Dreamy Media BD

সিন্ধু সভ্যতা

সিন্ধু সভ্যতা

সিন্ধু সভ্যতা পৃথিবীর প্রাচীনতম সভ্যতা গুলোর মধ্যে একটি। খ্রিষ্টপূর্ব ৫০০০ বছর বা তার আগে ভারতবর্ষের সিন্ধু নদের তীরে মানব সভ্যতার ক্রমবিকাশের ধারায় যে প্রাচীন সভ্যতা গড়ে উঠেছিল, তাকেই মূলত সিন্ধু সভ্যতা নামে অভিহিত করা হয়। প্রত্নতাত্ত্বিকদের মতে, এই সিন্ধু সভ্যতার আয়তন প্রায় ১২,৫০,০০০ বর্গ কিলোমিটার যা প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতার চেয়ে অনেক অনেক বড়। 

বাংলাদেশের উয়ারী-বটেশ্বর অঞ্চলে উদ্ভাবিত সভ্যতাকে সিন্ধু সভ্যতারই বর্ধিত অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ বিবেচনা আয়তনের আধীনে আনলে সিন্ধু সভ্যতার আয়তন দাঁড়ায় গোটা ভারতবর্ষের সমান। তবে ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান ও ভারত বিভাজনের ফলে প্রাচীন ভারতবর্ষের সিন্ধু সভ্যতার বেশিরভাগ অংশই পড়েছে পাকিস্তানে। ভারতে আগত দ্রাবিড় জনগোষ্ঠীর মানুষ ৫০০০ বছর আগে এই সভ্যতা গড়ে তুলেছিল বলে ধারনা করা হয়।

আসলে হরপ্পা সভ্যতার প্রধান দুটি নগর সিন্ধু নদের অববাহিকায় আবিষ্কৃত হয়েছিল বলে এই সভ্যতা প্রথমে সিন্ধু সভ্যতা নামে পরিচিত ছিল। তবে পরে সিন্ধু উপত্যকার বাইরে নানা স্থানে এই সভ্যতার নিদর্শন আবিষ্কৃত হওয়ায় এবং এই সভ্যতার ব্যাপক বিস্তৃতির পরিপ্রেক্ষিতে একে প্রথম আবিষ্কৃত কেন্দ্রের নাম অনুসারে হরপ্পা সভ্যতা বলা হয়। তাই কেউ কেউ সিন্ধু সভ্যতাকে হরপ্পা সভ্যতা নামে ডেকে থাকে।

 

সিন্ধু সভ্যতা কোন যুগের সভ্যতা

সিন্ধু সভ্যতা হচ্ছে মূলত তাম্র বা ব্রোঞ্জ যুগীয় সভ্যতা (৩৩০০ ১৩০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ এবং পূর্ণবর্ধিত কাল ২৬০০ ১৯০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ)। তাম্র বা ব্রোঞ্জ যুগ হল মানব সভ্যতার প্রাগৌতিহাসিক কালের তিনটি প্রধান ভাগের দ্বিতীয় ভাগ। এই সময়ে মানুষ প্রথম ব্রোঞ্জ ধাতু ও লিপির  ব্যবহার করতে শিখেছিলো বলে এই সময়কালকে ব্রোঞ্জ যুগ বলা হয়। নগর সভ্যতা এই তাম্র বা ব্রোঞ্জ যুগের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

এই ব্রোঞ্জ যুগে মানুষ তামার আকরিক থেকে তামা সংগ্রহ করে একে টিন বা আর্সেনিক বা অন্য কোনো ধাতুর সাথে মিশিয়ে মিশ্র ধাতু তৈরী করা শিখেছিলো। মূলত এই ব্রোঞ্জ ধাতুর উৎপাদনই প্রাথমিক নগর সভ্যতার সূচনা করে এবং তা পরবর্তীতে এগিয়ে নিয়ে যায়। 

 

সিন্ধু সভ্যতা কে আবিষ্কার করেন

১৯২২ খ্রিস্টাব্দে প্রত্নতত্ত্ববিদ রাখালদাস বন্দোপাধ্যায় সিন্ধু সভ্যতা আবিষ্কার করেন। রাখালদাস বন্দোপাধ্যায় বাঙ্গালী ছিলেন। তবে তার এই আবিষ্কারের সাথে দয়ারাম সহনী ও স্যার জন মার্শাল এককভাবে যুক্ত ছিলেন। তাই সিন্ধু সভ্যতার আবিষ্কারে দয়ারাম সহনী ও স্যার জন মার্শাল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। 

তবে তাঁদের পূর্বে ১৮৭৫ সালে এক ইংরেজ প্রত্নতত্ত্ববিদ কানিংহাম হরপ্পার অপরিচিত লিপি লেখা একটি সীলের সন্ধান পান ৷ পরে আরো অনুসন্ধানে রাখালদাসরা মহেঞ্জোদারো এবং হরপ্পাতে সিন্ধু সভ্যতার বিভিন্ন নিদর্শন আবিষ্কার করেন ১৯২১-২৪ সালের মধ্যে ৷ তাঁরা মাটির নিচে বৃহৎ এক নগরী খুঁজে পান। এছাড়াও ঘর-বাড়ি, রাস্তাঘাট, সীলমোহর সহ নানা ধরনের নিদর্শন খুঁজে পেয়েছিলেন তাঁরা। রাখালদাস পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের লারকানা জেলার মহেঞ্জোদারোতে বৌদ্ধ স্তূপের ধ্বংসাবশেষ অনুসন্ধান করতে গিয়ে সর্বপ্রথম তাম্র-ব্রোঞ্জ যুগের নিদর্শন আবিষ্কার করেন। এরপর একে একে দয়ারামের নেতৃত্বে হরপ্পায় এবং জন মার্শালের নেতৃত্বে বহু নিদর্শন আবিষ্কৃত হয় এই সভ্যতার। 

তবে সিন্ধু সভ্যতার প্রথম নিদর্শন পাওয়া নিয়ে বেশ কিছু মজার ঘটনা আছে। ১৮৫৬ সালে ব্রিটিশ ইঞ্জিনিয়ার জন ও উইলিয়াম ব্রান্টন করাচি ও লাহোরের মধ্যে ইষ্ট ইন্ডিয়া রেলওয়ে কোম্পানি লাইন স্থাপনের দায়িত্ব পেয়েছিলেন। জন ব্রান্টন রেললাইন স্থাপনের জন্য উপযুক্ত ব্যালাস্ট কোথা থেকে পাওয়া যায়, সেই নিয়ে বেশ চিন্তিত ছিলেন। তাদের বলা হয়েছিলো, লাইনের নিকট ব্রাহ্মণাবাদ নামে এক প্রাচীন নগরীর ধ্বংসাবশেষ রয়েছে। তারপর তারা সেই শহরে এসে  শক্ত ও ভালোভাবে পোড়ানো ইঁটের সন্ধান পেয়েছিলেন এবং নিশ্চিন্ত হয়েছিলেন এই ভেবে যে , ব্যালাস্টের একটি উপযুক্ত উৎস পাওয়া গেছে।

এর কয়েক মাস পরে, ব্রাহ্মণাবাদ এর আরও উত্তরদিকে উইলিয়াম ব্রান্টনের কর্মস্থলে লাইনের অংশে অপর একটি শহরের ধ্বংসাবশেষ দেখা যায়। এই ধ্বংসাবশেষের ইঁট নিকটবর্তী হরপ্পা গ্রামের অধিবাসীরাও ব্যবহার করত। এই ইঁটের ব্যালাস্টেই তৈরি হয় লাহোর থেকে করাচি পর্যন্ত রেলপথের ৯৩ মাইল বা ১৫০ কিলোমিটার  দৈর্ঘ্যের রেলপথ।

 

সিন্ধু সভ্যতা কোথায় গড়ে উঠেছিল

সিন্ধু সভ্যতা পাকিস্তানের মহেঞ্জোদারো ও হরপ্পাতে গড়ে উঠেছিল। কথিত আছে, নব্যপ্রস্তর যুগে খাদ্য ও ঘাসের অভাব দেখা দিলে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ সিন্ধু নদের তীরে এসে বসতি গড়তে শুরু করে। নিজেদের এবং গবাদি পশুর খাদ্যের যোগান দিতেই তারা এই নদের তীরে আস্তে আস্তে পরিবার সহ স্থায়ীভাবে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। এভাবেই সিন্ধু নদের তীরে গড়ে উঠেছিলো প্রাচীন এই সভ্যতা, সিন্ধু সভ্যতা। 

অন্যদিকে খ্রিষ্টপূর্ব  ৩০০০ অব্দের দিকে হরপ্পা সভ্যতার শুরু হয়েছিল, আদি হরপ্পা সভ্যতা বলা হয় একে। এই সময়ে মানুষ ইরাবতী নদীর তীরে বসবাস শুরু করেছিলো। এদের মধ্যে মেহেরগড় থেকে আগত মানুষ এই অঞ্চলে নতুন নগর স্থাপন করেছিলো। খ্রিষ্টপূর্ব ৩০০০-২৯০০ অব্দের মেহেরগড়ের প্রত্নতাত্ত্বিক নমুনার সাথে আদি হরপ্পার প্রত্নতাত্ত্বিক নমুনার বিশেষ মিল পাওয়া যায় বলেই এই ধারনা করা হয়।

এও ধারনা করা হয়, পশ্চিমে হাকরা-ঘগ্গর নদী উপত্যকার সাথে এই সভ্যতার সম্পর্ক ছিল। মহেঞ্জোদারোর নিকটবর্তী অপর একটি স্থানের নাম কোট দিজি। এই অঞ্চলে খ্রিষ্টপূর্ব ২৮০০-২৬০০ একটি সভ্যতার নমুনা পাওয়া গেছে। একে হরপ্পার কোট দিজি পর্ব বা হরপ্পার দ্বিতীয় ধাপ হিসাবেও বিবেচনা করা হয়।

সিন্ধু সভ্যতা কোথায় গড়ে উঠেছিল
সিন্ধু সভ্যতা কোথায় গড়ে উঠেছিল

 

সিন্ধু সভ্যতা কোন যুগের নিদর্শন

সিন্ধু সভ্যতা তাম্র বা ব্রোঞ্জ যুগের নিদর্শন। ব্রোঞ্জ যুগ প্রস্তর যুগ ও লৌহ যুগের মধ্যবর্তী যুগ। প্রস্তর যুগের শ্রেষ্ঠ আবিষ্কার পাথরের ঘর্ষনে আগুন সৃষ্টি করা। এছাড়াও নব্য প্রস্তর যুগে কিছুটা কৃষি কর্ম ও পশুপালন এবং মাটির পাত্র তৈরি করা শিখেছিলো মানুষেরা। ব্রোঞ্জ যুগে তামা, টিন, দস্তার আবিষ্কার হয়েছিলো। আবার তামার সাথে টিন মিশিয়ে সংকর কাঁসার জিনিস পত্র তৈরি করতে শিখেছিলো মানুষ।

কৃষিকার্যে পাথরের তৈরী অস্ত্রের পরিবর্তে সংকর ধাতুর তৈরী অস্ত্রের ব্যবহার শুরু হয়েছিলো এই যুগে। মেয়েরা ধাতব অলংকার ব্যবহার করা শিখেছিলো। মূলত এই ব্রোঞ্জ যুগেই মানুষ যাযাবর বৃত্তি ত্যাগ করে স্থায়ী বসবাস শুরু করেছিলো। ফলে গ্রাম ও শহরের পত্তন হয়েছিলো এই যুগে। পরবর্তীতে সিন্ধু সভ্যতার বেশ কিছু মূর্তি পাওয়া আবিষ্কৃত হয় যার বেশিরভাগই ছিলো পোড়ামাটি, চুনাপাথর ও ব্রোঞ্জের তৈরি।

সিন্ধু সভ্যতার মানুষেরা ব্রোঞ্জ ধাতুর ব্যবহার জানতো বলেই এই সভ্যতার সিলমোহর ছিলো। সিলমোহরে স্বস্তিকা চিহ্ন, দেবদেবীর মূর্তি, পশুপাখির ছবি ইত্যাদি খোদাই করা থাকতো। 

 

সিন্ধু সভ্যতায় ধর্মীয় অবস্থা 

আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, সিন্ধু সভ্যতায় মন্দির বা মঠের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তাই এই সভ্যতার মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাস সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা করা সম্ভব নয়। তবে, তাদের মধ্যে যে ধর্মবিশ্বাস ছিল সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায় বিভিন্ন স্থানে তাদের তৈরী অসংখ্য পোড়ামাটির নারীমূর্তি থেকে। ধারণা করা হয়, তারা ঐ দেবীমূর্তির পূজা করতো। সিন্ধুবাসীর মধ্যে মাতৃপূজা খুব জনপ্রিয় ছিল বলে ধারনা করা হয়। এছাড়াও তারা দেব-দেবী রূপে বৃক্ষ, পাথর, সাপ এবং পশু-পাখির উপাসনাও করতো। পরলোকে বিশ্বাস করতো বলে তারা কবরে মৃতের ব্যবহার করা জিনিসপত্র ও অলঙ্কার রেখে দিতো।

 

সিন্ধু সভ্যতাকে নগর সভ্যতা বলা হয় কেন

নগরকেন্দ্রিক সভ্যতা গুলোকে নগর সভ্যতা বলা হয়ে থাকে। প্রত্নতাত্ত্বিকদের আবিষ্কৃত সব সভ্যতার মধ্যে সিন্ধু সভ্যতাকে নগর সভ্যতা বলা হয়। ইতিহাস ঘাটলে স্পষ্টতই বোঝা যায়, উন্নত নগর পরিকল্পনার সাথে সিন্ধু সভ্যতার নগর পরিকল্পনার তেমন অমিল নেই বললেই চলে। অধিকন্তু, সিন্ধু সভ্যতায় নগরের সাধারণ বৈশিষ্ট্য ছিলো রাস্তা, রাস্তার পাশে ডাস্টবিন, সড়ক বাতি ,পানি নেমে যাওয়ার ড্রেন, রাস্তার পাশে একতলা-দোতলা পরিকল্পিত বাড়ি, যা আধুনিক নগর পরিকল্পনার সাথে একেবারে মিলে যায়।

সেই সময়ে প্রত্যেক বাড়িতে পানির জন্য ছিলো কুয়া, বাড়ির ছোট ড্রেন দিয়ে বাড়ির ময়লা চলে যেত রাস্তার বড় ড্রেনে, যা কিছুটা অভাবনীয়ই বটে। অন্যদিকে,  ভারতীয় উপমহাদেশের সিন্ধু সভ্যতার বৈশিষ্ট্য গুলো থেকে জানা যায় মহেঞ্জাদারো নগরে বিশাল গোসলখানার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে যা বর্তমান নগর সভ্যতার সুইমিং পুলের মতো। আবার হরপ্পাতে পাওয়া গেছে বিশাল শস্যাগার।

এসব নিদর্শন থেকেই বোঝা যায়, সিন্ধু সভ্যতার মানুষ উন্নয়নশীল নগর গড়ে তুলেছিলেন এবং তারা এভাবেই অভ্যস্ত হয়েছিলেন। এছাড়াও, এই সভ্যতার মানুষ এর জীবনযাত্রার মান সামাজিক ও আর্থিক দিক থেকে বেশ উন্নত ছিলো। এসব কারনেই সিন্ধু সভ্যতাকে নগর সভ্যতা বা নগরকেন্দ্রিক সভ্যতা বলা হয়ে থাকে।

 

সিন্ধু সভ্যতার অবদান

বর্তমান প্রেক্ষাপটে পরিকল্পিত নগরায়ন সিন্ধু সভ্যতার সবচেয়ে বড় অবদান। এই সভ্যতার এলাকায় যেসব শহর আবিস্কৃত হয়েছে তার মধ্যে হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো সবচেয়ে বড় শহর। শহরের ঘরবাড়ি সবই পোড়ামাটি বা রোদে পোড়ানো ইট দিয়ে তৈরি। শহরের বাড়ি ঘরের নকশা থেকে সহজেই বোঝা যায়, এই সভ্যতার অধিবাসীরা উন্নত নগরকেন্দ্রিক জীবন যাপনে অভ্যস্ত ছিল। তাদের এই সুপরিকল্পিত নগরায়নের ধারনা সত্যিই বিস্ময়কর। 

সিন্ধু সভ্যতার অধিবাসীদের আরেকটি অবদান হচ্ছে দ্রব্যের ওজন পরিমাপ করা। তারাই প্রথম দ্রব্যের ওজন পরিমাপ করতে শিখেছিলো। তাদের এই পরিমাপ পদ্ধতির আবিষ্কার এই সভ্যতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান বলে বিবেচনা করা হয়। তারা বিভিন্ন দ্রব্য ওজনের জন্য বিভিন্ন মাপের ভিন্ন ভিন্ন আকৃতির বাটখারার ব্যবহার করত। দাগ কাটা স্কেল দিয়ে দৈর্ঘ্য মাপার পদ্ধতিও তাদের জানা ছিল বিধায় এ সভ্যতার অধিবাসীরা বেশ এগিয়ে ছিলো। 

শিল্পেও তৎকালীন সময়ে এই সভ্যতার মানুষকে টেক্কা দেবার মতো জাতি ছিলো না বলা চলে।  মৃৎশিল্পে তাদের ছিলো বিশেষ দক্ষতা এবং রুচি। তারা কুমারের চাকার ব্যবহার জানতো এবং তার সাহায্যে সুন্দর মাটির পাত্র বানাতে পারতো। শুধুই কি তাই? মাটির তৈরী এই পাত্রগুলোর গায়ে অনেক সুন্দর সুন্দর নকশা আঁকতো তারা। এরপর রোদে শুকাতো। তাঁতিরা বয়নশিল্পে বেশ পারদর্শী ছিলো।

ধাতুর ব্যাবহারে তারা প্রথম ছিলো। নানান আসবাবপত্র, অস্ত্র এবং অলঙ্কার তৈরি করা হতো ধাতু দিয়ে। তামা ও টিনের মিশ্রণে ব্রোঞ্জ তৈরি করে তা দিয়ে কারিগররা তৈজসপত্র তৈরি করতো। অলঙ্কারের মধ্যে নাকফুল, গলার হার, কানের দুল, আংটি, বালা, বাজুবন্ধ ইত্যাদি ছিল উল্লেখযোগ্য। 

স্থাপত্য ও ভাস্কর্য তৈরীতেও সিন্ধুয়ানদের জুড়ি মেলা ভার। এই যুগের অধিবাসীরা গুরুত্বপূর্ণ এবং চমৎকার সব স্থাপত্যশৈলীর নিদর্শন রেখে গেছে। দুই কক্ষ থেকে পঁচিশ কক্ষের বাড়ির সন্ধানও পাওয়া গেছে এই সভ্যতায়। কোথাও আবার দুই-তিন তলা ঘরের অস্তিত্ব আবিষ্কৃত হয়েছে। তাছাড়া বিশাল বিশাল প্রাসাদ এবং বিরাটাকার শস্যাগারই বলে দেয় স্থাপত্যে কি দারুন ছিলো তারা। 

ভাস্কর্যশিল্পেও তাদের দক্ষতা ছিল অনন্য। পাথরে খোদিত ভাস্কর্যের সংখ্যা কম মেলেনি এই যুগে। ইতিহাস বলে, ১৩টি ভাস্কর্য মূর্তি ও চুনাপাথরের তৈরি একটি মূর্তির মাথা পাওয়া গেছে এ সভ্যতার নিদর্শন হিসেবে। তাদের তৈরী নৃত্যরত একটি নারীমূর্তি তাদের এই দক্ষতাকে আরো ফুটিতে তোলে যেন।

সিন্ধু সভ্যতার অবদান
সিন্ধু সভ্যতার অবদান

সিন্ধু বা হরপ্পা যে নামেই অভিহিত করা হোক না কেনো, ইতিহাসের পাতায় এই সভ্যতা বিশাল এক অংশ জুড়ে আছে। বর্তমান বিশ্বে এই সভ্যতার বিশেষ সব অবদান অনস্বীকার্য। 

Related Post

মৃত্যু নিয়ে উক্তি

150+মৃত্যু নিয়ে উক্তি, বাণী, ক্যাপশন 2024

মৃত্যু নিয়ে উক্তি জন্মিলে মরিতে হবে আর এটাই সত্যি। মৃত্যু হচ্ছে সবচেয়ে চিরন্তন সত্যি। পৃথিবীতে প্রতিটি প্রাণীর মৃত্যুর স্বাদ অনুভব করতে হবে। সবসময় মৃত্যুর জন্য

Read More »
খুশির স্ট্যাটাস

200+ স্টাইলিশ খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন

খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন জীবনের সুন্দর খুশির মুহূর্ত আমরা সবাই বাঁধাই করে রাখতে চাই। আর এই খুশির মুহূর্তকে ধরে রাখার সবচেয়ে সহজ উপায়

Read More »

স্টাইলিশ ভালোবাসার ছন্দ | রোমান্টিক ছন্দ | Love Status Bangla

❤❤ভালোবাসার ছন্দ | ভালোবাসার ছন্দ রোমান্টিক | ভালোবাসার ছন্দ স্ট্যাটাস❤❤ ভালোবাসা হলো এক অন্যরকম অনুভূতির নাম, যা শুধুমাত্র কাউকে ভালবাসলেই অনুভব করা যায়। আমরা বিভিন্নভাবে

Read More »
মন খারাপের স্ট্যাটাস

মন খারাপের স্ট্যাটাস, উক্তি, ছন্দ, ক্যাপশন, কিছু কথা ও লেখা

মন খারাপের স্ট্যাটাস মন খারাপ – এই কষ্টের অনুভূতি কার না হয়? সবারই কখনো না কখনো সবারই মন খারাপ হয়। জীবনের ছোটোখাটো অঘটন থেকে শুরু

Read More »

Leave a Comment

Table of Contents