চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এর সকল তথ্য
১৯৬৬ সালে সর্বপ্রথম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়। এটি একটি সরকারি বহু অনুষদ ভিত্তিক এবং গবেষণা ভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়। চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলায় বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৭,৫০০ জন।
এবং ২০১৯ সালের হিসাব মতে, বর্তমানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রয়েছেন ৮৭২ জন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় টি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আধার হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ৯ম। এবং পুরো পৃথিবীতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ৩১০১।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান অনস্বীকার্য। সেই সাথে বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদের উত্থানের সময়ও এই বিশ্ববিদ্যালয়টি কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস এবং এর কার্যক্রম সম্পর্কে তুলে ধরব।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস
বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে চট্টগ্রামে নিজস্ব কোন স্থায়ী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না। সেই প্রয়োজনের তাগিদে ১৯৪০ সালের ২৮ ডিসেম্বর সর্বপ্রথম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণের কথা উত্থাপন করা হয়। কলকাতার জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সর্বভারতীয় সম্মেলনে এই প্রস্তাবটি উপস্থাপন করা হয়।
প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন মাওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামবাদী। এবং তার ঠিক ২ বছর পর ১৯৪২ সালের ২৮ শে ফেব্রুয়ারি পুনরায় দাবিটি উত্থাপন করা হয়। এই দাবিটি উত্থাপন করেন নূর আহমদ। ১৯৬০ থেকে ১৯৬৫ সালের মধ্যে চট্টগ্রামে একটি বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ১৯৬৪ সালে পাকিস্তানের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি কর্তৃক অর্থনৈতিক কাউন্সিলের একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সেই সভায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সর্বশেষে ১৯৬৪ সালের ২৯ আগস্ট চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তি পোস্তর স্থাপন করা হয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি আইয়ুব খান।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান
চট্টগ্রাম শহর থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়টি 22 কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। এই বিশ্ববিদ্যালয় টি হাটহাজারী থানার ফতেহপুর ইউনিয়নে ২১০০ সমতল ভূমির উপর অবস্থিত। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি ফতেহপুর ইউনিয়নের জঙ্গল পশ্চিম পট্টি মৌজায় অবস্থিত।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়তন
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার সময় এর আয়তন ছিল ১,৭৫৩.৮৮ একর (৭০৯.৭৭ হেক্টর)। তবে বর্তমানে আরো বিপুল অর্থ খরচ করে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়তন বর্ধিত করা হয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়তন বর্ধিত করার জন্য খরচ হয়েছে ৯ কোটি ৭১ লক্ষ টাকা। উল্লেখ্য ১৯৬৬ সালের ১৮ নভেম্বর থেকে এটি আয়তনের দিক দিয়ে বাংলাদেশের সব থেকে বড় বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে স্বীকৃত।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সংক্ষিপ্ত নাম
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্ষিপ্ত নাম হচ্ছে চবি। ইংরেজিতে chattagram University এর সংক্ষিপ্ত নাম হচ্ছে CU.
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস পরিচিতি
১৯৬৮ থেকে ১৯৬৯ শিক্ষাবসরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট পাঁচটি নতুন বিভাগ চালু করা হয়। বিভাগ গুলো হল: বিজ্ঞান, বাণিজ্য, সমন্বিত গণিত, পরিসংখ্যান, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ইত্যাদি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৬৯ সালে সর্বপ্রথম বিজ্ঞান অনুষদ গঠিত হয়। এবং ১৯৭১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় সমাজবিজ্ঞান এবং বাণিজ্য অনুষদ।
২০১০ সালের হিসাব অনুযায়ী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ টি অনুষদ চালু রয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ১১ টি অধিভুক্ত কলেজ রয়েছে। বর্তমানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন অনুষদের মাধ্যমে ৩৬ টি বিভাগে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে ৩ লক্ষের অধিক বই সংরক্ষিত করা রয়েছে। এবং ৩৫০০ রকমের পত্রপত্রিকা সংরক্ষণ করা হয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব জাদুঘর রয়েছে। এই জাদুঘরে চট্টগ্রামের পুরাকীর্তি সংরক্ষণ করা হয়।
২০১০ সালের হিসাব অনুযায়ী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় মোট ৯ টি আবাসিক হল রয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং কর্মচারীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ভবন রয়েছে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টির কর্মচারীর সংখ্যা ১৯৪৭ জন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিট পরিচিতি
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ৫টি ইউনিটের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। ইউনিটগুলো হল: এ ইউনিট, বি ইউনিট, বই ১ ইউনিট, সি ইউনিট এবং ডি ইউনিট। এই ইউনিটগুলো বিভক্ত হয়ে ৩৬ টি আলাদা আলাদা বিভাগে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এ ইউনিটে রয়েছে সকল ধরনের বিজ্ঞান এবং জীববিজ্ঞান ইউনিট। বি তে রয়েছে কলা এবং মানবিক অনুষদ। বি ১ ইউনিট হল উপ ইউনিট। সি ইউনিটগুলো রয়েছে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ। এবং ডি ইউনিটে রয়েছে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সমস্ত বিভাগ।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ও বিভাগসমূহ আসন সংখ্যা
‘এ ইউনিট’ হল বিজ্ঞান অনুষদ।
বিভাগ | বিভিন্ন গ্রুপের জন্য নির্ধারিত আসন সংখ্যা | |||
বিজ্ঞান | বাণিজ্য | মানবিক | আসন সংখ্যা | |
পদার্থবিজ্ঞান | ১১০ | —- | —- | ১১০ |
রসায়ন | ১১০ | —- | —- | ১১০ |
গণিত | ১১০ | —– | —– | ১১০ |
পরিসংখ্যান | ১১০ | —- | —- | ১১০ |
বিজ্ঞান ও প্রকৌশল | ৬৫ | —– | —- | ৬৫ |
ট্রিপলই | ৫৫ | —– | —– | ৫৫ |
ফলিত রসায়ন এবং ফার্মেসি | ৩০ | —- | —- | ৩০ |
বায়োটেকনোলজি ও পরিবেশ বিজ্ঞান | ৩৫ | ——- | —– | ৩৫ |
মনোবিজ্ঞান | ২২ | ——– | ——- | ২২ |
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বি ইউনিট’ হল কলা ও মানবিক অনুষদ। এখানে রয়েছে সামাজিক অনুষদ এবং আইন অনুষদ।
বিভাগ | বিভিন্ন গ্রুপের জন্য নির্ধারিত আসন সংখ্যা | |||
বিজ্ঞান | বাণিজ্য | মানবিক | আসন সংখ্যা | |
দর্শন ও ইতিহাস | ৪০ | ৪০ | ৪০ | ১২০ |
ইসলামে সংস্কৃতি | ৫০ | ৩০ | ৪০ | ১২০ |
আরবি | ৫০ | ৩০ | ৪০ | ১২০ |
বাংলা ও ইংরেজি | ৪০ | ৪০ | ৩০ | ১১০ |
সংস্কৃত | ৩০ | ২৫ | ৩০ | ৮৫ |
ফারসি ভাষা | ৫০ | ৫০ | ||
বাংলা স্টাডিজ | ৫০ | ৫০ | ৫০ | |
নাট্যকলা | ৩৫ | ৩৫ | ||
সংগীত | ৩০ | ৩০ |
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সি ইউনিট’ হল বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ।
বিভাগ | বিভিন্ন গ্রুপের জন্য নির্ধারিত আসন সংখ্যা | |||
বিজ্ঞান | বাণিজ্য | মানবিক | আসন সংখ্যা | |
একাউন্টিং | ১০ | ০৭ | ৭০ | ৮৭ |
ম্যানেজমেন্ট | ১০ | ৫ | ৫০ | ৬৫ |
ফাইন্যান্স | ১৫ | ১০ | ৭০ | ৯৫ |
মার্কেটিং | ০৭ | ৫ | ৬৫ | ৭৭ |
ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্সে | ০৭ | ১০ | ৫০ | ৬৭ |
হিউম্যান রিসোর্স এন্ড ম্যানেজমেন্ট | ১০ | ১০ | ৩০ | ৫০ |
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমির তথ্য
৩৬৫ দিনের মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছুটি থাকে ৫১ দিন। এই ৫১ দিন ও শনিবার ছাড়া সাপ্তাহিক অন্যান্য ছুটি ছুটি এবং উপাচার্য মহোদয়ের ছুটি থাকে সব মিলিয়ে আরো পাঁচ দিন। তাহলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাবর্ষের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী সেখানে ছুটি থাকে মোট ৫৬ দিন। তবে এই ছুটি আরও কিছুটা বেড়ে যায় যখন বিভিন্ন রকমের পূজা এবং ঈদুল ফিতরের সঙ্গে যুক্ত হয়। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছুটির সংখ্যা কম। তাই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিস্টার ভিত্তিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে খুব বেশি বেগ পেতে হয় না। তবে বন বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধের কিছুদিন আগে যদি সে মিশ্র ভিত্তিক পরীক্ষায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা তাহলে সেই পরীক্ষাগুলো বন্ধের কারণে অনেকটা পিছিয়ে যায়। সেক্ষেত্রে সেমিস্টার ভিত্তিক পরীক্ষা শেষ হতে এক মাসের বেশি সময় লাগতে পারে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ঈদ উল আযহা এবং বিভিন্ন ধর্মীয় দিবস উপলক্ষে প্রায় ১৪ দিনের মতো বন্ধ থাকে। সেখানে শীতকালীন বন্ধ থাকে মাত্র ৫ দিন। কিন্তু ঈদুল ফিতর এবং গ্রীষ্মকালীন ছুটির মিলিয়ে প্রায় ৩০ দিনের মতো বন্ধ থাকে। এ সময় সেমিস্টার থেকে পরীক্ষা অনেকটা পিছিয়ে যায়। এছাড়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব কিছু ছুটি থাকে সারা বছর। যেমন শিক্ষা ট্যুর, ভর্তি পরীক্ষা, সমাবর্তন, বিভিন্ন রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের ফলে আন্দোলন, শিক্ষার্থীদের নিজস্ব আন্দোলন, টিচার্স ডে ইত্যাদি মিলিয়ে আরো প্রায় ২০ থেকে ২৫ দিন ক্লাস বন্ধ থাকে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর সংখ্যা
আয়তনের দিক দিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের সব থেকে বড় শিক্ষাঙ্গন হিসেবে বিবেচিত। ২০১৯ সালের সর্বশেষ হিসাব মতে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর সংখ্যা রয়েছে প্রায় ২৭৫০০ জন। এবং সেখানে বর্তমানে শিক্ষকের সংখ্যা রয়েছে ৮৭২ জন। তবে বর্তমানে বিপুল টাকা খরচ করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়তন বর্ধিত করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে নতুন হিসাব মতে এখানে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকের সংখ্যা উভয়ই বৃদ্ধি পেয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয় মোট ৫ টি অনুষদ রয়েছে। এবং সেখানে ৩৬ টি বিভাগে আলাদা আলাদা ভাবে শিক্ষা বিতরণ করা হয়।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার আবেদন যোগ্যতা
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি হওয়ার জন্য পাঁচটি ইউনিটে আবেদন করা যায়। সাধারণত যারা এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন তারা ভর্তি পরীক্ষার জন্য আবেদন করতে পারবেন। ‘এ ইউনিটে’ আবেদন করার জন্য এসএসসি এবং এইচএসসি দুইটি পরীক্ষা মিলে চতুর্থ বিষয় সহ ৮.০০ থাকতে হবে। এবং দুটি পরীক্ষাতেই আলাদা আলাদা ভাবে ৪.০০ পেতে হবে।
‘বি ইউনিট’ অথবা ‘বি১ ইউনিটে’ আবেদন করার জন্য এসএসসি এবং এইচএসসি দুইটি পরীক্ষায় চতুর্থ বিষয় সহ ৮.০০ থাকতে হবে। এবং প্রত্যেক পরীক্ষায় আলাদা হবে ৩.৫০ অবশ্যই পেতে হবে। মানবিক বিষয়ে আবেদন করার জন্য আপনার এসএসসি এবং এইচএসসি দুটি পরীক্ষা মিলে ৭. ৫০ থাকতে হবে। এবং এই পরীক্ষায় আলাদাভাবে ৩.৫০ পেতে হবে। ব্যবসা বিভাগে আবেদন করার জন্য এসএসসি এবং এইচএসসি মিলে ৮.০০ থাকতে হবে। এবং এই দুটি পরীক্ষায় আলাদাভাবে অবশ্যই ৩.৫০ পেতে হবে।
‘ সি ইউনিটে’ আবেদন করার জন্য এসএসসি এবং এইচএসসি মিলে চতুর্থ বিষয় সহ ৮.০০ থাকতে হবে। এবং আলাদাভাবে প্রত্যেক পরীক্ষার পয়েন্ট থাকতে হবে ৩.৫০। এবং সর্বশেষ ‘ডি ইউনিটে’ আবেদন করার জন্য চতুর্থ বিষয় সহ ৬.০০ থাকতে হবে।
পরীক্ষার ধরন ও ইউনিট ভিত্তিক মানব বন্টন
ভর্তি পরীক্ষার জন্য সকল ইউনিটে মোটামুটি ১০০ নম্বরের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এই পরীক্ষায় কোনরূপ লিখিত কিছু জমা দিতে হয় না। সম্পূর্ণ পরীক্ষাটি mcq এর মাধ্যমে সম্পাদিত হয়। বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য বিজ্ঞানের তিনটি বিষয় নিয়ে সর্বমোট ৪০ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে। বিষয়গুলো হলো পদার্থবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান এবং আইসিটি। তবে জীববিজ্ঞান এর প্রশ্নের উত্তর অবশ্যই দিতে হবে। এবং গণিত ও আইসিটি এই দুইটির মধ্যে যেকোনো একটির উত্তর দিলে হবে। বাংলা বিষয়ের দশ নম্বর এবং ইংরেজি বিষয়ে দশ নম্বর মিলে সর্বমোট ২০ নম্বর এর mcq থাকবে।
বাণিজ্য বিষয় ও এর ব্যতিক্রম না। বাণিজ্যের সব বিষয়গুলো মিলে মোট ১০০ নম্বরের প্রশ্ন হবে। উত্তর দিতে হবে হিসাববিজ্ঞান, বিজনেস অর্গানাইজেশন, ম্যানেজমেন্ট, আইসিটি, বাংলা ও ইংরেজি ইত্যাদি বিষয়ের। হিসাব বিজ্ঞান থেকে ২৫ নম্বর এর উত্তর দিতে হবে। এবং বিজনেস অর্গানাইজেশন থেকে ২৫ নম্বরে উত্তর দিতে হবে। আর বাকি বিষয়গুলো মিলে আরো ৫০ নম্বরের উত্তর দিতে হবে।
মানবিক বিভাগে বাংলায় ইংরেজি ও আইসিটি বিষয়ের প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। ভুল উত্তরের জন্য ২.৫ নাম্বার করে কাটা যাবে। তাই প্রশ্ন না পারলে ফাঁকা রাখতে হবে। এবং অবশ্যই ঠিক উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
পরীক্ষার সময় ও তারিখ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ভর্তি পরীক্ষার সময় এবং তারিখ জানতে এই ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন :
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপত্র ডাউনলোড
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপত্র ডাউনলোড করতে ভিজিট করুন
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি সার্কুলার
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি সার্কুলার জানতে প্রবেশ করুন এই লিংকে:
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পদ্ধতি
বর্তমানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় গুপ্ত পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে থাকে। প্রতিবছর বিশ্ববিদ্যালয়তে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার মাধ্যমে শিক্ষার্থী নির্বাচন করে থাকে। এ পদ্ধতিতে ১০০ নম্বরের মধ্যে মোট ২০ নম্বর শিক্ষার্থীদের এসএসসি এবং এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের উপর নির্ভর করে। এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার এই ২০ নম্বর মেধা তালিকায় শিক্ষার্থীদের এগিয়ে রাখতে সাহায্য করে।
অর্থাৎ যাদের এসএসসি এবং এইচএসসি রেজাল্ট ভালো তারা মেধা তালিকায় অন্যদের থেকে এগিয়ে থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তাই যাদের এসএসসি এবং এইচএসসি রেজাল্ট তুলনামূলক খারাপ তাদের অবশ্যই অন্যদের থেকে ভালো ফলাফল করতে হয়। তাহলে তারা এই নম্বরের মাধ্যমে মেধাতালিকায় এগিয়ে থাকবে।
আবেদনের খরচ
বর্তমানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন ফ্রি নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০০ টাকা।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের তালিকা
উপাচার্য | দায়িত্ব গ্রহণ | দায়িত্ব হস্তান্তর |
অধ্যাপক মোঃ ফজলী হোসেন | ১৪-২-২০০১ | ২-২-২০০২ |
অধ্যাপক এ জে এম নুরুদ্দিন চৌধুরী | ২-২-২০০২ | ২-২-২০০৬ |
অধ্যাপক এম বদিউল আলম | ৩-২-২০০৬ | ২৪-২-২০০৯ |
অধ্যাপক আবু ইউসুফ | ২৫-২-২০০৯ | ২৮-১১-২০১০ |
অধ্যাপক মোহাম্মদ আলাউদ্দিন | ৯-১২-২০১০ | ১৪-৬-২০১১ |
ডক্টর ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী | ১৫-৬-২০১১ | ১-৬-২০১৫ |
ডক্টর শিরীন আক্তার | ৩-১১-২০১৯ | বর্তমান |
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমী ভবন
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কিছু একাডেমিক ভবন রয়েছে। সেগুলো হলো:
- কলা ও মানববিদ্যা অনুষদ।
- জীববিজ্ঞান অনুষদ।
- ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ।
- শিক্ষা অনুষদ।
- প্রকৌশল অনুষদ।
- আইন অনুষদ।
- বিজ্ঞান অনুষদ।
- সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরী
চট্টগ্রামের সব থেকে বড় গ্রন্থাগার হলো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার 966 সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়। বর্তমানে এই গ্রন্থাগারের পুস্তকের সংখ্যা রয়েছে চার লক্ষেরও বেশি। এই গ্রন্থাগারটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়কে অবস্থিত। এখানে বই ছাড়াও সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন, সাময়িকী, মানচিত্র এবং পান্ডুলিপি সংরক্ষণ করা হয়।
এই গ্রন্থাগারের পরিচালকের নাম হল ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী। এই গ্রন্থাগারে আড়াইশো বছরেরও বেশি পুরনো পান্ডুলিপি, হাতে তৈরি তুলট কাগজ, তাল পাতা বা বাঁশের উপরে বিভিন্ন ভাষায় লেখা পান্ডুলিপি সংরক্ষণ করে রাখা হয়। এখানে আব্দুল করিম সাহিত্য বিশারদ এর বহু পুরনো বইগুলো সংরক্ষণ করে রাখা আছে। ১৮৭২ থেকে ১৯৫৩ সালের মধ্যে যেসব সাময়িকী প্রকাশ করা হয়েছে সেই সবগুলো সাময়িকী এখানে সংরক্ষিত রয়েছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ১০ টি হলের মধ্যে ছয়টি ছেলেদের এবং তিনটি মেয়েদের হল রয়েছে। এবং একটি হল ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের জন্যই ব্যবহার করা হয়।
ছেলেদের হলের নাম | মেয়েদের হলের নাম | কো এড হলেন নাম |
শাহজালাল হল | শামসুন্নাহার হল | মাস্টারদা সূর্যসেন হল |
আলাওল হল | প্রীতিলতা হন | |
আব্দুর রব হল | খালেদা জিয়া হল | |
সোহরাওয়ার্দী হল | ||
এফ আর হল | ||
শাহ আমানত হল |
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি খরচ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়ার পর প্রথম বছর খরচ হতে পারে প্রায় ১৫,০০০ টাকার মত। এবং এই টাকাটা পরিশোধ করতে হয় সাধারণত দুটি ধাপে। প্রতি বছর নতুন ক্লাসে ভর্তি হতে ২০০০ টাকা খরচ হয়। পরীক্ষার ফি ১৮ ০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদটি ২০২২ সালের ৩১ শে মার্চ উদ্বোধন করা হয়। পি এইচ পি এর আর্থিক সহযোগিতায় মসজিদটির নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। মসজিদটি চট্টগ্রাম বিজ্ঞান অনুষদের পাশে অবস্থিত। মিশানোর সালাম নামে মসজিদটি পরিচিত হয়েছে। ঈদের দিনে প্রচুর পরিমাণে মুসল্লি এখানে সমবেত হয়ে একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারে। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দিকে বিবেচনা করে এটি বাংলাদেশের একটি অন্যতম বৃহত্তম মসজিদ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট
যোগাযোগ
বিজ্ঞান অনুষদের নাম্বার
01555555135
বায়োলজিক্যাল সাইন্স ডিপার্টমেন্ট এর নাম্বার
01555555142
ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির নাম্বার
01555555156
চিত্রকলা অনুষদের নাম্বার
01555555136
ব্যবসায় অনুষদের নাম্বার
01555555137
বায়োলজিক্যাল সাইন্স ডিপার্টমেন্ট এর নাম্বার
01555555142
ইমেইল:admission@cu.ac.bd
অফিসিয়াল এসএমএস নাম্বার হল:
01708404777,01841644355
সবশেষে
যারা ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক তারা তাদের পছন্দের তালিকায় অবশ্যই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে রাখতে পারেন। কারণ পড়াশোনার জন্য প্রাকৃতিক এবং খোলামেলা পরিবেশ প্রয়োজন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এক্ষেত্রে পড়াশোনার জন্য খুবই উপযোগী একটা পরিবেশ। আশা করছি আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
Reference: https://cu.ac.bd/
Also Read: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়