বাংলাদেশের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী জনপদ গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি জেলা হচ্ছে যশোর জেলা। খুলনা বিভাগের অধীনে একটি জেলা এই যশোর। যার জন্য ফুল ও খেজুরের গুড়ের জন্য প্রসিদ্ধ এই যশোর জেলা। ইতিহাস পর্যালোচনায় যশোর শহরটি একটি প্রাচীন জনপদ।
১৭৮১ সালে সর্বপ্রথম যশোর আত্মপ্রকাশ করে। বাংলাদেশের ১৩ তম বৃহত্তম জেলা হচ্ছে এই যশোর জেলা। যার মধ্যে রয়েছে ৮টি উপজেলা, ৮ টি পৌরসভা, ৯৩ টি ইউনিয়ন, ৯ টি থানা এবং ১৪৭৭ টি গ্রাম নিয়ে গঠিত হয়েছে যশোর জেলাটি। গৌড়ের ধন ও যশ হরনের মাধ্যমে এ অঞ্চলের শ্রী বৃদ্ধি ঘটেছিল। তাই হরণকৃত যশ থেকে যশোর নামের উৎপত্তি হয়।
এখানকার স্থানীয় পুরাতন নাম যশোহর তা পরিবর্তনের মাধ্যমে নতুন নামকরণ করা হয় যশোর। ১৮৮৪ সালের যশোর শহরের নাগরিকদের পৌরসেবা ও সুযোগ-সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে যশোর পৌরসভা নামক একটি স্থানীয় সরকার সংস্থা পৌরসভা গঠিত হয়।
যশোর জেলার সাথে এর কাছাকাছি জেলাগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই ভালো এবং শক্তিশালী। এখানে সংযোজক ও আন্তর্জাতিক মহাসড়ক রয়েছে যা পূর্ব ও পশ্চিম বাংলার পরিবহনের জন্য। আরও আছে যশোর বিমানবন্দরটি মহানগরির কাছাকাছি বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি ঘাঁটি।
এই বিমানবন্দরটি দেশের একমাত্র বিমানবন্দর যেখানে বিমানবাহিনীর সকল বৈমানিকদের বিমান উন্নয়নের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। রানওয়ে দিয়ে সামরিক বিমান সহ অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচল করে।
এখানে মোট জনসংখ্যা প্রায় ২৮,৬৯,৫৩৯ জন। এবং যশোর জেলার আয়তন হচ্ছে ৬৬৭৪ বর্গ কিলোমিটার। অতুলনীয় সৌন্দর্যমন্ডিত যশোর জেলার দর্শনীয় স্থান ও ঐতিহাসিক স্থাপনা গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু অপরূপ স্থানও রয়েছে। আসুন এই জায়গা গুলোর বিবরণ সহ,সুযোগ – সুবিধা জেনে নেই।
বেনাপোল স্থল
বাংলাদেশ স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পরিচালিত বেনাপোল স্থল বন্দরের ঠিক বিপরীত পাশে ভারতের একটি অংশ, ভারতের সেই অংশটি পেট্রাপোল নামে পরিচিত রয়েছে । এটি পশ্চিম বাংলার বনগাঁ মহুকুমার এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করার জন্য, বেনাপোল রেলস্টেশনের মাধ্যমে, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যোগাযোগের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মৈত্রী এক্সপ্রেস নামের একটি ট্রেন চলাচল করে স্থলবন্দরের ভেতর দিয়ে। বাসের কথা বললে বলা যায় যে, এখান থেকে যাতায়াত করে অসংখ্য লাক্সারিয়াস বাস। কলকাতা শহরের দূরত্ব বেনাপোল থেকে ৮০ কিলোমিটার।
বাংলাদেশ, ভারত দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্যের প্রায় ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ বেনাপোলের মাধ্যমে সংঘটিত হয়ে থাকে। পন্য বানিজ্যের বাজারজাত এটার পরেও, স্থল পথে প্রতিদিন শত শত মানুষ ভ্রমণের উদ্দেশ্যে দুই দেশের মধ্যে যাতায়াত করে থাকে। একবার হলেও জায়গাটি ভ্রমণের জন্য উপযুক্ত স্থান।
লোকেশন কিভাবে যাবেন
যশোর জেলার শার্শা উপজেলার অন্তর্গত একটি গ্রামের নাম বেনাপোল, এটি বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্তের কাছে অবস্থিত। যশোর জেলা সদর থেকে প্রাইভেট কার, বাস অথবা অটোরিকশাতে আপনি শার্শা উপজেলার বেনাপোল স্থলবন্দরে পৌঁছাতে পারবেন।
ভাসমান সেতু
যশোরের মনিরামপুরের ঝাঁপা বাওড়ের উপর প্রায় ১৩০০ ফুট দীর্ঘের একটি ভাসমান সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রথম ও দীর্ঘতম, আকর্ষণীয়, দৃষ্টিনন্দন ভাসমান সেতুটি দেখতে অনেক দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আছে ঝাপা গ্রামে।
এই দৃষ্টিনন্দন ভাসমান ব্রিজকে ঘিরে পর্যটনের নতুন সম্ভাবনাকে টিকিয়ে রাখতে এখানে তৈরি করা হয়েছে একটি পিকনিক স্পট। এই আকর্ষণীয় ভাসমান সেতুটি নির্মাণের ফলে কপোতাক্ষ নদ এবং ঝাঁপা গ্রামের বাসিন্দাদের দুর্ভোগের কিছুটা হলেও অবসান ঘটলো।
অথচ কয়েকদিন আগেও নৌকা ছাড়া এখানকার মানুষের যাতায়াত করতে অনেক দূর অব্দি জায়গা ঘুরে যেত হতো। ঝাঁপা গ্রামের বাসিন্দাদের যাতায়াতের সমস্যা দূর করতে, এখানে ঝাঁপা গ্রাম উন্নয়ন ফাউন্ডেশন নামে একটি সংগঠন গড়ে তুলা হয়।
ঝাঁপা গ্রাম উন্নয়ন ফাউন্ডেশন নামের সংগঠনের সদস্যরা, গ্রামবাসি যে অর্থ প্রদান করেছিলো এই সংগঠনে তা দিয়ে প্রায় ৩ মাসে এই ১৩০০ ফিট দৈর্ঘ্যের ও ৯ ফুট প্রস্থের ভাসমান সেতুটি নির্মাণ করেন। এই ভাসমান সেতুটির উপর দিয়ে তেমন ভাড়ি কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারবে না। মোটরসাইকেল, ভ্যান গাড়ি,রিকশা এ ধরনের ছোট ছোট যানবাহন চলাচল করতে পারবে।
তারুণ্যের উদ্যমতার ফল এই সেতুটি। সেতুটির উপর উঠলেই মনের মধ্যে এক প্রশান্তি কাজ করে। তবে হ্যাঁ সেতুটিতে উঠতে হলে আপনাকে অবশ্যই টিকেট কেটে উঠতে হবে। টিকেটের মূল্য মাত্র ৫ টাকা। আপনার জন্য আমন্ত্রণ রইলো একবার হলেও ভাসমান সেতুটির দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ উপভোগ করার জন্য।
লোকেশন কিভাবে যাবেন
যশোর জেলার মনিরামপুর উপজেলার ঝাঁপা গ্রামে অবস্থিত রয়েছে ১৩০০ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি ভাসমান সেতু। যশোর বাসস্ট্যান্ড থেকে স্থানীয় পরিবহনের মাধ্যমে যেমন,বাস,অটোরিকশা বা কারে চড়ে রাজগঞ্জ বাজারে পৌছালেই আপনি ভাসমান সেতুটি দেখতে পাবেন।
মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাড়ি
মাইকেল মধুসূদন দত্ত ১৮২৪ সালের ২৫ শে জানুয়ারি সাগরদাঁড়ি গ্রামের জন্মগ্রহণ করেন। যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়ি গ্রামে অবস্থিত রয়েছে, মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাড়ি। উনার পিতা রামকিশোর দত্ত খুলনা জেলার তালা উপজেলার গোপালপুর গ্রামে বসবাস করতেন।
ঐতিহাসিক কয়েকটি ভবনসহ কবির ব্যবহার করা নানান ধরনের জিনিসপত্র রয়েছে সাগরদাঁড়ি গ্রামের বাড়িতে। শিল্পী বিমানেশ চন্দ্র বিশ্বাস, মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাড়ির প্রবেশপথে নির্মাণ করেছেন মধুসূদন দত্তের একটি অপরূপ ভাস্কর্য। পর্যটকদের দেখার সুবিধার্থে এখানে রয়েছে একটি জাদুকর।
জাদুঘরের পাশেই রয়েছে একটি পাঠাগার,যেখানে রয়েছে মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা, হাজারো বই দিয়ে আলোড়িত করা হয়েছে পাঠাগারটি। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরে নিয়ন্ত্রণ রয়েছে মধুসূদন দত্তের বাড়িটি। মধুপল্লীতে প্রবেশের জন্য টিকেটের মূল্য ১০ টাকা। এবং বিদেশি পর্যটকদের জন্য ১০০ টাকা।
মাইকেল মধুসূদন দত্ত ঘিরে এখানে গড়ে উঠেছে সাগরদাঁড়ি পর্যটন কেন্দ্র, ডাকবাংলো, মধুসূদন জাদুঘর, পাঠাগার। স্থানীয়রা জানান, কবি মধুসূদন দত্ত যখন সপরিবারে সাগরদাঁড়িতে এসেছিলেন (১৮৬২ সালে), তখন ধর্মান্তরিত হওয়ার কারনে গ্রামের পঞ্চায়েতের লোকজন তাদেরকে বাড়িতে উঠতে দেয় নি।
তিনি কাঠবাদাম গাছের নিচে তাবু খাটিয়ে ১৪ দিন ছিলেন। কপোতাক্ষ নদীর তীর ধরে, বিফল মনে হেঁটে বিদায়ঘাট হতে কলকাতার উদ্দেশ্যে বজরায় উঠেছিলেন। পরে এক সময় তদানীন্তন সরকার ১৯৬৫ সালে ২৬ অক্টোবর বাড়িটি পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা করে।
আপনি মধুপল্লীতে যেতে পারবেন, (অক্টোবর থেকে মার্চ মাসে) প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত খোলা পাবেন। শুক্রবার ১২:৩০ থেকে ২:৩০ পর্যন্ত খোলা পাবেন। এবং (এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাসে) প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত খোলা পাবেন। মধুপল্লীতে সাপ্তাহিক ছুটির দিন হচ্ছে রবিবার। তাছাড়া অন্যান্য সরকারি ছুটির দিনেও বন্ধ থাকে।
লোকেশন কিভাবে যাবেন
যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়ি গ্রামে অবস্থিত রয়েছে মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাড়ি। যশোর জেলা শহর থেকে, বাসে করে কেশবপুর আসবেন। কেশবপুর থেকে রিকশা বা অটোরিক্সা করে সাগরঁদাড়ি গ্রামের মধুপল্লী পৌঁছাতে পারবেন। জেলা শহর থেকে মধুপল্লীর দূরত্ব প্রায় ৪৫ কিলোমিটার।
গদখালি
বাংলাদেশের একমাত্র ফুলের রাজধানী মানেই গদখালি ফুলের রাজ্য। যা যশোর জেলা শহর থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে গদখালি বাজারে পৌছালেই সুগন্ধি ফুলের আভাস পেয়ে যাবেন। হাজারও ফুলের সুগন্ধে,মৌমাছির গুন গুন গানে, রঙ্গিন প্রজাপতির ডানায় উড়ে বেড়াচ্ছে চিরন্তন সুন্দরের আভাস।
যশোর শহর থেকে ২৫ থেকে ৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে দুইটি থানা রয়েছে যা ঝিকরগাছা ও শার্শা। এই দুই থানার মধ্যে ৬ টা ইউনিয়নে ৯০ টা গ্রামের মধ্যে কৃষকরা ফুল চাষ করেন প্রায় ৪ হাজার বিঘা জমিতে। এই ফুল চাষের ক্ষেত থেকে প্রতি বছর প্রায় কয়েক কোটি টাকা মূল্যের ফুল উৎপন্ন হয়।
রাস্তার দুপাশে শুধু হাজারও ফুলের সমারোহ। ফুলের সুগন্ধে মন প্রাণ জুড়িয়ে যায়। এ যেন এক কাল্পনিক ফুলপরীর রাজ্য। লাল,নীল,হলুদ দিগন্তজোড়া ফুলের সমারোহ। যশোর বেনাপোলের রাস্তা ছেড়ে ডানে,বামের গ্রাম গুলোতে ঢুকেই আপনার নাকে ফুলের সুঘ্রান আসবে,একটু সামনে এগোতেই দেখবেন দিগন্তজোড়া ফুলের রাজ্য।
মাঠ থেকে ফুল কেটে বড় বড় গাড়ীতে করে বাজারে নিয়ে তুলা হয়। সেখান থেকে প্যাকেজ/বান্ডিল করে চালান হয়ে যায় ঢাকা সহ বিভিন্ন স্থানে। এখানে প্রতি বছর প্রায় ৫ থেকে ৭ কোটি স্টিক ফুল উৎপাদন হচ্ছে।
লোকেশন কিভাবে যাবেন
যশোর জেলার শহর থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে বেনাপোলের দিকে এগুলেই গদখালি বাজার।
যশোর জেলার বাস স্ট্যান্ড থেকে, বাসে করে আপনি গদখালি বাজারে যাবেন। সেখান থেকে গদখালি ফুলের রাজ্যে যাবার জন্য ভ্যান ভাড়া করে নিতে পারবেন। ১ ঘন্টার জন্য ভ্যান ভাড়া পড়বে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা।
মির্জানগর হাম্মাম খানা
যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলা সদর থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে কপোতাক্ষ ও বুড়িগঙ্গা নদীর ত্রিমোহনিতে মির্জা সফসিকানের বসবাসের এলাকারটির নাম রাখা হয়েছিলো মির্জানগর। মির্জা নবাব বাড়িতে সুদর্শনীয়, মনোরম পরিবেশে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন হাম্মামহানা। যা মির্জানগর হাম্মাম খানা নামে পরিচিত সবার কাছে।
১৬৪৯ সালে যশোরের ফৌজদার নিযুক্ত হন মীর্জা সফসিকান। বাংলার বিখ্যাত সুবেদার শাহ সুজার শ্যালক পুত্র। দেশ বিদেশের মানুষ, অনেক দূর-দূরান্ত থেকে ও মানুষের ঢল নেমে পড়ে এই মোঘল আমলের নিদর্শনটি দেখতে। বর্তমানে প্রায় ধংসপ্রাপ্ত নবাববাড়ির এই হাম্মাম খানার অস্তিত্ব এখনো বিদ্যমান।
১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ প্রত্নতও্ব অধিদপ্তর মির্জানগর হাম্মামানাকে প্রত্নতান্ত্রিক নিদর্শন হিসেবে ঘোষণা করে। মোঘল স্থাপত্য শৈলেন অনুকরণে তৈরিকৃত এই হাম্মাম খানায় রয়েছে চারটি কক্ষ এবং একটি কূপ। হাম্মাম খানার ৪ গম্বুজ বিশিষ্ট পশ্চিম ও পূর্ব দিকে দুইটি করে কক্ষ রয়েছে।
তবে পূর্বের কক্ষগুলো চৌবাচ্চা হিসেবে ব্যবহার করা হতো। এবং হাম্মাম খানার দক্ষিণ সাইডে একটি প্রাচীন চৌবাচ্চা ও সুরঙ্গ রয়েছে। এটাকে মূলত তোশা খানা হিসেবে মনে করা হতো। সম্রাট আওরঙ্গজেবের শাসনামলে নুরুলা খাঁ অত্র এলাকাটির ফৌজদারী হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন।
তিনি বুড়ির গঙ্গা নদীর তীরে পরিখা খনন করে, মতিঝিল নামক দুর্গ নির্মাণ করেছিলেন। প্রাচীন এই প্রাচীরের ১০ ফুট উঁচুতে দূর্গের এক অংশে হাম্মাম খানা স্থাপন করছিলেন। এই মির্জানগরের হাম্মাম খানায় এলে কিছুটা হলেও প্রাচীন মোগল আমলের ঐতিহাসিক সময়ের জ্ঞান অর্জন করা যাবে।
লোকেশন কিভাবে যাবেন
যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলা সদর থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মির্জানগর হাম্মাম খানা।
যশোর জেলা থেকে বাসে করে আপনি কেশবপুর উপজেলায় যাবেন। সেখান থেকে অটোরিকশা করে মির্জানগর হাম্মাম খানায় পৌঁছাতে পারবেন। কেশবপুর থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে রয়েছে মির্জানগর হাম্মাম খানা।
হনুমান গ্রাম
হনুমান গ্রামে,নাম যেমন তেমনি হনুমানে ভরপুর এই হনুমান গ্রামটি। কয়েকশ বছর ধরে কেশবপুরের ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে আছে এই বিরল প্রজাতির হনুমান গুলো। কেশবপুরে রয়েছে ভবঘুরে প্রায় ৪০০ প্রজাতির কালোমুখি হনুমানের আবাস।
প্রায় ৪ কোটি বছর আগে কালো মুখি হনুমান প্রজাতির জন্ম হলেও নানা ঘাত পতিঘাত সহ্য করে, কিছু সংখ্যক হনুমান পৃথিবীতে টিকে আছে। বর্তমানে কেবল বাংলাদেশের কেশবপুরেই দেখতে পাওয়া যায় এই বিরল প্রজাপতির হনুমান গুলোকে। এবং ভারতের নদীয়া জেলায় ও বিচরণ করছে কিছু সংখ্যক বুদ্ধিমত্তায় উন্নত এই কালোমুখ ভবঘুরে দেখতে পাওয়া যায় হনুমানের এই প্রজাতিকে।
কিন্তু এখন মাত্র চারশত হনুমান জীবিত আছে। ২০ থেকে ৩০ বছর আগেও ৫ হাজারের অধিক হনুমান কেশবপুরে ছিল কিন্তু এখন বেশ কিছু হনুমান জায়গা ত্যাগ করে চলে গেছে, অন্যত্র। বৃক্ষের অভাবে পরিবেশগত কারণে খাবার ও আশ্রয়ের অভাবে কমতে শুরু করেছে এই বিরল প্রজাতির হনুমান গুলো। এইভাবে চলতে থাকলে, শুধুমাত্র নামই থাকবে হনুমান গ্রাম, গ্রামে কোন হনুমানের অস্তিত্ব থাকবে না।
লোকেশন কিভাবে যাবেন
যশোর জেলা থেকে কেশবপুর উপজেলার দূরত্ব ৩২ কিলমিটার,তারপরেই হনুমান গ্রাম অবস্থিত।যশোর জেলা থেকে বাসে করে আপনি কেশবপুর উপজেলার হনুমান গ্রামে পৌঁছাতে পারবেন।
জেস গার্ডেন পার্ক
১৯৯২ সালে মরহুম এ,এস,এম হাবিবুল হক চুনি, তিনি প্রায় ১২ একর জমির উপর পার্কটি স্থাপন করেন। তা যশোর জেলা শহর থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে বাহাদুর পুর উচ্চ বিদ্যালয়ের কাছেই জেস গার্ডেন পার্কটি অবস্থিত রয়েছে।
বিনোদনের জন্য পার্কটিতে রয়েছে শিশু পার্ক, নাগরদোলা, মিনি ট্রেন, চেয়ার চরকি, ঘোঁড়া চরকি, প্যাডেল বোট, নামাজের জায়গা, ক্যান্টিন, খেলাধুলার জন্য বাচ্চাদের প্লে গ্রাউন্ড এবং আধুনিক সুবিধা অনুযায়ী টয়লেট। পার্কের ভেতরে জলাশয়ের মধ্যে পদ্ম ফুল ফোটা, কুমির ও বকের ভাস্কর্য তৈরি করা হয়েছে।
তাছাড়াও পার্কের মধ্যে কিছু কিছু জায়গায় অনেক সুন্দর ফুলের গাছ রয়েছে, যা সুগন্ধি ছড়িয়ে দিচ্ছে পার্কের চারপাশে। ফুল ছাড়াও নানান ধরনের গাছ আছে, আরও বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে রাখা আছে বড় আকারের হাতি, ঘোড়া, বাঘ, সিংহ, ক্যাঙ্গারু এবং বন মানুষের খেলনা।
পিকনিকের আয়োজন ও করতে পারবেন এখানে,রয়েছে ডেকোরেশন এর সব জিনিসপত্র, রান্নার ব্যবস্থা। জেস গার্ডেন পার্কে আরও আছে ২৫টি পিকনিক ছাউনি। অনেক ঘোরাফেরার পর অবশ্যই আপনার বিশ্রামের প্রয়োজন হবে,তাই বিশ্রামের জন্য রয়েছে ১০টি ঘর।
ভিআইপিভাবে রয়েছে রেস্ট হাউস। সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা এবং গাড়ি পার্কিংয়ের সুব্যবস্থা। জেস গার্ডেন পার্কের মিনি চিড়িয়াখানা রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পাখি, পাখির মিষ্টি কলরবে, ফুলের ঘ্রাণে নিরিবিলি পার্কের চারিদিক সমাহিতো হয়ে থাকে।
সপ্তাহের সাত দিন, সকাল ৯ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত জেস গার্ডেন পার্কটি খোলা থাকে। পার্কে প্রবেশের জন্য টিকিট রয়েছে। টিকিটের মূল্য জনপ্রতি ৪০ টাকা এবং মিনি চিড়িয়াখানার টিকেটের মূল্য ১০ টাকা। তাছাড়া পার্কে বিভিন্ন ধরনের রাইডারস রয়েছে, ভিন্ন ভিন্ন রাইডারসের জন্য, ভিন্ন ভিন্ন মূল্য রয়েছে।জেস গার্ডেন পার্কটিতে পিকনিকের জন্য বনরূপা বাংলো ভাড়া করেও নিতে পারবেন। ভাড়া পড়বে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা।
লোকেশন কিভাবে যাবেন
যশোর জেলা সদর থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বাহাদুর পুর উচ্চ বিদ্যালয়ের কাছে নিরিবিলি ও প্রাকৃতিক পরিবেশে জেস গার্ডেন পার্কটি।যশোর জেলা সদর থেকে উপশহর আসবেন। উপশহর বাসট্যান্ড থেকে অটোতে বা ইজিবাইকে করে বাহাদুর পুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে নেমে যাবেন। সেখান থেকে ৫ মিনিটের মতো হাঁটলেই জেস গার্ডেন পার্কটিতে পৌঁছে যাবেন।অথবা ইজিবাইক রিজার্ভ করে ও নিতে পারবেন। ভাড়া পড়বে ৪০ থেকে ৫০ টাকা।
বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের মাজার
নড়াইল জেলার চন্ডীকপুরে করে মহেশখোলা গ্রামে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ (১৯৩৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ) জন্মগ্রহণ করেন। উনার পিতার নাম মোঃ আমানত শেখ এবং মাতার নাম জেন্নাতুন নেসা। তিনি পূর্ব পাকিস্তানের রাইফেলসেও যোগদান করেছিলেন ১৯৫৯ সালের ১৪ই মার্চ।
এবং তিনি লেন্সনায়ক পদেও পদোন্নতি পান ১৯৭০ সালের ১০ জুলাই, নূর মোহাম্মদকে দিনাজপুর থেকে যশোর সেক্টরে বদলি করার পর। বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ তিনি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধেও অংশগ্রহণ করেছিলেন ৮ নং সেক্টর হতে।
উনার বাবা ছিলেন একজন কৃষক। সেই অধ্যম কৃষক বাবার ছেলে, নূর মোহাম্মদ গান, বাজনা থিয়েটারের মত বিভিন্ন সংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে উনার খুব আগ্রহ ছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় সহযোদ্ধাদের প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে মোস্তফার রাইফেল দিয়ে শত্রু সৈন্যদের ঠেকিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
তখন সহ মুক্তিযোদ্ধারা নিরাপদে থাকলেও উনি প্রানে সংশয়ে ছিলেন। রণক্ষেত্রের পাশের একটি ঝোঁপ থেকে নূর মোহাম্মদের মৃতদেহ উদ্ধার করে যশোরের কাশিপুর গ্রামে চিরবিদায় জানানো হয়। ওখানেই বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ চিরনিদ্রায় শুয়ে আছেন।
লোকেশন কিভাবে যাবেন
যশোর জেলার শার্শা উপজেলার ডিহি ইউনিয়নে যাওয়ার পরে, রিকশা করে আপনি বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের মাজারে পৌঁছে যাবেন।যশোর জেলা সদর থেকে বাস,অটো অথবা প্রাইভেট কার করে শার্শা উপজেলার ডিহি ইউনিয়নে পৌঁছে আপনি রিকশা করে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের মাজারে পৌঁছাতে পারবেন।
যশোর রোড
বিভিন্ন ঐতিহাসিক সূত্র মতে জানা যায় যে, জমিদার কালী পোদ্দারের মা যশোদা দেবী তিনি সড়ক পথে গঙ্গা স্নানের ব্রত নেন। তখন জমিদার তার মায়ের ইচ্ছা পূরণের জন্য যশোরের কালিগঞ্জ থেকে বর্তমান ভারতের কলকাতার গঙ্গা তীরের কালীঘাট পর্যন্ত সড়ক পথ নির্মাণ করে দেন।
রাস্তার নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হলেও জমিদার কালী পোদ্দার এর মা যশোদা দেবী প্রহর রোদ ভ্রমণের অস্বীকৃতি জানান। তারপর জমিদার উনার মায়ের (যশোদা দেবীর) পরামর্শক্রমে রাস্তার দুই পাশে কড়ই/রেন্ট্রি গাছ রোপণ করা হয়। তাই রাজমাতা যশোদা দেবীর নাম অনুসারে সড়কটির নামকরণ করা হয় যশোর রোড।
হাজার বছরের গাছগুলো এখনো যশোর রোডের পাশে মানুষের ছায়া হয়ে আছে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় শত শত মানুষ এই যশোর রোডের দুই পাশে, গাছের নিচে প্রকৃতির কাছে আশ্রয় নেন। মানুষের দুঃখ কষ্ট দেখে মার্কিন এক কবি অ্যালান গিনসবার্গ একটি কবিতা লিখেন, সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড নামে।
তার কিছু দিন পরেই ভারতীয় গায়িকা মৌসুমি ভৌমিক এই কবিতার বঙ্গানুবাদ করে একটি গানও রচনা করেন। যশোর থেকে বেনাপোল যাত্রা পথের ওই সময় টুকু যশোর রোডের মনোরম, শান্তিপ্রিয় পরিবেশ উপভোগ করতে পারবেন।
পরিবেশ উপভোগ করার সাথে যদি যশোরের জামতলার বিখ্যাত সেই মিষ্টি, খেজুরের গুড়ের প্যারা সন্দেশ, ভিজা পিঠা, ধর্মতলার মালাই চা,চুই ঝাল এই খাবার গুলো মুখে দেন,তবে আর কোনো কথাই নেই। মনে রাখবেন পরবর্তী সময় কিন্তু আবার আসতে হবে আপনাকে, যশোরের স্থানের জন্য না হলেও এই খাবার গুলোর জন্য।
লোকেশন কিভাবে যাবেন
যশোর থেকে বেনাপোল গামী ৭০ কিলোমিটারের দীর্ঘ রাস্তাটিই যশোর রোড নামে পরিচিত।যশোর থেকে বেনাপোলের যাত্রা পথের সবটুকু সময়ই যশোর রাস্তায় যানজটহীন ভাবে সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।
বিনোদিয়া ফ্যামিনি পার্ক
১৯৯৮ সালে লেপ্টেন কর্নেল ফয়েজ আহমেদ, উনার উদ্যোগে বিনোদিয়া ফ্যামিলি পার্কটি প্রতিষ্ঠিত করা হয়। এখানে পার্ক প্রতিষ্ঠিত করার আগে জায়গাটি ছিলো উন্মুক্ত ময়দান /খালি জায়গা। পর্যটকদের আকর্ষণীয় করার জন্য এখানে রয়েছে, মিনি চিড়িয়াখানা, ছোট নদী, রবিনহুডের ঘর, শিশুদের জন্য রয়েছে খুবই সুন্দর পার্ক , দুইটা খাবার স্টল, কৃত্রিম ঝর্না প্রভৃতি।
পার্কটিতে পুনর্মিলন, পিকনিক বা যেকোনো ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করার জন্য সুব্যবস্থা রয়েছে। বিনোদিয়া ফ্যামিলি পার্ক সপ্তাহে ৭ দিনই খোলা থাকে। সকাল ৮ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত খোলা পাবেন, তার মধ্যে যেকোনো সময়ই আসতে পারেন।পার্কে প্রবেশের জন্য টিকিটের মূল্য ২০ টাকা। এবং ছোট বাচ্চাদের জন্য টিকেটের মূল্য ১০ টাকা। বাচ্চাদের বিভিন্ন ধরনের রাইড উপভোগ করার জন্য ১০ থেকে ২০ টাকা দিয়ে টিকেট কেটে নিবেন।
লোকেশন কিভাবে যাবেন
যশোর শহর থেকে সেনানিবাসের শানতলা নামক স্থানে পরিপূর্ণ শান্ত এবং মনোরম পরিবেশে অবস্থিত রয়েছে এই বিনোদিয়া ফ্যামিলি পার্ক। পার্কটির দূরত্ব যশোর শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত রয়েছে
যশোর শহরে যেকোন স্থান হতে, রিক্সা বা ইজিবাইকে করে আপনি পালবাড়ী মোড়ে যাবেন। পালবাড়ির মোড় থেকে, ইজিবাইকে করে চুরামনকাঠিতে যাবেন, সেখান থেকে ২০০ গজ হাঁটলেই পৌঁছে যাবেন বিনোদিয়া ফ্যামিলি পার্কে।মাত্র ৫,৬ মিনিটের রাস্তা। ভাড়া পড়বে ৫ থেকে ১০ টাকা। তবে আপনার জন্য ভালো হবে ইজিবাইক রিজার্ভ করে যাওয়াটা।
চাঁচড়া শিব মন্দির
বাংলাদেশ প্রত্নতত্ব অধিদপ্তর চাঁচড়া শিব মন্দিরকে সংরক্ষিত স্থাপনা হিসেবে ঘোষণা করেছেন। যশোর সদর উপজেলার চাঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে রয়েছে চাঁচড়া শিব মন্দিরটি। এই মন্দিরটির বয়স হচ্ছে ৩২৫ বছর।
পুরো এই মন্দিরটি তৈরি করা হয়েছে পোড়ামাটির ফলক দ্বারা। মন্দিরের বাইরে টেরাকোটার কাজ হওয়ার জন্য দূর থেকে দেখে অসম্ভব রকম সৌন্দর্য ফুটে উঠে। মন্দিরটি নির্মাণে চুন,সুরকি এই উপাদান গুলো ব্যবহার করা হয়েছিল।
সুস্পষ্ট ভাবে মহাসড়ক থেকে সৌন্দর্য মন্ডিত এই মন্দিরটি মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। তাই প্রতিদিন অনেক মানুষের সমাগম হয় মন্দিরটিতে, পোড়ামাটির ফলকে আবৃতকৃত মন্দিরটি দেখার জন্য বা পরিদর্শন করার জন্য।
এই শিব মন্দিরটির সামনের দিকে রয়েছে ৩টি খিলান যুক্ত প্রবেশদ্বার। এবং পুরো মন্দিরের সম্মুখভাগ পোরামাটির ফলকে আবৃত রয়েছে। বর্গাকার ও আয়তাকার গর্ভগৃহের চৌ-চালা ছাদের উপরে আরেকটি ছোট চৌ-ছালা নির্মান করা হয়।
লোকেশন কিভাবে যাবেন
যশোর জেলার সদর থানার চাঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে চাঁচড়া রাজবাড়ি অবস্থিত,এই রাজবাড়ির মন্দিরই হচ্ছে চাঁচড়া শিব মন্দির ।যশোর জেলা থেকে বাসে করে মনিহার সিনেমা হলের সামনে নেমে , চাঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বাস,ইজিবাইক বা সিএনজি করেও যেতে পারবেন চাঁচড়া রাজবাড়ীর চাঁচড়া শিব মন্দিরটি তে।
ভরত রাজার দেউল
খনন কার্য চলাকালীন যেসব পোড়াকৃতি ও জিনিসপত্র পাওয়া গেছে। তাঁর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু হল :পোড়ামাটির বাঘের মুখ মন্ডল, দেব দেবীর হাতের অংশ, মানুষের মুখ মন্ডল। প্রতিটি কক্ষের দেওয়াল ৩ মিটার থেকে ১৩ মিটার পর্যন্ত চওড়া।
অনেক ইট আছে যা ৩৬ সেন্টিমিটার থেকে ৫৯ সেন্টিমিটার এর। বাইরের পোড়ামাটির এই ইট গুলো দেখলে মনে হবে যেন হাত দিয়ে কেউ নিপুনতার সহিত কাজটা কমপ্লিট করছে। ভরতের এই দেয়ালটিতে অনেক বড় বড় পাথর ব্যবহার করা হয়েছে।
এই অঞ্চলের জন্য অন্য কোনো পোড়াকীর্তিতে এত বড় বড় পাথর ব্যবহার করা হয়নি। ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে ভরত দেউলের উপরের অংশ কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়। প্রাসাদটির ভিতর থেকে শেষ পর্যন্ত ৯৪ টি কক্ষ পাওয়া গিয়েছিলো। তার মধ্যে ৮২ টি কক্ষের সমন্বয়ে বৌদ্ধ স্তুপটি তৈরি করা হয়েছিল।
স্তুপটির চূড়ায় রয়েছে চারটি কক্ষ, এই কক্ষগুলো দুই পাশে আরো ছোট ছোট ৮ টি কক্ষ রয়েছে। এই কক্ষগুলো মাটি দ্বারাই পরিপূর্ণ। এই সব দর্শনীয় স্থানগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে, আপনাকে অবশ্যই স্থানগুলোতে এসে পর্যবেক্ষণ করে নিজ চোখে দেখে তথ্য সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে পারবেন।
লোকেশন কিভাবে যাবেন
যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলা থেকে ১৯ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত রয়েছে এই ভরত রাজার দেউল।ভরত রাজার দেউলটি যশোর জেলাতে হলেও তা খুলনা হয়ে যাওয়াটা একেবারেই সহজ। ঢাকা থেকে আপনি বাসে করে খুলনা যাবেন,পরে অটোরিকশা, ভ্যান, সিএনজি, রিকশা বা মোটর সাইকেল করে আপনাকে ভরত রাজার দেউল নামক স্থানে বা ভরত ডায়না বা ভরতের ডাইন যেতে হবে।
ঢাকা টু যশোর বাস পরিবহন :
ঢাকা থেকে যশোর রুটে বেশ কিছু জনপ্রিয় ও ভালো বা চলাচল করেন তাদের নাম এবং ভাড়ার তালিকা নিচে প্রদান করা হলো:
ঢাকা-যশোর এসি বাসের ভাড়া ও সময়সূচি-২০২৩
- সোহাগ পরিবহন স্ক্যানিয়া (Scania) বিজনেস ক্লাস ১৩০০
- দেশ ট্রাভেলস হুন্দাই (Hyundai) বিজনেস ক্লাস ১৪০০
- হানিফ এন্টারপ্রাইজ হিনো আরএম-টু (Hino RM-2) বিজনেস ক্লাস ৯০০
- রয়েল কোচ হুন্দাই (Hyundai) বিজনেস ক্লাস ১৩০০
- টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস হিনো (Hino) ইকোনমি ক্লাস ৬৫০
- এসপি গোল্ডেন লাইন 1, Air Bus, AC ইকোনমি ক্লাস ৮০০
ঢাকা-যশোর ননএসি বাসের ভাড়া ও সময়সূচি-২০২৩
- সোহাগ পরিবহন হিনো (Hino) ইকোনমি ক্লাস ৬৫০
- হানিফ এন্টারপ্রাইজ হিনো (Hino) ইকোনমি ক্লাস ৬৫০
- এসপি গোল্ডেন লাইন হিনো (Hino) ইকোনমি ক্লাস ৬৫০
- কিংফিশার ট্রাভেলস হিনো (Hino) ইকোনমি ক্লাস ৭০০
- দেশ ট্রাভেলস হিনো (Hino) ইকোনমি ক্লাস ৬৫০
- একে ট্রাভেলস হিনো (Hino) ইকোনমি ক্লাস ৬৫০
সর্বশেষ, ভ্রমণ সংক্রান্ত যেকোনো তথ্য বা কোনো কিছু আপডেট খবর জানার থাকলে,অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আমরা সবসময় ৭/২৪ এক্টিভ থাকি,চেষ্টা করবো আপনাকে সাহায্য করার জন্য। আশা করি, আজকের এই আর্টিকেল টি পড়ে আপনি যশোরের দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। যা আপনার ভ্রমনের স্থান নির্বাচনে অনেক সহায়ক হবে।
সুস্থ থাকুন, সুন্দরভাবে ভ্রমন করুন। ধন্যবাদ…………..