Dreamy Media BD

বেইজিং এর দর্শনীয় স্থান (Beijing)

বেইজিং এর দর্শনীয় স্থান

চীন শাসিত বেইজিং (Beijing) হচ্ছে ভ্রমন পিপাসুদের জন্য এক অপার সৌন্দর্যের স্থান। অসংখ্য অতি প্রাচীন ঐতিহাসিক স্থাপনার এই শহরটি প্রত্যেক বছর অনেক পরিমান দর্শনার্থীর আগমনের স্বাক্ষী হয়ে থাকে। চিনের বিভিন্ন শাসকদের আমলে বেইজিং মোট ৬ বার হয়েছিলো চিনের রাজধানী।

এ থেকেই বিশ্ব ঐতিহ্যে বেইজিং এর অবস্থান সম্পর্কে বেশ ভালো একটা ধারণা পাওয়া যায়। আর বর্তমানেও চিনের রাজধানী হলো বেইজিং। বেইজিং শুধু চীনের রাজধানী হিসেবে বিখ্যাত, ব্যপারটা কিন্তু ঠিক তা না। বেইজিং এ রয়েছে বিভিন্ন পর্যটন স্থল। এগুলোর সৌন্দর্যে তারা নিজেরাই বিশ্ব বিখ্যাত। যেমন ধরুন- বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্যের অন্যমত একটি হলো গ্রেট ওয়াল, যেটির অবস্থান হলো বেইজিং শহর।

আর তাছাড়া বিশ্বের সব থেকে বড় প্রচীন শহরটিও কিন্তু  বেইজিং এ অবস্থিত। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন সুন্দর স্থাপনার জন্যও বেইজিং বেশ বিখ্যাত।এ সকল কারনে সারা বছর পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভ্রমনপ্রেমীরা বার বার ছুটে আসে মহা প্রাচীরের এই সুুন্দর শহর বেইজিং এ। বাংলাদেশ থেকেও এর সংখ্যা কম নয়৷ তাই আপনাদের সুবিধার্থে আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি।

এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনি চীনের রাজধানী বেইজিং এর সেরা দর্শনীয় স্থান গুলো সম্পর্কে অবগত হতে পারবেন এবং বেইজিং এর ভ্রমনগাইড সম্পর্কেও সচেতন হতে পারবেন।

১.মহা প্রাচীর বা গ্রেট ওয়াল 

চীনের সবচেয়ে প্রাচীন ইতিহাস ধারণকারী জায়গাটি হচ্ছে গ্রেট ওয়াল বা চীনের মহা প্রাচীর। পৃথিবীর দূর-দূরান্ত থেকে লক্ষ লক্ষ পর্যটক এখানে আসে মধ্যযুগের সপ্তাশ্চর্য এই গ্রেট ওয়াল বা চীনের মহা প্রাচীর নিজ চোখে দেখতে। চীনের এই মহাপ্রাচীর মানুষের হাতে তৈরি পৃথিবীর সব থেকে বড় স্থাপত্য। এই প্রাচীর উচ্চতায় প্রায় ৫ থেকে ৮ মিটার এবং দৈর্ঘ্যে ৮৮৫১.৮ কিলোমিটার। এটি শুরু হয়েছে মূলত সাংহাই পাস এবং এর শেষ হয়েছে লোপনুর নামক স্থানে।

এর মূল অংশের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল প্রায় খ্রিস্টপূর্ব ২০৮ সালের দিকে। কিন সাম্রাজ্যের সময় এর নির্মাণ কাজ শুরু করেছিলেন চৈনিক বা চাইনিজরা। এটি প্রথম ব্যবহার করেছিলেন চীনের প্রথম সম্রাট কিন সি হুয়াং এবং শত্রুর হাত থেকে নিজের সম্রাজ্যকে রক্ষার জন্য তিনি এটি দীর্ঘ করে নির্মাণ করেছিলেন। 

এই প্রাচীর নির্মাণের সময় এখানে প্রায় ১০ লাখের ও বেশি শ্রমিক মৃত্যু বরণ করেছিলো। আর সে কারনেই এই প্রাচীরকে পৃথিবীর দীর্ঘতম কবরস্থানও বলা হয়। সবুজ বনভূমি,পাহাড়,পর্বত ও মরুভূমি এর উপর বিস্তৃত ২১ হাজার ১৯৬ কিলোমিটার লম্বা এই দেখতার মতো গ্রেট ওয়াল চায়না। বলা হয়ে থাকে যে এই প্রাচীরের প্রস্থ এতটাই চওড়া, এর উপর দিয়ে প্রায় ১২ জোড়া ঘোড়া একসাথে দৌড়াতে পারবে।

এই মহা প্রাচীরকে দূর থেকে দেখলে অনেকের কাছে অনেকটা বাঁকানো সাপ বা ড্রাগনের মতো মনে হয়। তবে প্রকৃতিভেদে এই মহা প্রাচীরের ভিন্ন ভিন্ন সৌন্দর্য প্রকাশ পায়। বসন্তে নতুন নতুন সবুজ পাতা, ফুল ও রঙ্গিন প্রকৃতি প্রাচীরের চারপাশের পরিবেশকে আরও বেশী মোহনীয় এবং সুন্দর করে তুলে।

আর এখানে বেড়াতে আসলে হাইকিং করাটা আপনার কাছে অনেকটা এডভেঞ্চারের মতো মনে হবে। পর্যটকদের দেখার জন্য এই প্রাচীরের ১০ টি ভাগ আছে। আপনাদের সুবিধার্থে এই এই ১০ টি ভাগ সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরে হলো: 

যুতিয়ান্যু: বেইজিং থেকে ৭৩ কিলোমিটার দূরত্বে গ্রেট ওয়ালের এই অংশে যেতে সময় লাগবে দেড় ঘণ্টা। মূলত পুরোপুরি ভাবেই এই দিকের প্রাচীরের অংশ পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। আর তাই এই দিকে বেশী আসে পর্যটকরা । আর বাচ্চাদের নিয়ে ট্রাভেল করার বেলাতেও কিন্তু এই দিকটাই বেশী নিরাপদ। এখানে আপনি ওয়াচ টাওয়ার সহ বেশ কিছু দুর্গ দেখতে পারবেন। মুতিয়ান্যুতে ক্যাবল কার এবং টবে গান রাইডের সাথে সাথে রয়েছে হাইকিং এর ও ব্যবস্থা।

বাদালিং গ্রেট ওয়াল: বেইজিং থেকে বাদালিং গ্রেট ওয়ালে যাওয়া কিন্তু সবচেয়ে বেশী সুবিধাজনক। এখানে আপনি ক্যাবল কারের মজা উপভোগ করতে পারবেন। আবার চাইলে আপনি গ্রেট ওয়াল মিউজিয়ামও ঘুরে দেখতে পারবেন। বাদালিং ওয়ালের উত্তর দিক থেকে আবার ওয়াচ টাওয়ার পর্যন্ত হাইকিং করার ব্যবস্থাও আছে। তবে ভিড় এড়ানোর জন্য এখান থেকে গ্রেট ওয়ালে প্রবেশ না করে বরং আপনি মুতিয়ান্যু গ্রেট ওয়াল থেকে প্রবেশ করবেন।

হুয়াংহুচেং গ্রেট ওয়াল: এই জায়গাতে মূলত টুরিস্ট কম যায়। আবার শহর থেকে যাতায়াত করাটাও কিন্তু বেশ কষ্ট সাধ্য। তবে এখানে আপনি চ্যালেঞ্জিং হাইকিং-এর ও সুযোগ পাবেন। এই প্রাচীরের কিছু অংশ পানির মধ্যে ডুবে গিয়েছে। তাই এখানে আপনি লেকের মনোরম দৃশ্যও উপভোগ করতে পারবেন।

জুয়োংগুয়ান: বেইজিং থেকে সবচেয়ে সুবিধাজনক হলো জুয়োংগুয়ান যাওয়া। এখানে হাইকিং করতে পারবেন আপনি। আবার কিছু দুর্গও দেখতে পারবেন।

সিমাতাই: গ্রেট ওয়ালে রাতে দেখার মতো সুযোগ রয়েছে শুধুমাত্র এই অংশটিই। মূলত সিমাতাই ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে এটি স্বীকৃত। এখানে ব্যাটারি কার্টস,ক্যাবল কার ও বোটিং এর সুবিধাও আছে।

হুয়ানগ্যাগুয়ান: এখানে বছরের প্রতিটি মে মাসে অনুষ্ঠিত হয় “দা গ্রেট ম্যারাথন”। এখানে আসলে টুরিস্ট বাসে করে পাহাড়ের উপর দিয়ে ঘুরে বেড়াতেই সবচেয়ে বেশী ভালো লাগে।

সাংহাই পাস: গ্রেট ওয়ালের শেষ অংশ সাংহাই পাস, যা সাগরের সাথে মিশেছে। প্রাচীরের এই ছিলো অংশ মূলত সীমান্ত প্রতিরক্ষক। পুরো ১ দিন সময় হাতে নিয়ে এখানে ঘুরে আসতে পারলে ভালো।

জিনশানলিং: বেইজিং থেকে জিনশানলিং যেতে আপনার সময় লাগবে ২-৩ ঘণ্টার মতো। এখানে পুনরুদ্ধার করা হয়েছে মাত্র এর অর্ধেক অংশ। তবে এর বাকি অংশটি কিন্তু এখনো জঙ্গলে ঘেরা। পর্যটকরা জিনশানলিং থেকে সিমাতাই পর্যন্ত হাইকিং করতে অনেক পছন্দ করে।

গুবেইকো ও জিয়ানকো: গ্রেট ওয়ালের এই অংশটি কিন্তু বেশ বিপদজনক। এর পুরোটা জায়গা জঙ্গলে ঘেরা এখনো। এখানে কোন ধরনের পুনরুদ্ধারের কাজ ও করা হয়নি বলে এই অংশে পর্যটকদের যাওয়ার কোনো অনুমতি নেই।

চীন ভ্রমনে গিয়ে এই স্থানটি আপনি পরিদর্শন করে আসতে পারেন। আশা করি জীবনের একটি বড় ও সুন্দর অভিজ্ঞতা হবে একটি।

নিষিদ্ধ শহর
নিষিদ্ধ শহর

২.নিষিদ্ধ শহর

ফরবিডেন সিটি কে বাংলায় বলা হয়ে থাকে বেইজিং এর নিষিদ্ধ নগরী। একসময় এই নগরীতে প্রবেশ নিষেধ ছিল জনসাধারণের। চীনের প্রাচীন স্থাপত্যবিদদের দ্বারা নির্মিত এই প্রাসাদে রয়েছে চার হাজারেরও বেশি সুসজ্জিত রুম। আর রুমগুলিতে রয়েছে লাল এবং হলুদ রঙয়ের কারুকার্য।

এই প্রাসাদের ছাদ তৈরি সোনা দিয়ে। ১৯১১ সালের আগ পর্যন্ত প্রায় ৫৬০ বছর ধরে মিং রাজবংশ থেকে শুরু করে এটি চিং রাজবংশের ও রাজপ্রাসাদ ছিল। মোট ২৪ জন সম্রাট এই প্রাসাদে বসবাস করেছিল। বর্তমানে এই প্রাসাদটিকে প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী দর্শনীয় স্থান বলে ইউনেস্কো তাদের ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে।

বর্তমানে এটি হচ্ছে বিশ্বের পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাসাদগুলির মধ্যে একটি হিসেবে বেশ পরিচিত। আর  এখন বেইজিং এর জাদুঘরের অধীনে এটি সংরক্ষিত রয়েছে এবং জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। পর্যটকগণ তাদের ভ্রমণকে করে তুলতে পারে খুব আনন্দময়, রাজপ্রাসাদটি ভ্রমণ করে। বেইজিং ভ্রমনে গিয়ে এটি মিস করা বোধ হয় ঠিক হবে না।

৩.বেইজিং অলিম্পিক পার্ক

মূলত ২০০৮ সালে গেমসের জন্য শহরের উত্তর প্রান্তে নির্মিত হয়েছিলো এই বেইজিংয়ের অলিম্পিক পার্কটি। এটিতে দুটি আকর্ষণীয় স্থল দেখতে পাবেন। তাদের একটি হলো জাতীয় স্টেডিয়াম। পাখির বাসা হিসাবে এটি আরও বেশি পরিচিত। আর চিরাচরিত চীনা সিরামিক থেকে এটির নকশার অনুপ্রেরণা গ্রহণ করেছিল। অপরটি হলো ন্যাশনাল অ্যাকোয়াটিক্স সেন্টার। যাটির নামকরণ হয়েছে জল কিউব। বেইজিং ভ্রমণে গিয়ে আপনি এ স্থানটি দেখে আসতে পারেন। 

৪.লামা মন্দির 

তিব্বতের বাইরের সবচেয়ে বিখ্যাত বৌদ্ধ মন্দিরটি এবং বেইজিংয়ের সবচেয়ে বানানমূলক ধর্মীয় মন্দির এটি। শহরের কেন্দ্রের ঠিক উত্তরে অবস্থিত এই লামা মন্দিরটি তার বর্ণিল ফ্রেসকোস,অলঙ্কৃত ছাদ এবং বুদ্ধের দৈত্য মূর্তিগুলিতে পর্যটকদের একটি অবিরাম প্রবাহ মোহনীয় ভাবে আকর্ষণ করে।

৫.গুই জি

কয়েক ব্লক দক্ষিণে যাওয়ার পর আপনি এক কিলোমিটার রাস্তা দেখতে পাবেন। মনে হবে এটি ঠিক যেনো লাল আলোতে স্নান করছে। সেটিই হলো গুই জি। গুই জি জীবিত হয়ে পরে মূলত সূর্য ডুবে যাওয়ার পরে। ঠিক তখনই এটি উজ্জ্বল হয়, যখন হাজার হাজার ফানুস এবং নিয়ন জ্বেলে শপফ্রন্টগুলো চীনের ভাগ্যবান রঙের সাথে আলোকিত করে।

৬.বেহাই পার্ক

ফরবিডন সিটি বা নিষিদ্ধ শহরের উত্তর-পশ্চিম কোণে হাজার বছরের পুরনো প্রাচীন এই পার্কটির অবস্থান। এটির পাহাড়ের চূড়ায় রয়েছে বিশাল সাদা এক প্যাগোডা । তবে বেহাই পার্কটি যদি আপনি  আরও ঘুরে দেখেন, তাহলে আপনি সারা দেশ থেকে তিহুর নির্যাত লেক, সুঝোর ধ্রুপদী উদ্যান এবং হাঙ্গজু এবং ইয়াংঝুয়ের প্যাভিলিয়নের মতো সারা  দেশ জুড়ে ল্যান্ডমার্কের অনুকরণ করে স্পট আর্কিটেকচারের সন্ধান পাবেন।

শিচাহাই লেক
শিচাহাই লেক

৭.শিচাহাই লেক

বেইজিংয়ের অসাধারণ সুন্দর একটি জায়গা হলো শিচাহাই লেক এবং সেই লেকের তীরে রয়েছে দীর্ঘ হাঁটাপথ। জায়গাটা শহরের একদম প্রাণকেন্দ্রে। ওখানে মূলত তিনটি লেক রয়েছে একটির সাথে অন্যটি সংযুক্ত। এখানকার সবচেয়ে বড় লেকটির নাম হলো হোওহাই। আর অন্য দুটির নাম ছিয়ানহাই ও শিহাই।একসাথে তিনটিকে বলে শি চাহাই। বিশাল লম্বা এক লেক। এর কাছেই আছে নানলোকুশিয়াং হুথোং। হোওহাই লেক আর নানলোকুশিয়াং হুথোং মিলেই বিশাল এলাকা। লেকের তীর ধরে হচ্ছে হাঁটা পথ। এখানে আপনি দেখতে পাবেন  দুই তীরে কেবল রেস্টুরেন্ট আর বার।

 লেকের সৌন্দর্য যেনো নষ্ট না হয়, এইজন্য এখানে নেই কোন হাইরাইজ ভবন। ভবন তোলার অনুমতিও এখানে নেই। এই লেকগুলোতে ছোট ছোট জায়গায় দেখানো হয় বিভিন্ন রকম লোকজ খেলা বা ম্যাজিক। লেকের বুকে ভাসে নৌকা আর প্যাডেলবোট । বিকেলের রোদ যখন মিলিয়ে আসে, তখন অপূর্ব শোভা ছড়িয়ে একসময় টুপ করে ডুব দেয় সুয্যিমামা।

তারপর ধীরে ধীরে সন্ধ্যা নামে লেকের বুকে। চারিদিকে জ্বলে উঠল ঝলমলে আলো। সেই আলোর প্রতিফলন ঘটে রেস্টুরেন্টগুলো আর নৌকা ও ছোট্ট বোট থেকে  লেকের বুকে। এরপর যখন সব সৌন্দর্য নিয়ে আকাশে ওঠে চাঁদ, তার শোভা ম্লান করে দেয় অন্য সব আলোকে। এখানে এসে আপনি এই সৌন্দর্যগুলোতে বিমোহিত হয়ে পরবেন। অসাধারন এক পরিবেশে কিছু অনন্য মুহূর্তের স্বাক্ষী হতেই কিন্তি  এখানে বিদেশি লোকের ভিড় একটু বেশিই হয়। অবশ্য স্থানীয় লোকজনের সংখ্যাও খুব যে কম,তা কিন্তু না।

বেইজিংয়ে যেসব বিদেশি অনেকদিন ধরে আছেন হয়তো চাকরি, লেখাপড়া বা অন্য কোনো কারণে, তাদের অনেকেই কিন্তু এখানে প্রায়ই সন্ধ্যা কাটাতে চলে আসেন। বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে তো বটেই, পথের পাশেও থাকে গানের আড্ডা আর আয়োজন। যেখানে গান পরিবেশন করে থেকেন চীনা শিল্পীরা। কেউ পাথরের বেদীতে বসে গল্প করেন আবার কেউ বা গান শোনেন। কোথাও আবার দেখা যায় কয়েকজন মিলে নাচেন। অনেক রাত পর্যন্ত এখানে লোক সমাগম থাকে।

আর রেস্টুরেন্টগুলোতে ঐতিহ্যবাহী চীনা খাবার যেমন  ধরুন হটপট, বেইজিং ডাক, সাপের মাংস,  শামুক ও ঝিনুকের ডিশ ইত্যাদি আছে। আছে আরও তিব্বতী, উইগুর ও মোঙ্গোলীয় খাবার।মজার ব্যপার হলো, শিচাহাই লেক এলাকায় ঢুকতে কোনো টিকেট লাগে না। যে কোন সময় মনে চাইলে পর্যটকরা এখানে যেতে পারেন আর উপভোগ করতে পারেন এই এলাকার সৌন্দর্য ।

৮.798 আর্ট জেলা

798 আর্ট জেলা জীবন শুরু করেছিলো একটি সামরিক কারখানা কমপ্লেক্স হিসাবে। শহরের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় উপকণ্ঠে অবস্থিত এই বাউহস ধাঁচের সামরিক কমপ্লেক্সটি ১৯৫০ এর দশকে পূর্ব জার্মান স্থপতিদের দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। তবে সৈন্য এবং বন্দুক পথ তৈরি করে দিয়েছে নতুন সহস্রাব্দে শিল্পী এবং পেইন্ট ব্রাশগুলির। ৪৯৮ আর্ট ডিস্ট্রিক্টটি অ্যাভেন্ট- গার্ডি গ্যালারীগুলির সাথে ভাসমান রয়েছে। অন্যদিকে প্রতিটি রাস্তায় ভাস্কর্য এবং মুরালগুলিকে মনে হচ্ছে একটি আল ফ্রেস্কো আর্ট মিউজিয়ামের মতো। 

৯.শিহুয়া গুহা

চীনের রাজধানী থেকে পশ্চিমে এক ঘণ্টার গাড়ি চালিয়ে শিহুয়া গুহাতে পৌঁছা যায়। শিহুয়াকে এর ঝলকানো রঙের জন্য স্টোন ফ্লাওয়ার গুহা ডাকনাম দেওয়া হয়েছে। যা এটির স্ট্যালগিমিটস এবং স্ট্যালাকাইটাইটস আলোকিত করে। গুহাগুলি আট তলা ডুবে গেছে মাটির নিচে এবং দর্শনার্থীরা এর প্রথম চারটি স্তরে প্রবেশ করতে পারে।

১০.স্বর্গের মন্দির

স্বর্গের মন্দির হচ্ছে মধ্য বেইজিংয়ের দক্ষিণ-পূর্ব অংশে অবস্থিত সাম্রাজ্যবাদী ধর্মীয় ভবনগুলোর একটি কমপ্লেক্স। কমপ্লেক্সটি মিং এবং কিং রাজবংশের সম্রাটরা ভাল ফসলের জন্য স্বর্গের কাছে প্রার্থনা করার বার্ষিক অনুষ্ঠানের জন্য পরিদর্শন করেছিলেন। স্বর্গের মন্দিরটি খোদাই করা হয়েছিলো 1998 সালে একটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসাবে এবং এটিকে “স্থাপত্য ও ল্যান্ডস্কেপ” ডিজাইনের একটি মাস্টারপিস হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছিল। যেটি বিশ্বের একটি মহান সভ্যতার বিবর্তনের জন্য এক মহা গুরুত্বপূর্ণ বিশ্বকে চিত্রিত করে। এ হিসাবে স্বর্গের মন্দিরের প্রতীকী বিন্যাস এবং নকশা কিন্তু বহু শতাব্দী ধরে সুদূর প্রাচ্যের স্থাপত্য ও পরিকল্পনার উপর বেশ গভীর প্রভাব ফেলেছিল। বেইজিং ভ্রমনে গেলে আপনি এই মন্দিরটি দেখে আসতে পারেন।   

১১.সানলিটুন ডংউউজি

আপনি যদি শরৎকালে বেইজিং যান আর বেইজিংয়ের দুর্দান্ত ছবি তোলার জন্য খুঁজেন জায়গা খুঁজেন। তাহলে বেইজিংয়ের দূতাবাস জেলার এই ছায়াময় রাস্তাটি একদম পার্ফেক্ট হবে। প্রতি অক্টোবরে এটি সূর্যের আলোতে সোনার ঝলক ছেড়ে দেয়। আর তখন এটি রাজধানীর অন্যতম মনোরম স্পটে পরিণত হয়। মনোরম এই স্পটটির সৌন্দর্য অবলোকন করতে দর্শনার্থীরা ভীড় জমায়৷ 

১২.বেইজিং স্টোন কারভিংস আর্ট মিউজিয়াম

ঝোংগুয়ানকুন স্ট্রিটের দক্ষিণ প্রান্তে, হাইডিয়ান জেলার, চ্যাং নদীর উত্তর তীরে অবস্থিত এটি। এটি মূলত তিব্বতি বৌদ্ধ ধর্মের রাজকীয় একটি মন্দির “জেনজু” ছিল। কোলাহলপূর্ণ রাস্তা এবং ট্রাফিক দ্বারা বেষ্টিত এই জাদুঘরটি পর্যটকদের একটি আকাঙ্ক্ষার জায়গা হিসাবে কাজ করে।

পাথর খোদাই করে একটি যাদুঘর নির্মাণের এই ধারণাটি জেনজুয়ে মন্দিরের একটি বজ্রাসন প্যাগোডার ধ্বংসাবশেষ থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছিল। এটি চীনের প্রথম স্থানীয় জাদুঘর, যেখানে সমগ্র বেইজিং জুড়ে পাথর খোদাই করা প্রাচীন জিনিসপত্র সংগ্রহ করে এবং বহিরঙ্গন প্রদর্শনী করে। 20 বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রচেষ্টা, BSCM সংগ্রহ, প্রদর্শনী, গবেষণা এবং পাবলিক শিক্ষায় প্রশংসনীয় ভাবে অগ্রগতি করেছে। 

সিসিটিভি সদর দফতর

বিখ্যাত সিসিটিভি সদর দফতর এর অবস্থান হলো বেইজিংয়ের আর্থিক কেন্দ্রস্থলে। বেইজিং ভ্রমনে গেলে আপনি এই স্থানটি একবার ঘুরে আসতে পারেন। 

লোকেশন: চীনের রাজধানী বেইজিং। 

ভ্রমনগাইড/কিভাবে যাবেন: বিমান বাংলাদেশ, চায়না সাউদার্ন, মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স ঢাকা থেকে বেইজিং রূটে বিমান পরিষেবা দিয়ে যাচ্ছে। আপনি এগুলোর যেকোনো একটিতে করে বেইজিং চলে যেতে পারবেন। 

চীনের এ রাজধানী শহর বেইজিং আপনাকে পরিচয় করাবে পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের প্রাচীন ইতিহাসের সাথে, বিমোহিত করবে এর পর্যটন স্থলগুলোর অপার সৌন্দর্যে। এখানে গিয়ে আপনি ভ্রমনের স্যাটিসফেকশন উপলব্ধি করতে পারবেন প্রতি মুহূর্তে। পর্যটকদের প্রিয় একটি ভ্রমন স্থান এই সুন্দর রহস্যে ঘেরা শহরটিতে আপনিও ঘুরে আসতে পারেন সানন্দে। আপনার ভ্রমনটি নিরাপদ এবং নির্ঝঞ্জাটে সম্পন্ন হোক।

Related Post

মৃত্যু নিয়ে উক্তি

150+মৃত্যু নিয়ে উক্তি, বাণী, ক্যাপশন 2024

মৃত্যু নিয়ে উক্তি জন্মিলে মরিতে হবে আর এটাই সত্যি। মৃত্যু হচ্ছে সবচেয়ে চিরন্তন সত্যি। পৃথিবীতে প্রতিটি প্রাণীর মৃত্যুর স্বাদ অনুভব করতে হবে। সবসময় মৃত্যুর জন্য

Read More »
খুশির স্ট্যাটাস

200+ স্টাইলিশ খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন

খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন জীবনের সুন্দর খুশির মুহূর্ত আমরা সবাই বাঁধাই করে রাখতে চাই। আর এই খুশির মুহূর্তকে ধরে রাখার সবচেয়ে সহজ উপায়

Read More »

স্টাইলিশ ভালোবাসার ছন্দ | রোমান্টিক ছন্দ | Love Status Bangla

❤❤ভালোবাসার ছন্দ | ভালোবাসার ছন্দ রোমান্টিক | ভালোবাসার ছন্দ স্ট্যাটাস❤❤ ভালোবাসা হলো এক অন্যরকম অনুভূতির নাম, যা শুধুমাত্র কাউকে ভালবাসলেই অনুভব করা যায়। আমরা বিভিন্নভাবে

Read More »
মন খারাপের স্ট্যাটাস

মন খারাপের স্ট্যাটাস, উক্তি, ছন্দ, ক্যাপশন, কিছু কথা ও লেখা

মন খারাপের স্ট্যাটাস মন খারাপ – এই কষ্টের অনুভূতি কার না হয়? সবারই কখনো না কখনো সবারই মন খারাপ হয়। জীবনের ছোটোখাটো অঘটন থেকে শুরু

Read More »

Leave a Comment

Table of Contents