Dreamy Media BD

আমাশয় রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

আমাশয় রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

আমাশয় এমন একটি রোগ যেটির সাথে আমরা সকলেই পরিচিত। প্রায় প্রতিটি মানুষেরই জীবনে একবার না একবার এই রোগ হয়েছে। এটি একটি ব্যাকটেরিয়ার জনিত রোগ। আর বর্ষাকালে এই রোগের ব্যাকটেরিয়ার উৎপাত সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। আমাশয় হলে মানুষ ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ে এবং সঠিক চিকিৎসা না করলে সাধারণ আমাশয় থেকে রক্ত আমাশয় হয়ে যেতে পারে।

 সাধারণত সংক্রামিত ব্যক্তির মলের মাধ্যমে রোগটির ব্যাকটেরিয়া আশেপাশে ছড়িয়ে পড়ে। আমাশয় হলে আমাদের দেহ থেকে মল আম জাতীয় পিচ্ছিল পদার্থের মত বের হয়। এবং তার সাথে সাথে শরীরের পানি ও বেরিয়ে আসে। ফলে ডিহাইড্রেশন দেখা দেয়। শিশুদের এই রোগটি বেশি হতে দেখা যায়। কারণ শিশুরা বাইরে খেলাধুলা বেশি করে এবং এই ব্যাকটেরিয়ার অনুজীব গুলো সহজেই তাদের শরীরে প্রবেশ করতে পারে।

আমাশয় হলে প্রথম অবস্থায় ঘরোয়া চিকিৎসা করা প্রয়োজন এবং তাতে যদি সমাধান না মেলে তবে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। আজকে আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদেরকে জানাবো আমাশয় রোগের লক্ষণ, প্রতিকার এবং প্রতিরোধের উপায়। তাই আর দেরি না করে পুরো আর্টিকেলটি পড়া শুরু করুন।

আমাশয় কি

মানব দেহের অন্ত্রে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস জনিত কারণে যে সংক্রমণ রোগ দেখা দেয় সেটি হচ্ছে আমাশয়। আমাশয় দেখা দিলে পেটে প্রচুর ব্যথা অনুভব হয়। আমাশয় কে  আমরা এক কথায় ডায়রিয়া রোগ বলতে পারি

আমাশয়  অন্ত্রে  সৃষ্টি হয়। ব্যাকটেরিয়ার বাধার ফলে মানব দেহ থেকে যখন খাবার পরিপাক বা নিষ্কাশনে বাধা পায় তখনই আমাশয়ের সৃষ্টি হয়। দেহ থেকে শ্লেষ্মা এবং তরল আম জাতীয় দ্রব্য বের হয় এবং তার সাথে রক্ত নিঃসৃত হয়।

আমাশয় হওয়ার কারণ

দূষিত পানি পান করার ফলে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের কারণে পেটের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয় এবং পেটে ব্যথা অনুভব হয়। দূষিত খাবার খাওয়ার ফলে পেটে হজম শক্তির অভাবে আমাশয় দেখা দিতে পারে।

কোন ব্যক্তির যদি আমাশয় দেখা দেয় তখন তার পেটে থাকা ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসজনিত অনুজীব মলের মাধ্যমে দেহ থেকে বেরিয়ে যায়। কিন্তু যদি এই অনুজীব গুলো খাবার বা পানির সাথে মিশে যায় তাহলে সেটি দূষিত হয়ে যায় এবং দেহের জন্য ক্ষতিকারক হয়ে ওঠে।যাদের ডায়রিয়ার সমস্যা থাকে তাদেরও আমাশয়ের সমস্যা দেখা দিতে পারে। পরজীবী যখন দেহের মধ্যে খাদ্য পরিপাকে বাধা প্রদান করে তখনই আমাশয় সৃষ্টি হয়।

আমাশয়ের লক্ষণ

আমাশয় রোগের কিছু লক্ষণ রয়েছে। যেগুলোর ফলে আমরা বুঝতে পারবো আমার শরীর হয়েছে সেই লক্ষণগুলো হলো :

১.কিছুক্ষণ পরপর হঠাৎ করে ঘন ঘন পাতলা পায়খানা দেখা দেয়। 

২.আক্রান্ত ব্যক্তির পেটে প্রচন্ড ব্যথা অনুভব হয়। 

৩.রোগীর দেহে খিচুনি ভাব দেখা দেয়। 

৪.আক্রান্ত ব্যক্তির দেহে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং জ্বর আসে। 

৫.সাধারণত পায়খানার সাথে মিউকাস বের হয়। 

৬.প্রসাবের পরিমাণ কমে যায় এবং শরীরের পানি হ্রাস পেতে থাকে। 

৭.শরীরের শক্তি হ্রাস পেতে থাকে এবং ওজন কমতে থাকে। 

৮.আক্রান্ত ব্যক্তির বমি বমি ভাব দেখা দেয়। 

৯.খুদা হ্রাস পেতে থাকে।

dysentery

আমাশয় রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা

আমাশয় হলে আমরা বাড়িতে কিছু খুবই গুরুত্বপূর্ণ জিনিস খেতে পারি যাতে বাড়িতে বসেই আমাশয় নিয়ন্ত্রণ হবে এবং সম্পূর্ণরূপে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে । 

বাড়িতে যেসব খাবার খেলে আমাশয় সেরে যাবে সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো হলুদ, থানকুনি পাতা, পেয়ারা পাতা, আদার চা, এবং আমরা ডালিমের খোসাও সেবন করতে পারি।

শরীরে পুরাতন আমাশয় থাকলে গাব গাছের খাল ভালো করে শুকিয়ে নিয়ে গুড়ো করে  একদিন ভিজিয়ে রেখে পরের দিন সকালে খালি পেটে সেই পানি খেলে পুরাতন আমাশয় চির মুক্তি দিবে আবার কাঁচা বেল পুড়িয়ে এরপর সেটি চাক চাক করে কেটে চিনি দিয়ে বা গুড় দিয়ে খেলে আমাশয় সহ সকল ধরনের পেটের অসুখ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। 

আবার ঘরোয়া ভাবে কলা এবং চিরে মাখিয়ে খেলে আমার শরীর ভালো হয়। এভাবে আমরা কিছু কিছু ঘরোয়া উপায়ে আমাশয় চির বিদায় দিতে পারি।

বেল-

কচি বেল রোদে শুকিয়ে ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রেখে সেই পানি সেবন করলে আমাশয় থেকে চিরতরে মুক্তি পাওয়া সম্ভব কেননা এক কচি বেলের পানি পুরাতন আমাশয় ভালো করতে সহায়তা করে তাই এটির গুরুত্ব রয়েছে।

হলুদ-

আমাশয় রোগের জন্য হলুদ একটি কার্যকারী উপাদান। কেননা গবেষণায় দেখা গেছে হলুদ আমাশয় নিয়ন্ত্রণে আনতে সহায়তা করে। চিকিৎসকের পরামর্শ মতে  ৩০০ থেকে  ৪০০ মিলিগ্রাম হলুদ খেলে শরীরের জন্য খুবই ভালো।

থানকুনি পাতা

থানকুনি পাতা সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে রস করে খেলে আমাশয় চিরতরে ভালো হয়ে যাবে। এবং শরীর সুস্থ থাকবে। আমাশয় খাওয়ার পর কিছুদিন যেমন এক সপ্তার মতো এটি সেবন করলে আমাশয় ভালো হয়ে যাবে।  আবার থানকুনি পাতার সাথে মধু মিশিয়ে খেলেও উপকার পাওয়া যাবে । থানকুনি পাতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ আমাদের দেহের জন্য।

পেয়ারা পাতা

থানকুনি পাতার মতো পেয়ারা পাতাও আমাশয় দূর করতে সাহায্য করে।  আমরা কচি পেয়ারা পাতা বেটে রস করে যদি খেতে পারি তাহলে আমাশয় খুব তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে যাবে। চাইলে থানকুনি পাতার মত সাথে মধু মিশিয়ে খাওয়া যাবে এতে শরীরও ভালো থাকবে।

আদা চা

আদা এমন একটি জিনিস যেটি আমরা অনেক রোগের থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সেবন করে থাকি। আদার চা আমাশয় নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে থাকে। আদা চা খাবার হজম এবং দেহ থেকে নিষ্কাশন করতে সাহায্য করেন। চাইলে গরম পানিতে কয়েক টুকরো আদা কুচি দিয়ে ওই পানি কিছুক্ষণ জাল দিয়ে নামিয়ে নিয়ে সেবন করলে উপকারিতা পাওয়া যাবে।

ডালিমের খোসা

ডালিমের খোসা শুকনো গুলো সেবন করতে পারি অথবা কাঁচা গুলো সেদ্ধ করে নিয়ে সেবন করতে পারি এগুলোর সাথে মধু মিশেও খেতে পারি তাহলে আমাশয় ভালো হতে কাজে দিবে।

আমাশয় রোগের চিকিৎসা

দুইটি পদ্ধতি রয়েছে আমাশয় রোগের এবং দুটি রোগই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। যেমন একটি হচ্ছে ব্যাসিলারি আমাশয় এবং এটি চিকিৎসা আর অপরটি হচ্ছে অ্যামিবিক আমাশয় এবং এটির চিকিৎসা।

অ্যামিবিক আমাশয়

অ্যামিবিক  আমাশয় হলে প্রচুর পরিমাণ পানি সেবন করতে হবে। এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে। কেননা এই আমাশয়ের জন্য এলোপ্যাথিক ওষুধ কার্যকরী এবং সেটি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী।

ব্যাসিলারি আমাশয়

শিগেলা নামক ব্যাকটেরিয়া  কারণে ব্যসিলারি আমাশয় দেখা দেয়। এই আমাশয় দেখা দিলে কোন ডাক্তারের পরামর্শ বা ওষুধ সেবনের প্রয়োজন পড়ে না। ঘরোয়া উপায়ে যত্ন নিলে এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্নভাবে খাবার এবং পানি পান করলে পাঁচ থেকে সাত  দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে যাওয়া সম্ভব। এখানে নিয়মগুলো হচ্ছে। 

. প্রথমত রোগীকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পানি পান করতে হবে যেন পানিতে কোন প্রকার ভাইরাস বা জীবাণু না থাকে। 

.পরিমাণ মতো স্যালাইন সেবন করতে হবে। কেননা স্যালাইন এই রোগের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে।

৩.এছাড়াও ডাবের পানি সেবন করা যেতে পারে তাহলে রোগীর কিছুটা হলেও দেহে সুস্থতা বোধ ফিরে পাবে।

আমাশয় রোগের লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। আমাশয় রোগ হলে মলের রুটিন এবং সময় সুচি জেনে আমাশয় রোগ নির্ধারণ করা সম্ভব। মলের ইন্তাময়বা হিস্ট্রোলিটিসা এন্টিজেন টেস্ট করার ফলে আমাশয়  রোগ নির্ধারণ করা সম্ভব। আমাশয়ের  ফলে দেহে যদি কোন ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়ে থাকে তাহলে ডাক্তার বা চিকিৎসক কিছু টেস্ট বা পরীক্ষা করতে পারে যেমন রক্ত পরীক্ষা। এবং দেহে লিভারের আল্ট্রাসনোগ্রাম বা সিটি স্ক্যান করতে পারে।

 আমাশয়ের ফলে যদি লিভারে কোন ধরনের সমস্যা হয় তাহলে FNAC করতে হয়। এবং রুটিন টেস্ট করার ফলে যদি আমাশয় রোগ এবং তার ক্ষয়ক্ষতি যা হয়েছে ব্যাকটেরিয়ার কারণে তার নির্ধারণ করা যায় এবং সেই অনুযায়ী চিকিৎসা সেবা দেওয়া যায়। আমাশয় হলে 

Metronidazole

Tinidazole

Ornidazole 

এই ওষুধগুলো সেবন করলে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। 

এগুলো ছাড়াও আরো কিছু অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ সেবন করা হয়ে থাকে যেমন 

Ofloxacin

Norfloxacin 

এছাড়া আমাশয়ের ফলে যদি অন্ত্রে সমস্যা দেখা দেয় তাহলে অপারেশন করার প্রয়োজন পড়তে পারে। এবং ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ঔষধ সেবন করা উচিত নয় তাই আমাদের উচিত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করে সুস্থ জীবন যাপন করা।

আমাশয় রোগের হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা

আমাশয়ের জন্য হোমিওপ্যাথি অত্যন্ত কার্যকরী। কিছু কিছু হোমিওপ্যাথি ঔষধ সেবনের ফলে আমাশয় চিরতরে সেরে যায়। 

R4  আমাশয়ের একটি কার্যকরী হোমিওপ্যাথি ঔষধ। এই ঔষধটি সকল আমাশয়ের জন্যই সেবন করা উত্তম। এটি ছোটদের কম পরিমাণে খাওয়ানো উচিত এবং প্রাপ্তবয়স্কদের পরিমাণ মতো বা একটু  বেশি পরিমাণে সেবন করানো উচিত।

এছাড়াও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ হোমিওপ্যাথি ওষুধ খাওয়া যেতে পারে। 

১.চ্যাপারা এম বাদার টিংচার 

২.কুড়চি বাদার টিংচার

৩.ঈগলমার বাদার টিংচার

প্রতিটি ওষুধ তৈরি করে সেবন করতে হবে।

বাচ্চাদের পরিমানে কম খাওয়াতে হবে 

আর প্রাপ্ত বয়স্ক দের পরিমান মত খেতে হবে। 

এটি তিন বার খাওয়া উত্তম ২৫ ফোটা করে। 

আর পুরাতন আমাসয় এর ক্ষেত্রে পরিমান এ বেশি খেতে হবে। দিনে ৪ বার খেলে কার্যকারিতা বেশি পাওয়া যাবে ।

পুরাতন আমাশয় বা আই বি এস কি

আমাদের অনেকেরই মলত্য ঠিকঠাক মত হয়না এতে করে মলত্যাগের পূর্ণতা ভালো মত পায়না। আমরা এটিকে এক কথায় পুরাতন আমাশয় ও বলে থাকি। 

পুরাতন আমাশয় দেহে অনেক সমস্যা তৈরি করে যেগুলোর ফলে আমরা নানান অসুখে ভুগে থাকি। যদি ওষুধের পাশাপাশি ঘরোয়া উপায় ব্যবহার করা যায় তাহলে পুরাতন আমাশয় দেহে কোন ধরনের ক্ষতি করবে না এবং ঝুঁকির লক্ষণও থাকবে না। 

পুরাতন আমাশয় শরীরের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো গাব গাছের ছালের সাথে পানি মিশিয়ে সকালে খালি পেটে সেবন করা।

পুরাতন আমাশয় বিভিন্ন কারণেই হয়ে থাকে এটিকে আমরা আই বি এস বলতে পারি। 

কোন ব্যক্তির যদি কলোনে ক্যান্সার থাকে তাহলে মলত্যাগের সময় আম জাতীয় পদার্থ দেহ থেকে নিষ্কাশন হয়। এতে মলত্যাগের সময় রক্ত পড়তে পারে বা পেট ব্যথা অনুভব হবে। যদি মল থেকে সময় মিউকাজ জাতীয় পদার্থ দেহ থেকে নিষ্কাশিত হয় তখন আমাদের বুঝে নিতে হবে এটি একটি পুরাতন আমাশয়। তাই তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরী। অনেকেই এমন রয়েছে যারা এই রোগটি ভালোভাবে সনাক্ত করতে না পেরে বাড়িতে বসে থাকে কিন্তু এতে করে পরবর্তীতে ক্যান্সার হতে পারে বা ক্যান্সারের ঝুঁকি দেখা দিতে পারে। এমন অনেক রোগী রয়েছে যারা পুরাতন আমাশয় ভোগার পর ও  বুঝতে পারে না যে এটি তার শরীরের জন্য খুবই মারাত্মক। কিন্তু যদি এটির ফলে দেহে ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়ে তখন চিকিৎসা করে তেমন কোনো লাভ হয় না কারণ এটি খুবই ক্ষতিকারক। তাই উচিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া শরীরে কোন আমাশয় বা পুরাতন আমাশয়ের লক্ষণ দেখা দিলেই।

যদি ৯ থেকে ১০ বছরের মত হয়ে যায় এ পুরাতন আমাশয় তাহলে চিকিৎসা অত্যন্ত জটিল হয়ে পড়বে।

পুরাতন আমাশয় ভালো করার জন্য আমরা কচি বেল রোদে শুকিয়ে ৩০ মিনিট থেকে এক ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রেখে সে পানি করলে পেট ব্যথা এবং আমাশয় এর ফলে রক্ত পড়া সকল কিছু চিরতরে ভালো হয়ে যাবে।

আই বি এস রোগীর পরীক্ষা

অনেকেই আছে আই বি এস হলে বুঝতে পারে না তারা ঝুঁকির মুখে পরে কিন্তু অনেকেই আছে একে বুঝতে পেরে চিকিৎসকের পরামর্শ নেন এবং যখন এটি চিকিৎসক জানেন তখন রোগীকে কোলোনোস্কোপি করানো হয় এটি আবার ডায়রিয়া এবং কোষ্ঠকাঠিন্য হলেও টেস্ট করা হয়। কিন্তু যদি রোগীর মলদ্বারে কোন সমস্যা না থাকে তখন এন্ডোস্কোপি করা হয়।

আই বি এস রোগের চিকিৎসা

আইবিএস মূলত একটি পেটের ব্যথার অসুখ আমরা আই বি এস আসলে কি অনেকেই জানেনা কিন্তু এটি হচ্ছে আমাশয়, ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য এই সকল অসুখের  লক্ষণ। পুরাতন আমাশয়ের কারণ আমরা পেটের ব্যথায় এই অসুখের কবলে পরতে পারি। 

ঠিকমতো খাওয়া দাওয়া না করলে বা ভেজাল যুক্ত খাবার খেলে ঠিকঠাক ঘুম না হলে ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস জনিত কারণে এই রোগটি বা এটির লক্ষণ দেখা দিতে পারে। 

আই বি এস হলে উল্টাপাল্টা কোন ঔষধ সেবন করা উচিত নয় যেমন অনেকেই রয়েছে হাতের কাছে কোন ডাক্তার পেলে তাদের দেখিয়ে অকার্যকর কিছু ঔষধ সেবন করে থাকে এতে করে হিতে বিপরীত হয়ে থাকে। সকলের উচিত হোমিওপ্যাথি বা অ্যালোপ্যাথি ঔষধ পরীক্ষিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ভেবেচিন্তে সেবন করা এতে করে সু চিকিৎসা পাওয়া যাবে। 

কিন্তু আই বি এস এর জন্য এলোপ্যাথি থেকে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা অত্যন্ত কার্যকর। অন্যান্য এলোপ্যাথিক ওষুধ বা এই চিকিৎসা নিলে স্বল্প সময়ের জন্য কার্যকারিতা দেখা দেবে কিন্তু হোমিওপ্যাথি সেবনের ফলে ধীরে ধীরে রোগটি চিরতরে ভালো হয়ে যাবে এতে করে ভালো চিকিৎসা পাওয়া যাবে এবং সুস্থ থাকা যাবে। তাই উচিত হোমিওপ্যাথি ট্রিটমেন্ট নেওয়া কেননা এটি এই রোগের জন্য শ্রেষ্ঠ।

আমাশয় হলে কি কি খাওয়া উচিত

আমাশয় হলে যেই খাবারগুলো খাওয়া জরুরী এবং গুরুত্বপূর্ণ সেগুলো হচ্ছে 

১.আমাশয় হলে তরল খাবার খাওয়া জরুরী যেমন ডাবের পানি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

২.রোগীকে প্রচুর পরিমাণ স্যালাইন সেবন পড়তে হবে। 

৩.সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাবার সেবন করা। 

৪.চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করা যেতে পারে তাহলে দ্রুত আমাশয় থেকে মুক্তি পাওয়ার সম্ভব। 

৫.ভাত, কাঁচা কলা, আপেল, আঙ্গুর ও কমলা এ ধরনের ফলো খাওয়া শরীরের জন্য উত্তম। 

৬.বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি বা সেদ্ধ ডিম খাওয়া কার্যকর। 

৭.কলা যেমন পেটের অন্ত্রে প্রবেশ করে আমাশয় থেকে মুক্তি দেয় তেমন এটি খেলে আলসার রোগো ভালো হয়ে যায়। 

৮.রোগীর উচিত বিশুদ্ধ পানি পান করা এবং পানি খাওয়ার পরিমাণ অত্যন্ত বৃদ্ধি করা। 

৯.খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে চিবিয়ে সেবন করা তাহলে হজম শক্তিতে কাজ করে। 

১০.এমন খাবার গ্রহণ করতে হবে যাতে তৈলাক তো তার পরিমাণ কম। 

আমাশয়ের জন্য এই খাবারগুলো অত্যন্ত কার্যকরী এতে ক্ষতি হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। রোগ থেকে যেমন মুক্তি পাওয়া যাবে তেমন শরীরে সুস্থতা অনুভব হবে তছাড়াও অন্যান্য সমস্যা থেকেও মুক্তি পাওয়া যাবে।

আমাশয় হলে কি কি খাওয়া উচিত নয়

এটি দেখা দিলে কিছু কিছু ফল বা শাকসবজি এটির জন্য খুবই ক্ষতিকারক। 

যেসব খাবার আমরা বাদ দিব, 

‌‍১.মিষ্টি জাতীয় খাবার এড়ানো উচিত। 

২.ভাজাপোড়া ও ঝাল যুক্ত খাবার আমাশয় এর জন্য ক্ষতিকারক। 

৩.অতিরিক্ত গরম খাবার খাওয়া উচিত নয়। 

৪.এমন খাবার খাওয়া উচিত যেগুলো গ্রহণ করলে খাবার দ্রুত পরিপাক হবে এবং শরীর সুস্থ থাকবে।

৫.বাসি পচা খাবার খাওয়া উচিত নয়। 

৬.বাহিরের ফাস্ট ফ্রুট জাতীয় খাবার খাওয়া যাবেনা। 

৭.এমন খাবার খাওয়া যাবেনা যেগুলোর মধ্যে তেল বা চর্বি আছে।

আমাশয় প্রতিরোধের উপায়

এ সকল কাজ করলে আমাশয় প্রতিরোধকরা সম্ভব সেগুলো হচ্ছে, 

১.খাবারের আগে পরীক্ষা করে দেখতে হবে পানি এবং আবার বিশুদ্ধ আছে কিনা এরপর সেই বিশুদ্ধ পানি এবং খাবার গ্রহণ করতে হবে। 

২.আজেবাজে খাবার ভাজাপোড়া অত্যন্ত ঝাল জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে তাহলে পেটে কোন ব্যাকটেরিয়া বা গ্যাস্ট্রিক সমস্যা দেখা দেবে না এতে আমাশয় হওয়ার কোন সুযোগ নেই। 

৩.বিভিন্ন ফল আমরা খেয়েথাকি কিন্তু আমাদের কিছু গাফলের জন্য সেটি আমরা পরিষ্কার পানি দিয়ে না ধুয়েই কে ফেলি কিন্তু যখন এটি খাওয়া হয় তখন ফলের গায়ে থাকা ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস আমাদের পেটে প্রবেশ করে রোগ জীবাণু সৃষ্টি করে। তাই ভালোভাবে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফল খাওয়া জরুরী। 

৪.আবার আমরা অনেকেই একজনের ব্যবহারকৃত জিনিস ব্যবহার করি কিন্তু এটি এড়িয়ে চলাই উচিত তাহলে সুস্থ থাকা যাবে। 

৪.পায়খানা করার শেষে ভালোভাবে সাবান ও বিশুদ্ধ পানি দিয়ে হাত পরিষ্কার করে নিতে হবে তা না হলে সেই হাত দিয়ে কোন খাবার খাওয়া হলে পেটের মধ্যে জীবাণু প্রবেশ করবে। 

৫.নিজেরা সতর্ক থাকলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার সম্ভব এবং অন্য কেউ সতর্ক করা আবশ্যক তাহলে শরীর সুস্থ থাকবে।

৬.যদি কারো আমাশয় হয়ে থাকে তাহলে তার জিনিস আলাদা করে রাখা উত্তম কেননা সেগুলো সংস্পর্শে সুস্থ কারো জিনিস এলে তাহলে ওই লক্ষণ সুস্থ ব্যক্তিকে আক্রান্ত করে দিবে।

সবশেষে,

নিজেদেরকে সচেতন রাখলে সকল ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। সকলের উচিত খাবার পানি সকল কিছু পরীক্ষা করে বা পরিশুদ্ধ করে খাওয়া যতটা পারা যায় বাহিরের খাবার বর্জন করা শাকসবজি ফলমূল মাছ মাংস নিয়মিত খাওয়া কেননা বাহিরের ভাজাপোড়া খেলে পেটে এবং শরীরে নানান অসুখ বাসা বাঁধবে এবং মানুষ ঝুঁকির মুখে পড়বে। নিজেরা সতর্ক হলেই সুন্দরভাবে জীবন যাপন করা সম্ভব।

আরো পড়ুন –

 

Related Post

মৃত্যু নিয়ে উক্তি

150+মৃত্যু নিয়ে উক্তি, বাণী, ক্যাপশন 2024

মৃত্যু নিয়ে উক্তি জন্মিলে মরিতে হবে আর এটাই সত্যি। মৃত্যু হচ্ছে সবচেয়ে চিরন্তন সত্যি। পৃথিবীতে প্রতিটি প্রাণীর মৃত্যুর স্বাদ অনুভব করতে হবে। সবসময় মৃত্যুর জন্য

Read More »
খুশির স্ট্যাটাস

200+ স্টাইলিশ খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন

খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন জীবনের সুন্দর খুশির মুহূর্ত আমরা সবাই বাঁধাই করে রাখতে চাই। আর এই খুশির মুহূর্তকে ধরে রাখার সবচেয়ে সহজ উপায়

Read More »

স্টাইলিশ ভালোবাসার ছন্দ | রোমান্টিক ছন্দ | Love Status Bangla

❤❤ভালোবাসার ছন্দ | ভালোবাসার ছন্দ রোমান্টিক | ভালোবাসার ছন্দ স্ট্যাটাস❤❤ ভালোবাসা হলো এক অন্যরকম অনুভূতির নাম, যা শুধুমাত্র কাউকে ভালবাসলেই অনুভব করা যায়। আমরা বিভিন্নভাবে

Read More »
মন খারাপের স্ট্যাটাস

মন খারাপের স্ট্যাটাস, উক্তি, ছন্দ, ক্যাপশন, কিছু কথা ও লেখা

মন খারাপের স্ট্যাটাস মন খারাপ – এই কষ্টের অনুভূতি কার না হয়? সবারই কখনো না কখনো সবারই মন খারাপ হয়। জীবনের ছোটোখাটো অঘটন থেকে শুরু

Read More »

Leave a Comment

Table of Contents