Dreamy Media BD

  পালকি

পালকি

পালকি করে সাধারণত ধনী গুষ্টি এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ভ্রমণে যেতেন। পালকি হচ্ছে সাধারণত চাকা বিহীন একটি যানবাহন। চাকা বিহীন যানবাহন হওয়ায় কয়েকজন ব্যক্তি গারে বহন করে পালকিতে ঝুলন্ত অবস্থায় স্থানান্তরে অগ্রসর হয়।

প্রাচীনকালে অন্যান্য যানবাহনের মধ্যে পালকি ছিল অন্যতম একটি বিখ্যাত যানবাহন। সবাই পালকিতে যাতায়াত করতে পারত না। বিখ্যাত এবং উচ্চ বংশ ব্যক্তিরা বা কোন বিয়ের অনুষ্ঠানের শুধুমাত্র কনে এবং বর। পালকিতে যাতায়াত করতো। পালকির ভিতরে সাধারণত একজন বা দুইজন ব্যক্তি বসতে পারবেন। এবং পালকিটি বহন করতে হয় ৭ থেকে ৮ জন ব্যক্তি।

যিনি পালকিটি বহন করে থাকেন ,তাকে বলা হয় বেহারা। প্রথম প্রথম দেব-দেবীকে আরোহন কিংবা দেবমূর্তি বহনের উদ্দেশ্যে এরূপ যানবাহন তৈরি করা হতো বলে ধারণা করা হচ্ছে। এগুলো ব্যতীত অন্য কোন কাজে পালকির ব্যবহার দেখা যেতনা। অনেকাংশ মন্দিরে পালকি সহযোগে দেবতাদের বহনের দৃশ্যমালা ভাস্কর্য আকারে তুলে ধরার দৃশ্য চিত্রিত করা হয়েছে।

পরবর্তী সময়ে পালকিতে করে উচ্চ বংশীয় বা উচ্চশ্রেণীর ব্যক্তি ও ভদ্র মহিলাগণ পালকিতে যাওয়া আসা করতেন। ভারতীয় উপমহাদেশে রেলগাড়ি প্রবর্তনের পূর্ব পর্যন্ত এটা দ্বারা চলাফেরা করতেন। এ সম্প্রদায়ের লোকদের রয়েছে নিজস্ব সংস্কৃতি। যা বাংলার সংস্কৃতি বান্ডারকে সম্পন্ন করেছে।

আরো পড়ুন – পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার : দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম বৌদ্ধ বিহার

পালকি এর ইতিহাস

বর্তমান সময়ে পালকির ব্যবহার একেবারেই নেই বললেই চলে। তবুও সীমিত আকারে ভারতীয় উপমহাদেশে বিবাহ অনুষ্ঠানে পালকি ব্যবহার করতে দেখা যায়। সাধারণত ইউরোপে পালকিকে শোবার উপযোগী করে উন্মুক্ত কিংবা বন্ধ অবস্থায় নির্মাণ করা হতো।

দুইটি শক্ত কোটি একসাথে প্রান্তসীমায় পালকি বেহারা কিংবা ভারবাহিনী যন্ত্রের মাধ্যমে টেনে নেয়া হতো। ধারণা করা হয় ইউরোপের চালিত গাড়ির ধারণা থেকে পালকি পরিবহনটির বুৎপত্তি হয়েছে। এ সংক্রান্ত সকল তথ্য ইশা সম্বন্ধীয় পুস্তকাদিতে তুলে ধরা হয়েছে। এরপর থেকে সকল দেশ সমূহে এ বাহনটি পালকি রূপে পরিচিতি পায়। সপ্তদশ শতকে ইউরোপে অসংখ্য পালকি ছিল।

মজবুত নির্মাণশৈলী এবং ব্যক্তিগত গোপনীয়তা বজায় রেখে উভয় খুঁটিতে চামড়ার বর্ম আচ্ছাদন করা হতো। পরবর্তী সময়ে গুরুতর অসুস্থ রোগী ও আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তিদেরকে পালকিতে বহন  করার অনুমতি দেয়া হয়েছিল। ১৭৭৫ সালে রবার্ট অ্যাডাম অঙ্কিত সিড্যান চেয়ারে ভ্রমণরত রানী  চার্লোত।

লন্ডনে পালকিকে নাম দেয়া হয় সিড্যান চেয়ার। এজাতীয় পালকিতে সাধারণত একজন ব্যক্তি যাতায়াত  করতেন। এরকম পালকি কেবিন রাখার উপযোগী করে তৈরি করা হয় ।এই পালকিটি বহন করতে কমপক্ষে সামনে দুইজন এবং পিছনে দুইজন ব্যক্তির প্রয়োজন হতো।

১৯৭০ এর দশকে উদ্যোক্তা এবং বাথউইকের অধিবাসী জন কানিংহ্যাম সংক্ষিপ্তকালের জন্য সিড্যান চেয়ারের আবার প্রচলন করেছিলেন। সাধারণত এটি বিয়ের অনুষ্ঠানে ব্যবহার করা হয়। লাল কাপড় দ্বারা মোড়ানো অবস্থায় কন্যাকে নিয়ে আসা হয়।

কোরিয়ায় তখন একটি পালকি তৈরি করা হয়েছিল। যেটির নাম দেওয়া হয়েছিল গামা। আনুমানিকভাবে বলা যায় যে এটি তৈরি করা হয়েছিল ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে। 

দক্ষিণ এশিয়ায় পালকি শব্দটি এসেছে সংস্কৃত শব্দ পালঙ্ক থেকে। পালঙ্ক অর্থ হচ্ছে বিছানা বা খাট। আনুমানিকভাবে বলা যায় ২৫০ সালে রামায়ণে পালকির কথা তুলে ধরা হয়েছে। ১৯৩০ এর দশকে চাকা চালিত রিক্সার প্রচলন ঘটেছিল। এর পরবর্তী সময় থেকে পালকি তার গুরুত্ব হারাতে শুরু করে।

  পালকি
পালকি

পালকির বিভিন্ন নাম সমূহ

পালকি এর বিভিন্ন নাম রয়েছে। পালকি শব্দটি সাধারণত সংস্কৃত পালঙ্ক বা পর্যঙ্ক থেকে এসেছে। পালকির অন্য আরো নাম আছে যেমন ডুলি, শিবিকা ইত্যাদি। পালকি বাহনটি অনেক নামেই সবার কাছে পরিচিত।

ইতালিয়ান বাসায় এটিকে পালঙ্কো বলা হয় থাকে। হিন্দি ও বাংলা ভাষায় এটি পালকি নামেই পরিচিত। এছাড়া বিভিন্ন দেশে পালকি ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত। যেমন চিনে এটি জিয়াও নামে পরিচিত। পালকি শব্দটি ভিয়েতনামে কিউ হিসেবে পরিচিত। পর্তুকি যে পালকিকে পালঙ্কুইন নাম দেয়া হয়েছিল।

কোরিয়ায় পালকিকে গামা নামে ডাকা হতো। স্পেনে বলা হতো লিটারা। পালকি সাধারণত তিন ধরনের হয়ে থাকে। যেমন সাধারণ পালকি, আয়না পালকি ও ময়ূরপঙ্খী পালকি। এই পালকি গুলো আয়তাকার, ছাদ ঢালু এবং চারদিকে কাঠ দিয়ে আবৃত করা থাকে। এছাড়া এ ধরনের পালকিতে দরজা ও জানালাও দেখা যায়। আয়না পালকির ভিতরে দুইটি চেয়ার ও টেবিল থাকে এবং আয়না লাগানো থাকে।

বাংলাদেশে পালকি প্রাচীনকাল থেকেই একটি বিলাসবহুল বাহন হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশ পালকিকে পালকি নামেই সবাই চিনে। কিন্তু অন্যান্য দেশে রয়েছে পালকির অন্যান্য ভিন্ন ভিন্ন নামসমূহ। অন্যান্য দেশে পালকিকে আরো অনেক ধরনের নাম দেয়া হয়েছে।

পর্তুগিজরা পালকির নাম দিয়েছিল পালঙ্কূয়িন। পর্তুগিজরা তাদের পালকি বিভিন্ন আকৃতি ও ডিজাইনের তৈরি করতো। পালকি এর ইংরেজি নাম হল palanquin little. এই পালকি বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নামেও পরিচিত।

দক্ষিণ এশিয়ার পালকি শব্দটি এসেছে  সংস্কৃত শব্দ পালঙ্ক থেকে। এর অর্থ হচ্ছে বিছানা বা খাট। বাংলায় যেমন পাখিকে পালকি নামে বলা হয়। তেমনি হিন্দিতেও পালকিকে পালকি নামে সবাই চেনে। আনুমানিকভাবে বলা যায় যে খ্রিস্টপূর্ব ২৫০ সালের রামায়ণের পালকির কথা পাওয়া যায়।

পালকির ধরন হচ্ছে তিনটি। এরমধ্যে আয়না পালকি হচ্ছে অন্যতম একটি পালকি। এই পালকির ভিতরে আয়না থাকতো বলে এটাকে আয়না পালকি  বলা হয়।

পালকির গান

বেহারারা যখন পালকি বহন করে, তারা পালকি বহন করার সময় নির্দিষ্ট ছন্দে পা ফেলে। সাধারণত এই রীতি তারা তাদের ওস্তাদের কাছ থেকে শিখে থাকে। পালকি বহনের সময় তারা বিশেষ ছন্দে গান গেয়ে গেয়ে পালকি নিয়ে চলে। গানের সাথে তাদের চলার গতির মিল থাকে। তাদের চলার গতির সাথে তাল মিলিয়ে গানের তাল পরিবর্তন হয়।

পালকি একটি ঐতিহ্যবাহী বাহন। পালকিতে চড়ে গ্রামের বউরা শশুর বাড়িতে যায়। বেহারারা গুনগুনিয়ে গান গেয়ে পালকি বহন করে নিয়ে যায়। হুনহুনারে হুনহুন করে গান গেয়ে বেহারারা দ্রুত পায়ে রওনা দেয় পালকি নিয়ে। বউকে যথা স্থানে যথা সময়ে পৌঁছে দেওয়ার জন্য। বেহারারা খুব দ্রুতগতিতে চলে কারণ সন্ধ্যার আগে পৌঁছাতে হবে। সন্ধ্যার পরে ডাকাতের ভয় থাকে রাস্তায়।

গানের সুরে সুরে বেহারারা তাদের সমস্ত ক্লান্তি ভুলে যায়। ক্লান্তি ভুলে গিয়ে মাইলের পর মাইল পায়ে হেঁটে তারা পালকি বহন করে নিয়ে যায়। পালকি নিয়ে অনেক গান রয়েছে যা পালকি বেহারারা গাইতে গাইতে পালকি বহন করে নিয়ে যায়।

“হুম না হুম না” বলে মাঠ কাঁপিয়ে পালকির সে গান আজও বিস্তৃত। তবে প্রচলন না থাকায় পালকি বেহারারাও ভুলতে বসেছেন তাদের নিজস্ব ঘড়ানার সে গানের কথা ও সুর। স্মৃতিতে কখনো সখনো সে গানের সুর জেগে উঠলেও তারা কেমন যেন উদাস হয়ে যান সুকুমার বাউড়ী ,মহাদেব বাউরিয়া।

বেহারারা যখন গান গাইতে গাইতে পালকি নিয়ে যেত। গানে গানে উঠে আসত কনের রূপের বর্ণনা, সাজ পোশাকের বিবরণ অথবা বরের বীরত্ব কিংবা নানান যোগ্যতা। গানগুলো কেমন হতো_

‘খর্তাবাবুর রংটি কালো, গিন্নি মায়ের মনটি ভালো,

সামনে চলো হেইও

হেইও জোয়ান সরু আল চলো ধীরে, অর্থা বাবুর দরাজ দিল দেবে চিরে…

এরকম গান গাইতে গাইতে বেহারারা মাইলের পর মাইল ছন্দের সাথে পা মিলিয়ে মিলিয়ে হেঁটে চলত।

বাংলাদেশের পালকির প্রচলন শুরু হয় কখন

পালকি সাধারণত একটি চাকা বিহীন এক বাহন। ১৭৭৫ সালে বাংলাদেশের প্রথম প্রচলিত হয় এই পালকি।পালকি ছিল একসময় বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ও প্রাচীন বাহন। হিন্দুদের রামায়ণে আনুমানিক খৃষ্টপূর্ব ২৫০ সালের সময়ে পালকির উল্লেখ পাওয়া যায়। মানুষ বহন করার কাজেই এটির ব্যবহার করা হয়। বর্তমান জীবনে পালকির ব্যবহার হয় না, এখনকার সময়ে জাদুঘরেই আপনি পালকি দেখতে পারবেন।

তবে প্রাচীনকাল থেকে এটি ব্যবহার হয়ে আসছে বাংলাদেশে। প্রাচীনকালে অনেকেই পালকিতে যাতায়াত করত। প্রাচীনকালে সাধারণত উচ্চ বংশের ব্যক্তিরা বা মহিলাগণ যাতায়াত করতেন পালকি দ্বারা। পালকির ভিতরে থাকতেন ১ জন বা ২ জন এবং পালকি বহন করে নিতেন ৭ থেকে ৮ জন ব্যক্তি। যারা পালকি বহন করতেন তাদেরকে বলা হতো বেহারা।

বাংলাদেশে এক সময় অবিজাত শ্রেণীরা পালকিতে চলাচল করতো। প্রাচীনকালে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন যাবত এই পালকির ব্যবহার হত। যেকোনো অনুষ্ঠান বা বিয়েতে এ পালকির ব্যবহার করা হতো। সবার জন্য এই পালকি ব্যবহার করা হতো না ,শুধু বিয়েতে বর এবং কনের জন্য পালকি রাখা হতো। যেকোনো বিয়ের অনুষ্ঠানের শুধুমাত্র বর এবং কনে পালকিতে যাতায়াত করত।

বাংলাদেশের পালকি গুলো সাধারণত বিভিন্ন আকৃতির হতো। এর গঠনেও রয়েছে ভিন্নতা। এক একটি পালকি সাধারণত একেক রকম হয়ে থাকে। আকারে যে পালকিতে সবথেকে ছোট আকৃতি সেটাকে ডুলি নামে অবহিত করা হয়েছিল। এই ডুলি পালকি সাধারণত সর্বোচ্চ দুইজন ব্যক্তি বহন করতে পারত।

১৯৩০ সালের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত বাংলাদেশে পালকির প্রচলন ছিল। তবে উনবিংশ শতাব্দীতে এসে আস্তে আস্তে উন্নত রাস্তাঘাট তৈরি হতে শুরু করল। এবং পালকির ব্যবহার আস্তে আস্তে কমে গেল। বেহারাদের কাঁধ থেকে পালকির সৌন্দর্য এখন হচ্ছে বিভিন্ন জাদুঘরে। বর্তমান জীবনে পালকিকে আমাদের অতীতের ঐতিহ্যের নিদর্শন হিসেবে ধরা হয়।

সভ্যতা এবং বাস্তবতার কথা চিন্তা করলে এখন আর পালকির ব্যবহার আমাদের জীবনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। তবে আমরা এবং আমাদের ভবিষ্যৎ জন্মরা যাতে পাখির ব্যবহার ভুলে না যায়, সেদিকে আমাদের যথেষ্ট দৃষ্টি রাখা দরকার।

পালকির বেহারা সম্প্রদায়ের 

প্রাচীন জীবনী

বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী এক প্রাচীন বাহন হচ্ছে পালকি। যারা পালকিটি বহন করে নিয়ে যেত তাদেরকে বলা হতো বেহারা বা কাহার। পালকি হচ্ছে মানুষ বহনের একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন বাহন। এই বাহনে একবার দুইজন যাত্রী নিয়ে ৭ থেকে ৮ জন ব্যক্তি বা বেহারা এটাকে বহন করে নিয়ে যেত।

যিনি পালকির ভার বহন করেন সাধারণত তাকেই পালকি বেহারা নামে অবহিত করা হয়। প্রাচীনকালে বেহারাদের ছিল অনেক মর্যাদা। কোন বিয়ের অনুষ্ঠান বা অন্যান্য কোন অনুষ্ঠানের জন্য বেহারাদের ডাক পড়তো। বিয়ের অনুষ্ঠানে বর এবং কনে কে বেহারারা পালকিতে বহন করে নিয়ে যেত। বহন করার পরিবর্তে তাদের দেয়া হতো মুদ্রা।

শাসনামলে ইউরোপে উচ্চশ্রেণীর সম্প্রাথ্য ব্যক্তিরা এই পালকিতে চলাচল করতেন। বেহারারা তাদেরকে বহন করে নিয়ে যেত। সাধারণত প্রাচীনকালে বেহারাদের বংশ থাকত আলাদা মর্যাদাপূর্ণ। তাদেরকে আলাদা সম্মানসূচক চোখে দেখা হতো।

বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত রবিদাস পল্লী লোকজন এবং নিম্ন বর্ণের হিন্দুরা বেহারা পেশায় নিয়োজিত ছিল বলে জানা যায়। তখনকার সময়ে তাদের ছিল অনেক নাম ডাক এবং ভালো অবস্থা। কয়েক দশক আগেও বিয়ে বা অন্য যেকোনো অনুষ্ঠানের ডাক পড়তো বেহারাদের। যেন বেহারাদের ছাড়া কোন অনুষ্ঠান সম্পন্ন হতো না।

বেহারারা পালকি বহন করে নিয়ে যেত মাইলের পর মাইল। প্রাচীনকালে পালকি বহনের বিনিময়ে তারা পেতো মুদ্রা। তখনকার সময়ে তাদের পরিবার অনেক স্বাচ্ছন্দে বসবাস করতো। প্রতিদিনই বেহাদের কোন না কোন অনুষ্ঠানে ডাক পড়েই যেত। একটি পালকি বহন করতে বেহারার প্রয়োজন হতো সাত থেকে আট।

প্রথম দিকে বেহারারা দেবদেবীকে আহরণ কিংবা দেবমূর্তি বহন করতো। অনেক মন্দিরে পালকি সহযোগে দেবতাদের বহনের উদ্দেশ্যে বেহারাদের ডাক পড়তো। বেহারারা দেবতাকে বহন করে মন্দিরে নিয়ে যেত। প্রাচীনকালে ছিল বেহারাদের অনেক নাম ডাক।

পালকি বেহারাদের বর্তমান জীবনী

সেই প্রাচীনকাল থেকে গ্রাম বাংলার একটি বাহন হচ্ছে পালকি। যান্ত্রিকতার ভিড়ে বর্তমানে চোখে পড়ে না বাহনটি। তাই বর্তমানে পালকি হচ্ছে শুধুমাত্র একটি রূপকথা। প্রাচীনকালে কোথাও বেড়াতে গেলেই ডাক পড়তো বেহারাদের। এখন আর সেই দিন নেই।

কেউ না ডাকায় বেহারাদের বেহাল অবস্থা। গ্রাম বাংলার এক সময় এই ঐতিহ্যবাহী বাহনটির আজ আর দেখা মিলে না। বর্তমানে ঐতিহ্যবাহী বাহনটি এখন পুরোপুরিভাবে হারিয়ে গেছে। সেই সাথে হারিয়ে গেছে বেহারাদের পেশাও।

বেহারাদের কাজ থেকে পালকির স্থান হয়েছে এখন বিভিন্ন জাদুঘরে। উনবিংশ শতাব্দীর পর থেকে পালকির ব্যবহার কমে যায়। বিশেষ করে ১৯৩০ সালের পর থেকে রিশকার প্রচলন শুরু হলে পালকির ব্যবহার আস্তে আস্তে উঠে পড়ে। বর্তমানে পালকিকে আমাদের অতীত ঐতিহ্যের নিদর্শন হিসেবে ধরা হয়। সভ্যতা এবং বাস্তবতার চিন্তা করলে এখন আর পালকিকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।

সুবল রবিদাস বলেন “পূর্বপুরুষদের পেশা ধরে রাখলেও পেশাতে নেই আগের মত জৌলস”। অভাব অনটনে পুরনো কাঠের পালকির মতো জীবন চলছে বেহারাদের। সমাজের চোখে আজ বেহারারা অবহেলিত। এখন আর তাদের জীবনের খবর রাখে না কেউ।

তবে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট মোঃ জিল্লুর রহমান বলেন, “পালকির বেহারাদের চিন্তা মাথায় রেখে তাদের জন্য কিছু করার চিন্তা চলছে”। বেহারাদের পরিবারের জন্য যাতে কিছু করতে পারা যায় সেদিকে খেয়াল রাখছেন। বর্তমানে বেহারারা তাদের পেশা হারিয়ে অন্য কাজে মনোযোগ দিয়েছে।

পালকি বহন না করলেও তারা এখন অন্যান্য কাজ করে নিজের পরিবার চালাচ্ছে। বর্তমানে বেহাদের এখন আর দেখা পাওয়া যায় না। যান্ত্রিকের ভিড়ে বেহারাদের পেশা হারিয়ে গেছে। বেহারাদের কথা চিন্তা করলেও বেহারাদেরকে এখন আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব না। অভাব অনটনে জীর্ণতার দোলাচালে চলছে বেহারাদের বর্তমান জীবন।

Related Post

মৃত্যু নিয়ে উক্তি

150+মৃত্যু নিয়ে উক্তি, বাণী, ক্যাপশন 2024

মৃত্যু নিয়ে উক্তি জন্মিলে মরিতে হবে আর এটাই সত্যি। মৃত্যু হচ্ছে সবচেয়ে চিরন্তন সত্যি। পৃথিবীতে প্রতিটি প্রাণীর মৃত্যুর স্বাদ অনুভব করতে হবে। সবসময় মৃত্যুর জন্য

Read More »
খুশির স্ট্যাটাস

200+ স্টাইলিশ খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন

খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন জীবনের সুন্দর খুশির মুহূর্ত আমরা সবাই বাঁধাই করে রাখতে চাই। আর এই খুশির মুহূর্তকে ধরে রাখার সবচেয়ে সহজ উপায়

Read More »

স্টাইলিশ ভালোবাসার ছন্দ | রোমান্টিক ছন্দ | Love Status Bangla

❤❤ভালোবাসার ছন্দ | ভালোবাসার ছন্দ রোমান্টিক | ভালোবাসার ছন্দ স্ট্যাটাস❤❤ ভালোবাসা হলো এক অন্যরকম অনুভূতির নাম, যা শুধুমাত্র কাউকে ভালবাসলেই অনুভব করা যায়। আমরা বিভিন্নভাবে

Read More »
মন খারাপের স্ট্যাটাস

মন খারাপের স্ট্যাটাস, উক্তি, ছন্দ, ক্যাপশন, কিছু কথা ও লেখা

মন খারাপের স্ট্যাটাস মন খারাপ – এই কষ্টের অনুভূতি কার না হয়? সবারই কখনো না কখনো সবারই মন খারাপ হয়। জীবনের ছোটোখাটো অঘটন থেকে শুরু

Read More »

Leave a Comment

Table of Contents