ভারতের উত্তরে অবস্থিত পাহাড়ি এক রাজ্য উত্তরাখন্ড (uttarakhand)। যা চীন ও নেপালের সাথে তার সীমানা ভাগ করে নিয়েছে। সারা পৃথিবী জুড়ে, দর্শনার্থীদের একমাত্র আকর্ষণ এই উত্তরাখন্ডের উপর। রাজ্যটি কুমায়ুন ও গড়বাল এই দুই অঞ্চলে বিভক্ত। এই ২ বিভাগের অন্তর্গত মোট জেলার সংখ্যা ১৩ টি। উত্তরাখণ্ডের পূর্বতম নাম ছিল উত্তরাঞ্চল। দেরাদুন হচ্ছে উত্তরখণ্ডের অন্তর্বর্তী রাজধানী। দেরাদুন হচ্ছে এই রাজ্যের রেল টার্মিনাস ও বৃহত্তম শহর । সারা বছর এখানে প্রচুর পর্যটকদের আনাগোনা থাকে।
দর্শনার্থীদের কাছে তাদের স্বর্গরাজ্য এই উত্তরাখন্ড। উত্তরাখন্ড যেন সুন্দর্য মন্ডিত নিয়ে রূপকথার এক স্বর্গরাজ্য, পাহাড়, জঙ্গল, দেহরাদুন, হরিদ্বার , নৈনিতাল, ঋষিকেশ, মুসৌরি, গঙ্গা নদী, চম্বা, অভয়ারণ্য এই সব কিছু নিয়ে গঠিত উত্তরাখন্ড যেন এক স্বর্গরাজ্য পরিণত হয়েছে। হিমালয়, ভাবর ও তরাই অঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য রাজ্য বিখ্যাত হয়েছে। ২০০০ সালের ৯ই ডিসেম্বর উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের হিমালয় ও তৎসংলগ্ন জেলাগুলো নিয়ে ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের উত্তরখন্ড রাজ্যকে সৃষ্টি করা হয়েছিল ২৭ তম রাজ্য হিসেবে।
উত্তরখণ্ড রাজ্যটিকে দেবভূমিও বলা হয়। কারণ হিন্দুদের কয়েকটি পবিত্রতম মন্দির রয়েছে এখানে। গঙ্গোত্রী ও যমুনাত্রী নদী যথাক্রমে ভারতের জাতীয় নদী গঙ্গা ও যমুনা নদীর উৎস। উত্তর খন্ডের চারপাশে রয়েছে ছড়িয়ে ছিটিয়ে নানান দর্শনীয় স্থান। কিছু কিছু দর্শনীয় স্থান রয়েছে যেগুলোতে সারা বছরই দর্শনার্থীদের ভীর জমে থাকে।
১. উত্তরকাশি
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে মনোরম পরিবেশে উপভোগ করতে হলে, আপনাকে অবশ্যই উত্তরকাশীতে আসতে হবে। ভারতের উত্তরাখন্ড রাজ্যে অবস্থিত উত্তরকাশি। এটিকে রাজ্যের একটি প্রধান পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে ধরা হয়। নির্দিষ্ট কোন সময় নেই সারা বছরই এখানে দর্শনার্থীদের আগমন ঘটে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা প্রায় ১১৫৮ মিটার। বিশেষ করে হিন্দুদের কাছে এটি একটি পবিত্র শহর কারন এখানে অনেক আশ্রম ও মন্দির রয়েছে। কাশি যা বেনারসের নামে এই জায়গাটির নামকরণ করা হয়েছে। বর্তমানে উত্তরখণ্ডের জনপ্রিয় প্রধান একটি শহর।
চারপাশে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এ ঘেরা হিমালয় রেঞ্জের একটি আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র। এর আশেপাশে কিছু আকর্ষণীয় দর্শনীয় স্থান ও সংলগ্ন গঙ্গা নদীর সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত। প্রচুর সৌন্দর্য জনিত ও ঘোরার মতো আকর্ষণীয় জায়গা রয়েছে। বিভিন্ন জায়গার ট্রেক করতে হলে এখান থেকে পারমিশন নিতে হবে। পারমিশনের জন্য সামান্য কিছু টাকাও দিতে হবে। গোমুখ, তপোবন, হর কি দুন, দয়ারা বুগিয়াল, দধিতাল লেক এই জায়গা গুলো ভ্রমন ও ট্রেক করার জন্য সত্যিই অসাধারণ। উত্তরকাশিতে ভ্রমণের জন্য গরম ও শীত দুই সিজনেই ঘোরার মজাটাই আলাদা।
উত্তর কাশির একটি দর্শনীয় স্থান দোদিতাল লেক। উত্তরকাশী ভ্রমণের ক্ষেত্রে প্রথমেই আপনি এই দোদিতাল জায়গায় এসে ভ্রমন করবেন। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা ৩০২৪ মিটার। উত্তর কাশি থেকে দোদিতাল লেকের দূরত্ব ২২ কিলোমিটার।
নচিকেতা লেক: শান্ত প্রিয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে হলে আপনাকে নচিকেতা লেকে যেতে হবে। এখানকার পরিবেশটা খুবই শান্তময়, সাথে পাখির কিচির মিচির ডাক, আর লেকেঢেউ খেলা পানির ছলছলানি। উত্তরকাশির প্রধান শহর থেকে দূরত্ব মাত্র ১২ কিলোমিটার। নচিকেতা লেকের পাশে নাগ দেবতার মন্দিরও আছে।
শক্তি মন্দির: উত্তরকাশি শহরের মধ্যেই এর অবস্থান,ছোট্ট একটা মন্দির। বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রায় ৫০০ মিটার দূরে অবস্থিত মন্দিরটি। মন্দির সর্বদাই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকে এবং এর ভিতর একটি ত্রিশূল রয়েছে। অনেকেই মানত নিয়ে মন্দিরে আসেন পূজো করার জন্য যাতে শক্তি দেবের শক্তির মাধ্যমে তাদের মনোবাসনা পূরণ হয়ে যায়।
দায়ারা বুগিয়াল: এটি উত্তর কাশির রাস্তা ধরে ছোট্ট একটি গ্রাম। দায়ারা বুগিয়ালে প্রবেশ করার জন্য অবশ্যই আপনাকে অনুমতি নিতে হবে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ভরপুর এই বুগিয়াল জায়গাটি। এখানে যাবার সময় অবশ্যই সাথে করে শুকনো খাবার ও খাবার জল নিয়ে যেতে হবে। এ জায়গায় এসবের কোন ব্যবস্থা নেই।
বিশ্বনাথ মন্দির: উত্তরকাশির আবশ্যিক ভ্রমণ করার পর্যটন কেন্দ্রটি হচ্ছে বিশ্বনাথ মন্দির। মন্দিরটি ভগবান শিবের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হয়েছিল। উত্তরকাশি বাস স্ট্যান্ড থেকে দূরত্ব প্রায় ৫০০ মিটার। ভারতের অন্যতম একটি আদি মন্দির এ বিশ্বনাথ মন্দিরটি। মন্দিরটি খোলা থাকে সকাল ৬ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত।
কুতেতি দেবী মন্দির: গঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত এই কুতেতি দেব মন্দিরটি। উত্তরকাশির প্রধান শহর থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মন্দির। মন্দিরটি স্থাপন করেছিলেন মহারাজার কোটার মেয়ে ও জামাই তাদের স্বপ্নে দেখিয়েছিলেন মন্দির স্থাপন করার জন্য। মন্দিরটিতে ভগবান দুর্গার আরেক রূপ।
মনেরিবাঁধ, মনেরিবাধ উত্তরকাশির আরেকটি দর্শনীয় স্থান, ভাগীরথী নদীর উপর কংক্রিটের বাধকে বলা হয় মনেরিবাঁধ। এটি গঙ্গোত্রী যাওয়ার পথে পাওয়া যায়। উত্তরকাশিতে থেকে এর দূরত্ব প্রায় ১২ কিলোমিটার। বর্তমানে লোকজন এটাকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে ধরে নিয়েছে, কারণ এখান থেকে পুরো প্রকৃতি বা আশেপাশের দৃশ্যগুলো সুন্দরভাবে এক চোখে উপভোগ করা যায়।
লোকেশন | ভ্রমণ গাইড / কিভাবে যাবেন |
---|---|
গঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত এই উত্তরকাশি। হরিদ্বার থেকে ১৯১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। | হরিদ্বার বা দেহরাদুন গাড়ি রিজার্ভ করে যেতে পারবেন উত্তরকাশিতে। লোকাল বাসও পাওয়া যায় হরিদ্বার থেকে উত্তরকাশির। |
২. ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স
যোশিমঠ থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে ঘানঘারিয়া থেকে এই ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স এলাকার শুরু। ৮৭ কিলোমিটারের জায়গা জুড়ে বিস্তৃত এই ফ্লাওয়ার্স এর ভ্যালি এবং তা ১২,১০০ ফিট উচ্চতায় অবস্থিত। যতদূর আপনার চোখের দৃষ্টি যাবে শুধু ফুলের বাগানই দেখতে পাবেন, শুধু তাই নয় সাথে অপরূপ শোভা,সুঘ্রাণ। প্রায় ৩০০ প্রজাতির ফুল ফুটে এই বাগান গুলোতে। বিভিন্ন ধরনের বিভিন্ন জাতের এবং পার্বত্য আলপাইন ফুলের চাষ হয় সাথে বিরল প্রজাতির উদ্ভিদ ও দেখা যায় এখানে।
ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্সে ঢোকার সময় একটা পারমিট নিতে হয়, পারমিট নিতে ছবি, ভোটার কার্ড বা পাসপোর্ট এর ফটোকপি লাগে। টিকিটের মূল্য জনপ্রতি ৬৫০ টাকা। ভারতীয় প্রায় ১৫০ রুপি। ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স এ ফুলে ভরপুর দেখতে হলে বর্ষার শেষের সময় এখানে থাকতে হবে, উপরে আকাশটা পরিষ্কার হতে শুরু করে আর নিচে পরিচ্ছন্ন কিছু উঁচু নিচু পাহাড়ের দৃশ্য সাথে বৃষ্টি ভেজা ফুটন্ত ফুলগুলো। সত্যি এই দৃশ্যটা জাস্ট অসাধারণ, চোখে থাক লাগানোর মতো। আগস্ট মাসে হালকা হালকা মেঘ, মাঝেমধ্যে কিছু বৃষ্টি এই সময়টাতে উপত্যকায় সর্বাধিক ফুল ফোটে। আবার আগস্ট মাসের দ্বিতীয় ধাপে ফুলগুলো শুকিয়ে যেতে শুরু করে এবং সেপ্টেম্বর মাসে তো বাগানে খুব একটা ফুলের দেখা মিলে না।
যেন ফুলগুলো সবাই খুব ক্লান্ত রেস্টে চলে গেছে। ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্সের জাতীয় উদ্যানের কাছাকাছি নতুন ট্রেক রুট খুলে দেওয়া হয়েছে চারটি। প্রায় ৪৫ বছর বন্ধ ছিলো, ২০১৫ সালে এসে এটা খুলে দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় ট্রেক রুটটি হচ্ছে লতা গ্রাম থেকে ডিব্রুঘতা। তৃতীয় ট্রেক রুটটি দ্রোনগিরির পাথুরে পথ ধরে ১৩ কিলোমিটার দূরে এবং শেষ ও চতুর্থ ট্রেক রুট ৩২০০ থেকে ৪০০০ মিটার উচ্চতায় চেনাব উপত্যকা দিয়ে যাওয়া।
লোকেশন | ভ্রমণ গাইড / কিভাবে যাবেন |
---|---|
উত্তরাখণ্ডের গোবিন্দঘাট থেকে ঘাংরিয়া প্রায় ২ কিলোমিটার আবার ঘাংরিয়া থেকে ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স এর দূরত্ব ৩ কিলোমিটার। | উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বার থেকে টাটা সুমো করে গোবিন্দঘাটে যাবেন। এখানে ভাড়া পড়বে প্রায় ৭২০০ থেকে ৮০০০ রুপি। গোবিন্দঘাট থেকে আপনাকে অনুমতি নিতে হবে । অনুমতি নিয়ে জিপে চড়ে প্রায় চার কিলোমিটারের রাস্তা পেরিয়ে পুলনা পৌছাবেন।
সেখান থেকে ঘোড়া ভাড় করে নিতে পারেন, ভাড়া পড়বে ৬০০ রুপি করে। পুলনা থেকে ঘাংরিয়া, সেখান থেকে মাত্র ১ কিলোমিটার রাস্তা পেরিয়েই ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স এর বিশাল বাগান। |
৩. দেরাদুন
দেরাদুন উত্তরাখণ্ডের রাজধানী। উত্তরখণ্ডের অন্যতম বিখ্যাত একটি স্থান দেরাদুন। হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত রয়েছে। এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পর্যটকদের মুগ্ধ করে, যার ফলে প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটকদের সমাগম হয় এখানে। দেরাদুনের মধ্যে আকর্ষণীয় অনেক স্থান রয়েছে। তার মতো অন্যতম একটি স্থান হচ্ছে শারধা, যার অর্থ হচ্ছে ‘হাজার গুন বসন্ত ‘। এই স্থানটি পর্যটকদের বেশি আকর্ষণময় করে তুলে। পানিতে সালফার থাকার কারণে, থেরাপিউটিক ঔষধি বৈশিষ্ট্যের জন্য এটা খুবই বিখ্যাত ভূমিকা পালন করে। প্রকৃতিপ্রেমীদের প্রকৃতির টানে এই দেরাদুনে এসে পৌঁছাতে হয়।
আকর্ষণীয় পর্যটনীয় স্থানের মধ্যে দেরাদুনের অন্যান্য স্থান হচ্ছে মালসি ডিয়ার পার্ক, রবার্স কেভ, রাজাজি ন্যাশনাল পার্ক, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ ফরেস্ট্রি রিসার্চ এন্ড এডুকেশন। তাছাড়াও দেরাদুনে মন কাড়ানোর মতো সৌন্দর্যের প্রাচীন ধর্মীয় কেন্দ্র রয়েছে। সাঁওতাল দেব মন্দির, লক্ষণ সিদ্ধ মন্দির, তপকেশ্বর মহাদেব মন্দির, তপোবন মন্দির, শত শত ভক্ত তাদের মহাদেবের টানে মানত নিয়ে এখানে এসে তাদের পুজো সম্পূর্ণ করেন। প্রাচীন মন্দির হওয়ার কারণে এগুলোর প্রতি আরো বেশি আকর্ষণ বাড়ছে পর্যটকদের। এখানে বিখ্যাত একটি মঠও রয়েছে।
৩০০ বছরের ও বেশি ইতিহাস রয়েছে মাইন্ড্রোলিং মঠের। মঠটি ক্লিমেন টাউনের শহর থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৌদ্ধ নিদর্শন এই মঠটি। প্রকৃতির সাথে মিশে আছে প্রাকৃতিক ঝর্ণা, মুগ্ধ করার মত যার সৌন্দর্য ফুটে ওঠে প্রতিনিয়ত। দেরাদুনের প্রকৃতির শোভায় এতটাই আচ্ছন্ন হয়ে পড়বেন যে, আপনার জীবনের ফেলে আসা সব দুঃখ কষ্ট নিমিষেই ভুলিয়ে দিবে। কিছুদিনের জন্য হলেও আপনি আপনার মনকে আটকে রাখতে পারবেন না এই প্রকৃতির সৌন্দর্য থেকে। এতটাই মনোমুগ্ধকর পরিবেশ দেরাদুনে। আপনি নিজ চোখে দৃষ্টিপাত না করলে বুঝতেই পারবেন না।
লোকেশন | ভ্রমণ গাইড / কিভাবে যাবেন |
---|---|
ভারতের উত্তরখন্ড প্রদেশের রাজধানী দেরাদুন। | রেলপথে দেশের সমস্ত বড় শহর থেকে ট্রেন পরিষেবা রয়েছে দেরাদুন রেল স্টেশনে। রেল স্টেশন থেকে বেশি দূর নয় বাসে বা সিএনজি করে পৌঁছাতে পারবেন দেরাদুনে। |
৪. আউলি
আউলিয়াতে সর্বনিম্ন ৫০০ রুপি দিয়ে আপনি বরফের সময় স্কিইইং করতে পারবেন। আউলিতে সাধারণত শীতকালে দর্শনার্থীদের খুব বেশি ভিড় থাকে। তার কারণ হলো শীতকালীন অ্যাডভেঞ্চার এর জনপ্রিয় স্পোর্টস। এবং এখানে স্কেটিং শেখানোর স্কুলও রয়েছে। ২৮০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এই হিল স্টেশনের বরফ মোড়ানো পাহাড়ে রয়েছে বিভিন্ন অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের হাতছানি। আউলিয়া ভ্রমণের সেরা আরেকটি আকর্ষণ হচ্ছে ক্যাবল কার। যেদিকে তাকাবেন শুধু সবুজ আর সবুজ না হয় বরফ, তুষারপাতের খেলা। আহা, কতইনা মধুর দৃশ্য।
এখানে হিমালয় উন্মুক্ত হয়ে আছে, ৫ নাম্বার টাওয়ারের পর থেকে। একটু একটু করে যখন সামনের দিকে অগ্রসর হবেন, ততই আপনার চোখের সামনে আসতে থাকবে ত্রিশূল, দ্রোনাগিরি, নন্দাদেবী, নন্দাকোট, পঞ্চচুল্লি এই জায়গাগুলো যতই আপনি পর্যবেক্ষণ করবেন, ততই আপনার অন্যান্য জায়গার প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যাবে। আউলিতে ভ্রমণের জন্য আপনার জন্য সেরা সময় হচ্ছে, ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত। আউলির রোপওয়ে এশিয়ার দীর্ঘতম, আর সারা পৃথিবীর মধ্যে দ্বিতীয় উচ্চতম। এখানে আবার লজের পাশেই হনুমানজির মন্দির রয়েছে।
এখান থেকেও আপনি আরও কিছু জায়গা দেখতে পাবেন যেমন কামেট, দুনাগিরি, নন্দাদেবী, ত্রিশূল, হাতি পর্বত যেদিকেই আপনার দৃষ্টি যাবে এই সুন্দরতম স্থানগুলো দেখতে পাবেন। এরকম জায়গায় না আসলে কখনো বুঝতেই পারবে না যে, পৃথিবীতে ভ্রমণ করার জন্য কত সুন্দরতম স্থান রয়েছে।
লোকেশন | ভ্রমণ গাইড / কিভাবে যাবেন |
---|---|
আউলি বদ্রিনাথের পথে অবস্থিত। দিল্লি উত্তর পূর্বাঞ্চলের ১৩ ঘন্টা আগে জোশিমাতের কাছাকাছি রয়েছে আউলি। | যোশীমঠ থেকে রোপওয়ে করে আউলি যেতে পারবেন। যেতে সময় লাগবে প্রায় ২৫ মিনিটের মতো। ভাড়া পড়বে ৭৫০ থেকে ১০০০ রুপি এর মতো। |
৫. হর কি দুন ট্রেক
হর কি দুন ট্রেক টি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১১৬০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত। শীত এবং গ্রীষ্ম যেকোন যে কোন সিজনেই যাওয়া যায় এই রুটে, তবে গ্রীষ্মকালে যাওয়াটাই বেশি ভালো পরিবেশ পরিস্থিতির দিক দিয়ে। উত্তরাখণ্ডের উত্তর কাশি রাজ্যের গারোয়াল হিমালয়ের পশ্চিম পারে অবস্থিত। স্বর্গেরই একটি অংশের ছোঁয়া যেন এসে পড়েছে এই হর কি দুনে। এজন্য স্থানীয় লোকেরা এর নাম দিয়েছে ঈশ্বরের উপত্যকা। সারা পথটি জুড়ে জঙ্গলে হালকা বাতাসের শন শন আওয়াজ, পাখির কিচিরমিচির শব্দ, চারিদিকের নিস্তব্ধতা, এজন্য উপত্যকার এক মুগ্ধতার সৃষ্টি হয়। একদিকে আবার সূর্য কিরণ অন্যদিকে সবুজ পরিবেশের উপত্যকা।
দূরে ওই স্বর্গরোহিনীর মাথার সাদা বরফ, জীবনের এক নতুন অধ্যায়,এই পরিস্থিতিতে জীবনের এক নতুন মানে শিখাবে আপনাকে। তামসা নদীর পারে এক রাত ক্যাম্পিং করে কাটাতে পারেন। আকাশে হাজার হাজার কোটি তারার নিচে ক্যাম্প করে রাত্রি যাপন করলে, চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে এই রাত্রি আপনার জীবনে। এই জঙ্গলের মধ্য দিয়ে আপনি ২০০০ বছরের পুরনো গ্রামের স্মৃতিচারণ খুঁজে পাবেন। পরিচিত হবেন এবং জানতে পারবেন আদি প্রাচীন জনগোষ্ঠীর জীবনধারার সাথে। তখনকার মানুষের বেশিরভাগ সময় জঙ্গলেই কাটতো, বসবাস, কাজকর্ম, খাদ্য স্থান সবকিছু জঙ্গলেই।
বছরের যে কোন সময় না গিয়ে, গ্রীষ্মকালে যেতে পারেন। এপ্রিল মাস থেকে জুন, গ্রীষ্ম ও বর্ষার পরে হর কি দুন ট্রেকের এর জন্য সেরা সময়। আবার সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর মাসেও আসতে পারবেন। হর কি দুনে যেতে গেলে আপনাকে প্রথমে দেরাদুনে পৌঁছাতে হবে।
লোকেশন | ভ্রমণ গাইড / কিভাবে যাবেন |
---|---|
উত্তরকাশি রাজ্যের গারোয়াল হিমালয়ের পশ্চিম পারে অবস্থিত এই হর কি দুন ভ্যালি ট্রেক টি, উত্তরকাশি থেকে এর দূরত্ব প্রায় ৭০ কিলোমিটার। | উত্তরকাশির রাজধানী দেরাদুনে যেতে হবে, সেখান থেকে আপনি স্থানীয় কোন ছোট ধরনের গাড়ি ধরে প্রায় ১০ ঘণ্টার মতো জার্নি করে পৌঁছাতে পারবেন। এটিই হচ্ছে হর কি দুন এর বেস ক্যাম্প। |
৬. মুসৌরি
মুসৌরি এই নামটা যেমন আনকমন মনে হয় ঠিক তেমনি জায়গাটাও আপনার কাছে আনকমনই মনে হবে। এত সৌন্দর্যে ঘেরা জায়গাটি যা বলা বাহুল্য। সত্যিই অসাধারণ, শীতে এর রূপ যেন আরো দ্বিগুণ হয়ে যায়। মুসৌরে পর্যটকদের আনাগোনা শীতকালেই বেশি থাকে। প্রচন্ড গরমকালে যারা একটু স্বস্তি অনুভব করতে চান, তারা চলে আসুন নেই মুসৌরে। শীতকালে এখানে নিজের মতো করে পাহাড়গুলো পর্যবেক্ষণ করা যায়। শরীরের শীতের কাপড় জড়িয়ে, কুয়াশার মধ্যে গুটিগুটি পায়ে হেঁটে পথ চলা, কিছুদূর গিয়েই পাহাড় পেরিয়ে রাস্তার ধারে চায়ের দোকানে বসে চায়ের কাপে চুমুক দেওয়া।
ভাবতে পারছেন কতটা শান্তিময়, অসাধারণ একটা জায়গা এই মুসৌরি। তাছাড়া হোটেলের বারান্দায় বসে ও কফি খেতে খেতে প্রকৃতিক অপরূপ শোভা দেখার আনন্দটাই আলাদা। অন্য কোন কিছুর সাথে এই আনন্দের তুলনা করা যায় না। তাছাড়া এখান থেকে বেড়াতে বেড়াতে যেতে পারেন, আশেপাশের কিছু দর্শনীয় স্থানগুলোতে। গানহিল, মুসৌরির হৃদ, ঝরিপানি জলপ্রপাত, ভট্ট জলপ্রপাত, নাগ দেবতার মন্দির, বেনোগ অভয়ারণ্য, বেনোগ পর্বত। এখানে বেনোগ অভয়ারণ্যে আছে প্রাচীনতম একটি গাছ , নাম দেবদারু গাছ,এবং পাইন গাছের সারি সারি। মুসৌরিতে প্রচুর ঔষধি গাছেরও চাষ হয়,রয়েছে আঞ্চলিক গবেষণার কেন্দ্র।
এবং আপনি এই অভয়ারণ্যটিতে ভ্রমণে গেলে দেখতে পাবেন রয়েছে নানান ধরনের পশুপাখি। চিতা, হরিণ, ভাল্লুক, হিমালিয়ান ছাগল।। শপিংমলে গিয়ে কেনাকাটা করা, রেস্টুরেন্টে গিয়ে খাওয়া-দাওয়া করা, ট্রিট দেওয়া সব সময় কি আর এই একই জিনিস ভালো লাগে! অবশ্যই না।মাঝে মধ্যে দেশের বা বাইরের দর্শনীয় স্থানগুলো পর্যবেক্ষণ করা উচিৎ। এতে করে আপনি অনেক অজানা তথ্য জানতে পারবেন, নতুন নতুন জায়গার প্রতি এক একটা ধারণা সৃষ্টি হবে। মন ফ্রেশ হবে, শরীরে প্রশান্তির আসবে।
লোকেশন | ভ্রমণ গাইড / কিভাবে যাবেন |
---|---|
দেরাদুন থেকে মুসৌরি প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত। | ভারতের উত্তরখন্ড প্রদেশের রাজধানী দেরাদুন থেকে গাড়ি করে মুসৌরি আসতে প্রায় ২ ঘন্টার মতো সময় লাগবে। |
৭. শয়নচট্টি
যমুনোত্রী থেকে খুবই কাছাকাছি এবং অন্যতম উৎসাহভ্রমণ পরিদর্শিত স্থান হিসেবে স্বীকৃতি হয় এই শয়নচট্রি। এই স্থানে ১৯৮২ মিটার উচ্চতায় একটি হ্যামক সদৃশ বিখ্যাত পাহাড়ি চূড়াও রয়েছে। শয়নচট্রি এর এই চূড়া থেকে আশেপাশের সৌন্দর্যগুলো পর্যবেক্ষণ করা যায়। শয়নচট্রি তে বর্ষাকালে আবার খুব বৃষ্টিপাত হয়। আর এদিকে গ্রীষ্মকালে এর তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত চলে যেতে পারে। উত্তরাখণ্ডের এই স্থানগুলো পরিদর্শনের জন্য মার্চ থেকে জুন মাস এবং সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর মাস এই সময় গুলোতে আসলে ভালো হবে।
আপনি অবশ্যই আপনার পছন্দের উপলব্ধ বিকল্পের মধ্য দিয়ে ভ্রমণ নির্বাচন করতে পারেন তবে এই উত্তরাখণ্ডে না আসলে আপনি অনেক বড় এবং ভালো কিছু মিস করে ফেলবেন। তাই জন্য অবশ্যই জীবনে একবার হলেও এই উত্তরাখন্ডে ভ্রমণে আসবেন। উত্তরাখণ্ডের বিভিন্ন জায়গা ভ্রমন করার পর আপনার মনে হবে,যে আসলেই আপনি সঠিক জায়গা নির্বাচন করেছেন ভ্রমন করার জন্য। এক একটা পাহাড়ের চূড়ায় উঠে আশেপাশের বিভিন্ন সৌন্দর্য এক পলকে উপভোগ করতে পারছেন। জায়গাগুলোর প্রতি চমৎকার প্রতিফলন পরিলক্ষিত হচ্ছে।
লোকেশন | ভ্রমণ গাইড / কিভাবে যাবেন |
---|---|
উত্তরখণ্ড প্রদেশের রাজধানী দেরাদুন থেকে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টার রাস্তা পেরিয়ে শয়নচট্রি। | দেরাদুন থেকে বাসে করে অথবা রিজার্ভ গাড়ি করে শয়নচট্রিতে পৌঁছাতে পারবেন। |
৮. জিম করবেট
অন্যতম বিশাল বিখ্যাত একটি পার্ক জিম করবেট। ১৯৩৬ সালে অভয়ারণ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় জিম করবেট। দেশের সবচেয়ে প্রাচীন অভয়ারণ্য উত্তরখণ্ডের এই জিম করবেট জাতীয় উদ্যানটি। এই জায়গাটিতে প্রায় ৫০০ এর উপরে গাছপালা ও পশুপাখি রয়েছে। এই উদ্যান টির নামকরণ করা হয় প্রকৃতিপ্রেমী এবং বিখ্যাত শিকারি জেমস এডওয়ার্ড করবেটের নামে। এটি দেশের একটি ইকো ট্যুরিজমের অন্তর্গত রয়েছে। বিপন্ন রয়েল বেঙ্গল টাইগারদের বিলুপ্ত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য অভয়ারণ্য প্রতিষ্ঠার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল।
৫২০.৮ কিলোমিটার এলাকার জায়গা জুড়ে এই জাতীয় উদ্যানটি স্থাপিত হয়েছে। জিম করবেটে গেলে আপনারা যা যা পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন, নদী, তৃণভূমি, জলাভূমি, বিশাল ঢেউ খেলানো পাহাড়, বিশাল আকারের হ্রদ। এখানকার সমুদ্র তল থেকে এর গড় উচ্চতা হবে প্রায় ১৩০০ থেকে ৪০০০ ফিট।শীত সিজনে এই উদ্যানটিতে ভ্রমণ করার মজাই আলাদা। পাহাড়ের আঁকাবাঁকা রাস্তা দিয়ে হাঁটবেন, প্রকৃতির সাথে ক্যামেরা দিয়ে নিজের কিছু ছবি ফ্রেমবন্দি করে রাখবেন স্মৃতির পাতায় তোলা থাকবে। কোন এক সময় বেলকনিতে একা একা বসে যখন কফি খাবেন, ঠিক তখনই ছবিগুলো দেখবেন আর সেই জায়গার স্মৃতিময় ভ্রমণের কথা মনে করবেন।
জঙ্গলে আপনার সাথে দেখা হতে পারে বাঘ, হাতি, হরিণ। হাঁটতে হাঁটতে চোখে পড়বে হাজার রকমের রংবেরঙের পাখি। যা দেখতে সত্যিই অপরূপ। একটার পর একটা শুধু দেখতেই থাকবেন, ফিরে আসার প্রহর গুনার কথা মনেই পড়বে না। এত সৌন্দর্য মন্ডিত স্থান জিম করবেট এই উদ্যানটি।
লোকেশন | ভ্রমণ গাইড / কিভাবে যাবেন |
---|---|
দেরাদুন থেকে প্রায় ২২৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত রয়েছে। | উত্তরখণ্ড থেকে বাসে করে দেরাদুন পৌঁছে যাবেন। দেরাদুন থেকে লোকাল বাসে করে জিম করবেটের পৌঁছাতে পারবেন অথবা সিএনজি রিজার্ভ করে জিম করবেটে চলে যাবেন। |
৯. নৈনিতাল
উত্তরাখণ্ডের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে নৈনিতাল নৈনিতালের নৈসর্গিক হিল স্টেশনটি। এই নৈনিতালের হিল স্টেশনের চারপাশে বিশাল তুষারে ভরা চুড়া রয়েছে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় সাত হাজার ফুট উঁচু ৭০০ হিল স্টেশনরর চারপাশে। কুমায়ুন অঞ্চলের অন্যতম বিখ্যাত একটি হ্রদ। নৈনিতাল পিকনিক করার জন্য আদর্শ একটি স্থান। তাছাড়া বোটিং, পড়ন্ত বিকেলে বা সন্ধ্যাবেলা হাঁটার জন্য খুবই মনোরম একটি পরিবেশ। আরো রয়েছে, উচ্চ হিমালয় পর্বতের বিস্তৃত জায়গায় নয়না দেবী মায়ের মন্দির।
বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন আসেন মানত নিয়ে, নয়না দেবী মন্দিরে যাতে করে তাদের মনোবাসনা গুলো পূরণ হয়। ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বিখ্যাত শক্তিপীঠগুলোর মধ্যে একটি। দেবী নয়নাকে উৎসর্গ করা হয়েছে এই নৈনিতালে। নৌকায় চড়ে চড়ে সূর্যাস্তের সেই অপরূপ দৃশ্যটা আপনি উপভোগ করতে পারেন। লাল সূর্যটি, অল্প অল্প করে রক্তভরণ ধারন করে সেদিনের মতো অস্ত্র চলে যায় । সেই সময়টা যে কত অপূর্ব হতে পারে তা আপনি নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করতে পারবেন না। উত্তরাখণ্ডের একটিমাত্র চিড়িয়াখানা হচ্ছে গোবিন্দ বল্লভ পন্ত। যা বলতে পারেন উচ্চ উচ্চতার চিড়িয়াখানা। যা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২১০০ মিটার উচ্চতায়।
তারমধ্যে বিভিন্ন রকমের প্রাণী রয়েছে ছাগল অ্যান্টিলোপ, সাইবেরিয়ান টাইগার, সেরাও, স্নো লেপার্ডের মতো উচ্চ জায়গায় বাস করে। চিড়িয়াখানাটি পাহাড়ের চূড়ায় নৈনিতাল বাস স্ট্যান্ড থেকে মাত্র ১.৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। পাহাড়ের চূড়া থেকে নিচের দৃশ্য গুলো দেখা অন্যরকম এক অনুভূতির সৃষ্টি করে।
লোকেশন | ভ্রমণ গাইড / কিভাবে যাবেন |
---|---|
দিল্লির পূর্ব দিকে প্রায় ছয় ঘণ্টার রাস্তা পেরিয়ে নৈনিতালের অবস্থান। | দিল্লি থেকে বাসে করে বা অন্য কোন গাড়িতে নৈনিতালে পৌঁছাতে পারবেন। অথবা উত্তরখণ্ড থেকে বাসে করেও নৈনিতালে আসতে পারবেন। |
১০. রানীক্ষেত
রানীক্ষেত, যার অর্থ হচ্ছে রানীর দেশ। ব্রিটিশ যুগের পাথরের বিল্ডিং গুলো ছোট্ট শহরটিকে আকর্ষণ করে। প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে সবসময়ই পছন্দের জায়গা রানীক্ষেত্র। কিছু সময়ের জন্য হলেও নিস্তব্ধ সবুজ প্রকৃতির বুকে নিজেকে হারিয়ে ফেলবেন। পাইন গাছ, আপেল বাগান, এপ্রিকট এই বাগান গুলো দাঁড়িয়ে আছে সারি বদ্ধভাবে, যেন এদেরকে সাজিয়ে রাখা হয়েছেই এই প্রকৃতির সৌন্দর্যের জন্য। রানীক্ষেত ভারতীয় সেনাবাহিনীর কুমায়ুন রেজিমেন্টের সদর দপ্তর। এবং পাশে আরো রয়েছে কুমায়ুন রেজিমেন্টাল সেন্টার মিউজিয়াম।
রানীক্ষেত এসে শুধু রানীকে দেখলেই হবে না, এখানে দেখার মত আরো সুন্দর সুন্দর দর্শনীয় স্থান আছে, হাইদাখান বাবাজি মন্দির, ঝুলা দেবী রাম মন্দির, ভালু ড্যাম, মানকামেশ্বর, গল্ফ গ্রাউন্ড। রানীক্ষেতের যে প্রাচীন ভবনগুলো রয়েছে, তা দেখতে দেখতে অনেক ঐতিহাসিক তথ্য জানতে পারবেন। এই বিখ্যাত মন্দিরগুলোতে পর্যটকদের আনাগোনা বেশি থাকে। রানীক্ষেতের পর্যটকদের আকর্ষণীয় করে তুলে যে স্থানগুলো কেসকেডিং জলপ্রপাত, নন্দা দেবীর চূড়া, ট্রেকিং রেঞ্জ। এখানে পর্যটকদের কাছে পর্বত আরোহরের জন্য খুবই বিখ্যাত। কুয়াশার মধ্যে হাঁটিহাঁটি পায়ে এগিয়ে চলছেন সৌন্দর্য উপভোগ করতে অজানা কে জানতে।
লোকেশন | ভ্রমণ গাইড / কিভাবে যাবেন |
---|---|
উত্তরখণ্ডের আলমোড়া জেলায় অবস্থিত, হিমালয় অঞ্চলের ছোট্ট একটি গ্রাম রানীক্ষেত। দিল্লির শহর থেকে রানীক্ষেতের দূরত্ব প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার। এবং নৈনিতাল দেখে রানীক্ষেতের দূরত্ব প্রায় ৬০ কিলোমিটার। | উত্তরাখণ্ড থেকে আপনি মোটরের মাধ্যমে বা অন্য কোন গাড়ি করে রানীক্ষেতে পৌঁছাতে পারেন। দিল্লি থেকে রওয়ানা দিলে আপনার দশ ঘণ্টার মতো সময় লাগবে রানীক্ষেত্রে আসতে। |
১১. ঋষিকেশ
উত্তরখণ্ডের আরেকটি অন্যতম পর্যটন স্থান হচ্ছে ঋষিকেশ। নিস্তব্ধ শান্ত পরিবেশে মনোরম হিমালয়ের বিপরীতে ঋষিকেশ এর পবিত্র গঙ্গা। এই পবিত্র গঙ্গাতে জীবনের পাপ মোচন করার জন্য অনেক পর্যটকরা এখানে স্নান করতে আসেন। এমনকি পবিত্র গঙ্গার ভক্তরা যাবার সময় সাথে করে গঙ্গার জল নিয়ে যায়, যা উনাদের কাছে পরবর্তীতে ওষুধের মত কাজ করে। এখানে আরো আধ্যাত্মিক তীর্থ যাত্রা এবং সুস্থতা কামনা করার জন্যও আসেন। এটি যোগ এবং ধ্যানের বিশ্বের রাজধানী হিসেবে বিখ্যাত।
রোমাঞ্চকর দুঃসাহসিক কিছু দৃশ্য রিভার রাফটিং, জিপ লাইনিং, বিশাল আকারের দোলনা, ট্রেকিং, বাঞ্জি জাম্পিং, রক ক্লাইম্বিয়ের জন্য বিখ্যাত স্থান এই ঋষিকেশ। ঋষিকেশ সম্পর্কে যতটুকু বলা যায়, এখানে আসলে আপনি তার চেয়েও দ্বিগুন দেখতে পাবেন। রয়েছে বিশাল আকারের ব্রিজ, যার সাথে ভিডিও বা কিছু ছবি স্মৃতিচারণ হিসেবে ফ্রেম বন্দি করে রাখতেই পারেন। রাম লক্ষণ ঝুলা এবং যমজ সেতু কৃতিত্ব। কারণ এগুলোর জন্যই ঋষিকেশের পুরো দেশ জুড়ে এত সুনাম অর্জন। এবং পর্যটকদের কাছে এত আকর্ষণীয়। এই সেতুগুলো গঙ্গার উপর দিয়ে ৭৫০ ফুট উপরে ঝুলে আছে।
ঋষিকেশের মন্দিরগুলোর বিভিন্ন ঘাটে ঘাটে পবিত্র গঙ্গার পূজো করা হয়। ঋষিকেশ এলাকাটিকে আলোকিত করার জন্য পবিত্র গঙ্গা নদী জুড়ে ভেসে বেড়ায়, শত শত আলোকদিয়া। তার সাথে যোগ হয়, ঘন্টা এবং মন্ত্রের আওয়াজ। মনোবাসনা পূরণ করার জন্য হলেও মন্দিরগুলোতে একবার আসবেন।
লোকেশন | ভ্রমণ গাইড / কিভাবে যাবেন |
---|---|
উত্তরাখণ্ড শহর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে রয়েছে ঋষিকেশ। | উত্তরাখণ্ড থেকে বাসে করে ঋষিকেশের প্রধান সড়ক ধরে ঋষিকেশে এসে পৌঁছাতে পারবেন। জাতীয় মহাসড়কের সাথে সংযুক্ত ভালো হওয়ায় দেশের যেকোনো জায়গা থেকেই সহজে পৌঁছানো যায়। |
১২. বদ্রিনাথ
বদ্রিনাথ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩,১০০ মিটার গড় উচ্চতায় অবস্থিত রয়েছে। উত্তরাখণ্ডের একটি জনপ্রিয় তীর্থস্থান হচ্ছে বদ্রীনাথ। ভারতের একটি অন্যতম চরধাম। এছাড়াও এই শহরে বেশ কিছু ট্রেক রুট রয়েছে বদ্রিনাথের। পর্বত অভিযানের জন্য ও বিখ্যাত। বদ্রিনাথ এর অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের থেকে পর্যটকদের কাছে বদ্রিনাথ মন্দিরটি প্রধান আকর্ষণ। এই মন্দিরটি ভগবান বিষ্ণুর উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হয়েছে। ছোট চার ধাম হিন্দু তীর্থস্থানের গুরুত্বপূর্ণ অংশ এটি। তামিল সাধুদের দ্বারা ভগবান বিষ্ণুকে উৎসর্গ করা ১০৮ টি মন্দিরের মধ্যে দিয়ে এটি অন্যতম একটি মন্দির।
মন্দিরটি দিব্য দেশম নামে পরিচিত। স্থানীয় লোকরা জানান, দিন যত লম্বা হয় তত গরম সালফারযুক্ত পানির তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় জলে স্নান ত্বকের রোদ নিরাময় করে বলে ওদের বিশ্বাস। মন্দিরটিতে তিনটি প্রধান উষ্ণ প্রস্রবণ রয়েছে। সুরজ কুন্ড, তপ্ত কুন্ড ও নারদ কুন্ড।প্রতিবছর এপ্রিল থেকে মে মাসের মন্দিরটি খোলা থাকে। এবং নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে প্রচন্ড শীতের কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এখানে এই সময় প্রচন্ড শীত এবং তুষারপাত হয়ে থাকে। তাই আপনি সবসময় চেষ্টা করবেন বছরের এপ্রিল থেকে মে মাসের মধ্যে এখানে ভ্রমণে বের হতে। মন্দিরটি তে ঢোকার জন্য কোন প্রকারের প্রবেশ ফিয়ের প্রয়োজন নেই, সবার জন্য উন্মুক্ত।
লোকেশন | ভ্রমণ গাইড / কিভাবে যাবেন |
---|---|
অলকানন্দা নদীর তীরে বদ্রীনাথ এর অবস্থান। | উত্তরাখণ্ডের প্রধান সড়কের সাথে, বদ্রিনাথ মোটরযোগ্য রাস্তাদ্বারা সংযুক্ত রয়েছে। ঋষিকেশ, দেরাদুন, হরিদ্বার থেকে নিয়মিত বাস যাতায়াত করে বদ্রিনাথে,তাই বাসে করে খুব সহজেই পৌঁছে যেতে পারবেন বদ্রিনাথ । |
১৩. কেদারনাথ
কেদারনাথ মন্দিরের মধ্যে ভারতীয় শিবের ১২টি জ্যোর্তিলিঙ্গের একটি রয়েছে। এই কেদারনাথ হিন্দুদের জন্য অন্যতম পবিত্র তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিত। ৩৫৮৪ মিটার উচ্চতায় এটি অবস্থিত। কেদারনাথ মন্দিরটির মাধ্যমে শিবকে উৎসর্গ করা হয়েছে। বিখ্যাত কেদারনাথের বাড়ি ছোট চার ধাম যাত্রার একটি অংশ। বাড়িটি দেখতে খুবই অপরূপ এবং এর রূপ সৌন্দর্য প্রকাশ পায় রাত্রিবেলা বেশি। সেখানে স্থানীয় হিন্দুদের বিশ্বাস, পাণ্ডবরা যুদ্ধের সময় যে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিল, তার পাপ থেকে নিজেদেরকে মুক্তি দেওয়ার জন্য মন্দিরটি স্থাপন করা করেছিলেন।
মন্দিরের পিছন দিকে রয়েছে, কেদার গম্বুজ, কেদারনাথের শিখড়, অন্যান্য হিমালয় চূড়া, বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ হ্রদটি এখানে রয়েছে। এবং গৌরিকুন্ডা দর্শনীয় স্থান। মন্দিরের চারপাশ বিভিন্ন জাতের গাছ-গাছালি দিয়ে ঘেরা। সাথে হরেক রকমের পাখির বসবাস। সংবাদ সূত্রে জানা যায়, দেবী পার্বতী ভগবান শিব কে খুশি করার জন্য তপস্যা করেছিলেন এবং এই হ্রদে পার্বতী দেবী স্নান করার পর যে স্থানটিতে গনেশকে সৃষ্টি করেছিলেন এই জায়গা সেই স্থান বলে মনে করা হয়। এখন এই জায়গাটি বেস ক্যাম্প মন্দিরে যাওয়ার লোকদের জন্য। মন্দিরে ঢুকার সাথে সাথেই মনে হয় যেন হালকা একটি বাতাস এসে, সাথে সাথে মন প্রশান্তির হয়ে যায়।
মন্দিরটি খোলা পাবেন এপ্রিল থেকে নভেম্বর মাসে প্রতিদিন। এই মন্দিরটিতে প্রবেশ করার জন্য কোন ফিয়ের প্রয়োজন হয় না। সবার জন্য উন্মুক্ত করা। উত্তরাখণ্ডে ভ্রমণে আসলে একবার হলেও মন্দিরটি পর্যবেক্ষণ করে যাবেন।
লোকেশন | ভ্রমণ গাইড / কিভাবে যাবেন |
---|---|
উত্তরাখণ্ডের রুদ্রপ্রয়াগ জেলায় গাড়ওয়াল হিমালয় পর্বতমালায় অবস্থিত একটি ছোট্ট শহর কেদারনাথ। | উত্তরাখন্ড থেকে বাসে করে রুদ্রপ্রয়াগে আসবেন। রুদ্রপ্রয়াগ জেলা থেকে টেক্সি ভাড়া করে যেতে পারেন কেদারনাথে অথবা শেয়ার জিপেও যেতে পারবেন। |
১৪. হরিদ্বার
উত্তরাখণ্ডের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে হরিদ্বার একটি অন্যতম দর্শনীয় স্থান। হরিদ্বারে বেশ কয়েকটি আশ্রম ও মন্দির থাকার কারণে, এই স্থানকে খুবই পবিত্র স্থান হিসেবে গণ্য করা হয়। মন্দির গুলোর পাশাপাশি এখানে খুবই বিখ্যাত একটি দরগা ও রয়েছে। যা ১৩ শতক জমির উপর স্থাপিত। হরিদ্বারে গেলে আপনি অনেক অবাক করা কার্যকলাপ দেখতে পারবেন। খুবই শান্ত পরিবেশে, অসম্ভব সুন্দর একটি দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন, যা হচ্ছে ব্রহ্মকুন্ডে হরিদ্বারের সন্ধ্যা আরতি দেওয়ার দৃশ্য। যা একটি ঐশ্বরিক দৃশ্য।
আরও একটি দর্শনীয় ঘাট দেখতে পাবেন, হর কি পাউরি ঘাট। তথ্যসূত্রে জানা যায়, রাজা বিক্রমাদিত্য তার ভাইকে স্মরণ করে এই ঘাটটি নির্মাণ করেছিলেন। যারা প্রকৃতিপ্রেমী তাদের জন্যই স্থানটা খুবই জনপ্রিয় গন্তব্য। এখানে আসলে এ বন্যপ্রাণীগুলো আপনি দেখতে পাবেন চিতা বাঘ, হাতি, ভাল্লুক, বাঘ এবং ছোট ছোট আরো কিছু প্রাণী। রাজাজি জাতীয় উদ্যানের অংশ, চিল্লা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, প্রকৃতি ও অ্যাডভেঞ্চার প্রেমীদের জন্য স্থানটি বিখ্যাত। এখানে না আসলে কখনোই এই জায়গাটার মর্ম বুঝতে পারবেন না। ভারতের এই উত্তরখন্ড প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্যময় একটি জায়গা।
২৩ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী এবং ৩১৬ টি অ্যাভিফানা নমুনা উপভোগ করতে আকৃষ্ট করে পর্যটকদের। সত্যিই এই উত্তরাখন্ডের একেকটা জায়গা যেন একেকটা আলাদা আলাদা পৃথিবী স্বরূপ। তবে হ্যাঁ অবশ্যই জানা প্রয়োজন, বর্ষাকালে পার্কটি বন্ধ থাকে।
লোকেশন | ভ্রমণ গাইড / কিভাবে যাবেন |
---|---|
হরিদ্বারকে উত্তরখণ্ডের গেট বলা হয়। উত্তরখণ্ডের মধ্যেই হরিদ্বারের অবস্থান। | উত্তরাখণ্ড শহর থেকে বাসে করে হরিদ্বারে পৌঁছাতে পারবেন। অথবা শেয়ার গাড়ি করেও যেতে পারেন। অথবা রেল পথে আপনি দেরাদুন থেকে হরিদ্বারে পৌঁছাতে পারবেন, রেলপথের সংযোগ খুবই ভালো। |
১৫. আলমোড়া
১৯৬০ সালের চাঁদ রাজাদের গ্রীষ্ম রাজধানী হিসেবে কুমার অঞ্চলের রাজধানী আলমোড়া স্থাপন করা হয়। তবে দুঃখের বিষয় এটা বিদেশিদের ভাগ করে নেয়, যেমন যারা কেশর দেবী মন্দিরের কাছে মাথা নত করেন। যেখানে স্বামী বিবেকানন্দ ধ্যান করেন। মোমনের বিসারার রিট্রাটাসের কাছাকাছি আলমোড়া শহরের বাইরে প্রাইভেট কফি লোকদের কিছুটা সময় কাটানো যায়। বেনিসার বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, কুশানী, রানীক্ষেত যোগেশ্বর মন্দির সমিতির সময় নেয়ে করে থাকে। প্রাচীন এই মন্দিরটির হরেক রকমের প্রশংসায় উৎফুল্ল হয়ে উঠবেন।
কাসার রেইনবো রিসোর্ট, এর চারপাশটা সবুজে ঘেরা। কি যেন একটা নিস্তব্ধ ব্যাপার, মন্দিরগুলো যেন ভক্তদের উপর থেকে অশুভ ছায়াকে ত্যাগ করে, শুভর দিকে ধাবিত করছে। যারাই মন্দিরে মানত করে আসছে, তারাই যেন কোন একটা আশ্বাস পেয়ে ঘরে ফিরছে।
লোকেশন | ভ্রমণ গাইড / কিভাবে যাবেন |
---|---|
দিল্লির উত্তর পূর্বাঞ্চলের প্রায় চার ঘন্টার রাস্তার দূরত্বে অবস্থিত এই আলমোড়া। | দিল্লি থেকে আপনি বাসে বা অন্য কোন গাড়ি করে পৌঁছে যেতে পারবেন আলমোড়াতে। |
১৬. চোপতা
উত্তরাখণ্ডের গধওয়াল অঞ্চলের কেদারনাথের ও বদ্রীনাথের মধ্যে চোপড়া ভাস্কর্যের চুপ্টা উপত্যকায় কেদারনাথ বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের প্রবেশে অবস্থিত চোপতা। এখানে থ্রিলোফিলিয়া হরিদ্বার থেকে চার দিনের নির্দেশিত ভ্রমণের প্রস্তাব রাখে।প্রথমত এটার অন্যরকম সৌন্দর্য ভ্রমণকারীদের আকর্ষণীয় করে তুলে। যারা এরকমই একটা চোপড়া ভাস্কর্যের মধ্যে এসে দেখেও পর্যবেক্ষণ করে উপভোগ করতে চান, তাদের জন্য স্বাগতম জানায় চোপতা। জুন মাস থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্তই মন্দিরটি খোলা থাকে।
চোপা টংনাথ মন্দিরের এবং চন্দ্রশিলা মন্দিরের যাত্রা শুরু। এখনও নাটুকে, মধ্যপন্থী ট্রেক এগুলা এখানে একদিনের মধ্যে সম্পন্ন করা যাবে। বিশ্বের সর্বোচ্চ মন্দিরটি হচ্ছে শিব মন্দির। মন্দিরের ভিতরে একটা অদ্ভুত রকমের শীতল হাওয়া গায়ে মাখে। এ যেন এক আলাদা প্রশান্তির সৃষ্টি করে।
লোকেশন | ভ্রমণ গাইড / কিভাবে যাবেন |
---|---|
দিল্লির উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাশিচেশের মাধ্যমে প্রায় ১০ ঘন্টার রাস্তা পেরিয়ে চোপতা অবস্থিত। | উত্তরাখন্ড থেকে বাসে বা অটো রিক্সা করে চোপতার ওই চোঁপড়া ভাস্কর্যটিতে পৌঁছে যেতে পারবেন। |
১৭. কালাপ গ্রাম আনন্দ শংকর
উত্তরাখণ্ডের উপর গদওয়াল অঞ্চলের সমুদ্রপৃষ্ঠের ৭,৫০০ ফুটঁ উপরে। বর্তমানে এখন পর্যটক মানচিত্র সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা হয়েছে। ক্ষুদ্র দূরবর্তী গ্রাম কালাপ। অসম্ভব সুন্দর এই গ্রামের লোকজন খুবই সহজ সরল। ২০১৩ সালে একটি দায়িত্বশীল পর্যটন প্রকল্প প্রতিষ্ঠিত হয়েছে কালাপ। এবং ভ্রকিকাঠি পালক দ্বারা ট্র্যাক বরাবর ট্রেকিং যান খুবই অসামান্য একটি স্থান। এরকম ছোট ছোট অনেক অসামান্য স্থান রয়েছে উত্তরাখন্ডে।
উত্তরাখণ্ডের আনাচে-কানাছে বিস্তৃত পরিবেশে অপরুপ সৌন্দর্যগুলো একসাথে ভ্রমণ করতে পারবেন। মানে একের ভিতর সব হয়ে যাবে। শহরের হাজারো ব্যস্ততার কোলাহল থেকে, গ্রামের শান্তিপ্রিয় পরিবেশটাই আরামদায়ক। উত্তরাখণ্ডের দেরাদুনের এই ছোট কালাপ গ্রামে আসতে ভুলবেন না। দেখতে ছোট হলেও এর সৌন্দর্য,শান্তিময় স্থান, শান্ত পরিবেশ, অনেক বড় বড় শহর কেও হার মানাবে।
লোকেশন | ভ্রমণ গাইড / কিভাবে যাবেন |
---|---|
উত্তরাখন্ডের দেরাদুনের প্রায় ৫ ঘণ্টার পথ উত্তর দিকে কালাপ গ্রামের আনন্দ শংকর।
|
উত্তরাখণ্ড থেকে প্রায় ২ ঘণ্টার মতো সময় লাগবে দেরাদুনে যেতে। সেখান থেকে ট্যাক্সি বা সিএনজি করে কালাপ গ্রামে পৌঁছে যেতে পারবেন। |
১৮. মানশা দেবীর মন্দির
হরিদ্বারের একটি পাহাড়ের উপর অবস্থিত, মানসা দেবীর মন্দির। ভারতের খুবই জনপ্রিয় ৭টি স্থান তীর্থযাত্রীদের সাথে খুবই জনপ্রিয়তা লাভ করছে। মন্দিরটি প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খোলা থাকে। তীর্থযাত্রার ঋতুর এপ্রিল থেকে জুন মাসে এই সময় মন্দির খুবই জরুরি হয়ে পড়ে। মন্দিরটি বাণিজ্যিক করন করা হয়। তীর্থ যাত্রীদের অনেক অনৈতিক পদ্ধতিতে আচরণ করে। হরিদ্বারের উপর চলাচলের দৃশ্যগুলো প্যানারামিক মতামত প্রদান করে থাকে।
এর কাছেই আরেকটি সুন্দর আকর্ষণীয় মন্দির আছে, চন্দী দেবী মন্দির। যা মানশা দেবীর মন্দির থেকে বাসে করে পৌঁছাতে পারবেন চন্দী দেবীর মন্দিরে। একেকটা মন্দির যেন একেকটা ফুলের বাগানে আকর্ষণময়ী মন্দির গুলো। মন্দিরের আশপাশটা খুবই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। মন্দিরের তত্ত্বাবধানে যারা কাজ করছেন, তাদের ব্যবহারটাও খুবই সুন্দর সাবলীল। আপনি হরিদ্বারে আসলে অবশ্যই মানশা দেবীর মন্দির না দেখে যাবেন না। মানক করে এসে একটু প্রসাদ নিয়ে যাবেন, দেখবেন অনেকটা শান্তির ফিলিংস আসবে।
লোকেশন | ভ্রমণ গাইড / কিভাবে যাবেন |
---|---|
উত্তরাখণ্ড থেকে প্রায় দুই কিলোমিটারের মতো দূরে অবস্থিত হরিদ্বার। হরিদ্বারেই একটি পাহাড়ের উপর অবস্থিত মানশা দেবীর মন্দির।
|
উত্তরখণ্ড থেকে বাসে বা কারে করে হরিদ্বারে পৌঁছে যাবেন। হরিদ্বার থেকে টেক্সি করে মানশা দেবীর মন্দিরের পাশে নামতে হবে, সেখান থেকে পায়ে হেঁটে পাহাড়ের উপর দেবীর মন্দিরে পৌঁছাতে হবে। |
১৯. বারোত
উত্তর ভারতের হিমাচল প্রদেশ রাজ্যের মান্ডি জেলার শান্ত উপত্যকায় অবস্থিত খুবই সৌন্দর্য নিয়ে গড়া একটি গ্রাম বারোত। এই গ্রামটিকে নতুন ভাবে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত করা হয়েছে। খুব একটা বড় গ্রাম নয় কিন্তু ছোট হলেও খুবই শান্তিপ্রিয় মনোরমা একটি জায়গা।প্রাকৃতিক দৃশ্যগুলো আকর্ষণীয় করে তুলে পর্যটকদের। গ্রামের ছোট ছোট মাটির ঘর, সাথে গাভী বাছুর, মাঠে ছড়ানো ছাগল,ভেড়া। রাস্তার ধারে সুপারি গাছ,নারিকেল গাছের সারি সারি। পুকুরে ছল ছল শব্দে মাছ ঘুরে বেড়াচ্ছে। ভাবতে পারছেন এই দৃশ্যগুলা কতোটা অপরুপ সৌন্দর্য প্রকাশ করতে পারে।
সেজন্যই বিশ্বের পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে এই বারোত গ্রামটি। গ্রামের মেঠো পথ দিয়ে ধান ক্ষেতের মধ্য দিয়ে হাঁটা কতটা স্মৃতিময় সময়। সত্যি এসব ভাবলেই মন চায় এখনি ছুটে চলে যাই সেই অপরূপ বারোত গ্রামে। উপভোগ করে আসে গ্রামের সেই অমায়িক দৃশ্য গুলো। বারোতের আকর্ষণীয় স্থান ছাড়াও তার আশেপাশে আরও বিভিন্ন স্থান রয়েছে যা সত্যিই অসাধারণ ভ্রমণের উপযোগী। যা বারোতে এসে, এক জার্নিতে এসে অনেকটা দর্শনীয় স্থান পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন। হেমকুন্ড সাহেবে ট্রাকিং, ঋষিকেশে রাফটিং, পর্বত আহরণ, হাই কিং, পক্ষী দর্শন, বন্যপ্রাণী সাফারি, প্যারাগ্লাইডিং, আউলি ডালে স্কিইং,গঙ্গোত্রী হিম্বাহ ট্রেকিং।
লোকেশন | ভ্রমণ গাইড / কিভাবে যাবেন |
---|---|
উত্তরখণ্ডের দেরাদুনের সিমলা থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এবং চণ্ডিগড় থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই বারোত গ্রামটি। | দেরাদুন থেকে বাসে করে আপনি চন্ডিগড় পৌঁছে যেতে পারবেন। সেখান থেকে আপনি লোকাল বাসে বা টেক্সি করে বারোত গ্রামে পৌঁছে যাবেন।
|
২০. মান্ডি
মান্ডিশহর যদি ও আকারে কিছুটা ছোট শহর। কিন্তু সৌন্দর্য নামক সম্পদ এই জায়গায় সংরক্ষিত রয়েছে। নদীতে বাঁধ দিয়ে পানি বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থা রয়েছে এখানে। প্রচুর পানি শব্দ হয় সাথে বিয়াস এখানে ভয়ংকর। এখানে বিয়াস নদীর কাছে যাওয়া,ছবি তোলা নিষিদ্ধ। বাজে কিছু দুর্ঘটনার ইতিহাস রয়েছে এখানে। মান্ডি থেকে কিছু দূরে অবস্থিত রয়েছে পান্ডোহ্ ড্যাম। আর পাশ দিয়ে রয়েছে আবার বিশাল বড় বড় আকারের গাছসহ ঘন জঙ্গল। জঙ্গলে হাঁটতে হাঁটতে অনেক প্রজাতির পশু পাখির সাথে দেখা হয়ে যাবে। হরেক রকমের পাখির ডাক আপনাকে মুগ্ধ করে দিবে।
এরকম একটা পরিবেশে ভ্রমণ করতে গেলে কয়েকদিনের জন্য, পরিদর্শনই শেষ হবে না এতটাই সৌন্দর্যে ঘেরা রয়েছে জায়গাটি। অনেক সময় অনেক বড় শহরেও এরকম শান্তি খুঁজে পাবেন না, যা এই ছোট শহরের মান্ডিতে খুঁজে পাবেন।
লোকেশন | ভ্রমণ গাইড / কিভাবে যাবেন |
---|---|
দেরাদুনের সুকেট নদীর সঙ্গমস্থলেই গড়ে উঠেছে হিমাচল প্রদেশের মান্ডি নামক শহর। | দেরাদুন থেকে বাস পরিবহনের মাধ্যমে মান্ডি শহরে প্রবেশ করতে পারবেন। অথবা সিএনজি রিজার্ভ করেও আসতে পারেন। |
২১. বিনসার
সপ্তম অষ্টম শতাব্দীতে প্রাচীনকালে চাঁদ রাজাদের সময়কালে গ্রীষ্মকালিন রাজধানী ছিল বিনসার। বিনসার পাহাড়ের উচ্চতা প্রায় ২৪১২ মিটার। কূমায়ুন হিমালয়ের একটি শান্তি প্রিয় নয়নাভিরাম স্থান বিনসার। এবং বিনসারের এই পাহাড়ের জন্য পর্যটকদের কাছে এটা এতো আকর্ষণীয় স্থান। বিনসারের সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান হচ্ছে পাহাড়। এখানে বেশিরভাগ পর্যটকরা আসেন পাহাড়ে ভ্রমণ করার জন্য। আঁকাবাকা উঁচুনিচু রাস্তা, সাথে ছোট বড় চূড়া, হাঁটতে হাঁটতে মাঝে মধ্যে বন্য শিয়াল,হাতি বা সাপের সাথেও দেখা হয়ে যায়। এরকম একটা ভ্রমণ সারাজীবন স্মৃতিময় হয়ে থাকবে।
হাড়ের ভ্রমণ, সত্যি অন্যরকম একটা অভিজ্ঞতা। যারা পাহাড়ে ভ্রমণ করেন তারা আসলেই সাহসি, পাহাড়ের ঘন জঙ্গল, নিস্তব্ধতা, ঝিরি ঝিরি আওয়াজ, হাঁটার সাথে সাথে শুকনো পাতা ভাঙ্গার মটমট শব্দ, কিছুটা অন্ধকার, এসব ভাবতেই যেন গা শিউরে উঠে। এই সব উপেক্ষা করেই কিছু ভ্রমন প্রিয় মানুষ পাহাড়ে ভ্রমন করতে আসেন।
লোকেশন | ভ্রমণ গাইড / কিভাবে যাবেন |
---|---|
দেরাদুনের আলমোড়া থেকে ২৬ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত রয়েছে বিনসার। | আলমোড়াতে আসলে সেখান থেকে সিএনজি বা ট্যাক্সি করে বিনসারে পৌঁছে যেতে পারবেন। |
২২. ঝরিপানি জলপ্রপাত
সুদূর এই ঝরিপানির জলপ্রপাতটি দেখার জন্য, হাজার হাজার মাইল দূর থেকেও পর্যটকরা ছুটে আসেন এখানে। এই ঝর্ণাটিতে কিছুটা সময় কাটানোর জন্য, কিছু স্মৃতিময় ছবি ফ্রেমবন্দি করার জন্য। আসলেই প্রকৃতির সৌন্দর্য এই ঝরিপানির জলপ্রপাতের ঝরনা দিয়ে বয়ে চলছে। সৃষ্টিকর্তার কি অপরূপ সৃষ্টি, পাহাড়ের গায়ে বয়ে চলছে নদী, শূন্য আকাশের উপর উড়ে বেড়াচ্ছে পাখি, দুই চার চাকার উপর নির্ভর করে, মানুষ নিয়ে চলছে গাড়ি। মাটিতে বীজ ফেলে পেয়ে যাচ্ছি ফসল। সত্যি সৃষ্টিকর্তার এই সৃষ্টিগুলোর শুকরিয়া আদায় করে শেষ করা যাবে না।
লোকেশন | ভ্রমণ গাইড / কিভাবে যাবেন |
---|---|
মুসৌরির রাস্তা থেকে প্রায় ৮.৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ঝরিপানির জলপ্রপাত। | বাসে বা গাড়ি করে ৭ কিলোমিটার ভ্রমণ করে ঝরি পানিতে আসবেন, সেখান মোটর বাইকে বা হেঁটে ঝরনাতে যেতে হবে। সেখান থেকে ঝর্ণা ১.৫ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত। |
২৩. ভীমতাল
ভীমতালের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হচ্ছে ভীমতাল হৃদ। যার কেন্দ্রস্থলে আকর্ষণীয় একটি দ্বীপ রয়েছে। ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের নৈনিতাল জেলার একটি শহর ভীমতাল। ভীমতালের চেয়ারম্যান দেবেন্দ্র চুনোতিয়া। এর উচ্চতা প্রায় সমুদ্র তল থেকে ১৩৭০ মিটার।দ্বীপের কাছে ছোট একটা বিচের মতো রয়েছে। বিঁচে ছাতার নিচে বসে, হাতে ডাব নিয়ে টানতে টানতে, সাথে করে বাতাসে মুখরিত পরিবেশ, আহা কি অপরূপ দৃশ্য। দ্বীপ টা খুব একটা বড় না হলেও এর সৌন্দর্য অনেক বড়, অনেক পর্যটকদের মন জয় করেছে।
লোকেশন | ভ্রমণ গাইড / কিভাবে যাবেন |
---|---|
নৈনিতাল থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই ভীমতাল। | নৈনিতাল থেকে আপনি বাসে করে ভীমতালে আসতে পারবেন, সেখান থেকে মোটরবাইকে অথবা হেঁটে আকর্ষণীয় দ্বীপে যেতে হবে। |
২৪. গোমুখ
গোমুখকে একটি গরুর মুখের সদৃশ কল্পনা করা হয়ে থাকে, এই কারণে জায়গাটির নাম গোমুখ দেওয়া হয়েছে। গঙ্গা নদীর একটি প্রধান উৎস হচ্ছে। গঙ্গোত্রী থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত গোমুখ। গোমুখ শিবলিং পর্বত ঘাঁটির নিকটে অবস্থিত। এখানে হিমবাহ খুব দ্রুত গতিতে অপসৃত হচ্ছে। গঙ্গা নদীর প্রধান উপনদী হচ্ছে ভাগীরথী। যা গোমুখ থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে। তার সহজলভ্য প্রবেশযোগ্যতার কারণে পর্যটকদের একটি মনোরম ভ্রমণের প্রতিশ্রুতি প্রদান করে।
গঙ্গা নদীতে হাজার হাজার নৌকা ভাসমান, ভাসমান নৌকার মধ্যে হাজার মানুষ তার স্বপ্ন নিয়ে ভেসে যাচ্ছে যার যার গন্তব্যস্থলে। ছোট ছোট নৌকায় আবার মাঝিরা ভাটিয়ালি বাওয়ালি গানও ধরেন, নদীতে এটাই বেশি উপভোগ করার মতো দৃশ্য।
লোকেশন | ভ্রমণ গাইড / কিভাবে যাবেন |
---|---|
গঙ্গোত্রী থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত গোমুখ। | গঙ্গোত্রী থেকে বাস পরিবহনে পৌঁছে দিতে পারবেন গোমুখে। |
২৫. দেওরিয়া তাল
দেওরিয়া তাল হ্রদটি ২,৪৩৮ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত রয়েছে। দর্শনীয় স্থান সারি গ্রাম থেকে দুই কিলোমিটার ভ্রমন করে দর্শনার্থীরা দেওরিয়া তালে পৌঁছাতে পারেন। সৌন্দর্যের স্থানটি সারি গ্রামের কাছাকাছি অবস্থিত এবং চোপতা উখিমঠ রাস্তা বরাবর এই গ্রামটি হলো শেষ বাস স্টপেজ। উত্তরাখণ্ড রাজ্যের অন্যতম একটি আকর্ষণীয় কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে এই দেওরিয়া তাল জায়গাটি। হৃদের জলে তুষারবৃত্ত শৃঙ্গের এক চমৎকার প্রতিফলন পরিলক্ষিত হয়, যা এখানে আসা সব পর্যটককে তাক লাগিয়ে দেবার মতো,এতটাই আশ্চর্যজনক। খুবই অপূর্ব দৃশ্য।
লোকেশন | ভ্রমণ গাইড / কিভাবে যাবেন |
---|---|
সারি গ্রাম থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত দেওরিয়া তাল। | দেরাদুনা থেকে বাসে করে আসতে পারবেন সারি গ্রামের শহরে, সেখান থেকে অটোতে বা টেক্সি করে সারি গ্রামে, এখান থেকে হেঁটে অথবা মোটরবাইকে করে আসতে পারবেন দেওরিয়া তালে। |
সর্বশেষে, উত্তরখণ্ডের প্রতিটি জায়গা খুবই আকর্ষণময়ী। উত্তরখণ্ডের সৌন্দর্য আপনার দ্বারা যেন সামান্য পরিমাণ নষ্ট না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন। অপচনশীল দ্রব্য যেখানে সেখানে না ফেলে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলুন। পৃথিবীটা আমাদের সুতরাং এর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বও আমাদের।
যদি কোন তথ্য ভুল কিংবা স্থান সম্পর্কে আপনার কোন মতামত থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানান, আমরা উত্তর দিতে সর্বদাই প্রস্তুত।
সুস্থ থাকুন, নিরাপদে ভ্রমন করুন।
ধন্যবাদ।
আরো পড়ুন –