সারাদেশে শুরু হয়েছে ভ্যাপসা গরম। কখনো আবার বৃষ্টি এসে গরম উধাও হয়ে শীতও অনুভব হচ্ছে। এরকম আবহাওয়া ত্বকের জন্য মারাত্নক ক্ষতিকর। এ সময় বাইরে অতিরিক্ত রোদ দেখা যায়। সূর্যের ইউভি রশ্নি আমাদের ত্বকের জন্য অনেক ক্ষতিকর। তাই আমাদের ত্বকের বাড়তি যত্ন করতে হয় এ সময়। কারন অতিরিক্ত গরমে ত্বকের নানান ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। যেমন ত্বকে মেছতা বেড়ে যাওয়া, কালো হয়ে যাওয়া বা উজ্বলতা কমে যাওয়া, চোখের চারপাশে দাগ সহ আরো অনেক সমস্যা।
এই গরমে গরমে ঘরে বসে খুব সহজেই ত্বকের যত্ন নেয়া যায়। যেহেতু ছেলে মেয়ে এবং বাচ্চাদের ত্বকের ধরন ভিন্ন তাই আজকের এই আর্টিকেল থেকে জানতে পারবেন কিভাবে ঘরে বসে গরমে ত্বকের যত্ন নেয়া যায়:
গরমে তৈলাক্ত ত্বকের যত্ন
গরমে তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারীরা সবচেয়ে বেশি বিপদে থাকে। কারন তৈলাক্ত ত্বকে বেশি ক্ষতি করে গরম৷ তাই যাদের ত্বক তৈলাক্ত তাদের একটু বেশি সমস্যায় পরতে হয়। এই ধরনের সংবেদনশীল ত্বকের জন্য প্রয়োজন বাড়তি কিছু যত্ন।
তৈলাক্ত ত্বকের যত্নের জন্য অনেকেই বলেন প্রচুর পরিমানে মুখ ওয়াশ করতে হবে পানি দিয়ে। ত্বক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, গরমে তিন থেকে চার বারই যথেষ্ট ত্বক পরিষ্কার করা৷ বাকি সময় টিস্যু দিয়ে নাক ও কপালের তেল উঠিয়ে ফেললেই যথেষ্ট। সাধারণত গরমে নাক এবং কপালেই বেশি করে তেল জমে থাকে। এই এই দুই জায়গা ভাল করে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
পানি পান
গরমে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে নিয়মিত পানি পান করা। কারন অতিরিক্ত গরমে যখন শরীর ঘামতে থাকে তখন আমাদের শরীরে পানি শূন্যতা দেখা দেয়। ফলে আমাদের ত্বকের নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়। তাই গরমে ছেলে মেয়ে অথবা শিশু সবাইকে প্রচুর পরিমানে পানি পান করতে হবে। অনেকেই বেশি পানি পান করতে পারেন না। সেক্ষেত্রে পানির সাথে লেবুর রস মিশিয়ে শরবত খেতে পারেন, জলজ / রসালো ফল অথবা ডাব পান করতে পারেন।
গরমে যখন বাইরে বের হবেন সাথে অবশ্যই পানির বোতল সাথে রাখতে পারেন। যাতে করে প্রয়জনে পানি পান করতে পারেন। নিয়মিত পানি পান করলে ত্বকের উজ্বলতা হারাবেনা, ত্বককে উজ্বল এবং প্রানবন্ত রাখতে সাহায্য করবে পানি।
ত্বক পরিষ্কার
যেহেতু গরমে ত্বক ঘেমে অনেক তৈলাক্ত হয়ে যায় তাই ত্বকের সাথে ধুলা বালু লেগে ত্বকের ক্ষতি সাধন করে। তাই প্রতিদিন বাহির থেকে এসে প্রথমেই মুখ খুব ভাল ভাবে ওয়াশ করতে হবে ভাল মানের ফেসওয়াশ দিয়ে। ত্বকের আরামের জন্য ফ্রিজে বরফ বানিয়ে মুখে লাগাতে পারেন। এতে করে ত্বকের ক্লান্তি দূর হবে।
প্রতিদিন কমপক্ষে পাচ থেকে ছয় বার মুখ ওয়াশ করতে হবে। মেকাপ করার পর যত দ্রুত সম্ভব মুখ ওয়াশ করে নিতে হবে। ত্বক পরিষ্কার করার জন্য ওয়াটার বেজড অথবা ক্লিনজার বেছে নিতে পারেন।
সানস্ক্রিন লোশন
সানস্ক্রিন লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করার ফলে আমাদের ত্বককে অতিরিক্ত গরম থেকে রক্ষা করে। মূলত সূর্য থেকে আসা রশ্নি আমাদের ত্বকের ক্ষতি সাধন করে। সেই ক্ষতিকর রশ্নি থেকেই সানস্ক্রিন লোশন আমাদের ত্বককে নিরাপদ করে।
সূর্যরশ্নি ত্বকে পানিশূন্য করে ও ত্বকের উজ্বলতা নষ্ট করে। তাই যখন সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করা হয় তখন এই সমস্যা গুলো আর দেখা দেয়না। আমাদের দেশে ছেলে মেয়ে ও বাচ্চাদের ত্বকের ধরন অনুযায়ী খুব ভাল ব্রান্ডের সানস্ক্রিন লোশন পাওয়া যায়। আপনার ত্বকের ধরন অনুযায়ী আপনি সেই ধরনের লোশন নিজে এবং আপনার বাচ্চাকে ব্যবহার করাতে পারেন। আর অবশ্যই বাইরে বের হলে ছাতা টুপি ব্যবহার করতে হবে৷
গরমে কিচেনে বেশি সময় থাকতে হলে সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করতে হবে। গরমে এস পি এফ ৩০ বা তার বেশি সানস্ক্রিন ব্যবহার করা ভাল। বাইরে বা কিচেনে যাওয়ার অন্তত ২০ মিনিট আগে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে।
অতিরিক্ত মেকাপ পরিহার
এই সময় ত্বক এমনিতেই অনেক নাজুক ধরনের হয়ে থাকে। তাই এই সময় অন্তত মেকাপ ইউস করা থেকে বিরত থাকতে হবে। আর যদি করতেই হয় তাহলে ওয়াটার বেজড ফাউন্ডেশন ব্যবহার করতে হবে। মেকাপ করলে পার্টি থেকে ঘুরে এসেই খুব ভাল ভাবে ক্লিন করতে হবে যেন ত্বকের লোমকূপে কোনো মেকাপ জমে থাকতে না পারে।
ম্যাসাজ করুন
মেকাপ করার আগে ত্বক কমপক্ষে পনের মিনিট ম্যাসাজ করতে পারেন। এতে আপনার ত্বকের ফোলা ভাব কমে যাবে। এতে ত্বক পানি ধরে রাখতে সক্ষম হয়। চেষ্টা করুন লাইট স্ক্রিন ধরনের প্রডাক্ট ব্যবহার করার এতে করে আপনার ত্বকের লোমকূপে প্রডাক্ট আটকাবেনা। যার ফলে ত্বকের ভারী ভাব কমে যাবে।
এক্সফোলিয়েট
অতিরিক্ত গরম এবং তাপ ত্বকের মৃত কোষ বাড়াতে সাহায্য করে। তাই সপ্তাহে এক দিন এক্সফোলিয়েট করতে পারেন। এতে ত্বকের মৃত কোষ মরে যাবে। ফলে ত্বক উজ্বল ও মসৃন দেখাবে।
রোদে পোড়া দাগ
গরমে রোদে ত্বকে বিভিন্ন ধরনের কালো দাগ দেখা দেয়। এই দাগ দূর করতে এলোভেরা জেল, আলু এবং শসা মুখে লাগাতে পারেন। এগুলো ব্যবহারে রোদে পোড়া দাগ দূর হবে।
মাস্ক ব্যবহার
গরম কালে ত্বকে নানান ধরনের সমস্যা দেখা দিলেও তৈলাক্ত ত্বকে এর প্রভাব বেশি পরে। তাই মুলতানি অথবা চন্দন দিয়ে মাস্ক বানাতে পারেন। এই মাস্ক ত্বকের ব্রন কমাতে সাহায্য করে। কারন এটি ত্বকের গভীর থেকে ময়লা পরিষ্কার করে।
স্ক্রাবিং করা
গরমে যদি নিয়মিত ত্বক স্ক্রাব করা হয় তাহলে ত্বকে ময়লা জমতে পারেনা। ফলে ব্রন হওয়ার প্রবনতা কমে যায়। প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে ত্বক স্ক্রাবিং করা যায়৷ যেমন চিনি। চাইলে চিনি অথবা ভাল মানের স্ক্রাবার দিয়ে ত্বক স্ক্রাব করতে পারেন।
টমেটো প্যাক:
টমেটো প্যাক শুস্ক এবং অয়েলি সব ধরনের ত্বকের জন্য অনেক উপকারী৷ টমেটো পেষ্ট করে ফেসে লাগাতে পারেন এতে ত্বকের রোদে পোড়া ভাব দূর হবে। সেই সাথে ত্বক উজ্বল করবে।
গরমে শুস্ক ত্বকের যত্ন
গরমে শুস্ক ত্বক আরো শুস্ক হয়ে যায়। তাই অনেকেই বুঝতে পারেন না কিভাবে ত্বকের যত্ন নিবেন। গরমে শুস্ক ত্বকের যত্ন নিতে চাইলে এই কয়েকটি ঘরোয়া টিপস ফলো করতে পারেন:
পেপে মধুর প্যাক
পেপে হাল্কা সিদ্ধ করে সেটা ভাল করে ব্লেন্ড করে নিন। ঠান্ডা হয়ে গেলে এবার তাতে কয়েক ফোটা মধুর রস সহ মিক্স করে নিন। এবার পুরো মুখে লাগিয়ে পনের থেকে বিশ মিনিট অপেক্ষা করুন। এই প্যাকটি সপ্তাহে দুই দিন ব্যবহার করলে ত্বকের শুস্ক ভাব চলে যাবে।
দই এর প্যাক
দই এর সাথে মধু মিশিয়ে ফেটে নিন ভাল করে। এবার প্যাকটি পুরো মুখে মেখে নিন এবং শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। এই প্যাক ব্যবহারে ত্বক উজ্বল করবে এবং শুস্ক ভাব দূর করবে।
গোলাপ ফুল ও মধুর প্যাক
গোলাপ ফুল ভাল ভাবে বেটে সাথে মধু মিশিয়ে নিন। এবার পুরো মুখে ভাল ভাবে লাগিয়ে নিন। এই প্যাক ব্যবহারে ত্বক স্বাভাবিক হবে।
রাতে শোয়ার আগে অলিভ অয়েল/ আমন্ড অয়েল
রাত্রে শোয়ার আগে ত্বকে অলিভ অয়েল অথবা আমন্ড অয়েল ব্যবহার করে নিলে সারা রাত এই তেল মুখে বসে থাকলে শুস্কতা দূর হবে।
কলা লেবুর প্যাক
এই গরমে শুস্ক ত্বকের যত্নে ব্যবহার করতে পারেন কলা এবং লেবুর প্যাক। একটি কলার সামান্য অংশ ব্লেন্ড করে নিয়ে তাতে কয়েক ফোটা লেবুর রস মিশিয়ে নিন। তারপর মুখে কয়েক মিনিট লাগিয়ে রাখুন। শুকিয়ে গেলে আস্তে আস্তে ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বক টানটান থাকবে এবং ত্বকের শুষ্ক ভাব দূর হবে।
রোদেপোড়া ভাব কমাতে শসা দই
গরমে বাহির থেকে আসলেই ত্বক প্রচুর জ্বলে এবং লাল হয়ে যায়। এই যন্ত্রনা থেকে রেহাই পেতে শসা এবং টক দইয়ের প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। শসা ব্লেন্ড করে এর সাথে দই মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে কয়েক মিনিট অপেক্ষা করুন। দেখবেন নিমিষেই ত্বকের লালচে এবং জ্বলাপোড়া বন্ধ হয়ে যাবে৷ প্রতিদিন বাহির থেকে বাসায় ফিরে এই ফেসপ্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন।
গ্রিন টি এবং মধুর আইস কিউব
গ্রিন টি পানিতে ভিজিয়ে রেখে এবার ছাকনি দিয়ে পানি আলাদা করে রাখুন। এবার পানির সাথে কয়েক ফোটা লেবুর রস মিশিয়ে ফ্রিজে আইস বানিয়ে নিন। অতিরিক্ত গরম থেকে ফিরে আইস মুখে আলতো করে চেপে ধরে রাখবেন। এতে ত্বকের ক্লান্তি দূর হবে এবং ত্বকের প্রদাহ কমে যাবে। গ্রিনটির আন্টি অক্সিডেন্ট ত্বক কে ঠান্ডা রাখে এবং মধু ত্বককে হাইড্রেট রাখতে সাহায্য করে।
গরমে ছেলেদের ত্বকের যত্ন
গরমে ছেলেদের ও মেয়েদের ত্বকের যত্ন প্রায় একই রকম। তবে ছেলেদের ক্ষেত্রে রয়েছে কিছু বাড়তি যত্ন। যেমন ছেলেদের দাড়ি থাকায় এর জন্য রয়েছে বাড়তি যত্ন।
দাড়ির লোশন ব্যবহার
দাড়িতে লোশন ব্যবহার করলে ত্বকের ভারসাম্য বজায় রাখে। এই লোশন ছেলেদের দাড়ির চুল নরম, পুষ্ট এবং হাইড্রেট করতে সাহায্য করে। আলফা বিসাবোলল, ভিটামিন ই আছে এমন ধরনের লোশন ব্যবহার করুন। এর ফলে দাড়ি নরম করবে হাইড্রেট রাখবে।
ফেসওয়াশ ব্যবহার
বাজারে ছেলেদের ফেসওয়াশ পাওয়া যায়। আপনার ত্বকের ধরন অনুযায়ী ফেসওয়াশ সিলেক্ট করুন এবং সেটি ইউজ করুন। অনেক ছেলেরাই ত্বকে সাবান ব্যবহার করে। এটি ত্বকের জন্য অনেক ক্ষতিকর। কারন সাবানে থাকা ক্ষার ত্বক বেশি রুক্ষ করে ত্বক। যেহেতু ছেলেদের বেশির ভাগ সময় বাহিরে কাটাতে হয় তাই দিনে কয়েক বার মুখ ওয়াশ করতে হবে।
সঠিক পদ্ধতিতে দাড়ি কামান
অনেকেই দাড়ি কামানোর সঠিক পদ্ধতি জানেন না। দাড়ি কামানোর সঠিক পদ্ধতি হচ্ছে প্রতিবার ব্লেড টানার পর গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলা। গরমে সাধারন শেভিং ক্রিম ব্যবহার না করে ময়েশ্চারাইজার যুক্ত শেভিং ক্রিম ইউস করা বেশি ভাল। সংবেদনশীল ত্বকের ক্ষেত্রে তিন থেকে চার বার ইউস করার পর ব্লেড বদলে ফেলা উচিৎ।
গরমে শিশুদের ত্বকের যত্ন
বড়দের তুলনায় শিশুদের ত্বক কয়েক গুন বেশি কোমল হয়। তাই গরমে খুব সহজেই শিশুদের ত্বক গরম দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে। অতিরিক্ত গরমের ফলে শিশুর ত্বকে ঘামাচি, র্যাশ বা লাল জাতীয় দাগ দেখা যায়। তাই এই সময় শিশুদের গোসল করা, ত্বক নিয়মিত পরিষ্কার করা জরুরী। সময় মত গোসল করিয়ে পাউডার বা লোশন মাখালে শিশুদের ত্বকে গরম প্রভাব ফেলতে পারেনা।
বেবি ওয়াশ ও বেবি লোশন
যেহেতু শিশুর ত্বক বড়দের ত্বকের চেয়ে একবারি ভিন্ন ধরনের এবং অনেক বেশি সংবেদনশীল হয়ে থাকে। তাই শিশুদের গোসলের জন্য বড়দের সাবান বা বডি ওয়াশ ব্যবহার করা যাবেনা। বড়দের সাবান বা বডি ওয়াশ বাচ্চাদের অনেক ক্ষতি করে। তাই অবশ্যই বাচ্চাদের গোসলের জন্য ভাল মানের বডি ওয়াশ বা সাবান ইউস করতে হবে।
বাজারে বাচ্চাদের বিভিন্ন ধরনের সাবান এবং শ্যাম্পু পাওয়া যায় সেগুলো সিলেক্ট করতে হবে। গোসলের পরে বাচ্চাদের জন্য ভাল মানের বেবি লোশন মাখাতে হবে৷ এতে করে সূর্যের অতিবেগুনী রশ্নি ক্ষতি করতে পারবেনা।
ডায়াপার পরানোর আগে ক্রিম
শিশুদের ডায়াপার পরানোর আগে এই গরমে র্যাশ দূর করার ক্রিম ব্যবহার করাতে হবে। রেজিষ্ট্রাড চিকিৎসক এর কাছ থেকে ভাল মানের ক্রিম জেনে নিন এবং ডায়াপার পরানোর আগে ন্যাপি এরিয়াতে ক্রিম লাগিয়ে তারপর ডায়াপার পরাতে হবে। এতে করে ব্যাকটেরিয়ার আক্রমন থেকে শিশুর ত্বক সুরক্ষিত থাকবে৷
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার
শিশুদের বারবার পরিষ্কার করাতে হয় বলে শিশুদের ত্বক শুস্ক হয়ে যায়৷ তাই শিশুর ত্বকে খাওয়ানোর আগে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। খাওয়ানো হয়ে গেলে পানি দিয়ে অথবা ভেজা নরম কাপর দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করে নিন। ময়েশ্চারাইজার লাগানোর ফলে গরমেও শিশুর ত্বকে কোনো ধরনের ক্ষতি হবেনা।
শিশুর গায়ের জামা
এই গরমে অবশ্যই শিশুকে সুতি পাতলা নরম কাপড় পরাতে হবে। দিনে তিনবার কাপড় চেঞ্জ করিয়ে দিতে হবে৷ এতে করে শরীর ঘামবেনা এবং ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া আক্রান্ত করতে পারবেনা। পাতলা কাপড় পরানোর ফলে শিশুর শরীর ঘামবেনা। যদি তারপরেও ঘেমে যায় তাহলে শরীর মুছে দিতে হবে।
প্রতিদিন গোসল
গরমে প্রতিদিন শিশুকে গোসল করাতে হবে৷ বাহির থেকে আসলে সাথে সাথে গোসল করিয়ে না দিয়ে বরং কয়েক মিমিট শরীর কে ফ্যান বা এসির নিচে ঠান্ডা করিয়ে নিতে হবে৷ তারপর গোসল করিয়ে দিতে হবে। অবশ্যই গোসলে ভাল মানের বেবি সোপ ব্যবহার করতে হবে।
রোদে খেলাধুলা করতে না দেয়া
অতিরিক্ত গরমে শিশুকে বাইরে খেলাধুলা করতে দেয়া যাবেনা। বাসার মধ্যে খেলা করার ব্যবস্থা করে দিলেই বেশি ভাল হয়। আর খেলা করার পর অবশ্যই ড্রেস চেঞ্জ করিয়ে দিতে হবে।
শিশুর চুলের যত্ন
গরমে শিশুদের চুলের গোড়াও অনেক বেশি ঘেমে যায়৷ ফলে মাথায় ঘামাচি বা চুলকানী দেখা যায়। তাই অতিরিক্ত গরমে চুল ছোট রাখাই ভাল। আর বড় রাখলে অবশ্যই নিয়মিত শ্যাম্পু এবং পরিষ্কার করাতে হবে৷
ফলের রস/ পানি পান
শিশুদের এই গরমে প্রচুর পরিমানে পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে৷ বেশি করে পানি খাওয়াতে হবে এবং রসালো ফল খাওয়াতে হবে। তাহলে শিশুদের পানি শূন্যতা কমে যাবে এবং ত্বক ভাল রাখবে।
পরিশিষ্ট
গ্রীষ্মকালে সব ধরনের ত্বকই অতিরিক্ত গরমে নাজেহাল হয়ে পরে। অল্প সময়ের জন্য বাইরে বের হলেও শরীর ঘেমে যায়৷ তাই সুস্থ ও সুন্দর থাকতে নিয়মিত ত্বকের বাড়তি যত্ন নিতে হয়। গরমে ত্বকের যত্ন না নিলেই বেড়ে যায় সানট্যান, ব্ল্যাকহেডস, অথবা ফুসকুড়ির সমস্যা।
তাই গরম শুরু হওয়ার আগ থেকে শেষ পর্যন্ত যদি বাড়তি যত্ন নেয়া হয় তাহলেই ত্বকের সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যায়। যেহেতু প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে মেয়ে এবং শিশুর ত্বক আলাদা হয়ে থাকে। তাই ত্বকের যত্নও বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। এই গরমে শুধু ফেসপ্যাক বানিয়ে ত্বকের যত্ন নিলেই হবেনা বরং পুষ্টিকর খাবার গ্রহন, পরিমিত পানি পান করতে হবে। এবং সেই সাথে বিশ্রাম নিতে হবে৷ তবেই এই গরমে নিজেকে এবং ত্বককে সুস্থ রাখা যাবে।
ত্বকের যত্ন নেয়ার আগে জানতে হবে ত্বকের ধরন। কারন ত্বকের ধরন না বুঝে যত্ন না করলে হীতে বিপরীত হতে পারে। তাই ত্বকের ধরন বুঝে আমাদের আজকের আর্টিকেল থেকে জেনে নিতে পারেন আপনার এবং আপনার শিশুর ত্বকের যত্ন।
আরো পড়ুন –