো পড়ুন – দার্জিলিং ভ্রমণ

 

Bali island

৪.বালি হচ্ছে ইন্দোনেশিয়ার একটি দ্বীপ আর সাউথ ইষ্ট এশিয়ার সব চেয়ে পপুলার ট্যুরিস্ট ডেস্টিনেশন গুলোর একটি। যেনে রাখা ভাল যে ইন্দোনেশিয়াতে ১৭,৫০০ টি দ্বীপ রয়েছে যাদের মধ্যে ৮,৮০০ টার নাম থাকলেও বাকিগুলার নেই। আর ৯০০ এর বেশি দ্বীপে কিন্তু আবার মানুষের বসবাস নাই। জাভা আর লম্বুকের মধ্য খানে অবস্থিত এই বালির সুন্দর সব ট্যুরিস্ট ডেসটিনেশন আপনাকে সন্তুষ্ট করবে। এর মধ্যে একটি হলো বিঙ্গিন সমুদ্র। বিঙ্গিন সমুদ্র সৈকত বালির বিখ্যাত একটি সমুদ্র সৈকত। এর নীল পানি আর চিকচিক করা সাদা বালি অসম্ভব সুন্দর মুহূর্ত তৈরি করে।

.সাদা বালির কেলিংকিং বিচের মোহনীয় সৌন্দর্য সবমিলে সহজেই যেনো পৃথিবীর বুকে এক টুকরো স্বর্গ-ই বলা চলে বালিকে । বালির মত এমন ভার্সেটাইল ট্যুরিস্ট ডেস্টিনেশন বোধ হয় খুব বেশি একটা নেই। ছোট একটা আইল্যান্ড অথচ দেখুন এত দর্শনীয় স্থান যা কল্পনা করা যায়না। যেখানে সাউথ বালিতে আপনার রৌদ্রের তেজে গা পুড়ে যাবে, সেখানে মাত্র ৫০-৬০ কি.মি দূরেই নর্থ বালিতে কি না পরতে হয় কনকনে ঠান্ডার সোয়েটার। একদিকে যেমন এর সমতল ভূমি আর আরেকদিক দেখতে পাবেন উঁচু উঁচু পাহাড়ে ঘেরা। ঠিক আবার দেখতে পাবেন সমুদ্র সৈকতের রূপ। এতো সুন্দর এই ইন্দোনেশিয়া মুসলিম দেশ হলেও কিন্তু বালি পুরোটাই একদম হিন্দু অধ্যুষিত। সাউথ বালিতে আপনি খুব কমই মুসলমান দেখতে পাবেন। আর বালির হিন্দু কালচার গুলোও আবার আমাদের এখান থেকে বেশ অনেকটাই ভিন্ন। আর এগুলো পর্যটকদের আকৃষ্ট করে জানতে।

৬. এছাড়াও আরেকটা অনেকটা বড় ব্যপার হচ্ছে সাউথ বালি হচ্ছে সকলের ট্যুরের একটি স্টার্টিং পয়েন্ট। আর বালির ৭০% এরও বেশি ট্যুরিস্ট কিন্তু  সাউথ বালিতেই থাকে এটা বলা যায়। তাই সাউথ বালি থেকে আপনি যত দুরে যাবেন তত কিন্তু কম ট্যুরিস্ট দেখবেন আপনি। আর তত বেশি দেখবেন লোকাল মানুষ। পাশাপাশি আপনি চাইলে বালির কালচার আর লোকাল লাইফ ও কিন্তু দেখতে পারবেন।

 ৭. বালির কিউটা সমুদ্র সৈকত দেখার জন্যে হলেও আপনাকে চলে আসতে হবে বালিতে।
কেননা বালির সব চেয়ে জনপ্রিয় সমুদ্র সৈকতটির কথা বলা হলে নাম চলে আসে কিউটা সৈকতের। কিউটা সৈকত আপনাকে তার রুপের মোহনীয়তায় জানিয়ে দিবে কেন সে বালির শ্রেষ্ঠত্বের সম্মান অর্জন করেছে। এখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা কিন্তু পর্যটকদের সাথে অনেক বেশি আন্তরিক। কিউটার সাদা আর সমতল সৈকতটি হচ্ছে সার্ফিং ও ওয়ার্টার স্কিয়িং প্রেমীদের কাছে ঠিক যেন সোনায় সোহাগা। এছাড়াও সৈকতের কাছের মার্কেটে আসলে আপনি দেখতে পাবেন নানা রকম হস্তশিল্প আর তার সাথে বর্ণিল পোশাক সহ ইত্যাদি নানান ধরণের জিনিস এখানে পাওয়া যায়। আর কিউটা সৈকত থেকে কিন্তু সব চেয়ে কাছের আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে যেতে সময় লাগে মাত্র ১৫ মিনিট৷

৮.কুটা বিচের সৌন্দর্য আপনি কেবল বালি আসলেই উপভোগ করতে পারবেন।
কুটা বিচ কিন্তু সার্ফিং এর জন্যে এক কথায় বেস্ট। অনেকে এখানে এসে ৩-৪ দিনের জন্যে মূলত সার্ফিং বোর্ড ভাড়া নিয়েই কিন্তু এখানে সার্ফিং করতে হবে। ইন্সট্রাক্টর সহ আপনি এখানে সার্ফিং করতে পারেন।

এছাড়া এখানে এসে আপনি কুটা শহরটিও দেখতে পারেন। বালির সব চেয়ে উন্নত শহর হিসেবে পরিচিত এই কুটা। এয়ারপোর্ট কাছে হওয়াতে কিন্তু সবাই এখানেই এসে উঠে। আর বালির গতানুগতিক সব ধরনের ট্যুরিস্ট স্পট গুলোর মাঝখানে কুটাও পড়ে। এখানে হোটেল কিন্তু মোটামুটি সস্তা। আর এখানে থেকেই আপনি মোটামুটি সাউথ বালির প্রায় পুরোটা এক্সপ্লোর করতে পারবেন। যারা ৩-৪ দিনের জন্য আসলে বালি ঘুরতে আসেন, তাদের কিন্তু এখানে থাকাটাই ভালো হবে। আর কুটার বাইরে আপনি বালির নাইট লাইফ পাবেন না। অন্যান্য শহরগুলোর ক্ষেত্র রাত ৮-৯ টার সাধারনত পর সবই ফাঁকা হয়ে যায়, আর দোকানপাটও কিন্তু বন্ধ হয়ে যায়। কুটা বালির সব চেয়ে হ্যাপেনিং প্লেস বলাই বাহুল্য।
 
৯. আপনি সমুদ্রের পাড়ে রাতের পার্ফেক্ট সৌনৃদর্য উপভোগ করতে চান, তাহলে চলে আসতে হবে সেমিনাক বীচে। বালি শহরের রাতের এক অপরূপ সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে হলে কিন্তু আপনাকে অবশ্যই সেমিন্যাক বীচে চলে আসতে হবে। অপূর্ব সোনালি এই সৈকত, সবুজ বন,উইন্ড সার্ফিং, মনোহর মন্দির, বাহারি সি ফুডে একদম জমজমাট ব্যপার!  কি নেই এখানে!

১০. বলিতে অবস্থিত সানুর বীচে আসলে আপনার প্রাণ যেনো জুড়িয়ে যাবে। বালি দ্বীপের সূর্যোদয়ের এক মনোরম দৃশ্য যদি আপনি অবলোকন করতে চান, তাহলে আপনাকে চলে আসতেই হবে সানুর বীচে। এই বীচটি মূলত খুব ভোর থেকে সূর্যোদয় দেখবার জন্যে অনেক বেশি বিখ্যাত। তাই তো এই বীচে সারা বছর দেশ-বিদেশের বহু পর্যটকরা এসে ভিড় জমান। আর তাই এই স্থানটি কিন্তু বালির অন্যতম একটি প্রধান পর্যটন স্পট হিসেবে বেশ একটা সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়াও শান্ত এবং অগভীর সানুর বীচে আপনি কিন্তু সার্ফিংয়েরও দারুণ সুব্যবস্থা পেয়ে যাবেন। ঠিক ভোরে সানুরের প্রাকৃতিক পরিবেশ একজন সত্যিকারের প্রকৃতিপ্রেমী ভ্রমন পিপাসুকে এনে দেয় স্বর্গীয় প্রশান্তি।

এখানে  আপনি সি-ওয়াক+ ওয়াটার এক্টিভিটি করতে পারবেন। আর যদি নুসা পেনিদায় যেতে চান, তাহলে  আপনাকে এখান থেকেই নিতে হবে ফাস্ট বোট। বালির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত ঠিক ডেনপাসার গ্রামে জনপ্রিয় এই সমুদ্রসৈকত অর্থাৎ সানুর সমুদ্রসৈকত রয়েছে। সমুদ্রসৈকতের পাশেই আবার রয়েছে রিসোর্ট। এছাড়া অঞ্চলটিতে আপনি দেখতে পাবেন বহু ঐতিহাসিক স্থাপনার পাশাপাশি রয়েছে ব্লাংজং মন্দির যা কিনা নবম শতকে নির্মিত হয়েছে। লে মায়েয়ুর মিউজিয়ামও কিন্তু এখানকার উল্লেখযোগ্য একটও দর্শনীয় স্থান, যেখানে আপনি মানুষের উপচানো ভীড় সবসময় দেখতে পাবেন।

১১. সমুদ্র সৈকত উপভোগ করতে এখানে এসে আপনি আরও দেখতে পাবেন মাংকি ফরেস্ট নামে একটি পার্ক। মাংকি ফরেস্ট মূলত হচ্ছে বেশ বড় একটা পার্কের মতো। এটাকে  আপনি বানরের অভয়ারণ্য ও বলতে পারেন। প্রচুর পরিমানে বানর এখানে থাকে। ঢুকার টিকেট হচ্ছে ৮০ হাজার রুপিয়া যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৫০০ টাকার মতো। এর ভেতরে আপনি মন্দির দেখতে পাবেন। এখানে বসার স্থানও আছে। আর আছে হরেক রকমের সব বানর।

মাংকি ফরেস্ট উবুদ হচ্ছে মূলত একটি সংযুক্ত ওয়াইল্ডলাইফ পার্ক। অনেকগুলো প্রাচীন মন্দিরের নিকটে অবস্থিত এই মাংকি ফরেস্টকে একটি অত্যন্ত পবিত্র বন বলা হয় । এই বনের নামকরণের পেছনের মূল কারণ হচ্ছে লম্বা লেজবিশিষ্ট ম্যাকাক প্রজাতির বানর এখানে রয়েছে বিপুল পরিমাণে। এরা আপনাকে হয়তো উদ্দেশ্য করে বিভিন্ন ধরনের অঙ্গভঙ্গি করবে, তবে আপনি যদি শান্ত থাকেম তাহলে এরা স্বাগতমও জানাবে। এই ফরেস্ট কমপ্লেক্সটি মূলত আলাদা আলাদা এলাকায় ভাগ করা। সেখানে যেতে হলে আপনাকে সঠিক পোশাক পরে যেতে হবে। আর বানরকে কিন্তু কোনো ধরনের খাবারই দেওয়া যাবে না।

১২. বালি ভ্রমনে গেলে বালির সমুদ্র সৈকতগুলোর কাছেই আপনি দেখতে পাবেন বালির প্রাণকেন্দ্র উবুদ যা নির্মল প্রকৃতি, পার্ক, ফুলের বাগান, সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য, অপরূপ মন্দির এবং জাদুঘরের জন্য সমাদৃত। উত্তাল সামুদ্রের ঢেউয়ের উপর একদম এডভেঞ্চারের মতো সার্ফিং করা, ইয়োগা কিংবা মেডিটেশনের সুব্যবস্থাও আপনি পেশে যাবেন উবুদে। এছাড়াও উবুদে ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকে নানারকম শিল্পকর্ম আর নাটকের প্রদর্শনীর আয়োজন।

উবুদ হচ্ছে মূলত বালির একটি সুন্দর গ্রামের নাম। গত কয়েক বছরে এই উবুদ এতটাই জনপ্রিয় হয়ে গেছে যে গ্রামের আমেজ এখন একটু কমে গেছে। উবুদে প্রচুর সংখ্যক ইউরোপিয়ানরা আসেন। মাসের পর মাস তারা থেকে যায়। উবুদে আপনি প্রচুর মন্দির, ঝর্ণা আর রাইস ট্যারেস দেখতে পাবেন। ঊবুদের কিছু কিছু মন্দির এর ব্যাপারে স্থানীয় বালিনিজরা বিশ্বাস করে যে এই মন্দির গুলোতে নাকি গোসল করলে তাদের সকল পাপ মোচন হয়।

উবুদ রাইস ট্যারেস বলতে বোঝায়  মূলত চিরসবুজ এই স্থানে ঠিক সিঁড়ির মতো করে কাটা জমিতে ধান চাষ করা হয়। উবুদকে ওখানে বলা হয়ে থাকে ইন্দোনেশিয়ার সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। প্রতিবছর প্রতিদিন এখানে বিভিন্ন সঙ্গীত আর নৃত্যের দামামা যেনো লেগেই থাকে। আরও আছে মাটির তৈরি বিভিন্ন  জিনিসের দোকান এবং চিত্রকর্মের গ্যালারি। উবুদে আপনি হেঁটে কিংবা সাইকেলে চড়ে লোকালয় থেকে অনেক দূরে চলে আসতে পারবেন একদম অনায়াসেই।

১৩. বালির সমুদ্র সৈকত দেখতে এসে যে আপনি কেবল সমুদ্র সৈকতের দেখা পাবেন, তা কিন্তু না। এখানে সমুদ্র সৈকত দেখার সাথে সাথে আপনি খুব সহজেই চমৎকার একটি স্থান তানাহ্ লট দেখতে পাবেন। পাহাড়ে ঘেরা সমুদ্রের একদম কোল ঘেষে থাকা তানাহ লট হচ্ছে তীর্থযাত্রীদের কাছে একটি অত্যন্তই পবিত্রতম স্থান।

এখানে আপনি দেখতে পাবেন তিনটি পাহাড়ের চূড়ায় থাকা প্রায় দেড় হাজার বছরের পুরনো  দৃষ্টিনন্দন তিনটি মন্দির। মন্দিরগুলোর স্থাপত্যশৈলী আর শান্ত পরিবেশ আপনার  মনকে একদম স্নিগ্ধতায় ভড়িয়ে দেবে। জোয়ারের সময় মূলত এই মন্দিরগুলো ভূমি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। আর তখন এগুলো ঠিক যেন পদ্মফুলের মত করে ভাসতে থাকে। কি অসাধারণ একটি দৃশ্য! যা আপনি বালিতেই উপভোগ করতে পারবেন।

এছাড়াও আপনি দেখবেন বালিতে আসা পর্যটকদের কেনাকাটার জন্য  এখানে সুকাওয়াতি মার্কেট নামে বেশ প্রসিদ্ধ একটি মার্কেট রয়েছে। এই মার্কেটে থাকা বড় বড় সব আর্ট গ্যালারি, কাঠ এবং পাথরের ভাস্কর্য পর্যটকদের কিন্তু বিশেষভাবে নজর কাড়ে। আর এ কারণে মূলত এটি সারা বিশ্বের মাঝে আর্ট মার্কেট হিসেবে বেশ সুপরিচিতি লাভ করেছে।

শেষকথা :

ঢাকা থেকে বালিতে যাওয়ার জন্যে আপনি সরাসরি কোন ফ্লাইট পাবেন না। এক্ষেত্রে মালেশিয়া বা সিঙ্গাপুরে ট্রানজিট হয়ে যাওয়া লাগবে। কুয়ালামপুরে ট্রানজিটসহ আপনার বালি পৌঁছাতে সময় লাগবে ৬ ঘন্টার মতোন। ইন্দোনেশিয়ার সাথে মূলত বাংলাদেশের সময়ের ব্যবধান হচ্ছে ২ ঘন্টা।

আর একটি ব্যপার হচ্ছে, বালির আবহাওয়া সারা বছরই বেশ চমৎকার থাকে। কিন্তু এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাস হচ্ছে এই দ্বীপটি ভ্রমণের জন্য একদম আদর্শ সময়। আবার এপ্রিল ও মে অথবা অক্টোবর হতে ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে বালি ভ্রমণ করলে আপনি বৃষ্টি এবং পর্যটকদের ভিড় অনেকাংশেই এড়াতে পারবেন। মার্চ থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে আপনার অভিজ্ঞতা হতে পারে ভারী বৃষ্টিপাতের। অর্থাৎ ভ্রমণার্থীদের শুষ্ক মরশুমেই(এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর) মূলত এই দ্বীপটিতে পরিভ্রমণের জন্যে বেছে নেওয়া উচিৎ কাজ হবে।

আর একটা ব্যপার হচ্ছে যে প্রচুর পরিমাণ মানুষ কিন্তু এই সময় বালি পরিদর্শনে আসে। যার ফলে দেখা যায় এ সময় জিনিষপত্রের মূল্য বৃদ্ধির ঝোঁক বেশ অনেকটাই বেড়ে যায় এবং পর্যটনস্থলগুলিও কিন্তু বেশ একটা ঘনসন্নিবিষ্ট হয়ে ওঠে। সব রকম প্রস্তুতি নিয়ে আসবেন এখানে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখবেন। আপনার একটা সুন্দর ভ্রমনের প্রত্যাশায়..

 

 

Related Post

মৃত্যু নিয়ে উক্তি

150+মৃত্যু নিয়ে উক্তি, বাণী, ক্যাপশন 2024

মৃত্যু নিয়ে উক্তি জন্মিলে মরিতে হবে আর এটাই সত্যি। মৃত্যু হচ্ছে সবচেয়ে চিরন্তন সত্যি। পৃথিবীতে প্রতিটি প্রাণীর মৃত্যুর স্বাদ অনুভব করতে হবে। সবসময় মৃত্যুর জন্য

Read More »
খুশির স্ট্যাটাস

200+ স্টাইলিশ খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন

খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন জীবনের সুন্দর খুশির মুহূর্ত আমরা সবাই বাঁধাই করে রাখতে চাই। আর এই খুশির মুহূর্তকে ধরে রাখার সবচেয়ে সহজ উপায়

Read More »

স্টাইলিশ ভালোবাসার ছন্দ | রোমান্টিক ছন্দ | Love Status Bangla

❤❤ভালোবাসার ছন্দ | ভালোবাসার ছন্দ রোমান্টিক | ভালোবাসার ছন্দ স্ট্যাটাস❤❤ ভালোবাসা হলো এক অন্যরকম অনুভূতির নাম, যা শুধুমাত্র কাউকে ভালবাসলেই অনুভব করা যায়। আমরা বিভিন্নভাবে

Read More »
মন খারাপের স্ট্যাটাস

মন খারাপের স্ট্যাটাস, উক্তি, ছন্দ, ক্যাপশন, কিছু কথা ও লেখা

মন খারাপের স্ট্যাটাস মন খারাপ – এই কষ্টের অনুভূতি কার না হয়? সবারই কখনো না কখনো সবারই মন খারাপ হয়। জীবনের ছোটোখাটো অঘটন থেকে শুরু

Read More »

Leave a Comment

Table of Contents