Dreamy Media BD

কম্পিউটার ভাইরাস কি?

কম্পিউটার ভাইরাস

কম্পিউটার ভাইরাস (Computer Virus) , ইন্টারনেটের জগতের এক আতঙ্কের নাম।  তথ্যপ্রযুক্তির যুগে আমাদের জীবনে প্রায় সকল কাজ জড়িয়ে গেছে কম্পিউটার। হ্যাকাররা মানুষের এই প্রয়োজনীয়তা বুঝে ,তাই ভাইরাসের মাধ্যমে নিয়মিত সাইবার অপরাধ করে থাকে।  তাই , ইন্টারনেটের জগতের এই রহস্যই প্রাণহীন কিন্তু ক্ষতিকারক কম্পিউটার ভাইরাসকে নিয়ে আমাদের আজকের আয়োজন।

কম্পিউটার ভাইরাস কি?

কম্পিউটার ভাইরাস হল এমন এক ক্ষতিকারক প্রোগ্রাম যা আপনার অগোচরে আপনার কম্পিউটারে প্রবেশ করে , নিজের প্রতিলিপি তৈরী করে পুরো সিস্টেমে ছড়িয়ে পরে , আপনার প্রয়োজনীয় ফাইল বা ডেটা  ডিলিট অথবা চুরি করে বা গোপনে আপনার সিস্টেমে নজরদারি চালায়।

আরও পড়ুনঃ কম্পিউটারঃ এক যাদুর বাক্সের পরিচিতি

ভাইরাস আবিষ্কার করেন কে?

নিজেকে কম্পিউটার ভাইরাস এর আবিষ্কার হিসাবে অনেকেই দাবি করেন। তবে, সবচেয়ে স্বীকৃত ব্যক্তিটি হলেন বব থমাস, যিনি ১৯৭১ সালে ক্রিপার নামক একটি কম্পিউটার প্রোগ্রাম তৈরি করেছিলেন। এই প্রোগ্রামটি নিজে নিজেকে কপি করতে পারতো এবং ফ্লপি ডিস্কের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তো।এভাবেই , ক্রিপার ARPANET নেটওয়ার্কে ছড়িয়ে পড়েছিল।তবে এটি কোন ক্ষতিকারক ভাইরাস ছিল না, এটি একটি ছোট বার্তা প্রদর্শন করত , “I’m the creeper, catch me if you can!“।

কম্পিউটার ভাইরাসের উদাহরণ

কম্পিটার ভাইরাতের একটি উদাহরণ আমরা ইতিমধ্যে দেখেছি , আরোও দুইটি উদাহরণ দেওয়া হল , যা কিনা প্রথম কম্পিউটার ভাইরাস এর সাথে সম্পর্কিত।

ইতিহাসের প্রথম কম্পিউটার ভাইরাস

মাইক্রোসফট এর উইন্ডোস অপারেটিং সিস্টেম এর MS-DOS এর জন্য প্রথম কম্পিউটার ভাইরাসটি ১৯৮৬ সালে তৈরী হয়।  পাকিস্তানের দুই ভাই “Brain” নাম এই ভাইরাসটি তৈরী করেন।  তবে এটি ক্ষতিকারক ভাইরাস ছিল না , এটি বুট সিস্টেমের নিরাপত্তার জন্য বানানো হয়েছিল।

তবে প্রথম ক্ষতিকারক কম্পিউটারটি ১৯৮৮ সালে তৈরী করেন , কর্নেল ইউনিভার্সিটির একজন স্নাতক ছাত্র রবার্ট মরিস যার নাম ছিল , “দ্য মরিস”। তার উদ্দেশ্যে ছিল তৎকালীন কম্পিউটারের ব্যাপকতা সম্পর্কে ধারণা নেওয়া।  কিন্তু তার একটি প্রোগ্রাম ভুল করে লেখার কারণে ভালো ভাইরাসটি জোম্বিতে পরিনিত হয় এবং এটি মাত্র ১৫ ঘন্টায় ১৫০০০ কম্পিউটারে ছড়িয়ে পড়েছিল।

 কম্পিউটার ভাইরাস কত প্রকার ও কি কি ?

কম্পিউটার ভাইরাসের কোনো নির্দিষ্ট প্রকারভেদ নেই।  যারা ভাইরাস তৈরী করে ( মূলত হ্যাকাররা ) তাদের প্রয়োজন , টার্গেট সিস্টেমের ধররণ ও ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে নানা ধরনের কম্পিউটার ভাইরাস তৈরী করে।  সেগুলির মধ্যে জনপ্রিয় ও অন্যতম কিছু ভাইরাসের প্রকারভেদ:

What is Trojan horses | How to Avoid Trojan Infection | Waredot
ট্রোজান হর্স কম্পিউটার ভাইরাস

ট্রোজান হর্স কম্পিউটার  ভাইরাস (Trojan Horse Computer Virus)

বিখ্যাত গ্রিক কাহিনী ট্রয় এর নাম অনুসারে এর নাম।  ট্রয়ের ঘোড়ার ভিতর যেমন , প্রতিপক্ষ সৈন্যরা লুকিয়ে থেকে রাতে পুরো ট্রয় নগরী ধ্বংস করেছিল।  ঠিক ট্রোজান ভাইরাসগুলো , আপনি যখন কোনো অনিরাপদ জায়গা থেকে কোন পাইরেটেড মুভি , আপ , সফটওয়্যার ডাউনলোড করেন , এদের ভিতর লুকিয়ে ট্রোজান হর্স ভাইরাস আপনার কম্পিউটারে বা ফোন প্রবেশ করে।  পরে পুরু সিস্টেমের যখন নিয়ে ধ্বংস বা জিম্মি করে।

পলিমরফিক কম্পিউটার  ভাইরাস ( Polymorphic Computer Virus)

পলি = অনেক, মরফিক  = ধরণ , এটি ঠিক দুনিয়া কাঁপিয়ে দেওয়া করোনা ভাইরাস এর মতো।  করোনা যেমন , আসার পর একটার পর একটা ভেরিয়েন্ট আসতে থাকে, তেমনি  পলিমরফিক  ভাইরাসও কম্পিউটারে প্রবেশের পর সময়ের ব্যবধানে নিজেকে পরিবর্তন করতে পারে ও আরোও ভয়ঙ্কর হতে পারে।  তখন শক্তিশালী এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার ছাড়া একে প্রতিহত করা কঠিন হয়ে পরে।

ম্যাক্রো কম্পিউটার  ভাইরাস (Macro Computer Virus)

জটিল সফটওয়্যার তৈরিতে অনেক হয় লেভেল ম্যাক্রো কম্পিউটার ল্যাংগুয়েজ বেবহার করা হয় , তেমনি এই ধরনের ভাইরাসের সেই ল্যাংগুয়েজ গুলি বেবহার করা হয়।  ফলে এটি একটি শক্তিশালী ধরনের ভাইরাস হয়ে থাকে।  সাধারণত ফিসিং ফাইলের মাধ্যমে মেইলে এই ধরনের ভাইরাসযুক্ত ফাইল পাঠানো হয়।  পৃথিবীর ইতিহাসের অন্যতম হ্যাকিং , বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা চুরি , এমনই এক ভাইরাসের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছিল।  হ্যাকাররা চাকরি প্রার্থী সেজে সিভি পাঠালে ব্যাংকার এক কর্মী সেই সিভি ওপেন করলে গোপনে ব্যাংকার সিস্টিমে প্রবেশ করেছিল ভাইরাসটি।

রেসিডেন্ট কম্পিউটার  ভাইরাস (Resident Computer Virus)

অর্থাৎ আবাসিক ভাইরাস।  এটি এমনভাবে কম্পিউটার সিস্টেমের ভিতর ঘাপটি মেরে বসে থাকে যে , কম্পিউটারের সাধারণ এন্টিভাইরাস অন্নান্য ফাইল এর সাথে কোন পার্থক্যই করতে পারে না।  পরে সুগজ বুঝে এই ছন্দবেশী ভাইরাস সিস্টেমের ক্ষতি করে।

ওভাররাইট কম্পিউটার ভাইরাস (Overwrite Computer Virus)

এটি কম্পিউটারে আক্রমণের সাথে সাথে , আপনার প্রয়োজনীয় ফাইলগুলি নিজের কোড দ্বারা ওভাররাইট করে ফেলে।  এটি সাধারণত কম্পিউটারের নির্দিষ্ট কোন ফাইল বা ব্যাবসায়িক সফটওয়্যার কে টার্গেট করে বানানো হয়।  প্রয়োজনে এটি সিস্টেমের টার্গেটকৃত ডেটা এডিট ,অপডেট বা ডিলিট করে দিতে পারে।

বুট সেক্টর কম্পিউটার ভাইরাস (Boot Sector Computer Virus)

এটি সাধারণত পেনড্রাইভ জাতীয় ডিভাইস এর মাধ্যমে এক সিস্টেম থেকে আরেক সিস্টেমে প্রবেশ করতে পারে।  পেনড্রাইভ বা ইমেলের আগত ফাইলের মধ্যে লুকিয়ে থাকে।

ওয়েব স্ক্রিপটিং কম্পিউটার ভাইরাস (Web Scripting Computer Virus)

বেশিরভাগ ফেসবুক বা সোলাল মিডিয়া হ্যাকিং এর মাধ্যমে হয়ে থাকে।  এটি বিভিন্ন ফিসিং লিংক এর মধ্যে লুকিয়ে থাকে , আপনি যখন এই জাতীয় অনিরাপদ ওয়েবসাইট এর ব্রাউসিং করেন বা হ্যাকারদের পাঠানো লিংকে ক্লিক করেন তখন এই ওয়েব স্ক্র্যাবার ভাইরাস আপনার সিস্টেমের বা একাউন্ট এর দখল নিয়ে নেয়।

ডাইরেক্ট অ্যাকশন কম্পিউটার ভাইরাস (Direct Action Computer Virus)

অনেকসময় দেখা যায় , কোন মোবাইল এপ বা কম্পিউটার সফটওয়্যার ডাউনলোড করার সময় এরা কিছু অপ্রোজনীয় ফাইল এর একসেস চায়। যেমন আপনি একটি , এলার্ম ঘড়ির সফটওয়্যার ডাউনলোড করেছেন যেটি আপনার ফোনবুক, ক্যামেরা ও ফাইল এর একসেস চাইতেছে।  সেইসময় অসর্তক ভাবে পারমিশন দিয়ে দিলে , সেটি আপনার সিস্টেমে ছড়িয়ে পরে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়।

ম্যালওয়্যার

মেমোরি কম্পিউটার  ভাইরাস (Memory Computer Virus)

এরা কম্পিউটারের মেমোরিতে লুকিয়ে থাকে , এবং সুযোগ বুঝে আক্রমণ করে।

৫ টি কম্পিউটার ভাইরাসের নাম

ক্রমিক নম্বর ধরে সেরা কম্পিউটার ভাইরাসের নাম বলার কোনো উপায় নেই।  কারণ প্রতিটা ভাইরাসের নিজের বৈচিত্রতা ও কাজের পদ্ধতি আছে।  এখানে , বিভিন্ন সার্ভে  ,রিপোর্ট ও ক্ষতির পরীমানের ভিত্তিতে ৫ টি কম্পিউটার ভাইরাসের নাম বা আক্রমণ দেওয়া হলো।

 

সবচেয়ে মারাত্মক ৫টি কম্পিউটার ভাইরাস আক্রমণ

নিমডা (Nimda) কম্পিউটার ভাইরাস source: CBS News
নিমডা (Nimda) কম্পিউটার ভাইরাস source: CBS News

১.নিমডা (Nimda) কম্পিউটার ভাইরাস

এটি একটি বিশ্ব রেকর্ডধারী ভাইরাস , যা কিনা তৎকালীন (২০০১) সালে মাত্র ২২ মিনিটে পৃথিবীর প্রায় সকল মেইল এ এটার্ক করে। অনেকেই দাবি করে , এক হাত থেকে একটি মেইলেও রক্ষা পায়নি।  এই ওয়ার্ম জাতীয় ভাইরাসটি প্রথমে ইন্টারনেটের মেইল সার্ভারগুলিতে আক্রমণ করে তারপর পুরো নেটওয়ার্কে ছড়িয়ে পড়েছিল।  তারপর কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেমের দুর্বতা কাজে লাগিয়ে সিস্টেমে প্রবেশ করতো।  সংক্রামিত কম্পিউটারটি যদি , এডমিনিস্ট্রি মুডে থাকতো , তাহলে এই ভাইরাস পুরো সিস্টেম এর দখলে নিতো।

২. ক্রিপ্টোলকার (Cryptolocker) কম্পিউটার ভাইরাস

২০১৩ সালে ছড়িয়ে পড়া এই র‍্যানসমওয়্যার জাতীয় ভাইরাসটিকে ডিজাটাল গডফাদার বলা যায়। ২০১৪ সালে এর প্রতিশোধক এন্টিভাইরাস বানানোর আগে ৩ মিনিয়ন ডলারের মুক্তিপণ আদায় করেছিল।

এটি প্রথমে এটাচমেন্ট মেইলের মাধ্যমে, কম্পিউটরে প্রবেশ করতো তারপর কম্পিউটারের জরুরি ফাইলগুলি এনক্রিপ্ট করে ফেলতো।  পরে মালিকের কম্পিউটরে একটা মেসেজ আসতো, ফাইল ফিরে পেতে মুক্তিপন দাবি করতো।  এটি সনাক্তের পর খুব সহজে সিস্টেম থেকে মুছে ফেলা যেত , কিন্তু তাদের দেওয়া কোড ছাড়া  এনক্রিপ্ট করা ফাইল বা ডেটা ফিরে পাওয়া যেত না।  তাই বাধ্য হয়েই  বিটকয়েন এর মাধ্যমে মুক্তিপণ দিতে হতো।

৩. স্যাসার ও নেটস্কাই (Sasser & Netsky) কম্পিউটার ভাইরাস

জার্মান ১৭ বছরের বালক Sven Jaschen উইন্ডোস অপারেটিং সিস্টেমের দুর্বলতা খুঁজে বের করে Sasser ও Netsky দুটি ভাইরাস তৈরী করেন।

তার প্রথম ভারাস স্যাসার অন্য সব ভাইরাসের মতো মেইলের মাধ্যমে না ছড়িয়ে অন্যভাবে কোনো কম্পিউটার সিস্টেমে প্রবেশ করতো।  তারপর সেই সিস্টেম থেকে ওই নেটওয়ার্কের আর সব কম্পিউটারকে ক্ষতিকারক ফাইল ডাউনলোড করতে বাধ্য করতো।  এবাবেই পুরো সিস্টেম দখলে নিতো।  কোনো এন্টিভাইরাস কাজ করতো না , একমাত্র উপায় ছিল কম্পিউটার এর বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা।

অন্যদিকে,  নেটস্কাই ভাইরাসটি মেইলের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তো , এবং ২২,০১৬ বাইটের একটি অ্যাটাচমেন্টের পাঠানোর মাধ্যমে ইমেইল ঠিকানাগুলিকে Spoof করতো।

৪. স্টর্ম ওয়ার্ম (Storm Worm) কম্পিউটার ভাইরাস

২০০৬ সালে এই ভাইরাসটি একটি সাধারণ মেইলের বেশে ছড়িয়ে পড়েছিল।  মেইলের সাবজেক্ট এ লেখা থাকতো: “230 dead as storm batters Europe” আর তাই এর ভাইরাসের নাম Storm Worm ভাইরাস।

এটি একটি ট্রোজান হর্স জাতীয় ভাইরাস যা ছড়িয়ে পড়তো ফিসিং লিংক এর মাধ্যমে।  মেইল ব্যবহারীদের কাছে অনেক , লোভনীয় শিরোনামে মেইল আসতো।  যেমন ২০০৮ সালে চীনে অলিম্পিকের সময় মেইল আসতো “A new deadly catastrophe in China” এই শিরোনামে।  যখনই খবর পড়ার জন্য মেইলের লিংক ওপেন করতো , ট্রয়ের ঘোড়ার মতো গোপনে সিস্টেমে প্রবেশ করতো।  তারপর কম্পিউটারের দখল নিয়ে নিতো।

৫. এস কিউ এল স্ল্যামার

২০০৩ সালে ছড়িয়ে পরা এই ভাইরাসের আক্রমণে যুক্তরাষ্ট্রের  ‘ব্যাংক অব আমেরিকা’ এর ATM সার্ভিস বন্ধ হয়ে যায়।  এর পাশাপাশি ব্যাঙ্কিং সিস্টেমের অনেক ক্ষতি করে।  এস কিউ এল স্ল্যামার  এতটাই আধুনিক ভাইরাস ছিল যে বেশিরভাগ কম্পিউটার বা সিস্টেম এর জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিল না।  এটি প্রথমে ইন্টারনেট সার্ভারে প্রবেশ করে জ্যামিতিক হারে অন্য সার্ভারে আক্রমণ শুরু করে , ফলে মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে প্রায় বেশিরভাগ সার্ভার আক্রমণ করে ফেলে।

এই আক্রমণের ফলে , আমেরিকার ব্যাঙ্কিং সিস্টেমের প্রায় ১ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছিল।

এর বাইরেও আরও অনেক ভাইরাস ইন্টারনেট জগতে কম্পিউটার ডিভাইসের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করেছিল।

ম্যালওয়্যার ও সফটওয়্যার এর মধ্যে পার্থক্য কি?

আমরা জানি সফটওয়্যার হলো , এমন কম্পিউটার প্রোগ্রাম যা আমাদের থেকে ডেটা নিয়ে তাকে ম্যানিপুলেট করে আমাদের প্রয়োজনীয় কাজ করতে পারে।  সেটা হতে পারে টেক্সট , ভিসুয়াল বা অডিও ডাটা।

দুই ধরনের , সফটওয়্যার আছে :

  • সিস্টেম সফটওয়্যার: Windows, macOS, এবং লিনাক্স ইত্যাদি
  • এপ্লিকেশন সফটওয়্যার: ওয়ার্ড প্রসেসিং সফটওয়্যার, ওয়েব ব্রাউজার, এডোবি ইত্যাদি

অন্যদিকে, একধরনের বিশেষ সফটওয়্যার যা কিনা আমাদের কম্পিউটারের সিস্টেমে অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করে ক্ষতিসাধন বা অবৈধ নজরদারি করে।  সকল প্রকার ভাইরাস , স্পায়ওয়্যার  ও ওয়ার্ম ম্যালওয়্যার এর অংশ।

ম্যালওয়্যার এর কাজ কি?

ম্যালওয়্যার তৈরীর প্রধান উদ্দেশই হলো কম্পিউটার সিস্টেমের ক্ষতিসাধন করা।  সেটা হতে পারে , ডেটা চুরি , সিস্টেমের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া , গুরুপ্তপূর্ণ ফাইল সরিয়ে মুক্তিপণ আদায় বা গোপনে নজরদারি করা।

কম্পিউটার ভাইরাসের লক্ষণ

বেশিরভাগ ভাইরাস ক্যান্সারের মতো , সিস্টেমে প্রবেশের পর ঘাপটি মেরে বসে থাকে , তারপর যখন ধরা পরা , কিন্তু কোনো কিছু করার থাকে না। নিচের লক্ষণগুলি থেকে আগাম বুঝতে পারবেন আপনার কম্পিউটার বা ডিভাইস ভাইরাসের আক্রমণে পরেছে:

  • কম্পিউটারের কর্মক্ষমতা হ্রাস: ভাইরাসগুলি কম্পিউটারের সিস্টেমের রিসোর্স ব্যবহার করে।  ফলে হটাৎ করে আপনার  কর্মক্ষমতা/গতি হ্রাস হতেপারে।
  • অপ্রত্যাশিত বা অস্বাভাবিক আচরণ: ভাইরাস প্রবেশের পর কম্পিউটারে অস্বাভাবিক আচরণ করতে পারে, যেমন অতিরিক্ত বিজ্ঞাপন প্রদর্শন , অপ্রত্যাশিত ফাইল বা প্রোগ্রাম তৈরি হওয়া, বা অপ্রত্যাশিতভাবে সিস্টেম চালু বা বন্ধ হয়ে যাওয়া।
  • ডেটা চুরি: কম্পিউটার থেকে প্রয়োজনীয় ফাইল গায়েব হয়ে যেতে পারে।
  • ইররর মেসেজ: সবকিছু ঠিক থাকার পরেও সিস্টেমে কিছু ইররর মেসেজ দেখতে পারে।
  • টাস্ক মেনেজার: কম্পিউটারের টাস্ক মেনেজারে অজানা কোন প্রোগ্রাম চালু অবস্থায় দেখা যায়।

এইসব লক্ষণ দেখলে প্রয়োজনীয় এন্টি ভাইরাস সফটওয়্যার বেবহার করুন।  প্রয়োজনে , সাইবার সিকুরিটি এক্সপার্ট এর সাহায্য নিন।

Antivirus Technology - source: Freepik
Antivirus Technology – source: Freepik

এন্টি ভাইরাস সফটওয়্যার কি ?

এন্টি ভাইরাস সফটওয়্যার এর নাম থেকেই যায় ভাইরাসকে প্রতিরোধ করাই প্রধান কাজ।

সংজ্ঞা: যে বিশেষভাবে তৈরী সফটওয়্যার ভাইরাস কে চিহ্নিত করে, ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে এবং ভাইরাসকে কম্পিউটার বা সিস্টেম থেকে সরিয়ে দেয়, তাকেই এন্টি ভাইরাস সফটওয়্যার বলে। যেমনঃ

কম্পিউটারের জন্য এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার: নর্টন ৩৬০, মক্যাফেই টোটাল প্রটেকশন , বিটডিফেন্ডার টোটাল সিকিউরিটি,কাস্পেরস্কি ইন্টারনেট সিকিউরিটি,  ও Avast ইত্যাদি।

ভাইরাস ক্লিনার মোবাইল

 ফোনের জন্য এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার: বিটডিফেন্ডার  মোবাইল  সিকিউরিটি, AVG এন্টিভাইরাস & সিকিউরিটি, Lookout  সিকিউরিটি & এন্টিভাইরাস ও ESET মোবাইল সিকিউরিটি ইত্যাদি ।

কম্পিউটারের জন্য ৩টি সেরা ফ্রি এন্টিভাইরাস

ভাইরাস চেক করার সফটওয়্যার

আপনার ডিভাইসে ভাইরাস আছে কিনা তা চেক করার জন্য ও প্রতিরোধের জন্য উপরের সফটওয়্যার গুলি ব্যবহার করতে পারেন। আর আপনার যদি খুবই প্রয়োজনীয় ফাইল থাকে , তাহলে “Sophos Home Premium” বা “Trend Micro Antivirus+ Security” এইদুটির যে কোন একটি ব্যবহার করতে পারেন।

কম্পিউটার ভাইরাস থেকে আপনার ডিভাইসকে নিরাপদ রাখতে, প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার ফুল স্ক্যান করুন, নিয়মিত এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার উপদেশ করুন ও কোন ক্রাক সফটওয়্যার বা পাইরেটেড মুভি ডাউনলোড করা থেকে বিরত থাকুন। গুরুপ্তপূর্ণ ফাইল এর ব্যাকআপ রাখুন এবং সাইবার সিকুরিটির নিয়ম মেনে ডিভাইস ব্যবহার করুন।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে, আরও লেখা পড়ুনঃ

Related Post

মৃত্যু নিয়ে উক্তি

150+মৃত্যু নিয়ে উক্তি, বাণী, ক্যাপশন 2024

মৃত্যু নিয়ে উক্তি জন্মিলে মরিতে হবে আর এটাই সত্যি। মৃত্যু হচ্ছে সবচেয়ে চিরন্তন সত্যি। পৃথিবীতে প্রতিটি প্রাণীর মৃত্যুর স্বাদ অনুভব করতে হবে। সবসময় মৃত্যুর জন্য

Read More »
খুশির স্ট্যাটাস

200+ স্টাইলিশ খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন

খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন জীবনের সুন্দর খুশির মুহূর্ত আমরা সবাই বাঁধাই করে রাখতে চাই। আর এই খুশির মুহূর্তকে ধরে রাখার সবচেয়ে সহজ উপায়

Read More »

স্টাইলিশ ভালোবাসার ছন্দ | রোমান্টিক ছন্দ | Love Status Bangla

❤❤ভালোবাসার ছন্দ | ভালোবাসার ছন্দ রোমান্টিক | ভালোবাসার ছন্দ স্ট্যাটাস❤❤ ভালোবাসা হলো এক অন্যরকম অনুভূতির নাম, যা শুধুমাত্র কাউকে ভালবাসলেই অনুভব করা যায়। আমরা বিভিন্নভাবে

Read More »
মন খারাপের স্ট্যাটাস

মন খারাপের স্ট্যাটাস, উক্তি, ছন্দ, ক্যাপশন, কিছু কথা ও লেখা

মন খারাপের স্ট্যাটাস মন খারাপ – এই কষ্টের অনুভূতি কার না হয়? সবারই কখনো না কখনো সবারই মন খারাপ হয়। জীবনের ছোটোখাটো অঘটন থেকে শুরু

Read More »

Leave a Comment

Table of Contents