Dreamy Media BD

ওজন কমানোর উপায়

ওজন কমানোর উপায়

বর্তমানে ওজন কমানোর জন্য নানারকম পদ্ধতির প্রচলিত আছে। এর মধ্যে কোনটি সহজ আবার কোনটি বেশ কষ্টসাধ্য। শরীরে অতিরিক্ত ওজন কারো কাছেই ভালো লাগে না এটা একটি বিরক্তের কারণ। আবার ওজন কমানোর আকাঙ্ক্ষা থাকলেও এটা বেশ কষ্টসাধ্য প্রক্রিয়া যার জন্য সবার ওজন কমানো সম্ভব হয়ে ওঠে না। কিন্তু  শরীরের অতিরিক্ত ওজন দুশ্চিন্তার কারণ। এর ফলে আপনার বিভিন্ন ধরনের রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। আবার শরীরের অতিরিক্ত ওজন মানসিকভাবেও অবশস্তিতে রাখে। তাই প্রত্যেকেরই উচিত নিজের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা। আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন না ওজন কমানোর খুব সহজ কিছু উপায় আছে। এই উপায়গুলো যদি আপনি নিয়মিত ফলো করেন তাহলে আপনার শরীরের অতিরিক্ত ওজন খুব সহজেই দূর করতে পারবেন। চলুন তাহলেই ওজন কমানোর উপায়গুলো জেনে নিই:

ওজন কেন নিয়ন্ত্রণে রাখা প্রয়োজন

ব্যস্ততা পূর্ণ জীবনযাপন করার ফলে আমরা অনেকেই আমাদের স্বাস্থ্যের দিকে খুব একটা নজর দিতে পারি না। প্রতিনিয়ত আমরা ভাজাপোড়া এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে যাচ্ছি। এতে করে খুব দ্রুতই আমাদের ওজন বেড়ে যাচ্ছে। কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছেন এই অতিরিক্ত ওজন আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কতটা কুফল বয়ে আনতে পারে? অতিরিক্ত ওজন শরীরের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। ডায়াবেটিস উচ্চ রক্তচাপ হৃদরোগ ইত্যাদি রোগ সাধারণত বাড়তি ওজনের কারণেই হয়ে থাকে। এমনকি অতিরিক্ত ওজনের ফলে মাংসপেশীতে ব্যথা, পিত্তথলিতে সমস্যা এবং শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা হয়ে থাকে। কারণ ওজন বাড়লে আমাদের শরীরে চর্বির পরিমাণ বেড়ে যায়। আর অতিরিক্ত চর্বি শরীরের জন্য কখনোই ভালো নয়। ওজন বৃদ্ধি পেলে হাঁটাচলা করা ও সমস্যা হয়ে পড়ে। অল্প একটু পরিশ্রম করলেই শরীরে ক্লান্তি এসে পড়ে। ফলে দৈনন্দিন কাজ করা সক্ষমতা ও কমে যায়। অতিরিক্ত ওজনের ফলে আরো নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই ওজন সবসময় নিয়ন্ত্রণে রাখা প্রয়োজন। প্রতিদিন ওজন মাপা প্রয়োজন। ওজন বেড়ে যাওয়া মাত্রই তা নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে তাহলেই সুস্থ থাকা যাবে।

ওজন কমানোর কিছু সহজ উপায় 

ওজন কমানোর খুব সহজ কিছু উপায় আছে। এই উপায় গুলো নিয়মিত ফলো করলে আপনি খুব সহজেই ওজন কমাতে পারবেন। যেমন অনেক খাবার আছে যে খাবারগুলো খেলে আপনি খুব সহজে ওজন কমাতে পারবেন। আবার কিছু অভ্যাস আছে এই অভ্যাসগুলো যদি আপনি নিজের মধ্যে তৈরি করতে পারেন তাহলে খুব সহজে ওজন কমাতে পারবেন। চলুন এমনই অনেক উপায় সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক:

১) ডায়েটে প্রোটিন যুক্ত করুন: ওজন কমানোর সময় আপনার দেহ ও স্বাস্থ্য সুস্থ রাখতে পরিমাণ মতো প্রোটিন খাওয়া জরুরী। কারণ প্রোটিন হচ্ছে পুষ্টির উৎস একে পুষ্টির রাজা বলা হয়। যদি আপনি শরীরের প্রয়োজন এর তুলনায় অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহণ করেন তাহলে আপনার ওজন বেড়ে যাবে। আর এই অতিরিক্ত প্রোটিন গুলোকে নিঃশেষ করতে প্রয়োজন হয় অনেক বেশি প্রোটিনের। একটি উচ্চমাত্রায় প্রোটিন যুক্ত খাবার প্রতিদিন ৮০-১০০ ক্যালোরি পর্যন্ত বিপাক ক্রিয়া বাড়ায়।

বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা যায় পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন খোদা কমায় ও শরীরের ওজনকে উন্নত করে। স্বাস্থ্যকর প্রোটিনের উৎসগুলো হচ্ছে, মাছ, গরুর মাংস, মুরগি, সামুদ্রিক খাবার, চিংড়ি, ডিম ,মটরশুঁটি,লেবু ইত্যাদি।

২)বেশি বেশি পানি পান করুন: ওজন দ্রুত কমানোর জন্য বেশি বেশি পানি পান করা অত্যন্ত জরুরী।প্রতি এক ঘণ্টায় হাফ লিটার পানি পান করলে ২০% থেকে ৩০% ক্যালরি পোড়াতে পারে।

খাবারের আগে যদি পানি পান করেন তাহলে ও আপনার ক্যালরির পরিমাণ কমবে। বিশেষ করে বয়স্ক ও মধ্যবয়সী ব্যক্তিদের। যাও ওজন কমাতে বেশ সাহায্য করে।

fat man

৩)খাবারে অতিরিক্ত চিনি যুক্ত করা থেকে বিরত থাকুন: খাবারের অতিরিক্ত চিনি যুক্ত করলে বিভিন্ন রোগের আশঙ্কা থাকে সেই সাথে ওজনও বৃদ্ধি পায়। খাবার অতিরিক্ত চিনি যোগ করলে ডায়াবেটিস ক্যান্সার ইত্যাদির মত ভয়ংকর রোগ হয়ে থাকে। একজন আমেরিকান তার প্রতিদিনের খাবারে গড়ে ১৫  চামচ চিনি যোগ করে থাকে। আমাদের দেশেও বর্তমানে এইসব খাবার আমদানি করা হচ্ছে। এইসব আমদানিকৃত প্রক্রিয়াজাত খাবারের মধ্যে ঠিক কত পরিমান চিনির যোগ করা আছে তা নির্ধারণ করা যায় না। তাই এই সকল খাবার খাওয়ার আগে অবশ্যই সতর্ক থাকবেন। আপনি যদি আপনার ওজন কে নিয়ন্ত্রণ করতে চান ওজন কমাতে চান তাহলে খাবারে চিনি যোগ করা কমাতে হবে।

৫) তরল ক্যালরি এড়িয়ে চলুন: শরীরে অতিরিক্ত ওজন কমানোর অন্যতম উপায় হল তরল ক্যালরি এড়িয়ে চলা। সাধারণত, কোমল পানীয়, ফলের রস, চকলেট দুধ ,এনার্জি ড্রিংকস, সফট ড্রিংকস ইত্যাদিতে তরল ক্যালোরি পাওয়া যায়। এই পানিয় গুলি স্বাস্থ্যের জন্য বেশ খারাপ। কারণ এই পানিয়গুলো ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। বিভিন্ন গবেষণা এটা প্রমাণিত যে এই কোমল পানীয় গুলো নিয়মিত শিশুরা খেলে শিশুদের ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। আপনার শরীর ও মস্তিষ্কের জন্য তরল ক্যালরি থেকে সলিডক্যালারি গুলো বেশি প্রয়োজন।

৬)প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন: প্রক্রিয়াজাত খাবারগুলোতে সাধারণত অতিরিক্ত চর্বি, অতিরিক্ত শর্করা ও ক্যালোরি থাকে। এ সকল খাবার অনেক মজাদার হয়। যার জন্য এই খাবারগুলো একবার খেলে বারবার খাওয়ার ইচ্ছা জাগে। এসব খাবারে অতিরিক্ত শর্করা, চর্বি ও ক্যালোরি থাকার কারণে মানুষের ওজন দ্রুত বৃদ্ধি করে ফেলে। আপনি যদি আপনার শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে চান তাহলে এই খাবারগুলো এড়িয়ে চলাই ভালো।

৭) অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার পরিহার করুন: শরীরের ওজন কমানোর জন্য বেশি বেশি কার্বোহাইডের যুক্ত খাবার খাবেন না। অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার শরীরে অতিরিক্ত ওজনের কারণ। আপনার শরীরের ওজন কমানোর জন্য ডায়েট চার্টে কম কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার যুক্ত করুন। কম কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার গুলো হজমেও সহায়তা করে যার কারণে আপনার ক্ষুধা কম লাগবে। এর ফলে আপনার শরীরে কম ক্যালরি প্রবেশ করবে এবং আপনার ওজন দ্রুত হ্রাস পাবে। এছাড়া লো ফ্যাট ডায়েটের চেয়ে লো কার্ব ডায়েট  বেশি কার্যকর। এর মাধ্যমে ওজন কমানোর সাথে সাথে বিভিন্ন রোগ থেকেও রক্ষা পাওয়া সম্ভব।

৮) নিয়মিত গ্রিন টি পান করুন: ওজন কমানোর খুব ভালো একটি উপায় হচ্ছে নিয়মিত চিনি ছাড়া গ্রিন টি খাওয়া। গ্রিন টি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। যা ফ্যাট বার্ন ও ওজন কমাতে বেশ সাহায্য করে। গ্রিন টি আমাদের শরীরের এনার্জি লেভেল ৪% বৃদ্ধি করতে পারে এবং ১৭% ফ্যাট বার্ন করতে সাহায্য করে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রতিদিন চার কাপ গ্রিন টি পান করলে অতিরিক্ত ৪০০ ক্যালোরি  প্রতি সপ্তায় ক্ষয় করা সম্ভব। যা আমাদের শরীরের ওজন ঠিক রাখতে সাহায্য করবে। তাছাড়াও পেটের অতিরিক্ত মেদ ও চর্বি কমানোর জন্য গ্রিন টি বেশ কার্যকরী।

৯) বেশি বেশি শাকসবজি ও ফল খান: ওজনের কমানোর খুব কার্যকরী উপায় হচ্ছে বেশি বেশি শাকসবজি ও  ফল খাওয়া। শাকসবজি এবং ফল হচ্ছে একটি স্বাস্থ্যকরী খাবার। এই খাবারগুলি পুষ্টিতে ভরপুর এবং কম ক্যালরিযুক্ত। যা আপনার ওজন কমাতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন‌ করে। কম ক্যালরিযুক্ত পুষ্টিকর শাকসবজি গুলো হচ্ছে, টমেটো, শাক, ব্রকলি, ফুলকপি ,বাঁধাকপি, লেটুস, শসা ও সুইস চারড। যারা নিয়মিত ফল ও শাকসবজি খায় তাদের অতিরিক্ত ওজন বাড়ার সম্ভাবনা খুব কম হয়। আর যাদের ওজন বেশি হয় তারা যদি এই খাবারগুলো নিয়মিত খায় তাদের ওজন খুব দ্রুত কমতে শুরু করে।

১০) ধীরে ধীরে খাবার খান: আস্তে আস্তে খাবার গ্রহণ করা ওজন কমানোর ভালো একটি উপায়। ধীরে ধীরে খাবার গ্রহণ করলে শরীরে কম ক্যালরি প্রবেশ করে এবং হরমোন উৎপাদন ও বাড়ে যা ওজন কমাতে সাহায্য করে। যদি আপনি খুব তাড়াতাড়ি খান তাহলে আপনার শরীরে অতিরিক্ত ক্যালরি প্রবেশ করে। যা শরীরের জন্য মোটেও ভালো নয়।

১১) নারকেল তেল ব্যবহার করুন: নারকেল তেলের মধ্যে মিডিয়াম চেইন ও ট্রাইগ্লিসারাইডস নামে এক ধরনের চর্বি থাকে যা অন্যান্য ফ্যাটের তুলনায় অনেক ভিন্ন‌। কম ক্যালরি খাবার গ্রহণ করার পর নারকেল তেল আপনার বিপাককে কিছুটা বাড়িয়ে তুলতে পারে যা ওজন কমাতে বেশ সাহায্য করে। নারকেল তেল পেটের ক্ষতিকারক চর্বি কমাতে সাহায্য করে। তার মানে এই না আপনি ওজন কমানোর ডায়েট এর মধ্যে নারকেল তেল যুক্ত করবেন। তবে মনে রাখবেন শুধুমাত্র অন্যান্য পেটের পরিবর্তে নারকেল তেল ব্যবহার করবেন।

১২)ওজন কমানোর ডায়েটে ডিম যুক্ত করুন: ডিম ওজন কমানোর জন্য ভালো একটি খাবার। এটি কম ক্যালরিযুক্ত, উচ্চ প্রোটিন, সস্তা ও সকল ধরনের পুষ্টিতে ভরপুর। কম প্রোটিন যুক্ত খাবারের তুলনায় উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার খোদা কমাতেও সাহায্য করে এবং আত্মতৃপ্তিও দেয়।  আপনি আপনার প্রতিদিনের সকালের নাস্তায় একটি করে ডিম রাখেন তাহলে ৮ সপ্তাহে আপনার ৬৫ শতাংশ ওজন কমাতে পারবেন। তাই প্রতিদিন ডিম খেয়ে পেট ভরা রাখতে পারেন।

১৩) ওজন কমানোর খাদ্য তালিকায় মসলাযুক্ত খাবার যুক্ত করুন:ওজন কমানোর ডায়েটে বিভিন্ন ধরনের মসলা যেমন, হলুদ,ধনে, জিরা গুড়া ইত্যাদি যুক্ত করুন। খাদ্য তালিকায় এগুলো সব সময় রাখবেন কখনো বাদ দিবেন না। হিমস লাইক ক্যাপাসাইন নামে  এক ধরনের উপাদান রয়েছে যা বিপাক ক্রিয়া বৃদ্ধি করে এবং ফ্যাট ও মেদ কমাতে সাহায্য করে ‌। এছাড়াও সব মসলা ক্ষুধা কমায় যা ক্যালরি গ্রহণ কমায় এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে।

১৪) ফাইবার যুক্ত খাবার খান: ফাইবার যুক্ত খাবার সহজে পেট খালি হতে দেয় না। ফাইবার যুক্ত খাবারের এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া আছে যা ওজন কমাতে বেশি সাহায্য করে। এজন্য ওজন কমানোর ডায়েটে প্রচুর পরিমাণে ফাইবারযুক্ত খাবার যোগ করুন। যা দ্রুত আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করবে। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারগুলো হল, গোটা গম এর পাস্তা, গোটা শস্যের রুটি, বার্লি ,ফল ,ওটস ,শাকসবজি, মটরশুটি ,বাদাম ,ডাল ,গাজর ইত্যাদি।

১৫)পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান: পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম ওজন কমানোর জন্য বেশ কার্যকর এবং ভবিষ্যতে ওজন বৃদ্ধি রোধেও সাহায্য করে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে যারা পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমায় তাদের তুলনায় যারা পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমায় না তাদের ওজন বাড়ার সম্ভাবনা ৫৫% বেশি থাকে। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে এটি বেশি দেখা যায়। ঘুমের অভাবে  কর্টিসলের মাত্রা বেড়ে যায় যা ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করতে পারে। এছাড়াও কম ঘুমানোর ফলে হজম শক্তিতেও ব্যাপক প্রভাব ফেলে।

১৬) অতিরিক্ত খাদ্যের প্রতি আসক্ত কমান: অতিরিক্ত খাদ্যের আসক্তির কারণে আপনার মস্তিষ্ক বারবার খাওয়ার আকাঙ্ক্ষা জাগায়। প্রায় মানুষের ক্ষেত্রে এটি অতিরিক্ত খাওয়ার একটি প্রদান কারণ। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে প্রায় ২০% মানুষ এই খাদ্য শক্তিতে ভুগছেন এর ফলে তাদের শরীরে অনেক ক্ষতি হচ্ছে। সাধারণত ফাস্টফুড, অতিরিক্ত চিনি যুক্ত খাবার, ও চর্বি জাতীয় খাবারের প্রতি মানুষের আসক্তি হয়ে থাকে। ওজন কমাতে চাইলে এসব খাবারের প্রতি আসক্তি বাদ দিতে হবে।

১৭) নিয়মিত ব্যায়াম করুন: নিয়মিত ব্যায়াম করা ওজন কমানোর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শারীরিক ব্যায়াম করলে খুব সহজে ওজন কমে। আপনি জগিং থেকে শুরু করে প্রতিদিন সকালে দৌড়াতে পারেন। এছাড়াও সাঁতার কাটতে পারেন, এভাবে দ্রুত ক্যালোরি বার্ন হবে। ফলে আপনার শরীরের ওজন কমতে শুরু করবে। আপনি যদি নিয়মিত ওজন কমানোর ব্যায়াম করেন তাহলে পেটের মেদ ও ফ্যাট ধীরে ধীরে কমবে। যার ফলে শরীরের ওজন ও ধীরে ধীরে কমতে থাকবে। শারীরিক মনের প্রশান্তি যোগায় পাশাপাশি বিভিন্ন রোগ থেকে বাঁচতেও সাহায্য করে।

১৮) ক্যালোরি গণনা করে খাবার গ্রহণ করুন: শরীরের ওজন কমানোর জন্য প্রতিদিন ক্যালরি গণনা করে খাবার গ্রহণ করা উচিত। এর জন্য আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে কোন খাবারে কত ক্যালরি আছে। এই কাজটি আপনি কয়েকটি উপায় করতে পারেন। যেমন সারা দিনে কি কি খাবার খাচ্ছেন তা ছবি তুলে রাখতে পারেন এবং দিনশেষে এই খাবারগুলোর ক্যালরির হিসাব করতে পারেন। এছাড়া একটি ডাইরি বানাতে পারেন যেখানে ক্যালরির হিসাব রাখবেন। অনলাইন থেকে খুব সহজেই জানতে পারবেন কোন খাবারে কত ক্যালরি আছে। এভাবে নিয়মিত ক্যালোরি গণনা করে খাবার খেলে খুব সহজে ওজন কমাতে পারবেন।

১৯) ছোট প্লেটে খাবার খান: আপনি যদি বড় প্লেটে খাবার খান তাহলে প্লেটে খাবার বেশি আটবে যার ফলে আপনার বেশি খাবার খেতে মন চাইবে। কিন্তু ছোট প্লেট গুলি কম খেতে সাহায্য করে। কারণ ছোট প্লেটগুলোতে খাবারের পরিমাণ কম থাকে। এতে মনে হবে আপনি ঠিকই খাবার খেয়েছেন কিন্তু তা অল্প পরিমাণই হবে। তাই খাবার খাওয়ার সময় বড় প্লেটের পরিবর্তে ছোট প্লেট ব্যবহার করুন যা ওজন কমাতে সাহায্য করবে।

২০) কম ক্যালরিযুক্ত খাবার খান: কম ক্যালরিযুক্ত খাবার গ্রহণ করুন এতে  দ্রুত আপনার ওজন কমবে। কোনভাবেই অতিরিক্ত ক্যালরিযুক্ত খাবার ডায়েটে রাখবেন না। কারণ বেশি ক্যালরিযুক্ত যুক্ত খাবারগুলো গ্রহণ করলো ওজন দ্রুত বেড়ে যায়। ফাস্টফুড ,বার্গার ইত্যাদি খাবার হাই ক্যালরিযুক্ত যুক্ত। ওজন কমানোর জন্য এসব খাবার পরিহার করুন। নিয়মিত কম ক্যালরিযুক্ত  খাবার খেলে দ্রুত আপনার ওজন কমে যাবে।

২১) রাতে তাড়াতাড়ি খাবার খান: রাতের খাবার  তাড়াতাড়ি  খেয়ে নিবেন। কারণ রাতে খাবার খাওয়ার পরেই শুয়ে পড়া হয় এর জন্য ওজন বাড়ার আশঙ্কা থাকে। যদি তাড়াতাড়ি খাওয়ার পর খিদে পায় তাহলে এক গ্লাস দুধ খেয়ে নিতে পারেন।

২২) ইতিবাচক মনোভাব রাখুন: একজন ব্যক্তির ওজন যদি তার আশা অনুযায়ী না কমে তাহলে হতাশ হয়ে যেতে পারে। এর জন্য হতাশ হবেন না। ওজন কমানো হচ্ছে একটি ক্রমান্বয়ে প্রক্রিয়া। সফলভাবে ওজন কমাতে হলে আপনাকে ধৈর্য ধরতে হবে। কখনো কখনো লক্ষ্য গুলোকে আপনার পুনরায় সেট করার প্রয়োজন হতে পারে। সব সময় ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখুন। আপনি যে ওজন কমাতে পারবেন এই আত্মবিশ্বাস রাখুন। একটি কথা সবসময় মনে রাখবেন ওজন কমানোর কোন দ্রুত সমাধান নেই এটি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। প্রতিদিন অত্যন্ত তিরিশ মিনিট ব্যায়াম করুন। স্বাস্থ্যকর খাদ্য অভ্যাস গড়ে তুলুন। খাবারের তালিকায় স্বাস্থ্যকর খাবারগুলো যুক্ত করুন।

slim girl

ওজন বৃদ্ধির কারণ

ওজন কমানোর আগে জানা প্রয়োজন কেন ওজন বাড়ে। আপনি যদি ওজন বাড়ার কারণ গুলো জানতে পারেন তাহলে খুব সহজেই ওজন কমাতে পারবেন। এইজন্য ওজন বাড়ার কারণগুলো সম্পর্কে জেনে রাখা ভালো। চলুন ওজন বাড়ার কারণগুলো সম্পর্কে জেনে নেই:

১) বংশগত কারণে

২) অতিরিক্ত খাওয়া দাওয়া করলে

৩) খুব বেশি অলস হলে

৪) বেশি চর্বি জাতীয় খাবার খেলে

৫) কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাদ্য অতিরিক্ত খেলে

৬) বিভিন্ন ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে।

৭) দেহে বিভিন্ন রোগের কারণে

ওজন কমানোর নরমাল ডায়েট চার্ট

সুস্বাস্থ্যপূর্ণ জীবন যাপনের জন্য যেমন আপনার ব্যায়াম করা প্রয়োজন। ঠিক তেমনি আপনি যদি আপনার শরীরের ওজন কমাতে চান তাহলে আপনার সঠিক শরীরচর্চার পাশাপাশি উপযুক্ত ডায়েট চার্ট রাখা প্রয়োজন। কিন্তু হ্যাঁ ওজন কমানোর ডায়েট চার্টটি অবশ্যই পুষ্টিকর হতে হবে। চলুন তাহলে দেখে নেই ওজন কমানোর সঠিক ডায়েট চার্ট:

প্রতিদিন সকালে উঠে নিয়মিত ব্যায়াম করার অভ্যাস করুন। শরীর চর্চা করলে আপনার মেদ কমার সাথে সাথে প্রতিদিন কাজে সক্রিয় থাকার ক্ষমতা যোগাবে। ব্যায়াম শেষ করার পর এক কাপ কুসুম গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে খেয়ে নিন। ১৫ মিনিট পরে চিনি ছাড়া গ্রিন টি বা চা সঙ্গে একটি ফাইবার বিস্কুট খেয়ে নিন।

সকালের খাবার (৮.৩০-৯.৩০)

প্রতিদিন সকালে উঠে নিয়মিত ব্যায়াম করার অভ্যাস করুন। শরীর চর্চা করলে আপনার মেদ কমার সাথে সাথে প্রতিদিন কাজে সক্রিয় থাকার ক্ষমতা যোগাবে। ব্যায়াম শেষ করার পর এক কাপ কুসুম গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে খেয়ে নিন। ১৫ মিনিট পরে চিনি ছাড়া গ্রিন টি বা চা সঙ্গে একটি ফাইবার বিস্কুট খেয়ে নিন। সকালের ব্রেকফাস্ট সব সময় চেষ্টা করবেন এই সময়টাতে করতে। ওজন কমানোর ডায়েট চার্টে সকালের ব্রেকফাস্টে দুইটা রুটি, একটি সেদ্ধ ডিমের সাদা অংশ ও এক বাটি সবজি রাখবেন।

দুপুরের খাবার (১.০০-২.০০)

দুপুরের খাবারে এক প্লেট ভাত, সাথে এক বাটি সবজি, এক পিস মাছ ও এক বাটি ডাল খাবেন। প্রতি সপ্তাহে দুই দিন মুরগির মাংস খাবেন। খাবার শেষ করার পর শসা ও টক দই খাবেন। দুপুরের খাবারে, পটল ,গাজর, বাঁধাকপি ,সিম, ফুলকপি ,সরিষা শাক ,পালং শাক, উচ্ছে ,টমেটো ইত্যাদি সবজি খাবেন এগুলো ওজন হ্রাসের জন্য বেশ উপকারী।

বিকালের খাবার (৪ .০০-৪.৩০)

দুপুরের খাবারের পরে বিকালে কিছু খাওয়া উচিত। বিকালে এক কাপ গ্রিন টির সাথে চিনি বা মিষ্টি ছাড়া বিস্কুট খেতে পারেন।

সন্ধ্যার খাবার (৭.০০)

সন্ধ্যায় ফল ও বাদাম খাবেন ।কোনভাবেই ভারি খাবার খাওয়া যাবেনা।

রাতের খাবার (৮.০০-৮.৩০)

রাতের খাবার তাড়াতাড়ি খাওয়ার চেষ্টা করবেন। রাতে এক প্লেট ভাত , এক বাটি সবজি বা চিকেন সুপ,ও সাথে দুইটি রুটি খাবেন। খাওয়ার পর শসা খেতে ভুলবেন  না।

ওজন কমানোর নরমাল ডায়েট চার্টের উপকারিতা

১) ওজন হ্রাস করতে সাহায্য করবে:

একটি সঠিক ডায়েট চার্ট অনুসরণ করার সবচাইতে বড় সুবিধা হল নিজের লক্ষ্য অর্জন। এটি আপনার লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করবে ও মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করবে যা ধীরে ধীরে আপনার ওজন কমাতে অনেকটাই সহায়তা করবে। আপনার কখন খাওয়া প্রয়োজন ,কি খাওয়া প্রয়োজন এবং কতটুকু খাওয়া প্রয়োজন তা একটি ডায়েট চার্ট নিয়ন্ত্রণ করে।

২) পুষ্টির ভারসাম্য বজায়:

একটি সঠিক ডায়েট চার্ট শরীরের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে সেইসাথে দেহের বিপাকের কাজ দ্রুত গতিতে পালন করে।

৩) সুস্থ লাইফস্টাইল:

যেহেতু ডায়েট চার্ট এ কোন প্রকার  অস্বাস্থ্যকর খাদ্য থাকে না তাই আপনি একটি সুস্থ সুন্দর জীবন যাপন করতে পারবেন। এছাড়াও নির্দিষ্ট সময়ে খাওয়ার অভ্যাস করার সাথে সাথে আপনি সুস্থ থাকবেন পাশাপাশি স্বাস্থ্য সমস্যা গুলো থেকেও মুক্তি পাবেন।

৪) ব্যালেন্স ডায়েট:

একটি সঠিক ডায়েট চার্ট   আপনাকে ব্যালেন্স ডায়েট পরিকল্পনা তৈরিতে সাহায্য করবে।ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান অন্তর্ভুক্ত করবে। যেমন, কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট ,ভিটামিন,মিনারেল ,প্রোটিন ও ফাইবার।

কিটো ডায়েট কি এবং কেন করা হয়?

বর্তমানে কিটো ডায়েট খুব প্রচলিত একটি শব্দ। সুপার লো কার্ব ডায়েটকে সংক্ষেপে কিটো ডায়েট বলা হয়। আমরা যখন নরমাল কোন ডায়েট ফলো করি তখন আমাদের খাদ্যে ৫০% কার্বোহাইড্রেট, ২০% প্রোটিন এবং ৩০% ফ্যাট থাকে। কিন্তু কিটো ডায়েটে ৫% কার্বোহাইড্রেট, ২৫ পার্সেন্ট প্রোটিন এবং ৭০ পার্সেন্ট ফ্যাট থাকে। ওজন বেড়ে গেলেই দ্রুত ওজন কমানোর জন্য অনেকেই কিটো ডায়েট করে থাকেন। এবং এটি অত্যন্ত উপকারী ও কার্যকরী। কিটো ডায়েট করার মাধ্যমে খুব সহজেই আপনি ওজন কমাতে পারবেন। এমনকি এই ডায়েটে এক মাসে ২০ কেজির মতো ওজন কমানোও সম্ভব। তবে কিটো ডায়েট করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত।

কিভাবে করবেন কিটো ডায়েট

সকালের নাস্তা:

সকাল আটটা থেকে সাড়ে আটটার মধ্যে সকালের নাস্তা সেরে ফেলবেন। সকালের নাস্তায় চিনি ছাড়া এক কাপ চা পান করতে পারেন। চা বানানোর সময় এতে সামান্য আদা, লেবু‌, এবং লবণ সংযোজন করুন। এছাড়া আপনি কুসুম গরম পানিতে লেবু চিপেও পান করতে পারেন। কিংবা পানিতে অ্যাপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে পান করতে পারেন।

দুপুরের খাবার:

দুপুরের খাবার খাওয়ার সময় যে পানিটা পান করবেন তাতে অবশ্যই অ্যাপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে খাবেন। কারণ এই পানীয়টি চর্বি কাটাতে সাহায্য করবে। দুপুরের খাবারের তালিকায় শাক, সবজি, মাছ অথবা মাংস কিংবা ঘিয়ে ভাজার ডিম রাখতে পারেন। এবং সাথে অবশ্যই সালাদ হিসেবে শসা, টমেটো এবং গাজর রাখবেন। মাছ খেলে মাংস খাবেন না। এবং দুই টুকরোর বেশি মাছ বা মাংস খেতে যাবেন না।

বিকেলের নাস্তা:

বিকেলের রাস্তায় সামান্য বাদাম খেতে পারেন অথবা চা পান করতে পারেন কিংবা ঘিয়ে ভাজা একটি ডিম খেতে পারেন। একদিনে আপনি ছয়টা ডিম খেতে পারবেন। কারণ এতে প্রোটিনের ভালো উৎস থাকে।

রাতের খাবার:

রাতের খাবার খাওয়ার সময় যে পানিটি খাবেন এতেও অ্যাপেল সিডার ভিনেগার মিক্স করে খাবেন। দুপুরের খাবারের মতোই রাতের খাবারের তালিকা করবেন। এবং রাত আটটার মধ্যে খাবার খেয়ে নিতে হবে।

কিটো ডায়েটের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

কিটো ডায়েট এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। ডায়েটটি অনুসরণ করার পূর্বে অবশ্যই আপনার তা জেনে নেওয়া উচিত। পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো হল:

১) হঠাৎ করে কিটো ডায়েট করার ফলে শরীরে পানির পরিমাণ কমে যেতে পারে এবং রক্তচাপ ও বেশি হতে পারে।

২) কিটো ডায়েটে অতিরিক্ত ফ্যাট গ্রহণ করতে হয় এবং এর ফলে হজমে সমস্যা দেখা দিতে পারে।

৩) কোষ্ঠকাঠিন্যতা দেখা দিতে পারে।

৪) হঠাৎ করে খাবারের তালিকার পরিবর্তনের কারণে ডায়রিয়া হতে পারে।

তবে, কিছুদিন কিটো ডায়েট ফলো করলে তার শরীরের সাথে মানিয়ে যায় এবং পরবর্তীতে আর কোন সমস্যা হয় না। তবুও অবশ্যই কিটো ডায়েট ফলো করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।

সবশেষে, যদি আপনি খুব সহজে আপনার শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে চান তাহলে উপরোক্ত উপায় গুলো নিয়মিত ফলো করতে পারেন। এগুলোর কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই, সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে আপনি আপনার ওজনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। তাই ওজন কমাতে উপরোক্ত উপায় গুলো ফলো করুন।

আরো পড়ুন –

 

Related Post

মৃত্যু নিয়ে উক্তি

150+মৃত্যু নিয়ে উক্তি, বাণী, ক্যাপশন 2024

মৃত্যু নিয়ে উক্তি জন্মিলে মরিতে হবে আর এটাই সত্যি। মৃত্যু হচ্ছে সবচেয়ে চিরন্তন সত্যি। পৃথিবীতে প্রতিটি প্রাণীর মৃত্যুর স্বাদ অনুভব করতে হবে। সবসময় মৃত্যুর জন্য

Read More »
খুশির স্ট্যাটাস

200+ স্টাইলিশ খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন

খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন জীবনের সুন্দর খুশির মুহূর্ত আমরা সবাই বাঁধাই করে রাখতে চাই। আর এই খুশির মুহূর্তকে ধরে রাখার সবচেয়ে সহজ উপায়

Read More »

স্টাইলিশ ভালোবাসার ছন্দ | রোমান্টিক ছন্দ | Love Status Bangla

❤❤ভালোবাসার ছন্দ | ভালোবাসার ছন্দ রোমান্টিক | ভালোবাসার ছন্দ স্ট্যাটাস❤❤ ভালোবাসা হলো এক অন্যরকম অনুভূতির নাম, যা শুধুমাত্র কাউকে ভালবাসলেই অনুভব করা যায়। আমরা বিভিন্নভাবে

Read More »
মন খারাপের স্ট্যাটাস

মন খারাপের স্ট্যাটাস, উক্তি, ছন্দ, ক্যাপশন, কিছু কথা ও লেখা

মন খারাপের স্ট্যাটাস মন খারাপ – এই কষ্টের অনুভূতি কার না হয়? সবারই কখনো না কখনো সবারই মন খারাপ হয়। জীবনের ছোটোখাটো অঘটন থেকে শুরু

Read More »

Leave a Comment

Table of Contents