Dreamy Media BD

হংকংয়ের দর্শনীয় স্থান (Hong Kong)

হংকংয়ের দর্শনীয় স্থান

গণচীনের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত হংকং (Hong Kong) হচ্ছে একটি বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল ও মহানগরী। ম্যান্ডারিন চীনা ভাষায় হংকংকে বলা হয় শিয়াংকাং। হংকং অঞ্চলটি মূল চীনা ভূখণ্ড থেকে প্রসারিত হয়েছে দক্ষিণ চীন সাগরে ভেতরে।গণ প্রজাতন্ত্রী চীনের দুইটি বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চলের একটি হচ্ছে হংকং। অন্য অঞ্চলটি হচ্ছে ম্যাকাও।

২৬০ টিরও বেশি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ নিয়ে গঠিত এই হংকং অঞ্চলটি পার্ল নদীর বদ্বীপের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত। এর উত্তরে রয়েছে চীনের কুয়াংতুং প্রদেশ আর পূর্ব, পশ্চিম ও দক্ষিণে রয়েছে দক্ষিণ চীন সাগর। হংকংয়ের অর্থনীতি বেশ শক্তিশালী। ১৯৯৭ সালে দীর্ঘ ব্রিটিশ উপনিবেশ শেষে প্রশাসনিকভাবে হংকং মাতৃভূমি চীনের অধীনে আসে।

এই হংকংকে বলা চলে একটি পর্যটন নগরী। প্রাচীন উপনিবেশ হওয়ার কারনে প্রাচীন স্থাপত্য হচ্ছে হংকংয়ের ঐতিহ্য। এখানে রয়েছে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অনেক প্রাচীন মন্দির। রাতের হংকং নিজেকে এক অপরূপ সাজে তুলে ধরে। আকাশচুম্বী অট্টালিকাগুলোর দিকে তাকালে মনে হবে যেনো এ কোনো এক আলোকসজ্জার নগরী। পরতে পরতে রং-বেরঙের বাহারি রঙিন আলো হংহংকে দান করে নান্দনিক রূপ।

নগরীর ক্লক টাওয়ারটি রাতের হংকংকে করে তুলে আরও উজ্জ্বল আরও ঝমকালো। হংকংয়ের ডিজনিল্যান্ড এটির আধুনিকতার অন্যতম আরেক উদাহরণ। আধুনিক এই বিনোদনকেন্দ্রটি পর্যটকদের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। এ ছাড়া পিক টাওয়ার হচ্ছে এখানকার উঁচু পাহাড়ের শৃঙ্গ। সর্বোচ্চ স্থান থেকে নিচে সমুদ্রের ভাসমান জাহাজ, নীল জলরাশি পরিবেশকে করে তোলে আরও মনোহারিণী। আকাশ-সমুদ্র, বৃক্ষ লতাগুল্ম আবৃত সেসব ছায়াময় পাহাড়। আর এখানের মাদাম তুসোর জাদুঘর তো বিশ্বব্যাপী আলোচিত।

প্রায় ১০০টি মোমের প্রতিকৃতি সংবলিত জাদুঘরটি অনেক বেশিই সুন্দর। হলিউড রোডের পাশে যে মন্দিরটি, তার নাম মান মো টেম্পল। টিয়েনত্যান বুদ্ধ, যা পরিচিত বিগ বুদ্ধ হিসেবে। অত্যন্ত জনপ্রিয় পর্যটন আকর্ষণ এই মন্দির। এই মন্দিরটি বৌদ্ধ আর তার অনুসারীদের মিলনস্থল।সামনে রয়েছে তুলি হাতে বিদ্যার দেবতা ‘মান চেওং’ আর তরবারি হাতে ‘মো’ যুদ্ধের দেবতার মূর্তি। এখানে পাহাড়ি পথ ধরে চলে যায় চীন সাগর আর তার পাশেই রয়েছে বন।একসময় প্রচুর চন্দনগাছ জন্মাতো বলে এই হংকংকে বলা হতো চন্দনের দ্বীপ। স্ট্যানলি বীচে সৌখিন মাছ ধরা খুবই জনপ্রিয়। এ ছাড়া পর্যটকদের আকর্ষণে রয়েছে নোং পিং ৩৬০ গন্ডোলা লিফট (ক্যাবল কার)। 

এই সব সৌন্দর্যকে উপেক্ষা করতে না পেরে প্রতি বছর পৃথিবীর আনাচ-কানাচে থেকে পর্যটকদের ঢল নামে। বাংলাদেশ থেকেও এর ব্যতিক্রম না৷ তাই আপনাদের সুবিধার্থে এই আর্টিকেলটি। এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা হংকং সেরা দর্শনীয় স্থানগুলো সম্পর্কে অবগত হতে পারবেন।হংকং হচ্ছে একটি গ্ল্যামারাস শহর আর বিলাসবহুল কেনাকাটার জন্য একটি শীর্ষ পছন্দ হিসাবে এটি বিশ্বজুড়ে পরিচিত। কিন্তু এই নগর-রাষ্ট্রটি সংস্কৃতি এবং ইতিহাসে একদম পরিপূর্ণ।  মুখের জলের ম্লান পরিমাণ একটি চিত্তাকর্ষক স্কাইলাইনের চেয়ে রয়েছে আরও অনেক কিছু দেওয়ার।

হংকং এর এমন একটি শক্তি আছে যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। এটির প্রতিটি কোণে রয়েছে নতুন আর অনন্য কিছু। তা হোক একটি প্রাচীন মন্দির কিংবা সাম্প্রতিক ইলেকট্রনিক গ্যাজেট বিক্রির একটি দোকান বা হতে পারে একজন মানুষ হাঁটার জন্য তার পাখিটিকে খাঁচায় নিয়ে যাচ্ছে। হংকং এর আরো একটি দিকও কিন্তু রয়েছে। যেখানে আপনি বন-ঢাকা পাহাড়, হাইকিং ট্রেইল, সুন্দর সৈকত, দ্বীপ এবং ঐতিহ্যবাহী মাছ ধরার গ্রাম খুঁজে পাবেন।

চলুন এবার হংকং এর কয়েকটি দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে জানা যাক:

হংকং মহাসাগর পার্ক
হংকং মহাসাগর পার্ক

১.হংকং মহাসাগর পার্ক

এটি হচ্ছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম ওসেনেরিয়াম। সহজ ভাষায় বললে, এটি সামুদ্রিক প্রাণীর একটি বিশাল অ্যাকুরিয়াম। খুব দারুণ একটি থিম পার্ক। এখানে পর্যটকদের বিনোদনের জন্যে রয়েছে নানা ব্যবস্থা। এখানে যেমন তারা অনেক কাছ থেকে সমুদ্রের ছোট-বড় নানান ধরনের প্রাণী দেখতে পারেন, তেমনি একটু সাহসী হলে কিন্তু ডাইভিংও করতে পারবেন।

হংকংয়ে যারা বেড়াতে আসেন, তাদের অন্যতম একটি প্রিয় জায়গা এটি। ফোর্বস ম্যাগাজিন একে ‘বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় দশটি থিম পার্কের অন্যতম’ হিসেবে ২০০৬ সালে নির্বাচিত করে। এখানে ৩ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের জন্য টিকিটের দাম হচ্ছে জন প্রতি ১৬০ হংকং ডলার; অন্যদিকে ১২ বছরের চেয়ে বেশি বয়সীদের জন্য জন প্রতি ৩২০ হংকং ডলার।

২.রিপালস্ বে

হংকংয়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় সমুদ্র সৈকতটি হচ্ছল রিপালস্ বে। এখানে হংকংয়ে যে কোনো স্থান থেকেই খুব সহজে যাওয়া যায় । সাধারণত প্রেমিক-প্রেমিকারা এ স্থানটি অনেক বেশি পছন্দ করেন।

৩.ভিক্টোরিয়া পিক্

এখান থেকে ভিক্টোরিয়া পোতাশ্রয়, কাউলুন উপদ্বীপ ও হংকং শহর খুব ভালো দেখা যায়। বিশেষ করে সন্ধ্যায় যখন পুরো হংকং আলোকিত হয়ে ওঠে, তখন এই স্থান থেকে সেই দৃশ্যও খুব অপূর্ব লাগে! এখানে বিশেষ করে ট্রামে করে ঘুরে ঘুরে শহরের চারপাশের সুন্দর পরিবেশ দেখা যায়। এখানে বড়দের জন্যে টিকিট মূল্য হলো ৫৩ হংকং ডলার। আর শিশু ও প্রবীণদের জন্য হলো যথাক্রমে ২৪ ও ৩১ হংকং ডলার। 

৪.মাদাম তুসোর মোমের জাদুঘর

বিশ্বের বিভিন্ন তারকাদের মোমের তৈরি মূর্তি সংরক্ষিত রেয়েছে এই জাদুঘরে। মূর্তিগুলো দেখলে আপনি রীতিমতো অবাক হবেন। মনে হবে যেনো সত্যি মানুষই দাঁড়িয়ে আছে। এখানে চীনের সাবেক প্রেসিডেন্ট হু চিন থাকেন। বাস্কেটবল তারকা ইয়াও মিং ও হংকং তারকা অ্যান্ডি লাউ’সহ অনেক বিখ্যাত মানুষের মোমের মূর্তিও কিন্তু এখানে দেখতে পাবেন। 

যদিও এখন এটি আর বিশেষ কিছু নয়। অনেক দেশেই এখন এই রকমের জাদুঘর দেখা যায়।

তারপরও অনেকে আছে যাদের কাছে বিষয়টা সম্পূর্ণ নতুন, তারা মূর্তিগুলো দেখলে বেশ অবাক হবে। আপনি চাইলে এই জাদুঘরটি ঘুরে দেখে আসতেই পারেন। এখানে বয়স্কদের জন্য প্রবেশমূল্য হচ্ছল ২২৫ হংকং ডলার। আর প্রবীণ ও শিশুদের জন্য হচ্ছে ১৫৫ হংকং ডলার

৫.তারকা এভিনিউ বা এভিনিউ অব স্টারস্

হংকংয়ের তারকা এভিনিউ-এ ৭৩টি উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র নির্মাতাদের ফলক নির্মান করা হয়েছে। তারকা এভিনিউয়ে হাঁটার সময় আপনি উপভোগ করতে পারবেন হংকংয়ের বিখ্যাত ভিক্টোরিয়া পোতাশ্রয়ের সুন্দর দৃশ্য। এ ছাড়া হংকং দ্বীপের তীরে রয়েছে বিশিষ্ট স্থাপত্য নিদর্শন। এছাড়াও আছে মাল্টিমিডিয়া সংগীত লাইট সিম্ফনি উপভোগের দারুণ সুযোগ। আপনারা কেউ ই এ সুযোগ হাত ছাড়া করতে চাইবেন না ।

ভিক্টোরিয়া পোতাশ্রয়

৬.ভিক্টোরিয়া পোতাশ্রয়

হংকংয়ের বৃহত্তম পার্ক হলো ভিক্টোরিয়া পোতাশ্রয়। প্রতি বছরের বসন্ত উৎসব চলাকালীন চীনা ফুলের বৃহত্তম প্রদর্শনীর আয়োজন এখানেই করা হয়। হংকংয়ের বিখ্যাত কনভেনশন অ্যান্ড এক্সিবিশন সেন্টারও কিন্তু এখানে অবস্থিত।  

ভিক্টোরিয়া পিক থেকে স্কাইলাইনে না যাওয়া পর্যন্ত আপনি কিন্তু হংকংয়ের সেরাটি দেখেননি, যেটি সাধারণত দ্য পিক নামে পরিচিত। আকাশচুম্বী অট্টালিকা, ব্যস্ত শহর, পোতাশ্রয় এবং আশেপাশের দ্বীপগুলি দেখতে এই মনোরম দৃশ্যের শীর্ষে চলে যান ট্রামে চড়ে৷ উপরে উঠার পথে আপনার সেরা ভিউ পেতে ডানদিকেই বসে থাকা ভাল।

ট্রাম স্টেশনটি মারে বিল্ডিং দ্বারা হংকং পার্কের প্রবেশদ্বারের একদম কাছে অবস্থিত। ট্রামের শীর্ষে রয়েছে পিক টাওয়ার এবং পিক গ্যালেরিয়া। যেখানে আপনি দোকান, রেস্তোরাঁ এবং একটি পর্যবেক্ষণ ডেক দেখতে পাবেন। দ্য পিকের বেশির ভাগ অংশই ঢেকে আছে মূলত একটি বিশাল পার্কে। যেখানে রয়েছে সবুজের সমারোহ, প্রকৃতির ট্রেইল এবং আরও সুন্দর লুকআউট। যার সাথে আপনি নিচের সমৃদ্ধ মহানগরের দৃশ্যও দেখতে পাবেন।দ্য পিক থেকে একটি ট্রেইলও নীচে শহরের দিকে নিয়ে যায়। এখানে সেখানে বন আর রাস্তার অংশগুলির মধ্য দিয়ে ট্রেইলের মিশ্রণ অনুসরণ করে। তবে এখানে আপনার পথ খুঁজে পাওয়াটা কিছুটা বিভ্রান্তিকর হতে পারে। সন্ধ্যা হচ্ছে দ্য পিক দেখার দুর্দান্ত একটি সময়।

এ সময় আপনি রাতের আকাশের বিপরীতে এক সুন্দর  আলোকিত দর্শনীয় স্কাইলাইন দেখতে পাবেন। এটি রাতের বেলা হংকংয়ের সেরা দৃশ্যগুলির মধ্যে একটি। যদি ট্রাম লাইনটি দীর্ঘ হয় বা আপনি আপনার হোটেল থেকে সরাসরি যেতে চান, তাহলে আপনি উপরে একটি ট্যাক্সি নিতে পারেন।

৭.হংকং ডিজনিল্যান্ড

এখানে চীনা কার্টুন চরিত্র আর পশ্চিমা কার্টুন চরিত্রের বিশাল সমাহার দেখা যায়। এ ছাড়াও ডিজনিল্যান্ডে আপনি দেখতে পাবেন হংকং ডিজনিল্যান্ড হোটেল ও ডিজনির হলিউড হোটেল। এখানে উপভোগ্য বিষয় হচ্ছে রূপকথার বিশ্ব ও চলচ্চিত্র বিশ্বের বিস্ময়কর আনন্দ। যে কোনো সময় বিভিন্ন ধরনের ডিজনি চরিত্র  পর্যটকদের সামনে এসে তাদের চমকে দেয়। যা রয়েছে বিস্ময় সর্বত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে। 

আপনি যদি হংকং গিয়ে ডিজনিল্যান্ডে না যান, তাহলে আপনার হংকং ভ্রমণই বৃথা।

মিকি মাউসের সাথে আড্ডা না দিয়ে আর সমুদ্রের প্রাণীদের সাথে করমর্দন না করে কোন বাচ্চা হংকং ত্যাগ করতে চাইবে বলে আমার মনে হয় না। এ ছাড়াও এখানে রূপকথার বিশ্ব চলচ্চিত্রের বিস্ময়কর আনন্দ সব উপভোগ করতে পারবেন।

৮.হংকং বিজ্ঞান জাদুঘর

পর্যটকদের জন্য সুন্দর আরও একটি আকর্ষন হচ্ছে হংকং বিজ্ঞান জাদুঘরটি। এখানে কম্পিউটার,জ্বালানিসম্পদ,যন্ত্রমানব, পরিবহন ও টেলিযোগাযোগ  ইত্যাদি খাতের বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত প্রদর্শিত হচ্ছে। এই জাদুঘরটির সাধারণ টিকিট হচ্ছে ২৫ হংকং ডলার। তবে গ্রুপে যদি ২০জন কিংবা তারও বেশি মানুষ থাকে, তবে জনপ্ৰতি লাগবে ১৭.৫ হংকং ডলার। প্রতিবন্ধী, ছাত্র এবং প্রবীণদের জন্য লাগবে ১২.৫ হংকং ডলার।

৯.ছিংমা সেতু

হংকংয়ের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও শহরের মূল রাজপথকে সংযুক্ত করেছে বিশ্ব পর্যায়ের স্থাপত্য এই সেতুটি। এটি হচ্ছে হংকংয়ের প্রতীক। সেতুটি দৈর্ঘ্যে দৈর্ঘ্য ২.২ কিলোমিটার। সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ৬০ মিটার উঁচুতে সেতুটির অবস্থান। সেতুতে ব্যবহার করা ঝুলন্ত ইস্পাতের রশির মোট দৈর্ঘ্য হচ্ছে ১ লাখ ৬০ হাজার কিলোমিটার। এটি বিশ্বের সব চেয়ে লম্বা ঝুলন্ত সেতু। 

১০.হংকং কনভেনশন অ্যান্ড এক্সিবিশন সেন্টার

১৯৯৭ সালে পুনরায় চীনের অধীনে আসে হংকং। এই উপলক্ষ্যে এ সেন্টারে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এখান থেকে পুরো হংকং দ্বীপ এবং কাউলুন উপদ্বীপের রাতের দৃশ্য বেশ ভালোভাবে  উপভোগ করা যায় ।

১১.সিম শা সুই

হংকংয়ের কাউলুন অঞ্চলে অবস্থিত এ অঞ্চলটি পর্যটনশিল্প ও ব্যবসার জন্য সবচেয়ে বেশি উন্নত একটি জায়গা। জমকালো শপিংমলের পাশাপাশি এখানে রয়েছে বৈশিষ্ট্যময় ছোট দোকানও যেগুলো তরুণ-তরুণীদের কাছে খুবই প্রিয়। সিম শা সুই’র রেস্তোরাঁ ও বারও অনেক জনপ্রিয়। 

১২.কজওয়ে বে

হংকংয়ের সবচেয়ে প্রধান ব্যবসা-বাণিজ্যের অঞ্চলগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে কজওয়ে বে । হংকং দ্বীপের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত এই কজওয়ে বে তে রয়েছে অনেকগুলো বড় শপিংমল। সুস্বাদু অনেক ধরনের খাবার পাওয়া যায় এখানে। এখানে জাপানি বিনিয়োগে গড়ে ওঠা বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টাল স্টোরও আছে।  

এটাকে শহরের কেনাকাটার স্বর্গও বলা যায়। পর্যটক এবং শহরবাসীর কাছে সব থেকে আকর্ষণীয় স্থান। এনওয়াইসি এর ফিফথ অ্যাভিনিউ হলো এটি। এটি বিশ্বের সবচেয়ে আকর্ষণীয় কেনাকাটার স্থানগুলোর মধ্যে একটি। শপিং মল আর দোকানে একদম ভরপুর একটি স্থান।

ব্যাংক অব চায়না টাওয়ার
ব্যাংক অব চায়না টাওয়ার

১৩.ব্যাংক অব চায়না টাওয়ার

এটি হংকংয়ের অন্যতম একটি আকর্ষণীয় স্থাপত্য। দেখতে বাঁশের মতো হংকংয়ের বেশিরভাগ মানুষই আসলে কুয়াংতুংয়ের। তাই ক্যানটোনিজ রন্ধনপ্রণালী এখানে বেশ জনপ্রিয়। এখানকার খাবারগুলোও টাটকা ও হালকা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আবার তেওছু রন্ধনপ্রণালী হংকংয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। অবশ্য বিদেশি খাবারও এখানে কম জনপ্রিয় নয়!

১৪.হংকং স্কাইলাইন

বিশ্বের সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক এবং স্বীকৃত স্কাইলাইনগুলির মধ্যে একটি রয়েছে হংকং-এ। হংকং এর দ্বীপ এবং কাউলুন উভয়েই আকাশচুম্বী অট্টালিকাগুলির ঘন সংগ্রহে আশেপাশের পাহাড় এবং পোতাশ্রয়ের সাথে সম্মিলিত এই শহরটিকে একদম আলাদা করে দিয়েছে।

বন্দরে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী লাল পালতোলা চীনা জাঙ্ক বোট আর ঐতিহাসিক স্টার ফেরি আধুনিক উচ্চ-উত্থানের পটভূমিতে তীব্রভাবে বিপরীত।  আকাশ অন্ধকার হয়ে যাওয়ার সাথে সাথে রাতে স্কাইলাইন চরিত্রটি সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তন হয়ে যায় এবং শহরের ঝমকালো আলোগুলো দৃশ্যটি পূরণ করে।

স্কাইলাইন দেখার জন্য হংকং-এর সেরা দুটি জায়গা হচ্ছে ভিক্টোরিয়া পিকের চূড়া থেকে অথবা কাউলুন জলপ্রান্তর থেকে (ঘড়ি টাওয়ারের কাছে টিসিম শা সুই প্রমেনাড বরাবর)। স্টার ফেরি ডক থেকে খুব বেশি দূরে নয়, যেখানে বেঞ্চগুলি জলপ্রান্তরে সারিবদ্ধ হয়ে আছে । হংকং এর দিকে তাকালে দেখবেন রাত্রিকালীন এ সিম্ফনি অফ লাইটস মিউজিক এবং লাইটস সেট করা লাইট শো দেখার জন্য পরবর্তী অবস্থানটি কিন্তু সেরা একটি জায়গা।  

১৫. বড় বুদ্ধ

 উচ্চতায় 34 মিটার লম্বা, তিয়ান তান বুদ্ধ মূর্তিটি বুদ্ধ শাক্যমুনির একটি শক্তিশালী মূর্তি এবং এটির অবস্থান পো লিন মঠের কাছে। হংকং-এ দেখার জন্য এটি সবচেয়ে নির্মল স্থানগুলির মধ্যে একটি। এমনকি এই স্থানটি মানুষ এবং প্রকৃতির মধ্যে এক সুরেলা সম্পর্কের প্রতীক। আপনাকে এই শক্তিশালী ব্রোঞ্জের মূর্তিটিতে পৌঁছানোর জন্য মোট 268 টি ধাপ ট্রেস করতে হবে যা 202 টি টুকরো দিয়ে তৈরি।

 ১৬. হংকং জাঙ্কস

প্রায় ২৬০টি ছোট ছোট দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত এক বিচিত্র দ্বীপপুঞ্জ,নাম তার হংকং জাঙ্কস। এই অঞ্চলে ভেসে বেড়ানো পুরনো আমলের মতো দেখতে জাহাজ এবং তাদের মরচে দেহ আপনাকে এনে দেবে সম্পূর্ণ এক ভিন্ন অনুভূতি। এখানে ঘুরে বেড়ায় চীনের ঐতিহ্যবাহী মাছ ধরার নৌকাগুলোও। 

১৭. পিক ট্রাম

এই ট্রামটি উচ্চতায় ১৭০০ ফুট। যা হংকং দ্বীপের বৃহত্তম পর্বত শিখরের শীর্ষে নিয়ে চলে যায় টুরিস্টকে। যেখান থেকে কাউলুন,টুরিস্ট ভিক্টোরিয়া হারবার এবং আশেপাশের পাহাড়গুলির 180-ডিগ্রী দর্শনীয় অপূর্ব দৃশ্য উপভোগ করতে পারে। বলা যায় এটি পুরো সিটির সেরা ভিউ।

১৮.ল্যান কোয়াই ফং

নাইট লাইফ বা পার্টির জন্য চমৎকার একটি জায়গা হলো ল্যান কোয়াই ফংরাস্তার দুই ধারে রয়েছে সারি সারি রেস্টুরেন্ট,বার, নাইট ক্লাব,সিসা ক্লাব, পাব। বলা যায় এডাল্ট এন্টারটেইনমেন্টের জন্য পুরো আয়োজন আছে এখানে। তাই এই জায়গাকে বলা হয় সেন্ট্রাল হংকংয়ের পার্টি সেন্টার। 

এছাড়াও একটি দারুণ ব্যাপার হলো হংকংয়ে রাতে ভ্ৰমণ। হংকংয়ে রাতে ভ্রমণ করা কিন্তু বেশ মজার। এখানকার বিভিন্ন বিনোদনকেন্দ্র গুলো সাধারণত রাত ১০টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকে। সাপ্তাহিক ছুটি বা অন্যান্য ছুটির দিনে দেখা যায় তার উপচে-পড়া ভিড়৷ ছুটির দিনে এসব স্থানে খরচটাও স্বভাবতই কিছুটা বেশি হয়।

এখানকার অধিকাংশ দিনেই দুপুর থেকে রাত ১টা পর্যন্ত খোলা থাকে। আর একটি ব্যপার হলো, হংকং এ সামারের সময় হলো জুন থেকে সেপ্টেম্বর। আর এ সময় তাপমাত্রা থাকে প্রায় ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর শীতকালের তাপমাত্রা থাকে সাধারণত ১৮-২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। 

লোকেশন: হংকং, বেইজিং থেকে ১৯৬৬ কিমি দূরে অবস্থিত গণচীনের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলের একটি বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল ও মহানগরী।

ভ্রমনগাইড/কীভাবে যাবেন : ঢাকা থেকে হংকং যেতে সরাসরি বিমানে করে আপনি  ঢাকা থেকে ড্রাগন এয়ার সার্ভিসে সরাসরি হংকং যেতে পারবেন। ঢাকা থেকে রাত ১২টায় রওনা হলে ভোর ৪টার মধ্যেই হংকং পৌঁছে যাবেন। হংকং বিমানবন্দরে নেমে সেখানে আপনি ক্যাব পাবেন। এ ছাড়া বাস বা ট্রেনে করেও যে কোনো স্থানে যেতে পারবেন।

শেষকথা, প্রকৃতির এক অপার দান হংকং। ভ্রমনপ্রেমী মানুষেরা প্রকৃতির লীলাময় সৌন্দর্যে স্নান করে আত্মতৃপ্তির সাথে হংকং থেকে ফিরবে। তবে কিছু বিষয় লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন,যেমন হংকং গিয়ে আপনি যেখানে সেখানে ময়লা না ফেলে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখবেন। আপনার একটি নিরাপদ এবং সুন্দর ভ্রমন কাটাবার শোভেচ্ছা রইলো । 

আরো পড়ুন –

Related Post

মৃত্যু নিয়ে উক্তি

150+মৃত্যু নিয়ে উক্তি, বাণী, ক্যাপশন 2024

মৃত্যু নিয়ে উক্তি জন্মিলে মরিতে হবে আর এটাই সত্যি। মৃত্যু হচ্ছে সবচেয়ে চিরন্তন সত্যি। পৃথিবীতে প্রতিটি প্রাণীর মৃত্যুর স্বাদ অনুভব করতে হবে। সবসময় মৃত্যুর জন্য

Read More »
খুশির স্ট্যাটাস

200+ স্টাইলিশ খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন

খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন জীবনের সুন্দর খুশির মুহূর্ত আমরা সবাই বাঁধাই করে রাখতে চাই। আর এই খুশির মুহূর্তকে ধরে রাখার সবচেয়ে সহজ উপায়

Read More »

স্টাইলিশ ভালোবাসার ছন্দ | রোমান্টিক ছন্দ | Love Status Bangla

❤❤ভালোবাসার ছন্দ | ভালোবাসার ছন্দ রোমান্টিক | ভালোবাসার ছন্দ স্ট্যাটাস❤❤ ভালোবাসা হলো এক অন্যরকম অনুভূতির নাম, যা শুধুমাত্র কাউকে ভালবাসলেই অনুভব করা যায়। আমরা বিভিন্নভাবে

Read More »
মন খারাপের স্ট্যাটাস

মন খারাপের স্ট্যাটাস, উক্তি, ছন্দ, ক্যাপশন, কিছু কথা ও লেখা

মন খারাপের স্ট্যাটাস মন খারাপ – এই কষ্টের অনুভূতি কার না হয়? সবারই কখনো না কখনো সবারই মন খারাপ হয়। জীবনের ছোটোখাটো অঘটন থেকে শুরু

Read More »

Leave a Comment

Table of Contents