পলাশীর যুদ্ধ ১৭৫৭ সালের ২৩ শে জুন সংগঠিত হয়। এই যুদ্ধে বিজয় লাভ করে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলা এবং তার মিত্রদের সাথে বৃটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির। এই যুদ্ধে সিরাজউদ্দৌলা এবং তার মিত্ররা পরাজিত হন।
ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির জয়লাভের ফলে ভারতে ইংরেজি শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। এই যুদ্ধের এক পক্ষ ছিল ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এবং অন্য পক্ষ ছিল বাংলা ফরাসি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। এই যুদ্ধে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেনাধিপতি ছিলেন কর্নেল রবার্ট ক্লাইভ, মেজর কিল প্যাট্রিক, মেজর গ্রান্ট, কর্নেল গপ,ক্যাপ্টেন রিচার্ড নক্স,মেজর আইরি কুট।
এবং বাংলা ফরাসি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেনাধিপতি ছিলেন মোহনলাল। তিনি ছিলেন প্রধান সেনাপতি পতি। এবং সিরাজউদ্দৌলার পক্ষে অনেক বিশ্বাসঘাতক ছিলেন। এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আমরা পলাশীর যুদ্ধ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
পলাশীর যুদ্ধ কি
পলাশীর যুদ্ধ ছিল বাংলার ঐতিহাসিক স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলা এবং ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মধ্যে সংঘটিত একটি যুদ্ধ। এই যুদ্ধটি মোট ৮ ঘন্টা স্থায়ী ছিল। যুদ্ধের সিরাজউদ্দৌলার জয় নিশ্চিত থাকলেও মীরজাফরের বিশ্বাসঘাতকতার দরুন তিনি এ যুদ্ধে পরাজিত হন। এই যুদ্ধের রাজনৈতিক ফলাফল ছিল মারাত্মক এবং সুদূর প্রয়াসী।
এই যুদ্ধের ফলে বাংলায় ব্রিটিশদের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রথমদিকে শাসনের রাজত্ব কায়েম করলেও পরবর্তীতে ভারতবর্ষে তারা তাদের সাম্রাজ্য স্থাপন করেন। সর্বশেষ পর্যায়ে সমগ্র ভারতবর্ষ এক সময়ে ব্রিটিশদের অধীনস্থ হয়।
পলাশীর যুদ্ধ কত সালে হয়
বাংলাদেশের শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলা পলাশীর যুদ্ধে পরাজিত হন। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি সেদিন থেকে ভারতে শাসনের রাজত্ব শুরু করে। ১৭৫৭ সালের ২৩ শে জুন এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। তবে এটি ব্রিটিশদের প্রথম যুদ্ধ ছিল না। তাদের প্রথম যুদ্ধ ছিল দক্ষিণ এশিয়াতে ইঙ্গ মুঘল যুদ্ধ। সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের কারণ ছিল মোট ৫০ হাজার সৈন্যের মধ্যে মাত্র ৫ হাজার সৈন্য যুদ্ধ অংশ নিয়েছিল।
পলাশীর যুদ্ধ কখন সংঘটিত হয়
আমরা ইতোমধ্যেই জেনেছি পলাশীর যুদ্ধ ১৭৫৭ সালের ২৩ শে জুন সংগঠিত হয়েছিল। ১৭৫৭ সাল থেকে ১৮০০ সাল পর্যন্ত বাংলা থেকে ইংরেজরা প্রচুর পরিমাণে সম্পত্তি লুট করে। প্রথম থেকেই নবাব সিরাজউদ্দৌলা বিভিন্ন ছোটখাট বিষয়ে বিশ্বাসঘাতকতার স্বীকার হয়ে আসছিলেন।
যুদ্ধের দিন তিনি চূড়ান্তভাবে বিশ্বাসঘাতকতা স্বীকার হন। পলাশীর যুদ্ধ পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর থেকে ৫০ কিলোমিটার উত্তরে সংঘটিত হয়েছিল। ভাগীরথী নদীর পাশে একটি গ্রামে এই যুদ্ধটি আধঘন্টা স্থায়ী ছিল।
পলাশীর যুদ্ধ কোথায় হয়েছিল
পলাশীর যুদ্ধ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সংঘটিত হয়েছিল। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলায় কৃষ্ণনগর সদর থেকে প্রায় পঞ্চাশ কিলোমিটার উত্তরে ভাগীরথী নামে একটি নদী বহমান। এই নদীর তীরে একটি গ্রামে এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। পলাশীর আম বাগানে এই যুদ্ধটি প্রায় আট ঘন্টা যাবত চলেছিল।
পলাশীর যুদ্ধ সংঘটিত হওয়ার পর থেকে ওই গ্রামের তাৎপর্যতা বেড়ে গিয়েছে। পলাশীর আমবাগানে এই যুদ্ধ অনুষ্ঠিত হয় বলে পরবর্তীতে যুদ্ধটির নামকরণ করা হয় পলাশীর যুদ্ধ। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে পলাশের উচ্চতা ৫৬ ফুট। এবং পলাশীর ভৌগোলিক অবস্থান ২৩.৮০°। এবং উত্তর দিক থেকে এর ভৌগোলিক অবস্থান ৮৮.২৫° পূর্ব।
পলাশীর যুদ্ধের কারণ
নবাব সিরাজউদ্দৌলা খুব অল্প বয়সী সিংহাসনে বসেন। তখনকার সময় থেকেই তার মিত্রদের থেকে শত্রু সংখ্যা ই বেশি ছিল। নতুন নবাবের প্রতি ব্রিটিশদের আচরণ কাঙ্খিত ছিল না। তারা নবাবের প্রতি ঔদ্ধত্যপূর্ণ এবং বিরূপ আচরণ করতেন। নবাবের কোন নির্দেশনা তারা সহজভাবে মেনে নিতেন না এবং সব বিষয়ে তারা উদাসীন মনোভাব পোষণ করতেন।
দুর্গ নির্মাণ এবং দস্তকের অপব্যবহার করা ছাড়াও আরো বিভিন্ন কারণে এই যুদ্ধের পথ সম্প্রসারিত হয়েছিল। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল কৃষ্ণ দাস কে আশ্রয়োজন করার বিষয় আলোচনা করার জন্য নারায়ন দাস কে সিরাজউদ্দৌলার দুত হিসেবে কলকাতায় প্রেরণ করেছিলেন। কিন্তু ইংরেজরা নারায়ণ দাস কে গুপ্তচর বলে অপমানিত করেন। এবং তার সাথে আলোচনা না করে তাকে আবার সিরাজউদ্দৌলার কাছে পাঠিয়ে দেন। এই বিষয়ে সিরাজউদ্দৌলা অপমানিত বোধ করেছিলেন।
সিরাজউদ্দৌলা সিংহাসনে বসার পর থেকেই তার খালা ঘষেটি বেগম এবং তার একাধিক রাজকর্মচারী সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছিলেন। সিরাজউদ্দৌলা বিষয়টি বুঝতে পারেন যে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে এবং ইংরেজরা এই ষড়যন্ত্রের সাথে লিপ্ত রয়েছেন। এই ষড়যন্ত্রের মূল কারণ ছিল তাকে নবাবের পর থেকে সরিয়ে দিয়ে অন্য কাউকে নতুন নবাব হিসেবে সিংহাসনে বসানো। প্রাসাদের উল্লেখযোগ্য নেতারা তার বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতা করছিলেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন: জগৎশেঠ, মীরজাফর, মহারাজা স্বরূপ চাঁদ, ঘষেটি বেগম প্রমুখ।
এই যুদ্ধে মীরজাফর ছাড়াও জগতশেঠ এর বিশ্বাসঘাতকতার পরিমাণ কোন অংশে কম ছিল না। ক্লাইভ তার চিঠিতে পরিষ্কারভাবে বর্ণনা করেছেন জগতশেঠ ইংরেজদের প্রচুর পরিমাণে মদদ যুগিয়েছেন এই যুদ্ধ পরিচালনার জন্য। আবার কারো কোন মতে এই যুদ্ধটা মূলত হিন্দুদের ষড়যন্ত্র। তবে চক্রান্তটা কিছু কিছু দিক দিয়ে হিন্দুদের হলেও এর পেছনে সবথেকে বড় কারিগর যে ছিলেন সে ছিলেন মুসলিম ধর্মের। ক্লাইভ নিজে নবাব হতে পারতেন না। তাই সিরাজউদ্দৌলা এর জায়গায় যে নবাব হবেন সে মুসলিম ধর্মের হবেন। ক্লাইভ মনে করতেন সিরাজউদ্দৌলা না থাকলেও ওই সিংহাসনের নবাব হবেন মীরজাফর।
একটা সময় পর নবাব উপলব্ধি করেন ইংরেজরা তার সার্বভৌম ক্ষমতায় আঘাত করতে চাইছেন। তাই সেই সময় তিনি কাশিমবাজারের কুঠি এবং পরবর্তীতে কলকাতা নিজের দখলে আনেন। ফলে এই সময় কোম্পানির লোকেরা জাহাজে করে ফলতায় স্থানে আশ্রয় নেন। কিন্তু প্রায় ১৪৬ জন লোক এই দুর্গে থেকে যান। এটা ইংরেজদের কাছে মোটেও শুভকর ব্যাপার ছিল না।
নবাব এর বিরুদ্ধে ইংরেজদের যুদ্ধের আরেকটি কারণ ছিল অন্ধকূপ হত্যার কাহিনী। ইংরেজরা মনে করতেন নবাব সিরাজউদ্দৌলা কাশিমবাজারের কুঠি দখল করে সেখানে ১২৩ জন ইংরেজকে একটি ছোট অন্ধকার ঘরে আটক করে রেখেছিলেন। এবং এই স্থানে তারা শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা গিয়েছিলেন। এই ঘটনাটি নবাবের বিরুদ্ধে ইংরেজদের মনে একটি বিরূপ ধারণার জন্ম নিয়েছিল। তবে এই ঘটনার কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি। বিভিন্ন গবেষক তাদের পুস্তকে এই ঘটনাকে মিথ্যা বলে উপস্থাপন করেছেন।
পলাশীর যুদ্ধের আরেকটি কারণ ছিল নন্দকুমারের চক্রান্ত। নন্দকুমারকে সিরাজউদ্দৌলা নির্দেশ দিয়েছিলেন যে যদি ইংরেজরা চন্দননগর আক্রমণ করে তাহলে যেন তিনি সৈন্য নিয়ে ফরাসিদেরকে সাহায্য করেন। কিন্তু লর্ড ক্লাইভ নবাবের এই সিদ্ধান্ত মেনে নেননি। তিনি চন্দননগর দখল করেন এবং বিজয়ী হন। এবং নন্দন কুমার ও মানিক চাঁদ নবাবের নির্দেশ অনুযায়ী ফরাসিদেরকে সৈন্য নিয়ে সাহায্য করেননি। পলাশীর যুদ্ধ সংঘটিত হওয়ার আরেকটি কারণ ছিল এই ষড়যন্ত্র।
পলাশীর যুদ্ধের ৫ টি কারণ
পলাশীর যুদ্ধ সংঘটিত হওয়ার একক কোনো কারণ ছিল না বরং একাধিক কারণে এই যুদ্ধের ফলাফল ভয়াবহ হয়েছিল। পলাশীর যুদ্ধের পাঁচটি কারণ হলো:
- সামরিক দুর্গ নির্মাণ
- বাণিজ্যিক দ্বন্দ্ব,
- সার্বভৌম জমিদারি,
- কোম্পানির উদ্ধতপূর্ণ মনোভাব,
- দুর্গ নির্মাণ বন্ধ না করা
বিভিন্ন বাণিজ্যিক দ্বন্দ্বের কারণে পলাশীর যুদ্ধ হয়েছিল। তৎকালীন সময় ব্রিটিশরা কলকাতায় দুর্গ নির্মাণ করতে থাকে। এবং একই সময়ে ফরাসিরা চন্দননগরের সামরিক দুর্গ স্থাপন করা সম্প্রসারিত রাখে। তবে সেই সময় সিরাজউদ্দৌলা নির্দেশ দিয়েছিলেন যাতে এই দুর্গ নির্মাণ সম্প্রসারণ না করা হয়।
তৎকালীন ফরাসিরা এই প্রস্তাব মেনে নিলেও ব্রিটিশরা মেনে নেয়নি। পলাশীর যুদ্ধ সংঘটিত হওয়ার একটা বড় কারণ ছিল। সিরাজউদ্দৌলা ঘোষনা করেন ব্রিটিশরা দেশের প্রচলিত আইন না মেনে সেখানে দুর্গ স্থাপন করছেন। এবং তারা বিশ্বাসের অমর্যাদা করে দস্তকের অপব্যবহার করতে দ্বিধাবোধ করেননি।
ব্রিটিশরা কলকাতার জমিদারি এলাকাগুলোকে নিজেদের সার্বভৌম এলাকা মনে করে শাসন করছিল। এইসব কারণে সিরাজউদ্দৌলা তৎকালীন সময়ে ব্রিটিশদের বাংলা থেকে তাড়াতে চেয়েছিলেন।
পলাশীর যুদ্ধে ইংরেজ সেনাপতি কে ছিলেন
পলাশীর যুদ্ধের ইংরেজ সেনাপতির নাম হল রবার্ট ক্লাইভ। রবার্ট ক্লাইভ ছিলেন ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি সেনাপতি। ব্রিটিশ উপনিবেশবাদী হিসেবেও তার জনপ্রিয়তা ছিল। ভারতে তিনি ইংরেজদের সাম্রাজ্য করে তোলেন। মূলত তার নেতৃত্বে ই নবাব সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা হয়। তিনি ১৯৭৪ সালের ২২ শে নভেম্বর মৃত্যু বরণ করেন।
পলাশীর যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল
পলাশীর যুদ্ধের কারণ
নবাব আলীবর্দী খানের মৃত্যুবরনের পর সিরাজউদ্দৌলা সিংহাসনে বসেন। মাত্র ২২ বছর বয়সেই তিনি সিংহাসনে বসতে পারেন। ক্ষমতায় আহরণ করার পর থেকেই নবাব সিরাজউদ্দৌলা বিভিন্ন চক্রান্ত ধরে ফেলেন। তিনি বাংলার চারিদিকে দেশীয় বণিক, ইংরেজদের চক্রান্ত এমনকি অনেক কাছের মানুষদেরও বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হন।
পলাশীর যুদ্ধ যেদিন সংঘটিত হয় সেদিন সব সৈন্যগণ রবার্ট ক্লাইভ এর নেতৃত্বে পলাশীর আম্র কাননের উদ্দেশ্যে রওনা হন। তারা পলাশীতে শিবির স্থাপন করেন। তাদের সৈন্যের পরিমাণ ছিল প্রায় ৬৫ হাজারের মতো। সকাল আটটার দিকে যুদ্ধ আরম্ভ হয় এবং শেষ হয় বিকাল তিনটার দিকে। নবাবের বিশ্বস্ত সেনারা খুব দক্ষতার সাথে যুদ্ধ পরিচালনা করেন।
অন্যদিকে মীরজাফর, রায় দুর্লভ এর নেতৃত্বে প্রায় ৪৫ হাজার সৈন্য যুদ্ধ না করে দাঁড়িয়ে থাকেন। উল্লেখ্য ঐদিন প্রায় নবাবের সৈন্যের সংখ্যা ছিল ৫০ হাজার। মির্জাপুরের নেতৃত্বে ঐদিন যদি ৪৫ হাজার সৈন্য নিষ্ক্রিয় হয়ে দাঁড়িয়ে না থাকতো তাহলে সিরাজউদ্দৌলা অবশ্যই জয়লাভ করতে পারতেন।
পলাশীর যুদ্ধের ফলাফল
যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলা পরাজিত হওয়ার পর যুদ্ধ ময়দান থেকে পালিয়ে যান। তার অধীনস্থ ২২ জন সৈন্য নিহত হয়েছিলেন। এবং আহত সৈন্যের সংখ্যা ছিল প্রায় ৫০ জন। ঐদিন মোট ৫০০ জন সৈন্য হারিয়েছিল নবাব সিরাজউদ্দৌলা বাহিনী। পলাশী যুদ্ধের ফলাফল ছিল সুদূর প্রয়াসী। যুদ্ধের ফলে সিরাজউদ্দৌলার সিংহাসন হারান এবং ইংরেজরা ভারতে তাদের সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন।
পলাশীর যুদ্ধের তাৎপর্য
নবাব সিরাজউদ্দৌলা ছিলেন বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব। পলাশীর যুদ্ধের পর বাংলা পরবর্তীতে আর কোন স্বাধীন নবাব পাইনি। দীর্ঘদিন বাংলা শাসন করেছে ইংরেজরা।
তবে শুধুমাত্র ভারতবর্ষ ছাড়াও এশিয়ার আরো বিভিন্ন দেশ সেই সময়ে ইংরেজদের অধীনে চলে গিয়েছিল। ইংরেজরা তখনকার সময় ছিল সর্বশক্তিমান। প্রবাদ বাক্য ছিল”ইংরেজদের আকাশে কখনো রাত নামে না”। তাই পলাশীর যুদ্ধের পর বাংলা তার স্বাধীন নবাব চিরতরে হারিয়েছিল।
শেষ কথা
বর্তমান সময় পর্যন্ত পলাশীর যুদ্ধ একটি ঐতিহাসিক ঘটনা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এবং এটি পৃথিবীর সেরা যুদ্ধগুলোর মধ্যে অন্যতম। পলাশীর যুদ্ধে নবাবের পতনের পর কলকাতায় একটি পুঁজিবাদী শ্রেণী গড়ে উঠেছিল। এবং ওই সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক শ্রেণীর আবির্ভাব ঘটে।
ইংরেজরা এবং তাদের সহকর্মীরা বাংলার নিরীহ মানুষের উপর তাদের শাসনের রাজত্ব কায়েম করে। ফলে বাংলার যে দীর্ঘদিনের ঐতিহাসিক সংস্কৃতি এবং জীবনধারা ছিল তার ওপর বিরাট প্রভাব পড়ে। এক কথায় বলা যায় নবাবের পতনের পর গোটা ভারতবর্ষ মুখ থুববে পড়ে।
আরো পড়ুন –