Dreamy Media BD

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এর সকল তথ্য

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় :

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। এটি বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের খুলনা শহরে অবস্থিত। ১৯৮৭ সালের ৪ জানুয়ারি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে সরকারি সিদ্ধান্ত প্রকাশিত হয়। ১৯৯১ সালের ২৫ নভেম্বর  আনুষ্ঠানিকভাবে ৪টি ডিসিপ্লিনের ৮০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে ৬টি স্কুল ও ২টি ইনস্টিটিউট এ প্রায় ৭০০০ হাজার স্টুডেন্ট রয়েছে এবং প্রতিবছর ২৯টি ডিসিপ্লিনে স্টুডেন্ট ভর্তি নেয়া হয়। এটি বাংলাদেশের একমাত্র রাজনীতিমুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে ছাত্র-ছাত্রীরা নির্বিঘ্নে পড়াশোনা করতে পারে।

এক নজরে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস

 ড. কুদরত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশন রিপোর্ট অনুযায়ী ১৯৭৪ সালে  খুলনা বিভাগে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সুপারি জানানো হয়। ১০ নভেম্বর ১৯৭৯ সালে খুলনায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ইউজিসি ৫(১) ধারা  অনুযায়ী ১৯৮৩ সালে খুলনা বিভাগে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার  জন্য প্রস্তাবনা করা হয়। ১৬ই ডিসেম্বর, ১৯৮৬ সালে খুলনায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে  চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং চার জানুয়ারি ১৯৮৭ সালে ফাইনালি সিদ্ধান্ত ঘোষণা হয়। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হোসেন মোহাম্মদ এরশাদ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন ১৯৮৯ সালের ২৯ মার্চ। ১ আগস্ট ১৯৮৯ সালে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম প্রকল্প পরিচালক হিসেবে এবং প্রথম উপাচার্য হিসেবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ পান। ফাইনালি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। ১৯৯১ সাল থেকেই মাত্র চারটি ডিসিপ্লিনের ৮০ জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম  শুরু হয়।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান

 খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় খুলনা মহানগরী থেকে পশ্চিমে তিন কিলোমিটার, ময়ূর নদীর পাশে খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়ক সংলগ্ন রোডে গল্লামারিতে অবস্থিত।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়তন

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়তন ১০৫.৭৫ একর।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্ষিপ্ত নাম

 খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্ষিপ্ত নাম খুবি।

একনজরে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন ও অনুষদ সমূহ  

 

অনুষদ  বিভাগ আসন সংখ্যা (সংরক্ষিত সহ)
বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদ স্থাপত্য বিভাগ ৩৭
নগর ও গ্রামীণ পরিকল্পনা বিভাগ ৪০
ইলেক্ট্রনিক্স ও যোগাযোগ প্রকৌশল বিভাগ ৩৭
কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ৪০
রসায়ন বিভাগ ৪০
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ ৪০
পরিসংখ্যান বিভাগ ৪০
গণিত বিভাগ ৪০
মোট ৩২০(সংরক্ষিত ৬টি)
জীববিজ্ঞান অনুষদ ফিশারীজ ও মেরিন রিসোর্স টেকনোলজি বিভাগ ৪০
বনায়ন ও কাঠ প্রযুক্তি বিভাগ ৪০
কৃষি প্রযুক্তি বিভাগ ৪০
পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ ৪০
মাটি, পানি ও পরিবেশ বিভাগ ৪০
ফার্মেসি বিভাগ ৪০
জীবপ্রযুক্তি ও জিন প্রকৌশল বিভাগ ৪০
মোট ২৮১(সংরক্ষিত ১টি)
ব্যবস্থাপনা ও ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগ ৪৭
মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ ৪০
মোট ৮৮(সংরক্ষিত ১টি)
কলা ও মানবিক অনুষদ ইংরেজি ও ভাষা সাহিত্য বিভাগ ৪৫
বাংলা ও ভাষা সাহিত্য বিভাগ ৪৫
ইতিহাস ও সভ্যতা ৪০
মোট ১৩১(সংরক্ষিত ১টি)
সমাজবিজ্ঞান অনুষদ অর্থনীতি  বিভাগ ৪০
সমাজবিজ্ঞান বিভাগ ৪০
ডেভেলপমেন্ট স্ট্যাডিজ বিভাগ ৪০
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ ৪০
মোট ১৬১(সংরক্ষিত ১টি)
আইন অনুষদ আইন বিভাগ ৪০
মোট ৪১(সংরক্ষিত ১টি)
চারুকলা অনুষদ  চিত্রণ ও অংকন ২০
মুদ্রণ তৈরি ২০
স্কাল্পচার বা ভাস্কর্য ২০
মোট ৬১(সংরক্ষিত ১টি)
সর্বমোট   ১১০৯টি

 

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক তথ্য

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা সেমিস্টার অনুযায়ী হয় এখানে দুইটি সেমিস্টার রয়েছে। প্রতিটি সেমিস্টার ৬ মাসের হয়ে থাকে জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত প্রথম সেমিস্টার  এবং  জুলাই থেকে ডিসেম্বর দ্বিতীয় সেমিস্টার। প্রতি সেমিস্টার এ ক্লাস হয় ১৩ সপ্তাহ বাকী সপ্তাহে পিএল, পরীক্ষা এবং পরীক্ষার শেষে ছুটি থাকে। এছাড়াও সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন শনিবার ও শুক্রবার  এবং বিভিন্ন সরকারি ছুটিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ছুটিও রয়েছে। এই ছুটির তালিকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটসহ ক্যালেন্ডারে দেওয়া থাকে।

শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর সংখ্যাঃ শিক্ষক সংখ্যা ৫ শতাধিক ও শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৭ হাজার।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি তথ্য

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি যোগ্যতা

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে যে যে যোগ্যতা লাগবে:

  1. এসএসসি ও এইচএসসি তে পদার্থ  ও রসায়নে ৪.০০ থাকতে হবে এবং গুচ্ছতে ৩০% নম্বর থাকতে হবে।
  2. এসএসসি ও এইচএসসি তে মিনিমাম ৩.৫০ পেতে হবে ইংরেজি বিষয়ে।
  3. আইন অনুষদের জন্য ইংরেজিতে ৪.০০ পেতে হবে।
  4. A ইউনিট এ এসএসসি ও ও এইচএসসি মিলিয়ে সাইন্স বিভাগে জিপিএ ৯.৫০ থাকতে হবে। B ইউনিট এ বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে জিপিএ ৯.০০ থাকতে হবে। C ইউনিট এ মানবিক বিভাগ, বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে  জিপিএ  ৯.০০ থাকতে হবে এবং D ইউনিট এ মানবিক বিভাগসহ অন্যান্য বিভাগের জন্য জিপিএ ৭ থাকলেই হবে।
  5. ফাইন আর্টস এর জন্য প্রতি পরীক্ষায় ৩০০ টাকা ফি দিতে হবে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির পরীক্ষার আবেদন প্রক্রিয়া

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে kuadmission.online এ গিয়ে আবেদন ফরম পূরণের জন্য ক্লিক করে  Step 1, Step 2, Step 3, Step 4 পূরন করে Submit Your Application বাটনে ক্লিক করত্র হবে এবং q আবেদনকারীর মোবাইলে এসএমএস এর মাধ্যমে User name এবং Password আসবে সেটি সংরক্ষন করা লাগবে।

 এরপর এই User name ও Password দিয়ে Dashboard এ প্রবেশ করে আবেদনকারীর তথ্য দিয়ে, Application মেন্যুতে আপনার আবেদনকৃত ইউনিট ঠিক আছে কিনা দেখতে পারবেন এরপর উক্ত ইউনিটের ফি পরিশোধ করে পেমেন্ট স্লিপ সংরক্ষন করবেন। ফি চাইলে রকেট বা বিকাশের মাধ্যমে দিতে পারবেন।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার মানবন্টন

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে সেকেন্ড টাইম আছে। SSC ও HSC রেজাল্ট এর উপর কোন নম্বর নেই। পরীক্ষার সময় এক ঘন্টা। 

বিষয়ভিত্তিক নম্বর। 

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিট A

ইউনিট A

বিষয় নম্বর
ইংরেজি ২০
গণিত ২০
জীববিজ্ঞান ২০
রসায়ন বিজ্ঞান ২০
এ্যানালিটিকাল এ্যাবাইলিটি ২০
পদার্থবিজ্ঞান ২০

এ ছয়টি বিষয় থেকে যেকোন ৫টি মোট ১০০ নম্বরের উত্তর দিতে হবে। জীববিজ্ঞানের উত্তর না দিয়ে এ্যানালিটিকাল এ্যাবাইলিটি উত্তর দিলে জীববিজ্ঞান স্কুল বাদে সব সাবজেক্ট পাবে আর এ্যানালিটিকাল বাদে সবগুলোর উত্তর করলে জীববিজ্ঞান স্কুল ও জীব, প্রকৌশল ও প্রযুক্তিবিদ্যা স্কুল দুটোরই সব সাবজেক্ট পাবে।

 

খুলনা ইউনিভার্সিটি ইউনিট B 

ইউনিট B

বিষয় নম্বর
বাংলা ৩০
ইংরেজি ৫০
সাধারন জ্ঞান ৪০

 

খুলনা ইউনিভার্সিটি ইউনিট C

 

ইউনিট C

বিষয় নম্বর
বাংলা ১০
ইংরেজি ৫০
রসায়ন ১০
পদার্থবিজ্ঞান ১০
হিসাববিজ্ঞান ১০
ব্যবসায় সংগঠন ১০
অর্থনীতি ১০
পৌরনীতি ১০

 

বাংলা ও ইংরেজি সব শাখার জন্য। বিজ্ঞান শাখার জন্য রসায়ন ১০ ও পদার্থবিজ্ঞান ১০ নম্বরের উত্তর দিতে হবে। ব্যবসায় শাখার জন্য হিসাববিজ্ঞান ১০ ও ব্যবসায় সংগঠন ১০ নম্বরের উত্তর দিতে হবে এবং অর্থনীতি ১০ ও পৌরনীতি ১০ নম্বর থাকবে মোট ৮০ নম্বরের উত্তর দিতে হবে।

 

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় D ইউনিট

 

ইউনিট D

বিষয় নম্বর
বাংলা ১০
ইংরেজি ১০
সাধারন জ্ঞান ১০
শিল্প-সংস্কৃতি ২০
অংকন ৩০
নকশা ২০

 

এইখানে মোট ৫টি বিষয়ের উপর পরীক্ষা দিতে হবে।

এখানে ভর্তি পরীক্ষায় নেগেটিভ নম্বর আছে। একটি ভুল উত্তরের জন্য. ২৫ নম্বর কেটে যাবে। পাস করতে  প্রতিটি বিষয়ে ন্যূনতম ৩০% নম্বর পেতে হবে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পদ্ধতি

  • মাধ্যমিক বা সমমান  এবং উচ্চমাধ্যমিক বা সমমান এর মার্কশিট ও মূল সনদ।
  • মূল সনদ না থাকলে প্রশংসাপত্র দিতে হবে।
  • উপজাতীয়দের জন্য যে কলেজ থেকে পাস করেছে সেই কলেজের মূল সনদ যা অধ্যক্ষ দেবে। চেয়ারম্যান এর থেকে ইউনিয়ন পরিষদের মূল সনদ এবং সনদটি স্থানীয় উপজেলা নির্বাহীর থেকে সত্যয়িত করে নিতে হবে।
  • কোটা থাকলে নির্দিষ্ট কোটার সনদ দিতে  হবে। 
  • সবশেষে সনদগুলি যাচাই করে ভর্তি করবে এবং ফি জমা দিতে হবে তবেই এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হবে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রবেশপত্র ডাউনলোড 

 প্রবেশপত্র ডাউনলোড করার জন্য <www.ku.ac.bd> এই ওয়েবসাইটে গিয়ে প্রবেশপত্র ডাউনলোড করার জন্য যেসব নিয়মাবলি থাকবে সেগুলো মেনে ডাউনলোড করতে হবে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি সার্কুলার

 ভর্তির জন্য https://gstadmissio.ac.bd এই লিংকে গিয়ে আবেদন করতে হবে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার তারিখ

 খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি সংশ্লিষ্ট সকল তথ্য খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াবসাইট <www.ku.ac.bd> এ পাওয়া যাবে।

 খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের তালিকা

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য  অধ্যাপক গোলাম রহমান যিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন।

 

ক্রম নাম দায়িত্বগ্রহণ-

দায়িত্ব হস্তান্তর

ড. গোলাম রহমান

(প্রকল্প পরিচালক ও প্রথম উপাচার্য) 

(০১-০৮-১৯৮৯)-(২২-০৮-১৯৯৩)
ড. মুহাম্মদ গোলাম আলী ফকির (২৩-০৮-১৯৯৩)-(২২-০৮-১৯৯৭)
ড. এস. এম. নজরুল ইসলাম (২৩-০৮-১৯৯৭)-(২২-০৮-২০০১)
ড. জাফর রেজা খান (২৯-০৮-২০০১)-(১৮-১১-২০০১)
ড. এম আব্দুল কাদির ভুঁইয়া  (১৯-১১-২০০১)-(২০-০৩-২০০৫)
ড. মো: মাহবুবুর রহমান (২১-০৩-২০০৫)-(০২-০৩-২০০৮)
ড. মো: সাইফুদ্দিন শাহ (০৩-০৩-২০০৮)-(১৬-১১-২০১২)
ড. মো: ফায়েক উজ্জামান (ভারপ্রাপ্ত)  (০১-১১-২০১২)-(০৯-০১-২১৩)
ড. মো: ফায়েক উজ্জামান (১০-০১-২০১৩)-(২৯-০১-২০২১)
১০ ড. মাহমুদ হোসেন (২৫-০৫-২০২১) থেকে বর্তমান 
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক ভবন সমূহ

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩টি একাডেমিক ভবন রয়েছে। সেগুলো হলো ড. সত্যেন্দ্রনাথ বসূ একাডেমিক ভবন, আচার্য জগদীশচন্দ্র একাডেমিক ভবন ও কবি জীবনানন্দ দাশ একাডেমিক ভবন।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরি

 খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে পড়াশোনার জন্য চমৎকার পরিবেশ। এর নাম কাজী নজরুল ইসলাম লাইব্রেরি। গবেষনার উপর ফোকাস রেখে এখানে বিভিন্ন সাময়িকী, জার্নাল, বই রয়েছে। সব ডিসিপ্লিনের বই এখানে রয়েছে সুসজ্জিতভাভে। চাইলেই এখানে এসে বই পড়তে পারেন আবার নিয়েও যেতে পারেন সেক্ষেত্রে লাইব্রেরি কার্ড প্রয়োজন। এছাড়াও অনলাইনভিত্তিক পড়াশোনা করার সুযোগও রয়েছে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক হল সমূহ

ছেলেদের হল 

ছেলেদের মোট ৩টি হল। হলো গুলো চলুন একনজরে দেখে নেই:-

 

হলের নাম আসনসংখ্যা 
খান জাহান আলী হল  ৪০৪
খান বাহাদুর আহসানুল্লাহ হল  ৩৮৪
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল  ৫৭৬

 

মেয়েদের হল: মেয়েদের হল মাত্র দুইটি।

 

হলের নাম  আসনসংখ্যা 
অপরাজিতা হল  ৫৭৬
বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল  ৪৩২

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির খরচ

 খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সরকারি হলেও এখানে ভর্তি হতে বেশ টাকা লাগে প্রায় ১৩০০০-১৬০০০। ইউনিট অনুযায়ী এর ভিন্নতা থাকবে যা ফলাফল হওয়ার পর ভর্তি সার্কুলারে দেয়া থাকবে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ার খরচ

সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হলেও প্রতি সেমিস্টারে ৪-৬ হাজার টাকা সেমিস্টার ফি দিতে হয়।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থাকা খাওয়ার খরচ

হলে থাকতে প্রতিবছর মাত্র ১২০০ টাকা দিতে হয় ভার্সিটি কর্তৃপক্ষকে। যারা হলে থাকে তারা যদি হলের ক্যান্টিনে না খেয়ে রান্না করে খায় তবে মাসিক খরচ ৩-৪ হাজার লাগবে। আর যারা হলের বাইরে মেসে থাকে তাদের খরচ একটু বেশি হবে। তবে সঠিকভাবে জানতে হলে সংশ্লিষ্ট ছাত্র-ছাত্রীদের থেকে জানতে হবে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় টিএসসি এবং ক্যাফেটেরিয়া

টিএসসি নির্মাণাধীন রয়েছে। ৭ নভেম্বর ২০২১ এটি নির্মাণের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। আশা করা যায় দুইবছরে কাজ শেষ হবে। পদ্মার এপারে এটিই হবে সবচেয়ে বড় ছাত্র-শিক্ষক মিলনায়তন। 

পুরাতন ক্যাফেটেরিয়া ভেঙে নতুন ক্যাফেটেরিয়া হয়েছে। স্টুডেন্টরা এখানে সুলভমূল্যে খাবার খেয়ে থাকে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয় অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য 
  • ডরমেটরি: খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৪৫% স্টুডেন্টদের জন্য থাকার ব্যবস্থা রয়েছে বাকী ৫৫% বাইরে মেসে বা হোস্টেলে থাকে। এখানে আবাসন ব্যবস্থা পর্যাপ্ত নয় তবে সুব্যবস্থা রয়েছে। টিচার্সদের জন্য আবাসন ব্যবস্থা রয়েছে তবে সীমাবদ্ধ।
  • কেন্দ্রীয় মসজিদ: এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ যেমন নয়নাভিরাম তেমনি মনোমুগ্ধকর। স্টুডেন্ট সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় মসজিদটি বড় করা হয়েছে এতে ছাত্রদের পাশাপাশি দুর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসে নামাজ পড়তে। তাছাড়া মেয়েদের জন্য আলাদা জায়গা রয়েছে নামাজের জন্য।
  • মিলনায়তন: জগদীশচন্দ্র বসূ একাডেমিক ভবনের চার তলায় সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তন। এখানে বিভিন্ন প্রোগ্রাম হয়ে থাকে। নবীন বরন, বিদায় অনুষ্ঠানসহ গবেষনা, শিক্ষা কর্মসূচী ইত্যাদি।
  • উপাচার্যের বাসভবন: ভার্সিটির গেট দিয়ে একটু এগিয়ে বাম দিকে যাওয়ার পথেই উপাচার্য ভবনটি রয়েছে। ভবনটি প্রাচীর দিয়ে ঘেরা এবং ভবনটির সামনে রয়েছে মনমাতানো ফুলের বাগান।
  • ব্যাংক এবং পোস্ট অফিস: প্রশাসনিক ভবনের পেছনেই রয়েছে পোস্ট অফিস ও অগ্রণী ব্যাংক যেখানে প্রতিনিয়ত জরুরি জিনিস পোস্ট করতে ও টাকা তুলতে, জমা দিতে বিভিন্ন দরকারে যেতে হয়।
  • খেলার মাঠ: খান জাহান আলী হলের সামন এবং কেন্দ্রীয় কাজী নজরুল ইসলাম লাইব্রেরীর পেছনে রয়েছে বিশাল বড় খেলার মাঠ। ফুটবল, ক্রিকেট, ভলিবল ইত্যাদি খেলা এই মাঠে হয়ে থাকে।
  • শরীর চর্চা: এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যায়ামাগার রয়েছে যেখানে স্টুডেন্টরা চাইলেই শরীর চর্চা করতে পারে। এটি খেলার মাঠের পাশেই অবস্থিত।
  • মেডিকেল সুবিধা: মেডিকেল সুবিধা খুব ভালো। স্টুডেন্টরা যেকোনো সময় সেবা পেয়ে থাকে। একটি এম্বুলেন্স সবসময় সার্ভিস দেয়ার জন্য নিয়োজিত থাকে। এখানে অন্যান্য চিকিৎসার সাথে দাঁত ও মানসিক স্বাস্থের চিকিৎসাও হয়ে থাকে।
  • ভাস্কার্য: খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ভাস্কর্য রয়েছে যার নাম অদম্য বাংলা। এটি স্থাপনা করেছেন শিল্পী গোপাল চন্দ্র পাল। এই ভাস্কর্যটি স্বাধীনতাকামি মানুষ তথা নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য মুক্তিযুদ্ধে অংশ
  • মসজিদ/মন্দির: এই বিশ্ববিদ্যালয়ে মসজিদ দুইটি। নতুন কেন্দ্রীয় মসজিদটি  আর একটি প্রশাসনিক ভবনের পেছনে তবে দুইটিই নান্দনিক। একটি মন্দির রয়েছে অপরাজিতা হলের সামনে। সবাই তাদের ধর্মানুযায়ী প্রার্থনা করে।
  • স্থাপত্য: একটি শহীদ মিনার রয়েছে এবং একটির নাম কটকা। প্রতিবছর ১১ মার্চ কটকা শোক দিবস পালন করা হয়। ২০০৪ সালে এই দিনে সুন্দরবন বেড়াতে গিয়ে ৯ জন স্থাপত্য ও ২ জন বুয়েটের ছাত্র সুন্দরবনের কটকা প্রান্তে সমুদ্রে ডুবে মারা যায়।
  • সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান: বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয় যেমন পহেলা বৈশাখ, পহেলা ফাল্গুন, পিঠা উৎসব, ডিসিপ্লিন কর্তৃক অনুষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ইত্যাদি।
  • মাস্টার্স প্রোগ্রাম: এই বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স করার জন্য নিয়মিত ও অনিয়মিত উভয়কেই ভর্তি পরীক্ষা বা ভাইবা দিতে হয় এবং মেরিট অনুযায়ী ভর্তি করা হয়। মাস্টার্স প্রোগ্রাম এক থেকে দেড় বছর হয়ে থাকে।
  • সান্ধ্যকালীন কোর্স: এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সান্ধ্যকালীন কোর্স। রয়েছে তবে অনেক ব্যয়বহুল। ডিসিপ্লিন অনুযায়ী এক থেক দুই লাখ টাকা খরচ হয়।
  • খেলাধুলা: ক্রিকেট, ভলিবল, ফুটবল, ব্যাডমিন্টন, দাবা ইত্যাদি খেলার আয়োজন করা হয়।
  • মুক্তিযুদ্ধে অবদান: ১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় এটি ছিল বধ্যভূমি। এখানে বেহিসাব শহীদের কবর রয়েছে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় যাওয়ার উপায়

দেশের যেকোন জায়গা থেকে আপনি আসতে চান তবে তিনটি উপায়ে আসা যাবে বাস, ট্রেন ও লঞ্চ। সড়ক পথে আসতে হলে সোনাডাঙা বাস স্ট্যান্ডে নামারপর সেখান থেকে ইজিবাইক যোগে খুব সহজে আপনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পৌঁছানো যায়।  

ট্রেন যোগে পৌঁছাতে হলে খুলনা রেলওয়ে স্টেশনে আসার পর খুব সহজে ইজিবাইক অথবা সি এন জি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পৌঁছে দিবে।

নদী পথে আসতে চাইলে রুপসা লঞ্চ ঘাটে নামতে হবে। তারপর সহজেই ইজিবাইক যোগে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পৌঁছানো যায়। 

 

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ঠিকানা

Registrar

Khulna University, Khulna-9208, Bangladesh

Phone: 02-477734140

PABX: 5004

Fax: 88-02-477734138

E-mail: office@registrar.ku.ac.bd

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ওয়েবসাইট 

Web: www.ku.ac.bd 

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় একটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কোলাহলমুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়। এর পরিবেশ স্নিগ্ধময় যেখানে ঘুরতে আসলে আপনার মন হবে প্রশস্ত এবং চিন্তার দ্বার উন্মুক্ত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়টি রাজনীতিমুক্ত হওয়ায় কোন মারামারি বা কোলাহল নেই এতে  আপনি নির্বিঘ্নে পড়াশোনা করতে পারবেন। 

Information source: Wikipedia, Khulna University website  

Also Read: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় 

Related Post

মৃত্যু নিয়ে উক্তি

150+মৃত্যু নিয়ে উক্তি, বাণী, ক্যাপশন 2024

মৃত্যু নিয়ে উক্তি জন্মিলে মরিতে হবে আর এটাই সত্যি। মৃত্যু হচ্ছে সবচেয়ে চিরন্তন সত্যি। পৃথিবীতে প্রতিটি প্রাণীর মৃত্যুর স্বাদ অনুভব করতে হবে। সবসময় মৃত্যুর জন্য

Read More »
খুশির স্ট্যাটাস

200+ স্টাইলিশ খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন

খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন জীবনের সুন্দর খুশির মুহূর্ত আমরা সবাই বাঁধাই করে রাখতে চাই। আর এই খুশির মুহূর্তকে ধরে রাখার সবচেয়ে সহজ উপায়

Read More »

স্টাইলিশ ভালোবাসার ছন্দ | রোমান্টিক ছন্দ | Love Status Bangla

❤❤ভালোবাসার ছন্দ | ভালোবাসার ছন্দ রোমান্টিক | ভালোবাসার ছন্দ স্ট্যাটাস❤❤ ভালোবাসা হলো এক অন্যরকম অনুভূতির নাম, যা শুধুমাত্র কাউকে ভালবাসলেই অনুভব করা যায়। আমরা বিভিন্নভাবে

Read More »
মন খারাপের স্ট্যাটাস

মন খারাপের স্ট্যাটাস, উক্তি, ছন্দ, ক্যাপশন, কিছু কথা ও লেখা

মন খারাপের স্ট্যাটাস মন খারাপ – এই কষ্টের অনুভূতি কার না হয়? সবারই কখনো না কখনো সবারই মন খারাপ হয়। জীবনের ছোটোখাটো অঘটন থেকে শুরু

Read More »

Leave a Comment

Table of Contents