Dreamy Media BD

ইনকা সভ্যতা: এক রহস্যময় সাম্রাজ্য

Inca civilization

চারিদিকে আন্দেজ পর্বতমালার বিস্তার, উত্তর-দক্ষিণ মিলিয়ে প্রায় ২৫০০ মাইল। এরই মাঝের একটি দেশ পেরু। পেরুর পূর্ব দিকে কুজকো নামে এক নগর ছিলো। এই কুজকো নগরটিকে ঘিরে গড়ে উঠেছিলো কুজকো রাজ্য, যার ইংরেজি নাম ‘কিংডম অব কুজকো’। পরবর্তীতে এই রাজ্যটি হয়ে উঠে দক্ষিণ আমেরিকার অন্যতম পরাক্রমশালী ইনকা সাম্রাজ্য। ইন্টারেস্টিং না?

পাঠক, আজ আমরা জানবো এই ইনকা সভ্যতা  (Inca civilization ) নিয়ে। জানবো ইনকা সভ্যতা কি, কিভাবে এর গোড়াপত্তন, এর শাসন বা রাষ্ট্র ব্যবস্থা কেমন ছিলো, এদের ধর্ম ও সংস্কৃতি ইত্যাদি আরো অনেক বিষয়।

ইনকা সভ্যতার নামকরনঃ

প্রথমেই আসি ইনকা সভ্যতার নামকরনে। ১৫ শতকের কথা। তখনকার সময়ে পেরুর কাস্কো এলাকায় গড়ে উঠে ইনকা নামে এই প্রাচীন সভ্যতা। ইনকা শব্দের অর্থ ‘সূর্য দেবতার সন্তান’। কাস্কোর অধিপতি অর্থাৎ ইনকা সম্রাটকে সম্প্রদায়ের লোকেরা সূর্য দেবতার সন্তান হিসাবে মানতো। এভাবেই সাম্রাজ্যটির নাম হয়েছিলো ‘ইনকা সাম্রাজ্য’। ইনকাদের ভাষায় সাম্রাজ্যটির নাম ‘তাওয়ানতিনসুইউ’, এর অর্থ ‘চার অংশ’।

আরো পড়ুন – নকশী কাঁথা: নকশী কাঁথার আদ্যোপান্ত

ইনকা সভ্যতা যে যে অঞ্চলে বিরাজমান ছিলোঃ

ইনকা সাম্রাজ্যের ব্যাপ্তি ছিলো বিশাল। কাস্কো কেন্দ্রিক এই সভ্যতা গড়ে উঠলেও পরবর্তীকালে সমগ্র পেরু ও বলিভিয়া, উত্তর আর্জেনটিনা, দক্ষিণ ইকুয়েডর, উত্তর চিলির একটি বড় অংশ জুড়ে ছড়িয়ে পরে এই ইনকা সভ্যতা। বিশাল অংশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়ার কারনে এই সভ্যতায় ছিলো ভৌগোলিক বৈচিত্র্য। এর মধ্যে ছিলো চাষ উপযোগী উপত্যকা, কোথাও বা পাহাড়ি ভূমি, আবার কোথাও সমুদ্রের তটভূমি।

ইনকা সভ্যতার প্রতিষ্ঠাতাঃ

প্রচলিত আছে, ইনকা সাম্রাজের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন মানকো কাপাক। এই রাজ্য বিস্তারে সফল রাজা হিসেবে নাম উঠে আসে পাচাকুতি’র। ঐতিহাসিকদের মতে, তিনিই নাকি ইনকা সাম্রাজ্যের ৩ ভাগ শাসন করেছিলেন। ১৪৩৮-১৫৩৩ সালের মধ্যে ইনকা সভ্যতা সর্বোচ্চ বিস্তার লাভ করে।  ১৪৭০ সালে তারা তখনকার সবচেয়ে সম্পদশালী ও শক্তিধর রাজ্য চিমু আয়ত্বে আনে, যা বর্তমানে পেরু নামে পরিচিত। পাচাকুতির ছেলেও কম যায় না। টোপা ইনকা নামের এই ছেলে সিংহাসনে বসার আগেই উত্তরের সীমান্ত এলাকায় আঘাত হেনে ইকুয়েডর রাজ্যের জন্ম দেয়।

যেহেতু, গোটা ইনকা সাম্রাজ্য জুড়ে নানা গোত্র আর ভাষার মানুষের আনাগোনা ছিলো তাই সবার ভেতরে ঐক্য গড়ে তোলা মোটেও সহজ কথা ছিলো না। এ কারনে সাম্রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অভিজাতদের একটি দল কাস্কোতে এসে জনসাধারণের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে। এভাবেই আস্তে আস্তে এই সভ্যতায় আঞ্চলিক শাসনব্যবস্থা গড়ে উঠে এবং আভিজাত্যও বজায় থাকে।

ইনকা সভ্যতার ভাষাঃ

ইনকার রাষ্ট্রীয় ভাষার নাম ‘কেচুয়া’। মজার ব্যাপার হচ্ছে, স্পেনীয় ঐতিহাসিকবিদ ছাড়া ইনকাদের ব্যাপারে এতোকিছু জানা সম্ভব ছিলো না। তাদের কোনো লিখিত তথ্য কোথাও পাওয়া যায়নি। এর কারণ ইনকারা লিখতে পারতো না। ইনকাদের নিজস্ব কোনও হরফ ছিলো না। ভাবছেন তাহলে ইনকারা নিজেদের মধ্যে ভাব বিনিময় করতো কিভাবে?

শুরু থেকেই গবেষকেরা এই রহস্য ভেদ করতে চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন। সম্প্রতি কালে ইনকাদের ভাব প্রকাশের অদ্ভুত এক মাধ্যমের খোঁজ পেয়েছেন গবেষকরা। নিজেদের যাবতীয় কথাবার্তা, মনের ভাব, হিসাব নিকাশ ইনকারা সুতোয় গিঁট বেঁধে প্রকাশ করতেন। আরো মজার ব্যাপার হচ্ছে কি রঙের সুতো, কতগুলি গিঁট, দু’টি গিঁটের দূরত্ব ইত্যাদি নমুনা দেখেই তারা একে অন্যের ভাব ও ভাষা বুঝতে পারতেন। গিঁটগুলো সাজানো হতো দশের ক্রমপর্যায়ে- দশ, একশো, এক হাজার, দশ হাজার এভাবে। এভাবেই সুতোয় গিঁট দিয়ে প্রতিটি গ্রামের তথ্য রাখা হতো। রাজস্বের পরিমান থেকে জনগণনা সবই চলতো এভাবে। বহুকাল আগে গবেষকরা এ তথ্যের আলামত হিসেবে নানান রঙের গিঁট ওয়ালা সুতো উদ্ধার করেছিলেন এই ইনকা সভ্যতা থেকে। এ ধরনের গিটওয়ালা সুতোকে ‘খিপু’ (Khipu) বলে। আর যারা তথ্য সংরক্ষণের কাজ করতো তাদের বলা হতো “খিপুকামায়ু”। এছাড়াও এ সাম্রাজ্য জুড়ে অন্তত ২০ টি স্থানীয় ভাষার অস্তিত্ব ছিল।

ইনকা সভ্যতা

ইনকাদের ধর্মঃ

ইনকারা মূলত সূর্যপূজক ছিলো। তাদের প্রধান দেবতা ছিল সূর্যদেবতা ‘ইন্তি’। সূর্যদেবতা ইন্তির প্রতিনিধি হিসেবে তারা রাজাকে মানতো। ‘তিতিকাকা’ নামক হৃদের পানি ছিলো তাদের কাছে খুব পবিত্র। তারা মনে করতো ‘ভিরাকোচা’ দেবতা হৃদ এর পানি থেকে উঠে এসে পৃথিবীতে প্রাণের সঞ্চার করেন।

ধর্মীয় দিক থেকে, ইনকারা তিন জগতের উপর বিশ্বাস রাখতো। উচ্চ জগত, মধ্য জগত ও নিম্ন জগত। পূণ্যবান ইনকা ও রাজারা মৃত্যুর পর যাবে স্বর্গে, যেটাকে উচ্চ জগত বলে। সেখানে তারা স্বর্গীয় সুখ ভোগ করবে। মধ্য জগত হলো পৃথিবী, যেখানকার কর্ম অনুযায়ী মৃত্যর পর ভালো কীংবা মন্দের ফল ভোগ করবে। এবং নিম্ন জগত হলো নরক, যেখানে মৃত্যুর পর পাপীরা তাদের পাপ অনুযায়ী শাস্তি পাবে।

ইনকারা বিশ্বাস করতো তাদের স্রষ্টা হচ্ছে ‘ভিরাকোকা’। বহুদেবতায় বিশ্বাসী হবার ফলে তারা নিজেদের সূর্যের সন্তান ভাবতো। তারা নিয়মিত সূর্য পূজা করতো। উচুঁ পাহাড়ের ওপর পাথরের মঞ্চ তৈরি করত তারা। ধর্মপ্রাণ হবার কারনে তারা ভাবত যেকোনও মুহূর্তেই অমঙ্গল হতে পারে। তাই ইনকা পুরোহিতদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ন ছিল এই সমাজে। পুরোহিতদের মধ্যে নারীপুরোহিতও ছিল সমানভাবে সমাদৃত। মেয়েদের মাসিক হলে এ সমাজে তা উদযাপন করা হতো। এসময় মেয়েটিকে ঘিরে নারীপুরোহিতরা চুল আঁচড়ানো উৎসব করত এবং মেয়েটির নতুন নাম দেওয়া হতো। রাজকন্যা বা সম্রাটের স্ত্রী হবার জন্য সবচে সুন্দরী মেয়েটিকে পাঠানো হত কুজকোতে।

সমাধিঃ

ভাই বোনের বিয়ের মাধ্যমে রক্তের বিশুদ্ধতা রক্ষা করা ইনকাদের বলা হতো সাপা ইনকা। বাকিরা সাপা নন, শুধু ইনকা। ইনকা সম্রাটদের মৃত্যুর পর তাদের দেহ মমি করে সূর্য মন্দিরে ইন্তির দিকে মুখ করে বসিয়ে রাখা হতো। তাদের স্ত্রী অর্থাৎ সম্রাজ্ঞীদের মৃত্যুর পর তাদের মমিকৃত দেহ চন্দ্র মন্দিরে মামাক্যুলিয়ার দিকে মুখ করে বসিয়ে রাখা হতো।

ইনকাদের খাদ্য ও পোষাকঃ

ইনকারা চাষাবাস করতো উপত্যকায় আর পাহাড়ের ঢালে। এদের প্রধান খাদ্য ছিল আলু ও ভুট্টা। আলু ও ভুট্টার পাশাপাশি কাঁচা মরিচ, ওল ইত্যাদি চাষ করতো তারা। গিনিপিগ ও লামার মাংস ছিলো তাদের প্রিয় মাংস। প্রশান্ত সাগরের পাড়ে বসবাসকারীরা সামুদ্রিক মাছ খেয়ে জীবনধারন করতো।

ইনকাদের পোশাক ছিলো অদ্ভুদ ধরনের। তারা লামার উলের তৈরি পোশাক পরতো। পাশাপাশি সুতির কাপড়ও পরতো। অভিজাতরা পরতো একটু ভিন্ন গড়নের পোশাক। তারা ধুতি ঝুলিয়ে রেখে পরতো। মানতাস নামের এক ধরনের শাল পরতো মেয়েরা। নারীপুরুষ উভয়ই পরতো স্যান্ডেল।

ইনকা সভ্যতায় বিয়ের নিয়মঃ

ইনকাদের বিয়ের নিয়মও অদ্ভূত। মেয়েদের বিয়ে ছোট থাকতেই ঠিক করে রাখা হতো। অন্যদিকে ২০ বছরের আগেই ছেলেদের বিয়ে দেওয়া হতো। বর কনের হাত ধরে চন্দন বিনিময়ের মাধ্যমে বিয়ে সম্পন্ন হতো। খাওয়া দাওয়ার পর নাচ গান। নতুন দম্পতি সাবলম্বী না হওয়া পর্যন্ত তাদের দেখাশোনা করতো পরিবার। ইনকাদের মধ্যে ভাই বোনের বিয়ের প্রচলন ছিলো। ইনকারা বিশ্বাস করতো, ভাই বোনের বিয়ের মাধ্যমে তাদের সূর্য বংশীয় রক্তের বিশুদ্ধতা বজায় থাকে। বাকি বিশ্বের কাছে অদ্ভুদ লাগলেও ভাই বোনের বিয়ের বন্ধন তাদের কাছে পবিত্র বলে গন্য হতো।

ইনকাদের নির্মাণঃ

সুবিশাল এই সাম্রাজ্যে সড়ক পথে যোগাযোগ রক্ষা করত ইনকারা। পাহাড়ি মালভূমি অঞ্চল হওয়ায় তাদের চাকার ব্যবহার ছিলো না। তাঁরা মূলত হেঁটেই যাতায়াত করতো। যোগাযোগের উদ্দেশ্যে ইনকারা নির্মান করেছিল এক দুর্দান্ত সড়ক, ‘ইনকা ট্রেইল’ যা দেখে শুরুর দিকে স্পেনীয়রা অবাক হয়ে যেতো। এছাড়াও মালামাল টানার জন্য লামা ক্যারাভান (ভেড়া গোত্রীয় দক্ষিণ আমেরিকার বিশেষ প্রাণী), সেতু চলাচলের ব্যবস্থা ছিলো সেই সময়ে।

ইনকাদের মধ্যে ভালো নির্মাতা গোষ্ঠী ছিল। পুরো সাম্রাজ্য জুড়ে দূর্গ ও শহর বাদেও প্রায় ১৪ হাজার মাইল রাস্তা নির্মাণ করেছিল তারা। স্থাপত্যশৈলীতেও তাদের জুড়ি মেলা ভার। কিভাবে তারা পাথর কেটে ভূমিকম্প সুরক্ষিত দেয়াল তৈরি করেছিলো তা আজও অভাবনীয়। সুবিশাল পাথর এতো উঁচুতে তুলতে কি উপায় অবলম্বন করেছিলো তারা তা এক রহস্য বটে। নিখুঁতভাবে পাথর কেটে কিভাবে এতো সুন্দর নির্মান তৈরি করেছে তার এবং এসবে ব্যবহৃত যন্ত্রেরও কোনো প্রমাণ মেলেনি।

আরও এক বিষ্ময়, ইনকা সভ্যতার এক অন্যতম নিদর্শন মাচুপিচু, যা পৃথিবীর সপ্তম আশ্চার্য নামে পরিচিত। এটি সমতল থেকে প্রায় ২৪০০ ফুট উপরে এক দুর্গ শহর। কেচুয়া ভাষায় ‘মাচুপিচু’ অর্থ হচ্ছে “পুরানো চূড়া”। হাজার বছরের ঐতিহ্যমন্ডিত, ইনকাদের গড়ে তোলা এ যেন এক আশ্চর্য শহর।

এর ঠিক ১০০ বছর পর ইনকা সভ্যতার সব শহর ধ্বংস হয়ে যায় স্প্যানিশদের আক্রমণে। এরপর ইনকারা মাচুপিচু শহর আর খুঁজে পায়নি। মেঘের উপরে যে শহর তা কি আর সমতল থেকে খুঁজে পাওয়া যায়! মাচুপিচু শহর বহুল আলোচিত প্রাচীন এক সভ্যতা।

ইনকা সভ্যতার প্রাচুর্যঃ

ইনকা সাম্রাজ্যের কুজকো নগরীতে বিশালকায় স্বর্ণমন্ডিত সূর্য মন্দির ছাড়াও তিতিকাকা সহ মাচুপিচু মন্দির ছিলো অন্যতম। মন্দিরগুলোর আগাগোড়া ছিলো সোনায় মোড়ানো। মন্দিরের চূড়া সহ আশেপাশে ছিলো অঢেল সোনা রূপার ছড়াছড়ি। সূর্য দেবতা ইন্তির মন্দিরের পাশে চন্দ্রদেবী মামাক্যুলিয়ার মন্দির যেন রূপার খনি। পাশাপাশি অনেক গুলো হলঘর ছিলো। সেগুলো নানান কাজে ব্যবহৃত হতো। এসব হলঘরেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতো সোনা ও রূপা। ইনকা সাম্রাজ্য ছিলো যেন সোনার খনি। মনে করা হয়, ইনকা সাম্রাজ্যের এই প্রাচুর্যই ছিলো এর ধ্বংসের পেছনের মূল কারন।

ইনকা সভ্যতার ধ্বংসঃ

লোভে পড়ে স্প্যানিশরা বারবার আঘাত হেনেছিল ইনকাদের স্বর্নভূমিতে। ইনকা সভ্যতার সমৃদ্ধ শহরগুলো লুটপাট করে আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছিলো তারা। ১৭৫২ সালে স্পেনীয়দের কাছে ইনকাদের পতন ঘটে।

বলা হয়ে থাকে, ইনকা সভ্যতা ধ্বংসের জন্য দায়ী স্প্যানিশ ফ্রানসিসকো পিজারো। ১৫০২ খ্রিষ্টাব্দে পিজারো স্পেন থেকে হিসপানিওয়ালা (বর্তমানকালে হাইতি ও ডোমেনিকান রিপাবলিক) দ্বীপে আসেন। এরপর বিভিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে তিনি পানামা পৌঁছান। এখানে এসে তিনি দক্ষিণ আমেরিকার স্বর্ণসমৃদ্ধ ভূখণ্ড ইনকা সভ্যতার কথা জানতে পারেন। ১৫২০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি দক্ষিণ আমেরিকার পশ্চিম উপকূলে পরপর দুটো অভিযান চালান এবং কৌশলে তিনি ইনকাদের সাম্রাজ্যের প্রবেশ করেন। নানান ষড়যন্ত্র করে ইনকা জাতির কিছু লোককে তিনি বন্দী করেন এবং সেই সাথে প্রচুর সোনা রূপা নিয়ে তিনি স্পেনে ফিরে আসেন।

এই শেষ নয়। ১৫২৭ সালে এক মহামারিতে ইনকা রাজা ও তার উত্তরসূরি ছেলে মারা গেলে রাজার অন্য দুই ছেলের মধ্যে সিংহাসনের লড়াইয়ে দেশজুড়ে রক্তাক্ত গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। স্প্যানিশ ফ্রানসিসকো পিজারো কূটকৌশল এর মাধ্যমে দুই দলকে সমর্থন দিয়ে যুদ্ধকে দীর্ঘস্থায়ী রূপ দিয়ে তাদের শক্তি নিঃশেষ করে দেয়।

স্পেনের তৎকালীন রাজা পঞ্চম চার্লস-এর কাছে পরবর্তীতে পিজারো পেরু দখল এবং সেখানকার শাসক হওয়ার অনুমতি চান। রাজা পঞ্চম চার্লসের অনুমতি নিয়ে পিজারো ১৫৩২ খ্রিষ্টাব্দে পেরুতে পৌঁছান। পিজারো কাজামারকা শহরের কাছে এসে ইনকা সম্রাট আটাহুয়ালপা’র কাছে স্বাধীনভাবে ঘোরাফেরার অনুমতি প্রার্থনা করেন। সম্রাট তাঁকে ঘোরাফেরার অনুমতি দিলে, ১৫৩২ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ই নভেম্বর তিনি শহরে প্রবেশ করেন। একসময় তিনি শহরের একটি খোলা জায়গায় রাজা আটাহুয়ালপা ও ইনকা অভিজাতদের ভোজে নিমন্ত্রণ করেন। ইনকা সম্রাট এবং অভিজাত শ্রেণির লোকেরা সরল বিশ্বাসে প্রায় নিরস্ত্র অবস্থায় নিমন্ত্রণ রক্ষা করার জন্য গেলে সৈন্যরা সম্রাট ছাড়া সকল অতিথিদেরকে হত্যা করে।স্পেনীয়দের হাতে বন্দি হওয়ার পরও ইনকাদের শেষ রাজা ‘আটাহুয়ালপা’ যথেষ্ট ক্ষমতাশালী ছিলেন। এরপর তাকে ষড়যন্ত্র করে পুড়িয়ে মারার নির্দেশ দেওয়া হয়। এভাবেই মৃত্যু ঘটে ইনকা সভ্যতার মতো প্রাচীন, বৈচিত্র্যময় এবং শক্তিশালী একটি সভ্যতার।

 

Related Post

মৃত্যু নিয়ে উক্তি

150+মৃত্যু নিয়ে উক্তি, বাণী, ক্যাপশন 2024

মৃত্যু নিয়ে উক্তি জন্মিলে মরিতে হবে আর এটাই সত্যি। মৃত্যু হচ্ছে সবচেয়ে চিরন্তন সত্যি। পৃথিবীতে প্রতিটি প্রাণীর মৃত্যুর স্বাদ অনুভব করতে হবে। সবসময় মৃত্যুর জন্য

Read More »
খুশির স্ট্যাটাস

200+ স্টাইলিশ খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন

খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন জীবনের সুন্দর খুশির মুহূর্ত আমরা সবাই বাঁধাই করে রাখতে চাই। আর এই খুশির মুহূর্তকে ধরে রাখার সবচেয়ে সহজ উপায়

Read More »

স্টাইলিশ ভালোবাসার ছন্দ | রোমান্টিক ছন্দ | Love Status Bangla

❤❤ভালোবাসার ছন্দ | ভালোবাসার ছন্দ রোমান্টিক | ভালোবাসার ছন্দ স্ট্যাটাস❤❤ ভালোবাসা হলো এক অন্যরকম অনুভূতির নাম, যা শুধুমাত্র কাউকে ভালবাসলেই অনুভব করা যায়। আমরা বিভিন্নভাবে

Read More »
মন খারাপের স্ট্যাটাস

মন খারাপের স্ট্যাটাস, উক্তি, ছন্দ, ক্যাপশন, কিছু কথা ও লেখা

মন খারাপের স্ট্যাটাস মন খারাপ – এই কষ্টের অনুভূতি কার না হয়? সবারই কখনো না কখনো সবারই মন খারাপ হয়। জীবনের ছোটোখাটো অঘটন থেকে শুরু

Read More »

Leave a Comment

Table of Contents