Dreamy Media BD

দাদ রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

দাদ রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

দাদ একটি খুবই পরিচিত চর্মরোগ।। এটি সংক্রামক রোগ এবং খুব সহজেই এটি ছড়িয়ে পড়ে। শরীরের যে কোন জায়গায় পা থেকে মাথা পর্যন্ত দাদ রোগ হতে পারে। এই রোগটি মূলত ছত্রাক অথবা ফাঙ্গাল  ইনফেকশনের কারণে হয়ে থাকে। দ্রুত চিকিৎসা নিলেই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। বয়স্কদের তুলনায় শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। সাধারণত এ রোগে শরীরের এক জায়গায় গোল চাক্তির মত ফুসকুড়ি উঠে এবং ওই স্থানে প্রচুর চুলকানি হয। এ রোগ প্রথমে একটু থাকে এবং পরবর্তীতে আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে। নিচে দাদ রোগের লক্ষণ কারণ প্রতিকারসহ সকল বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-

দাদ রোগের লক্ষণ:

এই রোগের প্রধান উপসর্গ হলো র‍্যাশ। র‍্যাশ দেখতে অনেকটা গোলাকার চাক্তির মতো হয়ে থাকে। রং হয় লালচে বর্ণের। আবার আশেপাশের ত্বকের গায়ে গারো বর্ণ ধারণ করতে পারে। দাদ রোগের কারণে ত্বকের বর্ণের পাশাপাশি র‍্যাশের উপরে ছোট ছোট আঁইশ দেখা যায়। এছাড়া আক্রান্ত স্থানে বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দেয় তা নিচে তুলে ধরা হলো:

১. ত্বক খসখসে বা শুকনো হয়ে যায়।

২. স্থানটি ফুলে যায়।

৩. অধিক পরিমাণ মানে চুলকানি দেখা দেয়।

৪. আক্রান্ত ত্বকের উপরে লোম থাকলে তা পড়ে যায়।

শরীরে কোন কোন স্থানে দাদ রোগ হয়?

আমাদের শরীরে যে কোন স্থানে দাদ রোগ দেখা দিতে পারে। যেমন: মাথা, হাত, পা ,পায়ের পাতা এমন কি পায়ের নখ ইত্যাদি। আক্রান্ত স্থান ভেদে দাদের লক্ষণেও ভিন্নতা আসতে পারে। যেমন,র‍্যাশের আকারে ভিন্নতা থাকতে পারে। আবার কখনো কখনো এক বা একাধিক র‍্যাশ দেখা দিতে পারে। নিচে শরীরের যে যে সকল স্থানে দাদ রোগ হয় তা তুলে ধরা হলো:

দাদ

মাথার ত্বক:

মাথার ত্বকে দাদ রোগ দেখা দিলে সাধারণত যে স্থানে আক্রান্ত হয়েছে ওই স্থানের সকল চুল পড়ে যায় ফলে টাক সৃষ্টি হয়। টাক পড়া স্থানে লালচে গোলাকার ও ছোট ছোট আঁইশযুক্ত র‍্যাশ তৈরি হয়ে থাকে। এতে চুলকানি হতে পারে। ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়লে টাক পড়া অংশের পরিমাণ আরো বৃদ্ধি পেতে পারে এবং মাথার ত্বকের দাদ রোগ একাধিক র‍্যাশ তৈরি করতে পারে। বড় মানুষের তুলনায় শিশুদের মাথায় দাদ রোগ বেশি হয়ে থাকে।

পা এবং পায়ের আঙুলের ফাঁকে:

এক্ষেত্রে আক্রান্ত স্থানটি লাল হয়ে ফুলে ওঠে এবং সেখানে চামড়া উঠতে থাকে। সেই সাথে পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ফাঁকে অসহ্য চুলকানি হয়। বিশেষ করে পায়ের সবচেয়ে ছোট আঙ্গুলের মাঝখানের অংশে চুলকানি হয়ে থাকে। পায়ে দাদ হলে পায়ের পাতা সহ গোড়ালিও আক্রান্ত হতে পারে। এমনকি গুরুতর ক্ষেত্রে পায়ের ত্বকে ফোসকা পড়ে যায়।

কুঁচকি:

কুঁচকিতে দাদ হলে এটি সাধারণত ঊরুর ভেতরে দিকে ভাঁজে লাল লাল র‍্যাশ হিসেবে দেখা দেয়।র‍্যাশে আঁইশ থাকে এবং চুলকানিও থাকে।

দাড়ি:

গাল এবং গালের উপরের অংশে এই ধরনের দাদ দেখা দেয়। এটি লাল লাল র‍্যাশ হিসেবে দেখা দেয় এবং এতেও আঁইশ এবং চুলকানি থাকে। দাড়িতে  র‍্যাশ হলে অনেক সময় আক্রান্ত স্থানের চুল পড়ে যায় এবং র‍্যাশের ভেতরে পুঁজ জমতে পারে।

দাদ রোগ কিভাবে ছড়ায়?

দাদ মূলত হলো একটি সংক্রামক রোগ।এটি ট্রাইকোফাইটন, মাইক্রোস্পোরাম ও এপিডার্মোফাইটন প্রকারের ফাঙ্গাস জাতীয় জীবাণুর মাধ্যমে সংক্রমণ ঘটিয়ে থাকে। দাদ মূলত তিনটি ভাবে ছড়িয়ে থাকে-

  • আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহার্য জিনিস ব্যবহার করলে। যেমন: চিরুনি, গামছা, বিছানোর চাদর ইত্যাদি।
  • দাদ আক্রান্ত প্রাণীর সংস্পর্শে এলে। যেমন: কুকুর, বিড়াল, ছাগল, ঘোড়া, গরু ইত্যাদি।
  • স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে বসবাস করলে। কারণ পরিবেশে দাদ রোগের জীবাণু জন্মে।

দাদ রোগের চিকিৎসা:

দাদ রোগের চিকিৎসায় মূলত অ্যান্টিফাঙ্গাল ঔষধ ব্যবহার করা হয়। চিকিৎসা মূলত নির্ভর করে শরীরের কোন স্থানে ইনফেকশন হয়েছে এবং ইনফেকশন কতটা গুরুতর তার উপর। ঔষধ ব্যবহার করার পাশাপাশি নিজের শরীরের অন্য কোন জায়গায় অথবা বাড়ির কোন সদস্যর মধ্যে রোগ যাতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে তাই কিছু নিয়ম মেনে চলো গুরুত্বপূর্ণ।

দাদেরঔষধ:

দাদ রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ঔষধ গুলো ভিন্ন ভিন্ন রূপে পাওয়া যায়। যেমন: ক্রিম, স্প্রে, জেল, লোশন, ট্যাবলেট, পাউডার, ক্যাপসুল ইত্যাদি।

শরীরের ত্বকে দাদ রোগ হলে ক্যাপসুল অথবা ট্যাবলেট না খেয়ে ক্রিম, জেল, লোশন, স্প্রে কিংবা পাউডার হিসেবে সরাসরি ত্বকে লাগানো ভালো। দাদ রোগের ঔষধের মধ্যে রয়েছে ক্লট্রিমাজোল, মাইকোনাজোল, টার্বিনাফিন ও কিটোকোনাজল। এগুলো সাধারণত দুই থেকে চার সপ্তাহ টানা ব্যবহার করতে হয়।

ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময় ধরে ঔষধ ব্যবহার চালিয়ে যাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি র‍্যাশ সেরে গেলেও ঔষধ ব্যবহার বন্ধ করা ঠিক হবে না। সঠিক সময় পর্যন্ত ভালোভাবে চিকিৎসা না নিলে র‍্যাশ পুরোপুরি নাও ছাড়তে পারে অথবা পুনরায় দাদ দেখা দিতে পারে।

দাদ রোগ সারাতে কখনো স্টোরয়েডযুক্ত ঔষধ ব্যবহার করবেন না। দাদ রোগ দেখা দিলে অনেকে আছে যারা স্টোরয়েডযুক্ত মলম ব্যবহার করে এটি একেবারেই ঠিক নয়। কেননা এই সকল ঔষধ চুলকানি এবং ত্বকের লালচে ভাব কমাতে পারলেও রোগের জীবাণু পুরোপুরি মারতে পারে না।

এমনকি এই সকল ঔষধের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে ফেলে। যার ফলে দাদ সহজেই শরীরের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি ইনফেকশন শরীরের ত্বকের গভীরে ঢুকে গিয়ে অনেক বড় সমস্যার সৃষ্টি করে। এছাড়া স্টোরয়েড মলম দাদের ধরন পরিবর্তন করে ফেলতে পারে যার ফলে ডাক্তারের পক্ষে সঠিক দাগ নির্ণয় করা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই ডাক্তাররা এই সকল মলম ব্যবহার করতে নিষেধ করেন।

দাদ রোগ
দাদ রোগ

দাদ রোগ দূর করার ঘরোয়া উপায়:

প্রাথমিক অবস্থায় অনেক ঘরোয়া চিকিৎসা দ্বারা দাদ সারানো যেতে পারে। কিন্তু ঘরোয়া চিকিৎসায় সব সময় জেনে বুঝে উপকরণ ব্যবহার করবেন এবং দীর্ঘ সময় এটার উপর নির্ভর করবেন। ঘরোয়া চিকিৎসার উপকরণ নিচে তুলে ধরা হলো-

নিম পাতা:

দাদ রোগ সারাতে নিমপাতা অত্যন্ত কার্যকরী এবং জনপ্রিয়। বড় কোন গাছ থেকে নিম পাতা সংগ্রহ করবেন। রোগ সারাতে গিয়ে প্রতিবেশীর গাছ খালি করে ফেলবেন না।

হলুদ বাটা:

আমরা সকলে জানি যে কাঁচা হলুদ জীবাণু প্রতিরোধী। এই হলুদ ব্যবহার করলে দাদ উপশম হয়।

এলোভ্যারা:

এলোভ্যারা আমাদের ত্বক সুস্থ রাখতে সাহায্য করে এবং এতে জীবাণুন নাশক ক্ষমতাও রয়েছে। এটি দাদ রোগের জন্য ভালো একটি ঔষধ।

নারিকেল তেল:

নারিকেল তেল ক্ষতিকারক ত্বক সারিয়ে তুলতে এবং দাদ রোগ ছড়িয়ে পড়া রোধে সাহায্য করে থাকে।

দাদ রোগ হলে যা যা করবেন এবং যা যা করবেন না:

যা করবে:

  • যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করবেন।
  • আক্রান্ত স্থান সবসময় শুকনো এবং পরিষ্কার রাখবেন। আক্রান্ত স্থান স্পর্শ করে ফেললে সাথে সাথে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলবেন।
  • দৈনিক ব্যবহার করা কাপড় যেমন, তোয়াল বিছানার চাদর ফুটন্ত পানি দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করবেন।

যা করবেন না:

  • দাদ হয়েছে এমন কারো ব্যবহার্য জিনিস যেমন: তোয়ালে, চিরুনি, চাদর ইত্যাদি ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
  • যে স্থানে দাদ দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে ওই স্থান স্পর্শ করা অথবা চুলকানো থেকে বিরত থাকুন। না হলে শরীরের অন্য স্থানে ছড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এমনকি চুলকানোর ফলে ত্বকে  ভিন্ন আরেকটি জীবাণু আক্রমণ করে ইনফেকশন ঘটাতে পারে, যা দাদের চিকিৎসাকে আরো কঠিন করে তুলবে।
  • রাস্তায় ফেরি করা কোন প্রকার চুলকানি ওষুধ ব্যবহার করবেন না।
  • হোমিওপ্যাথি ঔষধ ব্যবহার বা গ্রহণ করবেন না।
  • অতিরিক্ত চুলকাবেন না আর যদিও চুলকান সাথে সাথে সাবান দিয়ে হাত দিয়ে ফেলুন।
  • আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে ঠাট্টা বিদ্রুপ করবেন না।

দাদ রোগ প্রতিরোধে করণীয়:

দাদ রোগে যে কেউ আক্রান্ত হতে পারে কিন্তু নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে দাদ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। তাই দাদ রোগের ঝুঁকি কমাতে ঐ সকল বিষয় সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। আপনার শিশুর দাদ রোগ হলে তার ক্ষেত্রে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে। দাদ রোগ হলেও আপনার শিশুকে স্কুলে পাঠাতে পারেন কিন্তু এক্ষেত্রে শিক্ষককে তথ্যটি জানিয়ে রাখুন। এতে করে অন্য শিশুদের আপনার শিশুর সাথে সরাসরি সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে পারবে  যা দাদ ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধ করবে। নিচের দাদ রোগ প্রতিরোধের উপায় দেওয়া হলো:

১. অপরিষ্কার এবং স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে দাদ রোগের জীবাণো থাকার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এজন্য ত্বক সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন এবং শুকনো রাখুন। পা এবং হাতের নখ সবসময় ছোট এবং পরিষ্কার রাখুন।

২. খুব টাইট জুতা পরলে অথবা অতিরিক্ত ঘাম ঝরলে দাদ রোগ হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। এমন জুতা ব্যবহার করবেন যাতে আপনার পায়ের চারপাশে খুব সহজে বাতাস প্রবেশ করতে পারে।

৩. অন্য মানুষের ত্বকের সংস্পর্শে আসা হয় এমন খেলাধুলা যেমন: কুস্তি ,হাডুডু, বক্সিং ইত্যাদি করলেও এ রোগের ঝুঁকি অনেকটা বেড়ে যায়। তাই এই রকম খেলাধুলা করলে ম্যাচ শেষের পর ভালোভাবে গোসল করুন। ইউনিফর্ম ও সব ধরনের ক্রিয়া সরঞ্জাম সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন। অন্যদের সাথে সরঞ্জাম ভাগাভাগি না করে নিজস্ব সরঞ্জাম ব্যবহার করতে পারলে ভালো হয়।

৪. তাই জিম কিংবা পাবলিক টয়লেটে খালি পায়ে হাঁটা থেকে বিরত থাকুন।

৫. পশু পাখির সরাসরি সংস্পর্শে আসলে দাদ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই পশু পাখির সংস্পর্শে, বিশেষ করে পোষা প্রাণীদের সাথে মেলামেশার ক্ষেত্রে সর্তকতা অবলম্বন করুন। প্রাণীর সাথে সরাসরি সংস্পর্শে আসার পর ভালোভাবে হাত ধুয়ে নিন। আপনার পোষা প্রাণীর যদি দাদ হয়েছে বলে মনে হয় যেমন, প্রাণের শরীরে যদি দাদ দেখতে পান অথবা শরীরে পশম পরে যায় তাহলে তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান।

৬. আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহার্য  জিনিস ব্যবহার করলেও দাদ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই দাদ আছে এমন কারো  পোশাক, তোয়ালে, চাদর ব্যক্তিগত জিনিস ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।

*দাদ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির বা প্রাণীর সংস্পর্শে এলে, ত্বকের কোন পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে কিনা সে দিকে ভালো করে খেয়াল রাখুন।

শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে দাদ রোগ সহ বিভিন্ন ইনফেকশনে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। যেমন ডায়াবেটিস ও দীর্ঘদিন ধরেই স্টোরয়েড নিচ্ছে এমন ব্যক্তি। তাই এই সকল ক্ষেত্রে রোগ প্রতিরোধের উপায় গুলো ভালোভাবে মেনে চলা উচিত।

দাদ রোগ যদি চিকিৎসা না করা হয় তাহলে কি জটিলতা দেখা দিতে পারে?

দাদ রোগ যদিও প্রাণঘাতী নয় তবে খুবই বেদনাদায়ক তাই অবস্থা অতিরিক্ত খারাপ হওয়ার আগেই এই রোগের চিকিৎসা নেওয়া ভালো। নিচে এই রোগের চিকিৎসা না করা হলে যে সকল জটিলতা দেখা দিতে পারে তা তুলে ধরা হলো-

পোস্টহেরপেটিক নিউরালজিয়া:

কিছু মানুষের দাদ রোগ সেরে যাওয়ার পরেও অনেকদিন যাবত ব্যথা থেকে যায় এই অবস্থাকে পোস্টহেরপেটিক নিউরালজিয়া বলা হয়ে থাকে। এরকম লক্ষণ দেখা দেয় যখন ক্ষতিগ্রস্ত স্নায়ুতন্ত্র আপনার ত্বক থেকে মাথায় ব্যথার ভুল একটি বার্তা বা সংকেত পাঠায়।

স্নায়বিক সমস্যা:

ক্ষতিগ্রস্ত স্নায়ুর উপর নির্ভর করে দাদ মস্তিষ্কে বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ ভারসাম্য অথবা শ্রবণ সমস্যা কিংবা মুখের বিভিন্ন ধরনের পক্ষাঘাত সৃষ্টি করতে পারে।

দৃষ্টিশক্তি লোপ:

চোখের চারপাশে যে দাদ সৃষ্টি হয় তাকে চক্ষুদাদ বলে। এবং এতে চোখেও সংক্রমণ হতে পারে ফলের দৃষ্টি শক্তি নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

ত্বকের সংক্রমণ:

দাদ যদি ভালোভাবে চিকিৎসা করা না হয় তাহলে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ ঘটতে পারে। সঠিক সময় চিকিৎসা না নিলে এ রোগ সেরে না উঠে বরং পুরো শরীর ছড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হলে এমনটা হওয়ার সম্ভাবনা আরও অধিক পরিমাণে বেড়ে যায়। অনেকের ক্ষেত্রে দাদ রোগ সেরে যাওয়ার পরেও ত্বকে নানা রকম দাগ থেকে যায়। অনেক সময় আক্রান্ত স্থানটি চুলকানোর ফলে ফাটল সৃষ্টি হয়ে এর মধ্যে দিয়ে ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করে নতুন করে ইনফেকশন তৈরি করে যা দাদকে আরো কঠিন করে তুলতে পারে। তখন ত্বকের ওই আক্রান্ত স্থানটি লাল হয়ে ফুলে যায় ব্যথা হয় এবং অনেক সময় পুঁজ বের হয়। নখে দাদ রোগ হলে নখের আকার পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে।

জীবন ব্যবস্থাপনা:

চিকিৎসা পদ্ধতি ছাড়াও নিজের জীবনধারা পরিবর্তন করার মাধ্যমে দাদ রোগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গুলো বজায় রাখলে এবং দৈনন্দিন জীবনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে শরীরের অন্যান্য অংশ এবং দেহে এ রোগ সংক্রমণ এড়ানো যায়। সংক্রামিত স্থান স্পর্শ করার পর ভালো করে সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধুয়ে নেই যাতে দেহের অন্য অংশে এ রোগ ছড়াতে না পারে। সংক্রান্ত স্থান বারবার ধুয়ে পরিষ্কার রাখুন। খালি পায়ে ঘরে প্রবেশ করবেন না যেমন, লকাররুম বা জনসাধারণের স্থান ঘর ইত্যাদি। এসব স্থানে চটি পড়ে প্রবেশ করবেন যাতে সংক্রমণ না ছড়াতে পারে।

  • পরিষ্কার শুষ্ক কাপড় এবং পরিষ্কার অন্তর্বাস ব্যবহার করুন।
  • আপনার ব্যক্তিগত ব্যবহার্য জিনিস অন্যদের ব্যবহার করতে দিবেন না।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন এবং স্বাস্থ্যসম্মত ওজন বজায় রাখার চেষ্টা করুন।
পরিশেষে

দাদ একটি সাধারণ রোগ হলেও একটু অসতর্কতার কারণে এ রোগ অন্য মানুষকে আক্রান্ত করে ফেলতে পারে। তাই সঠিক চিকিৎসা গ্রহণের পাশাপাশি এ রোগ যাতে অন্য মানুষের দেহে সংক্রান্ত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরী। এজন্য নিজের ব্যবহৃত পোশাক, চাদর, তোয়ালে,গামছা ইত্যাদি যাতে অন্য মানুষ ব্যবহার না করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এছাড়াও এই রোগ যাতে বেশি সংক্রমিত না হয় সেজন্য উপযুক্ত সময় চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। কারণ সঠিক সময় চিকিৎসা না নিলে এ রোগ না সেরে পুরো শরীর ছড়িয়ে পড়তে পারে। দাদ রোগ প্রাণঘাতি না হলেও খুবই বেদনাদায়ক।  আপনি চাইলে ঘরোয়া উপায়েও এ রোগ নিরাময় করতে পারেন কিন্তু সেজন্য ধৈর্যের প্রয়োজন হয়। বয়স্ক মানুষের তুলনায় শিশুরা এই রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। শিশুরা এই রোগে আক্রান্ত হলে অযথা সময় নষ্ট না করে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া ভালো। কেননা এ রোগ আস্তে আস্তে পুরো শরীর ছড়িয়ে যেতে পারে। এছাড়া এ রোগ চোখের কাছাকাছি হলে কানা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এজন্য আমাদের সকলের উচিত এই রোগ সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে সঠিক সময় এই রোগের চিকিৎসা গ্রহণ করা যাতে তা এই রোগ পুরো শরীরের সংক্রমিত করতে না পারে।

আরো পড়ুন –

 

Related Post

মৃত্যু নিয়ে উক্তি

150+মৃত্যু নিয়ে উক্তি, বাণী, ক্যাপশন 2024

মৃত্যু নিয়ে উক্তি জন্মিলে মরিতে হবে আর এটাই সত্যি। মৃত্যু হচ্ছে সবচেয়ে চিরন্তন সত্যি। পৃথিবীতে প্রতিটি প্রাণীর মৃত্যুর স্বাদ অনুভব করতে হবে। সবসময় মৃত্যুর জন্য

Read More »
খুশির স্ট্যাটাস

200+ স্টাইলিশ খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন

খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন জীবনের সুন্দর খুশির মুহূর্ত আমরা সবাই বাঁধাই করে রাখতে চাই। আর এই খুশির মুহূর্তকে ধরে রাখার সবচেয়ে সহজ উপায়

Read More »

স্টাইলিশ ভালোবাসার ছন্দ | রোমান্টিক ছন্দ | Love Status Bangla

❤❤ভালোবাসার ছন্দ | ভালোবাসার ছন্দ রোমান্টিক | ভালোবাসার ছন্দ স্ট্যাটাস❤❤ ভালোবাসা হলো এক অন্যরকম অনুভূতির নাম, যা শুধুমাত্র কাউকে ভালবাসলেই অনুভব করা যায়। আমরা বিভিন্নভাবে

Read More »
মন খারাপের স্ট্যাটাস

মন খারাপের স্ট্যাটাস, উক্তি, ছন্দ, ক্যাপশন, কিছু কথা ও লেখা

মন খারাপের স্ট্যাটাস মন খারাপ – এই কষ্টের অনুভূতি কার না হয়? সবারই কখনো না কখনো সবারই মন খারাপ হয়। জীবনের ছোটোখাটো অঘটন থেকে শুরু

Read More »

Leave a Comment

Table of Contents