Dreamy Media BD

গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায়

গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায়

বর্তমান যুগে এমন কোন মানুষ পাওয়া যাবে না যে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগছে না। প্রায় সব মানুষই গ্যাস্ট্রিকের যন্ত্রণায় ভুগে থাকেন। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার মূল কারণ হচ্ছে, অতিরিক্ত তেল যুক্ত খাবার, তেলে ভাজা খাবার, ভাজাপোড়া খাওয়া ইত্যাদি এসব কারণে আমাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দেয়। এজন্য সারা বিশ্বের প্রচুর মানুষ গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার ভুগে।

 সবারই কমবেশি গ্যাস্টিক আছে । কারো গ্যাস্ট্রিক আওতার মধ্যে আবার কারো আওতার বাইরে। হাইড্রোজেন, মিথেন বা কার্বন-ডাই-অক্সাইড এর মত গ্যাস হজমের সময় পাকস্থলীতে  জমা হয় যার ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়। আপনি যদি একটু নিয়ম মেনে চলেন তাহলে খুব সহজে গ্যাস্ট্রিক থেকে পরিত্রাণ পেতে পারেন। মনে রাখবেন গ্যাস্ট্রিক কোনো রোগ নয়। আমাদের কিছু ভুলের কারণে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়ে থাকে।

 এই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার জন্য খুব সহজ কিছু উপায় আছে। আপনি যদি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগেন তাহলে প্রাথমিক অবস্থায় আপনাকে ওষুধ খেতে হবে না ঘরোয়া কিছু সহজ উপায় এর মাধ্যমে গ্যাস্ট্রিক দূর করতে পারবেন। এছাড়াও আরো কিছু উপায় আছে যার মাধ্যমে আপনি চিরতরে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। চলুন তাহলে এই উপায়গুলো জেনে নিই:

গ্যাস্ট্রিক কি

পাকস্থলী আমাদের পরিপাকের অন্যতম অঙ্গ। আমরা যে খাবারগুলো খাই এগুলো গ্যাস্ট্রিকের জারক রস দ্বারা পরিপাক প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে আমাদের খাবার হজমে সাহায্য করে। হজম প্রক্রিয়ায় পাকস্থলী থেকে বেশ কিছু হরমোন নিঃসৃত হয়। এরমধ্যে গ্যাস্ট্রিক গ্রন্থির রস অন্যতম। আমরা যদি দীর্ঘ সময় ধরে না খেয়ে থাকি তাহলে এই রস পাকস্থলীতে এসে জ্বালাপোড়ার সমস্যা সৃষ্টি করে। এর প্রভাবে পরবর্তীতে গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সারও হতে পারে। এর জন্য কোন কারণে যাতে গ্যাস্টিকের রসের তারতম্য না ঘটে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এছাড়া পাকস্থলীতে ব্যাকটেরিয়া আক্রমণেও গ্যাস্ট্রিক হতে পারে।

গ্যাস্ট্রিক এর  কারণ

অনেক কারণেই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে। এরমধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কারণ হচ্ছে:

১) খারাপ খাওয়ার অভ্যাস: খুব তাড়াতাড়ি খাওয়া, বড় খাবার খাওয়া, বা অতিরিক্ত খাওয়া পাচনতন্ত্রের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এর ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়।

২) খাদ্য পছন্দ: কিছু কিছু খাবার যেমন, অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার, চর্বিযুক্ত খাবার, কার্বনেটেড পানীয়, ও প্রক্রিয়াজাত খাবারগুলো কিছু কিছু ব্যক্তিদের মধ্যে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা শুরু করতে পারে।

৩) বসে থাকা জীবনধারা: শারীরিক পরিশ্রম না করা ও অলস জীবন যাত্রা হজম প্রক্রিয়াকে ধির করে দিতে পারে। যার ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়।

৪) স্ট্রেস এবং উদ্বেগ: মানসিক চাপ হজমকে প্রভাবিত করতে পারে। এবং গ্যাস্ট্রিকের যন্ত্রণায় অবদান রাখে।

Gastric

গ্যাস্ট্রিকের লক্ষণ

বিভিন্ন উপসর্গের সাথে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা প্রকাশ পেতে পারে। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার জন্য এই লক্ষণগুলো শনাক্ত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চলুন তাহলে গ্যাস্ট্রিকের লক্ষণগুলো জেনে নিই:

১) পেটে জ্বালাপোড়া করা

২) পেট চিনচিন করা

৩) ক্ষুধা হ্রাস পাওয়া

৪) বদ হজম হওয়া

৫) অল্পতেই পেট ভরার অনুভূতি হওয়া

৬) বমি বমি ভাব

৭) বমি হওয়া।

৮) দাঁত ব্রাশ করার পরও মুখ থেকে দুর্গন্ধ বের হয়।

৯) ঘন ঘন গরম ঢেকুর আসে।

১০) পাকস্থলীর উপরের অংশ থেকে শুরু করে গলা পর্যন্ত জ্বালা।

১১) মলদ্বার দিয়ে গ্যাস বের হওয়া ও মলে অতিরিক্ত দুর্গন্ধ হওয়া।

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় কখন ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন

গ্যাস্ট্রিকের ঘরোয়া চিকিৎসার মাধ্যমে গ্যাস্ট্রিক দূর করা সম্ভব। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হয়। তবে আপনাকে জানতে হবে কখন ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত। নিচে এমন কয়েকটি লক্ষণ দেওয়া হল এই লক্ষণগুলো প্রকাশ পাওয়ার সাথে সাথেই ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।

যে লক্ষণ গুলো দেখা দিলে ডাক্তার দেখাবেন সেগুলো হচ্ছে:

১) খাবার গিলতে সমস্যা হলে

২) ওজন কমে গেলে

৩) বমি ভাব ও খাবারের রুচি কমে গেলে।

৪) পেটে চাকার মত শক্ত অনুভব হলে।

৫) আয়রনের অভাব জনিত রক্তশূন্যতা দেখা দিলে।

গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ

আপনি চাইলে খুব সহজেই ফার্মেসির দোকান থেকে গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ কিনে খেতে পারেন। তবে যে কোন ঔষধ খাওয়ার আগেই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ ডাক্তার আপনার শরীরের রোগ নির্ণয় করবে ও রোগের ধরনের উপর নির্ভর করে ঔষধ দিবে। চলুন তাহলে গ্যাস্ট্রিকের কিছু ঔষধের নাম জেনে নিই:

গ্যাস্টিকের ওষুধ গুলো হল, সেকলো, এক্সিলক-২০, ইসুটিন-২০, রেনিটিডিন,ওপি-২০, ওরট্রাক,নিউট্রাক, লোসেকটিল, সাজেল, ইসমিপ্রাজল বিপি, রাবিপ্রাজল, এন্টারসিড, ফিনিক্স-২০, ইত্যাদি।

গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ বেশি খেলে কি হয়

আমাদের দেশে প্রায় সকলেই গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খায়। কিন্তু বিশ্বের অন্যান্য দেশে কথায় কথায় গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খায় এরকম মানুষ কমই দেখা যায়। সাধারণ আলসারের ওষুধ ওমিপ্রাজল যদি একটানা অনেকদিন খাওয়া হয় তাহলে অস্টিওপোরোসিস বা হাড় ক্ষয়ের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। এবং কি ডায়রিয়ার মত সমস্যাও হতে পারে। তাই সচরাচর গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ খাওয়া যাবেনা। ঘরোয়া উপায়ে এর সমাধান করার চেষ্টা করতে হবে।

Ways to eliminate gastric

গ্যাস্ট্রিকের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা

রোগ নিরাময়ের একটি জনপ্রিয় পদ্ধতি হোমিওপ্যাথিক ওষুধ।  গ্যাস্ট্রিকের চিকিৎসার ক্ষেত্রেও হোমিওপ্যাথিক ওষুধ বেশ কার্যকর। এসব ওষুধ গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। চলুন তাহলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার কিছু হোমিওপ্যাথিক ঔষধ সম্পর্কে জেনে নিই:

১) ইপিকাফ: বুক জ্বালার সাথে যদি বমি বমি ভাব হয় ও অত্যাধিক বায়ু নির্গত হয় তাহলে এই ওষুধ ব্যবহার করা হয়। এটি গর্ভাবস্থায়তেও উপযুক্ত।

২) নাক্স ভূমিকা: অনেক অম্লতা, বুক জ্বালাপোড়া, বায়ু নির্গত, সেই সাথে বমি বমি ভাব কিন্তু বমি থাকবে না। জিব্বা মাখন এর মত স্তর দিয়ে আবৃত থাকে, পাকস্থলী নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এই সময়ে এই ওষুধ ব্যবহার করা হয়।

৩) স্ট্যাফিস্যাগ্ৰিয়া: যদি বুক জ্বালাপোড়া ধূমপান দ্বারা গঠিত হয়ে থাকে তাহলে এ ওষুধ ব্যবহার করা হয়।

৪)ক্যাল্কেরিয়া: যদি পাকস্থলীতে প্রচুর জ্বালা অনুভব হতে থাকে, পাকস্থলীতে অনেক চাপবোধ হয় ও খাদ্য বমি হয়  তাহলে এই ওষুধ ব্যবহার করা।

৫)চায়না: পেটে প্রচুর অস্বস্তি, টক ও তিক্ত ঢেকুর, দুর্গন্ধযুক্ত বায়ু, এসব ক্ষেত্রে  এ ওষুধ ব্যবহার করা হয়।

৬)ন্যাট্রাম ফস: তীব্র গন্ধযুক্ত বমি, টক ঢেকুর, ঘামে টক গন্ধ, হাইপার এসিডিটি, ভিনেগারের মত টক তরল বমি, টক ডেকুরের সাথে পাকস্থলীর ক্ষত। এসব কারণে এ ওষুধ ব্যবহার করা হয়।

৭) পালসেটিলা: খাবারের তিক্ত স্বাদ, সকালে মুখে দুর্গন্ধ থাকে মনে হয় গলা অব্দি খাবার জমে আছে, শুকনা মুখ, এলোমেলো স্বাদ  যুক্ত জিব্বা, বুক জ্বালাপোড়া, অমলতা এসব ক্ষেত্রে ওষুধের ব্যবহার হয়।

৮) ফসফরাস: পেট জ্বালা ও পাকস্থলী জ্বলতেই থাকে, বমি বমি ভাব ছাড়াই রক্ত বমি, খাদ্য বমি, পেট দুর্বল অনুভূতি ও পায়খানার রাস্তার নিচে জ্বালাপোড়া, পাকস্থলী দুর্বল, ইত্যাদি ক্ষেত্রে ওষুধের ব্যবহার করা হয়।

৯) এস্কিউলাস হিপ: পাকস্থলীর মধ্যে চাপ অনুভূতি থাকে, ঢেকুরে শুধু বাতাস,  বুকে অসহ্যকর জ্বালাপোড়া।

১০) ফেরাম মেট: খাওয়া দাওয়ার পর পরই বুক জ্বালা ও বমির জন্য এটি একটি অসাধারণ ওষুধ।

গ্যাস্টিকের সমস্যা দূর করার ঘরোয়া উপায়

১) হঠাৎ করে গ্যাস এসিডিটি হলে দুই থেকে তিনটি লবঙ্গ খুব ভালোভাবে চিবিয়ে খেয়ে এক গ্লাস উষ্ণ পানি পান করুন। অনেকে লবঙ্গ খেতে পারেন না খুব কষ্ট হয়। তারা জিরা খেতে পারেন কিন্তু লবঙ্গটা জিরা থেকে বেশি উপকার দেয়। যাদের অতিরিক্ত গ্যাসের সমস্যা তারা  প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে দুটি লবঙ্গ যদি নিয়মিত খুব ভালো করে চিবিয়ে খেয়ে এক গ্লাস হালকা উষ্ণ পানি পান করেন তারপর সকালে উঠে দেখবেন আপনার আর গ্যাসের সমস্যা থাকবে না।

টানা ২১ দিন একই নিয়মে লবঙ্গ সেবন করুন। লবঙ্গ খাওয়ার সময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে লবঙ্গের ফুলটি অবশ্যই থাকে। লবঙ্গের মাথায় যে ছোট্ট ফুল রয়েছে এটি আপনাকে অবশ্যই খেতে হবে এটি ফেলে দিয়ে খেলে কিন্তু হবে না। কারণ এই ফুলের মধ্যেই রয়েছে 90 ভাগ গুণ। যা আপনার গ্যাসের সমস্যা মিটিয়ে দিবে ইনশাল্লাহ। কিন্তু এ ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে ছোট শিশুদের গ্যাসের সমস্যার জন্য লবঙ্গ খাওয়ানো যাবে না। 

 ২) কাঁচা আদা যদি আপনি চিবিয়ে খেতে পারেন, অথবা কাচা আদার রস এক চা চামচ পরিমাণ খেতে পারেন তাহলে পেটের সব ধরনের রোগ দূর করা সম্ভব। হঠাৎ করে পেটে গ্যাস ,এসিডিটি হচ্ছে সাথে সাথে এক ইঞ্চি আদা কেটে ভালোভাবে চিবিয়ে খেয়ে নিন। তাহলেই মুক্তি পেতে পারবেন পেটের গ্যাসের সমস্যা থেকে।

৩) খাবারের সময়ে অনিয়ম করবেন না। সময় মত খাবার না খেলে পাকস্থলীর আরেকটা রোগ সম্ভাবনা বেড়ে যায়। নাম গ্যাস্ট্রাইটিস এই রোগে পাকস্থলীর গায়ে ক্ষত দেখা দেয় ইনফেকশন হতে পারে। আর এই রোগ্য হলেও আপনার পেটে জ্বালাপোড়ার মতো ব্যাথা হতে পারে। আপনার পক্ষে তো বোঝা সম্ভব না জ্বালাপোড়া কোন কারণে হচ্ছে। তাই পাকস্থলী সুস্থ রাখতে আপনাকে নিয়ম করে সময় মতো খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। 

৪) অনেকের মাঝে একটা ধারণা আছে, যাদের সমস্যা তাদের জন্য দুনিয়ার প্রায় সব খাবার নিষেধ। শুধুমাত্র সিদ্ধ ,যাও, মসলা ছাড়া খাবার খেতে হবে, এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল।  একজনের জন্য একেক ধরনের খাবার এ সমস্যা সৃষ্টি করে । যেসব খাবারে আপনার বুকে জ্বালাপোড়া করে আপনি শুধু সেই সব খাবার এড়িয়ে চলবেন। সেটা হতে পারে মসলা দেওয়া বা অতিরিক্ত তেল দেওয়া খাবার, আপনার প্রিয় চপ পুরি মুড়ি চানাচুর চটপটি এমনকি ডাল ভাত। আপনার কোন খাবারে সমস্যা হয় সেটা আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে। আর এড়িয়ে চলতে হবে।

৫) রাতের খাবারটা আগে আগেই সেরে ফেলবেন। ঘুমাতে যাওয়ার অত্যন্ত তিন থেকে চার ঘণ্টা আগে। আপনি যদি ১১ টার দিকে ঘুমাতে যান তাহলে কমপক্ষে সাড়ে সাতটায় খেতে বসবেন আটটার মধ্যেই খাওয়া শেষ। এরপরে কিন্তু আপনাকে জেগে থাকতে হবে ।ভাত খাওয়ার পর অনেকেরই ঘুম আসে কিন্তু ঘুমানো যাবে না।  এটা করার কারণ হচ্ছে ভর পেটে চিৎ হয়ে শুলে পাকস্থলী থেকে এসিড উপরের দিকে আসা সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

৬) ঘুমানোর সময় বা বিছানায় শোয়ার সময় মাথা আর বুক ১০ থেকে ২০ সেন্টিমিটার উঁচুতে রাখবেন কোমরের চেয়ে। বালিশ দিয়ে উঁচু করবেন না। কারণ এতে শুধু আপনার মাথাটাই উঁচু হয়। বরং তো শোকের নিচে বা খাটের নিচে কিছু দিয়ে খাটের একটা দিক উঁচু করে নিবেন এবং সেই দিকে মাথা  দিবেন। যাদের রাতের বেলায় জ্বালাপোড়ার সমস্যা বেশি হয়, তাদের জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর খেয়াল রাখবেন ঘুমের সময় দেহের ভঙ্গিটা যেন স্বাস্থ্যকর হয়। আঁকাবাঁকা অস্বাস্থ্যকর হলে আবার শরীরে ব্যথা সৃষ্টি হতে পারে। বালিশ বা বালিশের উচ্চতা পরিবর্তন করলে অনেকের ঘাড় ব্যথা হয়।

৭) আপনার যদি ওজন বেশি হয় তাহলে সেটা কমানোর চেষ্টা করুন। অতিরিক্ত ওজন অনেক ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করে। ডায়াবেটিস, হার্টের রোগ ইত্যাদি অনেক কিছুই অতিরিক্ত ওজনের সাথে সম্পর্কযুক্ত। তাই ওজন কমে ফেলা এবং কমানোর পর সেটা ধরে রাখাই শ্রেয় ‌। আপনার বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা সমাধানও এটা অনেক সাহায্য করবে। 

৮) একবারে পেট ভরে খেলে সমস্যাটা বেশি হয় তাই অনেক খাবার একসাথে খাবেন না। সারাদিনে ভাগ ভাগ করে অল্প অল্প খাবার খাওয়ার চেষ্টা করবেন। বেশি খেলে পাকস্থলী টা ভরে ওঠে, বেশি খাবার খেলে পাকস্থলীটা বেশি প্রসারিত হয় । একবারে অনেক খাবার খেলে পাকস্থলী অনেক ফুলে ওঠে । আর ঠিক তখন পাকস্থলীর ভেতরে এসিড উপরের দিকে উপরে আসতে পারে। আর শুরু হতে পারে বুকে জ্বালা পোড়া 

৯)ধূমপান বন্ধ করতে হবে। গবেষণায় দেখা গেছে যারা ধূমপান কমিয়ে ফেলে বা  বন্ধ করে দেয়, তাদের এই সমস্যা অনেকাংশে কমে যায়। আর ধুমপান ও নানা রোগের কারণ,  তাই এই অভ্যাসটি পরিত্যাগ করাই শ্রেয়।

গ্যাস্ট্রিক দূর করার ব্যায়াম

গ্যাস্ট্রিক দূর করার বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম ও ম্যাসাজ আছে। এর দ্বারা খুব সহজেই পেটের গ্যাস থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। অনেকে আছে এসব ব্যায়াম সম্পর্কে জানেনা। চলুন পেটের গ্যাস দূর করার ব্যায়াম সম্পর্কে জেনে নিন:

১) পেট ম্যাসাজ করা: পেটে অতিরিক্ত গ্যাস হলে পেটের উপরে হালকা তেল দিয়ে আস্তে আস্তে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে মাসাজ করুন এতে পেটের গ্যাস অন্ত্রের নিচের দিকে চলে যাবে এবং পায়ুদারের মাধ্যমে বের হয়ে যাবে। দিনে কয়েকবার এই ম্যাসাজ করুন

ম্যাসাজ করার নিয়ম: প্রথমে ডান হাতটিকে বুকের খাঁচার হাড়ের নিচের দিকে ধরতে হবে। এরপরে গোল গোল ভাবে ঘুরিয়ে মেসেজ করতে হবে। এভাবে কয়েকবার করলে খুব দ্রুত পেটের গ্যাস দূর হয়ে যাবে।

২) যোগব্যায়াম: গবেষণায় দেখা গেছে যোগ ব্যায়াম পেট ফাঁপা বা পেটের গ্যাসের সমস্যা একদম দূর করে দিতে পারে। যোগ ব্যায়ামের মাধ্যমে পেটের বেশির ব্যায়াম হয়। যোগ ব্যায়াম করলে অন্ত্র ঠিকমতো কাজ করতে পারে। এ কারণে পেট থেকে গ্যাস বের হয়ে যেতে পারে। কিছুক্ষণ যোগ ব্যায়াম করলে আপনি নিজেই লক্ষণীয় ফলাফল খেয়াল করবেন।

৩) হাটা: আমরা প্রত্যেকেই জানি ব্যায়াম করলে শরীর ভালো থাকে এর পাশাপাশি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার সমাধানও ব্যায়াম অনেক কার্যকর। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার জন্য প্রতিদিন রাতে খাওয়ার পর হাঁটার অভ্যাস করুন। নিয়মিত হাটা গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।

গ্যাস্ট্রিক হলে যেসব খাবার খাবেন না

এমন কিছু খাবার আছে যে খাবারগুলো খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়। তাই গ্যাস্ট্রিকের রোগীরা এসব খাবার এড়িয়ে চলাই উত্তম। এসব খাবার সম্পর্কে জেনে নিই:

১) আপেল

২) দই

৩) আঙ্গুর

৪) মিষ্টি জাতীয় জিনিস

৫) ফাস্টফুড জাতীয় খাবার

৬) ডুবা তেলে ভাজা খাবার

৭) বাসি খাবার

৮) অস্বাস্থ্যকর খাবার

৯) মেয়াদ উত্তীর্ণ খাবার

১০) কোল্ড ড্রিংকস

১১) ডিম

১২) মিষ্টি কুমড়া

১৩) অনিয়মিত খাবার গ্রহণ

১৪) অতিরিক্ত ঝাল যুক্ত খাবার

১৫) মুলা

১৬) ব্রকলি

১৭) ফুলকপি ইত্যাদি।

গ্যাস্ট্রিক হলে যেসব খাবার খাবেন

শসা ,দই ,পেঁপে ,কমলা, কলা ,ঠান্ডা দুধ ,জিরা ,সরষে ,পুদিনা পাতা, মৌরি ইত্যাদি।

সবশেষে,

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বেশ অস্বস্তিকর। তবে উপরুক্ত আলোচনায় গলা উপায় গুলোর মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। আর যদি ক্রমাগত  গ্যাস্ট্রিকের লক্ষণগুলো প্রকাশ পেতেই থাকে কোন উপায়েই গ্যাস্ট্রিক না কমে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন।

আরো পড়ুন –

 

Related Post

মৃত্যু নিয়ে উক্তি

150+মৃত্যু নিয়ে উক্তি, বাণী, ক্যাপশন 2024

মৃত্যু নিয়ে উক্তি জন্মিলে মরিতে হবে আর এটাই সত্যি। মৃত্যু হচ্ছে সবচেয়ে চিরন্তন সত্যি। পৃথিবীতে প্রতিটি প্রাণীর মৃত্যুর স্বাদ অনুভব করতে হবে। সবসময় মৃত্যুর জন্য

Read More »
খুশির স্ট্যাটাস

200+ স্টাইলিশ খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন

খুশির স্ট্যাটাস | হাসি নিয়ে ক্যাপশন জীবনের সুন্দর খুশির মুহূর্ত আমরা সবাই বাঁধাই করে রাখতে চাই। আর এই খুশির মুহূর্তকে ধরে রাখার সবচেয়ে সহজ উপায়

Read More »

স্টাইলিশ ভালোবাসার ছন্দ | রোমান্টিক ছন্দ | Love Status Bangla

❤❤ভালোবাসার ছন্দ | ভালোবাসার ছন্দ রোমান্টিক | ভালোবাসার ছন্দ স্ট্যাটাস❤❤ ভালোবাসা হলো এক অন্যরকম অনুভূতির নাম, যা শুধুমাত্র কাউকে ভালবাসলেই অনুভব করা যায়। আমরা বিভিন্নভাবে

Read More »
মন খারাপের স্ট্যাটাস

মন খারাপের স্ট্যাটাস, উক্তি, ছন্দ, ক্যাপশন, কিছু কথা ও লেখা

মন খারাপের স্ট্যাটাস মন খারাপ – এই কষ্টের অনুভূতি কার না হয়? সবারই কখনো না কখনো সবারই মন খারাপ হয়। জীবনের ছোটোখাটো অঘটন থেকে শুরু

Read More »

Leave a Comment

Table of Contents