Dreamy Media BD

কাশ্মীর ভ্রমণের দর্শনীয় স্থান (Kashmir)

কাশ্মীর ভ্রমণের দর্শনীয় স্থান

কাশ্মীর (Kashmir), যার নাম শুনলেই মনে আনন্দের ঢেউ জাগে, প্রশান্তির সুভাস ছড়ায়, হৃদয়ে হিল্লোল তুলে মুগ্ধ করা আবেশে।  সৃষ্টিকর্তা কি সুন্দর করে সাজিয়েছেন এই প্রকৃতি।  কি সুন্দর, নয়ন জুড়ানো ভুবন ভোলানো দৃশ্য। এই সুন্দরের প্রতীক লীলাভূমির ভূস্বর্গ বলা হয় কাশ্মীরকে। 

কাশ্মীরটি প্রধানত অবস্থিত রয়েছে হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলে।  কাশ্মীর যা বিশ্বের মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয়, চোখ জুড়ানো মনোরমা একটি স্থান।  যার এই অপার সৌন্দর্যের লীলাভূমি উপভোগ করতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিবছর লাখো লাখো দর্শনার্থী ভীড় জমান এই কাশ্মীরে। 

আপনি যদি প্রকৃতির অপরাহ্ন সৌন্দর্য উপভোগ করতে চান, প্রকৃতির শান্তিপ্রিয় স্থানে নিজেকে বিলিয়ে দিতে চান তাহলে কাশ্মীর আপনার জন্য আদর্শ একটি স্থান। ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যে অবস্থিত এই সুন্দর কাশ্মীর স্থানটি।  তবে কাশ্মীর ভালোভাবে ভ্রমণের জন্য একটা উপযুক্ত সময় রয়েছে,শীতকাল হিসেবে ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসে কাশ্মীরে চারিদিকে শুধু বরফ আর বরফ, সাথে রয়েছে স্নোফল।

বাংলাদেশ থেকে কাশ্মীরকিভাবে যাবেন?

 বাংলাদেশ থেকে বিমানে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রথমে ঢাকা থেকে দিল্লি যেতে হবে, সেখান থেকে শ্রীনগর, গাড়ি করে শ্রীনগর থেকে পৌঁছে যাবেন কাশ্মীর। এবং ট্রেনে বা বাসেও যাতায়াত করতে পারেন। ঢাকা থেকে কলকাতা বাসে গেলে জন প্রতি ভাড়া পড়বে ১৮০০ থেকে ২০০০ টাকা। গ্রীনলাইন, শ্যামলী, সোহাগ পরিবহনে কলকাতা থেকে জম্বু গিয়ে ওখান থেকে শ্রীনগরে পৌঁছে গাড়ি করে কাশ্মীর যেতে হবে।

জীবনে একবার হলেও সবার ইচ্ছা থাকে কাশ্মীর ঘুরে আসার। কাশ্মীর গিয়ে আপনি এই কয়েকটা দর্শনীয় স্থান উপভোগ করবেন না! সেটা তো  হতেই পারে না। তো আসুন এই কয়েকটা দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে জেনে আসি, কাশ্মীরের  প্রথমেই যে স্থানটি মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বরফের রাজ্য, তা হচ্ছে গুলমার্গ।

গুলমার্গ
গুলমার্গ

১.গুলমার্গ (Gulmarg)

সবুজ ঘাসে গুলমার্গ স্থানটি  সারা বছর বরফে  ঢাকা থাকে, বরফের জন্য বিখ্যাত স্থানটি । শ্রীনগর থেকে ৫২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত রয়েছে।  যেতে আসতে সারাদিন লেগে যায় মানে সকাল ৮ থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত সময় লেগে যাবে। ক্যাবল কার ছাড়াও আপনি প্যারাগ্লাইডিং উপভোগ করতে পারবেন গুলমার্গে। এখানে যা দেখতে পারবেন গলফ কোর্স, বাবা ঋষির মাজার, গন্ডোলা, সেন্ট ম্যারি চার্চ, এলপাথর লেক,আফারওয়াত পিক সহ আরো আকর্ষণীয় কিছু স্থান। এই রহস্যময়ী প্রকৃতি নানা জায়গায় নানা বিস্ময়ের ডালি সাজিয়ে রেখেছে। 

কিছুদূর যেতেই দেখতে পাবেন ওয়াটার লিলি গার্ডেন। কী স্পধির্ত সৌন্দর্য ডাল লেকের পদ্মের, কেউ পাপড়ি মেলছে আবার কেউবা মেলার অপেক্ষায় প্রহর গুনছে। চারদিকে অপূর্ব শোভা ছড়াচ্ছে। এই সৌন্দর্যের দৃশ্য যে কাউকেই মুগ্ধ করবে। তারপরেই চোখে পড়বে ভাসমান সবজি বাগান।গুলমার্গ যাওয়ার রাস্তায় আবার দেখতে পারবেন সারি সারি আপেল বাগান। গলফ কোর্স, রাজা হরি সিং এর পরিত্যক্ত বাংলো, ট্রাউট প্রজনন কেন্দ্র, মিশন কাশ্মীর এর বুমরো গানের শুটিং এই সুন্দর সুন্দর স্থানগুলো পরিদর্শন করতে করতে পৌঁছে যাবেন গুলমার্গের গন্ডোলার কাছে। সবদিকেই একটা জিনিসই আকর্ষণময়ী ঘন সবুজ উপত্যকা। 

লোকেশন ভ্রমণ গাইড/কিভাবে যাবেন 
শ্রীনগর শহর থেকে ৫২ কিলোমিটার দূরে আজব পাহাড়ের চূড়ায় কাশ্মীরের গুলমার্গ অবস্থিত।  শ্রীনগর থেকে বাসে করে আপনি কাশ্মীর গুলমার্গ এর উদ্দেশ্যে রওনা হবেন। শ্রীনগর শহর থেকে গুলমার্গ যেতে আপনার গাড়ি ভাড়া লাগবে ২০০০ রুপি।
শ্রীনগর 
শ্রীনগর

২.শ্রীনগর (Srinagar)

কাশ্মীরের শীর্ষ  পর্যটন স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে শ্রীনগর।  কাশ্মীরের সবচেয়ে জনবহুল শহর হচ্ছে শ্রীনগর। এখানকার পরিবেশ  খুব সহজেই আপনাকে তুষারপাতের সঙ্গে সাক্ষাৎ করিয়ে দিতে পারে।  ঠিক তেমনি ভাবে আবার, বাতাসের সামান্য আঁচড় আপনাকে পরিতৃপ্ত করতে পারে। 

এখানে পর্যবেক্ষণ করার মতো যে দর্শনীয় স্থান রয়েছে, তা আপনার মধ্যে এক অন্যরকম অভিজ্ঞতার সৃষ্টি করবে। অতুলনীয়, অসাধারণ গন্তব্যস্থল হিসেবে শ্রীনগরকে আপনার বিবেচনা রাখতে পারেন, তার জন্য যথেষ্ট কারণ রয়েছে। 

পরীমহল, এটি একটি সাত তলা বিশিষ্ট উদ্যান। ১৬০০ শতকের মাঝামাঝি সময়ে সম্রাট শাহজাহান তার বড় রাজপুত্রের দারা গ্রন্থাগার ও আবাসস্থল নির্মিত করেছিলেন। ইসলামী স্থাপত্য ও শিল্পের উপর নির্মিত এই পরী মহল।

ডাল লেক,হাউসবোট ও শিকারার জন্য অত্যন্ত জনপ্রিয় এই ডাল লেক। ডাল লেকের আবার  অনেক সুখ্যাতি রয়েছে, পদ্মফুল ও নির্মলতার জন্য। ক্যানোয়িং থেকে হাউসবোটে থাকার অভিজ্ঞতা  এবং কায়াকিং থেকে সাঁতার সহ ডাল লেকটি গ্রীষ্মকালে প্রচুর বিনোদনের সুযোগ প্রদান করে। 

চশমা শাহী,আলী মর্দান খান মিষ্টি জলের স্প্রিং এর উপর এই উদ্যানটি তৈরি করেছিলেন ১৬৩২ সালে। মুঘল বাদশা উনার বড় রাজপুত্র দ্বারা শিখকে উপহার দিয়েছিলেন। চশমা শাহী উদ্যানটি তিনভাগে বিভক্ত, উপরের যে স্থান যেখান থেকে, জলধারা নালা বাহির হচ্ছে সেখানে দুই তলা কাশ্মীরি হাট রয়েছে। 

দ্বিতীয় স্থানে জলপ্রপাত হয়ে নিচে নামছে। তৃতীয় স্থানে পাঁচটি ঝরনা বর্গাকারে রয়েছে। মূলত এখান থেকেই প্রবেশদ্বার। মুঘল গার্ডেনে ফুল ফোটে থাকে মে থেকে জুন মাসের মধ্যে,সেই দৃশ্যটা জাস্ট অসাধারণ।

জামা মসজিদ, শ্রীনগরের মসজিদগুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীনতম মসজিদ হচ্ছে জামা মসজিদ। ইন্দো-শারাসেনিক স্থাপত্যের দারুণ উজ্জ্বল এক দৃষ্টান্ত। ৩৭০ টি স্তম্ভ, ৪টি কুন্ডলী, প্রার্থনা সভার সমন্বয়ে গঠিত এই মসজিদটি। মসজিদটি তার ইতিহাসের ধারায় বহুবার বিপর্যস্ত ও পুনরুদ্ধার হয়েছে। 

 হজরৎবল মসজিদ, মসজিদটি সাদা মার্বেল দিয়ে আবৃত, ডান লেকের তীরে অবস্থিত রয়েছে। নবী মুহাম্মদের চুলের একটি সূত্রে জানা যায়, এই পবিত্র আধারটি একটি ধ্বংসাবশেষকে ধারণ করে আছে। এ রকম আরো অনেক দর্শনীয় জায়গা রয়েছে যা আপনি শ্রীনগরে পৌঁছালেই জানতে পারবেন। 

বছরের যে কোন সময়ই, মনোরম আবহাওয়ার সাথে কোন শ্রীনগরী পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন। তবে এপ্রিল থেকে অক্টোবর মাসে সমগ্র অঞ্চলে আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকে এবং সুন্দর ফুলের সুভাসে বিকশিত হয়ে উঠে চারিদিক। এই সময়টিতে আসলে অনেক ভালো ভাবে উপভোগ করতে পারবেন শ্রীনগর। শ্রীনগরই হচ্ছে প্রথম অবস্থান আপনি যদি আকাশপথে বিমানে আসেন, তবে এখানে অবতরণ করবেন। শ্রীনগর বিমানবন্দর থেকে শহরের কেন্দ্রে যেকোনো ধরনের ট্যাক্সি ভাড়া করে নিতে পারেন, এখান থেকে আশেপাশের বাকি পর্যটন স্থানগুলোতে  আপনি খুব সহজেই যাতায়াত করতে পারবেন। 

লোকেশন ভ্রমণ গাইড/কিভাবে যাবেন 
জম্মু ও কাশ্মীরের গ্রীষ্মকালীন রাজধানী হচ্ছে শ্রীনগর,যা পশ্চিম কাশ্মীরের ঝিলম নদীর তীরে অবস্থিত। 

 

কলকাতা থেকে জম্মু, সেখান থেকে গাড়ি করে শ্রীনগর । কলকাতা থেকে জম্মু যাওয়ার জন্য দুটি ট্রেন আছে, হিমগিরি ও জম্মু তাওয়াই। জম্মু থেকে শ্রীনগর যেতে সময় লাগবে ৮ থেকে ১০ ঘন্টা।

৩.পেহেলগাম

পেহেলগাম  জম্মু-কাশ্মীর প্রদেশের অনন্তনাগ জেলার অন্তর্ভুক্ত।  স্থানীয়রা একে পেহেলগাও বা ইসলামাবাদ নামে ডাকে। শ্রীনগর জম্মু হাইওয়ে ধরে অনন্তনাগ হয়ে পেহেলগাম পৌঁছাবেন। ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত সবকিছু বরফে ঢাকা পড়ে যায়, তার ফলে পর্যটক আগমন হ্রাস পায়। অর্থকারী ফসলের মধ্যে কাশ্মীরের অন্যতম ফসল হচ্ছে আপেল এবং জাফরান।  পেহেলগাম যাওয়ার পথে রাস্তার দুই ধারে সারিবদ্ধ গাছ গুলো চোখো পড়বে। পেহেলগামে প্রচুর পরিমাণে জাফরান চাষ হয়। জাফরান আমাদের জন্য অনেক উপকারী যেমন পাকস্থলীর নানাবিধ রোগের উপশম করে।

পেহেলগামের  দর্শনীয় স্থানগুলো উপভোগ করতে পারবেন। ওয়াটারফল, কানিমার্গ, কাশ্মীর ভ্যালি ভিউপয়েন্ট, ধাবিয়ান, মিনি সুইজারল্যান্ড, চন্দনওয়াড়ি, পেহেলগাম ভিউপয়েন্ট, মামলেশ্বর মন্দির, তুলিয়ান ভ্যালী, কোলাহাই হিমবাহ, বেতাব ভ্যালি,আরু ভ্যালি, লিডার নদী ও আরো কিছু জায়গা রয়েছে।পেহেলগাম ভ্রমণের জন্য আপনার উপযুক্ত সময় হচ্ছে মার্চ থেকে নভেম্বর মাস।  আবার তার চেয়েও বেশি আকর্ষণময়ী হয়ে ওঠে এপ্রিল থেকে মে মাসে। স্নোফল দেখার যদি আপনার খুবই ইচ্ছে জাগে,তবে ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস আপনার জন্য ভালো হবে কারন এই মাস গুলোতেই স্নোফল বেশি হয়। 

লোকেশন ভ্রমণ গাইড/কিভাবে যাবেন 
কাশ্মীরের পেহেলগাম জম্মু-কাশ্মীর প্রদেশের অনন্তনাগ জেলার অন্তর্গত রয়েছে। শ্রীনগর থেকে কাশ্মীরের পেহেলগামের দূরত্ব ৯৬ কিলোমিটার। 

 

শ্রীনগর থেকে গাড়ি রিজার্ভ করে কাশ্মীরের  পেহেলগামে যেতে পারবেন,দিনে দিনে আবার শ্রীনগরে ঘুরে আসতে পারবেন। আবার কলকাতা থেকে জম্মু নেমে শ্রীনগর না গিয়ে  সরাসরি পেহেলগামে যেতে পারবেন। সেক্ষেত্রে জম্মু থেকে রিজার্ভ গাড়ি ভাড়া করবেন,ভাড়া পড়বে ৭০০০ থেকে ৮০০০ রুপি।
আরু ভ্যালি
আরু ভ্যালি

৪.আরু ভ্যালি (Aru valley)

কাশ্মীরের পেহেলগাম থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে একটি ছোট্ট গ্রাম আরু ভ্যালি। গ্রামটি অরু নদীর বাম তীরে অবস্থিত রয়েছে,যা লিডার নদীর শাখা।  এটার আকর্ষণীয় একটা দিক হচ্ছে শীতকালে যখন এখানে তুষারপাত হয় তখন স্কেটিং করার জন্য প্রচুর পর্যটকের সমাগম হয়।  আবার গরম কালে প্রকৃতির সবুজ রূপ উপভোগ করা যায়। এখানে সব কিছু ঘুরে ঘুরে পর্যবেক্ষণ বা উপভোগ করার জন্য ঘোড়ায় চড়ে চড়ে দেখতে পারেন। বছরের যেকোন সময়ই আপনি এখানে ভ্রমণে আসতে পারেন।  আরু ভ্যালিতে ডিসেম্বর থেকে মার্চের মাঝামাঝি সময়ে প্রচন্ড তুষারপাত হয়।

বর্ষার সময় এলে কাশ্মীরের সৌন্দর্য আরও দ্বিগুন হয়ে যায়। এই সময়টা সিজন অফ থাকায়, জিনিসপত্রের দাম অনেকটা কম থাকে।  চারিদিকে শুধু সবুজ আর সবুজ, সবুজের প্রকৃতি আপনাকে মুগ্ধ করে দিবে। আরু ভ্যালিতে যাওয়ার সময় রাস্তায় তুষারের সৌন্দর্য এবং সবুজের সমাগম মোহময়ী।পাশেই গিরিখাত, একপাশে পাহাড় কাটা রাস্তা, সঙ্গেই সঙ্গী হয়ে রয়েছে লিডার নদী পোশপাথরে  ঘেরা । আরু ভ্যালি যাওয়ার রাস্তাটা অসম্ভব সৌন্দর্য প্রকাশ করে। তার সাথে আরও একটি আকর্ষণীয়, অন্যতম, তুলনীয় স্থান রয়েছে কাশ্মীর গ্রেট লেকস-

এই জায়গায় ট্রেক না করলে ভারতের অন্যতম সুন্দর একটি ট্রেক করা থেকে বঞ্চিত হবেন।  সত্যি অপূর্ব, সীমাহীন সৌন্দর্য নিয়ে বয়ে চলেছে, মন ভোলানো ভ্যালি সাথে সবুজের সমারোহ। কাশ্মীর মানেই কল্পনার বাইরে  অতুলনীয়,, কাল্পনিক সৌন্দর্যের প্রতীক। কাশ্মীর গ্রেট লেকস এর নিরুপম সৌন্দর্যকে সাধ্যমত অক্ষরবন্দি করে ফেলার আকুল প্রয়াস অন্তরে অনুভূত হবে। ঘাটে-ঘাটে সুসজ্জিত শিকারা, উন্নত শির প্রস্ফুটিত পদ্মবন, সহজ সরল কাশ্মীরের মানুষজন সাদর সম্ভাষণে স্বাগত জানাবে আপনাকে। ইচ্ছে মতো ঘুরে ফিরে, ছবি তুলে পুরো এরিয়াটা উপভোগ করতে পারবেন। 

চোখ,মন জুড়িয়ে যাওয়ার মতো দৃশ্য দেখতে পারবেন প্রতি পদে পদে। কাশ্মীর গ্রেট লেকস এই স্বর্গটি পাহাড়, নদী নালা, ভ্যালি, পাস, লেক,বোল্ডার সব নিয়ে সবুজ চাদর দিয়ে ঢাকা রয়েছে। লেকস এর সাথেই রয়েছে দেখতে পাবেন ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স। এই স্থানের নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক দৃশ্য আর কোথাও পাবেন না।

লোকেশন ভ্রমণ গাইড/কিভাবে যাবেন 
কাশ্মীরের পেহেলগাম থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে ছোট একটি গ্রাম রয়েছে আরু ভ্যালি। শ্রীনগর থেকে কাশ্মীরের পেহেলগাম। পেহেলগাম পৌঁছে সেখান থেকে ট্যাক্সি ভাড়া করে আপনি আরু ভ্যালির দর্শনীয় জায়গাগুলো দেখতে পারবেন। তারচেয়ে ভালো হয়, পেহেলগাম থেকে ট্যাক্সি রিজার্ভ করে আরু ভ্যালি, চান্দেনওয়ারী, বেতাব আলী একসাথে এই ৩ জায়গা উপভোগ করতে পারবেন ১৬০০ রুপির মতোই।

৫.ইউসমার্গ ( Yusmarg)

ইউসমার্গ শব্দের অর্থ হচ্ছে যাদুঘর । সেখানকার স্থানীয় লোকদের বিশ্বাস যিশু খ্রীষ্ট স্বয়ং এখানে বেড়াতে এসেছিলেন। যার কারনে এখানকার নাম ইউসমার্গ মানে যিশুর তৃণভূমি।  এই শৈল শহরটিতে পর্যটকদের ভীর তেমন একটা দেখা যায় না। তবে জায়গাটা বেশ মনোরম এবং আকর্ষণপূর্ণ। প্রাকৃতিক দৃশ্য, পাইন গাছের জঙ্গল, তৃণভূমি, ছোট ছোট ঝরনা আরো বেশ কিছু আকর্ষণীয়  স্থান রয়েছে এখানে। না আসলে বুঝতেই পারবেন না প্রাকৃতিকথার ছোঁয়ায় জায়গাটা কতটা পরিপূর্ণ। বিশেষ করে এখানকার আপেল এবং পুদিনা ক্ষেতগুলো যেন চোখ ধাধানো স্থান। 

পাইনের জঙ্গলে গেলে দেখতে পারবেন সেখানে রয়েছে নানান ধরনের পশু বন মানুষ, বন বিড়াল, ভাল্লুক, নেকড়ে এবং বিভিন্ন ধরনের পাখির আনাগোনা। পীরপঞ্চাল  পর্বতমালার কোলে অবস্থিত এই ইউসমার্গ, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় আড়াই হাজার মিটার উঁচুতে অবস্থিত। অনেকটা ইউরোপের মতই দেখতে এখানকার পরিবেশ আবহাওয়া।এখানের সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের সময়টা বা দৃশ্যটা মন কাড়ানোর মতোই। ইউসমার্গ থেকে মাত্র চার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত রয়েছে অপরূপ নীল রঙের নীলনাগ হ্রদ,যা আপনি পায়ে হেঁটেই পর্যবেক্ষণ করে আসতে পারবেন।  আরো কিছুটা দূরে প্রায় দশ কিলোমিটার হবে সেখানে রয়েছে সাং-ই-সফেদ নামে বরফ জমা হ্রদ।

ইউসমার্গের প্রতিটা জায়গাই আপনি সুন্দর পরিবেশে ঘোড়ায় চড়ে চড়ে সাথে ছবি তুলে ছবির ফ্রেমে পরিবেশের সাথে নিজেকে বন্দী করলেন ।   বরশি দিয়ে মাছ ধরে পরিবেশের সাথে তাল মিলিয়ে ইউসমার্গ উপভোগ করতে পারবেন।  

লোকেশন ভ্রমণ গাইড/কিভাবে যাবেন 
কাশ্মীর উপত্যকার পশ্চিমে বাডগাম জেলায়  অবস্থিত এই শৈল শহরটি হচ্ছে ইউসমার্গ, শ্রীনগর থেকে প্রায় ৪৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত রয়েছে ইউসমার্গ।

 

শ্রীনগর থেকে আপনি গাড়ি রিজার্ভ করে যেতে পারবেন, ভাড়া পড়বে ২০০০ থেকে ৪০০০ রুপী।  লোকালেও যেতে পারবেন প্রথমে চারার-ই- শরীফ পর্যন্ত যাবেন, পরে সেখান থেকে ইউসমার্গ যাবেন।
সোনমার্গ 
সোনমার্গ

৬.সোনমার্গ 

কাশ্মীরের কয়েকটি স্বর্গের মধ্যে এটি হচ্ছে অন্যতম আরেকটি  স্বর্গ সোনমার্গ। শ্রীনগর থেকে ৮২ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত রয়েছে সোনমার্গ। শ্রীনগর থেকে সোনমার্গ যেতে যেতে পথে অনেক সুন্দর সুন্দর দৃশ্য  উপভোগ করে যেতে পারবেন।সোনমার্গ যাওয়ার পথে আপনার চোখে পড়বে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পাহাড়ি জনপদ, গান্দের বল, কঙ্গন যায় এর আগে আপনি কখনো এত অমায়িক সৌন্দর্য উপভোগ করেননি। চোখ ধাধানো দৃশ্য বার্চ,দূর দূরান্তের পাহাড় শ্রেণীর শোভা,পাইন,সিন্দুনদ এই সুন্দরতম দৃশ্যগুলো আপনি যেকোন রাস্তার ধারে দেখতে পাবেন না, এই সুন্দর্য উপভোগ করতে হলে আপনাকে স্বর্গের সোনমার্গ আসতে হবে। 

সোনমার্গের চারপাশে বিস্তৃত পাহাড় আর সবুজে ঘেরা গাছপালা লতাপাতা এই প্রকৃতির সাথে আপনি পায়ে হেঁটে হেঁটে অথবা ঘোঁড়ায় চড়ে প্রকৃতি উপভোগ করতে করতে পৌঁছে যেতে পারবেন খাজিয়ার হিমবাহের কোলে। শীতের সময়ের জন্য হয়ে এটা বরফের রাজ্য, এখানে আবার দোকান বসে হিমবাহের কাছে, জুন থেকে অক্টোবর মাসে চা খাবারের দোকান। এ স্বর্গের রাজ্যে ঘোরার মত আপনি যে জায়গাগুলো পাবেন, গঙ্গাবাল লেক, গাদসার লেক, সাসতার লেক, ভিসান্তার লেক আর কত লেক আপনি ঘোরবেন! এগুলোই শেষ নয় আরও রয়েছে জাজিলা পাস, কোকরনাগ, ডাকসুম, দুধপত্রী, সিনথেনটপ এই জায়গাগুলোর দৃশ্য কতটা যে মনোমায়িক,মনোমুগ্ধকর তা আপনি নিজ চোখে পর্যবেক্ষণ না করলে বুঝতেই পারবেন না। 

বাডগাম জেলার চারার এ শরিফে যাওয়ার রাস্তায় না গেলে আপনার হিমালয়ের রূপ উপলব্ধি করা অসম্ভব হয়ে পড়বে ।  তার থেকে আরো একটু উপরে উঠলে আপনি দেখতে পাবেন দুধগঙ্গার। এশিয়ার বৃহত্তম স্বাদুপানির লেকের নাম হচ্ছে  উলার লেক, এটা উত্তর দক্ষিণ দিকে অবস্থিত। সোনমার্গের আশেপাশে এরকম অনেক লেকেরই অবস্থান রয়েছে। 

লোকেশন ভ্রমণ গাইড/কিভাবে যাবেন 
সোনমার্গ শ্রীনগর থেকে ৮২ কিলোমিটার উত্তর পূর্বে অবস্থিত কাশ্মীরের আরেকটি স্বর্গের রাজ্য সোনমার্গ।শ্রীনগর থেকে প্রায় ৪৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত রয়েছে ইউসমার্গ।

 

গাড়ি রিজার্ভ করে শ্রীনগর থেকে দিনে দিনে সেরে  নিতে পারবেন সোনমার্গ ভ্রমণ । মারুতি ওমনিতে ভাড়া পড়বে আপনার ২২০০ থেকে ২৪০০ টাকা। আর টাটা সমোতে ভাড়া পড়বে প্রায় ২৫০০ থেকে ২৮০০ টাকা।

৭.গুরেজ

রাজধানী শ্রীনগর থেকে গুরেজের দূরত্ব প্রায় ১২৩ কিলোমিটার। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২৪০০ মিটার উচুঁতে অবস্থিত কাশ্মীরের আরেকটি অংশ অপূর্ব লীলাভূমিতে ঘেরা সুন্দর একটি গ্রাম গুরেজ। গ্রামের মধ্যে দিয়ে যদি বয়ে যায় নদী,সেই গ্রামটা দেখতে কতটা অপূর্ব হয় সেটা নিশ্চয়ই আপনি বুঝতে পারছেন, কৃষ্ণগঙ্গা নদী। কাশ্মীরের সেরা পর্যটন স্থান এই গুরেজ গ্রামটি।  গুরেজ গ্রামে সবুজে ঘেরা একটি জঙ্গলও রয়েছে, স্থানীয় মানুষদের প্রায়ই যাওয়া আসা হয় জঙ্গলে, জঙ্গলে স্নো লেপার্ড ও বাদামী ভাল্লুকের দেখা পেয়েছেন অনেকে। নভেম্বর থেকে মে মাস পর্যন্ত এখানে প্রচুর তুষারপাত হয়। 

এত বেশি তুষারপাত হয়, যেন গ্রামের চারিদিক বরফে ঢাকা পড়ে যায়, তখন এই সময়টায় গুরেজ গ্রামে প্রবেশ করে অনেকটা মুশকিল হয়ে যায়।  মে মাসের পর থেকে তুষারপাত কমে যায়, ফলে রাস্তাঘাট স্বাভাবিক হতে শুরু করে।  গুরেজ পর্যটন স্থানকে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলতে কাশ্মীর পর্যটন দফতরের তরফে গুরেজ হেলিকপ্টার পরিষেবা চালু করা হয়েছে। কৃষ্ণগঙ্গা নদীতে বরশি দিয়ে মাছ ধরার আনন্দটাই অন্যরকম, চির স্মরণীয়। অনেক পর্যটকরা এখানে গোসল করতেও নামেন। গ্রামের প্রাকৃতিক সবুজ অরণ্য, প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য আপনার দৃষ্টিকে তাক লাগিয়ে দিবে। এতটাই মনোমুগ্ধকর পরিবেশ এই গুরেজ গ্রামটা। 

নদীর পাশেই রয়েছে আলু ভুট্টার ক্ষেত। এখানে পর্যটকদের থাকার জন্য কাশ্মীর ট্যুরিজমের ডাক বাংলো রয়েছে। তাছাড়া প্রাইভেট হোটেলও রয়েছে। দুই একদিন থেকে আপনার ইচ্ছেমতো গ্রামটির সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। 

লোকেশন ভ্রমণ গাইড/কিভাবে যাবেন 
কাশ্মীরের বন্দিপুর থেকে গুরেজের দূরত্ব প্রায় ৮৬ কিলোমিটার, এবং শ্রীনগর থেকে দূরত্ব প্রায় ১২৩ কিলোমিটার। 

 

কাশ্মীর থেকে রিজার্ভ গাড়ি করে গুরেজ ভ্রমণে আসতে পারেন।  লোকালেও আসা যাবে,সময়টা অনেক বেশি লাগবে। সেজন্য আপনার জন্য রিজার্ভ গাড়ি করে আসাটাই ভালো হবে। 

৮.তুলেইন ভ্যালি-

 কাশ্মীরের সৌন্দর্য স্থানগুলোর কথা বলতে বলতেও শেষ হবে না।  এটাও সেই রকমই আরেকটি অপূর্ব সুন্দর অফবিট স্থান তুলেইন উপত্যকা। তুলেইন গ্রামটি সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত। এখানে প্রবেশের জন্য অবশ্যই ভারতীয় সেনাদের অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করতে হবে। গুরেজ থেকে এর দূরত্ব  খুব একটা বেশি নয়,ফলে গুরেজ উপভোগ করে আসবেন আর তুলেইন ভ্যালিতে আসবেন না,তা তো হয় না।

এর দূরত্ব খুবই কম, তাই আপনিও তুলেইন ভ্যালিতে এসে ভ্রমণ করে যাবেন। গুরেজ উপত্যকার নিম্ন ভাগে অবস্থিত রয়েছে। অসম্ভব সুন্দর এই গ্রামটি।  গ্রামের ঘর বাড়ি গুলো ছবির মত একটি আরেকটি সঙ্গে সংযুক্ত।  এই তুলেইন গ্রাম থেকে আপনি আশেপাশের আরও কয়েকটা সুন্দর গ্রাম উপভোগ করতে পারবেন। চকওয়ালি,কাশপথ, বরনাই, জারগাই এই গ্রাম গুরেজের সামনেই এগুলো উপভোগ করতে করতে আপনি তুলেইন গ্রামে পৌঁছে যাবেন। গ্রীষ্মকালে চারিদিকে ফুলের সুবাস ছড়িয়ে পড়ে, নানা ধরনের  ফুল ফোঁটে, দেখতে অসম্ভব সুন্দর দৃশ্য। সুন্দর দৃশ্যের ছবি তুলে ফ্রেম বন্দি করে রাখতে পারেন।

তুলেইনে  খুব ভালো মানের ট্রাউট মাছ পাওয়া যায়।  তুলেইন গ্রামে ঘোরার জন্য খুব ভালো সময় হচ্ছে গ্রীষ্মকাল। নিরিবিলি একটা পরিবেশের মধ্য দিয়ে কাশ্মীরের এই তুলেইন  গ্রামটা উপভোগ করতে পারবেন। তুলেইন গ্রামের পাশেই রয়েছে অপরূপ সৌন্দর্যের মহিমান্বিত আরেকটি গ্রাম লোলাব ভ্যালি। কাশ্মীরের সৌন্দর্যের শেষ নেই, তেমনি এটাও আরেকটি কাশ্মীরের অফবিট উপত্যকা লোলাব ভ্যালি।

লোলাবের এলাকায় আসলে আপনার চোখ জুড়াবে এখানকার আপেল, আখরোট, চেরি,পিচ, অর্কিডের বাগান দেখে। বাগান গুলোর পাশ দিয়েই বয়ে চলছে হৃদ পাহাড়, ধান ক্ষেতের অসাধারণ দৃশ্য। এই লোলাব গ্রামটি গড়ে উঠেছে পোতনাই, কালারুস,এবং ব্রুনাই নামের তিনটি রহস্যময় উপত্যকার সংমিশ্রণে।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ছাড়াও তীর্ণ ক্ষেত হিসেবেও এর মূল্য অনেক বেশি। সবুজে ঘেরা, পাখির কিচিরমিচির শব্দে প্রফুল্ল হয়ে থাকে এই নিরিবিলি গ্রামটি। লোলাব উপত্যকার ঘন জঙ্গলে বাস করে, তুষার লেপার্ড, বুনো ছাগল, ভাল্লুক কালো জাতের, কাশ্মীরের বিখ্যাত হরিণ কাশ্মীরি হরিণ, আরো নানা প্রজাতির পশু পাখি। 

বন্দিপুর থেকে লোলাব উপত্যকাকে পৃথক করেছে অপূর্ব সুন্দর নাগমার্গ তৃনভূমি।  লোলাব উপত্যকার নাগমার্গ এবং গৌরী প্রস্রবনের সৌন্দর্য অপূর্ব ও অতুলনীয়। এর জল খুবই স্বচ্ছ। এখানে আরও একটি আকর্ষণীয় স্থান হচ্ছে লাহওয়াই নদীর তীর। লোলাব গ্রাম থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত আরো একটি সুন্দরের প্রতীক লালপুর গ্রাম। 

লোকেশন ভ্রমণ গাইড/কিভাবে যাবেন 
শ্রীনগর থেকে কাশ্মীরের  তুলেইন গ্রামের দূরত্ব প্রায় ১২৫ কিলোমিটার। যেহেতু গুরেজ গ্রামের পাশেই, তাই এখানকার এক জায়গায় এসে কয়েকটা গ্রামই আপনি ভ্রমণ করতে পারবেন। 

 

আপনি গুরেজে যে রিজার্ভ গাড়ি করে আসবেন, এই গাড়িতেই আপনি তুলেইন ভ্যালিতে এসে ভ্রমণ করে যেতে পারবেন।  

৯.পাটনিটপ

অপূর্ব লীলাভূমির সৌন্দর্যে ঘেরা এই পাটনিটপ।  পাটনিটপের বিস্তীর্ণ সবুজের ছায়াবন, অবাক করা সৌন্দর্য আপনাকে মোহিত করবে।  খুব সহজেই এখান থেকে সানসারে ঘুরে আসতে পারবেন। তাছাড়া এখান থেকে আরও বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে আসতে পারবেন,স্কেটিং গার্ডেন, নাগ মন্দির, চিনার গার্ডেন। বিশেষ করে, শীতের মৌসুমে ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাসের শুরু পর্যন্ত পাটনিটপে তুষারপাত হয়। পাটনিটপ থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে আরও একটি সুন্দরের মহিমান্বিত দর্শনীয় স্থান আছে কুদ নামে। 

এখানকার বিখ্যাত শোনপাপড়ি আপনি একবার খেলে সারা জীবন মনে থাকবে। খাঁঠি ঘি দিয়ে তৈরি হয়, সেখানে গেলে অবশ্যই  দেখতে পাবেন। এই শোনপাপড়ি, চকলেট আর কালাকাদের জন্য এই জায়গাটি সারা জম্মুতে বিখ্যাত স্থান হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে। প্রেম কাট্টি দোকানটিকে ব্রান্ডের সাথে তুলনা করা যায়,এখানকার স্থানীয় লোকরা বলেন, ‘পাটিসা চকলেট ‘। পাটনিটপের আকর্ষণীয় আরও স্থান রয়েছে,  স্থানগুলো মাধাটপ, সানসার,শিবমন্দির, নাথাটপ, নাগ মন্দির। 

মাধাটপ- 

প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ঘেরা পাটনিটপ আপনার হানিমুনের জন্য, মাধাটপ ট্রেকারদের জন্য, শীতকালীন এক্টিভিটির জন্য পারফেক্ট একটা জায়গা। সড়ক পথে খুব সহজেই রিজার্ভ গাড়ি বা লোকালে যাওয়া যায়। পাটনিটপ থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মাধাটপ।

সানসার-

ছোট দুটি হ্রদ সানা এবং সার থেকে সানসার এর নামকরণ করা হয়েছে। সানসারে গেলে আপনি পোনি রাইডসহ বিভিন্ন অ্যাডভেঞ্চার এক্টিভিটিস আনন্দের সহিত উপভোগ করতে পারবেন । যারা এডভেঞ্চার পছন্দ করেন, তাদের জন্য রয়েছে তাবুর ব্যবস্থা। এবং তৃণভূমিতে অপার্থিব সময় কাটাতে পারবেন। আপনি যখন পাটনিটপ থেকে সানসারের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন  রাস্তার ধারে সবুজ প্রকৃতির সৌন্দর্য, ছোট ছোট মাটির ঘর দেখেই আপনি মুগ্ধ হয়ে যাবেন। 

শিবমন্দির

১১ কিলোমিটার ট্রেক করে পৌঁছাতে হয় এই শিব ঘরে। শিব ঘরটি প্রায় ৩৫০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। জম্মুর পর্যটন বিভাগের দোকান থেকে ট্রেকিং সরঞ্জাম ভাড়া করে নিতে পারবেন।

নাথাটপ

পাটনিটপ থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই নাথাটপ। শীতকালে পাহাড়ে উঠতে পারবেন না, তুষারপাতে পুরো পাহাড় ঢাকা থাকে, একদম সাদা পরীর মত। যার ফলে এর সৌন্দর্য দ্বিগুণ হয়ে যায়, দেখতে অপরূপ লাগে। 

এর উচ্চতা প্রায় ২৭১১ মিটার। তাছাড়া নাথাটপ প্যারাগ্লাইডিং এর জন্য বিখ্যাত। এই চূড়া থেকে হিমালয়ের অপরূপ চমৎকার দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন। যারা নিরিবিলি জায়গায়, পরিবেশের সাথে নিজেকে কিছুটা সময় বিলিয়ে দিতে চান তাদের জন্য এই জায়গাটি পরিপূর্ণ একটি স্থান। 

 ঐতিহাসিক এই নাগ মন্দিরটি ৬০০ বছরেরও বেশি পুরনো। এখানে নাগ পঞ্চমী পুজো করতে শত শত শিব ভক্তের পর্যটক এর ভীর জমে যায়। এই নাগ মন্দিরটি প্রধানত কাঠের তৈরি । নাগমন্দিরটি শুধুমাত্র পুজোর জন্য বিখ্যাত নয়, চারপাশে সবুজে ঘেরা পরিবেশ, আশেপাশে তুষারপাতের জন্যও বিখ্যাত একটি দর্শনীয় স্থান।

লোকেশন ভ্রমণ গাইড/কিভাবে যাবেন 
কাশ্মীর প্রদেশে অবস্থিত রয়েছে একটি হিল স্টেশন যা জম্মু থেকে ১১২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই পাটনিটপ। 

 

শ্রীনগর থেকে পাটনিটপ পৌঁছাতে সময় লাগবে ৫ থেকে ৬ ঘন্টার মতো। শেয়ার টেক্সি করে গেলে ভাড়া পড়বে ২০০ থেকে ২৫০৳।

পাটনিটপ এর নিকটতম রেল স্টেশন হচ্ছে উধমপুর। উধমপুর থেকে বাস বা শেয়ার গাড়িতে করে যেতে পারবেন পাটনিটপ, সময় লাগবে ১ ঘন্টা।

সর্বশেষে, শহরের হাজারো কর্মব্যস্ততার মাঝে একটু সময় বের করে, পরিবার নিয়ে ভ্রমণে আসুন। মনের সব ক্লান্তি মুছে ফেলতে, আপনি কাশ্মীরের সব দর্শনীয় স্থানগুলোতে ঘুরে ঘুরে দেখে আসতে পারেন। 

 যদি কাশ্মীরের দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে আপনার কোন পরামর্শ থাকে, অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন। আমরা সর্বদাই আপনাদের সেবায় নিয়োজিত। সুস্থ থাকুন, নিরাপদে থাকুন, সুন্দরভাবে নিরাপদে ভ্রমণ করুন। ধন্যবাদ।

আরো পড়ুন –

Related Post

মৃত্যু নিয়ে উক্তি

150+মৃত্যু নিয়ে উক্তি, বাণী, ক্যাপশন 2024

মৃত্যু নিয়ে উক্তি জন্মিলে মরিতে হবে আর এটাই সত্যি। মৃত্যু হচ্ছে সবচেয়ে চিরন্তন সত্যি। পৃথিবীতে প্রতিটি প্রাণীর মৃত্যুর স্বাদ অনুভব করতে হবে। সবসময় মৃত্যুর জন্য

Read More »
খুশির স্ট্যাটাস

200+ স্টাইলিশ খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন

খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন জীবনের সুন্দর খুশির মুহূর্ত আমরা সবাই বাঁধাই করে রাখতে চাই। আর এই খুশির মুহূর্তকে ধরে রাখার সবচেয়ে সহজ উপায়

Read More »

স্টাইলিশ ভালোবাসার ছন্দ | রোমান্টিক ছন্দ | Love Status Bangla

❤❤ভালোবাসার ছন্দ | ভালোবাসার ছন্দ রোমান্টিক | ভালোবাসার ছন্দ স্ট্যাটাস❤❤ ভালোবাসা হলো এক অন্যরকম অনুভূতির নাম, যা শুধুমাত্র কাউকে ভালবাসলেই অনুভব করা যায়। আমরা বিভিন্নভাবে

Read More »
মন খারাপের স্ট্যাটাস

মন খারাপের স্ট্যাটাস, উক্তি, ছন্দ, ক্যাপশন, কিছু কথা ও লেখা

মন খারাপের স্ট্যাটাস মন খারাপ – এই কষ্টের অনুভূতি কার না হয়? সবারই কখনো না কখনো সবারই মন খারাপ হয়। জীবনের ছোটোখাটো অঘটন থেকে শুরু

Read More »

Leave a Comment

Table of Contents